তিক্ততার সম্পর্ক পর্ব-২৯

0
1754

#তিক্ততার_সম্পর্ক
লেখনীতেঃ তাহমিনা তমা
পর্বঃ ২৯

পিটপিট করে তাকালো ইমা, বুঝতে পারছে না সে বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে। চোখ ঘুরিয়ে আশেপাশে তাকিয়ে বুঝতে পারলো নিজের রুমের বেডে শুয়ে আছে।

এতোটা কেয়ারলেস কেনো তুমি ?

কথাটা ইমার কানে গেলে সেদিকে তাকিয়ে ইয়াদকে দেখতে পায়, সোফায় বসে আছে ইয়াদ৷ ইমা ধীরে ধীরে উঠে বসলো।

ইয়াদ আবার বললো, আমি যদি ঠিক সময়ে পিছনে না দেখতাম তাহলে কফির কাপের মতো তোমার মাথাটাও চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যেত নিচে পরে।

ইমা মনে করার চেষ্টা করলো তখনকার কথা। ইয়াদ দু’পা এগিয়ে ইমার দিকে ঘুরে তাকাতেই ইমা পা পিছলে পরে যেতে নেয়। কিন্তু ইয়াদ খপ করে ধরে ফেলে ইমার হাতটা। ইয়াদের বুকে এসে পরে ইমা আর অনুভব করতে পারে ইয়াদের অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়া হার্টবিট। ইয়াদ নিজেও ভয় পেয়ে গিয়েছিলো ইমাকে পিছলে যেতে দেখে। ইয়াদের বুকে পরে ইমা ভয়ে সেন্সলেস হয়ে যায়।

ইমা নিজের দিকে তাকিয়ে বলে, আমি এখানে কীভাবে এলাম ?

ইয়াদ বিরক্ত গলায় বললো, উড়ে উড়ে এসেছো ।

ইমা বোকার মতো ইয়াদের দিকে তাকিয়ে বলে, মানে, আমি কীভাবে উড়ে আসবো ?

ইয়াদ বিড়বিড় করে বলে, ইডিয়ট একটা।

ইমা ভ্রু কুঁচকে বলে, কী বলছেন বিড়বিড় করে ?

ইয়াদ রাগ দেখিয়ে বলে, আজ থেকে তোমার ছাদে যাওয়া বন্ধ আর কখনো ছাদে পা রাখবে না। তোমার জন্য এই পাশের রেলিং দেওয়া মিনি ছাঁদটাই ঠিক আছে।

ইমার উত্তরের অপেক্ষা না করে ইয়াদ রুম থেকে বের হয়ে গেলো আবার একটু পরই ফিরে এলো। ইমা কিছু বললো না, বেডে বসে রইলো। ইয়াদ রুমে এসে সোফায় বসতেই সার্ভেন্ট নক করলো দরজায়। ইয়াদ আসার অনুমতি দিলে ব্রেকফাস্ট নিয়ে রুমে ঢুকলো।

ইমা তা দেখে বললো, উপরে আনার কী প্রয়োজন ছিলো ? আপনি তো আজ সুস্থ আছেন।

ইয়াদ কিছু না বলে বিরক্তি নিয়ে তাকালো ইমার দিকে তাই ইমা চুপ করে গেলো।

সার্ভেন্ট চলে গেলে ইয়াদ বলে, কথা বাদ দিয়ে ব্রেকফাস্ট করে নাও সবার ব্রেকফাস্ট করা হয়ে গেছে অনেক আগেই।

ইমা ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখলো নয়টা বেজে গেছে আর এবাড়িতে আটটায় সবাই ব্রেকফাস্ট করে, যার যার মতো বের হয়ে যায়। ইয়াদ ইমার জন্য অপেক্ষা না করে খেতে শুরু করলো। তাতে ইমার অভিমান হলেও কিছু বললো না চুপচাপ খেয়ে নিলো। খাওয়া শেষ করে ইয়াদ ফ্রেশ হয়ে এসে রেডি হতে লাগলো।

ইমা তা দেখে বললো, আপনি রেডি হচ্ছেন কেনো ? কোথায় যাবেন আপনি ?

