তোকে ছাড়া আমি শূন্য পর্ব-০৪

0
4942

#তোকে_ছাড়া_আমি_শূন্য
পর্বঃ৪
#Faria_Siddique

৭.

রাগে রুদ্রের চোখ দিয়ে আগুন ঝরছে।কারন আমার সাথে অন্য কোম্পানির মালিকের ছেলে কথা বলছে।রাগে রুদ্রের চোখ মুখ লাল হয়ে আছে।

রুদ্রের সাথে আমাদের ডিলটা ফাইনাল হয়ে গেছে।তাই ভাইয়া দাভাইকে খবরটা দেওয়ার জন্য রুমের বাইরে গেছে।

আমি রুমে একা বসে আছি।কেউ নেই সবাই চলে গেছে।আমি বসে বসে ল্যাপটপে কার্টুন দেখছি আর হাসছি।

ঠিক এমন সময় রুদ্র আসলো। আমি খেয়াল করি নাই কারন আমি কার্টুন দেখে হাসতে ব্যস্ত।রুদ্র আমার দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইলো।

তারপর হঠাৎ করেই রুদ্র এসে আমার হাত ধরে টান দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরলো। আমি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম।

আমি কিছু বলতে যাব তার আগেই রুদ্র বলে উঠে
রুদ্রঃছেলেদের সাথে কথা বলার খুব শখ না তোমার?(রেগে)
আমিঃমানে????
রুদ্রঃওই ছেলেটার সাথে হেসে হেসে এত কথা কিসের???(চিল্লিয়ে)
আমিঃউফ বাবা ষাঁড়ের মতো চিল্লাচ্ছেন কেন??(কানে হাত দিয়ে)
রুদ্রঃকি আমি ষাঁড়???
আমিঃনা না আপনি ষাড় না আপনি হচ্ছেন জিয়ান।
রুদ্রঃএই জিয়ানটা আবার কে??(রেগে)
আমিঃডোরেমন আর নবিতার বন্ধু।কিন্তু জিয়ান খুবই খারাপ।সারাক্ষণ শুধু নবিতাকে বিরক্ত করে।(মন খারাপ করে)

আমার কথা শুনে রুদ্র হাসবে না কাদবে বুঝতে পারছে না।তারপর একটু পরেই জোরে জোরে হেসে দিল। হাসতে হাসতে
রুদ্র চেয়ারে বসে পরল।

আমি দাঁড়িয়ে আছি রুদ্রের দিকে তাকিয়ে।আমি গিয়ে আমার চেয়ারে বসে কার্টুন দেখতে লাগলাম।

রুদ্র উঠে এসে আমার পিছন দিয়ে ঝুকে আমার কানের কাছে ফিসফিস করে বলল
রুদ্রঃপিচ্ছিময় বালিকা।
আমি রুদ্রের দিকে তাকাতেই রুদ্রের ঠোঁটের সাথে আমার ঠোঁট লেগে গেল।

আমি ফ্রিজ হয়ে বসে রইলাম।আর রুদ্র মুচকি হেসে আমার গালে কিস করে বলল
রুদ্রঃবি রেডি পিচ্ছি।এই রুদ্র খান তোমার লাইফে এন্ট্রি নিয়ে নিয়েছে।এখন তোমার লাইফ আমার।যতদিন পর্যন্ত বাচবে আমার সাথেই বাচবে।আর এতদিন যা সাহস দেখার দেখিয়ে নিয়েছ।আর দেখাবে না।

আমি অবাক হয়ে রুদ্রের দিকে তাকাতেই রুদ্র আমাকে একচোখ মেরে বাহির হয়ে গেলো।

রুদ্র চলে যাওয়ার পরই ভাইয়া আসলো।আমি ভাইয়াকে দেখে স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলাম।
ভাইয়াঃচল মিস্টি রুদ্রের সাথে দেখা করে আমরা বের হয়ে যাই
আমিঃদেখা করার কি আছে?
ভাইয়াঃমিস্টি তুই সত্যিই গাধা
আমিঃআমি গাধা হলে তুমিও গাধা।(ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
ভাইয়াঃহয়েছে চল।

আমি আর ভাইয়া রুদ্রের কেবিনে গেলাম।রুদ্র আমাদের দেখে এগিয়ে আসলো।তারপর ভাইয়ার সাথে হাত মিলালো। আমার সাথে হাত মিলাতে আসলে আমি সালাম দিয়ে বের হয়ে যাই রুদ্রের কেবিন থেকে।

