তুই আমার জানপাখি পর্ব-০২

0
4251

তুই আমার জানপাখি
Fariya Siddique
Part 2

In Bangladesh

আমি ফ্লাইট থেকে নেমে দেখি আমার জন্য গাড়ি আর কিছু গার্ড দারিয়ে আছে। সবাই কালো পোশাক পরিহিত। আমাকে আসতে দেখেই আমার ব্যাগ নিয়ে গাড়ি তে গেল আর আমাকে বলল যে ভাইয়া আমার জন্য এসব ব্যাবস্থা করেছে।আমি আর কিছু বললাম না কারন আমি জানি এদেরকে কিছু বলে লাভ নাই।কিন্তু মনে মনে খুবই রাগ হচ্ছিল।
airport থেকে আসার সময় প্রচুর জ্যাম এ পরতে হয়েছে।অবশেষে বাড়ি পৌছালাম।বাড়িতে ঢুকে আমি তো অবাক। কে বলবে আমি এই বাড়িতে একা থাকব।বাড়ি ভর্তি servant…. তাদের মধ্যে একজনকে আমি চিনি। তিনি আমাদের অনেক পুরাতন servant. রহিম চাচা।তিনি ছোট বেলায় আমার আর ভাইয়ার সাথে অনেক খেলতেন,আদর করতেন।যাই হোক, তিনি আমার কাছে এসে আমার হাত ধরে কেদে দিলেন। আর কেদে কেদে বললেন

তোমার আর তোমার ভাইরে আমি কত আদর কল করতাম। তোমরা চইল্লা যাওয়ার পর আমিও ওই বাড়ি থাইক্কা চইল্লা আইসি।(রহিম চাচা)
আমিও কান্না করে দিলাম।
আমি আর ভাইয়াও আপনাকে খুবই missকরেছি।(আমি)
হইছে হইছে। মাইয়া এই মাত্র আইল মাইয়া ডারে একটু জিরাইতে দাও।(রহিম চাচার বউ)
এনাকে ঠিক চিনলাম নাতো চাচা।(আমি)
ইনি তোমাগো চাচি।(রহিম চাচা)
ও৷ তা চাচি কেমন আছেন?(আমি)
আমরা ভালা আছি। তুমি কেমন আছ। কত গল্প হুনছি তোমার আর তোমার ভাইয়ার।(চাচি)
তাই।আচ্ছা পরে সব গল্প শুনবো। এখন আমার প্রচুর খিদা লাগছে। আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।(আমি)
আইচ্ছা। আইজ আমি তোমার সব প্রিয় খাবার রানছি।(চাচি)
আমি ফ্রেশ হতে চলে গেলাম।একটা লং শাওয়ার নিলাম।একটা টাউজার আর সাদা শার্ট পরে নিলাম।এরপর বিছানায় বসে গা এলিয়ে দিলাম।হঠাৎ মনে হল ভাইয়া কে কল দেই নাই।তাই তারাতারি ভাইয়াকে কল দিলাম।একবার রিং হতেই ধরে নিল। আমি জানতাম ভাইয়া খুবই টেনশন করছে। কল ধরে ভাইয়া বলল
এত সময় লাগে কল দিতে।জানিস আমি কত চিন্তা করছিলাম।(ভাইয়া রেগে)
সরি ভাইয়া।আসলে রাস্তায় অনেক traffic ছিল।তাই আসতে দেরি হইসে।রাগ করিস না প্লিজ। (আমি)
হুম বুঝলাম।তা রহিম চাচা কে যা লাগবে বলিস। চাচা সব এনে দিবে।আর গার্ড আর গাড়ি ছাড়া একদম University তে যাবি না।(ভাইয়া)
ভাইয়ায়ায়ায়ায়ায়ায়া।আমি বাইক দিয়ে University তে যাব।প্লিজ(আমি)
No…. তুই বাইক চালাবি না।আর শোন মারামারি একটু কম করিস।(ভাইয়া)
ভাইয়া প্লিজ প্লিজ প্লিজ। আমি বাইক নিয়ে যাব।(আমি কাদার ভান করে)
Ook.যাস। কিন্তু আস্তে চালাবি।( ভাইয়া)
ওকে।লাভ ইউ ভাইয়া(আমি).
লাভ ইউ টুকু।(ভাইয়া)
কল কেটে নিচে গিয়ে খাওয়াদাওয়া শেষকরে এক ঘুম দিলাম।
ঘুম ভাংলো রাত তিন টায়।হাল্কা কিছু খেয়ে ল্যাপটপ টা নিয়ে আমার University সম্পর্কে কিছুজেনে নিলাম।
আমার University এর trustee এর নাম রুদ্র খান।তারপর আমার প্রজেক্ট এর জন্য কিছু পড়াশুনা করে ঘুমিয়ে পরলাম।