ইয়াদ নিজের কাজ করতে করতেই বললো, আমি কাউকে কৈফত দেওয়া পছন্দ করি না, কথাটা আবার মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে কেনো ?

ইমা খাবারের প্লেটটা সাইড টেবিলে রেখে উঠে দাঁড়িয়ে বললো, আপনি এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন, এখনই কোথায় যাবেন আবার ?

ইয়াদ আনমনে বললো, অনেক কাজ জমে আছে, আমার বসে থাকলে চলবে না।

ইমা ভ্রু কুঁচকে বললো, কীসের কাজ ? সুস্থ হলে সারাদিন কাজ করিয়েন আমি কিছু বলবো না কিন্তু এখন কোথাও যেতে দিবো না।

ইয়াদ ইমাকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। ইমা ডাকতে থাকলেও ইয়াদ সেদিকে কোনো রিয়াকশন না দিয়ে চলে গেলো। ইমা নাক ফুলিয়ে বেডে বসে পড়লো।

বিড়বিড় করে বললো, এই লোক জীবনেও আমার কথা শুনবে না, বদ লোক একটা। আবার অসুস্থ হলে, আমি একদম রুমের বাইরে ফেলে দিয়ে আসবো একে।

ইমা আবার নিজের মাথা গাট্টা মেরে বললো, ইমা তুই আসলেই একটা ইডিয়ট। এই পিঁপড়ার মতো শরীর নিয়ে ঐ হাতিকে রুম থেকে বাইরে ফেলে আসবি ? না নাহ আমি কী সব আবোল তাবোল বলছি। আল্লাহ তুমি উনাকে হেফাজতে রেখো সবসময়।

ইমা কী করবে ভেবে পাচ্ছে না। এখন ভার্সিটি যাওয়ার সময়ও নেই, লেট হয়ে যাবে। ব্রেকফাস্টের ট্রে নিচে রেখে রুমে গেলো। দরজায় দাঁড়িয়ে রুমটা স্ক্যান করে নিলো। সব এলোমেলো হয়ে গেছে শাড়ীর আচল কোমরে গুঁজে গোছানোর কাজে লেগে পড়লো।

৩০.
ক্লাসে বসে কলম আঙ্গুলে ঘুরিয়ে যাচ্ছে কথা কিন্তু স্যারের দিকে মনোযোগ একটুও নেই। সকালে বাসা থেকে বের হতেই ইশানের গাড়ি এসে থামে কথার সামনে। কথা ভ্রু কুঁচকে তাকায় ইশানের দিকে। গাড়ির ভেতরে সানগ্লাস পরার কারণ খুঁজে পায় না কথা। হোয়াইট টিশার্টের উপর ব্ল্যাক শার্ট পড়ে সবগুলো বোতাম খুলে রেখে, চোখে সানগ্লাস দিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে আছে। কথা ইশানকে ইগনোর করে সামনের দিকে পা বাড়ালো। ইশানও ধীর গতিতে কথার সাথে তাল মিলিয়ে গাড়ি এগোতে লাগলো। অনেকটা পথ হাঁটার পরও ইশানের কোনো পরিবর্তন হলো না দেখে কথা থেমে গেলো।

বিরক্ত হয়ে ইশানের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে হালকা নিচু হয়ে বললো, কী সমস্যা আপনার, আমার সাথে এভাবে পিছু পিছু আসছেন কেনো ?

ইশান এদিক ওদিক তাকিয়ে বললো, আমাকে বলছেন ?

কথার রাগ মাথায় চড়ে গেলো ইশানের কথা শুনে তবু চোখ বন্ধ করে জোরে একটা শ্বাস ছেড়ে রাগ কন্ট্রোল করে বললো, এখানে আপনি ছাড়া অন্যকেউ আছে ?