রুদ্র আমার এই ভাব দেখে রেগেমেগে আগুন হয়ে গেলেও ভাইয়ার সামনে তা প্রকাশ করলো না।

ভাইয়াও বেরিয়ে আসলো।তারপর আমি আর ভাইয়া মিলে বাসায় চলে আসলাম।
আর রুদ্র আমাদেরকে ওপর থেকে দেখে বলতে লাগলো
রুদ্রঃপিচ্ছিময় বালিকা।আমি মানা করেছিলাম আমার সাথে সাহস দেখাতে।কিন্তু তোমার এটিটিউড দেখে আমি অবাক।তোমাকে তো আজকের জন্য শাস্তি পেতেই হবে।আর সেটা আজকেই।(বাকা হেসে)

৮.

রুদ্র বাসায় এসে দেখে তার মা সোফায় বসে আছে। রুদ্র গিয়ে তার মার কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পরল।
রুদ্রের মাঃআজকে আমার ছেলে একটু বেশিই খুশি মনে হচ্ছে?
রুদ্রঃহুম মা।তোমার ছেলের বউকে যে পেয়ে গেছে।
রুদ্রের মাঃতা কে সেই মেয়ে?
রুদ্রঃসময় হলেই দেখতে পারবা।

এই বলেই রুদ্র ফ্রেশ হতে চলে গেল।

রাত ১২ঃ৩০

আমি গেঞ্জি আর লেগিংস পরে বারান্দায় বসে চা খাচ্ছি আর উপন্যাস পড়ছি।হঠাৎ আমার মোবাইল বাজতে শুরু করলো।

আমি বিরক্ত হয়ে কল ধরলাম।আমি হ্যালো বলার আগেই কেউ ওইপাশ থেকে রাগিভাবে বলল
রুদ্রঃএতক্ষন লাগে কল ধরতে??(রেগে)
আমিঃকে বলছেন?আর আপনার সাহস কি করে হয় আমার সাথে এভাবে কথা বলার?(দ্বিগুন রেগে)
রুদ্রঃরুদ্র খান কে তুমি সাহসের কথা বলছো??(দাতে দাত চেপে)
আমিঃআপনি????আপনি এতো রাতে আমাকে কল দিয়েছেন কেন???(অবাক হয়ে)
রুদ্রঃতুমি যদি দুইমিনিটে নিচে না আসো তাহলে আমি তোমার রুমে চলে আসবো।
(রেগে)
আমি আশেপাশে তাকাতে লাগলাম।
দেখলাম যে একটু দূরে গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে হিরোর স্টাইলে দাঁড়িয়ে আছে।
রুদ্রঃবাহ তোমাকে তো ওরনা ছাড়া দারুন লাগছে।
আমি তারাতারি আমার নিজের দিকে তাকালাম এরপর তারাতারি রুমে গিয়ে ওরনা নিয়ে আসলাম।
আমিঃআপনি তো ভারী অসভ্য।(রেগে)
রুদ্রঃতোমার কাছে আর মাত্র ১ মিনিট আছে।

আমি আর কোন কথা না বলে নিচে গেলাম।কারন এই লোককে বিশ্বাস নাই।
আমি চুল খোপা করে গলায় ওরনা পেচিয়ে নিচে গিয়ে তার সামনে দাঁড়ালাম।

রুদ্র আমার দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।হঠাৎ করেই আমার খোপা খুলে দিল।আমি অবাক হয়ে আছি।তারপর আবার নিজের হাতেই আমার চুল ঠিক করে দিল।

আমি ফ্রিজ হয়ে আছি দেখে রুদ্র আমার কানের কাছে এসে বলল
রুদ্রঃএতটুকুতেই এই অবস্থা। আর বাকি জীবন কি করবে।

আমি এবার রেগে রুদ্রের দিকে তাকিয়ে চলে আসতে নিলেই রুদ্র আমার হাত ধরে টান দিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দরজা লক করে দেয়।তারপর নিজে ড্রাইভিং সিটে বসে গাড়ি চলাতে থাকে।

রুদ্র অনেক রাগিভাবে গাড়ি চালাচ্ছে।আমি অনেকবার জিজ্ঞাসা করলাম কিছুই বলল না।আমি এমন কি করলাম যাতে ব্যাটা এত রেগে আছে???

চলবে…….