তুই হবি আমার পর্ব-০৪

0
1989

#তুই_হবি_আমার??
#DîYã_MôÑî
#পর্ব__০৪

রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে সোজা বারান্দায় চলে গেলো,, পড়নে একটা টি-শার্ট আর থ্রি কোয়াটার প্যান্ট। চুলগুলো এলোমেলো হয়ে উড়ছে,, রোজ ঠোট কামড়ে আকাশে উড়ে যাওয়া পাখি গুলো দেখছে।

রোজ: কতো সুন্দর এই পাখিদের মুক্ত জীবন,, উড়তে পারে নিজের ইচ্ছায় যেখানে সেখানে যেতে পারে,, একসাথে থাকতে পারে। আমার জীবন টা কেন এমন হলো না.? আমি মেয়ে বলে.? শুধু মেয়েদেরকেই এতো নিয়ম কেন মানতে হয়.? কই ছেলেদের তো কেউ কিছু বলে না। ছেলেরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে তারা সাহসি সুপুরুষ। আর মেয়েরা কোনো কিছুর জবাব দিলে তারা বাচাল বেয়াদব.? যদি এমনই হয় তাহলে আমি সারাজীবন বেয়াদব থাকতে চাই। হ্যা এটাই চাই আমি।


চৌধুরি ম্যানশন..
আলিজা : হেই আপু তুমি চলে আসো না আমাদের কলেজে। তুমি তো কলেজের টিচার হতেই চেয়েছিলে তাহলে আমাদের কলেজে এপ্লাই করো প্লিজ।
আরে মৃন্ময় আংকেল কলেজের ওনার। তুমি একবার বললে আমি বাপিকে বলে সব করে দিবো।
অকে থ্যাংক ইউ আপু।

কলি : কি রে বেবি কার সাথে কথা বলছিস…? খুশি খুশি লাগছে মনে হয়..? প্রেম ট্রেম নাকি?

আলিজা : আরে না,, ওই কাজ টা হয়ে গেছে। আপু আসতে রাজি হয়ে গেছে। রোজকে আজই বলতে হবে। অনেক খুশি হবে ও।

কলি : ওয়াও। দ্যাট মিন্স যা চাইছি সেটাই হতে চাচ্ছে। অবশেষে সেই দিন আসতে চলেছে।


কলেজ গেটে দাড়িয়ে আছে রোজ। বলতে গেলে অপেক্ষা করছে। রওশনের জন্য। হঠাৎ একটা ব্লাক কার এন্ট্রি নিলো কলেজে,, আর রাস্তার সমস্ত কাদা টায়ারের চাপে রোজের গায়ের ওপর পড়লো।
রোজ : হেই স্টুপিড। দেখে গাড়ি চালাতে পারো না। উফ দিলো পুরো ১২টা বাজিয়ে। কানা নাকি রাস্তায় থাকা মানুষজন দেখতে পায়না।

গাড়ি থেকে নেমে আসলো সে,, পড়নে ব্লাক প্যান্ট ব্লাক শার্ট,, শার্টের দুইটা বাটন খোলা আর সেখানে ঝুলছে একটা সানগ্লাস। রোজ ওকে দেখেই শান্ত হয়ে গেলো কারন ছেলেটা আরাভ।

আরাভ : রাস্তার মাঝে দাড়িয়ে থাকলে এমন তো হবেই মামনি। সো এটা তোমার দোষ্। নিজে যখন দোষ্ করেছো তখন সেটার দায় একান্তই তোমার নিজের। নেক্সট টাইম এমন ভুল করবে না। কারন আমি থার্ড জেন্ডার দেখি না,, বডি ফ্যাক্চার মেয়েদের মতো আর বিহেভ ছেলেদের মতো। টোটালি একটা হও বেবি। নাহলে বুঝবো কিভাবে?

রাস্তার সবাই আরাভের কথা শুনে হেসে দিলো। ঠিক সেসময় একটা হোয়াইট কার ঢুকলো,, সেখান থেকে নামলো রওশন,, ব্লু প্যান্ট ব্লু শার্ট + ব্লাক কোটে টোটালি ফরমাল লুক।

রওশন : কি হচ্ছে এখানে.? রোজ তোমার এ অবস্থা কেন.? আর তুমি এখানেই বা দাড়িয়ে আছো কেন.?

আরাভ : আপনি কে? কলেজে নতুন মনে হচ্ছে.? রোজের আশিক নাকি.? যাই হোক নিন আপনার রোজকে নিয়ে কেটে পড়ুন।

রওশন : হুয়াট..??

