ছায়া বিহীন পর্ব-০৩

0
2150

গল্পঃ #ছায়া_বিহীন (৩য় পর্ব)
লেখাঃ #তাজরীন_খন্দকার

ছেলের কথা শুনে জোহানার চোখ আবার ছলছল করে উঠলো। মাথা নেড়ে বললো
__ হ্যাঁ ঊষা ঠিকি বলেছে ইনাম!

ইনাম তার মায়ের কথা বিশ্বাস করতে পারছিলো না।সব ঠিকঠাক হওয়া সত্ত্বেও তার মা কি করে বিয়েতে অমত হতে পারে? কারণ ছোট বেলা থেকে আজ পর্যন্ত তার মাকে কোনো ঝামেলা করতে দেখেনি। এমনকি ইনাম জানে তাদের কোনো রিলেটিভ কেউ-ই নাই। তাই কোনো সংঘর্ষ হওয়ারও সুযোগ নেই, সে শুধুই নিজের মা-বাবার সঙ্গে একা একা মানুষ হয়েছে। এর মধ্যে স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটিতে গোটা কয়েক বাড়তি মানুষের সাথে পরিচয়! কিন্তু সে যা চেয়েছে তার মা কোনোদিন তাতে বাধা দেয়নি। কারণ তার মা জানে তার ছেলে ভুল কিছু করছেনা।

ইনাম এতো সহজে মায়ের মুখে মুখে কথা বলেনা, কিন্তু এই মূহুর্তে সে প্রশ্ন করেই ফেললো.
___ঊষাকে তোমার ভালো লাগেনা? নাকিতাদের পরিবারকে তোমার পছন্দ হয়নি আম্মু?

___না না ঊষা খুব ভালো মেয়ে, কিন্তু ব্যপারটা আসলে ভিন্ন, তোমাকে কিছু হলেও জানানো উচিত! ঊষার বাবার সাথে আমার খুব পুরনো শত্রুতা আছে। যার জন্য আজ পর্যন্ত তুমি তোমার নানুবাড়ির মুখ দেখার অধিকার হারিয়েছো। আর আমি হারিয়েছি আমার বাবাকে! সবকিছুই আসলে বলা দরকার তবে বুঝতে পারছি না আসলে কি বলবো? আমি ভাবতে পারিনি এমন একটা দিন আসবে যখন কিনা আমার ছেলেকে আমার অতীত জানাতে হবে!

বলতে বলতেই জোহানা কেঁদে ফেললো, ইনাম মায়ের চোখের পানি মুছে দিয়ে বললো,
___আমি কিছু শুনতে চাইনা আম্মু। তুমি যা বলবে তাই হবে। প্লিজ তুমি স্থির হও!

জোহানা কি যেন ভাবলেন তারপর বললেন,
___ আমি একদম ঠিক আছি। দুপুরে তুমি আর তোমার বাবা কি খেয়েছো?

___আমি ভাত রান্না করছি আর বাবা মাছ ভাজছে। কিন্তু তোমার জন্য অপেক্ষা করতে করতে বিকেল পেরিয়ে যাচ্ছে কিন্তু আমরা এখনো খাইনি। চলো একসাথে খেয়ে আসি।

জোহানা উঠে কিচেনের দিকে চললেন। পেছনে তার ছেলে রসিদ সাহেবকে ডেকে এনে সেও চললো।



অন্যদিকে ঊষাও ভালো করে কিছুই জানেনা। শুধু জেনেছে ইনামের মা বিয়েতে রাজী না৷ তার বাবা তার মাকেও শুধু এইটুকুই বলছে নাকি।
এতদিন ভেবে এসেছিলো তার বাবা ইনামের কোনো ত্রুটি ধরে কিনা, কারণ ইনাম এখনো কোনো চাকরি করেনা, বাবার ব্যবসা দেখাশোনা করে এবং
পড়ালেখা কন্টিনিউ করছে। কিন্তু ঊষার ভাবনা উল্টো হলো, যেদিকে তার কোনো ভয় ছিল না সেদিক থেকেই বাধা আসছে। কিন্তু ঊষা ভীষণ নাছোড়বান্দা, যেকোনো মূল্যে নিজের ভালোবাসাকে হারাতে দিবেনা সে। কিন্তু অজান্তেই সে কান্না থামাতে পারছেনা, ইনামকে হারানোর কথা ঊষা এক মূহুর্তের জন্যও ভাবতে পারেনা। সত্যি সত্যি যদি ইনামের সাথে বিয়ে না হয় তাহলে সে একদম পাগল হয়ে যাবে। কারণ ইনামকে খুব ভালোবাসে ঊষা!

