ঝরা পাতা পর্ব-২৫+২৬+২৭

0
1320

#ঝরা_পাতা🍂🍂
#Angel_Frozen_Nishi_khatun
#পর্ব_২৫

আয়াশ তারিফা কে উদ্দেশ্য করে বলে,”আজব মেয়ে তো তুমি?এই যুগে দাঁড়িয়ে ভুতে বিশ্বাস করো?”

তারিফা বলে,”আপনি তো বলছিলেন এবাড়িতে ভুত আছে।মানুষেরা বললে কিছুই না!আমি বললে যতো দোষ নন্দ ঘোষের!”

আয়াশ কিছু বলবে তার আগেই তারিফা বলে,”আপনার সাথে অযথা ঝগড়া করার কোনো ইচ্ছে নেই আমার।আমি যাই নতুন বউকে দেখে আসি।বেচারিকে এই দূরে থেকে ঠিক মতো দেখতেও পারি নাই।তারউপর আবার নতুন বউয়ের জ্ঞান হারিয়ে অবস্থা খারাপ হয়েছে।”

তারিফা বউ দেখতে এগিয়ে যাচ্ছিল তখন আয়াশ তারিফার হাধ ধরে হেচকা এক টান দেয়! তাতে তারিফা নিজের ব্যালেন্স রাখতে না পেরে আয়াশের বুকের উপর
লুটিয়ে পড়ে।

আয়াশ তারিফা কে নিজের সাথে জড়িয়ে রেখে ওর কানের কাছে ফিসফিস করে বলে,”নতুন বউ দেখার এতো কি আছে?দুদিন পর বউ এমনি তোমার চারপাশে মৌমাছির মতো ভনভন করবে।”

তারিফা আয়াশের কাছে থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে বলে,”আপনি দেখছি দিনে দিনে লুচ্চা টাইপের হয়ে যাচ্ছেন।”

আয়াশ ভ্রু কুঁচকে বলে,”লুচ্চা টাইপের মানে কি?
বউ আমার!সারাজীবন সাথে থাকতে চাইছো আর একটু কাছে আসবে না তা কি করে হয়?”

এমন সময় অরিন এসে বলে,”ভাবী তোমার আক্কেল জ্ঞান কেমন?নতুন বউয়ের এমন অবস্থা তুমি দাঁড়িয়ে বরের সাথে রোমান্স করছো?”

তারিফা বলে,”রোমান্স আর আমরা?তুমি যা ভাবছো মোটেই তেমন কিছু না।”

অরিন বলে,”তা যেমনি হোক আমার জানার ইচ্ছা নেই!এবার এসো বাড়ির বড় বউয়ের দায়িত্ব পালন করো।”

তারিফা অরিনের পিছনে পিছনে নতুন বউয়ের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে যায়।তারিফার তো নতুন বউ কে দেখে অবস্থা খারাপ। মমতা খান বলে,”আয়াজ বউমাকে কোলে করে তোমার রুমে নিয়ে যাও!হয়তো সারাদিন নানা রকম টেনশনের জন্য এমন উল্টাপাল্টা কাজ করেছে!”

আয়াজ নতুন বউকে কোলে করে তার রুমে নিয়ে চলে আসে।মমতা খান তারিফা কে বলে,”যাও দেখো ওদের কোনো কিছুর দরকার হয় কি না!”

তারিফা অরিন আয়াশ রোহান সাবাই একসাথে আয়াজের রুমে চলে আসে।
আয়াজ তার বউয়ের মুখে পানির ছিঁটেফোটা দিতেই ওর জ্ঞান ফিরে আসে।

নতুন বউয়ের জ্ঞান ফেরার পর চারপাশে তাকিয়ে দেখে আবারো ভুত ভুত বলে চিৎকার করতে শুরু করে দেয়।

আয়াজ তার বউকে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে বলে,”আরে এখানে কোনো ভুত নেই!তোমার মনের ভুল সবটা বুঝলে!”

নতুন বউ আয়াজের বুকের মাঝে মুখ লুকিয়ে সামনের দিকে হাতের আঙ্গুর দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে বলে,”ঐ যে ভুত!”

আয়াজ বলে,”ওখানে কোনো ভুত নেই তুমি দেখো,আরে এমন পাগলের মতো করে না।”

নতুন বউ রেগেমেগে বলে,”তোমাদের সামনে ঐ যে অর্ণা ভুত দাঁড়িয়ে আছে!তোমাদের চোখে পড়ছে না?”

