নিশি পর্ব:11+12+13+14+15

0
1237

নিশি
পর্ব:11+12+13+14+15
লেখিকা:অন্না
,
পর্ব: 11

নিরব::: বলছেন কি,, আচ্ছা আমি দেখছি,,,আপনি টেনসন করেন না,, আমি দেখছি
,
নিশির মা:::: বাবা দেখোনা, ও ছারা আমার আর কেউ নাই,,, ওর কিচ্ছু হলে
,
নিরব ফোনটা কেটে দিয়ে বেরিয়ে পরে,,,
,
সম্পর্ক চলাকালীন নিশি আর নিরব যেখানে প্রায় ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতো আজ সেখানেই নিশি এসে বিকাল থেকে বসে আছে,, একদিন এখানেই নিশি তার ভালোবাসার মানুষটির সাথে সব সম্পর্ক শেষ করে দেয়,,
,
আচ্ছা চাইলেই কি সব সম্পর্ক শেষ করে দেওয়া যায়,,চাইলেই কি একটা মানুষকে ভুলে যাওয়া যায়,, একদিন যে মানুষটা জীবনের বেচে থাকার পাসওয়ার্ড ছিলো তাকে কি এতো সহজেই মুছে ফেলা যায়,,, এতো সহজেই তার অনুভবের সৃতি ভুলে যাওয়া যায়,, হয়তো সময়ের ব্যবধানে আমাদের অনেক কিছু মেনে নিতে হয় কিন্তু জীবনের পরম সত্যটা কখনও কি ভুলে থাকা যায়,,,
,
নিশিও ভুলতে পারে নি, আর ভুলবে কি করে নিশি আজও নিরবকে পাগলের মতো ভালোবাসে ,, নিরবের সৃতি আকরে ধরেই নিশি এতোটা দিন বেচে আছে,,, নিরব কে আজও নিশি ঠিক আগের মতোই ভালোবাসে,, কিন্তুু নিশি কিছুতেই নিরবকে আর নিজের জীবনের সাথে জরাইতে চায় না,,, নিজের জীবনে আর নিরবকে নিয়ে কোনো স্বপ্ন দেখতে চায় না,,,,,
,
নিশি:::: বাবা,,,,,,,,, বাবা,,,,,,,, কোথায় তুমি,,, আমি যে আর পারছি না,, কেনো চলে গেলে তুমি,, কেনো? কেনো এটা হলো কেনো,আমি কি করে সামলাবো নিজেকে কি করে,,,, আমি আর পারছি না আমি আজ অনেক ক্লান্ত হয়ে গেছি,, আমার ক্লান্তি কাটানোর জন্য তুমি নেই,, আমাকে একা করে তুমি চলে গেলে একবার ও ভাবলে না তোমার মেয়েটার কি হবে,,, আমি তোমাকে জরিয়ে কাদতে চাই,,,,,,, আমি যে বড্ড একা,,, আমি আমার নিরব কেও হারিয়ে ফেলেছি,, ও আর আমাকে ভালোবাসেনা বাবা,,,, জানো ওর বিয়ে ঠিক হয়ে আছে,, খুব তারাতারি ও বিয়ে করবে,,, আমায় ও ভুলে গেছে বাবা আমায় ও ভুলে গেছে,,,, আমার মাথার ওপর থেকে তুমি হাত তুলে নিয়েছো,,আর বেচে থাকার জীবনটা নিরব আজ আর আমায় ভালোবাসেনা,,, আমি কি করে থাকবো,,,,, নিজের চোখে দেখতে পারছি না যতই চেষ্টা করি না কেনো নিজের জীবনকে কি করে অন্যের হতে দেখতে পারবো,, যতই হোক আমি তো একটা মেয়ে,,,,,,,
আমি তোমাদের দুজনকেই হারিয়ে ফেললাম,, আমাকে তোমার কাছে নিয়ে যাও,, প্লিজ প্লিজ প্লিজ,,,
,
এদিকে নিরব নিশিকে খুজে খুজে হয়রান হয়ে যায়,,, পরে নিরবের কিছু মনে পরে আর চট করে বেরিয়ে যায়,,,,,
,
নিশি চুপ করে হাটুতে মাথা গেড়ে বসে আছে,,,,এর মধ্যে নিশি ওর সামনে কিছু ধপ করা পরার শব্দ পায়,, নিশি মাথা তুলে দেখে নিরব ওর সামনে হাটু গেড়ে বসে আছে,,,
,
নিশি;:: আপনি???
,
কথাটা বলতেই নিরব নিশির গালে ঠাস করে একটা থাপ্পর মেরে দেয়,,,,
,
নিরব::: এই মেয়ে কি শুরু করেছো তুমি হ্যা,, নিজের যা মন চাইছে তাই কেরছো,,, একবারও কি কারো কথা ভেবে দেখেছো তোমার কিছু হয়ে গেলে তাদের কি হবে,,, আজ আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি সত্তি তুমি একটা সেলফিস মেয়ে,, নিজের ছারা অন্যের কথা কখনো ভাবোনা তুমি,,,,
,
নিশি:::: আপনি এখানে কেনো এসেছেন স্যার? ,
,
নিরব নিশির ড্রেস এর গলা আকড়ে টেনে ধরে নিজের দিকে
,
নিরব::: অনেক হয়েছে,,, নিজে যা বলবে সবসময় তাই হবে? কি মনে করো নিজেকে,,, আর েএকবার আমার সাথে এভাবে কথা বললে খুন করে ফেলবো তোমায়,,,
,

,
ধাক্কা দিয়ে নিশিকে নিজের থেকে সরিয়ে দেয়,, নিশি ধপ করে নিচে বসে পরে,,
,
নিরব নিশির হাত ধরে টানতে টানতে গাড়িতে বসিয়ে দেয়,, তারপর নিশিকে বাসার সামনে নামিয়ে দিয়ে নিজের বাসায় চলে যায়,,রাস্তায় নিরব নিশির সাথে একটা কথাও বলে না,,,,
,
,
নিরবের বাবা:::: কি রে এত্ত রাতে কোথায় গিয়েছিলিস?
,
নিরব::: মা,বাবা,আমি তোমাদের সাথে কিছু কথা বলতে চাই,,
,
নিরবের মা:” বৌমার হাতের রান্না কিন্তুু খুব টেস্টি,, ওরে বলে দিবি রোজ যেনো আমাদের রান্না করে খাওয়ায়,,,
,
নিরব;::: মানে?
,
শুভ::: মানে হলো,, আমি জানি নিশি কে তুমি আমার ভাবি বানিয়েছো,,,,
,
নিরব::: তুই কি করে???
,
শুভ:::: তোরে বলবো কেনো? তুই তো আর আমাদের কিছু জানাস নি তাই আমাকেই সবাইকে জানাতে হলো,,,,
,
নিরবের মা:::: আমরা চাই তুই সুখী হ,,,তুই যার সাথেই থাক ভালো থাক,,, আমরা আমাদের বাড়ির বউ কে আমাদের কাছে চাই,,, আমি কালকেই যাবো আমার বউমার কাছে,,,
,
নিরব ::: না মা,, ও সোজা পথের মেয়ে না ওকে সোজা পথে আনি তারপর দেখা যাবে,,, তার আগে সব যেমন ভাবে চলছে ঠিক তেমন ভাবেই চলতে দাও,,
,
শুভ;::: ঠিক আছে,, বাট সোজা পথে আনতে না পারলে বলিস আমি ওর বাকা পথেই দৌড় দিবো,,,
,
নিরব::: থাপ্পরায়ে গাল লাল করে দিবো,,
,
শুভ::: হ্,,, সেলফিস,,,,
,
সেলফিস কথাটা শুনতেই নিরবের নিশির কথা মনে পরে গেলো,,, দৌড়ে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো,,,
,
নিশির বাসায় গিয়ে নিশির রুমে গিয়ে দেখে নিশির মা নিশির মাথায় পানি ঢালছে,,,
,
নিরব::’ কি হয়েছে?