ইশান আশেপাশে তাকিয়ে বললো, নাহ তা তো নেই কিন্তু আমি তো আপনার পিছু নিচ্ছি না। আপনি যাচ্ছেন ফুটপাত দিয়ে আর আমি রাস্তা দিয়ে। আর এটা সরকারি রাস্তা সবাই যেতে পারে।

ইশানের উত্তরে প্রচন্ড রাগ লাগছে কথার তবু শান্ত স্বরে বললো, দেখুন আমি যা বলার গতকালই বলে দিয়েছি, এটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করবেন না দয়া করে।

ইশান অবাক হয়ে বললো, আমি কী আপনাকে কিছু বলেছি ?

কথা বিরক্ত হয়ে বললো, আমি কিন্তু ইয়াদ ভাইয়ার কাছে সব বলে দেবো।

ইশানের চোখ খুশিতে চকচক করে উঠলো। ফট করে দরজা খুলতেই কথা সরে দাঁড়িয়ে অবাক চোখে তাকালো ইশানের দিকে।

ইশান গাড়ি থেকে নেমে খপ করে কথার হাত ধরে বললো, এই প্লিজ, তুমি ভাইয়াকে বলে দাও না। তুমি ভাইয়াকে বললে ভাইয়া আমাদের বিয়ে দিয়ে দেবে। আসলে আমি ভাইয়াকে ভয় পায় খুব, তাই বলতে পারবো না। তুমি বললে কাজটা সহজ হয়ে যাবে আমার জন্য।

কথা ঝটকা দিয়ে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বললো, আপনি পাগল হয়ে গেছেন পাবনার টিকেট কেটে সেখানে চলে যান।

ইশান মুচকি হেঁসে বললো, তুমি সাথে গেলে আমি পাবনা যেতেও রাজি আছি।

কথা বিরক্ত হয়ে বললো, ডিসকাস্টিং লোক একটা।

কথা হনহনিয়ে সামনে এগিয়ে গেলো, একটা রিকশা ডেকে উঠে পড়লো। ইশান সেদিকে তাকিয়ে মুচকি হেঁসে নিজের গাড়িতে উঠে পরে।

টেবিলে থাপ্পড় মারার শব্দে চমকে উঠলো কথা। সামনে তাকিয়ে দেখে মোটা ফ্রেমের চশমার উপর দিকে গোল গোল চোখ করে টকলা স্যার তার দিকে তাকিয়ে আছে। কথা আস্তে করে উঠে দাঁড়ালো নিজের সিট থেকে।

টাকলা স্যার কর্কশ গলায় বললাম, তোমার মনোযোগ কোথায় কথা ? আমি কতবার ডেকেছি তোমাকে ?

কথা ভয়ে ভয়ে বললো, সরি স্যার ভুল হয়ে গেছে।

স্যার বিরক্ত হয়ে বললো, প্রথমবারের মতো মাফ করে দিলাম কিন্তু তুমি দিনদিন ক্লাসে যেভাবে অমনোযোগী হয়ে পরছো নিজের পজিশন ধরে রাখতে পারবে বলে মনে হচ্ছে না।

কথা মাথা নিচু করে বললো, সরি স্যার আর হবে না এমন।

স্যার গম্ভীর গলায় বললো, ঠিক আছে বসো আর ক্লাসে মনোযোগ দাও।

কথা ধপ করে বসে পড়লো সীটে। মনে মনে কয়েকটা বাজে গালি দিলো ইশানকে আর বললো, সব হয়েছে বদমাশ লোকটার জন্য।

কথা নিজের চিন্তা থেকে ইশানকে ছুঁড়ে বাইরে ফেলে দিয়ে ক্লাসে মনোযোগ দিলো।

এদিকে ইশান ভার্সিটি ক্যাম্পাসে বসে আছে ফ্রেন্ডদের সাথে। সবাই আড্ডা দিচ্ছে আর ইশান কথার ভাবনায় মুচকি মুচকি হাঁসছে। কথার এই ঝাঁঝালো আচরণই ইশানের বেশি ভালো লাগে। গায়ে পড়া মেয়েদের একদমই সহ্য হয় না ইশানের। কথা একদম ইশানের মনের মতো, যেমনটা ইশান চায়। কথা হয়তো একদিন ঠিক বুঝতে পারবে পৃথিবীতে সবাই বাইরের সৌন্দর্য নয়, কেউ কেউ মনের সৌন্দর্যটাও খুঁজে।

,,,,,,
আপনি বলেছেন আমার দাদা-দাদি আর ফুপি ছিলো কিন্তু তাদের কোনো স্মৃতি আমার মনে নেই কেনো ডক্টর আতিক ?

