ডেভিল পর্ব-১৪+১৫

0
444

#ডেভিল
#জয়ন্ত_কুমার_জয়

[14]

আপনিইইই

চমকে উঠলে যে?অন্যকাউকে আশা করেছিলে বুঝি?

না ঠিক তা না

সঠিকটা কি তাহলে

কিছু নেই। আমি ভাবতেও পারছি না নীল ভাইয়া আপনি

অনেক সময় না ভাবার অনেক কিছু হয়ে যায় বুঝছো

আমি আপনার মতো ডেভিলকে বিয়ে করতে পারবো না

কিন্তু আমি তো করবো

এএএ বললেই হলো নাকি

আমি যা বলি সেটাই করি।তোমার ঠোঁটে কি যেন পড়েছে দারাও আমি মুছে দিচ্ছি

না থাক! আমি নিজেই পারবো(লুচু কোথাকার)

এখানে ঝগরা করতেই থাকবা নাকি যাবো, নইলে বাহিরে সবাই ভাববে

আপনায় কে আটকেছে শুনি

যাওয়ার আগে একটা সারপ্রাইজ দিবো

আমি নিবো না

তোমায় তো নিতেই হবে। চোখ বন্ধ করো

না নিবো না

চোখ বন্ধ করো বলছি(রাগি সুরে)

করছিতো রাগার কি আছে ভালো করে বললেই তো হয়

ওনার কথায় চোখ বন্ধ করলাম। হঠাৎ করে ঠোঁটে স্পর্স পেলাম।হারামিটা এবার ঠোঁটে কামর দিছে,চোখ খুলে ছটফট করছ কিন্তু শয়তানটা ছেড়ে দিচ্ছে না। একটু পর ছেড়ে দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো।আয়নায় দেখলাম আমার গোলাপি ঠোঁটটা হারামিটা কামর দিয়ে লাল করে দিছে।আস্ত একটা উগান্ডা। স্বাভাবিক হয়ে বাহিরে বেড় হলাম।যেনো ভাজা মাছটা উল্টে খেতে পারিনা। উর্মি আমার কানে কানে বললো কিরে আপু ভাইয়ার সাথে কি কি করলি এতোক্ষণ ধরে?_এমন একটা চর দিবো গাল কমলা লেবু হয়ে যাবে।উর্মি হলো আমার কাজিন।মা একটু পর মা আমায় রুমে নিয়ে এলেন।রুমে আমি আর আমার কাজিন ভাই বোনরা মিলে হৈচৈ করছি।কাজিনরা সবাই একসাথে হলে আমাদের একটাই কাজ,সেটা হলো হাসা,অনেক হাসা,কারনে অকারনে হাসা,খুব হাসা,কান্নার কথাতেও হাসা।এখন আমরা সেই কাজটাই করছি।

ওদিকে

বেয়াই মশাই আমি যতো তারাতারি সম্ভব আমার বউ মা কে নিয়ে যেতে চাই

হ্যা তা তো নিয়ে যাবেনি। আমি বলছিলাম কি

আরে মশাই বলুন

না মানে

আর কয়েকদিন পর আমরা বেয়াই হচ্ছি এতো কি ভাবছেন বলে ফেলুন

আসলে আমি বলছিলাম কি দেনা পাওনাটা

আরে মশাই আমরা কিচ্ছু চাইনা,শুধু আপনার ঘরের লক্ষিকে আমাদের ঘরে দিয়ে দিন তাহলেই হবে হাহাহাহা

হ্যা তা অবশ্যই

বুঝলেন তো বেয়াই যতো সামনের দিন তারিখেই কাজটা সেরে ফেলতে চাচ্ছি কি বলেন

হ্যা কোনো সমস্যা নাই আপনারা যা বলবেন



নীল__বাবা তোমরা কথা বলো আমি একটু আসতেছি

আসতেছি মানে কি? কই যাবি?

বাহিরে একটা কাজ পড়ে গেলো ওখানেই যেতাম

একটু পড়ে যা

বাবা খুব জরুরি

আচ্ছা ঠিক আছে।

ওখান থেকে বেড় হয়ে আসলাম মিথ্যা অজুহাত দেখিয়ে। আসলে এই শার্ট পড়ে এতোক্ষণ বসে থাকাটা বোরিং ফিল করছিলাম তাই চলে আসার একটা ওয়ে খুজছিলাম।যাই হোক বাইরে দারিয়ে একরা সিগারেট মুখে দিতেই ফোনটা বেজে উঠলো

দোস্ত নীল কই তুই (জয়)

নেহাদের বাসায় কেন কি হইছে

অনেক বড় ঝামেলা হয়ে গেছে

কি ঝামেলা?

