ডেভিল পর্ব-১২+১৩

0
344

#ডেভিল
#জয়ন্ত_কুমার_জয়

[বোনাস পর্ব]-[12]

এটা কি করে সম্ভব? আমি কি ঠিক দেখছি?আমার বিশ্বাস হচ্ছে না। আমার সামনে নীল ভাইয়া দারিয়ে আছে।হাতে গোলাপ গুচ্ছ নিয়ে।তারমানে নীল ভাইয়া আমায় এখানে নিয়ে আসলো?কিন্তু কেনো?মনে হাজারো প্রশ্ন ঘোরপাক খাচ্ছে।

হঠাৎ ওপর থেকে নানান রঙের বেলুন পড়তে লাগলো।আর নীল ভাইয়া আমার দিকে এক পা এক পা করে এগোচ্ছে। আমার বুক ধুক ধুক করছে। কি হতে চলেছে আমার সঙ্গে?নীল ভাইকে দেখে অনেকটাই বুঝতে পারছি উনি আমায় প্রপোস করবেন।কিন্তু এটা কি করে সম্ভব? এগুলা ভাবতে ভাবতে নীল ভাইয়া আমার একদম সামনে আসলেন।আমার সামনে হাটু ফেলে বসে ফুলগুলি আমায় দিকে এগিয়ে দিয়ে বললো —

কি ভাবছো? এটা কি সত্যিই আমি কি না? হ্যা এটা আমি।তুমি হয়তো জানোনা কতটা ভালবেসে ফেলছি তোমায়।তুমি কি জানো আমি আসক্ত? হ্যা আমি আসক্ত! তবে সেটা শুধু তোমার ওই চোখের নেশায় আসক্ত। আমি যে পাগল সেটা জানো? শুধু তোমার হাসিটা দেখার জন্য।আমি যে মাতাল তা জানো? তবে সেটা তোমার ভেজা চুলের ঘ্রাণের।সব শেষে এটাই বলতে চাই,সারাজীবন তোমার নেশায় আসক্ত হয়ে থাকতে চাই তবে সেটা প্রমিকা হিসেবক নয় বউ হিসেবে।উইল ইউ ম্যারি মি?

আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না।তবে এটা কি করে সম্ভব?নীল ভাইয়াকে কখনো আমি সেরকম নজরে দেখিই নি।কিন্তু তারপরেও নীল ভাইয়ার ওপর আমার একটু দূর্বলতা কাজ করে।আর তা ছারা আমার ওপর কেউ একজন সবসময় নজর রাখছে।সে নিশ্চয়ই নীল ভাইয়ার অনেক বড় ক্ষতি করে দিবে।না যত্ত তারাতারি সম্ভব এখান থেকে যেতে হবে।আমি চাই না আমার জন্য নীল ভাইয়া কোনো বিপদে পড়ুক।

ভাইয়া এটা কখনো সম্ভব না (আমি)

কেনো? (আমার কথা শুনে নীল ভাইয়া দারিয়ে পড়লেন)

কারন আমি আপনায় কখনো এরকম নজরে দেখিই নি।সরি আমায় মাফ করে দিয়েন।আর হ্যা,আবার যেনো কখনো এরকম পরিস্থিতিতে আমি না পড়ি প্লিজ।

তুমি যা বলছো ভেবে বলছো?

হুম

তার মানে তুমি আমায় ভালবাসো না

তা বলতে পারবো না।প্লিজ আমায় যেতে দিন

ঠিক আছে আট তোমায় আটকাবো না।আটকানোর অধিকারটাই তো হারিয়ে গেলো।বাহিরে গাড়ি দার করা আছে।

