তুমি কেন আগে আসোনি? পর্ব-১৩

0
540

“তুমি কেন আগে আসোনি?”

১৩.
অতশিদের বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামলো। সিনথিয়ার হালকা চোখ লেগে এসেছিলো। গাড়ি থেমে যাওয়ায় তন্দ্রা ছুটে গেছে। ঘুম ভাঙার পরেই সিনথিয়া বুঝলো সদ্য বিবাহিত বরের কাধে মাথা হেলিয়ে রেখেছে। সিনথিয়া তড়িঘড়ি করে উঠে বসলো। শ্বাস-প্রশ্বাস দ্রুত হয়ে গেছে। লোকটা নেমে গেলো গাড়ি থেকে। সিনথিয়া কয়েকটা লম্বা শ্বাস নিলো। এরমধ্যেই অতশি এসে ওর পাশের দরজা খুলে দাঁড়িয়ে হাসলো৷ বললো,

— “ঘুম কেমন হয়েছে ভাবি?”
— “কতক্ষণ ঘুমিয়েছি আমি?”
— “এই আধাঘন্টার মতো।”
— “কিহ..!” সিনথিয়া কপাল চাপড়ালো। অতশি মুচকি হাসছে। সিনথিয়া বললো,
— “ডাকো নি কেন আমাকে?”
— “মা ডাকতে চেয়েছিলো জাভেদই মানা করে দিয়েছে। বন্ধ গাড়ির ভেতরে প্রিয়তমার মাথা নিজের কাধে নিয়ে রোমান্টিক মুহুর্ত কাটানোর মজাই আলাদা। যদিও প্রিয়তমা ঘুমে বিভোর ছিলো।”
— “আপু প..প্লিজ..।”

সিনথিয়া লজ্জায় মিইয়ে গেলো। গালদুটো লাল হয়ে গেছে। অতশি হাসতে লাগলো সিনথিয়ার লজ্জা দেখে। সাবিনা সদর দরজা থেকে অতশিকে ডেকে বললো,

— “অতু আমার বউমাকে নিয়ে ভেতরে আয়। রাত হয়েছে অনেক।”
— “আসছি আসছি।”

সিনথিয়া গাড়ি থেকে নেমে দাড়ালো। আশেপাশে তাকাতেই স্নিগ্ধ এক ভালোলাগায় ছেয়ে গেলো। এই ঘড়টা এবং আশেপাশের পরিবেশ পুরোটা ওর মনের মতো যেমনটা সিনথিয়া সবসময় স্বপ্ন দেখেছে। অতশির সাথে ঘরে এলো। সাবিনা খুব খুশি। জড়িয়ে ধরলো সিনথিয়াকে। থুতনিটা ধরে বললো,

— “আমার মিষ্টি বউমা। আমার খুব ইচ্ছে ছিলো তোকে আমার জাভেদের বউ করার। কত দোয়া করেছি। আল্লাহ আজ সেই দোয়া পূরণ করেছে।”

সিনথিয়াও মুচকি হাসলো। খানিকটা লজ্জা পেয়েছে। মাথা নিচু করে নিলো। অতশি রান্নাঘর থেকে বাটিতে করে মিষ্টি নিয়ে এলো। বাসায় তেমন কেউ নেই। ওরা মা, মেয়ে, ছেলে এবং সিনথিয়া। অতশি মিষ্টির প্লেট সাবিনার হাতে দিলো। সাবিনা সেখান থেকে একটু করে মিষ্টি সিনথিয়াকে খাইয়ে দিলো। তিনজনেই মিষ্টি খেলো। সিনথিয়া আশেপাশে একটু চোখ বুলালো। লোকটাকে এখনো পর্যন্ত একবারও দেখলো না। অতশি সেটা বুঝতে পেরে খানিকটা গলা খাকাড়ি দিয়ে বললো,

— “এখন আর দেখা পাবে না পেয়ারি ভাবি। একটু অপেক্ষা তো করতেই হবে।”
— “না..মানে আমি আসলে…।”

অতশির হাসির শব্দে সিনথিয়া আড়ষ্ট হয়ে বসে রইলো। এখানে আসার পর থেকেই মিনিটে মিনিটে লজ্জায় ফেলছে অতশি। সাবিনা হেসে বললো,