সেটা পড়ে বলবো আগে তারাতারি আয়

বলেই ফোনটা কেটে দিলো।আরে কোথায় যাবো সেটাই তো বললো না।২বার ফোন দিলাম রিসিভ করলো না।ীয় বার ফোন ধরতেই

দোস্ত তারাতারি আয়

আরে বেডা কোথায় তুই সেটা তো বল

কলেজ ক্যাম্পাসে,দোস্ত তারাতারি আয়

আমি আসতেছি একটু ওয়েট কর

এরপর ওখান থেকে একটা রিক্সা ধরে ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছি। আর ওই তো জয়।সাথে রাজ,অভিও আছে দেখছি।কি হয়েছে ওদের?এগুাল ভাবতে ওদের সামনে রিক্সা দার করালো।জয় আমায় রিক্সা থেকে টেনে নামিয়ে যেতে লাগলো।

এই জয় কি হইছে টা কি?

দোস্ত তারাতারি চল আমার জীবন মরনের প্রশ্ন এটা

আচ্ছা চল

ও টানতে টানতে ক্যাম্পাসের পুর্ব দিকে নিয়ে আসলো।

দোস্ত ওই দেখ দীপা কোন একটা ছেলের সাথে বসে আছে।দোস্ত তুই কিছু একটা কর দোস্ত (জয়)

মানে কি

মানে হলো আমি দীপাকে ভালোবাসি

কিহ? তুই আর ভালোবাসা? হাহাহাহাহা

দোস্ত এটা মজা না সত্যি বলতেছি।আমি সত্যি দীপাকে ভালোবেসে ফেলছি

তো এই কারনে আমায় ডাকলি?

হুম

আমার মন কি চাইতাছে জানিস? মন চাইতাছে তোরে থাপড়াইতে থাপড়াইতে

বন্ধু পরে যতো ইচ্ছে মারিস এখন কিছু একটা কর,আমার বুকে লাগতেছে

তা তুই যে ওকে ভালো বাসিস এটা বলছোস?

না, সাহস পাই না তো। প্লিজ কিছু একটা কর,ওই ছেলেটার সাথে ওর রিলেশনটা যেনো না হয় সে ব্যবস্থা তোরেই করতে হবে।

সেগুলা কোনোদিন ও করিনাই সেগুলা তোদের জন্য আজ করতে হচ্ছে।একটা সিগারেট ধরিয়ে ওদের সামনে যেতেই দীপার সাথে যে ছেলেটা ছিল ওই ছেলেটা

ভাই কেমন আছেন?

আরেহ রনি তুমি, হুম ভালো আছি তুমি কেমন আছো

জ্বী ভাইয়া ভালোই আছি।ভাইয়া এই হলো আমার বোন দীপা (দীপাকে দেখিয়ে)

ভাইয়া আমিতো নীল ভাইয়াকে চিনি(রনির উদ্দশ্য বললো দীপা)

দীপা তুমি তাহলে রনির বোন,আমি তো জানতামি না

ভাইশা আপনার সাথে দেখা হয়ে কি যে ভালো লাগছে(রনি)

আমারো,আর তোমায় আর দেখি না যে কই থাকো

ভাইয়া আমিতো আমোরিকায় থাকি ওখান থেকে পড়ছি,আজকেই দেশে ফিরলাম তাই ভাবলাম দীপার সাথে দেখা করে যাই

ও ভালোই করছো।তাহলে তোমরা গল্প করো আমি যাই

চলেন না চা খেয়ে আসি,অনেক দিন থেকে আপনার সাথে একটু আড্ডা দেওয়া হয় না।প্লিজ ভাইয়া

আচ্ছা ঠিক আছে চলো।

ওর কথায় রাজি হয়ে গেলাম।কারন ওকে নিয়ে গেলে জয় কিছুটা সময় পাবে দীপাকে কিছু বলার।জয় গাছের আড়াল থেকে সব দেখছে।ওকে ইশারা দিয়ে রনিকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম।এমন সময় বাবা ফোন দিলো

হ্যা বাবা বলো

কোথায় তুমি?

