তোর রঙে রাঙাবো পর্ব-০১

0
3308

#তোর_রঙে_রাঙাবো
#Part_01
#Writer_NOVA

রাতের অন্ধকারে দিকবিদিকশুন্য হয়ে দৌড়াচ্ছে লতিফ সাহেব।তার ১০-১২ হাত দূরে দুই হাতে দুই গান নিয়ে তার পিছু ছুটছে এক যুবক।আপাদমস্তক তার কালো পোশাকে মুড়ানো।বাতাসে তার কালো ব্লেজার উড়ছে।মুখে মাফলার পেঁচানো। লতিফ সাহেব পিছু তাকাচ্ছে আর ছুটছে।কিন্তু একটা ২৫ এর কোঠায় থাকা যুবকের সাথে তার ৫০ এর কোঠায় থাকা দেহটা তো দৌড়ে পারবে না।একসময় কিছুটা বেসামাল হয়ে জুতা উল্টে মুখ থুবড়ে পরে যান তিনি।তারপরেও হাল ছাড়েন না।নিজেকে টিনে,হিঁচড়ে নিয়ে বসে বসেই পেছাতে থাকেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হয় না।ততক্ষণে যুবকটি তার সামনে এসে দাঁড়ায়।

—- বাবা,এবারের মতো মাফ করে দেও।আমি কখনো এমনটা করবো না।টাকার লালসা আমার অস্থি মজ্জায় মিশে গিয়েছিলো।তাই আমি শুধু নিজের কথা চিন্তা করে এতগুলো টাকা সরিয়ে ফেলেছিলাম।কখনো এর ফল কি হবে তা গুরুত্ব দিয়ে ভাবিনি।তোমার কাছে হাত জোর করছি এবারের মতো প্রাণে মেরো না।ঘরে আমার দুটো ছেলে, স্ত্রী আছে।আমি মরে গেলে ওদের কি হবে?

লতিফ সাহেব চোখে মুখে আকুতি প্রকাশ করেছে।কিন্তু তা দেখে যুবকটির মনে কোন দয়ার উদ্রক হলো না। চোখ মুখে তার হিংস্রতা প্রকাশ পাচ্ছে। সাইকোদের মতো ঘাড়টাকে এদিক সেদিক কাত করে একটা বাঁকা হাসি দিলো।চোখ দুটো তার চকচক করছে।আরেকজন স্বার্থপরকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিবে।ভাবতেই মুখে উজ্জ্বল হাসি ফুটে উঠছে।লতিফ সাহেবের দিকে এক হাঁটু মুড়ে ঝুঁকে বললো।

—- তুই যদি আমার টাকা সরাতি তাহলে তোকে জানে মারতাম না।কিন্তু তুই ৪টা এতিমখানার ছোট ছোট বাচ্চাগুলোর কিসমত মেরে খেতে চেয়েছিলি।ঐ বাচ্চাগুলোর চিন্তাতো তুই করিসনি।তাহলে তোর চিন্তা কেন করবো আমি?আমাকে পেছন থেকে ছুড়ি মেরে সামনে এসে হাতজোড় করবি।আর আমি তোর এই ভয়ার্ত চেহারা দেখে তোকে মাফ করে দিবো।ভাবলি কি করে এসব?তোর কলিজা অনেক বড় হয়ে গেছে। নয়তো কখনো ঐ ছোট ছোট এতিম বাচ্চাদের টাকা নিজের জন্য খরচ করার কথা মাথায় আনতে পারতি না।তোর কলিজা আমি টান দিয়ে বের করে ফেলবো।আফসোস, তোকে বিশ্বাস করে আমি এতগুলো টাকার হেফাজত রেখেছিলাম।কিন্তু তুই টাকাগুলো সরিয়ে নিজের মৃত্যু ডেকে আনলি।তুই নিজেই নিজের মৃত্যু ডাকলে আমি কি করবো বল?