,
নিশির মা;:: জ্বর টা খুব বেরেছে,,, কমছেই না
,
নিরব তারাতারি ডাক্তার এনে নিশিকে দেখিয়ে নিজে নিশির মাথায় জলপট্টি দিয়ে দেয়,,,,
,
নিশির মা:::: তুমি কেনো কষ্ট করছো বাবা,,, অনেক রাত হয়েছে বাসায় যাও,,, আমি দেখছি,, তোমাকে কষ্ট করতে হবে না,,,,
,
নিরব :::: নিশি এখন আমার ভালোবাসার মানুষ নাই াআন্টি,,,ও এখন আমার স্ত্রী,,,
,
নিশির মা:::: কি বলছো তুমি?
,
নিরব::: ওকে আমি জোর করে বিয়ে করেছি,,, জানি কাজটা আমি ঠিক করিনি,, কিন্তু এটা না করলে আমি ওকে আবার হারিয়ে ফেলতাম,,,
,
নিশির মা;::: তুমি যা করেছো ঠিক করেছো,,,, আমি ওর মা হয়ে বলছি,,,, সেদিন যখন তুমি বিয়ের কার্ড দিয়ে ওর কাছ থেকে চলে গিয়েছিলে সেদিনই আমি তোমার কাছে যেতে চেয়েছিলাম,,, কিন্তু যেতে পারিনি,,, আমার মেয়েটার বারন শুনে,,,,
,
এর মধ্যে নিশি জেগে উঠে,, ঢুলতে ঢুলতে কথা বলতে শুরু করে
,
নিশি:::: মা,,,,পানি খাবো,,,
,
নিরব তারাতারি পানি এনে নিশিকে খাইয়ে দেয়,,,,
,
নিশি::: তুমি এখানে এতো রাতে,,,
,
নিরব:::: কেমন লাগছে এখন?
,
নিশি::: খুব শীত করছে,,,
,
বলতে বলতেই নিশি আবার ঘুমিয়ে পরে ,, পর্যাপ্ত কম্বল থাকতেও কিছুতেই নিশির শীত কমছে না,,,,
,
নিরব::: আন্টি আপনি গিয়ে ঘুমিয়ে পরেন, আমি আছি
,
নিশির মা :::: তোমার সমস্যা হবে,, তুমি বরং ঘুমাও আমি
,
নিরব::: আন্টি প্লিজ আপনি গিয়ে ঘুমিয়ে পরেন,সমস্যা হলে আপনাকে ডেকে নিব,,,
,
নিশির মা চলে গেলো,,, আর নিরব নিশির কম্বলের মধ্যে ঢুকে পরল,,, নিশি নিরবের শরীরের উষ্ন গরমে নিরবের দিকে এসে গুটিশুটি মেরে নিলয়ের বুকের মধ্যে ঢুকে পরে,,, নিরব নিশিকে শক্ত করে বুকের সাথে জরীয়ে নিয়ে শুয়ে পরে,,,,

পর্ব:১২
,
,
নিরব নিশিকে শক্ত করে বুকের সাথে জরীয়ে নিয়ে শুয়ে পরে,,,,,
সারারাত নিরব নিশিকে বুকের মধ্যে জরীরে নিয়ে ছিলো,,, ভোরের দিকে নিশির জ্বর কমে যায়,,
সকালে নিশি ঘুম থেকে উঠে দেখে বিছানার ওপর নিরবের কোর্ট টা পরে আছে,, নিশি বুঝতে পারে ওটা নিরব ভুলে রেখে গেছে,,,, নিশি কোর্ট টা তুলে নিজের ওয়্যারড্রপ এ লুকিয়ে রেখে সাওয়ার নিয়ে রেডি হয়ে অফিসে যাবার জন্য রেডি হয়,,,
,
নিশির মা:::: কি রে কই যাচ্ছিস?
,
নিশি:::অফিসে যাবো,,,
,
নিশির মা::: নিরব তোকে আজ অফিসে যেতে বারন করে গেছে,,
,
নিশি;:: কেনো?
,
নিশিরর মা;::: তোর শরীর টা ভালো না তাই,,
,
নিশি:::: আমি ঠিক আছি , আমাকে নিয়ে ওর না ভাবলেও চলবে
,
নিশির মা::: কাল সারারাত বেচারা তোর যত্ন করেছে,,, সকালে উঠে চলে গেছে,, চোখ মুখ দেখে মনে হলো সারারাত ঘুমায়নি,,,,
,
নিশি::: ওকে আমি এসব নাটক করতে তো বলিনি
,
নিশির মা;:: ও নাটক করে নি,,, তোর স্বামী ও,, এখন তো ওর কথাটা ভাব একটু,,
,
নিশি::: ওকে নিয়ে ভাবার অন্য একজন আছে, যাকে ও বিয়ে করতে চলেছে,, যাকে দিনের পর দিন নিজের বাসায় রেখে দিয়েছে,,,, তুমি কি মনে করো মা ও সেই মেয়েকে ঠকাচ্ছে না? আমি মেয়ে হয়ে অন্য মেয়ের সংসার কি ভাবে ভাঙবো বলো,,, তুমি ও তো মেয়ে তুমি কি চাইবে তোমার মেয়ের জন্য অন্য মেয়ের জীবন নষ্ট হয়ে যাক,,,
,
নিশির মা::: তুই যে কষ্ট পাচ্ছিস সেটা কিছু না?
,
নিশি:::: আমি আর ক’দিন??
,
নিশির মা’:::: মানে???
,
নিশি:::: ও তুমি বুঝবে না,,, আমি গেলাম,, আর আজ রেডি থেকো সারপ্রাইজ আছে,,,,
,
নিশি বেরিয়ে গেলো,,,, অফিসে গিয়ে একটা দরখাস্ত লিখে নিরবের কেবিনে গেলো,,
,
নিশি::: স্যার আসবো?
,
নিরব:::: হুম ( চোখ তুলে) এই তোমাকে আমি অফিসে আসতে বারন করেছিলাম না?
,
নিশি::: স্যার। আমি আমার কাজের সময় কোনো অযুহাত পছন্দ করি না,, আমার সমস্যা হলে নিজে ছুটি নিয়ে নিবো,,,
,
নিরব;;:: আমার একটা কথাও শুনবে না তুমি?
,
নিশি::: স্যার এটা নিন
,
,
নিরব: কি এটা
,
নিশি::: স্যার আমি কিছুদিন ওভারটাইম কাজ করতে চাই,,
,
নিরব::: কেনো?
,
নিশি::: স্যার আমি কাজ করতে চাই,, আমার কিছু কাজ আছে যা জলদি শেষ করতে হবে,,,
,
নিরব:::কাজ আছে থাক,, আস্তে াস্তে করো,, তারাতারি করতে হবে না,,,
,
নিশি::: যদি আর করতে না পারি
,
নিরব::: মানে?
,
নিশি::’ মানে হলো যদি কাজটা অন্য কেউ নিয়ে নেয় তাই,, আপনি অনুমতি না দিলেও আমি কাল থেকে ওভারটাইম কাজ করতে শুরু করবো,,,
,
কথাটা বলেই নিশি বেরিয়ে এলো,,
,
নিরব::: নিশু,,,,,,নিশু,,,,,
,এই মেয়েটা আমায় পাগল করে দিবে,,, এমনিতেই শরীর খারাপ তার পরে অতিরিক্ত কাজ,, এত্ত স্ট্রেচ কেনো নিতে হবে শুনি,,,,
,
নিশি কেবিনে চুপ করে বসে আছে,,,
,
শুভ::: কি ম্যাম আসবো,,
,
নিশি::: ভাইয়া যে আসেন,,
,
শুভ::: তোমার রান্না কিন্তু খুব পছন্দ করেছে মা, বাবা,,, উনারা তোমাকে দেখতে চেয়েছে,,,,
,
নিশি::: আমাকে?
,
শুভ::: হ্যা তোমাকে,,,
,
নিশি::: আচ্ছা স্যার এর বিয়েতে যাবো
,
শুভ::: হ্যা তুমি না থাকলে তো বিয়েটাই হবে না,,,
,
নিশি::: আমি না থাকলে বিয়ে হবে না কেনো?
