তিক্ততার সম্পর্ক পর্ব-২০

0
1735

#তিক্ততার_সম্পর্ক
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা
পর্বঃ ২০

আগরবাতির গন্ধ মম করছে সারা বাড়ি, উঠানে গিজগিজ করছে গ্রামের মানুষ। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যের আয়োজন চলছে প্রকৃতিতে, পাখিটা নীড়ে ফেরার উদ্দেশ্যে ছুটে চলেছে এদিক ওদিক, সাথে করছে কিচিরমিচির শব্দ। তবে সেই সাথে কানে আসছে বাড়ির দক্ষিণ দিকের শিমুল গাছের উপর বসা কাকের কা কা ডাক। অবেলায় কাকের ডাক বড্ড বেমানান, তবে তাতে কী বা করার আছে ? অনেক কিছুই আমাদের কাছে বেমানান লাগে কিন্তু তাও সহ্য করতে হয়। বাড়ির উঠানে কাফনে মুড়ানো তাহেরার লাশটাও বেমানান লাগছে তবে করার কিছুই নেই। তৌহিদুর গ্রামের বাড়ি নিয়ে এসেছে তাহেরার লাশ। একপাশে এলোমেলো হয়ে বসে আছে ইমা আর তার পাশেই ইয়ানা বসেছে ইমাকে সামলাতে। ইমার চোখে পানি নেই দৃষ্টি সামনে রাখা লাশের খাটিয়ার দিকে, শুধু বিড়বিড় করে একটা কথাই বলছে তার জন্য মরে গেছে মা। সে দায়ী তার মায়ের মৃত্যুর জন্য। তার মা সত্যি তাকে ছেড়ে চলে গেলো এটা যেনো সে কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছে না। তাহেরার মাথার কাছে বসে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে তাহের তার একটু দূরেই তৌহিদুর। এই গ্রামেই তাহেরা, ইমরুল আর তৌহিদুর সবার বাড়ি। এই গ্রামেই তাহেরার বেড়ে উঠা, ইমরুলের সাথে প্রেম তারপর বিয়ের আগের দিন পালিয়ে যাওয়া আবার এই গ্রাম থেকেই তৌহিদুরকে বিয়ে করে শহরে পাড়ি দিয়েছিলো সে। আজ আবার ফিরে এলো এই গ্রামেই তবে পার্থক্য একটাই। তিন বছরের ইমাকে কোলে নিয়ে বধূ সেজে গিয়েছিলো সেদিন আর আজ সাদা কাফনে মুড়ে ফিরে এলো। ডক্টর অপারেশন থিয়েটার থেকে বের হয়ে মুখ মলিন করে যখন বলেছিলো সি ইজ নো মোর, সাথে সাথে ইমা সেন্সলেস হয়ে পরে গিয়েছিলো, তাহের থম মেরে তাকিয়ে ছিলো ডক্টরের দিকে আর তৌহিদুর ফ্লোরে বসে পরে মাথায় হাত দিয়ে। ইয়াদ ইমাকে সামলাতে ব্যস্ত হয়ে পরে। বাড়িতে কল দিয়ে ইয়ানাকে আসতে বললে কিছুক্ষণের মধ্যে ইয়ানা আর ইশান দুজনেই চলে আসে। কারো মনের অবস্থা স্বাভাবিক নেই তাই সব ফর্মালিটি ইয়াদ নিজেই সামলায়। তৌহিদুরের কথায় তাহেরাকে গ্রামের বাড়ি আনার ব্যবস্থা করা হয়। এখন প্রায় সন্ধ্যা নেমে এসেছে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই দাফন কাজ সম্পন্ন করা হবে। ইয়াদ এক কোণে দাঁড়িয়ে আছে সাথেই ইশান। ইমার নানু ছাহেরার বুকে পরে চুপটি করে মেয়ের লাশের দিকে তাকিয়ে আছে। প্রথম থেকে একটুও কাঁদেনি সে, অনেকসময় হলো তার কোনো সাড়াশব্দও নেই।

