তুমি কেন আগে আসোনি? পর্ব-১৪

0
566

“তুমি কেন আগে আসোনি?”

১৪.
পাখির কিচিরমিচির ডাকে সিনথিয়ার ঘুম ভাঙলো। চারিদিকে আলো হয়ে গেছে দেখে হতাশ হলো। কাল রাতে একটু দেরি করে ঘুমিয়েছে তাই আজ ফজর মিস হলো। অপরিচিত ঘর দেখে একটু অবাক হয়ে আশেপাশে তাকালো। তারপরই মনে পরলো গতকাল সিনথিয়ার বিয়ে হয়ে গেছে। এটা ওর শ্বশুর বাড়ি। কাল রাতের কথা মনে হতেই মুচকি হাসলো। জাভেদের কথা মনে পরতেই লজ্জা পেলো। নড়েচড়ে উঠতে চেয়ে পারলো না। মনে হচ্ছে কারো বাহুবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছে। মুহুর্তেই হৃদপিন্ড লাফ দিয়ে উঠলো। মনে মনে বললো আমি উনার বাহুডোরে নই তো?

আড়চোখে নিজের বামপাশে তাকিয়ে তাড়াতাড়ি চোখ বন্ধ করে নিয়েছে। যা ভাবছিলো তাই। বুকের ভেতর ঢিপঢিপ করছে। সিনথিয়া নড়েচড়ে একটু সরতে চাইলো কিন্তু পারলো না। অনেকক্ষণ চেষ্টা করেও পারলো না। বড় একটা নিঃশ্বাস নিয়ে ভালো করে তাকালো জাভেদের দিকে। লোকটার ভারী নিঃশ্বাস বলছে গভীর ঘুমে আছে। সিনথিয়া খুটিয়ে খুটিয়ে দেখতে লাগলো জাভেদকে। ফর্সা মুখে চাপদাড়ি বেশ মানিয়েছে। কালো কুচকে লম্বা দাড়ির কারণে আরো আকর্ষণীয় লাগছে। সিনথিয়া হাত বাড়িয়ে দাড়িগুলো ছুতেই জাভেদ চোখ মেলে তাকালো। ঠিক এই মুহুর্তে মনে হলো হৃৎপিন্ড লাফ দিয়ে মুখ চলে এসেছে। সিনথিয়াও ছিটকে সরে যেতে চাইলো। কিন্তু পারেনি। বলিষ্ঠ হাতের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে আছে যে তাই।

সিনথিয়া আমতা-আমতা করে এদিক সেদিক তাকিয়ে বললো,

— “আমি..আপ..আম….।”

জাভেদ না শুনার ভান করে আরেকটু এগিয়ে এলো সিনথিয়ার দিকে। সিনথিয়া এবার ছটফট করছে ছাড়া পাওয়ার জন্য। জাভেদ ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বললো,

— “জোঁকের মতো করছো কেনো?”
— “কিহ..! আমি জোঁক?”
— “তো কি বলবো? এরকম ছটফট করছো কেনো?”
— “আপনি আমাকে..এভাবে ধ.ধরেছেন কে..কেনো?”

সিনথিয়া লজ্জায় তাকাতে পারছে না জাভেদের দিকে। জাভেদ এমন একটা ভাব নিলো যেনো সে কিছুই জানে না। সিনথিয়া এবার জাভেদের হাতে চিমটি দিলো। জাভেদ শিস! আওয়াজ করে ভ্রু কুচকে তাকালো সিনথিয়ার দিকে। সিনথিয়া কাচুমাচু হয়ে বললো,

— “ছা..ছাড়ুন।”
— “কালরাতে আমার পাশে শুবেই না। অথচ এখন জড়িয়ে ধরে রেখেছো।”
— “আমি মোটেও আপনাকে ধরিনি। আপনি ধরেছেন। এখন মিথ্যে অপবাদ দিচ্ছেন আমার নামে।”
— “তাই বুঝি? তুমিই তো আগে উস্কে দিয়েছিলে। তারপর আমি ধরেছি।”
— “আ..আমি?”
— “নিজেই এসে আমাকে জড়িয়ে ধরেছিলে।”
— “মোটেও না। মিথ্যে বলছেন আপনি।”
— “জানতাম তুমি এটাই বলবে। তাই তো প্রুফ রেখেছি মোবাইলে।”
— “মা..মানে?”

জাভেদ হাত বাড়িয়ে মোবাইল নিলো খাটের পাশের ড্রয়ারের উপর থেকে। মোবাইল ঘেটে একটা ভিডিও সিনথিয়ার সামনে ধরলো। সিনথিয়া অবিশ্বাস্য চোখে তাকিয়ে রইলো মোবাইলের স্ক্রিনে। ছিহ! এতো নির্লজ্জ কবে হয়েছে ও? এইভাবে জড়িয়ে ধরে আবার বুকে মাথা রেখে…উম! উম!