,
শুভ::: না মানে তুমি তো আমার কলিগ তাই না? আর তোমার স্যার এর স্টাফ তাই,,,,,
,
নিশি::: ভাইয়া আপনাকে কিছু কথা বলার ছিলো,,,
,
শুভ::: হ্যা বলোনা,,,
,
নিশি:::: আসেন আমার সাথে,
,
নিশি শুভকে ফাইল রুমে নিয়ে গেলো,,, নিরব ও পিছে পিছে গেলো,,,
,
নিশি::: ভাইয়া শোনেন এই স্টোরে এই বছরের সমস্ত ডিল এর ডকুমেন্ট আছে,আর এটাতে অফিসের সমস্ত কাগজপত্র,এখানে স্টাফদের সমস্ত ডিটেইলস আর তাদের সেল্যারি ডিটেইলস,এখানে স্যার কাদের সাথে কি,কি কোন প্রযেক্টে ডিল করেছেন এখানে তার সব ডিটেইল্স আসে,, আর
,
শুভ::: ওয়েট ওয়েট,, তুমি এসব আমায় কেনো বলছো? এসব তো তোমার কাজ
,
নিশি:::: কিছুদিন পরে কাজে লাগবে,যখন আমি থাকবোনা তখন দরকার হবে,,
,
শুভ::: কেনো তুমি কোথায় যাবে?
,
নিশি::: কিছু প্রশ্নের উত্তর থাকেনা ভাইয়া
,
শুভ::’ তোমার কথা আমি কিচ্ছু বুঝতেছি না
,
নিশি:::: সব কথা বুঝতে পারবেন না,, আমার কথা শোনেন,,,,,
,
নিশি সব কিছু শুভকে বুঝিয়ে দিলো,, তার পর রুম থেকে বেরিয়ে যাবার সময় নিরবকে দেখে দুজনেই লাফিয়ে উঠে,,,
,
নিরব::: তুই যা ওর সাথে আমার কথা আছে,,,,,
,
শুভ বেরিয়ে গেলো,, আর নিরব নিশির হাত ধরো ছাদে নিয়ে গেলো,,,,
,
নিরব::: কি হয়েছে তোমার?
,
নিশি::: কই
,
নিরব::: তুমি তো আগে এমন ছিলেনা নিশু,, এখন এমন করছো কেনো???আগে তো আমি কষ্ট পাবো এমন কোনো কাজ করতে না,,, কিন্তু এখন,,
,
নিশি::: আমি তার জন্যই তোমাকে বিয়ে করতে বলেছিলাম নিরব,তুমি আমার কথা শোনোনি,, নিজে যেচে কষ্ট নিচ্ছো,,আমার কিচ্ছু করার নাই নিরব,,,,
,
নিরব:::: নিশু,,,, সত্তি করে বলো তুমি আমার কাছ থেকে কি লুকাচ্ছো বলো,, সত্তি করে বলো প্লিজ নিশু ,,,
,
,
নিশি::: তোমার এটা কেনো মনে হয় বলো তো যে আমি কিছু লুকাচ্ছি,,, আমি কি লুকাবো বলো
,
নিরব নিশিকে টেনে কাছে টেনে নেয়
,
নিরব::: আমার চোখের দিকে তাকাও,,
,
নিশি::: বলো,
,
নিরব:::: আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বলো তুমি কিছু লুকাচ্ছো না,, বলো
,
নিশি::: কি হচ্ছে,,বাচ্চাদের মতো কেনো করছো বলো তো
,
নিরব::: আমি শুধু সত্য টা জানতে চাই,,
,
নিশি::: তোমাকে বলার মতো আমার কাছে কিছু নাই,,
,
নিরব;:: কেনো এমন করছো,, তুমি কি আমাকে ভালোবাসোনা বলো,,,
,
নিশি;:: কতবার বলবো আমি তোমায় ভালোবাসিনা,,,
,
নিরব::; সত্তি?
,
নিশি:::: হ্যা হ্যা সত্তি,
,

,
এর মধ্যে লিজা কোথথেকে দৌড়ে এসে নিরবের গলা জরীয়ে ধরলো,,, নিশি এটা দেখে আর রেগে যায় না খুব কষ্ট পায়,,, নিজের অজান্তেই নিশির চোখ দিয়ে টুপটুপ করে পানি গড়িয়ে পরে যাচ্ছে,,,, নিশি বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে চোখের পানি আটকানোর,,,,
নিরব তাকিয়ে নিশিকে দেখছে,,, নিশি ওখান থেকে চলে আসে
,
,
শুভ::: কি ব্যাপার নিশি তুমি কাদছো কেনো?
,
নিশি::: কই?
,
শুভ::: আচ্ছা ভাবি
,
নিশি::: আমি
,
শুভ::: আরে দেখো ভাবি,,
,
নিশি পিছে ঘুরে তাকিয়ে দেখে লিজা নিরবের হাত জরীয়ে আসছে,, নিশি আর এক মুহুর্ত ও দাড়িয়ে থাকলো না,,, ওর কেবিনের দরজা লক করে হাউমাউ করে একটু কান্না করে নিজেকে সামলে নিয়ে হাসিমুখে কেবিন থেকে বেরিয়ে আসে,,,,
নিশিকে ওভাবে দেখে সবাই একটু অবাকই হয়,,,
,
নিশি;:: হ্যালো ভাবি,, কেমন আছেন?
,
শুভ তো একটু বেশিই অবাক হয়,,,,
,
লিজা::: হাই,,, আমি ভালো আছি,, তুমি কেমন আছো,,,
,
নিশি;:: আমি তো বেশিই ভালো আছি
,
শুভ::: নিশি তুমি ঠিক আছো?
,
নিশি::: একদম আমার আবার কি হবে,,,
,
শুভ::: না মানে ভাবি
,
নিরব::: শুভ তুই কাজে যা,,,,
,
শুভ চলে গেলো,,, নিশিও চলে গেলো,,, আজ নিশির কাছে ওর পুরোনো বস আসে,,,
,
নিশি::: স্যার আপনি কেমন আছেন?
,
বস::: হ্যা ভালো, তুমি কেমন আছো?
,
নিশি::: এইতো আছি,,
,
বস::: সব কাজ কেমন চলছে?,
,
নিশি::: ভালো
,
বস::: তুমি কিছু বলার জন্য আমার সাথে দেখা করতে চেয়েছিলে
,
নিশি::: আসলে কথা গুলো কেমন করে নিবো বুঝাতে পারছি না,,
,
বস::: তুমি আমার ছোট বোনের মত,, নিঃসংকোচে বলো
,
নিশি::: স্যার মনে করেন যদি আমার কিছু হয়েযায়,, তখন তো আমি এই চাকরি টা করতে পারবো না,, আমার ভাই এর আর ৩ বছর পরে পড়াশুনো শেষ করবে,,, এখন ও চাকুরি করার মতো অবস্থায় আছে,, তো আমি যখন থাকবো না আমার পোস্ট এ যদি ওকে কাজ টা করার সুযোগ করে দিতেন,,
,
বস::: নিশি,, কি হয়েছে তোমার,, কি পাগলের মতো কথা বলছো?? কি হবে তোমার
,
নিশি;:: স্যার রাগ করেন না, মানুষের বাচা মরার কথা কি কেউ বলতে পারে,,, যদি আমার কিছু হয়ে যায় তখন কার কথা বলছি,, প্লিজ স্যার আমায় কথা দিন আমায় এইটুকু কথা সাহায্য আমায় করবেন,, প্লিজ স্যার
,
বস::: নিশি,, নিশি ঠিক আছে,,
,
নিশি::: থ্যাংস স্যার,, থ্যাংস দিয়ে আপনাকে ছোট করবনা,, আমায় একটা বড় সমস্যার হাত থেকে বাচালেন আপনি,,
,
স্যার::: নিশি আর ইউ ওকে? কোনো সমস্যা হলে আমায় বলতে পারো
,
নিশি::: বলার মতো আর কিছু বাকি নাই স্যার,,
,
স্যার ;::বুঝলাম না,,
,
নিশি;:: না কিছু না,,
,
স্যার ::: আচ্ছা নিশি আমি তাহলে যাই,আমার জরুরি কাজ আছে,,
,
নিশি আর ওর স্যার পিছে ঘুরে তাকিয়ে দেখে নিরব দাড়িয়ে আছে,,,,

পর্ব:১৩

,
,নিশি আর ওর স্যার পিছে ঘুরে তাকিয়ে দেখে নিরব দাড়িয়ে আছে,,,,
,
স্যার:: হ্যালো মি,নিরব হাউ আর ইউ,,
,
স্যার নিরবের দিকে হাত এগিয়ে দেয় হ্যান্ডসেক করার জন্য,,
,
নিরব::: ফাইন,আপনি?