— “আর বলিস না। গোয়ারটা সেই যে রুমে ঢুকেছে এখনো বের হয়নি। কথাই শুনতে চায়না। আচ্ছা এবার ওকে ঘরে রেখে আয় অতু।”
— “আচ্ছা।”

অতশি সিনথিয়াকে জাভেদের রুমে নিয়ে এলো। রুমে ঢুকতেই রজনীগন্ধা ফুলের ঘ্রান নাকে এসে লাগলো। ঘ্রানে চারিদিক মৌ মৌ করছে। সিনথিয়ার নিজের প্রথম বিয়ের কথা মনে পরে গেলো। কতটা চাপা যন্ত্রণা নিয়ে প্রবেশ করেছিলো সায়ানের রুমে। কিন্তু আজ সেটা নেই। একরাশ ভালোলাগায় ছেয়ে আছে মন। চারিদিকে চোখ বুলাতেই দেখলো রুমটায় অল্প ফার্নিচার। সায়ানের রুমের মতো আভিজাত্যের ছোয়া নেই। এতশত ভাবনার মাঝে সিনথিয়া খাটে বসলো। অতশি চলে গেছে। জাভেদকে না দেখে সিনথিয়া এদিক সেদিক তাকালো। ওয়াশরুমের দরজা হালকা ভিড়ানো। তারমানে সেখানে নেই। বারান্দায় নজর যেতেই সেদিকে এগিয়ে গেলো।

আবছা আলোয় দেখলো একটা ছায়ামূর্তি দাঁড়িয়ে আছে। নাকে একটা গন্ধ লাগলো। সিনথিয়া নাক মুখ কুচকে ফেলেছে। সিগারেটের গন্ধ লাগছে এটা। বুকের ভেতর মোচড় দিলো সিনথিয়ার। হঠাৎ করেই ভয় লেগে উঠলো। মনে মনেই বললো কোনোভাবে ঠকে যাইনি তো? আরেকটু এগিয়ে গিয়ে বললো,

— “কি করছেন আপনি?”
— “(—-)”
— “সিগারেট ফুকছেন আপনি?”
— “হু..!”
— “কিন্তু..আপু মানে আপনার বোন যে বললো আপনি হাফেজ। তাহলে আপনি কিভাবে সিগারেট..। এসবের মানে কি?”

গম্ভীর এবং রাশভারী কণ্ঠে জাভেদ বললো,

— “আপু এবং মা তোমায় কি বলেছে আমি জানি না। আমি বারবার বলেছি আমি বিয়ে করবো না। আমি চাইনা কোনো মেয়ের জীবন নষ্ট করতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পারলাম না। তোমাকে বিয়ে করতে হয়েছে।”
— “তারমানে মিথ্যে বলেছে আমাকে?”
— “হয়ত..!”

সিনথিয়া ছুটে বেরিয়ে এলো রুম থেকে। লিডিংরুমে চোখ বুলিয়ে কাউকে পেলো না। বামপাশে একটা রুম দেখতে পেলো। দরজা লাগানো। সেখান থেকে হাসির শব্দ আসছে। সিনথিয়া ভয়ে কেঁদে ফেললো। আবারও ঠকেছে।

__________________________
— “মা জানো সিনথিয়া গাড়ি থেকে নামার সময় যখন শুনলো জাভেদের কাধে মাথা রেখে শুয়ে ছিলো তখন কি লজ্জাটাই না পেয়েছিলো।”

অতশি হু হা করে হেসে উঠে। সাবিনা মুচকি হেসে বললো,

— “মেয়েটা খুবই মায়াবতী। আর লাজুক। আমার খুব ভালো লেগেছে।”
— “হু..! সায়ান কাচকে মূল্যায়ন করে দামি হিরাকে পায়ে ঠেলে দিয়েছে।”

কথার মাঝেই ফোন বেজে উঠলো অতশির। মোবাইল নিতেই দেখলো নয়নতারা মেয়েটা ফোন দিয়েছে। রাগ হলো। মেয়েটা বেশ জ্বালাচ্ছে। তার নাকি জাভেদকে বেশ পছন্দ হয়েছে তাই এখন বিয়ের জন্য লাফাচ্ছে। বেশ কয়েকবার কড়া কথা শুনিয়েছে। তারপরেও মেয়েটার মাঝে কোনো লজ্জাবোধ নেই। অতশি বিরক্তি নিয়ে ফোন কেটে সাইলেন্ট মুডে করে রাখলো। দরজায় নক পরায় উঠে দরজা খুললো। সিনথিয়াকে দরজায় সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে প্রথমে হাসলেও সিনথিয়ার মুখের দিকে তাকিয়ে চুপ হয়ে গেলো। মেয়েটা কাঁদছে কেনো সেটাই বুঝতে পারলো না।

