তোর আসক্তি পাগল করেছে আমায় পর্ব-০৪

0
2529

#তোর_আসক্তি_পাগল_করেছে_আমায়
#Sabiya_Sabu_Sultana(Saba)
#পর্ব_৪

..সাঁঝ বেলার কোমর ধরে নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে উচু করে ওপরে তুলে ধরে বেলা নিজের বডি সাঁঝ এর ঘাড়ে ছেড়ে দিয়ে এক হাত ঘুরিয়ে হালকা মাথা পিছনে করে সাঁঝ এর গলা জড়িয়ে ধরে। সাঁঝ নিজের এক হাত আসতে আসতে বেলার কোমর থেকে ওপরে দিকে অগ্রসর করায়। বেলা কে ঘুরিয়ে নিজের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে আসতে আসতে নিচে নামায় মুখের সাথে মুখ লেগে সাঁঝ এর বডি এর সাথে বেলার বডি মিশিয়ে। সাঁঝ এক পা হেলিয়ে নিজের পায়ের সাথে ভর করায় বেলা কে। বেলা ঘোর কেটে সাঁঝ এর থেকে সরে যেতে নিলে সাঁঝ বেলা কে শক্ত করে নিজের সাথে জড়িয়ে রাখে। চোখের ইশারায় পুরো ডান্স কম্পিলিট করতে বলে।
.
. এদিকে বাইরে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে টম অ্যান্ড জেরির মত মাথা বের করে উকি দিচ্ছে সারা ও সারিফ। সারার হাতে ফোন ধরে রাখা আছে ভিডিও করছে সাঁঝ আর বেলার ডান্স। আসলে সারা একটা ফোন আসতে রুম থেকে বেরিয়ে যায়। আর তখনই সাঁঝ রুমে এন্ট্রি নেয়।
.
.
.🎶রাত বান্জার সি হে কালে খান্জার সি হে
তেরে সিনে কি ল মেরে আন্দার ভি হে
তু হাওয়া দে ইসে তো মেরা তান জালে।
জালা দেরে সাঙ্গ জালা দেরে
মোহে আঙ্গ লাগা দেরে
মে তো তেরি জোগানিয়া তু যোগ লাগা দেরে 🎶