ভাইয়া আপনি আমার থেকে অনেক ভাল মেয়ে পাবেন দে–

নীল ভাইয়া আমার কথা উপেক্ষা করে ফুলগুলা আর একটা রিং ফেলেদিয়ে চলে যাচ্ছেন।এখন নিজের মধ্যে অনেক খারাপ লাগা সৃষ্টি হচ্ছে।নাহ্ নীল ভাইয়ার ভালোর জন্য এটা আমার করতেই হতো।তারপর রুমটা থেকে বেড় হতেই দেখি বাহিরে একটা গাড়ি দার করানো।সেখানে উঠতেই দেখি জয় ভাইয়া।জয় ভাইয়াকে দেখে কিছুটা অবাক হয়েছিলাম।জয় ভাইয়া আমায় কিছু বলতে চাইলো কিন্তু আমি না করে দিয়েছি।কারন আমার অনেকটাই খারাপ লাগছে।মনে হচ্ছে অনেক কাছের কিছু হারিয়ে ফেললাম।একটু পর বাসায় আসলাম।ফ্রেস হয়ে নিলাম।রাত ৮টা বাজে।দরজা বন্ধ করে রুমের এক কোনায় বসে আছি।নীল ভাইয়ার সাথে করা সকল ঘটনা মনে পড়ছে।মনে পড়ছে সেই ঝগরাগুলি। কেনো জানিনা খুব কাদতে ইচ্ছে করছে। কেনো হচ্ছে এরকম? আমি কি সত্যিই নীল ভাইয়াকে ভালবেসে ফেললাম? এগুলা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে গেছি।

ওদিকে —

__দোস্ত প্লিজ বাসায় চল অনেক রাত হয়েছে।নীলা বারবার ফোন করছে(জয়)

__তোকে থাকতে বলছি?আমায় একা থাকতে দে

__নীল আমার কথাটা শোন বাসা–

__তোকে যেতে বলছি না? দেখ জয় আমার মাথা ঠিক নেই কখন কি করবো নিজেও বুঝতে পারবো না।তাই জোর করবি না যা এখান থেকে।

__আচ্ছা আমি কোনো কথা বলবো না।চুপ করে বসে থাকবো

একটু পর

__আচ্ছা জয় আমার ভালবাসায় কি মিথ্যা ছিল?

__এরকম করে কেন বলছিস

__আমি কখনো ভাবতেও পারিনি নেহা আমায় অস্বীকার করবে।তবে আমি এতো সহজে ছাড়ছি না। ওর মুখ থেকে ভালবাসি কথাটা বেড় করিয়েই ছাড়বো।

__দোস্ত আমি তোর সাথে আছি।

এমন সময় কিছু বাইকের হেডলাইটের আলো আমার চোখে পড়ছে।হাত দিয়ে চোখ আড়াল করে আছি।বাইক থেকে কিছু ছেলে এসে জয়কে একটা চড় দিলো।এটা দেখে আমার রাগ চরম সীমায় পৌছে গেলো।যে ছেলেটা জয়কে চড় মেরেছিল ওর হাতটা ধরতেই পিছনে থেকে মাথায় কে যেন আঘাত করলো।তারপর চারিদিকে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছিল।ভারসাম্য রক্ষা করতে না পেরে মাটিতে পড়ে গেলাম।তারপর কিছু মনে নেই। যখন জ্ঞান ফিরলো তখন দেখলাম আমি একটা বদ্ধ ফ্যাক্টরির চেয়ারে বসে আছি।মাথাটা প্রচন্ড ব্যাথা করছে। আর সামনে জয় রক্তাক্ত হয়ে পড়ে আছে। এটা দেখার পর ওর কাছে যাবো তখনি দেখলাম আমার হাত,পা রশি দিয়ে বাঁধা।

জয় এই জয় কি হয়েছে তোর? তোকে কে মেরেছে এভাবে?কথা বলছিস না কেনো? কে করেছে তোর এ অবস্থা?নীল থাকতে তোর এ অবস্থা কে করলো।জয় ওঠ না ভাই, জয়য়য়য়য়য়য়য়

চলবে..?

#ডেভিল
#জয়ন্ত_কুমার_জয়

[13]

__তোর জয়ের আজকে আর জ্ঞান ফিরছে না মি. নীল(মুখোস পড়া একজন ব্যাক্তি)

__কি করেছিস ওর সাথে? বল কি করছিস

__কুল ডাউন, কুল ডাউন। কিছুই করি নি।শুধু একটা ইনজেকশন দিয়ে বেদম মাইর দিয়েছি।এইটুকু

__তোর কপালটা ভাল আমি বাধা অবস্থায় আছি
নইলে এতোক্ষণে তোকে

__কিচ্ছু করতে পারবি না।তার আগেই

__হাহাহাহাহা

__হেসে নে এরপর আর হাসতে পারবি না

__আচ্ছা এটা বল তোর সাথে আর কে কে আছে

__তোর জন্য আমি একাই যথেষ্ট

__তোর মতো একটা লেডি কুত্তা আমায় আটকানোর মতো সাহস কখনোই করবে না।বলবি না ঠিক আছে।আমার আবার খুজে খুজে মারতে খুব ভাললাগে।টম এন্ড জেরি লাভার বলে কথা