রোজ : আপনি কলেজের ভেতরে যান। আমার ব্যাপার আমি বুঝে নিচ্ছি।

রওশন : কিন্তু,,
রোজ : প্লিজজজ

রওশন চলে গেলো। কারন ও জানে রোজ নিজের ঝামেলা নিজে মেটাতেই পছন্দ করে। আরাভ রোজের সামনে গিয়ে রোজের নাক ধরে টানলো তারপর সামনের দিকে পা বাড়ালো ঠিক তখনই রোজ আলতো করে আরাভের পায়ে লাথি দিলো। আর আরাভ মুখ থুবড়ে কাদার ওপর পড়লো।

রোজ : বাহ যেখানের জিনিস সেখানেই পৌছে গেলো। যাই হোক আপনার চোখ হয়তো খারাপ তাই জেন্ডার চিনতে পারেন না। শুনেছি কলেজের অনেকের সাথে রুম ডেট করেছেন তো তারা কি আদৌ মেয়ে ছিলো..? আমার তো রিতীমত সন্দেহ হচ্ছে। যদি তারা মেয়ে না হয়.? ছি! আর একটা এডভাইস দেই.? আরে জিজ্ঞাসা করছি কেন বড় ভাই ব্রাদার, ছোট বোন হিসাবে এটা বলা আমার দায়িত্ব। এর পর থেকে দেখেশুনে হাটবেন কারন এখন কাদায় পড়েছেন নেক্সট টাইম হয়তো নর্দমায় পড়তে পারেন বুঝলেন? অকে বাই।

রোজ একবার সবার দিকে তাকালো তারপর হোস্টেলের দিকে হাটা ধরলো।
রোজ: গতকাল রাতে মেঘরোদ্দুর ওখানে কি করছিলো.? তারওপর আমার সাথে কথা না বলেই চলে গেলো.? ধুর,, হয়তো কোনো কাজ ছিলো।


৩দিন পর,,, আজ কলেজে দুইজন নতুন টিচার জয়েন করছে একজন ম্যাডাম আর একজন স্যার। রোজ আজ কলেজে যাবে না। এই দুদিনে মেঘকেও কলেজে দেখা যায়নি।

কলেজের স্টাফ রুমে মুখোমুখি বসে আছে ঈশা আর রওশন। কলেজে বেস্ট ফ্রেন্ড ছিলো ওরা। হয়তো তার চেয়ে একটু বেশিই ছিলো কিন্তু হঠাৎ একটা ঘটনা ভেঙে দেয় ওদের বন্ধুত্ব। এলোমেলো করে দেয় ওদের জীবন।

রওশন : কেমন আছো ঈশা.?
ঈশা : ভালো। তুমি ?

রওশন : যেমন রেখেছিলে। তবে রোজ আছে তাই খুব ভালোই আছি।
ঈশা : জানি। এতো দিন লন্ডনে ছিলে শুনেছি #R_I ইন্ড্রাস্টিজের ওনার হয়েছো তো হঠাৎ এ কলেজে টিচার হয়ে এসেছে কি মনে করে.?

রওশন : ভালোবাসার টানে। আর কি কারন হতে পারে.? শুনলাম তোমার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। কনগ্রাচুলেশন দোয়া করি জীবনে অনেক সুখি হও।

ঈশা : হুম তুমিও রোজকে নিয়ে ভালো থেকো। রোজ কোথায়.? দেখলাম না তো ওকে। বোধ হয় আমার ওপর এখনো রেগে আছে পাগলিটা
রওশন : রোজ তেমন মেয়ে না যে কারন ছাড়া রেগে থাকবে তাও তার ওপর যাকে সে নিজের মায়ের জায়গা দিয়েছিলো। চিন্তা করো না ওর সাথে দেখা হয়ে যাবে।

ঈশা : আজও তোমার কাছে সবার চেয়ে রোজের প্রায়োরিটি বেশি রওশন। হবে নাইবা কেন.? রোজকে ভালোবাসো যে।


৫বছর আগে,,
ঈশা : বাহ রওশন বাহ,,, এই তোমার চরিত্র এই তুমি আমাকে ভালোবাসো.? আমার সাথে দেখা করতে এসে রোজকে নিয়ে ছাদে বসে,,, ছি! তাহলে এটাই কারন যার জন্য রোজ তোমার এতো কাছে আর আমি তোমার শুধুমাত্র