,
স্যার;:: ভালো,, নিশির কাছে একটু কাজ ছিলো তাই আর কি
,
নিরব:: ওহ্
,
স্যার :: আমার একটু জরুরি কাজ আছে, আমায় যেতে হবে,
,
স্যার বেরিয়ে চলে গেলো
,
নিশি::: স্যার আপনি? কোনো কাজ ছিলো??
,
নিরব নিশির দিকে এগিয়ে গেলো মাথা টা নিচু করে নিশিকে হালকা করে জরিয়ে ধরলো,, নিশি অনুভব করতে পারলো ওর ঘাড়ে টপটপ করে গরম কিছু একটা গড়িয়ে পরছে,,, নিশি ঝট করে নিরবের মুখটা নিজের সামনে এনে দেখে নিরব কাদছে,,,
,
নিশি;:: নিরব কি হয়েছে? কাদছো কেনো? কি হয়েছে আমায় বলো,,,
,
নিরব::: আমি জানিনা তোমার কি হয়েছে,তুমি কি লুকাচ্ছো আমার থেকে, কেনো আমায় সেই প্রথম থেকে নিজের কাছ থেকে সরীয়ে দিচ্ছো,, যে নিশি এমন কোনো ধাপ দিতো না যাতে আমি কষ্ট পাবো আজ সেই নিশি জেনে শুনে আমায় প্রতিনিয়তো আমায় ধাপে ধাপে কষ্ট দিয়ে যাচ্ছে,,, জানিনা আমি,,, কিচ্ছু জানিনা,, নিশিকে বোঝার মত ক্ষমতা আমার নাই,, কিন্তু আমি একটা কথা জানি নিশির কিছু হলে নিরব বাচবে না,, তোমাকে ছুয়ে আমি কথাটা বললাম, তোমার কিছু হলে আমি বাচবোনা,,, যাই করো এটা মাথায় রেখো,,,
,
নিরব নিশিকে ছেরে দিয়ে বের হয়ে চলে যায়,,,
,
নিশি ধপ করে ফ্লোরে বসে পরে,,,
,
নিশি:::কি বলে গেলো ও,, আমি কি ভুল কিছু করছি? আমি ওকে বাচাতে গিয়ে কি মেরে ফেললাম,,, আমি চাই না নিরব তোমার কোনো সমস্যা হোক,, তোমার নয় আমি চাইনা আমার জন্য কারো কোনো সমস্যা হোক
,
,
অফিস শেষ করে নিশি বাসায় যাবার জন্য বের হয়,, তখন শুভ এসে নিশির সামনে দাড়ায়,,
,
শুভ::: ভাবি জানো কি হয়েছে?
,
নিশি:: কিহ্?????
,
শুভ::: মানে ভাবির সাথে ভাই কি করেছে জানো?
,
নিশি::’ কি???
,
শুভ::: ভাই বিয়ে টা ভেঙে দিয়েছে,,
,
নিশি::: কিহ্ কেনো???
,
শুভ::: সেটা জানিনা, ভাই হয়তো লিজাকে পছন্দ করে না,,
,
নিশি::: তাহলে কেনো এতোদিন মেয়েটাকে মিথ্যে আশা দিয়ে রেখেছিলো,
,
শুভ::: সেটা জানিনা,,, কি করে বলি বলো,, আর তুমি এতো হাইপার হচ্ছো কেনো?
,
নিশি::: আপনারা দুভাই একই রকম,, একদম কথা বলবেন না আমার সাথে,,
,
নিশি কিছু না বলে হনহন করে চলে আসলো
,
শুভ::: এত্ত কিছু করছি তবুও তোমার মন বুঝতে পারছি না ভাবি জি,,,, আর কি কি যে করতে হবে কে যানে,,এত্ত কিছু করছি এত্ত কিছু,,,,, তবুও তোমার মনের কথা মুখে আনতে পারছি না,, ধুর্,,,,,, তোমাদের যে কি হবে জানিনা আমি বাবা
,
নিশি যেতেই রাজু এসে নিশির পথ আটকে দাড়ায়,, নিশি আর রাজু খুব হেসে হেসে কথা বলে,, এটা দেখে নিরব রাগে ফোসফোস করতে থাকে,, নিরবকে দেকে
,নিশি গিয়ে নিরবের গাড়ির সামনে দাড়ায়,,,
,
নিশি::: কথা ছিলো কিছু
,
নিরব::: বলেন
,
নিশি::: গাড়িতে কি উঠতে পারি?
,
নিরব:::না,যার সাথে এতো সময় হাসা হচ্ছিলো তার কাছে যান
,
বলেই নিরব গাড়ি নিয়ে বের হয়ে গেলো
,
নিশি::: এটা কি হলো,
,
শুভ::: কি ব্যাপার তোমার স্যার গাড়িতে নিলো না? চলো আমি ড্রপ করে দেই,,নাকি রাজুর সাথে যাবে? আমি কি বলে দিবো ওকে???
,
নিশি;;: ফাজলামো করছেন? একভাই ভাব দেখিয়ে চলে গেলো আর একজন এসেছেন আমায় ড্রপ করতে,,,
,
শুভ::: আরে ওদিকে কই যাচ্ছো? এদিকে তো রাস্তা
,
নিশি:::: ধুর্
,
নিশি মেইন রাস্তায় উঠতেই নিরব গাড়ি নিয়ে নিশির সামনে দাড়ায়,, তারপর গাড়ির দরজা খুলে দিয়ে নিশিকে গাড়িতে উঠতে বলে,,, নিশি এটা দেখে না দেখার ভান করে পাশ কাটিয়ে যেতে লাগলে নিরব চিল্লিয়ে উঠে,,,, ,
,
নিরব::: ছেরে দিয়ে রেখেছি জন্য ভেবোনা আমি সারাজীবন এভাবে ছেরে দিয়ে রাখবো,, ভুলে যেওনা হাসবেন্ড আমি তোমার,, তাই আমাকে বাধ্য করোনা কোনো ন্যারো কাজ করতে,,, গাড়িতে উঠে এসো,,,
,
নিশি ধুপ গাড়িতে উঠে বসে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দেয়,,,,

,
নিরব::: কি ওত্ত কথা হচ্ছিলো রাজুর সাথে তাও এত্ত হেসে হেসে,,, কই আমি তো দেখলাম না আমার সাথে কখনও এভাবে কথা বলা
,
নিশি::: বলিনা, কারন তোমার সাথে হেসে কথা বলা যায় না,,
,
নিরব::: কেনো? আমি কি যে আমার সাথে একটু হেসে কথা বলা যায় না
,
নিশি::: স্বার্থপর,,, তুমি একটা স্বার্থপর,,,
,
নিরব::: আমি স্বার্থপর? আমি???
,
নিশি::: যে মেয়েটা বিগত কয়েক মাস তোমাকে বিয়ে করার স্বপ্ন দেখছে,, যে মেয়েটা তোমার সাথে সংসার করার স্বপ্ন দেখছে, যে মেয়েটাকে বিয়ের নামে নিজের বাসায় এনে রেখেছো,,, যে মেয়েটা তোমায় ভালোবেসে তোমার অবহেলা সহ্য করে এসেছে তাকে,,,, তাকে তুমি আজ কষ্ট দিয়েছো,,, ওর স্বপ্ন গুলো ভেঙে চুরমার করে দিয়েছো,,, নিজের কথা ভাবো তুমি শুধু অন্য কারো কথা নয়,, একবার কি ভেবে দেখেছো এই বিয়েটা ভাঙারপর মেয়েটার ওপর কি প্রভাব ফেলবে,, বিয়ে যখন করবাই না তাহলে কেনো নিজের সাথে ওকে জরাতে দিলে,, কেনো ওকে ভালোবাসতে দিলে বলো কেনো? আসলে কি জানো তুমি শুধু নিজের টাই বুঝো অন্য কেউ মরে গেলেও তাতে তোমার কিছু যাবে আসবে না,,তুমি যে ওত্ত বড় সেলফিস আমি জীবনেও কল্পনা করতে পারিনি,,,,
,
নিরব::: নিশু,,,,
,
নিশি::: স্টপ নিরব,, তোমার কথা শুনব বলে আমি এখানে আসিনি,,,
,
নিরব::: আচ্ছা তুমি আমায় সেলফিস বলছো,, মেনে নিলাম আমি সেলফিস,,একটা বার ও কি ভেবে দেখেছো তুমি যা করছো সেটা কি?
