তোমার জন্য ফিরে আসা পার্ট-০১

0
1367

#তোমার_জন্য_ফিরে_আসা
#লেখা_ইভানা
#পার্ট_১

“আমার সামনে ড্রেস চেঞ্জ করো না আমার লজ্জা লাগে, আমি অন্য রুমে যাই তারপর ড্রেস চেঞ্জ করো ”

কথাটা শুনে ইভা চমকে উঠলো কারন রুমের একা আছে আর কেউ নেই তাহলে কে কথা বললো? আবার বেশ অদ্ভুত একটা ঘ্রান নাকে আসছে। মাথাটা ঝিম ঝিম করছে। হঠাৎ করে শরীর অস্তিত্ব লাগার কারন বুঝলো না। খাটের উপর ধপাস করে শুয়ে পড়লো, চোখ গেলো ওয়াড্রোপের উপর সেখানে একজন সুদর্শন যুবক পা দুলিয়ে বসে আছে। ইভার একটুও শক্তি নেই কথা বলার বা উঠে দাঁড়ানোর। প্রায় অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো অবস্থান, এরকম ঘটনা আগে কোনোদিন ঘটে নি আজ প্রথম এমন হচ্ছে।
সুদর্শন যুবক ওয়াড্রোপের উপর থেকে নেমে এসে ইভাকে ভালো করে বিছানায় শুয়ে দিলো এবং মিষ্টি জাতীয় একটা ফল ইভার মুখে দিলো তাতে ইভা জ্ঞান ফিরে পায়। চোখ মেলে তাকিয়ে দেখে যুবকটি ওর বিছানার পাশে বসে।

ইভা লাফিয়ে উঠে খাট থেকে নেমে গিয়ে বললো,
“কে আপনি? আপনি আমার রুমে কেনো এসেছেন “?
” আস্তে কথা বলো কেউ শুনতে পেলে সমস্যা হবে ”
“আমার রুম থেকে বেরিয়ে যান নয়তো আমি চিৎকার করবো ”
“আচ্ছা বেশ তুমি চিৎকার করো তাতে আমার কোনো সমস্যা নেই কারন আমাকে কেউ দেখতে পাবে না ”
“আমি তো দেখতে পাচ্ছি ”
“শুধু তুমি দেখতে পারবে তোমার জন্য ফিরে আসা ”
“এসবের মানে কি? আমাকে মিথ্যে বলে ধোঁকা দিয়ে পালিয়ে যাবেন তা হবে না আমি এখুনি বাড়ির সবাইকে ডেকে আনবো ”
“আমি তোমাকে মিথ্যে বলছি না তোমার যদি বিশ্বাস না হয় তবে চলো আমি তোমার বাড়ির লোকজনের সামনে যাবো ”
“হুম চলুন ”

ইভা ওর মা বাবার রুমে নক করলো ও মা রুমের দরজা খুলে বললো,
-কি রে তুই এখনো ঘুমাস নি কেনো?
-মা আমার ঘুম আসছে না অনেক গরম লাগছে চার্জার ফ্যানটা দেও।

সুদর্শন যুবক ইভার হাত ধরলো। ঠান্ডা স্পর্শ পেয়ে ইভা কাঁপুনি দিয়ে উঠলো। ইভার কাঁপুনি দেখে ওর মা বললো,

-তোর শরীর ঠিক আছে, এভাবে কাঁপুনি দিয়ে উঠলি কেনো?
-ঠিক আছি কিন্তু মা তুমি কি কিছু দেখতে পাচ্ছে?
-কি দেখবো?
-আমার সাথে কি কাউকে দেখতে পাচ্ছো?
-বেশি গরমে কি তোর মাথাটা গেছে। তুই ছাড়া এখানে আর কেউ নেই।
-ওহ্ হ্যাঁ, ফ্যান দেও

ইভা মা চার্জার ফ্যান দিলো। ইভা রুমে এসে দরজা লক করে খাটে বসে পড়লো। সুদর্শন যুবক হাসছে তার হাসি দেখে ইভা বললো,
“আপনি হাসছেন কেনো? ”
“তোমার কান্ড দেখে, তোমার মাকে যে ভাবে জিজ্ঞাসা করেছো কেউ আছে নাকি এরকম সবাই জিজ্ঞাসা করলে তোমাকে পাগল ভাববে ”
“আমি ছাড়া আপনাকে আর কেউ দেখবে না কেনো? ”
“অনেক কারন আছে সব কিছু আস্তে আস্তে জানবে ”
“না আমি আজকেই জানবো, বলুন তো ”
“শুধু এটা বলবো যে তুমি যখন যা খেতে চাইবে তাই খেতে পারবে , ঘুরতে যেতে চাইলে নিয়ে যাবো এবং কোনো বিপদে পরলে আমি সাহায্য করবো। ”