. বেলা নিচে বসে এক দিকে হেলে গিয়ে হাতের মুদ্রা করতে সাঁঝ পিছন থেকে বেলার ঘাড়ে নিজের মুখ লাগিয়ে দু হাত দিয়ে বেলা কে তুলে নেয়। বেলা এক পা সাঁঝ কোমরে জড়িয়ে অন্য পা লম্বা করে দেয়। সাঁঝ বেলা কে ঘুরিয়ে দিতে বেলা মেঝেতে উপুড় হয়ে যায়। সাঁঝ বেলার কোমরে সাথে নিজের হাত আর বেলার ঘাড়ে নিজের মুখ রাখে।
.
. গান শেষ হতে বেলা নিজের নাচের জগত থেকে বেরিয়ে আসে নিজের ওপর সাঁঝ কে দেখে বেলার এক্সপ্রেশন চেঞ্জ হয়ে যায়। চোখ মুখ শক্ত করে দু হাত দিয়ে সাঁঝ কে ঠেলে সরিয়ে উঠে পড়ে। বেলা বেরিয়ে যেতে নিলে সাঁঝ বেলার শাড়ির আঁচল ধরে পিছন থেকে। বেলা ঘুরিয়ে গিয়ে নিজের শাড়ির আঁচল ছাড়িয়ে নিয়ে সাঁঝ এর দিকে আঙুল তুলে চোখ রাঙিয়ে বলে ওঠে।
.
–” আমার থেকে দূরে থাকুন। না হলে এর ফল ভালো হবে না। একদম আমার কাছে আসার চেষ্টা করবেন না। না হলে এর পর যা হবে তার জন্য আপনি দায়ী থাকবেন। মাইন্ড ইট।
.
–” আমি অপেক্ষায় রইলাম দেখার জন্য সুইটহার্ট। সাঁঝ বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
.বেলা কোনো কথা না বলে বেরিয়ে যায়। আর এদিকে টম অ্যান্ড জেরি পগারপার হয়ে যায়। সাঁঝ মেঝেতে শুয়ে হাতের ওপর মাথা দিয়ে বাঁকা হেসে বলে ওঠে।
.
–“তোমাকে তো আমার করে নেবো সুইটহার্ট। আমার নেশায় তোমাকে পাগল করব। ঠিক যেমন আমি তোমার নেশায় অ্যাডিক্টেড হয়েছি। তোমার আসক্তি পাগল হয়েছি। ঠিক তেমন ভাবে আমার ভালোবাসা দিয়ে মুড়ে নেবো। আমার হিংস্রতার মাঝে নেশায় আসক্ত ভরা ভালোবাসা দেখাব তোমাকে এবার। আমার অবিরাম পাগলামি আর অফুরন্ত ভালোবাসা সহ্য করার জন্য তৈরী হয়ে যাও সুইটহার্ট। মিসেস বেলা সাঁঝ রওশন।
.
. এদিকে বেলা রুমে এসে দু হাত নিজের চুল ছিড়তে লাগে। চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ছে। চোখ মুখ পুরো লাল হয়ে গেছে বেলা কে দেখতে পুরো বিধস্ত লাগছে। বেলা আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজের প্রতিচ্ছবি দেখছে। আর তার সাথে সাথে একটু আগে সাঁঝ এর সাথে কাটানো মুহুর্ত গুলো মনে করতে নিজেই নিজের গলায় আচড় কাটছে। যেখানে যেখানে সাঁঝ তার ঠোঁট ছুঁয়েছে সেখানে নিজের হাতের নখ দিয়ে আচড় কাটছে। কেটে গিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। কিন্তু এতে যেনো বেলার একটু ও কষ্ট হচ্ছে না। আয়নার দিকে নিজের বিধ্বস্ত অবস্থা দেখে বলে ওঠে।
.
–“ভালোবাসা না ? এই ভালোবাসা তোমার কাল হবে। তোমার এই অতিরিক্ত ভালোবাসা দিয়ে তোমাকে শেষ করব। ঘৃণা করি আমি। পৃথিবীর সব থেকে বেশি আমি ঘৃণা করি তোমাকে সাঁঝ। ঘৃণা করি তোমায়। অতিরিক্ত অফুরন্ত অবিরাম। এই ঘৃণার কোনো অন্ত নেই। আমার ভালোবাসা নিয়ে খেলার পরিণতি এবার তুমি দেখবে। বিয়ে না। এবার দেখো এই বিয়ে কেমন তোমার গলার ফাঁস হয়ে যায়। যেখান থেকে বেরোনোর জন্য তুমি ছটফট করবে কিন্তু তুমি বেরোতে পারবে না। আমার প্রতি তোমার এই লোক দেখানো অতিরিক্ত ভালোবাসায় তোমার শেষ ডেকে আনবে। আমাকে করা প্রতি টা অপমান এর বদলা আমি নেবো। এই বেলা খান তার বদলা কখনও ভলে না। তৈরী হও আমার বার প্রতিরোধ করার জন্য।
.
. বেলা ওয়াশরুমে ঢুকে শাওয়ার এর নীচে বসে কাঁদতে থাকে। আজ যেনো তার কান্না করার শেষ দিন। শাওয়ার এর পানি গায়ে কাঁটা জায়গা পড়তে জ্বলে যাচ্ছে এতে যেনো বেলার কোনো ভ্রুক্ষপে নেই। সে তার মত মূর্তি হয়ে বসে আছে। চোখ থেকে পানি গড়িয়ে পড়ছে। মুখ দিয়ে শুধু বিড়বিড় করছে।
.
–“কেনো করলে এমন সাঁঝ ? কেনো আমার ভালোবাসা কে অপমান করলে জিন্দেগি ? কেনো ? আমিতো শুধু তোমাকে ভালোবেসে ছিলাম। তুমি আমার ভালোবাসা কে এই ভাবে পায়ের তলায় পিষে দিলে ? আই হেট ইউ সাঁঝ। আই হেট ইউ। বলতে বলতে আসতে আসতে পিছনে দেয়ালের সাথে ঢোলে পড়ে বেলা। আসতে আসতে নিসতেজ হয়ে পড়ে।

