তুই আমার কাব্য পর্ব-১৭

0
1722

#তুই_আমার_কাব্য 🍂

#Writer: Anha Ahmed
#Part: 17
.
🍁
.

বাহিরে ভিষণ বৃষ্টি। প্রবল বেগে ঝড় হচ্ছে। কারেন্ট চলে গেছে। চাঁদটাও নিখোঁজ। ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে গেছে পুরো শহর। মাঝে মাঝে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। জেনেরেটরের আলোয় আলোকিত হসপিটাল। বেডে শুয়ে শুয়ে জানালার কাঁচ ভেদ করে বাহিরের দৃশ্য এক মনে দেখে যাচ্ছে মেঘলা। হঠাৎ ই হসপিটালেও নেমে এলো অন্ধকারের ঘনঘটা। বাহিরে হৈ-হুল্লোড় পড়ে গেলো। মেঘলা বেশ ভীত হয়ে গেলো। ওঠে বসতে যাবে তখনই নিজের দুই কাঁধে কারো স্পর্শ টের পেলো। প্রথমত চমকিয়ে ওঠলেও পরক্ষণেই একদম স্তব্ধ হয়ে গেলো। কাঁঠের পুতুলের মতো হয়ে রইলো। ভয়ে নাকি ভালো লাগায় তা বুঝানো এবং নিজে বোঝা দুটোই এই পরিস্থিতিতে মুসকিল। বেডের এক সাইডে মেঘলার কাছে বসে মেঘলার কাঁধ দুটোতে হাত রেখে মেঘলাকে শুয়ে দিলো। পায়ে থেকে চাদরটা টেনে শরীরে টেনে একটা হাত পেটের মধ্যে রেখে কপাল থেকে চুলগুলো সরিয়ে দুই গালে অাদুরে হাত রেখে কপালে ঠোঁট ছুয়ে দিলো। মেঘলা যেনো এবার কেঁপে ওঠলো। কেনো ও কিছু বলতে পারছে না? কেনো কোনো রিয়েকশন দিতে পারছে না? কেনো জেনো তার মনে হচ্ছে এ স্পর্শ তার চেনা। এ নিশ্বাসের ঝর এর আগেও তার উপরে আঁচড়ে পড়েছে। এ বিশ্বস্ত হাত এর আগেও তাকে ধরেছে। নিরবতা বজায় রেখে চিনতে চাইছে একে। কিন্তু পারছে না। কিছুতেই পারছে না। মেঘলা অপলক অন্ধকারের দিকে তাকিয়ে থেকে তাকে খুঁজার ব্যর্থ চেষ্টা বার বার করে যাচ্ছে। মেঘলার মন বার বার বলে যাচ্ছে, ‘ তোর নিখোঁজ মানুষের খোঁজ এসেছে, ধরে রেখে দে। ছেড়ে গেলো আর পাবি না রে ‘।
কানের কাছে তখনই একটা আহত কণ্ঠ এসে বলে,

– মেঘাবতী! আমি দুঃখিত। আমি তোমায় রক্ষা করতে পারলাম না এবার। আমি পারলাম না আগলে রাখতে। আমি পারলাম না জড়িয়ে রাখতে। আগে থেকেই বাম বুকের এই তিন ইঞ্চি নিচে একটা ক্ষত ছিলো। এবার এটা গর্তে পরিণত হলো যার অর্ধেকের বেশিটাই এই আপেক্ষে ভরে ওঠেছে। সেরে ওঠো না তাড়াতাড়ি। ভালো লাগছে না এইভাবে দেখতে। মানায় না তোমায় এইভাবে শুয়ে থাকতে। দ্রুত সেরে ওঠো। চিরকুট জমে আছে যে। পড়বে না? খুঁজবে না আমায়?