সিনথিয়া মুখ ঘুড়িয়ে নিলো। লজ্জায় কান গরম হয়ে গেছে। জাভেদ হু হা করে হাসছে। এতে আরো নেতিয়ে গেছে সিনথিয়া। এবার আরো ছটফট করছে ছাড়া পাওয়ার জন্য। কিন্তু লোকটা ছাড়ছেই না। জাভেদ সিনথিয়াকে আরো ভড়কে দিতে বললো,

— “কালরাতে তুমি যা যা করেছো সব এখন তোমাকে ফেরত দেবো।”
— “মা..মা..মানে?”
— “আসলে আমি কারো ঋণ রাখি না বুঝলে? তাই এখন সব পাওনা মিটিয়ে দেবো তোমায়?”
— “কি..কিসের পাওয়া?”
— “ভিডিও দেখোনি? কি কি করেছিলে তুমি কাল রাতে।”
— “আমি.. ঘুম..আমি।” সিনথিয়ার কেঁদে দেয়ার মতো অবস্থা। কাঁদো কাঁদো মুখ করে বললো,
— “প্লিজ ছা..ছাড়ুন। আ..আর হবে না এ..এমন।”
— “উহু! নো বাহানা৷ এখন তো আমি মোটেও ছাড়ছি না তোমায়।”

জাভেদ সিনথিয়ার দিকে ঝুকতেই সিনথিয়া কেঁদে ফেললো। জাভেদকে ধাক্কা দিয়ে বললো,

— “স..সরুন। আমি এমন কিছুই করিনি..। আপনি বানিয়ে বানিয়ে বলছেন।”
— “হুশ! চুপ…।”
— “প..প্লিজ সর..সরুন। আপনি বলেছিলেন আমার অনুমতি ছাড়া ছুবেন না।”
— “সেসব এখন আর হচ্ছে না।”

জাভেদ আরেকটু ঝুকতেই সিনথিয়া শব্দ করে কেঁদে উঠলো। জাভেদ সরে এসে ঘর কাপিয়ে হাসতে লাগলো। জাভেদের হাসি দেখে সিনথিয়া বোকা বোকা মুখ করে তাকালো। সিনথিয়ার গাল টেনে দিয়ে বললো,

— “সিয়া তুমি সত্যিই খুব কিউট। মজা করছিলাম তোমার সাথে। আর তুমি সত্যিই ভেবেছো? আবার কেঁদেও ফেলেছো।”
— “এভাবে ভয় দেখালে কাদবো না তো?”
— “ওলে বাবুতা..। আসো আদর করি।”

কথাটা শুনে সিনথিয়া খাট থেকে নেমে দৌড়ে ওয়াশরুমে চলে গেলো। এদিকে জাভেদ পেট চেপে হাসতে লাগলো। আচ্ছা জব্দ করেছে মেয়েটাকে। দাঁত ব্রাশ করে হাত-মুখ ধুয়ে নিলো সিনথিয়া। ওয়াশরুমের দরজা একটু ফাক করে উঁকি দিলো রুমে। জাভেদকে রুমে না দেখে এক ভৌদৌড় দিলো রুমের বাহিরে। জাভেদ আলমারির কাছেই ছিলো। সিনথিয়ার কান্ড দেখে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খাওয়ার মতো অবস্থা।

লিডিংরুমে আসতেই দেখলো অতশি সোফায় পা তুলে বসে বসে শসা খাচ্ছে। সাবিনা রান্নাঘরে কাজ করছে৷ সিনথিয়া জিভ কাটলো। প্রথমদিন এই বাড়িতে। আর আজকেই দেরিতে উঠলো। লিডিংরুমের বড় এলার্ম ঘড়িটার দিকে তাকিয়ে দেখলো সকাল নয়টা বাজে। ইশ! বেশ বেলা হয়ে গেছে। বকা দিবে কি শ্বাশুড়ি মা? সায়ানদের বাড়িতে তো অনেক কথা শুনাতো একটু দেরি হলেই। এমন এমন বিশ্রী কথা বলতো আরশি যা মুখে আনাও অসম্ভব সিনথিয়ার জন্য। সব ভাবনা সাইডে ফেলে মাথায় ঘোমটা টেনে গুটিগুটি পায়ে এগিয়ে গেলো সামনের দিকে। সিনথিয়াকে দেখে অতশি মুচকি হাসলো।

— “আসসালামু আলাইকুম ভাবি। শুভ সকাল।”
— “ওয়া আলাইকুমুস সালাম। শুভ সকাল আপু।”
— “ঘুম কেমন হলো?”
— “জ্বী ভালো। মা কই?”
— “রান্নাঘরে কাজ করছে। মন ভালো আছে এখন?”