ঊষা ইনামের মতো এতোটাও সাদাসিধে না, যথেষ্ট প্রতিবাদী এবং একঘেঁয়ে, খুব জেদ তার। রাতে তার বাবাকে সে নিজেই জিজ্ঞাসা করলো ইনামের মায়ের মতামত বদলে যাওয়ার পেছনে তার বাবার কোনো হাত আছে কিনা। রোমান সাহেব সেই প্রশ্নটা যতো সম্ভব এড়িয়ে গেলেন। তারপর জোর গলায় বললেন…

___ তোমাকে আমি অন্যত্র বিয়ে দিবো, ইনামের চেয়ে অনেক ভালো ছেলের সঙ্গে!

তার বাবার কথা শুনে ঊষা রেগে গিয়ে চরম মতদ্বৈধতা করলো। চিৎকার করে করে বললো,
___পালিয়ে যাবো আমি, আমি ইনামের সাথে পালিয়ে যাবো বলে দিলাম। আমাকে আর কোথাও বিয়ে দিতে পারবেনা, যদি চেষ্টা করো তোমার নাক কাটা যাবে। অসম্মানিত হবে সবার সামনে।

রোমান সাহেব মেয়ের কথা শুনে হাসলেন, এতো অদ্ভুত হাসি ঊষা এর আগে তার বাবাকে হাসতে দেখে নাই। সে কিছুটা সংকোচে বললো,
___হাসছো কেন? বিশ্বাস হয়না পালিয়ে যাওয়ার মতো সাহস আমার আছে?

___ আমি চাই তুমি পালিয়ে যাও! কিন্তু ইনাম তোমার সাথে পালাবে তো ঊষা?

বলেই রোমান সাহেব আবার হাসতে লাগলেন।

___নিশ্চয়ই পালাবে! ইনাম আমার জন্য সব করতে পারে!

___এতো কনফিডেন্স তোমার? তাহলে ওরে ফোন দিয়ে পালিয়ে যাওয়ার ব্যপারে জানাও, ও যদি রাজী হয় তাহলে আমি কিছুই বলবোনা, কিন্তু রাজী না হলে আমি আমার পছন্দে তোমাকে অন্য জায়গায় বিয়ে দিবো। কারণ ইনামের মা যেটা চায়বেনা, সেটা আমিও চাইনা।

