দৃষ্টির অগোচরে পর্ব-০৩

0
638

#দৃষ্টির_অগোচরে
#কলমে_লাবণ্য_ইয়াসমিন
#পর্ব_৩

হৃদীতা ভাবতে ভাবতে দরজার কাছে বসে পড়লো। এতোদিন ওই বাড়িতে যতই কষ্টে হোক না কেনো এমন নির্জন আর একাকিত্ব ছিলো না অন্তত প্রাণে বেঁচে ছিল কিন্তু এখন তো সেই নিশ্চয়তা নেই। কেমন করে এই নির্জন বাড়িতে না খেয়ে বেঁচে থাকবে এটাই এখন ওর একমাত্র চিন্তা। এখন ক্ষুধা পাইনি কিন্তু সে আর কতক্ষণ একটু পরে তো ঠিকই পাবে। হৃদীতা আবার ভাবছে বাবা মা ছাড়া একজন অনাথ মেয়ের বেঁচে থাকার থেকে মরে যাওয়ায় ভালো। কেউ তো ওকে চাইনা সবাই ওকে বোঝা ভাবে। লোকে ওকে প্রয়োজন ভাবে প্রিয়জন ভাবে না তাই এটাই ওর জন্য ঠিক আছে। কে খোঁজ নিতে আসবে ওর, কেউ আসবে না। এতদিন যাদের বাড়িতে ছিল ওরা হয়তো ওকেই ভুল বুঝে বসে আছে। বুঝবেই বা না কেনো বাড়ির বড় মেয়েকে বিয়ে করতে এসে কাজের মেয়েকে নিয়ে চলে এসেছে লোকটা। এখন ওর চরিত্র নিয়েও কথা উঠবে। হৃদীতা এলোমেলো ভাবে কথা গুলো ভাবছে আর কাঁদছে। চোখের পানি আজ বাধ ভেঙেছে কোনো মানায় শুনছে না। দুঃখের পরে নাকি সুখ আসে কিন্তু ওর তো আসেনি কখনও। সব সময় ও দুঃখের সাথেই পরিচিত হয়েছে। ওর জানা নেই, কখন অসবে ওর জীবনে সেই অনাকাঙ্ক্ষিত সুখ নাকি মৃত্যুতেই ওর মঙ্গল।আর যদি এতেই ওর মুক্তি হয় তবে তাই হোক হৃদীতা আর বাঁচার চেষ্টা করবে না।

অন্যদিকে হৃদয় রাতে বাড়িতে গিয়ে চুপ করে নিজের রুমে বসে আছে আর বাইরে বের হয়নি। বাড়ির সবাই বারবার ওর দরজায় এসে ফিরে গেছে। এই ছেলেটা বড্ড বেশি একরোখা টাইপের। ওর বাবা মা ধ্যান ধরে বাইরে বসে আছে গতরাত থেকে কখন ও বের হবে সেই আশায়। রিয়াদের বাড়ি থেকে ওদের প্রচুর অপমান করা হয়েছে যেটা হজম করতে হৃদয়ের মায়ের মেজর চরম খারাপ।উনার এখন আবার আরেক ভয় এসে মনের মধ্যে জড় হয়েছে হৃদয় মেয়েটাকে যে নিয়ে গিয়েছিল কিন্তু ফিরিয়ে আনেনি কোথায় রেখে এসেছে উনার জানা নেই নাকি মেরে গুম করে দিয়েছে আল্লাহ জানেন। এই ছেলেকে উনারা একটুও বিশ্বাস হয় না। রাগ করে যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। মাথায় মাঝে মাঝে ভুত চাপে। হৃদয়ে মা দীলারা বেগম সোফায় বসে ভাবছেন আর টেনশনে অতিরিক্ত ঘামছেন।উনার আবার হাই পেশার। উনার স্বামী রুহুল সাহেব ঠান্ডা মেজাজের মানুষ উনি সব কিছুই নরমাল ভাবেই নিয়ে থাকেন। উনি ভাবেন উনার ছেলে সম্পূর্ণ মায়ের মতো হয়েছে আর মেয়েটা উনার মতো। এই মা ছেলের চক্করে উনি নিজেকে অনাথ ভাবেন। আর মুক্তির পথ খোঁজেন।।
ইতিমধ্যে বাইরে সাংবাদিকদের ঝামেলা শুর হয়েছে গেছে। কে একজন খবর দিয়েছে হৃদয়ের বিয়ে হয়েছে এমন অদ্ভুত ভাবে অমনি সব সকাল সকাল দরজায় এসে হাজির হয়েছে। হৃদয়ের মা সাংবাদিকদের ভেতরে আসতে দিতে মানা করেছেন কারণ ওরা এসেই নতুন বউকে খুঁজবে এটা সেটা প্রশ্ন করে মাথা খারাপ করে দিবে। আরও সমস্যা হচ্ছে নতুন বউ কোথায় এটা তো হৃদয় ছাড়া কেউ জানে না। রুহুল সাহেব সোফায় হেলাল দিয়ে পায়ের উপরে পা তুলে চোখ বন্ধ করে হেলান দিয়ে বসে আছেন।