সিনথিয়া লজ্জা পেলো। কালরাতে জাভেদকে সিগারেট ফুকতে দেখে ভেবেছিলো সেও সৈরাচারী হবে সায়ানের মতো। কিন্তু সেসব ভাবনা সব ভুল করে দিয়েছে লোকটা। আচ্ছা দুষ্টু লোক। সিনথিয়া ইতস্তত করে বললো,

— “সরি আপু। আসলে কাল উনাকে ওভাবে দেখে রেগে গেছিলাম। তাই..।”
— “তুই এখন হাসিখুশি আছিস তাতেই আলহামদুলিল্লাহ। আমি কিন্তু তোর বড় হুম বুঝেছিস? তোর স্বামীরও বড়। তাই তোকে তুই করে বলবো। তুমি বললে পর পর লাগে।”
সিনথিয়া অতশির কাধে মাথা রেখে বললো,
— “আপনার যা ইচ্ছে ডাকুন। তাতে আমি কিছুই মনে করবো না।”
— “জাভেদকে কেমন লাগলো?” কানে কানে ফিসফিস করে বললো অতশি।

সিনথিয়া সটান হয়ে বসে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে। লজ্জা পাচ্ছে ভিষণ। জাভেদের নাম শুনে ব্লাশিং হওয়ার কারণে গাল দুটো গোলাপি হয়ে গেছে। অতশি মুচকি হাসলো। এই সুখী ভাবটাই দেখতে চেয়েছিলো সিনথিয়ার চেহারায়। যেটা আজ বিদ্যমান। একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো অতশি। সিনথিয়ার গাল টেনে বললো,

— “হয়েছে আর ব্লাশিং হতে হবে না। মায়ের সাথে দেখা করে আয়।”
— “ঠিকাছে।”

সিনথিয়া রান্নাঘরে উঁকি দিয়ে দেখলো সাবিনা রুটি বেলছেন। একটু ভয়ে ভয়েই রান্নাঘরে ঢুকে সালাম দিলো সাবিনাকে। সিনথিয়াকে দেখে সাবিনা মুচকি হাসলেন৷ সাবিনার হাসি দেখে সিনথিয়ার মনের ভয় দূর হয়ে গেলো। সিনথিয়া ইতস্তত করে বললো,

— “আজকে একটু দেরি হয়ে গেছে উঠতে। আমি সবসময় তাড়াতাড়িই উঠি সকালে। আজ কিভাবে এতো দেরিত…।”
সিনথিয়াকে থামিয়ে সাবিনা হেসে বললেন,
— “এতো সাফাই গাইতে হবে না। ঘুম এসেছিলো ঘুমিয়েছিস ভালো হয়েছে। এবার গিয়ে সোফায় বস। আমি রুটি বানিয়ে আনছি।”
— “আরে না মা। আমি থাকতে আপনি কেনো রান্নাবান্না করবেন। আমি করে দিচ্ছি দিন।”
— “সিনথু আমি তোকে কাজের বুয়া করে আনি নি। আমার বাড়ির বউ করে এনেছি। আমার ঘরের সম্মান তুই। তোর যত্ন করা আমাদের দায়িত্ব। তাই এতো ফর্মালিটি দেখাতে হবে না। যা জাভেদকে ডেকে আন।”

সিনথিয়া বিষ্মিত হয়ে তাকিয়েছিলো সাবিনার দিকে। এতটা আশা করেনি ও। সব যেনো স্বপ্ন লাগছে। সিনথিয়া সবসময় চেয়েছে ওর শ্বাশুড়ি একদম মায়ের মতো করে ভালোবাসবে ওকে। আরশিকে তো সেভাবে পায়নি আর না পেয়েছে নিজের মাকে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়াতাআ’লা এত লম্বা একটা সময় অপেক্ষা করানোর পর এতো ভালো মানুষদের সান্নিধ্যে এনে দেবেন এটা একেবারেই কল্পনাতীত ছিলো। সিনথিয়া চলে যেতে গিয়ে আবার ফিরে এসে সাবিনাকে জড়িয়ে ধরলো। চোখের কোণে বিন্দু বিন্দু অশ্রু জমেছে। দুঃখের নয় সুখের অশ্রু জমেছে। সাবিনাও পরম মমতায় হাত বুলিয়ে দিলেন সিনথিয়ার মাথায়।

.
কিছুটা ভয়ে ভয়ে রুমে ঢুকলো সিনথিয়া। জাভেদকে হঠাৎ এতোটা ভয় পাচ্ছে কেন বুঝতে পারছে না। লোকটাকে যে ওকে অত্যাচার করবে তা নয়। মূলত লোকটার দুষ্টুমির কারণেই ভিষণ অস্বস্তি নিয়ে রুমে প্রবেশ করেছে। জাভেদকে রুমে পায়নি। বেলকনিতে গিয়ে দাড়াতেই দেখলো সে এখানে মনের সুখে বিড়ি টানছে। মুহুর্তেই সিনথিয়া রনচন্ডী রুপ ধারণ করেছে।