আরো কিছু বলতে যাবে তখনই বাহির থেকে একটা পায়ে শব্দ পেয়ে থেমে যায় সে । দরজার দিকে তাকিয়ে দেখে হলুদ একটা আলোরন জেগেছে। হয়তো কেউ মোম নিয়ে এগিয়ে আসছে। সে মেঘলার হাতটা ধরে হাতে ঠোঁট ছুঁয়ে বলে গেলো,

– ভয় নেই। আগলে রাখবো ভালোবাসা।

সে সাবধানে ওঠে আরেক দরজা দিয়ে বেড়িয়ে গেলো। মোমের আলোর আবছা আলো রুমে আসাতে মেঘলা পিছনের দিকটা কিছুটা দেখটা পেলো তবে সেটাও ধোঁয়াশায়। আবির একটা নার্সকে সহ মোম হাতে করে নিয়ে এলো। আবির কেবিনে ডুকে মেঘলার পাশের টেবিলটায় মোমটা রেখে মেঘলার কাছে গিয়ে কিছুটা ঝুকে জিজ্ঞাসা করে,

– মেঘলা! তুমি ঠিক আছো?

মেঘলার কোনো সাড়া শব্দ নেই। মেঘলা যেনো এখনো সেই ঘোরেই আছে। আবির আরেকটু কাছে গিয়ে মেঘলার কাঁধ ঝাকিয়ে ডাক দেয়,

– মেঘলা

মেঘলা হকচকিয়ে ওঠে সামনে তাকিয়ে আবিরের মুখটা ভেসে ওঠে। তারপর আবারো আশেপাশে তাকিয়ে সেই মানুষটার খোঁজ করতে থাকে। মেঘলার এদিক ওদিক কিছু খোঁজা দেখে আবির পাশের চেয়ারটায় বসে নরম কন্ঠে বলে,

– কাউকে খুঁজছো? কেউ এসেছিলো?

মেঘলা আবিরের দিকে তাকিয়ে ছোট্ট একটা নিঃশ্বাস ফেলে উত্তর দেয়,

– না ভাইয়া এমনি। কারেন্ট আসে নি। বাহিরে তো কিছু কিছু আলো আলো ভাব দেখা যাচ্ছে। তাই দেখছিলাম।

– নাহ্। জেনেরেটরের লাইনের সমস্যা হয়েছে কি যেনো। ঠিক করছে। তাও আবার এই ফ্লোরেই। নিচের আর উপরের ফ্লোরের গুলোর সুইচ অফ হয়ে গিয়েছিলো আর এইটারই কেনো জেনো তার ছিড়ে গেছে। টেনশন করো না চলে আসবে। ভয় পেয়ো না। তোমাকে কম্পানি দিতেই চলে এসেছি।

– আম্মু আব্বু কোথায় ভাইয়া?

– সবাই ছিলো বাহিরেই বসেই। কিন্তু এখন যেহেতু তোমার জ্ঞান ফিরেছে তাই আংকেল, মেহের আপুসহ আন্টি আর আম্মু ব্দে সবাইকে পাঠিয়ে দিয়েছি। আবার রাতে আসতে চেয়েছে মেহের আপু কিন্তু বাহিরে যে অবস্থা মনে হয় না পারবে।

– আপনি আছেন যে কষ্ট করে? চলে গেলেই তো পারতেন।

– তোমার এই অবস্থা আর আমি অন্য জায়গায় থেকে কি শান্তি পেতাম? সেইটা বেশি কষ্টকর হতো।

– কেনো?

– মেঘরানি তা বুঝলে তো হয়েই যেতো। যাই হোক এতো ভাবতে হবে না অন্যকে নিয়ে। এখন নিজেকে নিয়ে ভাবো একটু তাতেই হবে।

– ভাইয়া আমি একটু বসবো। যদি একটু সাহায্য করতেন..

– অবশ্যই। দাঁড়াও

আবির ওঠে দাঁড়াতেই কেবিন আলোকিত হয়ে গেলো। আবির মুখে চমকার এক হাসু দিয়ে মেঘলার দিকে তাকিয়ে বলে,

– নাও চলে এসেছে কারেন্ট। চলো ওঠে বসাই..

আবির কাছে যেতে যাবে তখনই দুইজন নার্স এসে পেছন থেকে বলে,

– স্যার! ম্যমের খাবার ও ঔষধ চলে এসেছে। খেয়ে ম্যমকে রেষ্ট নিতে হবে। আপনি যদি এবার আসতেন।

– কেনো আমি থাকলে কোনো প্রবলেম?