ঊষা বাবার দিকে একবার তাকিয়ে দৌঁড়ে নিজের রুমে গেলো, গিয়েই ইনামকে ফোন করলো। কিন্তু ওপাশ থেকে ব্যস্ত বলছে। ঊষা অনলাইনে গেলো, গিয়ে যা দেখলো সে বিশ্বাস করতে পারছিল না। ইনাম তাকে সব জায়গা থেকে ব্লক করে দিয়েছে। না না এটা কি করে হতে পারে ?
ইনাম কি করে তাকে ব্লক করে দিতে পারে!
কি হয়েছে ইনামের?
তাছাড়া তার বাবার অদ্ভুত হাসি, ইনামের এভাবে ব্লক করে দেওয়া, সব ঠিক থাকার পরেও ইনামের মা বিয়েতে অমত করার পেছনে কিছু তো আছে? কি কারণ থাকতে পারে? সে বুঝে উঠতে পারছেনা!
আরেকটা প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরছে, তার বাবা এই ব্যপারে কি করে শিওর হলো, ইনাম তার সাথে পালিয়ে যাবেনা।এতটা কনফিডেন্স উনার কি করে আসে? সত্যিই কি আছে এই পুরো ঘটনার পেছনে?
ঊষা কি করবে সত্যি বুঝতে পারছিলো না৷ বিকেলেই তো ইনামের সাথে কথা বলছিল ঊষা। এর মধ্যে কি হয়ে গেলো যার জন্য ইনাম তাকে সবখান থেকে দূরে সরাতে চাইছে। তাহলে ইনাম কি তার জীবনে আর থাকতে চায়ছে না? ভালোবাসায় পরিবর্তন নাকি কোনো বাধ্যবাধকতা?
.
.
পরেরদিন রোমান সাহেব যে শর্ত দিয়েছিল সেটার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেন। যখন জানলেন ইনাম পালাবে দূরে থাক, ঊষার সাথে কথা বলার সব মাধ্যম বন্ধ করে দিয়েছে, তখন তিনি ঊষাকে জানালেন তাকে নাকি বিকেলে পাত্রপক্ষ দেখতে আসবে। কিন্তু ঊষা তার বাবার কথাকে সে একদম পাত্তা দিলোনা৷ সে জানে তার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার বাবা কিচ্ছু করবেনা।
দুপুর পেরুতেই ঊষা ব্যাগ গুছাতে শুরু করলো, খাওয়াদাওয়া করে তৈরি হয়ে সুন্দর করে তার বাবাকে বললো,
___ বাবা আমি ইনামদের বাসায় যাচ্ছি। সে আমাকে সবখান থেকে ব্লক করেছে না? এবার দেখবো কি করে ফিরায়?

ততক্ষণে ঊষার মা এসব দেখে হাঁউমাঁউ করে বিলাপ শুরু করে দিয়েছে। কিন্তু রোমান সাহেবের চেহেরায় কোনো চিন্তার ভাঁজ নেই, তিনি যেন মেয়ের সিদ্ধান্তের উপর নারাজ নন। স্ত্রীকে আস্বস্ত করলেন এবং বললেন..
___ আমি ওদের পরিবারের মানুষজনদের ভালো করেই চিনি, আমার মেয়েকে ঠিক গ্রহণ করে নিবে। আর আমার মেয়ে কি কোনো কিছুতে কম নাকি, ঠিক মন জয় করে নিবে দেখো! এরপর আর আমার মেয়ে ছাড়া কিছু বুঝবেনা। শত হোক রসিদ সাহেবের তো কোনো মেয়ে নেই। সেই অভাব আমার মেয়ে পূরণ করবে!

ঊষা বাবা-মার থেকে দোয়া চেয়ে বের হয়ে গেলো।
অন্যদিকে ঊষা বের হওয়ার সাথে সাথে তার মা রেগেমেগে আগুণ। উনাদের ১২ বছর বয়সী একটা ছেলে এবং ঊষাকে নিয়েই ছোট্ট সংসার। মেয়েকে বড্ড বেশিই আদরে মানুষ করেছে, সেই মেয়েকে কিনা এতোটা অবলায় ফেলে দিচ্ছে, দেশে কি ছেলে কম আছে যে তাদের মন জয় করে তারপর বউ হতে হবে ! ঊষার মা মনে মনে এসব ভেবেই রেগে যাচ্ছে। কিন্তু রোমান সাহেব বুঝতে দিচ্ছেন না মেয়েকে যেকোনো ভাবে ইনামের সাথে বিয়ে তিনি পুরনো ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করতে চান। রোমান সাহেব স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বললেন..
___এভাবে অগ্নি দৃষ্টি দিয়ে আমাকে জ্বালিয়ে দিবার চিন্তা করছো নাকি?

___তাই করছি। আপনিই না বললেন ইনাম রাজী না হলে অন্য জায়গায় বিয়ে দিবেন। তারপর আজকে কোনখানের পাত্রপক্ষ নিমন্ত্রণ করলেন আবার মেয়েকে নিজেই ইনামদের বাসায় যাওয়ার জন্য হাসতে হাসতে অনুমতি দিলেন, আচ্ছা আপনারা মেয়ে আর বাবা মিলে কি করতে চাইছেন বলেন তো?