সিনথিয়ার হাত ধরে টেনে রুমে এনে সোফায় বসালো। অতশি অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। সাবিনা সিনথিয়ার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,

— “কি হয়েছে মা। কাদছিস কেনো?”
— “আপনারা আমাকে মিথ্যে বলেছেন তাইনা,?”
— “মিথ্যে? কিসের কথা বলছিস?”
— “এই যে, উনি হাফেজ বললেন। অথচ তিনি এখন সিগারেট ফুকছেন।”
— “আসলে সিনথিয়া…।”
অতশিকে থামিয়ে সিনথিয়া বললো,
— “আপু উনি যে হাফেজ নয় এটা সত্য নাকি মিথ্যে?”
— “সিনথি..!”
— “হ্যাঁ অথবা না।”
— “সিনথিয়া কিছু প্রশ্নের উত্তর হ্যাঁ অথবা না দিয়ে দেয়া যায়না। আমার কথাটা শুন..।”
— “হ্যাঁ অথবা না?”
— “হু..।”
— “আপু আপনিও? আমি আপনাকে অনেক বিশ্বাস করেছি। আর আপনিই আমাকে ঠকালেন? বাবা-মায়ের থেকে আপনাকে খুব বিশ্বাস করেছি আর এইজন্য আমাকে আবারও ঠকতে হলো।”

সিনথিয়া ঢুকরে কেঁদে উঠে। অতশি অপরাধীর ন্যায় বসে আছে। তবে অতশির কথায় আংশিক সত্য ছিলো যা সিনথিয়া এই মুহুর্তে শুনতেই চাইছে না। সাবিনা করুন স্বরে বললো,

— “আমাদের ভুল হয়ে গেছে না। মাফ করে দিস। আমার ছেলে একদিন ঠিক হয়ে যাবে দেখিস। তুই পারবি ওকে ঠিক করতে। বল পারবি না?”

সিনথিয়া কিছুই বললো না। মাথা নিচু করে নিরবে কেঁদে যাচ্ছে। চোখের পানি ফোটায় ফোটায় গড়িয়ে ওর হাতের উপর পরছে। ওর নিরবতায় অতশির খুব কষ্ট হলো। কিন্তু কিছু বলার ভাষা পেলো না। সিনথিয়াও নিরবে উঠে চলে এলো রুমে।

নিজেকে প্রস্তুত করে নিয়েছে পর মুহুর্তের জন্য। রুমে আসতেই দেখলো জাভেদও রুমে এসে দাঁড়িয়েছে। সিনথিয়া হাতের চূড়ি খুলে মেঝেতে ফেলে দিলো। গহনা খুলে ফেলতে লাগলো মেঝেতে। মাথার দোপাট্টা খুলে ছুড়ে ফেললো মেঝেতে। জাভেদ হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে রইলো সিনথিয়ার দিকে। এগিয়ে এসে বললো,

— “এসব কি করছো?”
— “প্রস্তুত করছি নিজেকে আপনার জন্য। আমি নিজ থেকে রাজি না হলে তো জোর করবেন। নিজের হিংস্রতা আমার উপর মিটাবেন। তাই নিজ থেকেই রেডি হচ্ছি যাতে আপনার জোর করতে না হয়।”

কথা বলার মধ্যেই শাড়ির আঁচল খুলে ফেললো। জাভেদ এগিয়ে এসে সিনথিয়ার ডানগালে আলতো হাত রাখলো। এই প্রথম সিনথিয়া পূর্ণনজরে জাভেদের দিকে তাকালো। লোকটার মুখশ্রী শুভ্র স্নিগ্ধতায় ছেয়ে আছে। দৃষ্টি খুব গভীর। যেই গভীরতায় হারিয়ে যেতে পারে যেকোনো নারী। সিনথিয়া একেবারেই থেমে গেছে। জাভেদ মিহি কণ্ঠে বললো,