লতিফ সাহেব এগিয়ে এসে যুবকটির পা জড়িয়ে ধরলো। কাঁদো কাঁদো সুরে বললো।

—- বাবা,তুমি যা বলবে আমি তাই করবো।কিন্তু এবারের মতো আমাকে মাফ করে দেও।আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি জীবনে আর কখনো কারো টাকা মেরে খাবো না।আমি লোভের শিকার হয়ে এই ঘৃণ্য কাজ করেছি।আমার অপরাধবোধ হচ্ছে। আমি অনেক নিচে নেমে গিয়েছিলাম।নয়তো এতিমখানার বাচ্চাদের টাকা মারতে পারতাম না।

যুবকটি ম্লান হেসে তার দিকে তাকালো।ঝাড়া মেরে নিজের পা ছাড়িয়ে নিলো।ডান হাতে থাকা গান দিয়ে লতিফ সাহেবের থুতনি উঁচু করে নিজের চেহারা বরাবর উঠালো।

—- সুযোগ এর আগে আমি একটা দিয়ে ছিলাম।কিন্তু তুই দুইবার একি কাজ করেছিস।তুই কি ভেবেছিস আগের ঘটনা আমি কিছু জানি না।আমি চুপ করে রয়েছিলাম বলে তুই ভেবেছিলি আমি কিছু টেরও পাই নি।আরে তখন আমি তোকে আরেকটা সুযোগ দিয়ে ছিলাম ভালো হওয়ার জন্য। কিন্তু তুই সেম কাজটা আবার করলি।তৃতীয় বার যে এই কাজ করবি না তার গ্যারান্টি কি?কুত্তার লেজ আজীবন বাঁকাই থাকে।জীবনেও সোজা হয় না।তুই তা প্রমাণ করে দিয়েছিস।তোর উপহার এখন মৃত্যু। তোর মতো নরকীটের কারণে আমরা এতো খারাপ হয়ে যাচ্ছি সবার কাছে।তাই তোদের মতো কীটকে সমাজ থেকে উপড়ে ফেলতে হবে। আমার ডেরা থেকে পালিয়ে তুই বাঁচতে পারবি ভেবেছিস।সব গার্ডকে রেখে আমি তোর পিছু নিয়েছি।কেন বলতো?এমনি এমনি তোকে ভয় দেখাবো বলে?মোটেও না,তোকে নিজ হাতে পৃথিবী থেকে বিদায় করবো বলে,আমি এসেছি।কতদূর পর্যন্ত আমাকে দৌড় দেওয়ালি।আমি তো হয়রান হয়নি।কিন্তু তুই নিশ্চয়ই হয়েছিস।

লতিফ সাহেব এবার সত্যি কান্না করে দিলো।তার দুচোখ দিয়ে অনরবত পানি পরছে। তিনি টাকার নেশায় অন্ধ হয়ে গিয়েছিল।তাই হিতাহিত শূন্য হয়ে টাকার লোভ সামলাতে না পেরে এতিমখানার টাকা আত্মসাৎ করেছে।

—বাবা,এবারের মতো কি_____

নাহ,পুরো কথা তার আর বলা হয়ে উঠলো না।তার আগেই এক ঝাঁক বুলেট এসে তার বুকটা ঝাঁঝরা করে দিলো।মুখ দিয়ে রক্ত পিচকিরির মতো ছুটে পরলো।ধপ করে নিচে পরে গেলেন তিনি।মুহুর্তের চোখ দুটো বন্ধ হয়ে গেলো।যুবকের দুই হাতের গান থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে। হাঁটু গেড়ে বসে দুই আঙ্গুল দিয়ে লতিফ সাহেবের শ্বাস পরীক্ষা করলো।বেঁচে নেই, মারা গেছে। যাকে বলে স্পট ডেড।

—- আমাকে এতটা হিংস্র হতে কেন বাধ্য করিস তোরা?আমি তো মাফিয়াগিরি শুধু অসহায়,
গরীব,অত্যাচারিত,নিপিড়ীত মানুষগুলোর জন্য করি।যাতে তারাও দুমুঠো দুবেলা খেয়ে বাঁচতে পারে।কিন্তু তোদের লোভের কারণে ওরা আমাদের অবিশ্বাস করে বসে,এমন কাজতো আমি কখনো হতে দিবো না।ঐ এতিমখানার ছোট্ট,ছোট্ট বাচ্চাগুলো বাবা-মা হীন বেড়ে উঠছে।নেই কোন আদর,ভালোবাসা,স্নেহ,
মমতা।ওদের বেঁচে থাকার মতো শেষ অবলম্বনটুকুও যদি তোদের মতো রাঘব বোয়াল কেড়ে নেয়। তাহলে ওরা বাঁচবে কি করে?সেটা তে তো তোদের মাথাব্যাথা নেই। তোরা শুধু নিজের স্বার্থ চিনিস।আমার মাফিয়ার দুনিয়ায় আমার হুকুমে সব চলবে। কোন স্বার্থপরের জায়গা নেই সেখানে। বিকজ আই এম এ মাফিয়া কিং।পথটা হয়তো খারাপ কিন্তু উদ্দেশ্যটা ভালো।