ইভা মনে মনে বলছে “সত্যি কি উনি এসব করতে পারবে? একটু পরীক্ষা করে দেখি। এমন জিনিস বলবো যে এখন এনে দেওয়া সম্ভব না ”

ইভার মুখের সামনে সুদর্শন যুবক হাতে তুরী বাজিয়ে বললো,
“মহারানী বলুন আপনার এখন কি চাই? ”
“পিজ্জা খাবো আর হ্যাঁ আপনার নাম কি ”
“আলিব ”
আলিব হাত মুঠো করে কি কি জেনো বলে একটা আংটি বের করলো এবং পিজ্জা হাজির করলো।

ইভা তো আবাক হলো, কি করে এসব হলো? তাহলে কি সত্যি আলিব মানুষ না? সকাল হলে কাউকে আলিবের বিষয়টা জানাবে কিন্তু কেউ কি বিশ্বাস করবে এমন ঘটনা?
“মহারানী তুমি আমাকে নিয়ে এতে ভেবো না, যতো ভাববে ততো দিশেহারা হবে ”
“আপনি মনের কথাও জানেন? সব কিছু করতে পারেন?”
“আমার ক্ষমতার মধ্যে যা আছে ততোটুক করতে পারি ”
“ওহ্ আচ্ছা ”
“পিজ্জা খেয়ে নেও ”
“খাবো না এটা খেলে আমি মরে যাবো ”
“আরে পাগল নাকি, পিজ্জা খেলে কেউ মরে নাকি? ”
“না আপনি জাদু দিয়েছেন আমার ক্ষতি করার জন্য এসেছেন ”
“হাহাহাহ্ আমি তোমার জন্য এসেছি তোমার ক্ষতি করার সাধ্য আমার নেই ”
“আর কাউকে পেলেন না আমার ঘারে এসে পড়তে হলো”

আলিব মুচকি হেসে ইভার হাতে আংটি পরিয়ে দিলো। ইভা ওর হাতটা ছিটকে সরিয়ে দিয়ে বললো,
“যখন তখন আমাকে স্পর্শ করবে না ”
“আমার কোনো খারাপ উদ্দেশ্য নেই এবং তোমাকে আংটি দেওয়ার কারন তোমার যে কোনো প্রয়োজনে আংটির দিকে তাকিয়ে আমাকে ডাক দিলে পাবে তাই ”
“আমি যদি এখন আংটির দিকে তাকিয়ে আপনাকে চলে যেতে বলি তাহলে কি চলে যাবেন? ”
“হুম, বলেই দেখো ”
ইভা আংটির দিকে তাকিয়ে বললো,
“আপনি চলে যান ”

আলিব সাথে সাথে উধাও হলো।রুমের কোথাও আলিব নেই। পাঁচ মিনিটে ধরে দেখলে আলিব আসে কি না কিন্তু না আসে নি তাই ইভা আবার আংটির দিকে তাকিয়ে বললো “আপনি আসুন ” সাথে সাথে আলিব চলে এলো।
“মহারানী আমি চলে এলাম, এবার বিশ্বাস হলো তো আমি সাধারণ কিছু না ”
“হুম বিশ্বাস করেছি ”
“এখন তো পিজ্জা খেয়ে নেও ”

আলিবের কথা শুনে ইভা পিজ্জা খাওয়া শুরু করলো। পিজ্জার স্বাদ অদ্ভুত রকমের ভালো লাগছে এতো মজা যে আবার একটা পিজ্জা খেতে চাইলো আলিব এনে দিলো। খাওয়া শেষ করে আলিব বললো,
“আজ পূর্নিমার আলোয় তোমাকে অনেক বেশি রূপবতী লাগছে ”
“তাই বুঝি ”
“হুম, তোমার কি খুব গরম লাগছে যে এতো ঘামছো ”
” হ্যাঁ অনেক তাই তো ঢিলাঢোলা ড্রেস পরে ঘুমাতে চেয়েছি এর মধ্যে আপনার আগমন ঘটে ”

আলিবের হাতের ইশারায় পুরো রুম ঠান্ডা হয়ে গেলো।
“এখন আর তোমার গরম লাগবে না এবার শান্তিতে ঘুমাতে পারো ”
“আচ্ছা আমার এখন একটা ইচ্ছে আছে ”
“বলুন মহারানী আপনার ইচ্ছে পূরণ করার জন্য আমি প্রস্তুত আছি ”
“আমি সমুদ্রের পাড়ে হাঁটতে যেতে চাই ”

আলিব ইভার চোখের উপর হাত রেখলো। ইভা হাত সরিয়ে অবাক হলো,,