ছদ্মবেশে লুকানো ভালোবাসা পর্ব-০২

0
1237

#ছদ্মবেশে_লুকানো_ভালোবাসা
#মৌমি_দত্ত
#২য়_পর্ব

সকালবেলা খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠলো ইনায়াত। দ্রুত নামাজ পড়ে ব্রেকফাস্ট করে নিলো। মাঝে মাঝে নিজের জীবন নিয়ে নিজেই বিরক্ত হয়ে যায় সে। কখনো কখনো মনে হয় ঐ মাফিয়া খানকে বিয়ে করে নিলেই হয়। তবে পরমূহুর্তেই সে নিজেকে ১০১ টা গালাগাল দেয় বিড়বিড় করে। একটা মেয়ের কাছে তার নামটাও নিজের হয় না। আল্লাহ নিজের বলতে মেয়েদের দেয় দুটো অধিকার। এক. নিজের ইজ্জত,, পবিত্রতা আর সম্মান। আর দুই হলো আল্লাহর প্রতি ইবাদত করার অধিকার। তাই তাহজিব খানের কাছে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়া কখনোই একজন নারীর পক্ষে সম্ভব না বলে ভেবে নেয় ইনায়াত। যদি তাহজিব খানের মতো মানুষের কাছেই বিলাতে হতো নিজেকে বিয়ের নামে। তাহলে নিজের বস আফিমের মাঝে কোন খামতি সে দেখছে না। তাহজিবের থেকেও অধিক সুন্দর আর ধনসম্পদশালী ব্যক্তি আফিম আহসান। কিন্তু তার প্রতিও অফিশিয়াল ব্যাপারে সম্মান ছাড়া কোন অনুভুতি আসে না তো ইনায়াতের। আসবেই বা কেন?? তাহজিব আর ইনায়াত এক ঘাটের গরু। দুটোই মেয়েবাজ আর বিভিন্ন ভাবে আল্লাহর পথের থেকে সড়ে এসেছে।
ইনায়াত মাঝে মাঝে ভাবে,,, সকালে এতো জলদি,, প্রায় ভোরবেলায় কোন পিএ কাজ করে না। অথচ তাকে করতে হয়। সে এতোই স্পেশাল পিএ,, যার ফলে তাকে বসের বাসায় গিয়ে বসকে ঘুম থেকে তুলতে হয়। ছোট বাচ্চার মতো স্বভাবের ছেলেটার মেয়েবাজির মতো স্বভাব আছে। মাঝে মাঝে বিশ্বাস হতে চায় না ইনায়াতের। দ্রুত স্নান সেড়ে ব্রেকফাস্ট করে নিলো ইনায়াত। এরপর আয়নার সামনে গিয়ে বসলো। মুখটা বাংলার পাঁচের মতো করে রেখেছে সে।
– ধুর!! সারাদিন উইগ পড়ে মাথাটা ঘেমে যায়। কি যে করি!! ভাগ্যই তো সহায় নেই।
ছেলেদের সাজ নিতে নিতে প্রায় ৪০ মিনিটের মতো সময় লেগে গেলো ইনায়াতের। মুখে মাস্ক লাগিয়ে বের হয়ে এলো বাসা থেকে। প্রতিদিন আগে বেশ কিছু সময় সে পার্কে হাঁটাহাঁটি করে। আজকেও তার ব্যতিক্রম হলো না।
পার্কে হাঁটাহাঁটি করছে ইনায়াত মনের সুখে। প্রকৃতির মাঝে থাকলে সব চিন্তা উধাও হয়ে যায় তার। বিরক্তিরাও আর হাতছানি দেয় না। কিন্তু আজকে খুব করে একা একা লাগছে তার নিজেকে। এই শহরে এসেছে আজকে ২৩ দিন হতে চললো। অথচ এখনো নিজেকে একাই লাগে তার। কারোর সাথে বন্ধুত্ব করতে গেলেও ভয় হয়। কে জানে!! যদি তাহজিব জেনে যায়?? নিজের বাবা আর রানা আংকেলের সাথেও সেদিনের পর আর কথা হয়নি। তারা ঠিক আছে তো??