___ ঊষার মা, শান্ত হও। আমি ভালো করেই জানি আমার মেয়ের জেদ কতখানি। সে আমার কথায় কোনোদিনও বিয়ে করবেনা। তাছাড়া আজকে কোনো মেহমান আসছেনা। আমি অযথা এসব বলেছি, কিন্তু সেই কথা শোনার পরে ঊষা যে সিদ্ধান্ত নিলো আমি তো মনে মনে সেটাই চেয়েছিলাম। আর আমার মেয়ে আমার ভাবনার মতো সত্যি সত্যি ওদের বাসায় যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বসেছে। দেখো সব ঠিক হয়ে যাবে।

বলেই রোমান সাহেব হাসতে হাসতে ভেতরে চলে গেলেন। কিন্তু উনার স্ত্রীর রাগটা আরো তীব্র হতে লাগলো।

.
.
জ্যাম ট্যাম পার করে বিকেল গড়িয়ে যেতে লাগলো ঊষার পৌঁছাতে। এর আগে কখনোই আসেনি বাসায়। কিন্তু এই মহল্লায় এসেছে অসংখ্যবার, ইনামের মায়ের সাথে দেখা হওয়াকালীন উনি বাসায় নিতে চেয়েছিল অবশ্য কিন্তু ঊষা বলতো একদম বউ হয়েই ওই বাসায় যাবে। কিন্তু পরিশেষে আজ তাকে ঠিকই যেতে হচ্ছে সেটাও তাদের না জানিয়ে খুব বাজেভাবে। ঠিকানা জানা ছিল তার, কিন্তু খুঁজে পেতে পেতে একদম সন্ধ্যা হয়ে গেলো। শেষ পর্যন্ত বাসা খুঁজে পেলো এবং বাসা খুঁজে খুঁজে তখন সে হয়রান এতো বড় ব্যাগ নিয়ে খুব কষ্টে সিঁড়ি বেয়ে উঠে দরজার সামনে গিয়ে হাঁফাতে লাগলো। কলিং বেলে একসাথে দুইতিনবার চেপে ধরলো।

ভেতর থেকে জোহানা চায়ের কাপটা রেখে হাত দিয়ে দুকান চেপে জোরে বললেন,
___প্লিজ দরজাটা খুলো। ইনাম পাগল হয়ে গেছে বোধহয়! আজকে তুমি না গিয়ে ইনামকে একা পাঠালে, সে একা একা কাজের চাপে পুরো আউলে গেছে। যাও দরজা খুলো তারাতাড়ি।

রসিদ সাহেব গিয়ে দরজা খোললেন। সামনে ঊষাকে দেখে তিনি চোখ উপর নিচ করে বললেন,
___ জুহি আমার চশমাটা প্লিজ নিয়ে আসো, আমি মনে হয় চোখে সরষেফুল দেখছি!

ভেতর থেকে আওয়াজ আসলো,
___ কে এসেছে? ইনামকে আসেনি?

___ না ঊষা এসেছে (রসিদ সাহেব জবাব দিলেন)

জোহানা তড়িঘড়ি করে উঠে এলেন। এসে দেখেন সত্যি সত্যিই ঊষা এসেছে। তিনি এগিয়ে বললেন..
___সন্ধ্যা বাইরে অথচ তুমি ব্যাগ হাতে এখানে কেন?
বাসায় যাও, রাত হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিন বেলা থাকতে এসো। ভদ্র বাড়ির মেয়েরা সন্ধ্যায় কোথাও বের হয়না।