,
নিশি আর কোনো কথা বললো না ধুপ করে গাড়ি থেকে নেমে গেলো,, নিরব আর নিশুকে আটকানোর চেষ্টা করলোনা,,,
,
বাসায় এসে নিশি ওর মা এর রুমে যায়,,,
,
মা;:: কি রে কখন এলি?
,
নিশি::: এই তো,,
,
মা::: এগুলো কি?
,
নিশি::: এটা আমাদের বাড়ির দলিল মা,, আমাদের বাড়িটা আমি তোমার নামে কিনে নিয়েছি,,
,
মা::: সত্তি,,, সত্তি বলছিস তুই?
,
নিশি::: হ্যা,, আর বাবা আমার জন্য যে টাকা জমিয়েছিলো সে টাকা গুলো আমি বোন এর জন্য ব্যাংকে রেখে দিয়েছি,, এগুলো তার কাগজ পত্র,,,,
,
মা::: এটা কি করেছিস তুই? এ টাকা গুলো তোর বাবা তোর জন্য রেখে গেছে,, আর তুই,,
,
নিশি:::: মা আমার কথা গুলো আগে শোনো,,,আমি চাই না আমি না থাকা কালীন তোমাদের কোনো সমস্যা হোক,, ভাই এর জন্য আমি চাকরি ঠিক করে দিয়েছি,, আর বোন এর জন্য টাকা রেখে দিয়েছি,, আর আমার কিছু টাকা তোমার জন্য রাখা আছে আর বাড়ি টাও আছে,,,, তোমাদের কোনো সমস্যা হবে না,,
,
মা::: এটাই তোর সারপ্রাইজ?
,
নিশি::’হ্যা,, খুসি হও নি???
,
মা::: নিশি আমার কসম লাগে তুই সত্তি বল তোর মনের মধ্যে কি চলছে?
,
নিশি::: সময় হলে ঠিকই জানতে পারে মা
,
মা;::: নিশি,,,নিশি,,,,
,

নিশি এসে ঘর আটকে ফ্লোরে বসে পরলো,,,
,
নিশি::: তুমি,,, তুমি কে?
,
>> আমায় চিনতে পারছো না? আমি তোমার বিবেক,,
,
নিশি::: তুমি,,,,
,
>> আমাকে তো তুমি ভুলে গেছো মনে করিয়ে দিতে এলাম
,
নিশি::: কি ভুলে গেছি আমি,,,
,
>>> তুমি যা করছো সেটা কি ঠিক করছো নিশি?
,
নিশি::: হ্যা হ্যা আমি যা করছি সব ঠিক করছি,, আমি ভুল কিছু করছি না,,,
,
>> হাহাহাহাহা কোনটা ঠিক করছো নিশি কোনটা?? তোমার পরিবারের সাথে যেটা করছো সেটা ঠিক করছো? নাকি নিরবের সাথে যেটা করছো সেটা ঠিক
,
নিশি::: আমি যা করছি সবার ভালোর জন্য করছি,, আমি চাইনা আমার জন্য কারো কোনো সমস্যা হোক,,,
,
>>> সমস্যা?? কোন টাকে সমস্যা বলছো,, তোমার এই মিথ্যা কথাতে তোমার কাছের মানুষ গুলো কতো কষ্টের মধ্যে আছে তোমার জানা আছে? সমস্যা থেকে পালালে সমস্যার সমাধান হয় না সমস্যার সামনে দাড়িয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হয়,,,,
,
নিশি::: তুমি কি চাও? আমি সব বলে দেই,, একবার ও কি ভেবে দেখেছো আমার মা এর ওপর কি যাবে এটা জানলে , যে কিছুদিন আগে তার স্বামীকে হারিয়েছে যার শোক এখনও ভুলতে পারেনি আজ সে যদি যানে তার মেয়ে,,,,,,,,,,,,,,,,,
তাহলে কি হবে ভাবতে পারছো,?? নিলয়,, সে যদি যানে তার ভালোবাসার মানুষটি,,,,,,,,,,,,, কি হবে তার তুমি জানো? আমি যানি কি হবে,, নিজের চেয়ে বেশি ভালোবাসে আমায় ও,, ও কিভাবে আমার এ সমস্যা সহ্য করবে বলো,,,,
,
>>> তুমি যাই বলো,, নিজের জেদ টা বড় করে নিচ্ছো ,, একবার ও তাদের কথা ভাবছো না,,, নিজের মন যা বলছে তাই করছো, একবার ও ভেবেছো তোমার যদি সত্তিই কিছু হয়ে যায় তাহলে নিলয়ের কি হবে , বেচারা তো তোমাকে ছারা থাকতে পারবে না , তাই তোমার কড়া কথা শোনার পরেও বিয়ে না করে এতোদিন একা থেকে গেছে,, আর তুমি হয়তো ভুলে যাচ্ছো নিলয় এখন তোমার হাসবেন্ড, তোমার ব্যাপারে সব কথা ওর জানার অধিকার আছে,, তুমি যদি ওকে সব বলো তাহলে সব ঠিক হয়ে যেতে পারে, কিন্তু তুমি সেটা করছো না সবাইকে কষ্ট দিয়ে বেরাচ্ছো,কারো কথা ভাবছোনা তুমি,,, আসলে তুমি একটা স্বর্থপর মেয়ে,,, স্বার্থপর,,,
,
নিশি:::: আমি স্বার্থপর নই,,,, আমি স্বার্থপর নই,, তুমি চলে যাও এখান থেকে চলে যাও,, আমাকে আমার মত থাকতে দাও,,,আমি কিছুতেই এ কথা কাউকে বলবোনা,,, আমি জানি হারানোর ব্যাথাটা কি,,, না মরে বেচে আছি আমি,, এই ব্যাথাটা আমি কি করে আমার নিরব কে আমি দিবো,,, কি ভাবে,,,,, হ্যা আমি স্বার্থপর আমি নিরবের জন্য স্বার্থপর,,, আমি ওর জন্যই বেচে আছি এখনও হাসি মুখে বেচে আছি,, ওর মুখটা দেখেই আমি আমার সব কষ্ট যন্ত্রনা ভুলে আছি,, ও যদি আমার কথাটা জানতে পারে ও নিজেই তো ভেঙে পরবে তখন আমি কি করে নিজেকে শক্ত রাখবো,,,, আমি নিজের চোখে দেখতে পারবোনা আমার নিরবকে কষ্ট পেতে,,, তার চেয়ে বরং ও আমাকে ভুল বুঝে থাকুক,,,,
,
নিশি মুখ তুলে তাকিয়ে দেখে নিরব দাড়িয়ে আছে,,, আর নিশি কিছু বলতে যাবে তার আগেই ঠাস করে একটা থাপ্পর মেরে দেয় নিরব,,,,,
,

পর্ব:১৪
,
একটা থাপ্পর মেরে দেয় নিরব,,,,,
,
নিশি গালে হাত দিয়ে নিরবের দিকে তাকায়
,
নিশি:::তুমি এখানে? ভেতরে আসলে কি করে? আমি তো দরজা লক করে রেখেছিলাম,,,
,
নিরব ::: দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকেছি, বিগত এক ঘন্টা যাবত দরজা ধাক্কা দিচ্ছি,,, তোমার কোনো রেসপন্স নাই কেনো? কি ভাবছো নিজেকে হ্যা,কি মনে করছো,,, তোমার জন্য আমি কেনো কষ্ট পাবো বলতে পারো, তোমার মা কেনো কষ্ট পাবে বলো তো,, কেনো সবাইকে এতো টেনশন দিচচ্ছো তুমি বলো,,, আমাদের মনের অবস্থাটা একবার ও বোঝার চেষ্টাও করছো না কেনো,,,,
,
((নিরব গিয়ে নিশির সামনে ফ্লোরে ধপ করে বসে পরে,,,)))
,
একটা বার ভাবো তো নিশু তোমার যদি সত্তি কোনো কিছু হয়ে যার তাহলে আমার কি হবে বলো,,, একটাবার তো আমার কথাটা ভাবো,,, আমি সত্তি অনেক ভালোবাসি তোমায় অনেক,,, দরজার ওপাশ থেকে তোমার রেসপন্স না পেয়ে টেনশনে আমার কি অবস্থা হয়েছিলো যানো? এক মুহুর্তের জন্য আমার মনে হয়েছিলো তোমাকে আমি আমার জীবন থেকে হারিয়ে ফেলেছি,,, প্লিজ নিশু আমাকে আর শাস্তি দিও না,,, আমার তোমার ভালোবাসার বড্ড প্রয়োজন,,, আমি আর পারছি না,, বিলিভ মি নিশু প্লিজ,,,, তোমাকে ছারা আমি সত্তিই বেচে থাকতে পারবো না,,, তুমি কি জানো আমার এ অফিসে নতুন এমডি হয়ে আসার কারন টা কি? শুধু তুমি নিশু শুধু তুমি,,, আমাকে ছারার পর প্রতিটা দিন তুমি আমার নজরে থাকতে,,, কিন্তুু আমাকে তোমার নজরে আনতে দিতাম না,, কারন তুমি আমার মুখ দেখতে রাজি ছিলে না,,,, তুমি তো এটাও জানোনা তোমার জব টাও আমি নিয়ে দিয়েছি,, আর থাকার জন্য এই বাড়িটা আমি নিজে দিয়েছি,,, আমি যেভাবে হোক তোমার পাশে থেকেছি,,, আর আগামী প্রতিটা দিন আমি তোমার সাথে শুরু করতে চাই প্লিজ নিশু, আমি তোমাকে বলেছিলাম আগের নিরব হয়ে কখনও তোমার সামনে আসবো না, কিন্তু আমি আমার কথাটা রাখতে পাররলাম না ,,, আমাকে আজ ফিরিয়ে দিও না,,, আমায় এক্সেপ করো প্লিজ,,,,
,
নিশি::: তুমি এখান থেকে চলে যাও নিরব, আমাকে একা থাকতে দাও,,
,
নিরব::: এতো কিছুর পরেও তুমি এটা বলতে পারলে?
