তোর শহরে প্রেম পর্ব-১৭+১৮

0
259

#তোর_শহরে_প্রেম
#নুসাইবা_ইভানা

পর্ব-১৭

তন্ময়কে মাটিতে মাদুর পেতে বসতে দিলো। প্লেটে খাবার বেরে দিয়ে খেতে বললো।কিন্তু সমস্যা হলো জিন্সটা এতো ফিট যে নিচে বসতেই পারছেনা।
সাজু বেপারি বললো, হালিমা একটা লুঙ্গি এনে দাও এসব পরে নিচে বসতে পারবে না। লুঙ্গির কথা শুনেই তন্ময় বললো, না আঙ্কেল আপনি আমাকে প্লেটে খাবার দিন আমি দাঁড়িয়ে খেয়ে নিচ্ছি।

– কেনো লুঙ্গি পরতে সমস্যা কোথায়? আজ কালকার যুগের পোলাপান নিজের সংস্কৃতি ভুলে কি সব ভাব নেয়। দেহো বাবা তোমাকে আজ লুঙ্গী পরতেই অইবো। যাও হালিমা লুঙ্গী নিয়ে আসো।

তন্ময় মনে মনে বলছে যেমন ঘাড় ত্যাড়া মেয়ে তেমন তার বাপ।

হালিমা বেগম লুঙ্গী এনে দিয়ে বলে, পরতে না চাইলে হেরে জোড় কইরেন না।

– তুমি চুপ থাহো। আমার মেয়ের জামাই লুঙ্গী পরতে পারে না। এইটা কোনদিন মানমু না। আহো আমি নিজে পরাইয়া দিতাছি।

অনিচ্ছা থাকা সত্বেও লুঙ্গী পরে নিলো তন্ময়।
খাবার শেষ করে আব্দুল্লাহর সাথে শুয়ে পরলো।

সাজু বেপারি হালিমা বেগম কে বলল, পোলাডা আমার পছন্দ অইছে। তয় হের মায়ের লগে কথা কইতে পারলে ভালো লাগতো। আমি কইছিলাম কি তুমি আর আমি হের লগে ঢাকা যামু সব খোঁজ খবর লইয়া আমু। সব ঠিকঠাক থাকলে মাইয়াডারেও সাথে কইরা নিয়া আসমু। বিয়ার পর একেবারে নিয়া যাইবো।

– তোমার রাগ কমছে

– রাগ রাগের জায়গায় আছে। তয় বিয়া দিতে পারলে শান্তিতে ঘুমাইতে পারমু।

______________________________________________.
অনুর চোখে ঘুম নেই। মথায় এক গাদা টেনশন। ওই তন্ময় কি-না কি বলেছে। বাসায় কি হচ্ছে তা জানতে পারলে ভালো লাগতো।

মাহি অনুর মোবাইল দিয়ে এফবি আইডি ওপেন করে
অনুকে বলে, দেখ তোর আইডির নাম কি দিয়েছি।

-কিসের আইডি তুই কি করছিস এসব?

– আরে আইডির নামটা তো দেখ।
– কই দেখি। এই নে দেখ, এটা কোন নাম হলো!

– কি সুন্দর নাম হিতাময়।

– তোর মাথা আমি আছি আমার টেনশনে সে আছে তার রঙে।

– যাই বলিস বিয়ে হলে আমি খুশিই হবো। কারণ তোর ওই ময়ের একটা বন্ধু আছেনা আবির তার সাথে নিজের একটা হিল্লে করবো।

-তোর মাথায় এসব আসছে কোথা থেকে আমি টেনশনে শেষ। যেখানে আমি বিয়ে করতে চাইছিনা। সেখানে সে নিজের হিল্লে করে।

– তোর কেনো চাইতে হবে।আর তাছাড়াও মেয়েরা বিয়ে করে না। ছেলেরা বিয়ে করে। আর মেয়েদের বিয়ে দেয়।

– তোর যত্তসব ফাউল লজিক তোর কাছেই রাখ। আর শোন কিছু একটা করে বিয়েটা ভাঙ্গার প্লানিং কর।

– আমি করবো বিয়ে ভাঙ্গার প্লানিং মাথা খারাপ নাকি। আমি তো চাই বিয়েটা হোক। তোরা দু’জন হিতাময় হয়ে থাক।

– তুই না ভাঙ্গলে আমি ভাঙ্গবো। এবার দেখ আমি কি করি।

– তোর বাবা যদি রাজি হয়ে যায় তো?