আয়াজ বলে,”সুমু তুমি পাগল হয়ে গেছো?সামনে কোনো অর্ণা টর্না নেই আমার তারিফা ভাবী দাঁড়িয়ে আছে।”

সুমুর মুখে অর্ণার নাম শুনে আয়াশ বরফের মতো জমে গেছে।অরিন ভাবছে এই সুমু আপুর নতুন নাটকের শুরু হয়তো এটা।

আয়াশ হঠাৎ কি মনে করে তারিফার দিকে তাকিয়ে বলে,”হঠাৎ করে সুমাইয়া তোমাকে অর্ণা বলে সম্বোধন করছে কেনো তারিফা? ”

তারিফার কপালে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমেছে!
তারিফা তারপর শান্ত কন্ঠে উওর দেয়!যে সম্বোধন করছে তাকে জিজ্ঞাস করেন না।আমাকে কেনো আসামীর কাঠগড়াতে দাঁড় করিয়ে দিচ্ছেন?”

আয়াশ সুমাইয়া কে প্রশ্ন করে,”তুমি আমার ছোট ভাইয়ের বউ হয়ে এসেছো ভাল কথা!তবে আমার বউকে কেনো অন্য নামে সম্বোধন করছো?”

সুমাইয়া বলে,”আজবঘর তো!এই মরা মেয়েটা আপনার বউ হলো কি করে?”

তাই বলে সুমু তারিফার সামনে এসে বলে, “এই তুই মরার পর ভুত হয়ে ফিরে এসেছিস তাও আবার আমার শ্বশুরবাড়িতে কেনো?”

তারিফা সুমাইয়া কে বলে,”আমি তারিফা কোনো অর্ণা নয়!আপনার কোথাও কোনো ভুল হচ্ছে!”

সুমাইয়া তারিফার হাত ধরতেই মনে হয় ৪৪০ ভোল্টেজের ঝটকানি খায়।সুমু বুঝতে পারে এটা কোনো ভুত নয়!এতো জলজ্যান্ত মানুষ দাঁড়িয়ে আছে তার সামনে।এটা বোঝার সাথে সাথেই সুমু পাল্টি খেয়ে বলে,”আরে আয়াশ ভাইয়া আমি তো এতো সময় মজা করছিলাম।সরি মাফ করবেন! জানেন তো আমি মজা করতে কতো ভালোবাসি।”

আয়াশ রাগে জোড়ে চিৎকার দিয়ে ওঠে!ওর চিৎকারে পুরো বাড়িটা যেনো স্তব্ধ হয়ে যায়।পরিবেশ যেনো একদম স্তব্ধ হয়ে গেছে।কোনো সাড়াশব্দ নেই কোথাও।

আয়াশ বলে,”বেয়াদব মেয়ে জানো অর্ণার নাম শুনে আমি কতোটা শখ খেয়েছি। জানো ওর নাম শুনে আমার হৃদয়ের মাঝে কতোটা তোলপাড় শুরু হয়েছে?হৃদয়ের মাঝে ওঠা জোয়ারভাটার খবর তোমরা জানো না।”

সুমু এবার নরম শুরে বলে,”সত্যি যদি অর্ণা বেঁচে থাকে তাহলে কি করবেন?”

আয়াশ বলে,”জানি না!তবে যদি তাকে সামনে পাই তাহলে খুন করে গুম করে দিবো।ঐ মেয়েটার জন্য আমার জীবনটা একদম শেষ হয়ে গেছে।মেয়েটাকে আমি খুব ঘৃণা করি বুঝলে।”

সুমু ঘৃণার কথাটা শুনে শয়তানি হাসি দিয়ে তারিফার দিকে তাকিয়ে থাকে।

তারিফার পুরো চেহারার উপর একটা ভয়েরচিহ্ন দেখা যাচ্ছে। তারিফা এখন এই সময় মোটেই এসবের জন্য প্রস্তুত নয়।কিছুসময় মানুষের জন্য সত্যি বিড়ম্বনাময় হয়।

রোহান বলে,”এখানে এসব হচ্ছে টা কি?তারিফা আমার বোন +বান্ধবী হয় বুঝলেন। তাই অযথা আমার বোনকে নিয়ে কথা না বলা উওম!”

অরিন রোহানের দিকে ভ্রূ কুঁচকে তাকিয়ে বলে,”তারিফা তোমার কোন কালের বোন হয় তারিফা? যাকে বিয়ে করতে গিয়েছিলে তাকে আজ বোন বানিয়ে দিতে লজ্জা করছে না?”

রোহান বলে,”অরিন তোমার সাথে এ বিষয়ে পড়ে কথা বলছি!এখন একটু চুপ থাকো।”

অরিন বলে,”তোমাকে কে বলছে আগ বাড়িয়ে মানুষের সমস্যা মধ্যে লাফ দিতে।”

রোহান বলে,”অরিন এখন বাচ্চাদের মতো ব্যবহার করো না প্লিজ। ”

আয়াশ চিৎকার করে বলে ওঠে এখানে কি সিরিয়াল চলছে?যার যা ইচ্ছা হচ্ছে তাই বলে আমার কান-মাথা খাচ্ছ?