হনহনিয়ে গিয়ে দাড়ালো জাভেদের সামনে। চোখ মুখ ভালোই কুচকে রেখেছে। জাভেদ ওকে দেখে সিগারেটের দিকে এক পলক তাকালো। এরমধ্যেই ছো মেরে টান দিয়ে নিয়ে নিলো সেটা সিনথিয়া। জাভেদ হতভম্ব। সিনথিয়া সেটা ছুড়ে ফেললো বেলকনির এক কোণায়। দুইহাতে জাভেদের গেঞ্জির কলার টেনে ধরে বললো,

— “আর একবার যদি এসব ছাইপাঁশ খেতে দেখেছি তো ঘরে আর ভাত পাবেন না। সারাদিন এসব খেয়েই পেট ভর্তি করবেন।”
— “ওকে ওকে। রাগছো কেনো?” জাভেদের নরম কণ্ঠ।
— “রাগবো না তো কি মাথায় তুলে নাঁচবো? আর কি কি নেশায় জড়িত আছেন আপনি?”
— “ছাড়ো না ওসব। আর খাবো না।”
— “বলতে বলেছি।”
— “ওই মাঝে মাঝে এক প্যাগ দুই প্যাগ গিলি আরকি।”

সিনথিয়া জাভেদকে ছেড়ে দিয়ে দূরে দাঁড়িয়ে কেঁদে ফেললো। জাভেদকে ঠেলে সরিয়ে পাশের চেয়ারে বসে কাদছে। জাভেদ পরলো মহা চিন্তায়। কি কারণে বউটা কাদছে বুঝলো না। সিনথিয়ার সামনে হাটু গেড়ে বসে দুই হাত ধরে বললো,

— “এই সিয়া কাঁদছো কেনো?”
— “কথা বলবেন না আমার সাথে।”
— “কি করেছি আমি? বলো না। কাদছো কেনো?”
— “আপনি কেনো এসব খান বলুন?”
— “নেশা হয়ে গেছে।”
— “কিহ? শেষ পর্যন্ত একটা নেশাখোরের সাথে আমার বিয়ে হলো? এই ছিলো আমার কপালে? ইয়া আল্লাহ..!”

সিনথিয়া বিলাপ করে কাদছে। জাভেদ মুসকিলে পরলো৷ এখন যদি আপু আর মা জানে তাহলে ওর পিঠে খিল বসাবে ওর দজ্জাল বোন। নিজের ঘরে নিজেকেই পরের মতো থাকতে হয় ওর দজ্জাল বোনের কারণে। সারাদিন দাপট দেখিয়ে জাভেদকে জব্দ করে যায়..হুহ! জাভেদ ওর হাত ধরে অনুনয় করে বললো,

— “প্লিজ কেঁদো না বউ।”

সিনথিয়ার কোনো হেলদোল নেই। কেঁদেই যাচ্ছে। জাভেদ এবার আরেকটু অনুনয় করে বললো,

— “আচ্ছা তোমাকে কথা দিচ্ছি আর খাবো না আমি এসব। নেশা ছেড়ে দেবো।”
— “প্রমিজ?”
— “হু.. প্রমিজ।”

সিনথিয়া হেসে উঠে দাড়ালো। যাক কাজ হয়েছে ওর এক্টিং এর। হেসে বেরিয়ে যাবে তার আগেই হাতে টান পরলো। ঘাড় ঘুড়িয়ে দেখলো জাভেদ হাত ধরে রেখেছে। সেই অস্বস্তি আবারও ঘিড়ে ধরলো। তখন রেগে যাওয়ায় সেসব ভুলেই গেছিলো। এবার কি হবে? সিনথিয়া হাত মুচড়া মুচড়ি করে বললো,

— “ছা..ছাড়ুন।”
— “সব তোমার এক্টিং ছিলো তাইনা?”
— “ন..ন..না তো।”
— “এতক্ষণ তো ভালোই ঘোল খাওয়াচ্ছিলে আমাকে। এখন ভিজা বিড়াল হয়ে গেলে কেনো?”
— “আ..আমি মোটেই ঘোল খা..খাওয়াচ্ছিলাম না। আপ..আপনার ভালোর জন্যই ব..বলেছি।”
— “তাই?”
— “হ..হু।”