—————-

–“ম্যাম সাঁঝ রওশন বিয়ে করে নিয়েছে।
.
–” হোয়াট! এস.আর বিয়ে করেছে। কবে ? কার সাথে ? ফোনের ওপারে থেকে কেউ চিৎকার করে বলে ওঠে।
.
–“ম্যাম । কালকে । বেলা খান কে বিয়ে করেছে।
.
–” কালকে বিয়ে করে নিয়েছে। কি করে। তোমরা কি করছিলে। তোমাদের কাল ওই বেলা কে তোলার কথার ছিল না তাহলে তোমরা কি ঘাস কাটতে গেছিলে নাকি ? আজ আমাকে বিয়ের খবর দিতে এসেছ।
.
–“ম্যাম আমাদের চোখের সামনে দিয়ে সাঁঝ রওশন বেলা কে তুলে নিয়ে গেছে। আমরা ওকে তুলতে নিচ্ছিলাম কিন্তু তখনই সাঁঝ রওশন ও তার গার্ড এসে বেলা কে তুলে নিয়ে গেছে সাথে বিয়ে ও করে নিয়েছে। আমরা কিছু করতে পারিনি।
.
–” বাহ খুব ভালো খবর। তোমাদের আমি কি আমাকে এই সব খবর দেয়ার জন্য দুধ কলা দিয়ে পুসছি। একটা মেয়ে কে তুলতে পারনা। মুখে শুধু বড় বড় বাতেলা না। আসছি আমি সব কোটা কে গরম তেলে কষা করব।
.
.তুই খুব বড় ভুল করেছিস বেলা। খুব বড় ভুল। সাঁঝ এর দিকে হাত বাড়িয়েছিস। ওই হাত আমি ভেঙে দেবো। সাঁঝ শুধু আমার। সাঁঝ আমার না হলে আর কারোর হবে না। তোকে আমি সাঁঝ এর জীবন থেকে দূরে থাকতে বলেছিলাম কিন্তু তুই শুনিসনি। এবার তো এর মাশুল গুনতে হবে বেবি। মরার জন্য প্রস্তুত হও সোনা। আসছি আমি তোমার ভালোবাসা কে আবার আরেকবার তোমার থেকে কেড়ে নিতে। তোকে সরানোর জন্য কত চেষ্টা করলাম কিন্তু তুই প্রতিবার কোনো না কোনো ভাবে বেঁচে যাস। সেটা এবার আর হবে না এবার আমি নিজে হাতে পুড়িয়ে মারব। ঠিক যেমন তোর বাবা মা কে কেড়ে নিয়েছে আমার ড্যাড । এবার ঠিক তেমন ভাবে আমি তোকে মেরে ফেলব। তোর জন্য শুধু তোর জন্য আমি আমার ড্যাড কে হারিয়েছি। তোকে আমি কিছুতে বাঁচতে দেবো না। তোর মরণ আমার হাতেই লেখা। চুল দিয়ে মুখ ঢাকা মুখ বোঝা যাচ্ছে না। হাতে বেলার ছবি যেটা সামনে থাকা ক্যান্ডেল এর আগুনে ধরে আছে। আগুন লেগে আসতে আসতে বেলার ছবিটা পুড়ছে। আর মেয়েটি গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে হাসছে।
.
.
.
. 💝💝💝
.
. চলবে…