– তো তোকে বলবো না আমি কি করতে চলেছি। তুই শুধু দেখতে থাক।

মাহি বললো এই দেখ এখানে তিনটে ভিডিও। আর ফোল্ডারে লেখা। #তোর_শহরে_প্রেম। ওপেন করবো।

অনু মোবাইলটা মাহির হাত থেকে নিয়ে বলে,এটা অন্যের মোবাইল তাই এসব আমরা দেখবো না। তোর কিছু দেখতে ইচ্ছে করলে, তুই ইউটিউব থেকে দেখ। দেখিস না কত নেট আছে। দেখে শেষ কর।

– আজ রেখে-দে আগামীকাল দেখবো।

অনুর মন চাইলো একবার দেখতে কি আছে ভিডিও তে। আবার ভাবলো যদি পার্সোনাল কিছু থাকে। সেটা ভেবে রেখে দিলো।
খুব মনে পরছে অনুর কল্পমানবের কথা। মনে মনে বলছে, আপনি এভাবে স্বপ্নের মতো এসে চলে গেলেন কেনো স্বপ্ন পুরুষ। আমি আপনাকে কোথাও আর কিছু পেলাম না। কোন শহরে আপনার বাস। একবার যদি সেই শহরে প্রবেশ করতে পারতাম। তাহলে একদম আমার বেনীকরা চুলের মতো বেঁধে রাখতাম হৃদয়ে। আপনার হয়তো আমার কথা মনেও নেই।
না আমি আপনার চেহারা দেখলাম আর না আপনি আমার তবুও কেমন করে আমার হৃদয়টা সাথে করে নিয়ে চলে গেলেন। যদি কখন দেখা হয় আপনার সাথে! আপনার দেয়া শার্ট আপনাকেই ফেরত দিয়ে বলবো,আপনি অপরাধী কল্প মানব। আপনার অপরাধ ক্ষমা যোগ্য নয়। এই হৃদয়হীন মেয়েটার হৃদয় যে আপনাতেই সপে দিয়েছে।কি অদ্ভুত তাইনা। যাকে দেখলাম না জানলাম না তার ব্যক্তিত্বের মায়ায় এভাবে পরে রইলাম। আচ্ছা স্বপ্ন পুরুষ আপনি কি বলতে পারবেন? এটা কি ভালোবাসা? নাকি মায়ার বাঁধন?

এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুমের দেশে পাড়ি জমিয়েছে অনু।

______________________________________________
গেট খুলে দিতেই তানিম আশ্চর্য হয়ে বললো,এসব কি সারা?
– আগে ভেতরে আসতে দাও তারপর বলছি। তানিম সামনে থেকে সরে দাঁড়ালো। সারার হাত রায়হানের হাতের মধ্যে বন্দী। রায়হান হাত ছেড়ে দিতে চাইলে সারা আর একটু শক্ত করে ধরে।

গুটিগুটি পায়ে সবার সামনে এসে দাঁড়ালো।
ইরা বেগম চেচিয়ে বললেন, তোমাকে বলেছিলাম না ভাবি আমার ছেলে মেয়েকে আমি সঠিক ভাবে মানুষ করতে পারিনি। আজ নিজের চোখে তার প্রমাণ দেখো। শেখ বাড়ির মেয়ে হয়ে রাতদুপুরে পর পুরুষের হাত ধরে বেশরমের মতো সবার সামনে এসে দাঁড়িয়েছে।

সায়লা বেগম বললেন ছোট তুই একটু নিজেকে স্থীর রাখ। আগে সবটা শুনতে দে।

– আর কিছু শোনার বাকি আছে। নিজের চোখেই তো দেখতে পারছো।

– বললাম তো ছোট তুই চুপ থাক।

– সারা আমি তোমার মুখ থেকে শুনতে চাই! এসবের মানে কি?