জাভেদকে এগিয়ে আসতে দেখে সিনথিয়া পিছিয়ে গেলো। ওমনি আহ! শব্দ করে নিচে ঝুকে গেলো। জাভেদ হচকচিয়ে গিয়ে জলদি কোলে তুলে সিনথিয়াকে রুমে নিয়ে এলো। পা টা জ্বলছে। পায়ের নিচে জলন্ত কিছু পরেছিলো তখন। সিনথিয়াকে খাটে বসিয়ে পা চেক করে দেখলো পায়ের তালুতে গোল হয়ে পুড়ে গেছে। জাভেদ অপরাধী চোখে তাকালো। সিনথিয়া দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো,

— “এভাবেই ধীরে ধীরে আপনার আপনজনদের ক্ষতি করছেন আপনি। সাথে নিজেরও।”

সিনথিয়া উঠতে নিলে জাভেদ চেপে ধরে বসিয়ে দিয়ে ড্রয়ার থেকে অয়েন্টমেন্ট নিয়ে সিনথিয়ার পায়ে লাগিয়ে দিলো। এরমধ্যেই অতশি এসে ডেকে গেলো খাবারের জন্য। দুজনেই গিয়ে টেবিলে বসলো। সবাই মিলে গল্প করে সকালের নাস্তা শেষ করে নিলো।

জাভেদ বেরিয়ে যেতেই সিনথিয়া উঠানে এসে দাড়ালো। চারপাশে তাকিয়ে খুব খুশি হলো। সিনথিয়া ঘুড়ে ঘুড়ে দেখতে লাগলো পুরো উঠান। চারিদিকে দেয়াল তুলে বাউন্ডারি দেয়া হয়েছে। ছোটবড় অনেক ফুলের গাছ লাগানো আছে। ঘরের ডানপাশে কৃষ্ণচূড়া ফুলের গাছ দেখে সিনথিয়ার ভীষণ ভালো লাগলো।

ঘরের ভেতর এলো। ঘরটা এখনো ঘুড়ে দেখা হয়নি। তাই ঘুড়ে ঘুড়ে দেখতে লাগলো। মোট চারটা বেডরুম আর ডাইনিং এবং ড্রয়িংরুম মিলে মোটা ছয় কামরা বিশিষ্ট সেমিপাকা ঘর। সবগুলো ঘরে বারান্দা আছে। অল্পস্বল্প আসবাবপত্র। সিনথিয়ার মন জুড়িয়ে গেলো। এমন একটা পরিবেশ সবসময় কল্পনা করেছে সিনথিয়া। আর সেটা পেয়ে গেলো আজ অনেক অপেক্ষার পর। নিজেদের রুমের বারান্দায় এসে দাড়ালো। জাভেদের সাথে ঝগড়া করার সময় খেয়ালই করেনি বারান্দা থেকে অনেকটা দূরে একটা দিঘি আছে। দিঘির স্বচ্ছ পানিতে অনেকগুলো হাঁস সাঁতার কাটছে। পাখির কিচিরমিচির ডাক শুনা যাচ্ছে। সিনথিয়ার মনে শীতল শিহরন বয়ে গেলো। চেয়ারে গা এলিয়ে দিলো। দখিনা বাতাসে মন, প্রাণ, শরীর জুড়িয়ে যাচ্ছে। মনে প্রশান্তির হাওয়া বইছে। চেয়ারে বসেই চোখ বুজে নিলো সিনথিয়া।

.
বেশ কয়েকদিন কেটে গেছে। এরমধ্যে জাভেদ একেবারেই নেশা করেনি। এতে সিনথিয়ার সাথে সাথে ঘরের সবাই খুব খুশি। রাতে জাভেদ ঘরে আসলো। একটু দূরে দূরে থাকছে সিনথিয়া থেকে। সিনথিয়া বিষয়টা নিয়ে মাথা ঘামালো না। খেয়ে শুয়ে পরলো। জাভেদকে চেয়ারে বসে থাকতে দেখে বললো,

— “আপনি ঘুমাবেন না?”
— “হু..।”
— “তো বসে আছেন কেনো? কাল থেকে আপনি মসজিদে যাবেন সালাতের জন্য। এখন এসে শুয়ে পরুন।”
— “হু..আস..আমি..।”
— “আপনি এমন করে কথা বলছেন কেনো?”
— “কি..রকম করে?”
— “এক মিনিট..!”

সিনথিয়া দ্রুত এগিয়ে এলো জাভেদের দিকে। তা দেখে জাভেদ সরে যেতে চাইছে বারবার। সিনথিয়া এবার জাভেদের গেঞ্জি ধরে টান দিতেই সিনথিয়ার মুখোমুখি হয়ে গেলো৷ তারপরই বুঝলো জাভেদ আবার নেশা করেছে। সিনথিয়া বললো,

— “আপনি আবার নেশ..।”

কেঁদে ফেললো মুখ চেপে ধরে। জাভেদ ওর হাত ধরে বললো,

— “প্লিজ সিয়া কেঁদো না। আমি আর খাবো না। প্রমিজ।”
— “ছোবেন না আমায়। ছাড়ুন।”
— “সিয়া সরি বলছি তো। আর খাবো না প্রমিজ।”
— “এর আগেও প্রমিজ করেছিলেন না আপনি?”
— “সরি..।”