এইতো একটু কলেজের দিকে আছি

বাসায় এসো

আচ্ছা বাবা।ঠিক আছে রাখি

বাবাকে আমি অনেক ভয় পাই।তাই রনিকে বিদায় জানিয়ে বাসায় উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। রনি খুব ভালো ট্যালেন্টেড একটা ছাত্র। অনেক মিশুক।আমার এক বছরের জুনিয়র কিন্তু ওকে আমি অনেক ভালোবাসি।বাসায় আসতেই বাবাকে দেখলাম পেপার পড়ছে।

বাবা কিছু হইছে? এভাবে ডাকলে যে

যে কাজে গেছিলে সে কাজ শেষ?

হ্যা শেষ

নীলা মার্কেটে যাবে,নিজের জন্য কিছু শপিং করবে, ওকে নিয়ে যাও

বাবা ও তো একাই যেতে পারে আমার যাওয়ার কি দরকার

ও একা কেনো যাবে যদি রাস্তায় কোনো বিপদ হয় তখন

আচ্ছা ঠিক আছে যাবো

বিরক্তভাব নিয়ে রুমে গিয়ে ফোন টিপছি এমন সময় নীলা আমার হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিলো।মেজাজটা খারাপ হয়ে গেলো।রেগে ওর চুল টানতে লাগলাম।নীলা চিল্লিয়ে বাবাকে ডাকতেই চুপ করে বসলাম।

হাহাহাহা তোকে টাইড দিতে হয় কিভাবে আমি জানি

অনেক পাকনাকি করছিস আজকাল

এখন চল।অনেক দেরি হইছে

বাবা বলছে এজন্য যাচ্ছি নইলে

বাসা থেকে রওনা হয়ে রিক্সায় যাচ্ছি।হঠাৎ মাথায় একটা বুদ্ধি এলো।আচ্ছা নেহাকে আনলে কেমন হয়? ওকে অনেক জ্বালানো যাবে।কিন্তু আনবো কি করে,উম উম পেয়েছি

আচ্ছা নীলা তুই একা একা শপিং করতে পারবি?

আমি তো একাই শপিং করি, না পারার কি আছে

না মানে তোর কোনো বান্ধবী থাকলে নিতে পারিস তাহলে তোর ড্রেস চয়েস করে দিতে পারবে

চয়েস করে দিবে তাই না? বুঝছিতো তলে তলে এতো কিছু

বুঝছিস যখন তখন এতো কথা না বলে কাজটা করলেই তো পারিস

হুম পারি তবে বিনিময়ে আমি কি পাবো

আইসক্রিমের দোকান কিনে দিবো খুশি

খুব খুশি।দারা হবু ভাবিরে ফোন দিই

আমি যে গাড়ি চালাচ্ছি সেদিকে নিজের কোনো খেয়াল নেই, এক নজরে লুকিং গ্লাসে নেহাকে দেখছি।আজ নেহাকে অনেক মায়াবি লাগছে।চোখে হালকা কাজল দিয়ে আরো মায়াবি লাগছে।খোলা চুল যেনো সুন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিচ্ছে। বাতাসে অবাধ হীন চুলগুলা কোনো বাধা না মেনে মুখের ওপর পড়ছে,আর নেহা হাতের আলতো ছোঁয়ায় চুলগুলিকে সরিয়ে দিচ্ছে। খুব ইচ্ছে করছে ওর চুলগুলো সরিয়ে দিতে,কিন্তু পারছি না।হঠাৎ আমার আনমনা ঘোর কাটিয়ে নেহা চেচিয়ে বললো এই ভাইয়া সামনে দেখেন,,সামনে তাকিয়ে দেখি একটা বাস দার করানো।সাথে সাথে ব্রেক করলাম।নীলা,নেহা দুজনেই অনেক ভয় পেয়েছে।নেহাতো ভয়ে কান্না করা শুরু করেছে।

কোথায় মন থাকে হ্যা? যদি কিছু হয়ে যেতো? (কান্না আর ভয়ে মিশ্রত কন্ঠে)

কিচ্ছু হবে না আমি আছি তো

তুই আছোস জন্যই তো ভয় (নীলা)

চুপ(নীলাকে ধমক দিলাম)

ও তো ঠিকি বলেছে,গাড়িতে ওঠার পর থেকে দেখছি আপনি কেমন ন্য মনস্ক হয়ে আছেন।এখন কি অবস্থা হতো ভাগ্যিস আমি চিল্লাইছিলাম নইলে (নেহা)

উফফ সব তো তোমার জন্যই হইছে,তোমায় দেখতে গিয়েই তো (ও মাই গড, কি বলে ফেললাম এটা, ওহহ সিট)

মানে? আনায় দেখতে গিয়ে মানে টা কি?