রওশন : তুমি ভুল বুঝছে ঈশা আমি তোমাকে প্রপোজ করেছি তার জন্যই রোজের সাথে কথা বলছিলাম।

ঈশা : তাই.? আমাকে তো তুমি তিনদিন আগে প্রপোজ করেছো,, আমি উত্তর দেইনি। বলেছি ভেবে দেখবো। এখন বুঝলাম সময় নিয়ে আমি নিজের জীবনের সবচেয়ে সঠিক কাজটাই করেছি। নাহলে তোমাদের এই প্রেম তো দেখতেই পেতাম না।

রওশন : ঈশা তুমি এভাবে বলতে পারো না।
ঈশা : আর রোজ কেমন বোন তুই যে নিজের বড় আপুর প্রেমিকের সাথে নষ্টামি করিস.? ছি! ফুপিমনি ঠিকই বলে তোর মতো মেয়ে যেন কারোর না হয়।

রওশন : ঈশা তুমি রোজকে অপমান করছো ওর মতো মেয়ে এসব শোনার যোগ্য না। ও সম্মান ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য।

ঈশা : জ্বলছে খুব জ্বলছে তাইনা.? তাহলে আমার কথা ভাবো যখন নিজের ভালোবাসার মানুষকে নিজের বোনের সাথে দেখবো এসব কথা শুনবো তখন কেমন লাগবে.?

কিছুক্ষন আগে,,
রওশন আর রোজ ছাদের দোলনায় দুলছে। তখনই রওশন রোজের মাথায় টোকা দিয়ে বললো,,

রওশন : তোর আপুকে প্রপোজ করলাম কোনো উত্তর দিলো না। এতো ঘাড়ত্যারা কেন রে.? তোর মতো নরম সরম হলেই ভালো হতো। পটতেছেও না কিছু বলছেও না।

রোজ : কি বললে.? প্রপোজ করেছো তাও আমাকে না জানিয়ে.? কিভাবে প্রপোজ করেছো.? প্লিজ বলো,,
রওশন : কিভবে বলবো। বলো বললেই বলা যায় নাকি..?? তোকে যখন কেউ প্রপোজ করবে তখন দেখে নিস।

রোজ : না না,, আচ্ছা একটা কাজ করো আমাকে প্রপোজ করে দেখাও। আমি যে রিপ্লাই দিবো আপুও তেমন কিছুই দেবে।আপুকে চিনি আমি

রওশন: তুই সিউর.? অকে। বাট তোর আপুকে কি বলেছি তা তো ভুলে গেছি। জানিস ওর সামনে গেলেই সারা পৃথিবি ভুলে যাই আমি। উফফ,,, পৃথিবির সবচেয়ে সুন্দর আর গর্জিয়াস মেয়েটা তোর আপু।
রোজ: জানি তো। আমার আপু সবার চেয়ে কিউট।কিন্তু তুমি এতো পাগল হচ্ছো কেন.?

রওশন : তুই যখন প্রেমে পড়বি তখন বুঝবি কেন পাগল হচ্ছি..?

রোজ : মোটেই না আমি প্রেম ট্রেম করবো না ডিরেক্ট বিয়ে করবো। আমি মোটেই তোমাদের মতো লুচু না বুঝলে। নাও এবার দেখাও কিভাবে প্রপোজ করেছিলে।

রওশন ছাদের কর্নারে থাকা গোলাপের গাছ থেকে একটা ফুল ছিড়ে রোজের সামনে হাটু গেড়ে বসে।

রওশন : জানি না কিভাবে বলবো তোমায়,, জানি না মেনে নিবে কি আমায়,, তবুও কিছু কথা বলতে চাই,, তোমাকে যখন প্রথম দেখেছিলাম তখন থেকে আমার হৃদয় শুধুমাত্র তোমার জন্য স্পন্দিত হয়। নিজের মনের গভীরতা সম্পর্কে প্রথম ধারনা তোমার চোখে পাই আমি,, তোমার মুখের মায়া আমাকে সারা পৃথিবি ভুলিয়ে দেয়,, কেন এমন হয় জানিনা আমি। শুধু জানি তুমি ছাড়া শূণ্য আমি,, তোমাকে ছাড়া নিঃশ্বাস নেওয়াটাও আমার জন্য খুব কষ্টকর। কারন তোমাকে আমি চাই,,আমার কাছ, আমার পাশে,, হবে আমার বেবির আম্মু? আমার আম্মুর ছেলের বউ.?