অপরাধী সুরে বললো। সিনথিয়া কিছু না বলে শুয়ে পরেছে। জাভেদও শুয়েছে। তবে জাভেদ বুঝলো সিনথিয়া নিরবে কাদছে। আজকে সত্যিই নেশা করতে চায়নি। এসবের কাছেই যেতে চায়নি। কিন্তু সায়ানের থেকে সিনথিয়া সম্পর্কে শুনায় মেজাজ বিগড়ে গেছিলো তাইতো। নিজেই নিজের মনকে বললো আর খাবে না।

.
আরো কয়েক সপ্তাহ কেটে গেলো। আজ সিনথিয়ার বাড়ি থেকে ওর বাড়ির মানুষজন এসেছে। সাথে আরশিও ছিলো। সিনথিয়া তাকে ফুপির মতো সম্মান করেছে। খাওয়া দাওয়া শেষে সবাই বসে গল্প করছে। কথায় কথায় বাঁকা ভাবে আরশি সিনথিয়াকে অপমান করছে। যেটা অতশি এবং সাবিনা বুঝলো। ওদের রাগ লাগছে কিন্তু আরশি মেহমান তাই কিছু বলছে না।

বিকেলে সবাই চলে গেলেও আরশি যায়নি। তার ভাষ্যমতে সায়ান তাকে নিতে আসবে। সিনথিয়া অতসব ঘাটলো না। চায়ের কাপ নিয়ে রান্নাঘরের দরজার সামনে আসতেই অতশি বললো,

— “এবার যদি এই মহিলা তোকে কিছু বলে তাহলে সেটার উচিত জবাব দিবি বলে দিলাম।”
— “কিন্তু আপু উনি তো আমাদের মেহমান। কিভাবে উনাকে? আর তাছাড়া তোমার শ্বশুরবাড়ির লোক।”
— “ধুই ছাই। যা বলেছি করবি। একদম উচিত জবাব দিবি। পাজি মহিলা এসেছে পর্যন্ত তোকে অপমান করেই যাচ্ছে।”
— “বাদ দাও না আপু।”
— “কানের নিচে দিবো। যা বলেছি তাই করবি।”
— “হু..।”

সিনথিয়া চায়ের কাপ নিয়ে রাখলো আরশির সামনে। আরশি সেটা হাতে তুলে চায়ের কাপ ঘুড়িয়ে ঘুড়িয়ে দেখে নাক সিটকে বললো,

— “তোমার রুচি যেমন তেমন ঘরেই ঠাঁই হয়েছে তোমার।”
— “আমার রুচি যেমনই হোক সেটা নিয়ে আপনি না ভাবলেও চলবে।”
— “তোমার স্বামী জানে সায়ানের সাথে বিবাহবন্ধনে থাকা অবস্থায় তোমার পরকিয়া সম্পর্ক ছিলো?”
— “আসলে যে যেমন তার মন মানসিকতা, কাজকর্মও তেমন। সারাবছর আপনার ছেলে পরনারীতে আসক্ত ছিলো কিন্তু তাকে কিছু না বলে আরো উস্কে দিয়েছেন। ওই যে বলেনা, আগেরটা যেভাবে চলে পেছনেরটাও সেভাবেই চলে। সবই অনুকরণ।”
— “সিনথিয়া অতিরিক্ত বলছো তুমি।”
— “আপনি যা বলছেন সেসব অতিরিক্ত নয়? আমি বলাতেই চামড়া খসে পরছে? আসলে সত্য বলছে এভাবেই আঁতে লাগে।”
— “খুব পাখা গজিয়েছে তাইনা? খুব তাড়াতাড়িই এই পাখা ভেঙে যাবে দেখো।”
— “ওহ ভয় পেয়েছি। এভাবে বলবেন না কখন পাখা ভেঙে যায় আর নিচে ধপাস করে পরে কোমড় ভেঙে ফেলেন বলা তো যায়না।”
— “সাবিনা..সাবিনা..।” আরশি সাবিনাকে ডাকলো। সাবিনা এসে বললো,
— “কি হয়েছে আপা?”
— “কি বউ আনলে মুখে মুখে তর্ক করে। এইভাবেই বুঝি তোমাদের কথা শুনায়?”
— “আমি কাকে কি বলি সেটার কৈফিয়ত আপনাকে দিতে হবে কেন?”
— “বাহ! এইজন্যই তো স্বামীর ভাত খেতে পারলি না।”
— “আপনিও তো পারলেন না। নিজের অপক…।”