না কিছু না

কিছু না মানে? আমার দেখতে আপনি কি যেনো বললেন

বললাম তো কিছু না

কি ভেবেছেন মিঃ আপনি যে লুকিং গ্লাসে আমায় দেখছেন এটা আমি বুঝিনি ভেবেছেন? কিন্তু গাড়ি চালানোর সময় এটা

তোমার চুলে একটা আরশোলা ঘুরছিলো সেটাই দেখছিলাম(কথাটা কাটানোর জন্য)

কিহ্? আরশোলা? ও মাগো কে কোথায় আছো গো বাচাও গো,মরে গেলাম গো, আআআআআআআআ

চোখ বন্ধ করে একতালে চিল্লিয়ে যাচ্ছে।

আরে থামো বলছি কানটা ফেটে যাবে মনে হচ্ছে।কথাটা বলার সাথে নেহা আমার তার সর্বোশ্য শক্তি দিয়ে জরিয়ে ধরলো।ভয়ে এখনো চোখ বন্ধ করে আছে।নেহা একদম পিচ্চিদের মতো করছে।ভয়ে আমার বুকে মাথা লুকিয়ে আছে।ওর কানে ফিসফিস করে বললাম_আমিতো এমনিতেই মজা করে বললাম পাগলি_কিহ্, ওরে শয়তান পোলা, দারান আজ আপনার একদিন কি আমার একদিন।বলেই আমার বুকে,গায়ে হাজারো কিল ঘুসি মারতে লাগলো।আমি কিল ঘুসি খেয়ে ওকে জরিয়ে ধরলাম।নেহাও আমার বুকে চুপটি করে আছে।বুঝতে পারলাম নেহাও আমায় ভালোবাসতে শুরু করেছে।পিছন থেকে নীলা এতো সুন্দর একটা রোমান্টিক মুহুর্ত ভেস্তে দিলো।

রোমিও জুলিয়েটের প্রেম কি শেষ হয়ছে?হলে এখন যাওয়া যাক(নীলা)

নীলার কথা শুনে নেহা স্বাভাবিক হয়ে বসলো।লজ্জায় মুচকি মুচকি হাসছে।

একটু পর শপিং মলে পৌছালাম।গাড়ি পার্ক করে নেমে দেখি নীলা নেহার হাত ধরে মলে ঢুকলো।হায় রে! মাসে ২বার করে শপিং করে তবুও এতো ইক্সাইটমেন্ট?? কি আর করার মলে ঢুকলাম।সিড়ি দিয়ে উঠতেই একটা মেয়ের সাথে ধাক্কা খেলাম।মেয়েটাকে সরি বলে পাশ কাটিয়ে চলে গেলাম।নীলা,নেহাকে তো কোথাও দেখছি না।এতো বড় শপিং মলে কোথায় খুজবো এখন? ধুর ওদের তো একাও ছাড়া যাবে না।ফোন করে দেখি কোথায় ওরা

হ্যালো

হ্যা ভাইয়া বল

ওইই কই তুই,কতো খুজতেছি পাচ্ছি না

আমরা ৩য় তলায় আরোহী কালেকশনের পাশেই

ওখানেই দারা।আমি আসছি

ইসস রে আমার রোমিও ভাইটা ভাবিরে দেখার জন্য কতো..

বাজে কথা বাদ দিয়ে যা বললাম তাই কর,ওখানেই দারা

নীলা খুব বেশি বকবক করছে।বাসায় গিয়ে ওর ব্যাবস্থা নিবো।একটা চকলেট ও দিবো না।৩য় তলায় উঠতেই নজর পড়লো কয়েকটা ছেলের ওপর।৪_৫ টা ছেলে একটা মেয়েকে ঘিরে নানান অসভ্যতামি করছে।এটা দেখার পর আর ঠিক থাকতে পারলাম না।ওখানে গিয়ে একটা ছেলের শার্টের কলার ধরে একটা চড় বসিয়ে দিলাম।

চলবে?