বলেই জোহানা দরজা বন্ধ করে দিলেন। দরজার সামনে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে তিনি আবার ভেতরে চলে গেলেন। রসিদ সাহেব দরজা খুলতে চেয়েও পারছেনা। জোহানা বুঝতে পেরেছে ঊষা কেন এখানে এসেছে। কিন্তু তার খারাপ লাগছে, এভাবে মুখের উপরে দরজা বন্ধ করে দেওয়া উচিত হয়নি। দরজা খুলবেন কিনা এটা ভেবেই অনেক্ষণ চলে গেছে। হয়তো ততক্ষণে ঊষা চলে গেছে, এরপরও জোহানা কি ভেবে গিয়ে দরজা খুললেন, দেখলেন ঊষা ব্যাগ নিয়ে দরজার সামনেই বসে আছে। তিনি যতটা অবাক হলেন তার চেয়েও বেশি মায়ায় পড়ে গেলেন, ঠান্ডার মধ্যে মেয়েটা একা একা দরজার সামনে বসে আছে। নিজেকে শক্ত করে তিনি ঊষাকে বললেন..
___ভেতরে এসো তুমি। রাতের বেলা একটা মেয়েকে একা বাইরে বের হওয়ার কথা বলার চিন্তাবোধ অন্য কারো আসলেও অন্তত আমার মাথায় আসেনা, যেটা এসেছিল সেটা তুলে নিলাম। ভেতরে এসো তুমি।

বলেই জোহানা ভেতরে চলে গেলেন। ঊষা এবার হাসলো৷ সে হাসতে হাসতে ব্যাগপত্র নিয়ে ভেতরে গেলো। তারপর জোহানার পেছনে ঘুরতে লাগলো। জোহানা এর মধ্যে বললেন.
___আমার সাথে বাম দিকের রুমটাতে তুমি থাকবে আজ, ডানদিকে যেওনা ওইদিকে ইনাম থাকে। কাল সকালেই চলে যাবে।

ঊষা এদিকে ওদিক তাকাতে তাকাতে বললো,
___কিন্তু আমি তো আর যাবোনা। এখন থেকে এখানে থাকার সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েই এসেছি আম্মু।

জোহানা অবাক হয়ে বললেন..
___আম্মু?

__ হ্যাঁ আপনি আমার আম্মু। আপনার ছেলের বউ হবোনা আমি? মনে নেই কয়েকদিন আগে আপনার সাথে দেখা হওয়ার সময় আমি আন্টি ডেকেছিলাম বলে আপনি রাগ করেছিলেন, তারপর বলেছিলেন কিছুদিন পর তো আপনার ছেলের বউ হচ্ছি তাই যেন আম্মু ডাকি। এখন ভুলে গেলেন?

জোহানা মাথা নেড়ে চলে গেলেন। রসিদ সাহেবের মুখে হাসি, ঊষা আসাতে তিনি যেন খুশিই হয়েছেন।
কারণ তিনিও চান সবকিছুর বিনিময় অন্তত ইনাম আর ঊষার ভালোবাসার যেন ফাঁটল না হয়।
জোহানার রান্নাবান্নার আয়োজনে ঊষা আগে আগে থাকছে, তাকে কিছুই করতে দিচ্ছেনা। এরপরও জোহানা কিছু না করতে জোর করছেন। আর বারবার বলছেন কাল সকালে চলে যাবে। কিন্তু ঊষা যাবেনা, তাকে কাজের মেয়ে করে পেটেভাতে রেখে দিলেও সে এখানেই থাকবে। এই বাড়ি ছেড়ে যাবেইনা একদম ।
জোহানাও এখন বুঝে গেলেন এই মেয়ে প্রচন্ড একঘেঁয়ে। কিন্তু তার এসব কান্ডকারখানা তার খারাপ লাগছে না। আম্মু আম্মু বলে সারাবাড়ি কয়েক ঘন্টায় মাতিয়ে ফেলেছে সে।

রাত ৯ঃ৩০ এর দিকে ইনাম আসলো। বেল বাজাতেই জোহানা উঠে দাঁড়ালেন এদিকে ঊষাও এগিয়ে গেলো।
জোহানা প্রথমে ঊষাকে দরজা খুলতে বারণ করেন। তারপর আবার কি ভেবে তিনি ঊষাকেই দরজা খুলতে বলে চলে গেলেন।
ইনামের বাড়িতে প্রথমবার তার জন্য দরজা খোলে দিতে ঊষার কেমন জানি লাগছে। ইনাম তাকে দেখে কি বলবে কে জানে। কাঁপা কাঁপা হাতে দরজাটা খুললো…

চলবে….