যুবকটির চোখ মুখ কঠিন হয়ে গেছে। চোখ দুটো রক্তিম বর্ণ ধারণ করেছে।বেশ কিছু সময় পর সেখানে কতগুলো কালো পোশাকধারী গার্ড এলো।তারা লাশটাকে নিয়ে গেল।যুবকটি ধীরে সুস্থে মুখের মাফলারটা খুলতে খুলতে গাড়িতে উঠে বসলো।চোখ বন্ধ করে বড় একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজের ডেরায় ফিরে গেলো।

বুড়িগঙ্গার বিষাক্ত কালো পানিতে আগামীকাল আবারো একটা লাল রক্তে সাদা বস্তা ভাসবে।যার মধ্যে থাকবে বিভৎস এক লাশ।হ্যাঁ, লাশটি লতিফ সাহেবেরি।যাকে চেনার কোন উপায় থাকবে না।মুখটা থেতলানো,হাত-পায়ের নখ উপড়ানো অর্ধগলিত এক লাশ।যার কোন পরিচয় নেই। হয়তো সেটা নিয়ে সারা ঢাকা শহর কিছুদিন তোলপাড় হবে।তারপর আবার সব ঠান্ডা। অন্য সব মার্ডারের মতো এটার ফাইলও একসময় ধূলোময়লা জমে সবার নিচে পরে থাকবে।মৃত্যু রহস্যটা হয়তো সবার অজানাই রয়ে যাবে।আদোও কি সেটা শুধু অজানা রহস্য হিসেবে থাকবে?নাকি বের হয়ে যাবে?

🌺🌺🌺

সকাল ৮ টার ঘড়ির এলার্মে ঘুম ভেঙে গেল তাসিনের। কাথাঁর ভেতর থেকে এক হাত বের করে টেবিল ল্যাম্পের সাথে থাকা ঘড়িটা বন্ধ করে দিলো।কিন্তু মিনিট পাঁচেক পর আবার বেজে উঠলো।এবার বিরক্ত হয়ে কাঁথা সরিয়ে উঠে বসলো।ঘড়ির দিকে তাকিয়ে আৎকে উঠলো।

তাসিনঃ এই রে,৮ টা বেজে গেছে। আজকেও দেরী হয়ে যাবে।রান্না করতে হবে তো।ফজরের নামাজের পর ঘুমালেই আমার দেরী হয়ে যায়।একটু আগে দেখলাম সাতটা বাজতে পাঁচ মিনিট বাকি আছে। পাঁচ মিনিট ঘুমাতে গিয়ে পুরো ১ ঘন্টা দশ মিনিট লেট।ওহ নো।আজকের ক্লাশ মিস দিলে ক্ষতি হয়ে যাবে।

তড়িঘড়ি করে উঠেই রওনা দিলো কিচেনের দিকে।জলদী করে রুটি টোস্ট করে, ফ্রিজ থেকে ডিম বের করে ওমলেট করে নিলো।খাবার টেবিলে জুস,টোস্ট, ডুমের ওমলেট রেখে দুপুরের ব্যবস্থা করতে লাগলো।ঘন্টা খানিক পর দুপুরের জন্য খাবার চড়িয়ে রওনা দিলো তার একমাত্র কলিজার টুকরো বোনের রুমের দিকে।

তাসিনঃ গুড মর্নিং মাই ডিয়ার বোইনা।রাইপরী, উঠে পর।এই মেয়েটা এক ডাকে কখনো উঠবে না।ইচ্ছে মতো ডেকে উঠাতে হয়।সারারাত ফেসবুকিং করে দিনভর ঘুম।কলেজে যেতে হবে তারও খেয়াল নেই।

সকালের স্নিগ্ধ আলো চোখে পরতেই ঘুম ভেঙে গেলো আমার।চোখে হাত দিয়ে আটকে রেখেছি। তারপরেও রোদ এসে লাগছে।মনে হচ্ছে রোদ বাবাজীর আজ বড্ড তেজ।চোখ পিটপিট করে তাকাতেই দেখতে পেলাম আমার ওয়ান এন্ড ওনলি বড় ভাইয়ু জানালা খুলে দিচ্ছে।