#ডেভিল
#জয়ন্ত_কুমার_জয়

[15]

ছেলেটাকে চড় মারার সাথে সাথে সাথে বাকি ৪টা ছেলে আমার দিকে তাকালো।ওখানকার মধ্যে একজন বললো কে বে তুই? তোর সাহস হয় কি করে ওকে চড় মারার? জানিস ও কে?

ওর কথা শুনে রাগ আরো বেড়ে হেলো।ওর গালেও একটা বসিয়ে দিলাম।ওদের সাথের ছেলেগুলা পালালো।যে দুজনকে চড় মারলাম শুধু ওরা গালে হাত দিয়ে দারিয়ে আছে।

শোন তোদের হেডকে বলে দিবি তোদের নীল মেরেছে,বুঝেছিস? আর এ শপিং মলের আশেপাশে যেনো না দেখি।নীল সবাইকে একটা সুযোগ দেয়।

বলে ওখান থেকে চলে আসলাম।পিছন থেকে একটা মেয়ে ডাকলো

এই যে ভাইয়া শুনছেন?

আমাকে বলছেন? (পিছন দিকে ঘুরে)

জ্বী আপনাকেই

হুম বলুন

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ

কেনো?

ওই ফাজিল লোফার ছেলেগুলার হাত থেকে রক্ষা করার জন্য

সাবধানে থাকবেন

ভাইয়া আপনার নাম্বারটা দিবেন?

সরি

নিজের জন্য চাচ্ছি না যদি ওই বদমাশ গুলা আবার পিছু নেয় তাহলে আপনাকে ফোন দিবো।প্লিজ ভাইয়া

ঠিক আছে।

তারপর মেয়েটাকে নাম্বার দিয়ে নীলাকে খুজতে লাগলাম।মেয়েটাকে সুবিধার মনে হচ্ছে না।যাই হোক,ওই তো নীলা আর নেহা।ওদের কাছে গিয়ে দেখলাম এত্তোগুলা জামা কিনেছে আর এদিকে আরো পছন্দ করছে তো করছেই।এগুলা দেখে আমি অবাক হয়ে যাচ্ছি।ওদের বডিগার্ড হয়ে থাকতে বিরক্তি লাগছে তাই নীলাকে আলাদা ডাকলাম–

সারা মলটা কি কিনবি নাকি?

আরে ভাইয়া আর একটু

আর ১০ মিনিট সময় দিলাম।

১০মিনিটে কি হবে? আর ১ঘন্টা সময় দে

তুই কি…..

প্লিজ ভাইয়া প্লিজ প্লিজ

আচ্ছা যা

উফফ আরো এক ঘন্টা কি যে করবো।হঠাৎ সামনে দেখলাম একটা জুয়েলার্স দেখলাম।নেহাকে তো কখনো গিফট করিনি,আজ গিফট করলে কেমন হয়? কিন্তু কি নিবো? নেকলেস নিবো? নাহ্ নেউলে নেওয়াটা মানাবে না।বরং একটা আংটি নেই।হ্যা আংটিই বেস্ট হবে।এরপর ওখানে গিয়ে খুব সুন্দর একটা আংটি নিলাম।

এর মধ্যে বাবা ফোন দিলেন–

হ্যালো বাবা

আর কতক্ষণ লাগবে ওখানে?

সেটা তোমার গুনধরি মেয়েকে বলো।সেই কখন থেকে কিনছে তো কিনছেই

হাহাহা, এই বয়সেরই তো কিনবে,আচ্ছা শোনো শপিং শেষ হলে ওকে নিয়ে তারাতারি বাসায় এসো

কোনো বাবা সমস্যা হইছে? তারাতারি যেতে বলছো যে

না কোনো সমস্যা নেই এমনিই বললাম তারাতারি আসতে।একটা কাজ আছে

ওও আচ্ছা ঠিক আছে।

ফোনটা কেটে আড়াল থেকে নেহাকে দেখছি।কিন্তু ওর সাথে কথা না বলতে পেরে ভালো লাগছে না।নীলাকে একবার ফোন করে দেখি কিছু করা যায় কি না–

হ্যালো

কিরে ভাইয়া এখান থেকে এখানেই আবার ফোন দিচ্ছিস কেন?

আস্তে কথা বল গাধি

ঔফফ কি হইছে?