এই বাড়িতে পরিবারের সদস্য সংখ্যা চারজন আর কাজের মানুষ আছে কয়েকজন। কিন্তু এই চারজন মানুষের চিন্তাধারা চাররকম। যেমন হৃদয়ের বোন তন্ময়া একটা প্লেটে নুডুলস নিয়ে ধীরস্থির ভাবে চামচ দিয়ে মুখে তুলছে আর ওর মায়েদের দিকে ঘনঘন তাকিয়ে দেখছে। গতকাল রাতে ভাইয়ের এমন কান্ডে ওর খাওয়া হয়নি তাই আপাতত কিছু পেটে দিচ্ছে। যাই হয়ে যাক ওর খাবার চাই। না খেয়ে থাকলে ওর মাথায় যন্ত্রণা করে। ও বিশ্বাস করে পেট ঠাণ্ডা তো দুনিয়া ঠান্ডা।

অন্যদিকে হৃদয় গতরাত রাত থেকে স্থির হয়ে মেঝেতে বসে আছে আর ভাবছে এটা আমি কি করলাম। সামান্য একটা কথায় আমি হুটকরে এমন ভয়ানক সিদ্ধান্ত নিয়ে বসলাম। তখন আমার কি কয়েছিল। মেয়েটার মধ্যে কিছু আছে? ঐশ্বরিক কিছু আছে হয়তো যেটা ওকে ওর কাছে টানে। ও ইচ্ছা করেই মেয়েটার সাথে খারাপ ব্যবহার করে নয়তো নিজের দুর্বলতা প্রকাশ হয়ে যেতো। হয়তো মেয়েটা অতিরিক্ত চালাক। সব সময় নিজেকে এমন অসহায় প্রকাশ করে। কিন্তু ও এমন টা কখনও না। হৃদয় ভাবছে মেয়েটা ইচ্ছা করেই সেদিন ওকে রাগীয়ে দিয়েছে যাতে এমন কিছু হয়। ও আর ভাবতে পারছে না সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে। তাই শেষমেশ পকেট থেকে ফোনটা বের করে রিয়াকে ফোন দিলো। হয়তো ও বুঝবে ওর কষ্ট টা। কয়েকবার ফোন বাজার পর রিয়া ফোন ধরলো।

> রিয়া প্লিজ ফোন কেটো না। তোমাকে আমার কিছু বলার আছে। পাখি প্লিজ আমার কথা শোনো। (অনুরোধ করে)

> কি বলতে চাইছো তুমি? কিছু কি বাকী আছে আর? আমাকে বিয়ে করতে এসে তুমি আমার বাড়ির কাজের মেয়েকে বিয়ে করে নিয়ে গেছো। মান সম্মান যা ছিল সব শেষ। সমাজে মুখ দেখাবো কেমন করে আমি? আব্বু আম্মু সবাই ঘর বন্ধ করে বসে আছে। এমন টা তোমার থেকে আশা করিনি হৃদয়। (কান্না করে)