– সারা নিজেকে প্রস্তুত করে বললো, বড় আম্মু আমি রায়হান ভাইকে ভালোবাসি। আরো আগে থেকেই। আর সারাজীবন তার সাথে থাকতে চাই?

তানিম নিজেকে আর সংযত করতে পারলোনা ঠাটিয়ে একটা চড় বসিয়ে দিলো সারার গালে। কড়া গলায় বললো,ছোট থেকে কেউ তোর কোন আবদার অপূর্ণ রাখেনি। যখন যা বলেছিস তাই পেয়েছিস তাই আজ এসব বলার সাহস পেয়েছিস।

রায়হান কিছু বলবে। সারা রায়হানকে থামিয়ে দিয়ে বলে, আপনার কোন কথা নেই, যা বলার আমি বলবো। তোমার যদি মনে হয় আমি অন্যায় করছি তাহলে আরো কয়েকটা থাপ্পড় মারো। তবে তার আগে আমার কথাটা শুনতে হবে।

সায়লা বেগম বললেন, বলো তোমার কথা শুনছি।

– বড় আম্মু আমি যেই কথা গুলো বলবো হয়তো তোমাদের পছন্দ হবেনা। তবে আমি দুঃখিত তবুও বলতে হচ্ছে। যেদিন তন্ময় ভাইয়া বললো, অনাহিতা কে বিয়ে করবো। তোমরা সবাই মেনে নিলে।কোন প্রশ্ন তুললে না কেমন মেয়ে কোথায়থেকে এসেছে? বংশ পরিচয় কি? কিছু জানার প্রয়োজন মনে করোনি। আমি যখন বলছি রায়হান কে ভালোবাসি তার সাথে সারা জীবন কাটাতে চাই? তখন তোমাদের ইগো, তোমাদের সমাজ,তোমাদের প্রেস্টিজ সব মনে পরে গেলো। কারণ আমি মেয়ে আর তন্ময় ছেলে। অথচ ছোট থেকে বড় আব্বু সম সময় বলতো আমার সব ছেলে মেয়েকে আমি সমান চোখে দেখি। তাহলে এই কি সমান চোখে দেখা? যেই মানুষটা তোমাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে সে সামান্য কাজের মহিলার ছেলে এটাই তার অন্যায়?

তার বাবার নাম নেই, গাড়ি নেই বাড়ি নেই, এটাই অন্যায়? তাহলে বাবা সব সময় এটা কেনো বলতো, মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ নেই! আর বড় আম্মু তুমিই তো বলেছিলে তোর কোন পছন্দের মানুষ আছে? আজ যখন সাহস করে নিজের মানুষটার খারাপ সময় তার হাত ধরে তোমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছি। তখন তোমরা আমার কাছে তার অসহায়ত্বের খবর না জানতে চেয়ে। আমাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দিয়েছো।আমি তো খুব আশা নিয়ে এখানে এভাবে এসেছিলাম। যদি তোমাদের উপর ভরসা না থাকতো তাহলে বিয়ে করে তার সাথে তার ঝুপড়িতে চলে যেতাম। তোমার দরজায় আসতাম না। আমি এই মূহুর্তে তোমাতের ত্যাগ করে চলে যাচ্ছি। ভাবছো তোমরা আমাকে ত্যাগ করার আগে আমি তোমার ত্যাগ কেনো করছি?