__আমি কি করতে পারি দেখাচ্ছি

একথা বলে আমার হাত ব্লেড দিয়ে কাটতে লাগলো।তবে সে ব্যাথাটা ভালোই লাগছে।এর কারনটা হয়তো নেহার উপেক্ষার জন্য।নেহার দেওয়া কষ্টের কাছে এইটা কোনো ব্যাপারি না।

__এইই তুই চুপ করে আছিস কিভাবে

__এর থেকে বড় আঘাত আগেই পাইছি(দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বললাম)

__আজাইরা প্যাচাল বাদ দিয়ে এটা বল,তোর সাহস হয় কি করে নেহার কাছাকাছি থাকার?

__হাহাহা কে তুই

__আমি যেই হোই,তোকে আর ছাড়চি না।তিলে তিলে কষ্ট দিয়ে মারবো তোকে

__কতক্ষণ রাখতে পারবি এখানে? জাস্ট কিছুক্ষণ! এর মধ্যে কোথায় পালাবি খুজে নে

__তোর দম আছে বলতে হবে।এখানেই থাক তুই।আর হ্যা চেচিয়ে কোনো লাভ হবে না।এখানে মাইক চেচালেও তোর কথা কেউ শুনবে না

__আবে এ আমি কি তোর মতো কুত্তা? যে চিল্লাতে যাবো।তুই নিশ্চিন্তে যা।

__এ কাকে ধরে আনলাম।পাগল নাকি

আমি চেয়ারে বাধা অবস্থায় ছিলাম।লোকটা আমায় লাথি দিলে আমি চেয়ার সহ মাটিতে পড়ে গেলাম।মনে মনে অনেক রাগ হচ্ছিল।তবে এটা কে সেটা আন্দাজ করতে পারছি।কিন্তু ওর একার এতো সাহস হবে না আমায় কিডনাফ করার।ওর সাথে প্রভাবশালি কেউ যুক্ত আছে।আমার ফোনটাও নিয়ে রেখেছে।রাজ,অভি এরা কি আমায় খুজে পাবে?বুঝতে পারছি না।
|
|

__হ্যালো নীলা

__হুম নেহা বল

__কোথায় তুই?

__কোথায় আবার, বাসায় আছি।কেন?

__না এমনি বললাম।কি করিস

__এইতো ছাদে দারায় আছি

__একটা কথা জানার ছিল

__কি? বল

__না মানে

__ধুর কি আমতা আমতা করছিস

__না মানে নীল ভাইয়া কি বাসায়?

__না রে, কাল রাত থেকে ভাইয়া বাসায় আসছে না।এটা নিয়ে মা অনেক টেনশনে আছে

__মানে কি? বাসায় আসেনি এটা আগে বলিসনি কেন,গাধা কোথাকার

__ভাইয়া মাঝে মাঝেই এরকম করে, আর তাছারা তুই জেনে কি করবি

__না কিছু না।রাখি বায়

কাল রাত থেকে বাসায় নেই,কোথায় গেলো তাহলে? কি না কি বলছি সেজন্য বাসায় যাবে বা এটা কেমন কথা? ওই লোকটা নীল ভাইয়ার কোনো ক্ষতি করে দেয় নি তো? না না কি ভাবছি আমি।নীল ভাইয়ার কিচ্ছু হবে না।কিন্তু উনি গেলো কোথায়, কোথায় খুজবো এখন।অজানা উদ্দেশ্য বেড় হতেই বাবা সামনে হাজির।
বাপি__না খেয়ে কোথায় যাওয়া হচ্ছে হুম ?