সুমাইয়া তারিফার হাত ধরে আয়াশের সামনে এনে বলে,”আপনি তো অর্ণা কে ঘৃণা করেন!তারিফা কে তো ভালোবাসেন!আচ্ছা একসাথে কখনো ঘৃণা আর ভালোবাসা সম্ভব? ”

আয়াশ বলে,”মানে কি?”

সুমু বলে,”অর্ণা ওরফে তারিফা ইসলাম অর্ণা। সার্টিফিকেটে নাম তারিফা ইসলাম। আর সবার আদরের ডাকনাম অর্ণা। ”

আয়াশ রক্তচক্ষু নিয়ে তারিফার দিকে তাকিয়ে থাকে।

সুমু বলে,”এই হচ্ছে আপনার দোষী আপনার অর্ণা উফফচ্ তারিফা হবে।”

অরিন তারিফা কে বলে,”আপনি অর্ণা? তাহলে এতো নাটকের কি দরকার ছিলো?”

আয়াশ তারিফার দু কাধ শক্ত করে ধরে জোড়ে ঝাকিয়ে বলে,”সুমু কি সত্যি কথা বলছে?আপনি অর্ণা? ”

তারিফা কান্নারত অবস্থায় বলে,”হ্যাঁ আমি অর্ণা!
তবে প্লিজ আমার কথা একটু শুনবেন তো প্লিজ!”

আয়াশ তারিফা কে ঝাঁকিয়ে ঝাঁকিয়ে বলে,”জানো মেয়ে তোমার জন্য হৃদয়ের মাঝে রক্তের নদী বয়েচলে!আমার পুরো দুনিয়া তুমি মিথ্যার চাদরে ঢেকে নষ্ট করে দিলে?আমার সুন্দর স্বপ্ন ভাঙ্গার এতো দরকার ছিলো?”

অর্ণা আয়াশ কে বলে,”প্লিজ আপনি আমার কথা তো একটু শুনবেন প্লিজ। ”

আয়াশ বলে,”কোনো মিথ্যাবাদী মেয়ের কথা কেনো তোমার ছায়া মাড়াতেও আমি রাজী না।”

তারিফা কে সরিয়ে আয়াশ সেখান থেকে চলে যায়।আয়াশ চলে যাবার পর অরিন বলে,”হায়রে দুনিয়া কার জন্য আমি সম্পর্কের ডোর নষ্ট করতে যাচ্ছিলাম।”

অরিন রোহানের হাত ধরে সেখানে থেকে নিজের রুমে নিয়ে চলে যায়।রোহান মোটেই অর্ণা কে এই সময় একা রাখতে চাইছিল না।কিন্তু কিছু সময় সত্যি কিছুই করার থাকে না।

সুমু বলে,”নিজের মৃত্যুর নাটকের কি কোনো দরকার ছিলো!আজও তুই ঝরাপাতার মতো ঝরে গেলি রে অর্ণা। সত্যি তুই ঝরাপাতা একটা।যার জীবনে সুখের গল্পটা ক্ষণিকর!”

অর্ণা বলে,”এসব কেনো করলি তুই সুমু?”

সুমু আর কিছু না বলে সোজা অর্ণার হাত ধরে রুমের বাহিরে রেখে মুখের উপর দরজা বন্ধ করে বলে,”আজ আমার বাসরঘর।”

সুমাইয়া সোজা ছুটে গিয়ে আয়াজ কে জড়িয়ে ধরে।




চলবে…..

#ঝরা_পাতা🍂🍂
#Angel_Frozen_Nishi_khatun
#পর্ব_২৬

আয়াজ সুমাইয়া কে নিজের থেকে দূরে সরিয়ে হঠাৎ করে সুমুর গালে একটা থাপ্পড় দিয়ে দেয়।
সুমু আচমকা এমন থাপ্পড়ের জন্য মোটাও প্রস্তুত ছিলো না।ছলছল নয়নে আয়াজের দিকে তাকিয়ে বলে,”তুমি আামাকে থাপ্পড় দিলে কেনো!”

আয়াজ বলে,”কেনো তুমি তা জানো না?এতো বেশি প্যাঁচাল পাড়তে কে বলছিল ওদের সাথে?তোমার জন্য কি আমার বাড়ির মানুষেরা সুখে থাকতে পারবে না।”

সুমু বলে,”তোমাকে পাবার জন্য এতো কাহিনী কেরেছি আমি!আজ কি না সেই তুমি আমাকে হেলা করছো?মানুষেরা ঠিকি বলে যার জন্য করি চুড়ি সেই বলে চোর।”

আয়াজ বলে,”চুরি করলেও তো মানতে পারতাম!
তুমি তো মানুষের খুশি ডাকাতি করো।যা বড় অন্যায়!”

_আয়াজ প্লিজ এমন করো না দেখো আমি সবটা তোমাকে পাবে বলেই করেছি!”