নেহাকে একটু এদিকে পাঠাতে পারবি

না

কেমন বোন তুই

আমি পারবো না।আর কিছুদিন পর তোদের বিয়ে তখন প্রেম করিস,এখন আমি কিছুই করতে পারছি না। টা টা

হ্যালো হ্যালো

টুট টুট টুট……

ফোনটা কেটে দিলো,গাধিটা অনেক বেশি বকবক করছে।এর একটা ব্যাবস্থা নিতেই হবে।

একটু পর…

ভাইয়া চল

শপিং শেষ?

হুম তবে আরো কিছু কেনার ছিলো সেগুলা পরে নিবো।এই নে ধর ব্যাগগুলা রাখ

মানে কি? আমি ব্যাগ ধরবো?

হ্যা তুই ধরবি না তো কে ধরবে

নীলা তুই কিন্তু

এদিকে আয়(আমায় একটু সাইডে নিয়ে গিয়ে)

ভাইয়া কি করছিস তুই(নীলা)

কি করছি মানে, তুই কি করতে বলতেছিস মনে আছে?আমি এগুলা টেনে নিয়ে যাবো?

দেখ এখন যদি তুই এগুলা না নিয়ে যাস তাহলে ভাবি কি মনে করবে?

কি মনে করবে?

মনে করবে তুই কেয়ারলেস, দেখ তুই যদি না নিয়ে যাস তাহলে ভবাি ভাববে তুই নিজের বোনের জন্য এটুকুই করতেছিস না,তোর ওপর একটা নেগেটিভ ভাবনা আসবে

ওমাগো তাই তো

হুম সেজন্যই তো বলছি

ঠিক আছে আমি নিয়ে যাচ্ছি

হুম এইতো আমার পেয়ারি ভাই(হায়রে আমার ভাইটা ভাবির প্রেমে অন্ধ হয়ে গেছে,হাহাহাহা)

.
.
.
আচ্ছা ভাইয়া ঠিক আছে তুই যখন নিয়ে যেতে পারবি না তাহলে আমি নিয়ে যাচ্ছি

কে বললো পারবো না,তাছারা আমি থাকতে তুই কখনো এগুলা নিয়ে গেছিস? সব সময় তো আমি নিয়ে যাই,বকবক না করে চল

বাপরে এগুলা কি নিয়েছে এতো ওজন, হাত ছিড়ে যাবে মনে হয়।অনেক কষ্টে প্যাকগুলা গাড়িতে রাখলাম।নীলা আর নেহা অনেক ফান করছে আর হাসাহাসি করছে।

নেহাকে ওর বাসায় দিয়ে অবশেষে বাসায় পৌছালাম। কি ব্যাপার বাড়িটা এতো সাজানো হচ্ছে কেন? এতো ফুল,ডেকোরেশন এগুলার মানে কি?গাড়িটা পার্কিং করে বাসার ভেতরে ডুকতেই দেখি ভেতরে এলাহি কান্ড।কিছু আত্নীয়স্বজনো এসেছে।মাকে সাইডে নিয়ে

কি ব্যাপার মা? কি হচ্ছে বাসায়?

কেনো তুই জানিস না? আমার ছেলের তো কাল বিয়ে

কাল বিয়ে মানে? কি বলছো তুমি

যা বলছি ঠিকি বলছি।

কিন্তু মা এটা কি করে সম্ভব, হঠাৎ করেই

হ্যা হঠাৎ করেই সব হয়ে গেলো।তোর বাবা আর দেরি করাতে চাচ্ছিলো না।তাই তারাতারিই

মানে কি,এজন্য তোমরা আমাকে না জানিয়েই

এখন তোর প্যাচাল শুনতে পারবো না।রাজ্যের কাজ পড়ে আছে।যা ফ্রেশ হয়ে নে

মা,মা শুনো

আমার কথা না শুনেই চলে গেলো।কি হচ্ছে টা কি।এরকম দুম করে বিয়ে হবে বললেই হলো নাকি? আমার তো প্রিপারেশন নিতে হবে নাকি,ধুর ভালো লাগতাছে না।রুমে যেতেই দেখি নীলা আমায় দেখে খিলখিল করে হাসতেছে।তারমানে ওই হারামিটাও সব আগে থেকে জানতো।কিন্তু আমায় আগে বললে কি হতো।নীলাকে কিছু না বলেই রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিচে নামতেই

বাপি,সারা বাসায় এতো ফুল দিয়ে সাজানো কেন?