ছাহেরা কাঁদতে কাঁদতে বললো, ও মা তোমার তাহেরা চলে গেছে সবাইকে ছেড়ে, একটু কাঁদো।

ছাহেরা সাড়া না পেয়ে মায়ের মাথাটা বুক থেকে সরাতেই মা বলে চিৎকার করে উঠলো। তার চিৎকারে সবাই দৌড়ে কাছে গেলো। আরমান দ্রুত পালস চেক করে পাশে বসে পড়লো থপ করে। নিজের মায়ের দিকে তাকিয়ে ইশারায় বুঝালো নানু আর বেঁচে নেই। ছাহেরার চিৎকারে পুরো বাড়ি কেঁপে উঠলো। ইমার নানুর বয়স হয়েছে এই বয়সে এসে এতোবড় ধাক্কা সামলে উঠতে পারেনি, সহ্য করতে পারেনি আদরের মেয়ের নিথর দেহ। সেও মেয়ের সাথে বিদায় নিয়েছে এই স্বার্থপর পৃথিবী থেকে। তাকেও সোজা করে শুইয়ে দেওয়া হলো। কী নির্মম সেই দৃশ্য, পাশাপাশি পরে আছে মা মেয়ের লাশ।

ইমা ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে নানুর মাথার কাছে বসে মাথা হাত বুলিয়ে দিয়ে বললো, এই নানু তুমি কথা বলছো না কেনো ? তুমি তো তোমার মেয়ের মতো স্বার্থপর নও যে আমাকে একা ছেড়ে যাবে ? তুমি তো সবসময় আমার পাশে ছিলে ছায়ার মতো, তাহলে আজ কেনো নিজের মেয়ের জন্য আমাকে ছেড়ে যেতে চাইছো। এই নানু উঠো না তোমার মেয়েকে একটু বকে দাও। সে আমাদের রেখে চলে যাচ্ছে তুমি তাকে বকে দাও।

ইয়াদ ইমার কাছে গিয়ে জোর করে টেনে উঠিয়ে দাঁড় করালো। ইয়াদ বুঝতে পারছে ইমার মেন্টাল কন্ডিশন একবারে ঠিক নেই। খারাপ কিছু হয়ে যাওয়ার আগে দূরে নিতে হবে, ওকে বুঝাতে হবে।

ইমা ইয়াদের দিকে তাকিয়ে বললো, এই দেখেন না নানুও কথা বলছে না কিছু বলুন নানুকে। আমি কীভাবে বাঁচাবো সবাই আমাকে রেখে চলে গেলে। কেউ তো ভালোবাসে না ইমাকে, শুধু মা আর নানু ছাড়া। তারাও চলে গেলে ইমা কীভাবে বাঁচবে তাদের একটু বুঝান না।

ইয়াদ কী বলে ইমাকে শান্তনা দিবে ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না। একসাথে দুজন আপন মানুষকে হারানোর যন্ত্রণা হয়তো ইয়াদও কোনো একদিন পেয়েছিলো। তবে কষ্টটা হয়তো ইমার থেকে কম হয়েছিলো। ইয়াদ ইমাকে কিছু বলছে না।

ইমা ইয়াদকে চুপ থাকতে দেখে রেগে বললো, আপনি কাউকে কিছু বলছেন না কেনো ? ওদের বলুন আমাকে একা ফেলে না যেতে। আমি আর কখনো আপনাকে জ্বালাবো না কথা দিচ্ছি তবু ওদের যেতে মানা করেন।

ইমা চিৎকার করে কথা বলতে বলতেই আবার চুপ হয়ে গেলো। ইয়াদ তাকিয়ে দেখে সেন্সলেস হয়ে গেছে আবারও। ইয়াদ কোলে করে ইমাকে একটা রুমে নিয়ে শুইয়ে দিলো। ইয়াদের পিছনে পিছনে ইয়ানাও গেলো।

ইয়াদ ইয়ানাকে বললো, তুই ওর পাশে থেকে কোথাও যাবি না এখানেই বসে থাকবি। সেন্স ফিরলেও আর বাইরে যেতে দিবি না।

ইয়ানা ভেজা গলায় বললো, একসাথে দুটো ধাক্কা কীভাবে সামলাবে রে ভাইয়া ?