সকাল সকাল উঠে প্রকৃতি উপভোগ করতে পছন্দ করে ইনায়াত। আর আফিম!! সে ভোরবেলা নামাজই পড়ে না। ঘড়ির কাটায় সময় সকাল ৭ টা। অথচ এখনো আফিম বিছানায় এলোমেলো হয়ে ঘুমাচ্ছে। আফিমের বাবা মা ট্রিপের জন্য লন্ডনে গেছে। তাই ইনায়াতকেই এসে তুলে দিতে হবে আফিমকে। নাহয় হয়তো এমন পাহার ভাঙ্গার মতো কষ্টের কাজটা লাবিবা নিজেই করতেন। মহান সৃষ্টিকর্তার কি মর্জি তা তিনিই জানেন। একদিকে তার অনুগত বান্দা। আর অন্যদিকে তার পথবিচ্যুত এক মানব।
একদিকে নতুন শহরে ইনায়াতের একাকীত্ব,, আফিমের অগোছালো জীবন৷ অন্য শহরে তাহজিব এই সকাল সকাল গান হাতে দাঁড়িয়ে আছে বাগানে। রক্তলাল চোখ দেখেই বুকের ভেতর কেঁপে উঠবে সবার। বন্দুকের নল থেকে নির্গত মৃদু ধোঁয়া জানান দিচ্ছে সদ্য কারোর প্রান হারানোর। তাহজিবের সামনের বাগানের ঘাসের উপর নিথর দেহ পড়ে আছে ৩ টি। এই ৩ জনের উপর এই সপ্তাহের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো ইনায়াতকে খুঁজে আনার। কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে তারা। তাই তাদের জীবনটা এখন তাহজিবের কাছে বেকার জিনিসের মতোই। আর বেকার জিনিস নিজের সাথে রাখা পছন্দ না তাহজিবের। জোড়ে এক হুংকার ছাড়লো তাহজিব।
– আমার রানী আমার চায়। আর তোরা এতোটুকুই পারলি না। আমি সব্বাইকে মেরে ফেলবো। আমার রানীকে না পেলে আমি সব্বাইকে মেরে ফেলবো।
তাহজিব ধুপধাপ পা ফেলে নিজের রুমে এসে দরজা লক করে দিলো। খাটের উপর বিশাল আকারের ছবি আছে ইনায়াতের। ছবিটা লুকিয়ে তোলা প্রফেশনাল হাতে। প্রথম যেদিন ইনায়াতকে দেখেছিলো তাহজিব সেদিন ছিলো বৃষ্টির দিন। ১৫ বছর বয়সী ইনায়াত বৃষ্টিতে লাফালাফি করছিলো। সাথে ছিলো সুরেলা খিলখিল হাসি। তাহজিব সদ্য একটা বিজনেস ডিল করে গাড়ি করে ফিরছিলো নিজের বাসায়। তখনই মাঝরাস্তায় গাড়ি খারাপ হয়ে যায়।
– ভাগ্যিস সেদিন গাড়িটা খারাপ হয়েছিলো মাই কুইন!!
অতীতের পাতায় ভেসে এই কথাটা বললো তাহজিব। ছবিটার কাছে গিয়ে আলতো করে হাত বুলালো।
বিশাল রাজপ্রাসাদের মতো বাসা তাহজিবের। তাহজিবের রুম বরাবর উপরের ফ্লোরে,, একটি রুমে খাটে শুয়ে আছে ইরশাদ মির্জা। চোখ বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে তার,, দৃষ্টি স্থির সিলিংয়ের দিকে। রানা এতোক্ষন জানলার কাছে দাঁড়িয়ে তাহজিবের হম্বিতম্বি দেখছিলো আর ভয়ে শিউরে উঠছিলো। তাহজিব রুমে ঢুকে যাওয়ার পর একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে খাটের কাছে এসে দাঁড়ালো।
– স্যার!! কি ভাবছেন??