> তুমি তো জানো আমি কেমন রাগী। ওই মেয়েটা ইচ্ছা করে আমাকে রাগীয়ে দিয়েছিল যাতে আমি ওকে বিয়ে করে নেই। এখন আমি বুঝতে পারছি মেয়েটার চালাকি। ওই মেয়েটা একটা খারাপ আমি ওকে কখনও মেনে নিবো না স্ত্রী হিসেবে। ওকে আমি কখনও কারও সামনেই আনবো না। মেরে ফেলবো।

> বাজে কথা বলবে না। ওকে মারলে মিডিয়া তোমার পেছনে পড়ে যাবে। বদনাম হবে তার থেকে ওকে নিয়ম মেনে ডিভোর্স দাও তারপর আমার কাছে এসো নয়তো না। ফোন রাখো তুমি

> রিয়া শোনো…..

হৃদয়ের কথা বলার সুযোগ না দিয়েই রিয়া ফোন রেখে দিয়েছে। হৃদয় ফোনটা আছাড় দিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলল। নিজের ভুলের মাশুল ওর নিজেকেই দিতে হবে। কথাটা ভেবে ও হন্তদন্ত হয়ে বাইরে আসলো। ওর বাইরে আসতে দেখেই ওর আম্মু দাড়িয়ে গেলো বসা থেকে। হৃদয় ওর মায়ের সামনে এসে দাড়ালো।

> সরি আম্মু। (মাথা নিচু করে)

> মেয়েটা কোথায়? বেঁচে আছে নাকি মেরে গুম করে দিয়েছো? (দাঁতে দাঁত চেপে)

> বেঁচে আছে কিছুই করিনি।

> যাও নিয়ে এসো। বাইরে মিডিয়ার লোকজন আছে।পেছনের দরজা দিয়ে যাবে আর দশ মিনিটের মধ্যে মেয়েটাকে আমার সামনে চাই। যা করেছো খুবই ভালো করেছো। তোমাকে কিছু বলার নাই আমার। কথা বাড়াবে না। (হুকুম দিয়ে )

হৃদয় বুঝলো আম্মা প্রচণ্ড রেগে আছে এখন কথা বলা নিরাপদ না। তাই ও মাথা নিচু করেই বেরিয়ে আসলো। ও চলে যেতেই দীলারা বেগম রুহুল সাহেবের দিকে কটমট দৃষ্টিতে তাকালেন।

> আমার দিকে এমন করে তাকিয়ে আছো কেনো? আমি কি করেছি? বিয়ে করলো তোমার ছেলে আর রাগ দেখাচ্ছো আমাকে। (মুখ ভার করে)

> তোমার এই আলগা পিরিত ভাবের জন্যই তোমার ছেলের এই দশা। ছেলেকে মানুষ না অমানুষ করেছো। যেমন বাপ তার তেমন ছেলে।

> আজব তো আমি কি কখনও কাজের মেয়েকে বিয়ে করেছি নাকি? আমাকে বলছো কেনো? ছেলেটা আমার না তোমার ঠিক আছে? তুমি ওকে আদর দিয়ে বাদর তৈরী করেছো এখন যেই বখে গেছে অমনি ছেলে আমার হয়ে গেলো তাই না,কেমন বিচার এটা?

তন্ময়া খাবার শেষ করে উঠে দাড়ালো এখানে বসে এদের ঝগড়া দেখতে ওর একটুও ইচ্ছা করছে না। এদের ঝগড়া দেখে দেখে ও বিরক্ত হয়ে গেছে। তাই ও রুমে চলে গেলো। গতরাতে ঘুম হয়নি এখন ঘুমাতে হবে। ওর চলে যাওয়া দেখে দীলারা বেগম আরও রেগে গেলেন।

> মেয়েটাও হয়েছে সেই রকম। আল্লাহ আমার কপালেই এই গুলোকে জুটিয়েছিল।

> আহা রাগ কেনো করছো? আমার অফিস রেখে যে তোমার পাশে এমন বসে আছে সে কি এমনি? তোমাকে ভালোবাসি বলেই না আছি। তাছাড়া তোমার ছেলেকে নিয়ে আমার মাথা ব্যাথা নেই। বরং এই একটা কাজে আমি বেশ খুশী হয়েছি। রিয়া মেয়েটাকে আমার খুব একটা পছন্দ ছিল না। হৃদয়ের সাথে মিলে টাকা পয়সার বারোটা বাজিয়ে দিতো। বুঝলে দীলারা আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন।( হাসি মুখে)