— “আমি খুব খারাপ আমি জানি। তারমানে এই নয় তোমাকে অসম্মান করবো। তোমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে তোমার উপর নিজের পুরুষত্ব খাটাবো। জানিনা আম্মু আর আপু কি বলেছে তোমাকে। তবে আমি তোমাকে ওয়াদা করছি তুমি কখনোই এখানে অসম্মানিত হবে না। পূর্ণ মর্যাদার সহিত থাকবে এখানে।”

শাড়ির আঁচল তুলে সিনথিয়ার গায়ে জড়িয়ে দিলো। এলোমেলো চুলগুলো গুছিয়ে দিলো। কপালের উপর পরে থাকা চুলগুলো কানের পেছনে গুজে দিয়ে বললো,

— “তোমাকে অনেক ক্লান্ত লাগছে। মনে হচ্ছে অনেকদিন ধরেই তুমি ক্লান্ত। তোমার স্বস্তির প্রয়োজন। আজ থেকে তুমি স্বস্তি পাবে এই ঘরটায়। নিজের মতো করে থাকো। হুহ..!”

সিনথিয়া মাথা নাড়ালো। জাভেদ মুচকি হাসলো। সেই হাসি দেখেই সিনথিয়া চোখ বুজে নেয়। ঘায়েল করা হাসি। পুরুষ মানুষের হাসি এতটা সুন্দর হতে পারে সিনথিয়ার জানা ছিলো না। সায়ানের হাসি দেখলে ওর অন্তর-আত্মা কেপে উঠতো ভয়ে। হাসির আড়ালে যে হিংস্রতা ছিলো তার। কিন্তু এই হাসিতে হিংস্রতা নেই। মায়াবী হাসি। যেই হাসিতে সিনথিয়ার অন্তর প্রশান্ত হয়ে গেছে।

জাভেদ কিছুটা দূরত্বে এসে দাড়ালো। সিনথিয়ার দিকে ভালো করে একবার তাকিয়ে নজর সরিয়ে নিলো। হালকা কেশে বললো,

— “তোমার নামটা কি?”

সিনথিয়া অবাক হলো। সিনথিয়ার চাহনি দেখে জাভেদ এদিক সেদিক তাকাতে লাগলো। খুবই লজ্জায় পরেছে। নিজের বউটার নাম পর্যন্ত জানে না। অতশি বলেছিলো। কিন্তু আবার ভুলে গেছে। সিনথিয়া মৃদু স্বরে বললো,

— “সিনথিয়া।”
— “সিয়া..!”
— “সিয়া?”
— “তোমার নামটা অনেক বড়। তাই মাঝের সব বাদ দিয়ে প্রথম এবং শেষ অক্ষরে সিয়া। তোমাকে সিয়া বলেই ডাকবো আমি।”
— “(—–)”
— “অনুমতি আছে?” জাভেদের কণ্ঠ কাতর শোনালো।
— “হু..! আছে।”

জাভেদ হাসলো। সিনথিয়া আবারও থমকেছে। শীতল শিহরণ বয়ে গেলো মন-প্রাণ জুড়ে। জাভেদ ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আবার সিনথিয়ার দিকে তাকালো। আলমারির ভেতর থেকে সবুজ রঙের সূতির শাড়ি এনে সিনথিয়ার হাতে ধরিয়ে দিয়ে বললো,

— “এই শাড়ি খুলে এটা পরে নাও। আরাম পাবে। তাড়াতাড়ি যাও। খেয়েছো কিছু?”
— “না..।”
— “আমিও খাইনি। তুমি কাপড় বদলে আসো। আমি খাবার নিয়ে আসছি। তাড়াতাড়ি যাও। খুব ক্ষিদে পেয়েছে।”
— “ওসব ছাইপাস খেয়ে পেট ভরেনি?” মিনমিনে স্বরে বললো সিনথিয়া।