রোজ লাজুক মুখ করে উপরনিচ মাথা নাড়লো যার অর্থ হ্যা। ঠিক সেমুহূর্তে ঈশা আসলো আর শেষের ঘটনাটুকু দেখলো।


ঠাসসস।গালে হাত দিয়ে দাড়িয়ে আছে ঈশা। রওশন মেরেছে হ্যা রওশনই মেরেছে। ঈশা সহ্য করতে না পেরে রওশনের ওপর হাত তুলতেই সামনে এসে যায় রোজ আর থাপ্পড়টা রোজের গালে পড়ে। রওশন এবার রোজের উপর রেগে যায়।

রওশন : রোজজ। কেন আসলি এখানে.? তোর বোন আমাকে মারতে চেয়েছিলো মারতে দিতিস্। আজ নাহয় শেষবারের জন্য থাপ্পড়ই খেতাম। আর ঈশা তোমাকে ভালোবাসার চেয়ে সম্মান বেশি করতাম কিন্তু নিজের দোষে সেটুকুও হারালে। আরে তুমি তো রোজের আপু নিজের বোনকে এতোটুকুও চেনো না..? রোজ কে আমি নিজের ছোট বোনের মতো দেখি বন্ধু মনে করি। কিন্তু না তুমি যেটা চাও সেটাই হবে। যদি কখনো বিয়ে করি তাহলে রোজকেই করবো আমার বেবির আম্মুও রোজ হবে। তুমি না।


বর্তমানে,,
রোজ বাইনাকুলার দিয়ে স্টাফ রুমে কি হচ্ছে সেটা দেখছে।
রোজ : আমার জন্য তোমাদের বিচ্ছেদ হয়েছিলো তাই তোমাদের মিলনের সম্পূর্ন দায়িত্ব আমার। তুমি ভুল ছিলে আপু রওশন আমার প্রেমিক না আমার বেস্ট ফ্রেন্ড আমার বড় ভাইয়া। আচ্ছা ভাই কি বোনের হাত ধরতে পারে না? কপালে চুমু দিতে পারে না.? কেন মানুষ সহজ ভাবে সবকিছু নিতে পারে না কেন সব কিছুকে টেনে খিচে লম্বা করে.?


ওদিকে মেঘ আজ কলেজে এসেছে। এই দুদিন জ্বরে ভুগে চোখমুখ শুকিয়ে গেছে ছেলেটার সেই সাথে হাতে পায়ে ব্যান্ডেজ। রোজ করিডোর থেকে মেঘকে এমন অবস্থায় দেখে চিল্লিয়ে ডাকলো,,

রোজ : মেরোদ্দুররর। দাড়াও।
রোজের ডাকে দাড়িয়ে গেলো মেঘ। রোজ ছুটে নামলো নিচে। মেঘকে দেখে কেন জানি না ওর মনটাও খচখচ করছে। ও অস্থির হয়ে বললো,,

রোজ : কি হয়েছে আপনার.? এদুদিন কলেজে আসেন নি। আবার হাতে পায়ে ব্যান্ডেজ.?কি হলো কথা বলুন

মেঘ রোজের অস্থিরতা দেখে বেশ অবাক হলো। মেঘকে চুপ থাকতে দেখে রোজ মেঘের হাত চেপে ধরলো,, ব্যাথা + ভালো লাগায় কেঁপে উঠলো মেঘ। অন্যরকম অনুভুকি সৃষ্টি হচ্ছে ওর হৃদয়ে ৭বছর পর রোজের স্পর্শ পেলো ও।

রোজ : বলো কি হয়েছে.?
মেঘ : জ্বর। জ্বরের ঘোরে পড়ে গেছিলাম। আর কিছু না। হাত ছাড়ো মানুষ অন্যকিছু ভাববে।

রোজ থতমত খেয়ে মেঘের হাত ছেড়ে দিলো। খানিকটা লজ্জাও পেলো,,

রোজ : মেডিসিন নিসেন.?
মেঘ : হুম। আর তোমার নোটস ও রেডি কখন নেবে.? কলেজেই নিও কারন আমি ছেলেটা বেশি ভালো না। আমি চাইনা আমাকে জরিয়ে মানুষ তোমায় কিছু বলুক। চাইনা আমি তোমার কোনো ক্ষতি হোক,, আর না চাই তোমার অপমান।

একপ্রকার রেগে বিড়বিড় করতে করতে চলে গেলো মেঘ। আজ প্রথম রোজ মেঘের কথা শুনে খানিকটা অবাক হয়েছে,, স্তব্ধ হয়ে গেছে মেঘের আচরনে। মেঘ তো এমন ছিলো না হঠাৎ কি হলো। সেদিন রাতের পরই এমন পরিবর্তন.? কিন্তু কেন.? কিসের অপমান..? কেনোই বা ক্ষতি হবে রোজের.?