ইয়াদ দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, জানি না রে কী থেকে কী হয়ে গেলো। তবে এর প্রভাব ইমার উপর খুব খারাপভাবে পড়বে সেটা ভালোই বুঝতে পারছি।

২৩.
রাত দশটার বেশী বাজে তাহেরা আর তার মায়ের দাফন শেষ হয়েছে এশার নামাজের পর পরই। ইমা এখনো ঘুমাচ্ছে হসপিটালের ঘুমের ইনজেকশনের প্রভাব এখানো কাটেনি। ইয়াদ চিন্তায় আছে ঘুম ভাঙলে ইমা কী রিয়াকশন দিবে সেটা ভেবে। ইয়ানা আর ইশানকে চলে যেতে বলেছিলো কিন্তু ওরা বলেছে ইমার ঘুম ভাঙলে এক সাথেই যাবে।ছাহেরা বেগম থম মেরে বসে আছে আর তার পাশে বসে আছে কথা। ছাহেরা বেগম মা-বোন হারিয়ে নিজের ভুল বুঝতে পেরেছে। আজ বুঝতে পেরেছে সে অনেক অন্যায় করেছে তাহেরার সাথে। ছাহেরা তাহেরার পাঁচ বছরের বড় ছিলো। বেশির ভাগ দেখা যায় ছোট বোনের জন্য বড় বোন সেক্রিফাইস করে কিন্তু তাদের ক্ষেত্রে ছাহেরা ছিলো অতিরিক্ত জেদি। সবসময় তাহেরাকে হিংসা করতো সে। ছাহেরা ছিলো বাবার চোখের মণি আর তাহেরা মায়ের। তবে ছাহেরা সেটা নিয়েও হিংসা করতো তার বাবা-মা দুজনের কাছেই বেশি ভালোবাসা চাই। ছোটবেলা থেকে তাহেরার জিনিস কেড়ে নেওয়া ছিলো স্বভাব। কোনো কারণে নিতে না পারলে নষ্ট করে দিতো যাতে সেটা তাহেরাও না পায়৷ সময়ের সাথে সাথে বড় হলেও মনের পরিবর্তন হয়নি ছাহেরার। ইমরুলকে না পেয়ে হিংস্র হয়ে উঠেছিলো তাহেরার প্রতি। তাই সে ইমরুলের মৃত্যুর পর বাবাকে বুঝায় তাহেরার বিয়ে দেওয়া উচিত। তার বুদ্ধিতে তাহেরার বাবা তাকে নানাভাবে চাপ দেয় বিয়ে করার জন্য। শেষ পর্যন্ত ইমাকে সরিয়ে ফেলার হুমকি দেয়। তাহেরা বাধ্য হয় বিয়ে করতে, তাহেরের জন্মের পর ইমাকে রেখে যাওয়ায় সবসময় বুঝাতো তার মা তাকে ভালোবাসে না তাই এখানে রেখে গেছে নিজের কাছে রাখেনি। আরো বড় হওয়ার পর বুঝায় ইমার বাবাকে ইমার মা ভালোবাসে না তাই অন্য এক লোককে বিয়ে করে নিয়েছে। ছোট থেকে এসব শুনতে শুনতে ইমার মনে অভিমান জন্মে মায়ের জন্য। আজ নিজের কাছে নিজেকে ঘেন্না লাগছে ছাহেরার। তার বোনের মৃত্যুর জন্য অনেকটাই দায়ী সে। ইমা ছিলো ইমরুলের শেষ স্মৃতি তাহেরার কাছে, ভালোবাসার মানুষের শেষ স্মৃতি ভালো রাখতে না পেরে প্রতিনিয়ত অপরাধ বোধে ভুগেছে তাহেরা। মেয়ের থেকে দুরত্ব তার জীবনের মায়া কমিয়ে দিয়েছে। তাই এতোবড় অসুখ নিজের মধ্যে চেপে রেখেছিলো কাউকে বুঝতে দেয়নি কখনো।