এতোক্ষন সিঁড়ির উপর দাঁড়িয়ে সব কথা শুনছিলো আদিল হাসন আর আদিব হাসন।

#চলবে

#তোর_শহরে_প্রেম
#নুসাইবা_ইভানা

পর্ব-১৮

সারা আর কথা না বাড়িয়ে সামনের দিকে পা’ বাড়ালো। ঠিক সেই সময় আদিল সাহেব সারাকে বললেন, দাঁড়াও।

সারা দাঁড়িয়ে পরলো।
আদিল সাহেব নিচে এসে বললেন, আমি শুধু জানতে চাই কি এমন কারণ যার জন্য তোমাকে এভাবে রায়হানকে সাথে করে বাসায় আসতে হলো?

সারা রায়হানের হাত ছেড়ে দিয়ে আদিল সাহেবকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো। উপস্থিত সবাই হতভম্ব। এতোক্ষণ ধরে স্ট্রং ভাবে কথা বলা মেয়েটা কেমন অবুঝের মতো কাঁদছে! আদিল সাহেব সারার মাথায় হাত বুলিয়ে বললো,আমাকে না বললে বুঝবো কি করে? আমার মেয়েটা কেনো এই কাজ করতে বাধ্য হলো?

সারা হিচকি তুলতে তুলতে বললো বড় আব্বু রায়হানের মা কতকাল মারা গেছেন। এটা জানার পরেও কিভাবে তাকে আমি একা ছেড়ে দেবো? তাই তোমাদের কাছে নিয়ে এসেছিলাম।

– আচ্ছা বুঝলাম এবার কান্না থামা। আদিল সাহেব তানিমকে উদ্দেশ্য করে বললো, জানো তোমার আর তন্ময়ের মধ্যে পার্থক্য কোথায়? তুমি কিছু জানতে না চেয়ে নিজের বোনের গায়ে হাত তুলে ফেললে,আর এখানে তন্ময় থাকলে ওর মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করতো কি হয়েছে আমাকে বল!

তানিম মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে, নিজের ভুলের জন্য নিজেই অনুতপ্ত। আদরের বোনের গায়ে হাত তুললো তাও তুচ্ছ কারণে।

সারা বললো বড় আব্বু তুমি ভাইয়াকে কিছু বলো না।

আদিল সাহেব তানিমকে বললেন, যাও রায়হানকে নিজের সাথে নিয়ে যাও ওর মানসিক শান্তি দরকার।

আর সবাই শুনে রাখো আগামীকাল সন্ধ্যায় ঘরোয়া ভাবে আমি রায়হান আর সারার বিয়েটা সেরে ফেলতে চাই! কারোর কোন আপত্তি আছে?

সবাই নিশ্চুপ। সাবাইকে চুপ থাকতে দেখে আদিল সাহেব বললো,তাহলে আশাকরি সবাই রায়হানের সাথে উত্তম ব্যবহার করবে।বলেই স্থান ত্যাগ কারার আগে বললেন সবাই নিজের রুমে যেয়ে ঘুমিয়ে পরো।

______________________________________________
কাক ডাকা ভোরে তন্ময়কে ডেকে তুললেন সাজু বেপারি।এমনিতে রাতে ভালো ঘুম হয়নি। চোখমুখে বিরক্তির ছাপ স্পষ্ট
কপাল কুঁচকে সামনে তাকাতেই চোখ পরলো সাজু বেপারি দিকে। রাতে ঘুমিয়ে ভুলেই বসেছিলো সে কোথায়।

সাজু বেপারি দাঁত বের করে হেসে বললেন, এহন উঠতে অইবো।আমার লগে মসজিদে যাইতে অইবো। নামজের পরে হগলতের লগে দেহা করামু। আমার হবু জামাই বইলা কথা। হগলতের জানতে অইবো না।

তন্ময় উঠে অজু করে সাজু বেপারির সাথে মসজিদে নামজ পরে, সবার সাথে কথা বলে আবার তার সাথে বাসায় ফিরলো।

সাজু বেপারি বললেন যাও হাতমুখ ধুয়ে আহ।

হালিমা বেগম সকালে নানা রকমের পিঠা বানিয়েছেন

তন্ময় অল্প কিছু খেলো। খাওয়া শেষ করে বলল,আঙ্কেল এবার আপনার উত্তর -টা শুনে আমাকে যেতে হবে।