জাভেদ ভ্যাবলা মার্কা হাসি দিয়ে বেরিয়ে গেলো। যার অর্থ বকা দিও না বউ। সিনথিয়া ওয়াশরুম থেকে একেবারে গোসল করে শাড়ি পরে বেরিয়েছে। মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা সব জিনিস তুলে কাঠের ড্রেসিংটেবিলর উপর রাখলো। এরমধ্যেই জাভেদ খাবার নিয়ে উপস্থিত হলো। দুইহাতে দুইটা প্লেট। ছোট্ট টেবিলটার উপর রেখে পাশের চেয়ারে বসে সিনথিয়াকে ডাকলো। সিনথিয়া এগিয়ে এসে খাটের কিনারায় বসলো। হাত ধোয়ার জন্য জাভেদ নিজেই বাটি এবং গ্লাস সিনথিয়ার দিকে এগিয়ে ধরলো। সিনথিয়া হাত বাটির উপরে ধরলো। জাভেদ হাত ধুয়ে দিলো।

খাওয়ার মাঝে আড়চোখে বারবার জাভেদের দিকে তাকিয়েছে সিনথিয়া। লোকটার খাবার খাওয়ার স্টাইলটাও সুন্দর। জাভেদ খাবার প্লেটের দিকে নজর রেখে বললো,

— “আমি এখন সম্পূর্ণই তোমার সিয়া। চুরি করে দেখার কি আছে? সোজাসুজি তাকিয়ে দেখো।”

সিনথিয়ার বিষম উঠলো। কাশতে শুরু করেছে। কাশতে কাশতে পুরো মুখ লাল হয়ে গেছে। জাভেদ দ্রুত পানি এগিয়ে দিয়ে সিনথিয়ার পাশে বসলো। সিনথিয়া ঢকঢক করে পানি খেতে শুরু করেছে। জাভেদ হাত বুলিয়ে দিচ্ছে সিনথিয়ার পিঠে। পানি খাওয়া শেষে লজ্জায়, অস্বস্তিতে সিনথিয়া একেবারেই নুয়ে গেলো। হাত কাপছে। গ্লাসটা শক্ত করে চেপে ধরেছে। জাভেদ সেদিকে লক্ষ্য করে নিঃশব্দে হাসলো। সিনথিয়ার পাশ থেকে উঠে আবার চেয়ারে গিয়ে বসলো। সিনথিয়া মাথা নিচু করে রেখেছে। জাভেদ খেতে খেতে বললো,

— “হয়েছে আর লাল, নীল হতে হবে না। বাকি খাবারগুলো শেষ করো।”

সিনথিয়া আর মাথা তুলে তাকায়নি জাভেদের দিকে। মাথা নিচু করেই খেয়েছে। খাওয়া দাওয়া শেষ এবার শোবার পালা। সিনথিয়া ইতস্তত করছে। জাভেদ বিছানায় বসে বললো,

— “দেখো আমার রুমে সোফা নেই। তাই বিছানা ছাড়ার প্রশ্নই উঠে না। আর আমি নিচেও ঘুমাবো না। আর না তোমাকে ঘুমাতে দিবো। এবার এসো। শুয়ে পরো।”
— “হু…।”

সিনথিয়া খাটের এক কিনারায় গুটিশুটি মেরে শুয়ে পরলো। জাভেদ সেদিক তাকিয়ে বললো,

— “এই মেয়ে কোমড় ভেঙে আমার টাকা খরচ করানোর চিন্তায় আছো তাইনা?”

সিনথিয়া চমকালো। চমকে তাকালো জাভেদের দিকে। অবাক হিয়ে বললো,

— “মা..মানে?”
— “এত কিনারায় শুয়েছো কেনো? এক গড়ানি দিলেই ধপাস করেই নিচে পরবে৷ আরো আসো মাঝখানে। তোমাকে তোমার অনুমতি ছাড়া ছুবো না। টেনশন করো না।”

সিনথিয়া আরেকটু এগিয়ে এলো। দুজনে ক্লান্ত থাকায় ঘুমিয়ে গেছে। জাভেদের আগে সিনথিয়ায় ঘুমিয়ে গেছে। ঘুমের ঘোরেই একেবারে জাভেদের কাছাকাছি এসে হাত জড়িয়ে ধরেছে। জাভেদ এক পলক তাকিয়ে বললো,

— “এতক্ষণ আমার পাশে শুবেই না। আর এখন আমাকে জড়িয়ে ধরেছে। দাড়াও মেয়ে তোমায় যদি সকালে লজ্জায় না ফেলেছি তো…।”

জাভেদ সিনথিয়াকে জড়িয়ে ধরলো। এবার শুধু সকাল হওয়ার পালা। মুহাহাহা….!

চলবে,,
® ‘নুরুন নাহার’