আয়াজ বলে,”প্লিজ তোমারা ঐ ঠোঁটের ফাঁক দিয়ে আমার নাম নিও না।বলে সোজা খাটের উপর কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমিয়ে যায়।”

সুমু সেখান পাথরের পাহালের মতো দাঁড়িয়ে আছে।
তার জীবনের খুশির দিনেও সে আজ খুশি হতে পারছে না সব দোষ এই অর্ণার।
,
,
এদিকে অর্ণা আয়াশের পেছনে পেছনে দৌড়ে যাচ্ছিল হঠাৎ করে সে শাড়ির সাথে পা পেঁচিয়ে ধপাস করে পড়ে যায়।তখন মাথা উচুঁ করে দেখে তার সামনে মরিয়ম খান দাড়িয়ে আছে।অর্ণা ভেবেছিল সে হয়তো তাকে সাহায্য করবে তাই ব্যাথায় কাতর হয়ে দাদীমা’র দিকে হাত বাড়িয়ে দেয়।
কিন্তু মরিয়ম খান অর্ণার হাত বাড়িয়ে দেওয়া দেখে একটু সরে দাঁড়িয়ে বলে,”তোমার মতো রাস্তার মেয়ে কখনো ভালো পরিবারের বউ হতে পারে না।যার বাবা মা’র পরিচয়ের ঠিক নেই সে কি করে আমার নাতিছেলের বউ হবে।এই শোনো মেয়ে এতোদিন জানতাম না যে তোমার বংশের পরিচয় নেই।এখন জানি তাই আজকের পর থেকে আমার দাদুভাইয়ের থেকে দূরে থাকবা। কিছুদিনের মধ্যেই আমি তোমাদের ডির্ভোসের ব্যবস্থা করবো বলে চলে যায়।”

অর্ণা এমনিতে মেঝেতে এমন করে পড়ে যাবার জন্য দু হাটুতে খুব ব্যাথা করছে!এদিকে দাদীর বলে যাওয়া সব কথা একদম কলিজার এপারওপার করে দিয়ে গেছে।এতো পরিচয়ের কি দরকার?
আমি মানুষ এটাই আমার বড় পরিচয়! আমার বাবা মা বংশের পরিচয় দিয়ে কি হবে?মানুষ নিজের পরিচয় নিজে বহণ করে।সে যতো ভালো বাড়ির মেয়ে হোক না কেনো!তার বংশ তার চরিএের উপর প্রভাব বিস্তার করতে পারে না।ঐ মেয়ের চরিএ ভালো কি খারাপ হবে তা সেই মানুষের নিজের হাতে থাকে।তাহলে এখানে বার বার আমার পরিচয় নিয়ে কেনো কথা শুনতে হচ্ছে? কেনো, কোনো?আর বিয়েটা কোনো ছেলেখেলা নয় যে কেউ এসে বলবে তোমাদের ছাড়াছাড়ি করিয়ে দিবো।এই বিয়েটা আমার ভাগ্যে বিধাতা লিখেছে।এই বিয়ের ভবিষ্যৎ আল্লাহ ছাড়া কেউ জানে না।তাই এই সম্পর্কের দায় তো সেদিন আমি আল্লাহর উপর ছেড়ে দিয়েছি। যেদিন নতুন করে আবারো বউ হয়েছি।তবে এবার আর কাউকে এতোটা অধিকার দিবো না যাতে কেউ আমাকে ঝরা পাতার মতো ঝরিয়ে দিতে পারে তার জীবন থেকে।

নিজের মনেরজোরের সামনে এই হাটুর ব্যাথা কোনো কিছুই না।অর্ণা খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ঠিকি নিজের রুমের সামনে এসে দেখে দরজা ভেতর থেকে আটকে রাকা।অর্ণা বাহিরের থেকে নক করে বলে,”দয়া করে দরজাটা খুলুন।আমাকে আমার সত্যিটা তো সামনে রাখতে দিন।আমি চাইনা আপনি আমাকে ভুল বোঝেন।আমি যে আপনাকে খুব বেশি ভালোবাসি।আমি কেনো অর্ণা থেকে তারিফা হলাম প্লিজ সেই গল্পটা তো একটু শুনবেন, প্লিজ আমার কথা একটু শুনুন। ”

দরজার ওপাশে থেকে কোনো সাড়াশব্দ আসে না।তাই দরজার সামনে হাটু ভাজ করে মুখ লুকিয়ে বসে থাকে।সত্যি জীবটা বড় অদ্ভুত। আপনার সুখের সময় দুঃখের সাগরকন্যায় রুপ নিতে খুব বেশি সময় নিবে না।খুশি কিছু সময়ের জন্য আছে।তবে দুঃখের সময় অনেক দীর্ঘ হয়।একদিকে তারিফা অর্ণা সে কথা জানার পর থেকে আয়াশ আর অরিন তার উপর খুব রেগে আছে।আর এদিকে অর্ণা এতিম বলে মরিয়ম খান তাকে স্বামী সংসার ছাড়া করবার প্লানিং করছে।কি করে সবটা ঠিক করবে তারিফা তার তার জানা নেই।সত্যি জানা নেই।বাস্তবতা বড়ই কঠিন। যে তার সম্মুখীন হয় সেই জানে এর ঝাঁঝ কেমন।