– তুমি একা যাবা নাকি? আমরা হগলতে যামু তুমি রেডি হও আমরাও রেডি হই।

– আঙ্কেল আপনার উত্তর-টা

– আরে মিয়া কি আঙ্কেল ফাঙ্কেল কও এহন থিকা আব্বা কইবা বুঝছো।

তন্ময় বিষম খেলো,হালিমা বেগম পানি এগিয়ে দিয়ে বলে, নেও বাবা পানি খাও। তন্ময় গ্লাসের পানিটুকু এক চুমুকে শেষ করে বলে,তাহলে আপনারা রেডি হন আমি বাহিরে আছি।

– ঠিক আছে বাবা যাও গ্রামডা ঘুইরা দেহো।

তন্ময় বাসা থেকে বের হয়ে আসলো। মনে মনে বললো,এবার কি করবা মিস শুকনো লঙ্কা। আমি আসছি তুমি রেডি থাকো। সকালে গ্রামের মনোরম পরিবেশ তন্ময়ের দৃষ্টি আকর্ষিত করলো। শহরে এমন সবুজে ঘেরা কোলাহল মুক্ত নিরিবিলি পরিবেশ পাওয়া দুষ্কর। ফটাফট কয়েকটা ছবি তুলে নিলো। সাথে নিজের কয়েকটা সেলফি তুলো নিলো। এরমধ্যেই সাজু বেপারিরা রেডি হয়ে চলে আসলো। সবাই মিলে রওয়ানা দিলো ঢাকার উদ্দেশ্যে।
______________________________________________

সকাল থেকেই আকাশটা মেঘলা, তাই অনু আর মাহি বেলা করে উঠলো ঘুম থেকে। আজ কলেজে যাওয়ার ইচ্ছে নেই তাই দেরি করে ওঠা। অনু দু’কাপ কফি করে এক কাপ মাহিকে দেয় অন্য কাপে নিজেই চুমুক বসায়। দু’জনেই বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে। ধোয়া ওঠা কফির মগে চুমুক দিতে দিতে মাহি বললো,রিম ঝিম এ ধারতে চায় মন হারাতে।

অনু ভ্রু কুঁচকে বলে, তোর ইদানীং খুব প্রেম প্রেম পাচ্ছে মনে হয়!

এই আমি কি তোর মতো নাকি! আমি হলাম ইয়াং একটা মেয়ে কলেজ শেষ করে ভার্সিটিতে পড়ি এখন প্রেম করবো না কবে করবো?

– তুই কি প্রেম করতে গ্রাম থেকে শহরে এসেছিস।

– আহারে ইয়ার তুই সেই আন্টি-ই রয়ে গেলি। আরে একটু তো আপডেট হ।আর আমি কি দশটা প্রেম করতে চাইছি নাকি! একটা প্রেম করবো।

– ওই রাখতো তোর প্রেমের পেঁচাল আমি ভাবছি ওই তন্ময় এখন কি করছে।

– হাউ রোমান্টিক জানু। তুই যে আমার কথা মেনে তন্ময় ভাইয়াকে একসেপ্ট করবি ভাবতেই পারছি না।

– আরেরররর ড্রামা কুইন অফ যা। এখানে মানা না মানা আসলো কোথা থেকে। ওই বেডা নিমপাতা আমার বাসায়, যেয়ে না জানি কি, কি বলছে। সেটাই ভাবছি।
– দূরররর দূরে গিয়া ম*র। কই আমি ভাবলাম তোরও হয়তো প্রেম প্রেম পাচ্ছে। তুই নিজেই নিমপাতা তন্ময় ভাইয়া তো ভালোবাসার লাড্ডু।