আমার একমাত্র মেয়ের বিয়ে বলে কথা

কিহ্? বিয়ে? কি বলতেছো এসব বাপি?হঠাৎ করে বিয়ে মানেটা কি

হঠাৎ করেই সব হয়ে গেলো রে মা,তাই আর না করতে পারিনি

তাই বলে

তুই কোনো চিন্তা করিস না, আমি সব আত্মীয় স্বজনদের বলে দিয়েছি।তুাই শুধু তোর বন্ধু,বান্ধবীদের বল

বাপি কি বলছো আমি তো

তোর এতো বুঝতে হবে না। তুই রুমে যা গিয়ে দেখ তোর জন্য তোর বান্ধবীরা অপেক্ষা করছে

বাপিকে আর কিছু বললাম না।ধুর ভাল্লাগেনা।মাথা ব্যাথা করছে,রুমে গিয়ে দেখি হারামিগুলা বসে লুডু খেলছে।

তোরা এখানে কেন

বান্ধবীর বিয়ে আর আমরা আসবো না? (সাদিয়া)

তোদের কে বললো যে আমার বিয়ে

যতোই একা একা বিয়ে করার প্লান করে থাকো চান্দু আমরা ঠিকি জানতে পারি

বলেই সবাই হো হো করে হাসতে লাগলো।ওদের হাসি দেখে খুব রাগ হচ্ছে, মনে হচ্ছে সব কটার চুল ছিড়ে ফেলি।

এই তোরা এখন যা তো আমার ভালো লাগছে না

যাবো মানে? আমরা মেহেদী পরানোর জন্য এসছি,আয় হাগে মেহেদী দিয়ে দিবো

পরে দিয়ে দিস

পরে মানে? কাল বিয়ে আর কখন দিবি?

দেখ দোস্ত আমার ভালো লাগছে না।টায়ার্ড লাগছে।এখন আমি ঘুমাবো

আচ্ছা ঠিক আছে তুই ঘুমা,আর আমরা মেহেদী দিয়ে দিবো

ধুর তোরাও না,

ওরা মেহেদী পরায় দিবে তআেই ছাড়বে।তাই ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নিলাম। ওরা হাতে মেহেদী দিয়ে দিচ্ছে। খুব ঘুম পাচ্ছে। কিন্তু ওদের হাসাহাসির জন্য ঘুমাগেও পারছি না।দীর্ঘ ৩ঘন্টা পর আমি ছুটি পেলাম।মানে ওরা চলে গেছে।এবার একটা আরামে ঘুম দিতে পারবো।যেমন ভাবা তেমনি কাজ।হাত পা ছড়িয়ে ঘুমালাম।



কেউ আমার ঠোঁটে হাত বুলাচ্ছে,মাঝে মাঝে আবার কিস ও করছে।ঘুমন্ত অবস্থায় এরকম অনুভুতি পেয়ে প্রচন্ড ভয়ে জেগে উঠলাম।কিন্তু রুমে কেউ নেই,এটা কি আমার ভুল ছিলো? নাহ্ আমি স্পষ্ট অনুভব করছিলাম কেউ আমায় কিস করছে,ঠোঁটে হাত বুলাচ্ছে।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলাম রাত ২টা বাজে।এটা কি সেই আাড়ালে থাকা লোকটি?এতোদিন পর? এতোদিন উনি কোথায় ছিলেন? তবে আজ একটা বিষয় আমায় খুব ভাবাচ্ছিল,আর সেটা জলো একটা পারফিউম। আমার রুমে একটা পারফিউম এর সুগন্ধ পাচ্ছি, এরকম পারফিউম তো আমি ব্যাবহার করিনা।তার মানে আমার রুমে সত্যি সত্যি কেউ এসেছিল।তবে তার থেকেও বেশি ভাবাচ্ছে নীল ভাইয়ার রুমে যখন প্রথম যাই তখন এই পারফিউমটার গন্ধ পেয়েছিলাম,তাছারা নীল ভাইয়ার সাথে যতক্ষণ আমার সময় কেটেছে এই মাতাল করা পারফিউমটা আমি পেতাম,যেটা আর কারো কাছে পেতাম না,শুধু নীল ভাইয়া ছারা।তার মানে কি নীল ভাইয়া, না না এ আমি কি ভাবছি নীল ভাইয়া হতেই পারে না।কারন কাল তো আমাদের বিয়ে,বিয়ের আগের রাতে কখনোই নীল ভাইয়া এরকম সাহস দেখাবে না।আমার আগে থেকেই একটা অভ্যাস আছে সেটা হলো বেশি চিন্তা করলে ঘুম পায়।কখন ঘুমিয়ে গেছি নিজেও জানিনা।