ইয়াদের সামনে বসা মানুষটার দিকে তাকিয়ে প্রশ্নটা করলো ইয়াদ। ডক্টর আতিক ইয়াদের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো কিন্তু সেই হাসির মানে ইয়াদ বুঝতে পারছে না।

ইয়াদ নিজের দৃষ্টি স্থির রেখে আবার বললো, আপনি আমার বাবার মৃত্যু নিয়ে সব বললেও আমার দাদা-দাদি আর ফুপির কথা স্পষ্ট করে কিছুই বলেননি। যদি তারা থেকেই থাকতো তাহলে এখন কোথায় আছে তারা ?

আতিক ফ্লোরে দৃষ্টি রেখে বললো, তোমার ফুপির নাম ছিলো তাফসিয়া হামিদ তবে সবাই তাকে কলি বলে ডাকতো, দেখতে ছিলো গোলাপের কলির মতো। তোমার পরিবার সম্পর্কে আমার এতোকিছু জানার কারণ তোমাকে আগেই বলেছি৷ আমি আর তোমার বাবা একসাথে স্কুল কলেজের পড়াশোনা শেষ করেছি। তোমার ফুপি ছিলো তোমার বাবার প্রায় দশ বছরের ছোট তাই তোমার বাবা আর দাদার চোখের মণি ছিলো সে, যদিও তার একটা বিশেষ কারণও ছিলো। কলি তোমার বাবার দশ বছরের ছোট হলেও আমার আট বছরের ছোট ছিলো। এখন প্রশ্ন করতে পারো আমি তোমার বাবার দুই বছরের ছোট হলে একসাথে পড়লাম কী করে ?

ইয়াদ মাথা নাড়িয়ে বললো, হুম।

আতিক এবার ইয়াদের দিকে তাকিয়ে বললো, ইয়াসির ছোটবেলা থেকে পড়াশোনার প্রতি উদাসীন ছিলো যার জন্য দুই বছর পিছিয়ে পড়ে। ইয়াসির নিজের কল্পনার জগৎ নিয়ে থাকতে পছন্দ করতো। তোমাদের যে এতোবড় বিজনেস দেখছো সেখানে ইয়াসিরের একবেলার পরিশ্রমও নেই।

ইয়াদ অবাক হয়ে বললো, তাহলে এতোবড় বিজনেস,,,?

আতিক ইয়াদের কথা শেষ করার আগেই বললো, তোমার দাদা সামলাতো, এটা তোমাদের পূর্বপুরুষদের ব্যবসা ছিলো। তাদের প্রত্যেকের যেনো রক্তে মিশে ছিলো বিজনেস কিন্তু ইয়াসির তাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা তৈরি হয়। স্কুল লাইফ থেকে লেখালেখি শুরু করেছিলো ইয়াসির।

ইয়াদ বুঝতে না পেরে বললো, মানে ?

আতিক উঠে দাঁড়িয়ে সামনের বুকশেলফের দিকে এগিয়ে গিয়ে বললো, তোমার বাবা কবি টাইপের মানুষ ছিলো। তার কয়েকটা কবিতার বইও বের হয়েছিলো সেই সময়। তোমাদের সোসাইটির সাথে একদম অপরিচিত ছিলো ইয়াসির। সবাই জানতো তাফসির হামিদের (ইয়াদের দাদা) একটা ছেলে আছে তবে তাকে খুব কম মানুষ চিনতো।