__বাপি খুব তারা আছে এসে খেয়ে নিবোনি

__না এসব বললে হবে না।একটু হলেও খেতে হবে।এইনে আমি খাইয়ে দিচ্ছি। আমার আবার লেট হচ্ছে

__উফফ তুমি ছাড়বে না জানি।দাও খাইয়ে দাও

বাপি খাইয়ে দেওয়ার পর রওনা হলাম।কোথায় খুজবো কিচ্ছু বুঝতে পারছি না।জয় ভাইয়া কে ফোন দিয়েছিলাম কিন্তু ওনার ফোন বন্ধ। রাজ ভাইয়াকে ডাকতে পারলে সুবিধা হতো,কিন্তু ওনার নাম্বার তো নেই।ফেসবুকে এক্টিভ আছে কি?দেখি তো! উনিও লাইনে নেই।তবুও একটা মেসেজ দিয়ে রাখলাম।এখন আমি রাস্তায় হাটছি আর সাইলেন্ড মুডে নীল ভাইয়াকে খুজে যাচ্ছি।

বিশাল তেতুল গাছটার নিচটা আজ ফাকা পড়ে আছে।এমনি হলে নীল ভাইয়া এখানে আড্ডা মারতো।মাঝে মাঝে চোখে পড়তো,মাঠের ব্রেঞ্চটাও ফাকা পরে আছে।সকাল পেরিয়ে দুপুর, দুপুর পেরিয়ে সন্ধা নেমে আসছে।কিন্তু নীল ভাইয়ার কোনো খোজ পেলাম না।খুব টেনশন হচ্ছে। শুধু বারবার মনে হচ্ছে সেই লোকটা যেন আবার নীল ভাইয়ার কোনো ক্ষতি করে না দেয়।

ওনাকে খুজে না পেয়ে নদীর পাড়ে একটা ফাকা জায়গায় বসে আছি।খারাপ লাগছে অনেক।বারবার মনে হচ্ছে আমার জন্যই নীল ভাইয়া আজ কোনো বিপদে পরেছে মনে হয়।মনটাও কেমন বেকুল হয়ে উঠেছে।অস্থির অস্থির লাগছে।চারিদিকটা কেমন শান্ত হয়ে এলো।মনে হচ্ছে একটু পর বিশাল ঝর উঠবে।হঠাৎ একটা বিকট শব্দ পেলাম।শব্দটা মনে হলো আমার কাছাকাছি কোথাও থেকে আসছে।চারিদিকে তাকাতেই নদীর পাশে রাস্তা থেকে কিছুটা দুরে একটা পরিত্যক্ত ফ্যাক্টরি চোখে পড়লো।শব্দটা ওখান থেকে আসলো মনে হয়।এক পা দু পা করে ফ্যাক্টরির দিকে যাচ্ছি আর আমার বুকের ভেতরটা চিন চিন করছে।কাছে যেতেই আবার একটা আওয়াজ পেলাম।আন্দাজ করতে পারলাম এটা গুলির আওয়াজ।ভয়ে আমার গলা শুকিয়ে যাচ্ছে। আশেপাশে কাউকে দেখতে পাচ্ছি না। অনেকটাই নির্জন জায়গাটা।অনেকে মনে করে এই ফ্যাক্টরিতে ভূত আছে।যার কারনে এই দিকে কেউ আসে না।তবে আমি ভূত,আত্মা এগুলায় অনেক ভয় পাই।কিন্তু এখন সবচেয়ে বেশি ভয় লাগছে আওয়াজটা শুনে।ভেতরে কি কেউ আছে? এখানে থেকেই তো গুলির আওয়াজ আসলো। এখানেই নীল ভাইয়া নেই তো?? কিন্তু নীল ভাইয়া এই ভয়ংকর যায়গায় কি করবে?আবারো একটা শব্দ পেলাম।এই নিয়ে তিনটা গুলির শব্দ পেলাম। আর কিছু না ভেবে ফ্যাক্টরিটার ভেতরে ঢুকতে লাগলাম।ঢোকার পর হাসির শব্দ পেলাম, মনে হচ্ছে কেউ একজন অনেক শব্দ করে হাসছে।