রানার প্রশ্নেও নিজের অবস্থার ভাবান্তর ঘটালো না ইরশাদ।
– আমার মেয়েটা বেঁচে আছে কিনা কে জানে!! কতোদিন দেখিনা,, কথা হয় না,, নিজ হাতে খাইয়ে দিইনা। খাওয়াদাওয়া নিয়ে মেয়েটা কতো হেলাফেলা করে তা তো তুমি জানোই রানা।
চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়া জলের ধারা পরিমানে বেড়ে গেলো। রানা দ্রুত এগিয়ে একটা টিস্যু নিয়ে চোখের জল মুছে দিলো ইরশাদের।
– স্যার!! এভাবে ভেঙ্গে পড়বেন না। মামনি যেখানেই থাকুক,, ঠিক থাকবে। আল্লাহর উপর বিশ্বাস রাখুন।
ধীর পায়ে খাটের থেকে উঠে ফার্স্ট এইড বক্স নিয়ে ইরশাদের পায়ের কাছে বসলো রানা। আলতো করে বেডশিট উঠিয়েই অন্যদিকে চোখ সড়িয়ে ফেললো দ্রুত। ইরশাদ একবার রানার দিকে আর একবার নিজের পায়ের দিকে তাকালো। হাঁটুতে ব্যান্ডেজ করা। হাঁটুর পর আর পায়ের অংশ নেই।
যেদিন তাহজিব ইনায়াত পালানোর ৩ দিন পর ফিরে এলো। সেদিন নিজের ক্ষমতার প্রকাশ করতে ইরশাদের পায়ের হাঁটুর পরের অংশ কেটে নিয়েছে সে নিজ হাতে। রানার দুই হাতের কনিষ্ঠা আঙ্গুল কেটে দিয়েছে। নেহায়েত রানার আগে পিছে কেও নেই। নাহয় কি জবাব দিতো তার পরিবারকে ভাবতেই গা শিউরে উঠলো ইরশাদের। সেই দিন থেকে ইরশাদ আর রানা তাহজিবের এই প্রাসাদে বন্দী। এতোকিছুর পরেও রানা আর ইরশাদ আল্লাহর কাছে দুই হাত তুলে দোয়া চায় যেন ইনায়াত এই মানুষরুপী জানোয়ারের হাতে ধরা না পরে।
একদিকে তাহজিবের হিংস্রতা,, অন্যদিকে দুটো মানুষের মোনাজাতে করা আর্তনাদ আর হাহাকার। আল্লাহ কার সহায় হবে??
.
.
আফিমের খাটের পাশে দাঁড়িয়ে একমনে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আছে ইনায়াত। দেওয়াল ঘড়িতে আটটা বাজতেই সে আফিমকে ডাকতে শুরু করলো।
– স্যার,, উঠুন,,, স্যারররররর। ও স্যার!! অফিসের দেরি হয়ে যাবে তো!! স্যার উঠুন!!!!!
ইনায়াতের ধাক্কাধাক্কি উপেক্ষা করে শুয়ে থাকা আফিমের পক্ষে সম্ভব না তা জানা হয়ে গেছে আফিমের এই কয়েক সপ্তাহে। আফিম মুখে ” চ ” জাতীয় শব্দ করে নিজের বিরক্তির জানান দিলো শুয়ে থেকেই। এরপর উঠে বসলো।
– ইউ আর ফায়ার্ড চাঁদ। ইউ আর ফায়ার্ড।
– ওকে স্যার!! পড়ে আগুন পানি ফায়ার্ড ওয়াটার্ড করা যাবে। আগে আপনি খাট থেকে নামুন।
আফিমকে একপ্রকার টেনে হিচড়ে ওয়াসরুমে নিয়ে শাওয়ার অন করে দিয়ে হাঁফাতে লাগলো ইনায়াত প্রতিদিনকার মতো। আফিমের ঘুমের ঘোরে বলা ” ইউ আর ফায়ার্ড ” কথাটা প্রথম প্রথম ভয় পেতো ইনায়াত। কিন্তু এখন এটা তার অভ্যেস হয়ে গেছে।
– স্যার!! আমি টাওয়েল দিয়ে যাচ্ছি। আপনি ব্রাশ করে একেবারে ফ্রেশ হয়ে দরজায় টোকা দেবেন প্রতিদিনের মতো। ওকে??