আরমান বাড়ির দক্ষিণ দিকে বারান্দায় বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। বুকের ভেতরটা খা খা করছে। কষ্ট হচ্ছে ইমার জন্য মেয়েটার জীবনে সুখের দেখা কখনো পায়নি। সে নিজেও কী কম কষ্ট দিয়েছে ভাবতেই বুকের ব্যাথাটা আরো তীব্র হচ্ছে আরমানের। অনেক সময় ধরে ইয়ানা দূর থেকে তাকিয়ে আছে আরমানের দিকে শেষ পর্যন্ত এগিয়ে গেলো।

স্যার,,,,

কারো ডাকে আরমানের চিন্তার অবসান ঘটে, ঘুরে তাকায় ইয়ানার দিকে।

ইয়ানাকে দেখে বলে, কিছু বলবে ?

ইয়ানা নির্লিপ্ত কণ্ঠে বললো, ভালোবাসেন ইমা ভাবিকে ?

ইয়ানার কথা শুনে আরমান বিস্ফুরিত চোখে তাকায়, আরমানের ভেতরটা ঢিপঢিপ করছে। তার জন্য যদি ইমার সংসারে আবার অশান্তি হয় তাহলে নিজেকে ক্ষমা করতে পারবে না কখনোই। আসলে আজ সারাদিন আরমানের দৃষ্টি ছিলো ইমার দিকে। আরমানের মুখ দেখে মনে হতো ইমার কষ্ট সে উপলব্ধি করতে পারছে। ইয়ানা সবটা সময় সেটা খেয়াল করেছে।

আরমান নিজেকে স্বাভাবিক করে গম্ভীর গলায় বললো, কী সব বাজে কথা বলছো ? এই পরিস্থিতিতে তোমার এসব কথা মাথায় এতো কীভাবে ?

ইয়ানা ইয়াদের পাশে বসে বললো, তিক্ত হলেও কথাটা সত্যি সেটা আমি জানি স্যার। আন্টি বা নানুর মৃত্যু নিয়ে আপনি যতটা না ভাবছেন তার থেকেও বেশি ভাবছেন ভাবির কষ্ট নিয়ে।

ইয়ানার কথার উত্তরে আরমান আর কিছু বললো না কারণ কথাটা সত্যি। মৃত্যু সবসময়ই কষ্টের তবে সেটা যদি আপন কারো হয় তাহলে কষ্টের তীব্রতা বেড়ে দাঁড়ায় কয়েক গুণ বেশি। আরমানের সাথে মণি বা নানুর কখনোই খুব বেশি বন্ডিং ছিলো না। প্রয়োজন ছাড়া তেমন কথাও হতো না তাই তাদের মৃত্যুর থেকে আরমানের বেশি কষ্ট হচ্ছে ইমার কষ্ট দেখে। ইমার কান্না আরমানের বুকে রক্তক্ষরণ করছে। আজ আরমান নিজেকে ধিক্কার দিচ্ছে, নিজেকে প্রশ্ন করছে কোথায় ছিলো তার এতো কষ্ট যখন সে নিজে ইমাকে কষ্ট দিতো। কিছু হারিয়ে গেলে তার মায়া কাটাতে শিখতে হয় কিন্তু সেখানে আরমানের সাথে হচ্ছে উল্টো। ইমা হারিয়ে যাওয়ার পর তার প্রতি মায়া দিনদিন বেড়ে চলেছে আরমানের। যার লাভ কিছু না হলেও হয়তো ক্ষতি হবে অনেক। ইমা যদি আরমানের মনের কথা কোনোদিন জানতে পারে তাহলে হয়তো দম ফাঁটা তাচ্ছিল্যের হাসিতে ফেটে পরবে। আরমান তো চাইতেই ইমার কষ্টে ডুবে থাকা জীবনে এক পশলা সুখের বৃষ্টি হতে পারতো। তা না হয়ে কষ্টটাকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে সে। ইয়ানা চুপচাপ বসে রইলো আরমানের পাশে কেউ কিছু বলছে না।

—–

ইয়াদ ইমার পাশে বসে আছে কখন ইমার ঘুম ভাঙবে সেই আশায়। হঠাৎ রনিতের কল এলে নেটওয়ার্কের প্রবলেমে কথা বলতে পারে না তাই বাইরে বের হয়ে আসে।

মাথায় কারো আলতো হাতের স্পর্শ পেয়ে ইমা চোখ মেলে তাকায়। পিটপিট করে তাকিয়ে দেখতে পায় তৌহিদুরকে। ইমা ধড়ফড়িয়ে উঠে বসতে গিয়েও পারলো না।

তৌহিদুর ভাঙা গলায় বললো, থাক মা তোকে উঠতে হবে না।

ইমা বললো, আপনি ?