হঠাৎ ওপর থেকে একটা লাশ আমার সামনে পড়লো।লাশটার সারা গা রক্তে ভিজে আছে।ভয়ে আমি অনেক জোরে চিৎকার করতেই কেউ একজন আমার দিকে একটা রড নিয়ে আসছে।আমি এতোটাই ভয়ে আতঙ্কিত হয়েছিলাম যে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না।লোকটা আমার কাছে আসতে একটা বুলেট লোকটার শরীর ঝাঁজরা করে দিলো।আমি ভয়ের চরম পর্যায়ে পৌছে গেছি।ওপরে তাকাতেই দেখি নীল ভাইয়া! নীল ভাইয়াকে দেখে আরো বেশি ভয় পেয়ে চিৎকার করে কান্না করতে লাগলাম।কারন নীল ভাইয়ার হাতে একটা পিস্তল ছিল আর সারা শরীর রক্তে ভেজা।হাতে পিস্তল নিয়ে একটা সিগারেট মুখে দিয়ে দারিয়ে আছে আর #ডেভিল এর মতো হাসছে।ওনাকে দেখে স্বাভাবিক অবস্থানে আছে বলে মনে না।আমার চোখের সামনে আরো ২জনকে কুকুরের মতো গুলি করলো।উনি যেনো আজ খুনের নেশায় মেতে উঠেছেন।তারপর একটা মুখোস পড়া ছেলেকে ওপর থেকে টানতে টানতে নিচে আমার সামনে দার করালেন।তারপর মুখোসটা সরিয়ে দিতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম। একি !? এটাতো আদনান।আদনান এখানে আসলো কিভাবে?আর কি হচ্ছে এসব এতোকিছু ভাবতে ভাবতে নীল ভাইয়া আমার সামনেই আদনানের বুকে গুলি করলো।এটা দেখার পর নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না, ভয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম।

যখন জ্ঞান ফিরেছে তখন অনুভব করলাম কেউ আমায় জরিয়ে ধরে আছে।অনেকটা জোরে জরিয়ে ধরার ফলে কিছুতেই ছারাতে পারছি না।চারিদিকে তাকিয়ে বুঝতে পারলাম আমি হসপিটালে আছি।আমার ছাড়িয়ে নেওয়ার চেস্টার ফলে যিনি জরিয়ে ধরে ছিলেন তিনি ছেড়ে দিলেন।উনি আর কেউ না নীল ভাইয়া। তখনি সেই দৃশ্যটা মনে আসছে।নীল ভাইয়াকে দেখতে একদম অন্যরক লাগছিল।ওনাকে দেখে এখন ভয় হচ্ছে। ভয় পেয়ে চিৎকার করবো এমন সময় উনি আমার ঠোঁট নিজের দখলে নিয়ে নিলেন।আমায় এতে জোরে জরিয়ে ধরেছিল যে দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম। একটু পর আমায় ছেরে দিয়ে রুমের দরজাটা লক করে বাইরে বের হয়ে চলে গেলেন।

এগুলা কি হচ্ছে আমার সাথে?আমি হসপিটালে কেন?আর ওই লোকটার সাহস হয় কি করে যখন তখন এভাবে কিস করার? আমি কি ওনার বউ নাকি? যে কিস করলো?

বৃষ্টিতে ভিজছি আর অনেক লাফালাফি করছি।ওদিকে নীল ভাইয়া একটা সিগারেট ধরালেন।সিগারেট খাওয়া লোক আমার একদম সহ্য হয় না। তাই ওনার কাছে গেলাম।

ভাইয়া কি হচ্ছে এটা(আমি)

কি (নীল ভাইয়া)

আপনি সিগারেট খাচ্ছেন তাও আবার আমার সামনে?

তো কি হইছে

কথাটা এমন ভাবে বললো মনে হয় সামনে অদৃশ্য কোনো ভুত দারায় আছি।কোনো ভুরুক্ষেপি নেই।

সিগারেট খাওয়া লোক আমার একদম পছন্দ না

তোমার পছন্দ দিয়ে আমি কি করবো

কি করবেন মানে?এখন এটা ফেলে দিন,কই দেখি

তোমার কথায়? হাহাহাহা

সোজা কথায় কাজ হবে না।এনাকে টাইড কি করে দিতে হয় সেটা আমি ভালো করেই জানি।উনি সিগারেট মুখে দিয়ে খাচ্ছে এমন সময় ফোনটা বের করে ঠাস করে কয়েকটা ছবি তুললাম।

এটা কি হলো?