এই বলেই ইনায়াত বের হয়ে আসছিলো। তখনই হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লো। ” ওহ শিট!! ” বলে চিৎকার করে উঠলো ইনায়াত। আফিম ঘুমের ঘোরে ঢুলুঢুলু হয়ে দাঁড়িয়ে ছিলো শাওয়ারের নিচে। ইনায়াতের চিৎকারে তড়াক করে লাফিয়ে এদিক ওদিক তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো সবটা। কোন সমস্যাই পেলো না আফিম। শুধু ইনায়াতের মুখে চোখে চিন্তার ছাপ। কিছুটা রাগ উঠে গেলো আফিমের।
– হোয়াট ননসেন্স ইনু!! চিৎকার করলে কেন??
আফিমের চিৎকারে এতোক্ষনের ধ্যান ভাঙ্গলো ইনায়াতের। দ্রুত পা চালিয়ে বের হয়ে এলো ওয়াসরুম থেকে। এরপর রুম থেকে,, আর সবশেষে বের হয়ে এলো এই বিশাল বাড়ির মেইন দরজা দিয়ে। আসার আগে একজন সার্ভেন্ট কে টাওয়েল ও জিনিসপত্র নিয়ে আফিমের রুমে দাঁড়াতে বলে সে দ্রুত গাড়িতে উঠে একটা ফার্মেসিতে চলে এলো দূরের। সিটবেল্ট খুলতে খুলতে নিজের উপর রাগ ঝাড়তে লাগলো ইনায়াত।
– তুই মেয়ে না ডাফার ইনায়াত মির্জা চাঁদ। তুই একটা হিজরা। মেয়ে হয়ে কেমনে মাসিকের তারিখ ভুলে গেলি ইডিয়ট কথাকার।
ফার্মসিতে গিয়ে দ্রুত প্রয়োজনীয় জিনিস কিনে পাশেরই একটা পাবলিক টয়েলেটে নিজের কাজ সেড়ে নিলো ইনায়াত। কিন্তু এখন মাথায় অন্য চিন্তা। মাসিক মানেই পেট ব্যাথায় রীতিমতো কান্নাকাটি অবস্থা হয় ইনায়াতের। এখন সারাদিন অফিস করা আর আফিমকে সামলানোর মতো দুঃসহ কাজ সে কিভাবে করবে??
কি আর করার!! চাইলেই তো ছুটি নিতে পারবে না। গাড়িতে বসে গাড়ি ঘুড়িয়ে সোজা গেলো আহসান মঞ্জিলে। আফিম তখন ব্রেকফাস্ট টেবিলে মদের বোতল খুলছিলো। লাবিবাও নেই,, ইনায়াতও কোথায় জানি চলে গেলো। তাই সে একদম ফ্রি বোধ করছে। বিরক্ত করবার কেও নেই।
ইনায়াত দরজা দিয়ে ঢুকে আফিমকে গ্লাসে মদ ঢালছে দেখে দৌড়ে গিয়ে তা টেনে নিলো। কেও মদের বোতল নিয়ে ফেলেছে দেখে রাগী চোখে সেদিকে তাকিয়ে ইনায়াতকে দেখে ভ্রু কুঁচকে ফেললো আফিম বিরক্তিতে।
– কোথায় গিয়েছিলে?? আর গেলে যখন এলে কেন?? এলে যখন দু মিনিট পর এলে না কেন??
আফিমের কথার উত্তর দিতে গিয়েই তলপেটে ব্যাথায় মোচড় দিয়ে উঠলো ইনায়াতের। তলপেট খামচে ধরে ধপ করে সে বসে পড়লো চেয়ারে। ইনায়াতকে এভাবে বসে পড়তে দেখে আফিম চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো।
– হেই?? আর ইউ অলরাইট?? কোন সমস্যা ইনায়াত??
ইনায়াত দ্রুত কোনমতে নিজেকে সামলে নিলো।
– স্যার!! আপনি কি আমাকে ৪ দিনের ছুটি দিতে পারবেন?? প্লিজ স্যার!!
আফিম ভ্রু কুঁচকে তাকালো ইনায়াতের দিকে।
– ওকে,, দিলাম নাহয়। কিন্তু তোমাকে এমন দেখাচ্ছে কেন?? খারাপ লাগছে?? ডক্টর ডাকবো??
– নো নো স্যার!! আমি ঠিক আছি। আমি বাসায় যেতে চাই। ৪ দিনের জন্য একটু বাইরে যাবো এক জায়গায়।
– কোথায়??