> বোকা বোকা কথা বলবে না। তোমার মানসম্মান বলে তো কিছু যায় আসে না। কিপ্টেমি করে কেমনে সব ধরে রাখতে হয় সব সময় শুধু সেই চিন্তা। বাইরে যাও আর লোকজন সামলাও। (রাগ করে)

রুহুল সাহেব কথা বলা আর নিরাপদ মনে করলেন না। তাই চুপ করে উঠে বাইরে চলে আসলেন। এখানে থাকা মানেই তর্ক করা।অন্যদিকে হৃদয় বাড়ির পেছনের গেট দিয়ে বেরে হয়ে আসলো। তারপর ড্রাইভার কে ফোন দিয়ে বলে দিলো গাড়ি আনতে। ও প্রচণ্ড রাগ হচ্ছে নিজের উপরে আর সাথে হৃদীতার উপরেও। ও রাস্তায় কয়েক মিনিট অপেক্ষা করলো তার মধ্যেই ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে এলো। হৃদয় ড্রাইভার কে বিদাই করে গাড়িতে গিয়ে বসলো। ওর গাড়ি ছুটে চলেছে হৃদীতার কাছে। মেয়েটাকে এখন প্রয়োজন নয়তো ঝামেলা হয়ে যাবে। না নিয়ে গেলে ওর আম্মু রেগে যাবে যেটা ওর জন্য সুখের সবে না। ওকে সব সময় ওই একটা মানুষই সাপোর্ট করে, ভালো হোক বা মন্দ হোক সব কাজেই। তাই তাকে চটানো বোকামি হবে। মেয়েটাকে বাড়িতে এনে কোনো একটা ব্যবস্থা নিশ্চয়ই করা যাবে। ডিভোর্স তো দিতেই হবে আর তার সাথে ওর মুখের প্রতিবাদী ভাষা। নিম্ন স্তরের মানুষ গুলোর রুচি ও নিম্ন যেটা ওই মেয়েটাকে দেখেই বোঝা যায় নয়তো কয়েক দিনের সামান্য চেনাতে একজন ছেলের চরিত্র নিয়ে আজেবাজে কমেন্ট কেমন করে করে। এই সব মেয়েদেরকে ও ঘৃণা করে । হৃদয় কথা গুলো মনে মনে বিড়বির করে বলছে আর ড্রাইভিং করছে। ও আধা ঘন্টার মধ্যেই ওর বাগান বাড়িতে পৌঁছে গেলো। গাড়িটা গেটের সামনে দাড় করিয়ে গেট খুলে ও ভেতরে ঢুকলো। হৃদয় দ্রুত পায়ে বাড়ির ভেতরে গিয়ে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করলো। রুমে আবছা অন্ধকার বাইরে থেকে আসার জন্য তেমন কিছুই চোখে দেখা যাচ্ছে না তাই ও লাইট টা অন করলো। লাইট অন করেও অবাক হচ্ছে রুমে হৃদীতা নেই। কোথায় আছে ও ভেবে হৃদয়ের ভ্রু কুচকে গেলো। পালিয়ে গেলো নাকি মেয়েটা ভেবেই ও চারদিকে খুঁজতে লাগলো। উপর নিচে ও তন্ন তন্ন করে খুঁজলো কিন্তু পেলো না। হঠাৎ ওর মনে হলো ছাদে আছে হয়তো তাইও দৌড়ে চলে গেলো ছাদে। ছাদে উঠে ও হাপিয়ে উঠলো। তাই হাটুতে ভর দিয়ে দাড়িয়ে একটু বিশ্রাম নিলো তারপর সামনে তাকিয়ে দেখলো হৃদীতা দাড়িয়ে আছে। হৃদয় এতসময় রেগে ছিল কিন্তু হঠাৎ ওর রাগ টা কেমন চলে গেলো। হৃদীতা দাড়িয়ে আছে পেছন ঘুরে। ওর খোলা চুল গুলো হাওয়াতে উড়ছে। ওর জানা নেই এই মেয়েটা কি শাম্পু দিয়ে চুল ধুয়েছে বাতাসে তার গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে। হৃদয় চোখ বন্ধ করে গন্ধ টা উপভোগ করলো তারপর একটু একটু করে ওর পেছনে এসে দাড়ালো। ও অজান্তেই নিজের হাতটা হৃদীতার কাধের উপরে রাখতে গেলো কিন্তু তার আগেই হৃদীতা কথা বলে উঠলো দেখে ও হাত ফিরিয়ে নিলো।
> এসেছেন নিতে? কিন্তু আমি তো যাবো না।