থাপ্পড়ের শব্দে পরিবেশটা শান্ত হয়ে গেলো। সাবিনা চমকে তাকালো সামনে। সিনথিয়া অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো জাভেদের দিকে। জাভেদ অগ্নিচোখে তাকিয়ে আছে ওর দিকে। অতশি দৌড়ে এলো সবার কাছে। জাভেদকে কিছু বলবে তার আগেই জাভেদ ধমক দিয়ে বললো,

— “কিছু বলিনা বলে খুব সাহস বেড়ে গেছে তাইনা? এইরকম বিবেহ করো তুমি আমার অগোচরে আমার মা-বোনের সাথে? এইজন্যই মা তোমার ভয়ে সারাদিন রান্নাঘরে পরে থাকে এখন বুঝেছি।”
— “জাভেদ আমার কথা শুন।” অতশি বললো।
— “আপু তোদের কারণেই লাই পেয়েছে এই মেয়ে। বাড়িতে মেহমান এসেছে তাকে পর্যন্ত ছাড় দিলে না? এভাবে অপমান করছিলে? এই তোমার মুখের ভাষা? তাহলে আমি তোমার সম্পর্কে ঠিক শুনেছিলাম।” জাভেদ সিনথিয়ার বাহু চেপে ধরে বললো,
— “চলে কেনো যাও না এখান থেকে? এতো সমস্যা তোমার সবকিছু নিয়ে, সবাইকে নিয়ে, আমাকে নিয়ে। তাহলে নিজের মতো কাউকে খুজে নিলেই তো পারো। সারাদিন কানের কাছে ঘ্যানঘ্যান করো এটা করবেন না, ওটা করবেন না। উফ! আমি জাস্ট বিরক্ত হয়ে গেছি তোমার এসবে।”

সিনথিয়ার হাত ঝাড়া মেরে ছেড়ে দিয়ে চলে গেলো। সিনথিয়া এখনো পাথরের মতো দাঁড়িয়ে আছে। বাইরে হর্নের শব্দ কানে আসতেই আরশি বেরিয়ে গেলো। অতশি এবং সাবিনা কিছু বলবে তার আগেই সিনথিয়া মলিন হেসে রুমে চলে এসেছে৷ ওর এখনো বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে জাভেদ ওকে বিরক্তির সাথে নিচ্ছে।

.
অতশি জাভেদের রুমে গিয়ে দেখলো সিনথিয়া ব্যাগ গুছিয়ে নিচ্ছে। অতশি অবাক হয়ে তাকালো। সিনথিয়া একটা হাসি দিলো। অতশি অবাক হয়ে বললো,

— “সিনথিয়া তুই ব্যাগ গুছাচ্ছিস কেনো?”
— “আসলে আমি একটু বেড়াতে যাচ্ছি চট্টগ্রাম।”
— “সিনথিয়া তুই..।”
— “আপু আপনাকে একটা রিকুয়েষ্ট করতে চাই। প্লিজ রাখবেন।”
— “বল।”
— “কাল সকালেই আমার চট্টগ্রামের বাস ধরতে হবে। আমিতো এখানের কিছু চিনি না যদি আপনি আমাকে একটু বাসস্ট্যান্ডে দিয়ে আসতেন তাহলে উপকার হতো। প্লিজ আপু আমার এই অনুরোধটা রাখবেন।”
— “হু..। সার্টিফিকেটগুলো কেন নিচ্ছিস?”
— “আমার এক বান্ধুবি আছে। ওর বাবার অফিসে চাকরির একটা ব্যবস্থা করে দিবে বলেছে তাই এগুলো নিয়ে যাচ্ছি।”

অতশি আর কিছু বলতে পারলো না। বেরিয়ে এলো রুম থেকে। রেগে গিয়ে ছাদে উঠলো। জাভেদ সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো। অতশি এবার গিয়েই জাভেদকে মারতে শুরু করলো। জাভেদ বোনের হাত ধরে বললো,

— “মারছিস কেনো,?”
— “মাথামোটা গর্দভ কোথাকার। এসব কেন করেছিস? বল কেন করেছিস?”
— “তুই দেখলি না কিভাবে ও কথা বলছিলো।”
— “তোকে আজকে আমি ছাদ থেকে ফেলে মেরে ফেলবো। ফাউল কোথাকার। সব না জেনে রিয়েক্ট করে বসলি। আরে ওকে এসব বলতে আমিই বলেছি।”
— “মানে?”