,
নিশি:::: হ্যা পারলাম,, কারন আমি আগের নিশি নেই,,, আমি তোমাকে ভালোবাসিনা নিরব,হাজার বার বলেছি সেই কথা,,,,
,
নিরব;::: তুমি আমাকে ভালোবাসোনা?
,
নিশি;:: না
,
নিরব::: তুমি মিথ্যা বলছো নিশু,
,
নিশি::::কোনো প্রমান আছে তোমার কাছে যে আমি মিথ্যা বলছি,,,
,
নিরব::: তোমার আর আমার মধ্যে এখন প্রমানের সম্পর্ক তাই না??? আচ্ছা,, তাহলে এগুলো কি?
,
নিশি::: তুমি ওগুলোতে হাত দিচ্ছো কেনো???
,
নিরব::: কেনো আমার জিনিসে আমি হাত দিবো না?
,
নিশি::: ওগুলো রাখো নিরব,,
,
নিরব::: কেনো রাখবো? আমার সানগ্লাস, আমার কলম,আমি যে মগে কফি খাই সে মগ, আমার রুমাল,আমার কোর্ট এমনকি আমার মুখ মোছা বাতিল টিসুটাও তুমি যত্নন করে ড্রয়্যারে রেখে দিয়েছো কেনো? বলো কেনো? ভালো যদি নাই বাসো তাহলে এসব কেনো রেখে দিয়েছো বলো,,,,
,
নিশি:::::….
,
নিরব:::: জানি তুমি কোনো উত্তর দিতে পারবে না,,আমি ও আর কিছু চাইতে আসবো না, যা করার নিজেই করবো ,, আমি আর কখনও ভালোবাসার দাবি নিয়ে তোমার কাছে আসবো না,,,
,
নিরব বেরিয়ে গেলো,,, নিশি ঠায় দাড়িয়ে নিরবের যাবার দিকে তাকিয়ে থাকলো,,, নিশি এ কাজটাই ভালো করতে পারে, ভালোবাসার মানুষটাকে আটকাবে না কিন্তু নিরবে তাকে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসে,,
,
,
নিশির মা:::: তুই যা করছিস খুব খারাপ করছিস একটা বার তো
,
নিশি::: আমাকে একা থাকতে দাও,,,,,
,
নিশির মা কিছু না বলে চলে গেলো,,,,,
,
,
একটু পরে শুভ ফোন দিলো নিশিকে,,,
,
নিশি;::: হ্যা ভাইয়া বলেন
,
শুভ;:: ভাই কই আছে যানো?
,
নিশি;:: উনি বাসায় যায় নি?
,
শুভ::: না তো,, কই যে গেলো
,
নিশি:::: আচ্ছা আমি দেখছি,,,
,
শুভ::: এত্ত রাতে তুমি আর কোথায় দেখবে নিশ্চই লিজা আপুর সাথে আছে,,,,
,
নিশি::: এত্ত রাতে ওর কাছে কেনো?
,
শুভ;::: মনে হইলো আর কি,, আচ্ছা থাকো আমি লিজা আপুর বাসায় গিয়ে দেখি,,,
ভাইয়াকে নিয়ে ও কি করছে,,,
,
নিশি::: এত্ত সাহস ওর,,, আমিও যাবো,,,
,
শুভ::: তুমি গিয়ে কি করবে।
,
নিশি;::: আমি যাবো ব্যাস
,
শুভ”:: আচ্ছা আমি তোমাকে তুলে নিচ্ছি,,, বাই দা ওয়ে আমি তোমার বাসার সামনে আছি,,,,,
,
নিশি::: আপনি এখানে
,
শুভ::: না,,,,মানে,,,,,তুমি যাবে কি না তাই বলো,,
,
নিশি::: আসতেছি,,
,
নিশি গিয়ে গাড়িতে বসে,,,,
,
শুভ’::: নিশি এই ফুল টা তোমার জন্য
,
নিশি:::: এটা ফুল দেবার সময় না
স্যার,,,,
,
শুভ’::: প্লিজ নাও এত্ত কষ্ট করে আনলাম ,,
,
নিশি ফুল টা হাতে নিলো,,
,
শুভ:::: একটু ঘ্রান নিয়েই দেখো,,, কত্ত সুন্দর স্মেল,,,
শুধু তোমার জন্য এই স্মেল
,
নিশি;::: আপনি আমাকে উনার কাছে নিয়ে যেতে এসেছেন নাকি আমার সাথে ফ্লাট করতে
,
শুভ”:: প্লিজ প্লিজ
প্লিজ প্লিজ
,
নিশি::: ওকে ওকে নিন নিলাম আপনার,,,,,,,,,,
,
নিশি কাত হয়ে শুয়ে পরলো,,,
,
শুভ’:::: ব্রাদার তোর কাজ হয়ে গেছে,,,
,
,
,,
পরদিন সকালে নিশি নিজেকে বিছানায় আবিস্কার করলো,,,, নিশি উঠতে গিয়ে মাথা ঘুরে উঠে ,,,, কিন্তু ও তো শুভর গাড়িতে,,,, নিশির কিচ্ছু মনে পরছে না,,, নিরবের কথা মনে হতেই নিশি তারাতারি উঠে ফ্রেস হয়ে অফিসের জন্য বেরিয়ে যায়,,,, অফিসে গিয়ে দৌড়ে নিরবের কেবিনে যায়,,, গিয়ে দেখে নিরব কাজ করছে,,,,
,
নিরব::: কেবিনে ঢোকার আগে নক করতে হয়,, ভুলে গেছেন?
,
নিশি::; তুমি রাতে কই ছিলা? ফোন ধরছিলা কেনো?
,
নিরব::: সে কথা আপনার না জানলেও চলবে,,,
,
নিশি;:: চলবেনা ,,,, কিচ্ছু চলবেনা,,, তুমি আমার দিকে তাকাচ্ছো না কেনো?