ইয়াদ কোনো কথা না বলে মনোযোগ গিয়ে শুনছে আতিকের কথা।

আতিক দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বললো, ইয়াসিরের কথা আরেকদিন বলবো আজ কলির কথা জানতে চেয়েছো তার কথাই বলছি। পৃথিবীর প্রায় সব ছেলেই কখনো না কখনো বন্ধুর ছোটবোনের প্রেমে পড়ে। কথাটা কোথাও শুনেছিলাম কিন্তু তার প্রমাণ পাই যখন আমিও পড়েছিলাম কলির প্রেমে।

আতিকের শেষের কথায় ইয়াদ চমকে তাকালো আতিকের দিকে। আতিক তা খেয়াল করে মুচকি হাঁসলো। ইয়াদ বুঝতে পারে না এই লোকটা সিরিয়াস মুডেও কীভাবে মুচকি হাসে।

ইয়াদের ভাবনার অবসান ঘটিয়ে আতিক আবার বলে, ইয়াসির আমার বড় হলেও ওর সাথে আমার বন্ধুত্বটা গভীর হয়ে গিয়েছিলো পরিচয় হওয়ার মাত্র দু-মাসের মধ্যে। মাঝে মাঝেই তোমাদের বাসায় যাওয়া হতো আমার তবে কখনো কলিকে দেখিনি আমি। এসএসসি পরীক্ষার শেষে অবসর সময় প্রায় সারাদিন থাকতাম তোমাদের বাড়িতে। একদিন ইয়াসিরের রুমে শুয়ে ছিলাম আমি আর ইয়াসির ওয়াশরুমে শাওয়ার নিচ্ছিলো। ও রেডি হয়ে গেলেই বাইরে যাবো এমন প্ল্যান ছিলো আমাদের। বেডে শুয়ে একটা ম্যাগাজিন পড়ছিলাম তখনই একটা বাচ্চা মেয়ে রুমে ঢুকে বলে ভাইয়া আমার মাটির পুতুলটা ভেঙে গেছে আমার এখনই সেইম একটা পুতুল চাই। কথাটা আজও আমি স্পষ্ট অনুভব করতে পারি। আমি তাকিয়ে থমকে গিয়েছিলাম কিছু সময়ের জন্য। সাদা ফ্রক পড়া, মাথায় সাদা ফিতা দিয়ে চুল বাঁধা দশ বছর বয়সী একটা মেয়ে ঠোঁট উল্টে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু তার কথা শুনে মনে হচ্ছিলো তার বয়স মাত্র তিন চার বছর হবে। আমার বয়স তখন সবে আঠার। প্রেমে পড়ার বয়স বলা চলে, তাই পড়েও গেলাম সাদা ফ্রক পড়া বাচ্চা মেয়েটার প্রেমে। পরে ইয়াসিরের থেকে জানতে পারলাম কলি বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। বয়সের তুলনায় তার মস্তিষ্কের বিকাশ ঘটছেনা। তাই তাকে বাইরের দুনিয়া থেকে আড়ালে রাখে তার পরিবার।

এতটুকু বলে থামলো আতিক। ইয়াদ কখনো কল্পনাও করেনি তার জানার বাইরে তার পরিবারের এতো কথা লুকিয়ে আছে, তবে সবই রহস্যে ঘেরা। ইয়াদ যখনই ভাবে হয়তো সব রহস্যের সমাধান সে পেয়ে গেছে তখনই নতুন রহস্য তার সামনে এসে দাঁড়ায়। সেদিন ডক্টর আতিকের খোঁজেই ময়মনসিংহ গিয়েছিলো ইয়াদ, কারণ আতিকের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ। সেখানে গিয়ে পেয়েও যায় আতিককে আর সাথে নিয়ে এসে নিরাপদ জায়গায় রাখে আতিককে। এখন সেখানেই বসে আছে ইয়াদ। আতিক তাকে অনেক কথায় বলছে আবার অনেকটা বলছে না। ইয়াদের জানামতে তার দাদা-দাদি মারা গেছে অনেক আগে তবে কখনো শুনেনি আর ফুপি সম্পর্কে। সেটা আতিকের থেকেই জেনেছে সেদিন। এখন ইয়াদের প্রশ্ন কোথায় আছে তার ফুপি।

চলবে,,,,