আমিঃ ভাইয়ু,যাও তো।আমাকে ডিস্টার্ব করো না।একটু শান্তিতে ঘুমোতে দেও।(ঘুম জড়ানো কণ্ঠে)

তাসিনঃ কটা বাজে খেয়াল আছে তোর?নয়টা বেজে গেছে। জলদী ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে কলেজ যাবি।আমি কোন কথা শুনবো না

আমিঃ আমার ঘুম কমপ্লিট হয়নি।সো,আমি আজ কলেজ যাচ্ছি না।

তাসিনঃ আমি কোন কথা শুনছি না।আমার সকালের নাস্তা রেডি।দুপুরের জন্য ভাত,ছোট মাছ ভুনা ও বেগুন ভেজে করে রাখছি।দুপুরে খেয়ে নিস।আমি একেবারে রাতে ফিরবো।

আমি কাঁথা মুড়ি দিয়ে আবার ধপ করে শুয়ে পরলাম।ভাইয়ু এসে কাঁথা সরিয়ে জোর করে ওয়াস রুমে নিয়ে গিয়ে ব্রাশে টুথপেষ্ট লাগিয়ে ব্রাশ হাতে ধরিয়ে দিলো।

তাসিনঃ আমি পাঁচ মিনিটের মধ্যে কিচেন থেকে এসে জেনো দেখি তুই ফ্রেশ হয়ে গেছিস।

ভাইয়ু চলে যেতেই আমি পা টিপে টিপে যেই কোলবালিশ ধরে বিছানায় ঘুমাতে যাবো।ওমনি আমার কানে টান অনুভব করলাম।ঘাড় কাত করে দেখি ভাইয়ু এক হাতে আমার কান ধরে রেখেছে।

আমিঃ আহ্ লাগছে তো।ছাড়ো ভাইয়ু।

তাসিনঃ রাইপরী, এটা ঠিক নয়।জলদী ফ্রেশ হতে চল।এক মিনিটও দেরী করবি না।

ভাইয়ু বেসিনে মগে করে পানি নিয়ে আমার হাত থেকে ব্রাশটা কেড়ে নিলো।তারপর আমাকে দাঁত বের করে দাঁড়াতে বললো।প্রত্যেক দিনের মতো আজও আমার দাঁত ব্রাশটা ভাইয়ু করে দিলো।আর আমি ঘুমে ঢুলছি।ফ্রেশ হতেই ধাক্কিয়ে আমাকে খাবার টেবিলে নিয়ে গেল।সেখানেও ভাইয়ু খাইয়ে দিলো।সে না খাইয়ে দিলে আমি তো ব্রেকফাস্ট করবো না।কোনমতে আলসেমি নিয়ে কলেজের জন্য তৈরি হয়ে বাইরে বেরিয়ে দেখি ভাইয়ু কলেজের জন্য তৈরি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আবারো আমার হাত ধরে টেনে নিচে নিয়ে এলো।গাড়িতে বসার পর সিট বেল্টও ভাইয়ু লাগিয়ে দিলো।আমরা দুজন রওনা দিলাম কলেজের উদ্দেশ্য।

🌺🌺🌺

এবার পরিচয় পর্বে আসা যাক।আমি রাইজা আবেদীন তাহা।ডাকনাম রাই।ভাইয়ের একমাত্র আদুরে বোন রাইপরী।আমাকে ননীর পুতুল বললেও ভুল হবে না। সবকিছুতে আমার ভাইকে লাগবে।কোন কাজ নিজ থেকে করবো না।বলার আগে সব আমার চোখের সামনে হাজির।বলতে পারেন আমি ভাইয়ের হৃদপিণ্ডের আরেক অংশ ।আমার একমাত্র বড় ভাই আহনাফ আবেদিন তাসিন।আমি এবার অনার্সের ১ম বর্ষে ম্যানেজমেন্ট নিয়ে পড়ছি।আমার ভাইয়ু অনার্সের ফাইনাল ইয়ারে।আমার বয়স ২০ বছর আর আমার ভাইয়ের ২৪ বছরের শেষ পর্যায়।পড়াশোনার পাশাপাশি ভাইয়ু একটা জব করে।কি জব আমি তা জানি না।