,
নিরব::: আপনার তো আর রুপ বের হয়নি যে আমাকে তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতে হবে,,,
,
নিশি:::: ওহ্ তাই,,, তাই তো,,, আমাকে তো আর এখন ভালো লাগবে না,,, ওই ডাইনি টা তো রাতে খুব ভালো লাগিয়ে দিয়েছে,,,,
,
নিরব নিশিকে টেনে চেয়ার এ বসিয়ে দেয়,,,তারপর চেয়ার টেনে নিশিকে নিজের কাছে নিয়ে আসে,,,
,
নিরব:::: কাউকে ভালো লাগার হলে অনেক আগেই লাগতো,,, ভালো একজন কেই লেগেছে,, ভালো তাকেই বেশেছি,বিয়ে তাকেই করেছি আর তাকে ভালোবেসেই মরে যাবো,,,,,
,
নিশি::: তুমি
,
নিরব::: গেট আউট,,,,,
,
নিশি:::: নিরব তুমি
,
নিরব:::: যাস্ট লিভ মি এ্যলং
,
নিশি নিরবের টেবিলের ফাইল গুলো সব ফ্লোরো ছুরে দিয়ে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে আসলো,,,,
,
নিরব::: সোজা কথায় আর তোমাকে সোজা রাস্তায় নিয়ে আসতে পারলাম না, তাই আমাকেই বাকা রাস্তায় নামতে হলো,,, এখন তুমি সোজা রাস্তায় আসতে বাধ্য হবে,,,,,,,,,,
,
,
শুভ::: হাই নিশি,,,,
,
নিশি::: হাই মাই ফুট
,
শুভ::: আমি কি করলাম তুমি আমার সাথে এমন করছো কেনো????
,
নিশি::: আপনি এই ড্রামা করে আমাকে আবার বোকা বানাচ্ছেন তাই না
,
শুভ’::: আমি কি করলাম???
,
নিশি;::: কাল আপনি ফুলের মধ্যে কিছু মিসিয়ে দিয়েছিলেন তাই না/
,
শুভ:::: আরে এটা কি হলো ,, এক দিকে তুমি নিজে ঘুমিয়ে গেছিলে তোমাকে আবার কষ্ট করে তোমার বাড়িতে এমনকি তোমার বিছানায় শুইয়ে দিতে হয়েছে আমায়,, আর তুমি আমার বলছো আমি তোমার সাথে ড্রামা করছি,,, হায় খোদা এই ছিলো কপালে,,,
,
নিশি::’ হয়েছে হয়েছে,,,, তা আপনার ভাই কোথায় ছিলো???
,
শুভ::: ওহ্ তোমার স্যারকে দেখলাম তোমার গার্ডেনে বসে ছিলো ,,, তখন আবার একসাথে বাসায় চলে আসলাম,,,, বাট ও তোমার গার্ডেনে কেনো ছিলো?
,
নিশি কিছু না বলে নিলয়ের রুমে গেলো,,,
,
নিশি;::: আমি চাকরি টা আর করবো না,, আর তোমার বাসাতেও থাকবো না,,
,
নিরব ;;:: এই চাকরি টা আপনার যোগ্যতা দেখে দেওয়া হয়েছে,, ারর কন্ট্রাক পেপার এ এগরিমেন্ট করা আছে আপনি চাইলেও এ চাকরি ছারতে পারবেন না,,, আর থাকলো বাড়ি তো শোনো,,,,
,
বাড়ি থেকে বের হবার কথা চিন্তাও করেছো তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবেনা,,,, বুঝেছো? যাও এখান থেকে,,,,
।,
,
,
নিশি কিছু বলতে যাবে
,
নিরব ::: ফাইল গুলো গুছিয়ে রাখো এখনি,,,,
,
,নিশি নিরবের চিল্লানি তে চুপচাপ ফাইল গুলো তুলে ধপাস করে টেবিলে রেখে রুম থেকে বেরিয়ে আসে,,,,,
,
,
নিশি বসে কাজ কেরছিলো তখন ওর হাত ব্যাথা অনুভব হয়,, মনে হয় দশটা ইনজেক্শন দিয়েছে ,,,, তখনই শুভ নিশির কেবিনে ঢোকে,,,,
,
শুভ::: স্যার তোমাকে এটা খেতে বললো,,,,
,
নিশি:::: কি এটা???

নিশি
পর্ব:১৫
writer :অন্না
,
,
,
,
,
নিশি বসে কাজ কেরছিলো তখন ওর হাত ব্যাথা অনুভব হয়,, মনে হয় দশটা ইনজেক্শন দিয়েছে ,,,, তখনই শুভ নিশির কেবিনে ঢোকে,,,,
,
শুভ::: স্যার তোমাকে এটা খেতে বললো,,,,
,
নিশি:::: কি এটা???
,
শুভ::’ :: কেনো ম্যাংগো জুস,,,
,
নিশি:’: সে তো দেখতেই পাচ্ছি,,, কিন্তু এটা আমার জন্য কেনো?
,
শুভ:::: সেটা আমি কি করে বলি বলো,,, তোমার স্যার পাঠিয়েছে,,,
,
নিশি::: উনার আবার আমার জন্য এতো খাতির কেনো? একটু আগে তো আমায় দুর দুর করে তারিয়ে দিলো,, আর এখন এই জুস দিয়ে ভাব নিচ্ছেন,,,, খাবোনা আমি,,,,
,
শুভ::: এই না না,,, এমন করোনা প্লিজ,,, এটা না খেলে আমার চাকরি টা থাকবে না,,,
,
নিশি::: কি লাগিয়েছেন আপনার দু ভাই বলেন তো,,, আমার ভালো লাগছে না,,,,
,
শুভ::: মিষ্টি আপু প্লিজ খেয়ে নাও,, প্লিজ প্লিজ প্লিজ,,
,
নিশি::: আচ্ছা রেখে যান,, আমি খেয়ে নিবো,,,
,
শুভ::’ তোমার স্যার খালি গ্লাস নিয়ে এখান থেকে বের হতে বলেছে,,,
,
নিশি:::: আচ্ছা জ্বালা তো,,, আপনি তো
,
শুভ::: প্লিজ নিশি প্লিজ
,
নিশি:: ওকে,ওকে,,,,
,
নিশি শুভর হাত থেকে জুস এর গ্লাস টা কেরে নিয়ে মুখে দেয়
,
নিশি:::: ইয়াক,,, এটা কি ম্যাংগো জুস নাকি করলার জুস,,, সত্তি বলেন তো এতে কি মিশিয়েছেন???
,
নিরব:;:: বিষ মিশিয়ে দিয়েছি,,,,,
,
এর মধ্যে নিরব আসে, নিশি সহজে ওটা খেতে চাইবে না নিরব ভালোভাবেই বুঝতে পারে,,, তাই ও আড়ালে দাড়িয়ে ছিলো,,, নিশির কথা শুনে নিরব শেষ মেশ নিশির কেবিনে ঢুকেই পরলো,,,
,
নিরবের কথা শুনে নিশি আর শুভ দুজনেই নিরবের দিকে তাকিয়ে আছে,,, নিরব নিশির কাছ থেকে গ্লাস নিয়ে নেয়,,,
,
,
নিরব::: বিষ মিশিয়ে দিয়েছি,,, তোমাকে খেতে হবে না,,,,
,
নিরবের কথা শুনে নিশি ওর হাত থেকে জুস এর গ্লাস নিয়ে ঢকঢক করে জুস টুকু খেয়ে নিয়ে গ্লাস ফাকা করে নিরবের হাতে ধরিয়ে দেয়,,,,,
,
নিরব মুচকি হেসে নিশির হাতে একটা বড় ডেইরি মিল্ক ধরিয়ে দিয়ে কেবিন থেকে বের হয়ে আসে,,,,,।
,
শুভ::: নিশি তুমি এখন এ বেচে আছো?
,
নিশি:::: আপনার ভাই এর সমস্যা কি বলেন তো,,,
,
শুভ:::: সেটা আমি কি করে বলবো বলো,,,, তোমার স্যার আর তোমার ব্যাপার আমায় কেনো মাঝখানে টানছো?
,
নিশি:::: আপনারা দু ভাই এক রকম,,,,, এক্কেবারে বজ্জাতের হাড্ডি,,,
,
শুভ:::: এইটা তুমি কি বললা নিশি
,
নিশি::: তা নয় তো কি,,, এমনিতেই আমার কেমন কেমন জানি লাগছে,,,
,
শুভ:::: তুমি ঠিক আছে তো?