তৌহিদুর মায়াভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে ইমার দিকে, ছোট্ট মেয়েটা কত বড় হয়ে গেছে। ইমা তাকে সেদিন অপমান করে ফিরিয়ে দেওয়ার পর তৌহিদুর আর কখনো ইমার সামনে যায়নি।

তৌহিদুর মায়াভরা কণ্ঠে বললো, তোর মা আমাকে কখনো মেনে নেয়নি। তাই এমন ফাঁকি দিয়ে চলে গেলো। আমি কী এতোটাই খারাপ তুইও একবার বাবা ডাকতে পারবি না ? বিশ্বাস কর মা, দ্বিতীয় বার তোর মাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলাম তোর মতো একটা মিষ্টি মেয়ের বাবা হতে পারবো বলে। ছোটবেলায় তুই আমার আঙ্গুল ধরে হাঁটতি আর মিষ্টি করে বাবা ডাকতি। বিশ্বাস কর মা সেই ডাক আজও আমার কানে বাজে।

ইমা টলমল চোখে তাকিয়ে আছে তৌহিদুরের দিকে। এতো ভালোবাসা পায়ে ঢেলে সে কীভাবে বেছে নিয়েছিলো #তিক্ততার_সম্পর্ক ? এই মানুষটা একবার তার মুখে বাবা ডাক শোনার জন্য কত ছটফট করেছে আর সে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে বারবার। সবসময় রক্তের সম্পর্কই কী সব হয় মনের সম্পর্ক কী কিছুই না ? ইমার মন আজ তীব্র ভাবে চাইছে সামনে বসা মানুষটাকে একবার বাবা বলে ডাকতে। মাকে হারিয়ে মায়ের কদর বুঝেছে সে এবার উনাকে ফিরিয়ে দিলে হয়তো একদিন আবার আফসোস করতে হবে আজকের মতো।

হঠাৎই ইমার মায়ের কথা মনে পরে গেলো এক মুহুর্তের জন্য ভুলে গিয়েছিলো মা আর নানুর কথা। ইমা পাগলের মতো কান্না করে বললো, আ,,,আমার মা কোথায়,,,, মা,,, আমার নানু ?

ইমার কান্নার শব্দে ইয়াদও বারান্দায় থেকে রুমে চলে এলো। রুমে এসে দেখতে পেলো তৌহিদুরকে।

ইয়াদ ব্যস্ত হয়ে বললো, কী হয়েছে ইমা এমন করছো কেনো ?

ইমা শক্ত করে ইয়াদের হাত আঁকড়ে ধরে বললো, আমার মা কোথায় ইয়াদ ?

ইয়াদ নরম গলায় বললো, ইমা শান্ত হও এমন পাগলামি করলে তুমি অসুস্থ হয়ে যাবে।

ইমা কথা না শুনে চিৎকার করে কাঁদতে লাগলো আবার। ইমার দিকে টলমল চোখে তাকিয়ে তৌহিদুর বের হয়ে গেলো রুম থেকে। ইমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো ইয়াদ তবু ইমা থামছে না। এভাবে চলতে থাকলে ইমা অসুস্থ হয়ে যাবে। ইয়াদ কী করবে বুঝতে পারছে না ?

ইয়াদ জোরে ধমক দিয়ে বললো, চুপ করবে তুমি ?

ইয়াদের ধমকে ইমা কেঁপে উঠে চুপ করে যায় ইমা। ইমাকে চুপ করতে দেখে ইয়াদ আবার বলে, চলো বাসায় যাবে ?

ইমা নিজেকে ইয়াদের থেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করে ভেঙে ভেঙে বলে, আ,,,আমি আপনার সাথে কোথাও যাবো না।

চলবে,,,,,