– স্যার ওনার রেষ্টের প্রয়োজন। ওনি যত রেষ্ট নেবেন তত দ্রুত সুস্থ হবেন।

– আচ্ছা ঠিক আছে।

আবির বাহিরে চলে গেলো। নার্সরা মেঘলাকে খাইয়ে চলে গেলেন। রাতে মেঘলার মা এসে কেবিনে মেঘলার কাছে থেকে যায়।

ঘড়িতে নয়টা বিশ বাজে। মেঘলা মিটমিট করে চোখের পাতা খুলছে। চোখের পাশ ফিরে তাকাতেই অবাকের শীর্ষে। সে কি ঠিক দেখছে নাকি স্বপ্ন বুঝতে একটু সময় হলো। নাহ্! এটা বাস্তব। কাব্য পাশের সোফায় একটা নিস্পাপ মুখ ঘুমে আচ্ছন্ন। গায়ে কালো শার্ট, বাদামি রঙের জিন্স পড়া। পায়ে একটা লোফার পড়ে এক পায়ে ওপর আরেক পা ওঠিয়ে সোফায় সেই অবস্থায়ই ঘুমে ঢলে আছে। এলোমেলো ভাবেও যেনো চুলগুলো অসম্ভব সুন্দর ভাবে কপাল জুড়ে পড়ে আছে। কাব্যকে এভাবে পর্যবেক্ষণ করতে গিয়ে মেঘলার ঠোঁটের কোণায় নিজের অজান্তেই হাসি ফুঁটে ওঠে। অবাধ্য মন চাইছে কপালের চুলগুলো ছুঁয়ে দিতে। কাব্য ঢলে পরে যাচ্ছে এমন সময় মেঘলা বেখেয়ালি হয়ে ওঠতে যাবে তখনই পেটে ব্যথা অনুভব করে পেটে হাত দিয়ে মৃদু চিৎকার দিয়ে ওঠে। মেঘলার কন্ঠস্বর কানে যেতেই কাব্য ওঠে পড়ে। মেঘলাকে এভাবে দেখে ব্যস্ত হয়ে ওঠে মেঘলার কাছে গিয়ে দুই হাতে বাহু ধরে জিজ্ঞাসা করে?

– কি হয়েছে মেঘলা? ব্যাথা করছে? খুব ব্যাথা করছে? ডাক্তার ডাকবো? হঠাৎ ব্যাথা করছে কেনো? তুমি ওঠলে কখন? ডাকবে না আমায়? কি দরকার আমাকে বলবে তো? নিজে নিজে ওঠতে গেলে কেনো?

মেঘলা চোখ বড় বড় করে কাব্যর দিকে তাকিয়ে আছে। কাব্যর এমন আচরণ যেনো মেঘলা হজম করতে পারছে না। বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে যে ওর সামনে কাব্য বসে আছে। তবে বেশ কিছুক্ষণ পর মেঘলা খেয়াল করলো কাব্যর চোখ গুলো। হালকা ফুলে লাল হয়ে আছে। মনে হচ্ছে যেনো হয় কেঁদেছে না হলে সারারাত নির্ঘুম কাটিয়েছে। ফর্সা মুখটা বেশ ফেকাসেও লাগছে। কি যেনো নেই নেই। মেঘলার এমন তাকিয়ে থাকা দেখে কাব্য গলা খাখড়ি দিয়ে মেঘলাকে ছেড়ে ওঠে দাঁড়ায়। এরপর নিজেকে কন্ট্রোল করে মেঘলাকে আবার জিজ্ঞেসা করে,

– ব্যাথা করছে কি? ডাক্তার কে ডাকতে হবে?

মেঘলা ধীর স্বরে জবাব দেয়,

– না লাগবে না। তেমন কিছু না। সামান্য টান লেগেছে।

– হঠাৎ ব্যাথা করলো কেনো? ওঠতে গিয়েছিলে?

– হুম

– কেনো? কোনো দরকার? বলো আমি করে দিচ্ছি।

এখন মেঘলা চিন্তায় পড়লো কি বলবে? কেনো সে ওঠতে যাচ্ছিলো? মেঘলা আমতা আমতা করে বলে,

– ইয়ে মানে আমি একটু একটু পানি খাবো। হ্যা পানি খাবো তাই। গলাটা শুকিয়ে কাঠ হয়ে আছে। খুব পিপাসা পেয়েছে।

কাব্য টেবিলের কাছে গিয়ে পানি ঢালতে ঢালতে বলে,

– তো আমাকে ডাক দিতে কয় পয়সা খরচ পরতো তোমার?