,
নিশি:::: না আমি ঠিক নাই,,, দেখেন আমার হাত টা মনে হচ্ছে না সুই দিয়ে আমার হাত টা কেউ ফুটো ফুটো করে দিয়েছে,,, দেখেন কেমন লাল হয়ে আছে,,,,
,
শুভ::: হুমমমমমম,,,,,আমার তো মনে হচ্ছে গরুর ইন্জেকশন দিয়ে ফুটো করেছে,,,,
,
নিশি;::: ফাজলামু হচ্ছে??? আপনি আসলেই,,, ধুর,,,,,
,
শুভ:::: আরে নিশি,,,,, শোনো ইয়ার,,, আমি তো জাস্ট মজা করছিলাম,,,
,
,
নিশি বের হয়ে অফিস ক্যারিডোর এ বসে ডেইরি মিল্ক খাচ্ছিলো,,,, তখন রাজু আসে,,,
,
রাজু::: হাই নিশি,,
,
নিশি::: হাই ভাইয়া
,
রাজু :::: বসতে পারি?
,
নিশি::: হ্যা অবশ্যই,, বসেন
,
রাজু :::: ওয়াও,,,,, ডেইরি মিল্ক,,,, শেয়ার পেতে পারি?
,
নিশি:::: হ্যা অবশ্যই,,,,,
,
,
এর মধ্যে নিরব এসে নিশিকে রাজুর সাথে হেসে হেসে গল্প করতে দেখে ভিষম রেগে যায়,,, নিজের কেবিনে গিয়ে একজন স্টাফ কে নিশিকে ডাকতে পাঠায়,,,,
,
নিরব:::: এত্ত হাসি,,,,, এত্ত হাসি কই থেকে আসে আজ আমি দেখছি,,,, আমার সাথে নাকি হেসে কথা বলা যায় না,, কিন্তু ওই রাস্কেল টার সাথে করা যায়,,,,,, আসো আগে,,,
,
,
,
রাজু;::: নিশি তোমার সাথে আমার কিছু কথা ছিলো,,,
,
নিশি::: হ্যা ভাইয়া বলেন,,,
,
রাজু::: হেই নিশি আমায় ভাইয়া বলে ডেকো না প্লিজ
,
নিশি;::: কেনো???.
,
স্টাফ :::: ম্যাম স্যার আপনাকে ডাকছে,,,,
,
নিশি:::: তুমি যাও আমি যাচ্ছি,,,
,
স্টাফ’:: ম্যাম স্যার আপনাকে এক্ষনি যেতে বলেছে,,,
,
নিশি::: ঠিক আছে তুমি যাও,,,, আমি যাচ্ছি
,
স্টাফ’ ::: ম্যাম,,,,
,
নিশি::: যাস্ট গো,,,,,
,
রাজু::: তুমি বরং আগে স্যারের সাথে দেখা করে এসো,,,, স্যার যে রাগি,,, সব সময় তোমার ওপর রাগ দেখায়,,, স্যার আসলেই একটা বদমেজাজি লোক,,,, অসহ্য টাইপ এর। ,
,
,
রাজুর মুখে নিরবের নামে এসব কথা নিশি সহ্য করতে পারে না,, চট করে দাড়িয়ে চিল্লিয়ে ওঠে,,,,,
,
নিশি:::: আপনার সাহস তো কম নয়,,, উনার নামে এসব কথা বলার সাহস কই পান হ্যা,,, উনি যাই করুক তবুও উনি আমাদের স্যার,,,, উনি আমার সাথে যাই করুক সেটা আমার আর উনার ব্যাপার আপনাকে মাথা ঘামাতে কে বলেছে হ্যা,,,,,,

,
রাজু;:: তুমি হাইপার হচ্ছো কেনো???
,
নিশি:::: হাইপার হবো না কেনো??? ভালো না লাগলে চাকরি ছেরে দিবেন,,, অফিসের বস কে সম্মান না করলে চাকরি করার দরকার নাই,,,,,,
,
নিশি হনহন করে ওখান থেকে চলে আসলো, একটু খানি এসে আবার রাজুর কাছে ব্যাক গিয়ে রাজুর হাত থেকে চকলেট টুকু কেরে নিয়ে চলে আসলো ,, শুভ পাশ থেকে সব দেখে মিট মিট করে হাসছিলো,,,,রাজুতো হা হয়ে নিশির কান্ড দেখছে,,,,
,
নিশি নিরবের কেবিনে এসে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে নিরবের ওপর চিল্লিয়ে ওঠে,,,,
,
নিশি:::: কি হয়েছে??? এত্ত ডাকার কি আছে হ্যা?,
,
নিরব নিশির ওপর চিল্লাতে যাচ্ছিলো,, কিন্তু উল্টে নিশির চিল্লানিতে নিরব চুপ মেরে যায়,,,,
,
নিরব’:::::( যাহ্ বাবা আমি আবার কি করলাম,,, আমার ওপর এসে চিল্লাচ্ছে,,, রাগ করার কথা আমার চিল্লাবো তো আমি,, কিন্তু উনাকে দেখো,,, নিজেই আমাকে বাতাসে উড়াচ্ছে,,, কিছু তো একটা হয়েছে,, দেখি বলে কি না,,,, ,))))
,
কি হয়েছে নিশু?????
,
নিশি:::: হবে আবার কি হ্যা, হবে আবার। কি? ওর সাহস হয় কি করে তোমার নামে ওই সমস্ত কথা আমার কাছে বলার,,,,
,
নিরব::: কে কি বলেছে নিশু???
,
নিশি;;:: কে কি বলেছে মানে কি হ্যা,,, তুমি জানোনা তোমাকে নিয়ে অফিসের সবার মনে কি রকম ধারনা হয়েছে,,, তারা তোমাকে নিয়ে কি ভাবে,,, ওদের সাহস কি করে হয় তোমাকে বাজে বলার,, তোমাকে অসম্মান করার,,,,
,
নিরব:::: কে আমায় কি ভাবে সেটা আমি করে জানবো বলো নিশু,,,,
,
নিশি:::: কেনো তুমি বুঝনা তারা কেনো তোমায় খারাপ বলে,,, আগে তো কেউ তোমায় খারাপ বলতো না,,, তোমাকে রাগি,বদমেজাজি বলতো না,,, এখন কেনো বলে হ্যা,,,,,
,
নিরব::: নিশু,,,,
,
নিশি::::শোনো নিরব আমি তোমার কোনো কথা শুনতে চাই না,,, এর পরের বার আমি যদি কারো মুখে তোমাকে নিয়ে কোনো বাজে কথা শুনেছি তো দেখো তোমার কি অবস্থা করি,,,,
,
নিরব:::: আরে নিশু,,,,,,,
।,
নিশি আবার ঠাস করে দরজা লাগিয়ে বের হয়ে আসে,,,,,
,
,
নিরব::: হাহাহাহাহা নিশু এতোটা ভালোবাসো আমায় জানতাম না তো,,,, এতো ভালোই যখন বাসো তো এভাবে দুরে সরিয়ে রেখেছো কেনো ,, তুমি কি ভাবো তুমি দুরে সরিয়ে রাখলে আমি দুরে সরে যাবো,,, এতে আমি তোমার আরো কাছে চলে যাবো তুমি বুঝতেই পারবে না,,,,,
,
শুভ:::: কিন্তু আমি খুব ভালো করেই সব বুঝতে পেরেছি,,,, ভাবি তোকে খুবই ভালোবাসে,,,
,
,
এর মধ্যে শুভ নিরবের কেবিনে ঢোকে,,,,
,
নিরব:::: আমি জানি,,,,
,

শুভ:::’ রাজু কে কি ঝার টাই না দিলো,,,, তুই যদি দেখতিস,,,,
,
নিরব::: আমার ওপর দিয়ে সুনামি হয়ে গেলো,,,,, হাহাহাহাহা
,
শুভ::: কিন্তু ভাই তুই যে কাজ করছিস সেটা ঠিক করছিস?
,
নিরব:::: কি বলতে চাচ্ছিস????
,
শুভ:::: ভাবি কে না জানিয়ে তুই যা করছিস। ,,
,
নিরব:::: কোনো ভুল করছিনা আমি,,, ও তো জানানোর প্রয়োজন মনে করেনি ,, ও কি ভেবেছিলো ও না বললে আমি কিছু জানতে পারবো না ,,,,, আমি যা করছি ঠিক করছি,,,,,
,,,
,
be continue ,,,,,, ♥♥♥♥