এটা উগান্ডা যাওয়ার টিকিট হলো,এগুলা এবার আন্টি,না সবার আগে আঙ্কেলকে দেখাবো।যে আঙ্কেল দেখুন আপনার ছেলে কি করে বেড়াচ্ছে। তরপর আন্টিকে দেখাবো

মানে কি

এতো মানে বলতে পারবো না।

এরপর উনি রাগ দেখিয়ে ডিলিট করতে বললেন কিন্তু আমি নাছোরবান্দা তাই ইগনোর করে গেছি।নীল ভাইয়া আংকেলকে ভিষন ভয় পায়।যদি পিক গুলা আংকেলকে দেখাই তাহলে নীল ভাইয়াকে আর আস্ত রাখবে না।এটা জেনেই নীল ভাইয়া এতো ভয় পাচ্ছে। অনেক দৌড়াদৌড়িও করলেন আমার পিছনে কিন্তু আমি কোনোভাবেই ফোন হাত ছারা করিনি।ওনাকে ব্লাকমেইল করতে খুব ভালো লাগছে।মন চাচ্ছে সারাজীবন এভাবে ব্লাকমেইল করতে। বাচ্চা ছেলের মতো আকুতি মিনতি করছে।আর আমি হেসেই যাচ্ছি হেসেই যাচ্ছি। বুঝতে পারিনি পিক তোলার পর এভাবে ব্লাকমেইল করতে পারবো।ভালই হলো অন্তত কিছুদিন এটা দিয়ে নীল ভাইয়াকে চুপ রাখা যাবে।

আচ্ছা ঠিক আছে আমি ছবি গুলা দেখাবো না,কিন্তু একটা শর্ত আছে

কি?

আমার সাথে বৃষ্টিতে ভিজতে হবে

আমি পারবো না

পারবেন না ঠিক আছে।আমার কাছে কিছু পিক ছিলো,এগুলা দিয়ে যে কি করি,হ্যা আংকেলকে দেখাবো আর

আচ্ছা ঠিক আছে

এইতো গুড বয়ের মতো।

এরপরও যেতে চাচ্ছে না তাই হাত ধরে টেনে নিয়ে গেলাম।এখন প্রচুর ভিজতেছি।সাথে নীল ভাইয়াও।উনি অপলক দৃষ্টিতে শুধু আমার দিকেই চেয়ে আছেন হ্যাবলার মতো।ভেজা অবস্থায় সব ছেলেকে হুলো বেড়লোর মতো লাগে,কিন্তু নীল ভাইয়াকে আরো সুন্দর লাগছে।বিশেষ করে তার ওমন সুন্দর চুলগুলার জন্য।ওনার চুলগুলা দেখে তো আমারি হিংসা হয়,মনে হয় আমার যদি এমন চুল হতো।আমিতো ঠিক করেই ফেলছি আমার যদি ছেলে হয় তাহলে ওনার মতো করে হেয়ার স্টাইল করাবো।

চারিদিকে অন্ধকার,তবে কিছু আলোর রশ্মি অন্ধকার ভেদ করে আছে,বৃষ্টি পড়ছে,হালকা বাতাস বইছে,ফাকা রাস্তায় আমি আর নীল ভাইয়া দারিয়ে আছি।অনেক রোমাঞ্চকর ছিল।চোখ বন্ধ করে সব কিছু ফিল করছি।এমন সময় পেটে কারো হালকা হাতের স্পর্শ পাচ্ছি।এটা যে নীল ভাইয়া সেটা বুঝতে পারলাম। ভেতরটা শিউড়ে উঠলো।বুকের ধুকধুকী টা সর্বোচ্চে পৌঁছাতে বেশিক্ষণ সময় নিলো না।পিছন থেকে একটা হাত আমার ভেজা সরিয়ে সেই চুলের ঘ্রাণ নিচ্ছে। ঘাড়ে হালকা একটা স্পর্শের অনুভুতি পেলাম।ঘাড়ে কিস করায় সারা শরীর কেপে উঠলো।ঘনঘন শ্বাস নিচ্ছি,তচে সেটা ইচ্ছে করে না, এমনিতেই হয়ে যাচ্ছে।আমি শক্ত করে চোখ বন্ধ করে আছি।এরপর উনি আমার সামনে এসে আমার সামনোর চুলগুলা সরিয়ে নিলেন। ওমার প্রতিটা স্পর্শে কেমন মাতাল হয়ে যাচ্ছি।টিপটিপ করে চোখ মেলতেই দেখি নীল ভাইয়া আমার আরো কাছে আসছে।এক পর্যায়ে ওনার নিশ্বাস আর আমার নিশ্বাস মিলে এক হয়ে গেলো এতোটাই কাছে এসেছিলেন।