সকালে ৬টায় ঘুম ভাংলো। আমি কফি নিয়ে বারান্দায় দাড়িয়ে ছিলাম।এমন সময় রহিম চাচা এসে নাস্তার জন্য ডেকে গেল।আমি ফ্রেশ হয়ে রেডিহয়ে নিলাম।আজ আমি কালো কালারের একটা লং জামা পরলাম সাথে গোলাপি কালারের লেগিন্স আর ওরনা।চুল গুলা ছেড়ে দিলাম।কোন সাজ দিলাম না। কাজল ও দিলাম না। আমি জানি আমাকে এমনি তেই খুব সুন্দর লাগে।
নিচে গিয়ে নাস্তা করে গাড়ি নিয়ে University তে চলে গেলাম।University গেইট এর একটু আগেই নেমে গেলাম।গেইট দিয়ে ঢুকতেই একদল ছেলে মেয়ে আমাকে ডাক দিল।আমি ও গেলাম।সেখানে অনেক জন ছেলে আর মেয়ে ছিল।যাই হোক ওরা আমাকে বলল
১ম ছেলেঃএই যে ফুলকলি তোমার নাম কি?
আমিঃ…………(চোখ সরু করে ওদের দিকে তাকিয়ে আছি)
১ম মেয়েঃ কি হল শুনতে পারছ না????.
আমিঃ……………
২য় ছেলেঃ বোবা নাকি?
হয়ত আরও কিছু বলত কিন্তু পিয়ন এসে আমাকে জিজ্ঞাসা করল
আপনি কি ফারিয়া সিদ্দিকী??? (পিয়ন)
হুম(আমি)
আপনাকে প্রিন্সিপাল সাহেব ডাকছে.(পিয়ন)
আসছি(আমি)
এই বলে আমি চলে আসলাম। প্রিন্সিপালের রুম গেলাম।
তুমি তো London University থেকে আসছ।(প্রিন্সিপাল)
হুম(আমি)
তোমার সাথে না আর দুইজন আসার কথা ছিল??(প্রিন্সিপাল)
তারা আর কয়দিন পর আসবে.(আমি)
তুমি তো সাইফুল সাহেবের(ছোট আব্বু) ভাতিজি আর স্রোত এর বোন।তোমার প্রজেক্ট এ আমি নিজে তোমাকে সাহায্য করব।কারন তোমার এই প্রজেক্ট এর সাথে আমাদের versity r সম্মান ও জড়িয়ে আছে। (প্রিন্সিপাল)
হুম( আমি)

এই বলে প্রিন্সিপাল আমাকে আমার ক্লাস এ দিয়ে আসল। ক্লাস শেষে গেইট দিয়ে বাহির হতে যাব তখনি খেলাম এক ধাক্কা।আমার মনে হল আমি কোন খাম্বার সাথে ধাক্কা খাইছি।
চোখ কি খুলে বাসায় রেখে আসছেন। অসভ্য লোক। (আমি)
ওঠে দেখি ওই বজ্জাত বেটা কোনদিকে না তাকিয়ে সোজা হেটে চলে যাচ্ছে।আমার প্রচন্ড রাগ হল কিন্তু কিছু বললাম না।।৷৷
আরে আমি তো বলতে ভুলেই গেছি যে আজকে আমার একটা নতুন ফ্রেন্ড হইছে।নাম হল রুশা।
রুশা এসে দেখে আমি রাগে ফুলতাছি।আমাকে দেখে বলল
কি রে কি হইছে তোর?(রুশা)
আরে আর বলিস না একটা বজ্জার বেটা আমারে ধাক্কা দিয়া সরি বা বইল্লা চইল্লা গেসে।(আমি)
রুশা কি জানি ভাবল তারপর বলল
থাক বাদ দে(রুশা)
হুম(আমি)

খান ভিলা

রুশা হাসতে হাসতে শেষ।
রুশার রাঃ কিরে পাগলের মত হাসছিস কেন???
রুশাঃতোমার ছেলে নাকি বজ্জাত বেটা।
বলেই আবার হাসার শুরু করল।এমন সময় রুদ্র সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে বলল
রুদ্রঃ কে বজ্জাত রে?
রুশাঃতুই
রুদ্রঃকি বললি??!!!!!(রেগে)
রুশাঃআমি বলি নাই।আমার ফ্রেন্ড বলছে। যেই মেয়েকে তুমি গেইটের সামনে ধাক্কা দিস।
রুদ্র কিছু ভাবল। তারপর বলল
রুদ্রঃ এসব বাজে মেয়েদের সাথে চলিস কেন?
কথাটা শোনা মাত্রই রুশা রেগে গেল। আর বলল
রুশাঃ কি বললি তুই!!!!ফারিয়া বাজে মেয়ে। তুই জানিস ও কত ভাল ছাত্রী। ওlondon থেকে এখানে এসেছে একটাপ্রজেক্ট এর কাজ এ।
রুশার মাঃ হে রে মেয়েটা দেখতে কেমন?
রুশাঃমেয়েটা দেখতে সেই।আমার birthday te ইনভাইট করলে দেখ।
রুদ্র কিছু বলল না আসলে এসব নিয়ে ভাবার ওর কোন টাইম নাই।ও চলে গেছে গোডাউনে

In গোডাউন

লোকঃ আমাকে ছেড়ে দিন স্যার।আমি আর কখন বিশ্বাসঘাতকতা করব না….
আসিফঃ বস এটাকে কি করব?????
রুদ্রঃ আ আসিফ তুই জানিস না কি করবি????? (কিছুটা বিরক্ত নিয়ে)
আসিফঃ একটা৷ বাকা হাসি দিয়ে কাজ শুরু করে দিল।
লোক ঃ আমাকে মের না প্লিজ। আমি আর এমন করব না।
রুদ্র এবার রেগে গেল।হাতের কাছে রড টা নিয়ে লোক টার হাত এ বসিয়ে দিল। তারপর গরম করা লোহা দিয়ে মুখে দাগ কেটে দিল।এরপর বাহির হয়ে গেল।যাওয়ার সময় বলে গেল লাশ টাকে গুম করে দিতে।

আর এদিকে ফারিয়া মনের সুখ এ বাইক চালাচ্ছিল। হঠাৎ সামনে একটা গাড়ি চলে আসে………

চলবে…………