এদিকে অরিন রুমে এসে বলে,”যেই মেয়ের জন্য আমি আমার ভাইবোনের সম্পর্ক নষ্ট করে দিচ্ছিলাম।মেয়েটা সব কিছু জেনেও চুপচাপ মজা দেখছিল।কি ডেঞ্জারাস মেয়ে ভাবা যায়।সুইসাইডে মৃত্যুর নাটক করে। ”

রোহান বলে,”দেখো অরিন সবটা না জেনে কাউকে দোষী ভাবা উচিৎ না।আমাদের উচিৎ ছিলো ভাবীর থেকে তার কাহিনী শোনা!”

অরিন বলে,”এতো কাহিনী শোনার কোনো ইচ্ছা নেই আমার।আর তুমিও শুনতে যাবে না।ঐ মেয়ের কোনো বেপারে নাক গলাতে গেলে তোমার নাক কেটে দিবে বুঝলে।”

রোহান নিজের নাকে হাত দিয়ে দেখছে নাক না থাকলে কি হবে?

পরেরদিন সকালে আয়াশ দরজার খুলে দেখে অর্ণা দেওয়ালের সাথে হেলান দিয়ে ঘুমিয়ে আছে।আয়াশ চুপচাপ অর্ণা কে আড়াল করে বেড়িয়ে যায়।অর্ণার ঘুম ভাঙ্গতেই দেখে আয়াশ চলে যাচ্ছে।এমন সময় অর্ণা দৌড়ে গিয়ে পেছন থেকে আয়াশের হাত ধরে নিজের সামনের দিকে করে তাকে জড়িয়ে ধরে বলে,”প্লিজ আমাকে এভাবে ইগনোর করবেন না।আমি কেনো এমন করেছি একটু শুনুন তারপর না হয় আমাকে শাস্তি দিবেন। প্লিজ আমাকে আমার সত্যি বলার একটু তো সুযোগ দিন প্লিজ। ”

আয়াশ নিজের থেকে অর্ণাকে ছাড়িয়ে বলে,”please don’t touch me! তোমার স্পর্শেও আমার গা ঘিনঘিন করে উঠছে।তোমার ছায়াটাও মাড়াতে ইচ্ছা করছে না।প্লিজ দূরে চলে যাও!কেনো আসছো আমার জীবনের গল্পের পাতায়? আমার জীবনটাকে একদম শেষ করে দিহয়েছো তুমি।জানো এতোদিন তোমার মৃত্যুর খবর শুনে আমি কতোটা কষ্টের মাঝে বেঁচে ছিলাম?শুধু বার বার আল্লাহর কাছে দোয়া করতাম!
আল্লাহ মেয়েটাকে বাঁচিয়ে রাখলে কি হতো?
কিন্তু তুমি নিজের মৃত্যু নিয়ে যে ছলনা করলে তার ক্ষমা কোনোদিন ও পাবে না।আমি তোমাকে আমার চোখের সামনে দেখতে চাইছি না। just live me alone! ”

অর্ণা আয়াশের চোখে এতোদিন একটা মায়া দেখতো!আজ সেই চোখে ঘৃণা দেখতে পাচ্ছে।নিজেই এবার আয়াশের সামনে থেকে দু কদম পিছিয়ে আসে।

আয়াশ সেখান আর এক মুহূর্ত দেড়ি না করে সোজা ঢাকাতে তাদের বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যায়।

মরিয়ম খানের সাথে সুমাইয়া অর্ণার সামনে এসে দাঁড়িয়ে যায়।
মরিয়ম খান বলে,”বাবারে বাবা কি ডেঞ্জারাস মেয়ে ভাবা যায়।এতোদিন জানতাম নাটকবাজ মেয়ে আজ দেখছি পুরো ছলনাময়ী। ভাগ্যি তোর এই ছলনার জ্বালে আমার নাতিছেলে একদম লাড্ডু হয়ে যায়নি।
নয়তো তোর মতো মেয়ের থেকে দূরে সারতে খুব বেশি সময় লাগতো।এখন আমার ইচ্ছা পূরণের পথে আর কোনো কাটা রইলো না।”

অর্ণা অশ্রু সিক্ত নয়নে দাদীর দিকে তাকিয়ে আছে।আজ বেহায়া দু চোখ দিয়ে অঝরে পানির স্রোত বয়ে যাচ্ছে।

সুমাইয়া সকালে ঘুম থেকে উঠে বাড়ির সবার কাছে গিয়ে তারিফা যে অর্ণা সেই কাহিনী বয়ান করে এসেছে নিজের মতো করে!