(১দিন পর)

ফুলে সাজানো খাটে লম্বা একটা ঘোমটা দিয়ে বসে আছি।চারিদিকে ফুলে সাজানো। বিশেষ করে গোলাপ ফুলের পরিমানটা অনেক বেশি।গোলাপ আমার অনেক পছন্দের ফুল।আমার সাথে একটা ছোট পিচ্চি ছেলে বসে আছে। হাতে একটা খেলনা গাড়ি নিয়ে।পিচ্চিটা অনেক কিউট।ইচ্ছে করছে পিচ্চিটাকে কোলে নিয়ে একটা কিস করি,কিন্তু আমি এখন নতুন বউ তাই চুপটি করে বসে আছি।এতোক্ষণ আমার সাথে অনেকে ছিলো বান্ধবীরা,নীল ভাইয়ার কাজিন,নীলা আরে অনেকে।এখন ঘরে আমি একাই বসে আছি।

একা একা বসে আছি আর নীল ভাইয়ার অপেক্ষা করছি।উফফ খুব গরম লাগছে।সাথে খিদেও লাগছে খুব।এতো মোটা কাপর পড়ে বসে থাকতে থাকতে অনেকটাই ক্লান্ত হয়ে গেছি।এখন তো ঘরে কেউ নেই তাহলে ঘোমটা দিয়ে আছি কেনো? ঘোমটা খুলে ফেললাম।এখন অনেকটা হালকা লাগছে,এখন যদি একটু খেতে পারতাম কি ভালোই না হতো।মনে কেমন একটা ফিলিংস কাজ করছে।ভয় করছে কিন্তু সেই ভয়টাকে ভালোও লাগছে।এরকম আমার কখমো হয়নি আজকেই প্রথম।হঠাৎ সেই আড়ালে থাকা লোকটির কথা মনে হলো।আচ্ছা আমি যদি কারো সাথে কথা বলতাম তাহলেই ওই লোকটা মেনে নিতে পারতো না,আর আজ আমার বিয়ে হয়ে গেলো কিন্তু উনার কোনে খবর ই নেই। এমনটা হবে কখনো আশা করিনি।অনেক প্রে করেছিলাম যেন আজকে ওই লোকটা কোনো ঝামেলা না করে।সেটাই সত্যি হলো।

আমার অপেক্ষার অবশান ঘটিয়ে মি.নীল রুমে আসলেন। লজ্জা পেয়েছি এরকম ভাব নিয়ে আবারে ঘোমটা দিয়ে বসে থাকলাম।যদিও আমার লজ্জা করছে না,একটু ভয় কাজ করছে।নীল ভাইয়া উহু সরি ভুল করে ভাইয়া বলে ফেলছি।এখন তো উনি আমার বর।উনি বিছানায় বসে পাঞ্জাবিটা খুলছেন।আমার বুকের ভেতরটা ধুকধুক করছে।বিশ্বাস করেন এরপর যেটা হলো তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না, নীল ভাইয়া হাতে করে এত্তো এত্তো খাবার নিয়ে টেবিলে রাখলো।আমার তো আর তর সইছে না।কিন্তু খেতেও পারছি না।উনি কি আমার জন্য এগুলা নিয়ে এসছে? বাববাহ্ #ডেভিল টা একটু রোমান্টিক হচ্ছে তাহলে।

এই মোটা শাড়ি পরে আর কতক্ষণ থাকবে,ড্রপে দেখো কাপর রাখা আছে, চেঞ্জ করে নাও

ওনার কথা মতো ড্রপে গেলাম।খুব বিরক্তি লাগছিলো এাই মোটা কাপর আর ভারি গয়না গুলা।ড্রপে গিয়ে দেখি ওমাগো এখানে প্রায় ৩০/৪০টা শাড়ি।এত্তগুলা শাড়ি এখানে কি করছে? ওনার দিকে আড় চোখে তাকালাম।উনি মুচকি হেসে পিছন থেকে আমায় জরিয়ে ধরলো.

চলবে?