– ওই ভালোবাসরা লাড্ডু তুই রেখে দে।

– তারে হৃদ মাঝারে রাখবো ছেড়ে দেবো না। ছেড়ে দিলে এমন দুলাভাই আর তো পাবোনা।

অনু মাহির মুখ চেপে ধরে বলে, বইন তুই চুপ যা। আমি আছি আমার জ্বালায় আর তুই আছিস রঙে।

– মনে রঙ লেগেছে বসন্ত এসেছে, খুশিতে মেতেছে জীবন।
অনু রাগ দেখিয়ে বারান্দা ছেড়ে চলে গেলো। মাহিও পিছু পিছু গেলো পেছন থেকে অনুর গলা জড়িয়ে ধরে বলে, সরি জানু আর মজা করবো না। এই কান ধরছি।

– যা সর তোর সরি আমার লাগবেেনা। তুই আরো গান বলে বেড়া।

– আর বলবো না আয় দু’জন মিলে টেনশন করি। ওই ময় তোর বাসায় যেয়ে কি তাল গোল পাকিয়েছে।

– এক কাজ কর তুই সে সব নিয়ে ভাবতে থাক আমি ততক্ষণে রান্নাটা সেরে আসি।

– আচ্ছা শোন আজ সবজি খিচুড়ি আর ভর্তা কর। এই বৃষ্টিময় ওয়েদারে দারুণ জমে যাবে।

– জো হুকুম প্রেমের রানী। অনু রান্না ঘরে চলে গেল৷মাহি অনুর মোবাইল নিয়ে ঘাটাঘাটি করে এফবিতে কিছু ফ্রেন্ড এড করে, সাথে তন্ময়কে খুঁজে নিয়ে তাকেও এড করে নেয়। তারপর তন্ময়ের প্রোফাইল ঘাটতে যাবে। কিন্তু আপসোস প্রোফাইল লক। মাহির মেজাজটাই বিগড়ে গেলো।মনে মনে বলছে তুই ছেলে মানুষ তোর প্রোফাইল থাকবে আনলক। না তুই মেয়েদের মতো প্রোফাইল লক করে রেখেছিস। দূর যত্তসব ভাব নেয়া মানুষ-জন।

______________________________________________
তানিম সকাল সকাল হাঁটতে হাঁটতে পার্কে চলে এসেছে।সে এক বিষাদের অনলে পুড়ছে, একে তো নিজের প্রথম অনূভুতি ভুল মানুষের জন্য। দ্বিতীয়তো নিজের বোনের গায়ে প্রথম হাত তোলা। হাঁটু মুড়ে মাটিতে বসে পরলো। কয়েকজন সেদিকে বাঁকা চোখে তাকালো। যদিও এই মূহুর্তে কে কি ভাবলো তা দেখার বা বোঝার অবস্থায় নেই তানিম।

মেঘা আজ সকাল সকার বেড় হয়েছে গাড়ি নিয়ে। আজকে তার মনে রঙ লেগেছে। এ যেনো এতো বছরের ভালোবাসাকে নিজের করে পাওয়ার আনন্দ। মনের সুখে যাচ্ছিলো উদ্দেশ্য তানিমদের বাড়ি। গাড়ি চলছে আপন গতিতে স্লো-মোশনে একটা চলছে।

তোমাকে খুঁজে পাই ও নীল আকাশে

পাই যে খুঁজে ওই মিষ্টি বাতাসে। গানের তালে তালে

কল্পনার শহরে আনাগোনা করছে মেঘা। এমন সময় মোবাইলের রিংটোনে মেঘার ঘোর কাটে। মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে তার বাবা কল করছে। কল ব্যাক করবে এমন সময় চোখ গেলো এক ফুলবিক্রেতার দিকে। ড্রাইভারকে গাড়ি থামিয়ে সব ফুলগুলো কিনে নিলো। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি মূল্য দিয়ে ফুল গুলো কিনে নিলো। ফুলগুলো হাতে নিয়ে ঘ্রাণ নিবে এমন সময়…….

#চলবে

ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
হ্যাপি রিডিং 🥰