বাবা সৈয়দ জয়নাল আবেদীনের একমাত্র ছেলে-মেয়ে আমরা।আমাদের বাবা-মাকে মেরে ফেলা হয়েছে। কে বা কারা মেরেছে তা আমি জানি না।তখন আমি অনেক ছোট ছিলাম।বড় ভাই আমার বাবা,মা সব।আমাকে অনেক অনেক ভালোবাসে।নয়তো সকাল বেলা উঠে কি কোন ভাই তার বোনের যাতে কষ্ট না হয় তার জন্য এতকিছু করে বলেন।এর জন্য আমার বন্ধু-বান্ধবীরাও এটা নিয়ে অনেক হাসাহাসি করে। আমি নাকি এখনো ছোট রয়ে গেছি।এতো বড় মেয়েকে কেন তার ভাই সকালে ফ্রেশ করিয়ে দেয়,দাঁত মাজিয়ে দেয়,খাবার খাইয়ে দেয় ইত্যাদি ইত্যাদি।এটা নিয়ে অনেকে ঠাট্টার ছলে অনেক কথাও শোনায়। কিন্তু আমি কিছুই কানে দেই না।

কারণ আমার বড় ভাই আমার পৃথিবী। সে ছাড়া আমি অচল।কে কি বললো তাতে আমার কিছু আসে যায় না।আপনারা নিশ্চয়ই কতকিছু ভাবছেন।ভাবতে থাকুন আমার কিছুই হবে না।আমি জানি আপনাদের হিংসা হচ্ছে আমার ভাই আমাকে এতো ভালোবাসে বলে।অনেকের কাছে বিষয়টা ন্যাকামী মনে হতে পারে।তবে বড় ভাইয়ারা না এভাবেই তার বোনদের ভালোবাসে ও আগলে রাখে।সেটা আপনারা স্বীকার না করলে আমার কি বলুন?তবে সবার বড় ভাইতো এক নয়।আমার ভাইতো আমার কাছে পৃথিবীর এক নাম্বার বেস্ট ভাই।

কলেজে এসে তাসিন ওর বোনকে নামিয়ে দিয়ে গাড়ি পার্ক করতে চলে গেলো।রাই নিজের ক্লাসরুমে চলে গেল। তাসিন দিকপাশ না তাকিয়ে নিজের দলের কাছে চলে গেল। কলেজ,এলাকার সবাই তাকে ক্যাডার তাসিন নামে চিনে।তাসিনকে সব গুন্ডা বদমাশ অনেক ভয় পায়।কারণ তার রাগ ও জিদ সম্পর্কে সবাই জানে।

রনিঃ আসালামু আলাইকুম বড় ভাই।

তাসিনঃ অলাইকুম আস সালাম।

শরীফঃ কি দোস্ত খবর কি?

তাসিনঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো তোদের।

শরীফঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো।

তাসিনঃ আজকের কোন আপডেট?

নিরবঃ বুড়িগঙ্গায় সকালে এক বিভৎস লাশ পাওয়া গেছে। সাদা বস্তায় ভরে লাশটাকে ফেলে রেখে গিয়েছিল।স্থানীয় একজন দেখতে পেয়ে পুলিশকে জানায়।লাশের মুখ শনাক্ত করা যায়নি।কার লাশ কেউ বলতে পারছে না।আসলে চেনার কোন উপায় নেই। এমনভাবে মুখ থেতলে দিয়েছে চেনার কোন রাস্তা নেই। আজকের খবরের হেড লাইন এটা।

তাসিনঃ কতকিছু দেখতে হবে এই ২৪ বছর জীবনে।আল্লাহ ভালো জানে।কি হচ্ছে এসব?

রনিঃ বড় ভাই এসব পেঁচাল রাখেন।পেছনে তাকায় দেখেন।(অবাক+ চিৎকার করে)

তাসিনঃ কি দেখবো?রনি কথা বলছিস না কেন?

শরীফঃ দোস্ত পেছনে তাকা তাহলেই বুঝবি।

তাসিন ওদের কথার আগামাথা কিছুই না বুঝে নিজেই পেছন ফিরে তাকালো।পেছনে তাকিয়ে নিজেই অবাক চোখে তাকিয়ে রইলো।নিজের চোখ দুটো বিশ্বাস হচ্ছে না। চোখ কচলে আবার তাকালো।কারণ_________

#চলবে