দূরে থেকে আয়াজ আর রোহান সবটা দেখছে।
রোহান বলে,”এতিম হলে যে কতো জ্বালাপোড়া তা অর্ণাকে না দেখলে বুঝতাম না।যাদের সব আছে তারপর ও তারা এতিমের হক ছিনিয়ে নিতে চাই।
আচ্ছা সবাই মিলে কি একটু মেয়েটার সুখের ব্যবস্থা করে দেওয়া যেতো না?কিছু দোষ কি আড়ালে রেখে দেওয়া যায় না অন্যের ভালোর জন্য।”

আয়াজ বলে,”এই এপৃথীবতে সবাই স্বার্থপর।
আমিও এতিম তবে আমার বাবার টাকাপয়সা ছিলো বলে সমস্যা হয়নি।কিন্তু যাদের টাকাপয়সা থাকে না তাদের সমস্যা।তবে মেয়েটার সাথে এতো খারাপ হবে আগে জানতাম না।”

রোহান বলে,”পরিবার সাথে না থাকলে যে কতো কষ্ট তা মেয়েটাকে দেখেই বোঝা যাচ্ছে। ”

আয়াজ বলে,”এখন কিছু করা সম্ভব না।
বাড়িতে অনেক আত্মীয় স্বজন কেউ একটু জানতে পারলে কানাকানি শুরু হয়ে যাবে।পরিবারের সম্মান নিয়ে টানাটানি হোক এমটা চাইছি না।”

আয়াজ দাদীর কাছে গিয়ে বুঝিয়ে বলে,”পরিবারের এমন ঘটনা সবাই জানতে পারলে মান-সম্মান কিছুই থাকবে না!তাই পুরো ঘটনা এখানে চেপে যাওয়া উওম।পরে না হয় কবর থেকে তথ্য উঠিয়ে আবারো
বিচার করবেন!”

দাদীমা আয়াজের কথায় সম্মতি প্রকাশ করে।
অর্ণাকে চুপচাপ থাকার নসিহত দিয়ে চলে যায়।

এদিকে অশান্ত মন কে সাত পাঁচ বুঝিয়ে অর্ণা আয়াজের বৌভাতের সহ সব অনুষ্ঠান ঠোঁটের কোণায় মিথ্যা হাসির রেখা একেঁ বর ছাড়া সব অনুষ্ঠান পার করে।




চলবে…..

#ঝরা_পাতা🍂🍂
#Angel_Frozen_Nishi_khatun
#পর্ব_২৭

অনুষ্ঠান শেষে সবাই সবার বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে। দাদীমা আয়াজ সুমাইয়া সহ সবাই আয়াশদের ঢাকার বাড়িতে ফিরে যাচ্ছে।

অর্ণার মনের মাঝে দ্বিধা দ্বন্দ্ব কাজ করছে!সত্যি কি তার ঐ বাড়িতে ফিরে যাওয়া উচিৎ হবে?আয়াশ তো মোটেই তার কোনো কথা শুনতে রাজী নয়।অযথা তার সামনে গিয়ে সমস্যা সৃষ্টি করার কোনো মানে হয় না।এভাবে নিজের আত্মসম্মান বির্সজন দেওয়ার কোনো মানে হয় না।

অর্ণা সবার সাথে বাড়ি থেকে ঠিকি বাহিরে আসে তবে এবাড়ির কোনো গাড়িতে সে ওঠে না।সে তার লাগেজ নিয়ে একমনে হেঁটে বাড়ির বাহিরে চলে আসে।
কোথায় যাবে? কার কাছে যাবে?কোনো গন্তব্য সে খুঁজে পাচ্ছে না।আমি যে বড় একা মা মরে যাবার পর থেকে তো ঝরা পাতার মতো সবার অনাদরে বড় হয়েছি।

এখন আর কারো অবহেলা সহ্য করতে পারবো না।
নাহ জীবনের গল্পটা যে নতুন করে সাজানো হলো না!এই অর্ণা ছোটবেলা থেকে ঝরা পাতার মতো হয়ে রয়ে গেলো।

এসব ভাবতে ভাবতে অর্ণা যে কখন রাস্তায় মাঝ খানে চলে আসে তা নিজেও জানে না।হঠাৎ করে একটা গাড়ির সাথে ধাক্কা খেয়ে দূরে গিয়ে সিটকে পড়ে।