– আপনি ঘুমাচ্ছিলেন তাই আর ডাক দেই নি।

– পাকনামি সব যায়গায় না করলেও চলে। নাও খেয়ে নাও।

পানির গ্লাসটা এগিয়ে দিলো কাব্য। মেঘলার পানি খাওয়ার জন্য ওঠতে যাবে কিন্তু পারছে না। কাব্য পাশে বসে মেঘলাকে ওঠিয়ে পানি খাইয়ে দিলো। কাব্য ছোয়ার সাথে সাথে মেঘলার কেমন জেনো পরিচিত পরিচিত লাগে। পরে নিজের ভুল ধারণা ভেবে ছেড়ে দেয়। মেঘলাকে আবারো শুইয়ে দিলো। কাব্য পানির গ্লাস রাখছে তখন পাশ থেকে মেঘলা বলে ওঠে,

– আপনি এখানে কেনো? কি করছেন এখানে?

কাব্য মেঘলার এমন প্রশ্ন শুনে ওর দিকেদাড়িয়ে টেবিলে এক হাত দিয়ে ভর দিয়ে রেখে বলে,

– হা ডু ডু ম্যাচ আছে। অংশগ্রহণ করেছি। খেলবো বলে এসেছি। তুমি চাইলে তুমিও খেলতে পারো।

মেঘলা কপাল কুচকে কাব্যর দিকে তাকালো। তারপর আবার বলে,

– মানে বোঝাতে চেয়েছি আমার কেবিনে ঘুমিয়ে ছিলেন কেনো? যেখানে আম্মুর ধাকার কথা সেখানে আপনি। কৌতুহল তো জাগতেই পারে।

কাব্য সোজা হয়ে দাড়িয়ে সোফায় গিয়ে হেলান দিয়ে পায়ে পা তুলে বসে ফোনটা বের করে টিপাতে টিপাতে বলে,

– এসেছি রাতেই। ভাবি খুবই টেনশনে ছিলো কিন্তু বাবুর জন্য আসতে পারি নি। তাই আমাকে পাঠিয়েছেন। আর আন্টিও একা ছিলো। যেহেতু আংকেল বাসায় মোহনার কাছে সেহেতু একজন পুরুষ মানুষ দরকার বলে এসেছি।

– আম্মু কোথায়?

– ভাবি অনেক সকালে এসেছে। আন্টিকে নিয়ে নিচে গিয়ে ফ্রেস হয়ে কিছু খাইয়ে আনতে বলেছি।

কাব্য ঘড়ির দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলে,

– আন্টির পেসার টা ফল করেছে। কি করে জানাই তোমায়? সরি মিথ্যা বলার জন্য। তবে বেশ কয়েক ঘন্টা হয়েছে তো। আশা করছি ওনি সুস্থ হয়ে যাবেন।

পরেরদিন বিকেল সাড়ে চারটা প্রায়। মেঘলা অনেকটাই সুস্থ। তাই ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হসপিটাল থেকে সোজা মেহেরদের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কেননা মোহনার পরীক্ষার কথা মাথায় রেখে মেহের মেঘলাকে নিজের বাসায় নিয়ে এসেছে। মেঘলার কেয়ার করতে গিয়ে মোহনার যত্ন নিতে পারবে না। আর এদিকে মেহেরের শ্বাশুড়িও চলে এসেছে তাই বাবুর টেনশনও নেই বললেই চলে। সে সহজেই মেঘলার পুরো যত্ন নিতে পারবে। মেঘলা বাসায় বিছানার ওপরে পা ঝুলিয়ে বসে আছে। পাশে ওর বোন ওকে কমলার খোসা ছাড়িয়ে দিচ্ছে আর মেঘলা খাচ্ছে। মেহের কাজে একটু রুম থেকে বেড়িয়ে গেলো। কাব্য পাশ দিয়েই যাচ্ছিলো। তখনই খেয়াল করে মেঘলা আলমারির দরজা খোলার চেষ্টা করছে কিন্তু পারছে না। কাব্য রুমে ডুকে আরমারির দরজাটা মেঘলার পিছনে দাড়িয়ে খুলে দেয়। আচমকা পেছনে কেউ চলে আসায় মেঘলা চমকিয়ে ওঠে পেছন দিকে যেতে চাইলে পেছনে আলমারির দরজার সাথে মাথা লাগাতে যাবে তখনই কাব্য হাত দিয়ে দেয়। মেঘলাকে সরিয়ে এনে ধমক দিয়ে ওঠে কাব্য,