> এই মেয়ে আমি তোমার মতামত চেয়েছি? নিতে এসেছি মানে নিয়ে যাবো।( ধমক দিয়ে )

> আমাকে কি আপনার কাঠের পুতুল মনে হয়? যাকে যখন ইচ্ছা নাচাবেন নিজের ইচ্ছা মতো।

> কথা না বলে চলো। বাড়িতে আম্মা অপেক্ষা করছে।

> হুম জানি। আমাকে আপনার এখন প্রয়োজন তাই না?

হৃদীতার কথায় ওর রাগ হচ্ছে মেয়েটার কথা শুনে মনে হচ্ছে বিশাল কেউ একজন। এমন ভাব নিচ্ছে মনে হচ্ছে ওকে ছাড়া বিশ্ব সংসার সব এতিম হয়ে পড়েছে যতসব।

>বিশ্ব সংসার এতিম না হলেও আপাতত আপনারা হবেন যাইহোক নিচে গিয়ে দাড়ান আমি আসছি। এখানে রেখে গিয়েছেন। দায়িত্বজ্ঞানী মানুষ আপনি এটা আপনার ব্যবহারে আগেই আমি বুঝেছি।

> দ্রুত আসুন তারপর লেকচার দিয়েন।

হৃদয় কথা না বাড়িয়ে নিচে চলে আসলো। বকতে বকতে।ওর নিজেই নিজেকে একটা লাথি দিতে মন চাইছে। নিজের বোকামির জন্য এই সব সহ্য করতে হচ্ছে। কিন্তু ওর নিচের সিড়িতে পা দিয়ে সামনে তাকিয়ে ওর চোখ বড় বড় হয়ে গেলো। কারণ ওর সামনে হৃদীতা দাড়িয়ে আছে এলোমেলো চুলে। সারারাত কান্নাকাটি করার জন্য ওর চোখের কাজল ঘেটে গেছে। ফর্সা মুখটা লাল হয়ে আছে। হৃদয় অবাক হচ্ছে এটা কেমন করে সম্ভব কারণ এই মাত্র ও হৃদীতাকে ছাদে দেখে আসলো তাহলে এখানে কেমন করে আসলো। কথাটা ভেবেই ও ভাবলো চোখের ভুল দেখলাম না তো?। ছাদে অন্যকেউ আছে হয়তো ভেবে ও দৌড়ে ছাদে গেলো কিন্তু ওখানে কেউ নেই। হৃদয় নিজের মাথায় থাপ্পড় দিয়ে ভাবলো টেনশনে চোখে ভুলভাল দেখা শুরু করেছি। তাই ও আবার নিচে আসলো তারপর হৃদীতার সামনে দাড়িয়ে ওর মুখের দিকে তাকিয়ে বলল,

> বাইরে গাড়ি দাড়িয়ে আছে চলো।

হৃদীতা কোনো কথায় বললো না শুধু মাঝে মাঝে ফুপিয়ে ফুপিয়ে উঠছে। এভাবেই ও হৃদয় কে অনুসরণ করে গাড়িতে গিয়ে বসলো। হৃদয় গাড়ির মধ্যে বসে জানালা দিয়ে বাইরে ছাদের দিকে একবার উকি দিলো। দেখলো ছাদে নীল রঙের একটা ওড়নার এক প্রান্ত বাতাসে উড়ছে আর সেই সাথে করুন একটা সুর ওর কানে বেজে উঠলো।

(ভুলত্রুটি মার্জনা করবেন।আর ভালো খারাপ অবশ্যই কমেন্টে জানাবেন)