মেঘ : [ তোমাকে বুঝতে পারি রোজ কিন্তু আমার জীবনটা যে বড়ই অদ্ভুদ। আমার অতিত টা যে আমার অভিশাপ আর ভবিষ্যৎ টা ভয়ংকর। কিভাকে তোমাকে আমার জীবনে আনবো.? আমি কি সত্যিই তোমার মতো মেয়ের যোগ্য.? তোমার ভালোবাসা পাওয়ার যোগ্য.? কেন হাজার বার চেষ্টা করেও মনকে বোঝাতে পারিনা। তোমার চোখে যেটা দেখতে পাই সেটা বিশ্বাস করতে পারি না.? আমরা সবাই একই গোলকধাঁধার প্রান্ত বিন্দুতে দাড়িয়ে আছি,, যেদিন প্রতিটা বাঁধা অতিক্রম করতে পারবো কেন্দ্রে পৌছাতে পারবো হয়তো সেদিনইই,, অপেক্ষায় থাকবো সেদিনের জন্য ] মনে মনে


এদিকে আলিজা কলিকে নিয়ে শপিং করতে এসেছে। ১৮দিন পর বিয়ে এখন থেকে কেনাকাটা শুরু না করলে লাস্ট মোমেন্টে কিচ্ছু পাওয়া যাবে না। আর গেলেও সেটা চুজি কলির পছন্দ হবে না। কলি কিছু ড্রেস নিয়ে ট্রায়েল রুমে গেলো,, আলিজা তখন জুয়েলারি সপে। আলিজার চোখ যায় একটা নেকলেসের দিকে,, হোয়াইট ডাইমন্ডের স্টার নেকলেস,, আলিজা ওটা নামিয়ে গলায় ধরে দেখছে।

আরাভ : সুন্দর লাগছে নিয়ে নাও।
আরাভের কন্ঠ শুনে চমকে যায় আলিজা। আর হাত ফসকে নেকলেসটা নিচে পড়ে যায়। আলিজা ভয়ে চোখ বুজে ফেলে কিন্তু নেকলেস পড়লে তো শব্দ হবে। কই কোনো শব্দই তো হলো না। চোখ মেলে তাকালো আলিজা। নিচে আরাভ নেকলেস হাতে নিয়ে বসে আছে।

আলিজা : আ আ আপনি এখানে..? ক ক কি ক ক করছেননন.?
আরাভ : তোমার সাথে প্রেম করতে এসেছি জানু ( তোমার বোনকে শিক্ষা দিবো বেবি। আর তুমি হবে আমার গুটি) সেদিনের জন্য সরি। প্লিজ কিছু মনে করোনা। তুমি চাইলে আমি সারা কলেজের সামনে তোমায় সরি বলবো।

আলিজা : দেখুন আপনি চলে যান। আমি কিন্তু চিৎকার দিবো বলবো আপনি আমাকে বিরক্ত করছেন।
আরাভ : আমি বিরক্ত করছি.? কই না তো আমি তো তোমাকে পটাতে এসেছি। পটে যাও আমিও চলে যাবো।

আলিজা : এভাবে কেউ কাউকে পটায়.?
আরাভ : তো কিভাবে পটায়.? আমাকে একটু শিখিয়ে দাও আমি নাহয় সেভাবেই পটাবো। দিবে শিখিয়ে..? দাওনা জানু।

আলিজার দিকে এগোতে লাগলো আরাভ। আলিজা পেছনে তাকিয়ে জোরে একটা চিৎকার দিলো “নাহহহহহহ” তারপর দৌড়ে শপ থেকে বেরিয়ে গেলো। আরাভ আলিজার কান্ড দেখে জোরে জোরে হেসে দিলো।

আরাভ : পাগলি। ছোট বোনটা ধানি লঙ্কা আর এটা.এতো ভিতু কেন.? বোকা মেয়ে। তবে কিউট আছে।
নিজের মনে বলছে আর ব্লাসিং হচ্ছে আরাভ। যা প্রেম রোগের বিপদ সংকেত। কি হবে আরাভের এই খেলার পরিনাম.? নাকি নিজের জালে নিজেই ফেঁসে যাবে আরাভ ?

চলবে,,