অতশি সব খুলে বললো। এমনকি সিনথিয়ার আগের বিবাহিত জীবনের প্রতিটা ঘটনা খুলে বললো। জাভেদ অবাক হয়ে বললো,

— “তাহলে সায়ান যে বললো..।”
— “ছাই বলেছে সায়ান। শালা তেরো বেডির লগে ঘুড়ে বেড়াবে। আর এদিকে এই নিরীহ মেয়েটাকে টর্চার করবে। এখনো তাই করছে। আর তুই গর্দভ সেটা না বুঝে সায়ানের চক্করে পরে গেলি।”

জাভেদের মাথায় হাত। অতশির হাত ধরে করুন স্বরে বললো,
— “এবার কি হবে বইনা?”
— “কি হবে আর। বসে বসে ললিপপ খা। আর এদিকে পাখি উড়াল দিচ্ছে চট্টগ্রাম।”
— “কেনো?”
— “তো কি করবে? তুই-ই তো বললি চলে যেতে। তাই এখন সব গুছিয়ে নিচ্ছে চলে যেতে।”

জাভেদ কিছুক্ষণ চুপ করে রইলো। বড্ড ভুল করে ফেলেছে। সিনথিয়া সত্যিই হার্ট হয়েছে খুব। তাইতো চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো। জাভেদকে চুপ দেখে অতশি বললো,

— “এভাবে ওকে যেতে দিস না ভাই। মেয়েটা অনেক কষ্ট করেছে। এবার একটু ভালো রাখ।”
— “কিন্তু.।”
— “তুই চাইলেই ওকে আটকাতে পারিস।”

জাভেদ কিছুক্ষণ ছাদে পায়চারি করলো। তারপর হেসে হেসে বললো,

— “রুমে যা। পাখি কেমনে উড়াল দেয় এবার আমিও দেখি।”

জাভেদ নেমে গেলো। অতশি হাসছে। সে জানে তার ভাই এখন লুচু হবে বউয়ের জন্য। আর ঠিক সিনথিয়াকে আটকে ফেলবে। মোবাইল ভাইব্রেট হতেই অতশি মুচকি হাসলো। রিয়াদ কল দিয়েছে। রিয়াদ হলো অতশির স্বামী। সে এখন কাতার আছে।

জাভেদ রুমে ঢুকে দেখলো সিনথিয়ার ব্যাগ গুছানো শেষ এবার চেইন লাগাবে। দরজা বন্ধ করে সিনথিয়ার দিকে এগিয়ে গিয়ে সব কাপড় ব্যাগ থেকে নিয়ে এদিক সেদিক ছুড়ে ফেলছে। আকষ্মিক ঘটনায় সিনথিয়া বেকুব হয়ে গেলো। পরক্ষণেই গম্ভীর কণ্ঠে বললো,

— “এসব কেনো করছেন? গত একঘন্টা যাবত আমি ব্যাগ গুছিয়েছি আর আপ..।”
— “তো আমি কি করবো?”
— “এসব কেন করছেন?”
— “ভালো লাগছে তাই।”
— “আমার মোটেও ভালো লাগছে না। সরুন আপনি।”

জাভেদ আর সিনথিয়াকে কিছু বলতে না দিয়ে হাত টান দিয়ে বেডে শুইয়ে দিলো। নিজেও শুয়ে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে। সিনথিয়া ছটফট করে বললো,

— “ছাড়ুন। এসব কি করছেন আপনি।”
— “ছাড়া তুমি আর কখনোই পাচ্ছো না বউ। আমি মরে গেলে সেটা ভিন্ন কথা।”
সিনথিয়ার হাত থেমে গেলো। পরক্ষণেই অভিমান ভর করলো। বললো,
— “আমিতো আপনার কানের সামনে শুধু ঘ্যানঘ্যান করি। তাহলে এখন ধরে রেখেছেন কেনো?”
— “উম! আর কোনো কথায় নয়। নাহলে..।”
— “নাহলে কি?”

জাভেদ এমন কথা বললো যা শুনে সিনথিয়া লজ্জায় নতজানু হয়ে গেছে। লোকটা বেশ ঠোঁটকাটা। মুখে যা আসে তাই-ই বলে ফেলে। এভাবে শুয়ে থাকা অবস্থায় জাভেদ দুষ্টামি আচরণ শুরু করলো। সিনথিয়া এবার রেগে বললো,

— “একদম অসভ্যতা করবেন না বলে দিলাম।”
— “করলে কি করবে?”
— “আমি কিন্তু..।”
— “কি?”
— “কান্না করে দিবো।”
— “ওলে বাবুতাকে তক্কেত দিতে হবে বুঝি?”
— “উফ! চুপ করুন। অসভ্য লোক।”
— “ওকে ঘুমাও।”
— “এভাবে কিভাবে?”
— “অভ্যাস করে নাও। এখন থেকে এভাবেই ঘুমাতে হবে।”
— “হুহ..গোয়ার একটা।”

জাভেদ সেদিকে কান দিলো না। সিনথিয়ার বক্ষে মাথা এলিয়ে ঘুমিয়ে গেলো। বেচারি সিনথিয়া আর কি করবে তাই সেও চেষ্টায় আছে ঘুমানোর।

চলবে,,
® ‘নুরুন নাহার’