ইনায়াত কোনমতে একের পর এক মিথ্যা বলে যাচ্ছে কষ্ট করে। কিন্তু এখন তো ফেঁসে গেলো। কারণ ইনায়াত শুরুর দিকে বলেছে তার এই জীবনে কেও নেই। এখন কোথায় যাচ্ছে বলবে?? হঠাৎ মাথায় যা এলো তাই বলে ফেললো,,
– স্যার!! গার্লফ্রেন্ডের সাথে দেখা করতে যাবো।
ইনায়াতের কথা শুনে আফিম হা। সে কি ভাবতো আর কি হলো আসলে। সে ভাবতো ইনায়াত গে হবে হয়তো। কিন্তু এখানে যে তার গার্লফ্রেন্ড আছে কে জানতো??
– ওকে!! কালকে থেকে ৪ দিনের ছুটি তোমার।
– না না স্যার!! আজকেই লাগবে ছুটি!!
পেট খামচে ধরে উত্তর দিলো ইনায়াত। আফিম ভ্রু কুঁচকে পেট খামচে থাকা হাতের দিকে তাকালো।
– ওকে!!
– দীপ!! দীপ!!
ইনায়াত আফিমের হ্যাঁ শুনেই একজন সার্ভেন্টকে ডাকতে লাগলো। আফিম ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে ইনায়াতের দিকে। সেকেন্ডের মধ্যেই দীপ হাজির ইনায়াতের সামনে।
– ইয়েস স্যার
– আমার নাম্বার আছে তোমার কাছে??
– ইয়েস স্যার
– ঘরে যদি তোমার স্যার কোন অনিয়ম করে আমাকে কল করবে। ব্রেকফাস্ট,, লাঞ্চ,, ডিনার যদি না করে। মদ যদি আধা বোতলের বেশি খায়। তাহলে সোজা আমাকে কল করবে। ওকে??
– ওকে স্যার
দীপ চলে গেলো। আর আফিম বিরক্তিকর দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে আছে।
– হোয়াট ইজ দিস??
– আপনার অফিসরুমের সিসিক্যামেরার সাথে আমার মোবাইল কানেক্ট করা আছে। তাই অফিসের খেয়াল আমি রাখবো। কোন অনিয়ম হলেই কল করবো। রিসিভ না হলে বিরক্ত করতে বাধ্য হবো স্যার। বাই,,,
ইনায়াত দ্রুত পেট চেপে বের হয়ে এলো বাসা থেকে। গাড়িতে বসে দ্রুত গাড়ি চালিয়ে ইনায়াত চললো বাসার উদ্দেশ্যে।
আফিম দরজার দিকে তাকিয়ে টেবিলে বসতেই মদের বোতলের দিকে চোখ গেলো তার। মদের বোতলটা হাত বাড়িয়ে নিতে যাবে। তখনই মোবাইল শব্দ করে বেজে উঠলো। আফিম বিরক্তিতে ভ্রু কুঁচকে ফোনের দিকে তাকিয়ে দেখলো ইনায়াতের কল। রিসিভ করলো আফিম।
– হ্যালো!! কি আবার??
– মদের বোতল টা রাখুন স্যার!!
– হোয়াট!! তুমি কিভাবে জানলে??
– আমি আপনাকে ভালো ভাবেই চিনি স্যার।
আফিম বিরক্তি নিয়ে ফোন কেটে মদের বোতল ঠেলে দূরে সড়িয়ে দিলো।
– এই ছেলে কি যাদুকর নাকি!! বিরক্তিকর!!!
দীপ ব্রেকফাস্ট নিয়ে আসলো। আর আফিম বিরক্তি নিয়েই খাওয়া শুরু করলো। ইনায়াতের কথার নড়চড় করলে যদি ইনায়াতের কানে যায়। তাহলে তা লাবিবার কানে যাবে। মায়ের কাছে বকা শুনার কোন ইচ্ছে নেই আফিমের।

আফিম,, তাহজিব আর ইনায়াত!! তিনজনের ভবিষ্যত অনিশ্চিত!! কতোদিন চলবে ইনায়াতের ছেলে সাজবার খেল?? কতোদিন তাহজিব ইনায়াতের জন্য পাগলামি করবে?? আর আফিম কি জানবে ইনায়াতের কথা??

চলবে,,,,