নীল ভাইয়া আমার ঠোঁটের সাথে ওনার ঠোঁট মিলিয়ে দিলেন। সারা শরীরে আমার কারেন্ট বয়ে যাচ্ছে।খুব জোরে চোখ বন্ধ করে আছি।হঠাৎ করে মনে হচ্ছে আমি ভাসছি।চোখ মেলতেই দেখলাম নীল ভাইয়া আমায় কোলে করে নিয়ে যাচ্ছে। লজ্জায় আমি পুরা লাল হয়ে গেছি।এতোক্ষনে বৃষ্টি থেমে গেছে,উনি কোলে করে গাড়িতে বসালেন।তারপর সোজা আমার বাসার সামনে দারালেন।নেমে যেতেই নীল ভাইয়া আমার হাতে একটা ঔষধের ব্যাগ ধরিয়ে দিলেন। আমি কিছু না বলে ব্যাগটা নিয়ে বাসার কলিংবেল বাজাচ্ছি।বাপি এসে দরজা খুলে দিয়ে সোফায় বসে আছে।বুঝতে পারলাম বাপি রেগে আছে।রুমের দিকে যাচ্ছি এমন সময়

ভুলটা আমারি ছিল। মেয়েকে শুধু ভালোইবেসেছি,তাই হয়তো আজ এই অবস্থা

এভাবে বলছো কেনো বাবা

মারে,তোর মা যখন মারা যায় তখন তুই এইটুকু। মায়ের অভাব কখনো বুঝতে দিইনি।যখন যা বলেছিস তার আগেই সেটা করেছি

(নিশ্চুপ)

আজ তুই এতো রাত করে বাসায় ফিরলি।এটা কি সোভা পায়? আর আমার বয়স হইছে।এমন কোনো কাজ করিস না যে সেটার জন্য পচতাতে হয়।যা রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে নে।

বাপির কথাগুলা শুনে নিজেরি খারাপ লাগছে।রুমে ঢুকে ওষুধের ব্যাগটা টেবিলে রেখে ওয়াসরুমে গেলাম। ওয়াসরুমের আয়নায় নিজেকে দেখছি আর বুকের ভেতরটা কেমন শিউরে ওঠছে।নীল ভাইয়ার কাছে আসা,ওনার স্পর্শ বারবার ওই দৃশ্যটার কথা মনে হচ্ছে।প্রায় ১ঘন্টা এগুলা ভেবে ফ্রেশ হয়ে চেন্জ হয়ে নিলাম।রাত ১২টা বাজে আনুমানিক। শুয়ে শুয়ে ভাবছি।এগুলা ভাবনা যেনো আমার মন থেকে কিছুতেই সরছে না।খচ্চর পোলাডা আমার জীবনডা কয়লা বানায় ছাড়ছে।এরকম হাজারো গালি দিয়ে কখন ঘুমিয়ে পড়ছি জানিনা।

সকালে বাপির ডাকে ঘুম ভাংলো।

বাপি এতো সকালে ডাকছো কেনো

তোকে দেখার জন্য লোক এসছে।তারাতারি রেডি হয়ে নিচে আয়

বাপি এটা কি করলে তুমি?আর আমার তো ফাইনাল ইয়ারের পরিক্ষাটাও শেষ হয়নি

কোনো কথা শুনতে চাই না। রেডি হয়ে নিচে আয়

একথা বলে বাপি চলে গেলো।কি হচ্ছে কিছুই বুঝতে পারছি না। বাপি এভাবে পাল্টে গেলো কেনো? বাপিতো চাইতো আমি পড়ালেখা করে নিজের পায়ো দারাই,কিন্তু আজ।আর ভাবতে পারছি না।মন খারাপ করে ওয়াসরুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে রেডি হয়ে নিচে গেলাম।খুব নম্রভাবে ওদের সামনে বসে আছি।ওনাদের আমায় পছন্দ হয়েছে।ছেলেটা কে এখনো দেখিনি।দেখবো কি করে লজ্জায় তো মরে যাচ্ছি। একটু পর একজন মহিলা বললেন ছেলে আর মেয়ে আলাদা কথা বলুক।এরপর আমি আর ছেলে আলাদা রুমে গেলাম।রুমে গিয়ে ছেলেকে দেখতে

চলবে?