– থাপড়ায়ে দাঁত সব বাকা দেবো। এতো অস্থিরতা কিসের হ্যা? এখনই তো মাথায় ব্যাথা পাচ্ছিলে। আবার ছুটতে হতো হসপিটালে। এতোদিন কি কম টেনশনে আর পেরেশানিতে ছিলাম যে আবার নতুন করে ফেলতে চাওয়ার ধান্দা করছো।

– আশ্চর্য! আমি কি করলাম? আপনিই তো হঠাৎ করে পেছন থেকে আসলেন। ভয় পাওয়া কি অস্বাভাবিক?

– ভয় পেয়ে আহত হওয়া কোন সাস্ত্রমতে স্বাভাবিক?

– ইচ্ছে করে কেউ ব্যাথা পায় নাকি?

– কেউ না পেলেও তুমি পাও। ভার্সিটির স্টুডেন্ট কিন্তু স্বভাব যেনো নাইন টেনে পড়ে।

– আপনি এমন করে কথা বলেন কেনো হ্যা? এটিটিউট নিয়ে তো চলেনই তার মধ্যে বিহেভিয়ার টা কতো রুড। আপনাকে সহ্য করে কিভাবে আমার পরিবারের মানুষ?

– সাহস খুব বেশি করছো। আর একবার এরকম কথা শুনলে ধাক্কা মেরে জানালা দিয়ে ফেলে দিবো। হাত পা ভেঙ্গে হসপিটালে শুয়ে থেকে যত খুশি তখন বক বক করবে।

কাব্য রুম থেকে চলে যাবে তখন দেখে টেবিলে এক গ্লাস দুধ রয়েছে। বেশ বুঝতে পারলো এটা মেঘলার কিন্তু সে না খেয়ে রেখে দিয়েছে। পরে ঠান্ডা হয়েছে গন্ধ আসে বলে খাবে না। মেঘলা গাল ফুলিয়ে বসে আছে। এই ছেলেটা সবসময় ধমকায়। ভালো জিনিসেও ধমকায় আর খারাপ জিনিসে তো কথাই নেই। মেঘলা বাহিরের দিকে মুখ করে বসে ছিলো। হঠাৎ করে খেয়াল করলো ওর দুইগাল কেউ চেপে ধরেছে। সামনে তাকিয়ে দেখে কাব্য আর ওর হাতে দুধের গ্লাস যা মেঘলা ফালিয়ে দেওয়ার পাইচারি করেও ফেলে দিতে সক্ষম হয় নি। কাব্যর হাতে দুধের গ্লাসটা দেখে করুণ চোখে কাব্যর দিকে তাকিয়ে অনুরোধের ভাষা আওড়াতে থাকে৷ কিন্তু কাব্য তো কাব্যই। জোড় করে মুখ ধরে পুরো গ্লাসের দুধটা খাইয়ে কোনো কথা না বলে চলে আসতে নেয় তখনই মেঘলা জোড়ে জোড়ে বকতে থাকে,

– খারুশ ব্যাটা, হনুমানের বেষ্টফ্রেন্ড, সাদা ইংল্যান্ডের বাচ্চা ভালো হবে না জীবনে। বউ পাবেন না বলে দিলাম।

কাব্য মেঘলার কথা শুনে ঘুরে পকেটে হাত দিয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টি নিক্ষেপ করার সাথে সাথে মেঘলা ভয় পেয়র ওঠে পর্দার আড়ালে চলে যায়। মেঘলার এমন কান্ড দেখে কাব্য পিছন ঘুরে হেসে চলে যায়। কাব্য চলে গেলে মেঘলা পর্দার পেছন থেকে বের হয়ে কোমরে দুই হাত দিয়ে গাল মুখ ফুলিয়ে রেগে বলে,

– কাব্যর বাচ্চা সাহিত্য। তোকে ভেজে ভেজে যদি পুরিয়ে ছোট গল্প আমি না বানিয়েছি তবে আমার নামও মেঘলা না।

চলবে…… ❤

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন। হ্যপি রিডিং। ধন্যবাদ।