এদিকে রোহান আর আয়াজ হঠাৎ করে অর্ণার খোঁজ শুরু করে।বাড়ির কোনো গাড়িতে তার দেখা না পেয়ে দু জনে বাহিরে বেড়িয়ে পড়ে।সামনে কিছুদূর যাবার পর তারা দেখে রাস্তার একপাশে প্রচুর মানুষের ভিড়। তারা দু জন দ্রুত পা চালিয়ে সেখানে ভিড় ঠেলে সামনে গিয়ে দেখে অর্ণা রক্তাত্ত অবস্থা পড়ে আছে।

তাড়াতাড়ি করে দু জনে মিলে অর্ণাকে ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে আসে।ডাক্তার অর্ণার ক্ষত স্থানে ড্রেসিং করে ব্যান্ডস করে দেয়।অর্ণার শরীর থেকে প্রচুর রক্ত বয়ে গেছে তাই ওর রক্তের প্রয়োজন।রক্ত দিতে হবে তাহলে তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে।কিছুসময় পর একজন বাহিরের মানুষ এসে আড়ালে থেকে অর্ণা কে রক্ত দিয়ে চলে যায়।

আয়াজ আর রোহান রক্তের ব্যবস্থা করতে ছোটাছুটি শুরু করে দেয়।তখন একজন এসে বলে আপনাদের রোগির শরীরে রক্তের ব্যবস্থা হয়ে গেছে।

এমন সময় মমতা খান সেখানে এসে বলে,”এমন মেয়ের জন্য এতো ছোটাছুটি করার কি আছে।এই আপদ মরে গেলে আমার ছেলের জীবনটা বেঁচে যায়।”

রোহান বলে,”আম্মা আপনার ও আল্লাহ একটা মেয়ে দিয়েছে! আল্লাহ না কুরুক আপনার মেয়ের সাথে যদি এমন কিছু হতো তখন পারতেন এভাবে খারাপ দোয়া করতে?”

মরিয়ম খান বলে,”থাক নাতিজামাই তোমার বেশি কথা বলার দরকার নেই।জামাই বাড়ির জামাই এর মতো থাকলেই চলবে!”

সুমাইয়া এসে বলে,”দেখছেন দাদীমা কেমন ডেঞ্জারাস মেয়ে!আয়াশ ভাইয়ের good book এ থাকার জন্য কেমন এক্সিডেন্ট এর নাটক করছে।এ মেয়ে নিজের স্বার্থসাধনের জন্য নিজের কোনো ক্ষতি করতেও পিছপা হবে না।”

আয়াজ এসে সুমু কে বলে,”আর যদি একটাও উল্টাপাল্টা কথা বলছো তো তুমি সারাজীবনের জন্য আমাকে হারাবে কিন্তু। ”

সুমু আয়াজের কথায় একটু ভয় পেয়ে চুপচাপ পাথরের মতো দাঁড়িয়ে থাকো।

আয়াজ আর রোহান ছাড়া বাকি সবাই বাড়িতে ফিরে যায়।পরেরদিন রোহান ডাক্তারের সাথে কথা বলে জানতে পারে তেমন কোনে সমস্যা হয়নি একটু মাথায় আঘাত লেগেছে।কিছু মেডিসিন লিখে দিয়েছি নিয়মিত খাওয়ালে সুস্থ হয়ে যাবো।তারা তাদের রোগীকে বাসায় নিয়ে যেতে পারবে সমস্যা নেই।

আয়াজ আর রোহান অর্ণার কাছে গেলে অর্ণা চুপচাপ থাকে।আসলে অর্ণার কিছুই বলার নেই এখন এমন অসুস্থ অবস্থায় তার পক্ষে যে কোনো স্থানে যাওয়া সম্ভব না।তাই অর্ণা চুপচাপ নিরবতা পালন করছে।

আয়াজ বলে,”ভাবী হয়ে ঐ বাড়িতে যেতে সমস্যা হতে পারে কিন্তু আমার বোন হয়ে ভাইয়ের সাথে যেতে তো সমস্যা নেই?”

অর্ণা সেখানে হাউমাউ করে কান্না করে দেয়।
একটুপর তারা তিনজন বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়।


খান বাড়ির দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে অর্ণা তবে আজ সে আর তারিফা নয়!অর্ণা নামে এবাড়িতে প্রবেশ করছে।

বাড়ির ভেতরে আসার পর কেউ অর্ণার সাথে কথা বলে না।সবাই অর্ণাকে দেখে মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে মুখ করে বসে থাকে।অর্ণা জানে কেউ তাকে দয়া দেখাতে আসবে না।তাই অযথা অন্যের সহানুভূতির আশায় বসে থাকার কোনো মানে হয় না।যার মনুষ্যত্ববোধ কাজ করবে সেই আসবে আমার সাথে দেখা করতে।

অর্ণা সোজা উপরে নিজের রুমে গিয়ে দরজা আশায় রেখে বাথরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিছানার উপর শুয়ে পড়ে।মনে মনে চিন্তা করতে থাকে।নিজের বিয়ে করা বর যখন অসুস্থ বউয়ের খবর রাখে না তখন তার বাড়ির আর অন্য সদস্যদের থেকে কি বা আশা করা যায়।এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে চোখ লেগে আসে সে নিজেও জানে না।

সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখে ওর বেডের পাশের টেবিলের উপর নানারকম ফলমূলাদি, দুধের গ্লাস, সকালের নাস্তা। এসব দেখে ভাবে এতো সকালে এতোকিছু কে রেখে গেছে?আয়াজ না রোহান? না রোহান তো কালকেই বাড়িতে ফিরে গেছে।আর আয়াজ বিনা অনুমিত তে আমার রুমে আসবে না
তাহলে কি আয়াশ এসেছিল?অর্ণা নিজেকে বলে,”তুই পাগল হয়ে গেছিস রে অর্ণা যে বর বউ অসুস্থ থাকলে খবর নেই না সে রেখে যাবে এসব তাই না?তুই এসব আকাশ কুসুম চিন্তা ভাবনা বাদ দে।”

অর্ণা এসব ভেবেই নিজে হাসতে থাকে।তারপর ফ্রেশ হয়ে এসে খাবার খেতে থাকে।এসব খাবার যার ইচ্ছা হয়ছে রেখে গেছে।এখন এসব খাবার খেয়ে সুস্থ হলেই হলো।এতো গোয়েন্দাগিরি করার দরকার নাই আমার।

সকালে নাস্তা করার পর আর রুমের বাহিরে যায় না অর্ণা। আসলে সবার সামনে যেতে ইচ্ছা করছে না।
এতো অবহেলা অপমান আর নিতে পারছিল না।সারাদিন রুমেই ছিলো।দুপুরবেলা বাড়ির কাজের মেয়ে এসে অর্ণার রুমে খাবার রেখে যায়।অর্ণা কিছু জিজ্ঞাস করার আগেই সে বাতাসে গতিতে চলে যায়।

অর্ণা বলে, “বাব্বাহ! রুমে বসে বসে ফ্রি তে খবারের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে কে জানতে হচ্ছে তো?কার এতো দরদ হলো আমার প্রতি যে আমার খাবার সময় মতো রুমে দিয়ে যাচ্ছে! ”

রাতের বেলা অর্ণা চুপচাপ ছাদের এর কোণায় গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে।তখন পেছনে অপজিট সাইডে থেকে আয়াশ বলে ওঠে,”তা আপনার শরীরে অবস্থা কেমন?”

অর্ণা আয়াশের কন্ঠ শুনে পিছরে ফিরে দেখে আয়াশ অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে।ছাদে লাইটিং করা তাই সেই আলোতে খুব স্পষ্ট আয়াশের বিষন্ন চেহারা দেখা যাচ্ছে।

অর্ণা মনে মনে কি মনে করে খুশি হয়ে মুচকি হেসে উওর দেয় আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো।

আয়াশ বলে,”কারো পুরো দুনিয়া অন্ধকার করে তুমি কি করে ভালো আছো?আচ্ছা ঘুরেফিরে তুমি আমার জীবনটা নষ্ট করতে এসেছো কেনো?কারো উপকার করা কি খুব খারাপ? আমি তোমার সাথে কোনো খারাপ কিছু করি নাই তারপর ও তুমি আমার সব কিছু উল্টাপাল্টা করে দিচ্ছ কেনো বলতে পারো?

অর্ণা বলে,”আমি আপনার জীবনটা নষ্ট করি নাই।দোষ তো আমার ভাগ্যের! যে বার বার আপনার সামনে এসেই সমাপ্তি হয়।এখানে আমার দোষ কোথায়? ”

আয়াশ বলে,”দোষ তোমার না! দোষ আমার।আমি বার বার নিজের জিদের বসে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।এবারো জিদের বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।তবে আমাকে বিয়ের জন্য বাধ্য তুমি করেছিলে মিস অর্ণা ওহ সরি তারিফা।”

অর্ণা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকে তা দেখে আয়াশ আবারো বলে,”একটা কাজ করো!আমাকে প্লিজ তোমার থেকে মুক্তি দাও।আর যাই হোক তোমার মতো মেয়ের সাথে সম্পর্ক রাখা সম্ভব না বলে আয়াশ চলে যায়।”

অর্ণা চুপচাপ দাঁড়িয়ে মুচকি হেসে বলে,”বিয়ের সম্পর্কটা পবিত্র সম্পর্ক! আমি চাইলেও তোমাকে মুক্তি দিতে পারবো না।আমি তোমার সব অভিমান ভেঙ্গে দিবো দেখে নিও।আমি চাই না অবেলায় গাছের পাতার মতো ঝরে যেতে।আমি আমার সম্পর্ক ঠিক করার সর্বচ্চো চেষ্টা করবো বাকিটা আল্লাহ ভরসা।”



চলবে……