পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ পর্ব-১১+১২

0
5638

#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব -১১
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফারহাজ ইম্পোর্টেন্ট কিছু কাজ করছিলো তখনি সে বাইরে চেচামেচির আওয়াজ শুনে। ফারহাজ বুঝতে পারছেনা কিসের আওয়াজ আসছে।ফারহাজের ভাবনার মাঝেই রুপ এসে বলে উঠে–
স্যার! আসলে
রুপ কিছু বলবে তখনি খুড়ো বুড়ি ফিহার হাত ধরে কেবিনে নিয়ে এসে। খুড়ো বুড়ির সাথে ফিহাকে এইখানে ফারহাজ মোটেও আশা করেনি।
খুড়ো বুড়ি বলে উঠে– ফারহাজ বাবা! এইযে এই মেয়ের একটা বিচার করো। ফিহা কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ফারহাজ খুড়ো বুড়ির কাছে গিয়ে বলে উঠে– কি হয়েছে ঠাম্মাম! ওকে তুমি কোথায় পেলে?
খুড়ো বুড়ি বলে উঠে– রাম রাম! এই মেয়ের কত সাহস জানিস তুই?? কি করেছে আমার গাছের কাঁচা আম এই মেয়ে চুরি করছিলো আজ আমি হাত নাতে তাকে ধরেছি। তুই এই মেয়েকে এখুনি জেলে পুড়ে দে তো। তাড়াতাড়ি দে!

ফারহাজ ফিহার দিকে তাঁকায় সে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে আছে ফারহাজ এর দিকে।

খুড়ো বুড়িকে আজ থেকে প্রায় ২ বছর আগে থেকে চিনে ফারহাজ এর।

💞💞💞
তিনি হঠাৎ করেই রাস্তায় অসুস্হ হয়ে পড়েছিলেন সেদিন ফারহাজ তাকে সাহায্য করে।
কিন্তু যখন শুনে তিনি একেবারে একা থাকেন। প্রচন্ড মায়া হয় ফারহাজ এর। তারপর থেকে প্রায় সময় পেলেই ফারহাজ খুড়ো ঠাম্মাম এর সাথে সময় কাটাতে চলে যায় তার বাড়ি। খুড়ো বুড়িও ফারহাজ কে নিজের নাতির মতো ভালোবাসা।

ফারহাজ একটা শয়তানি হাঁসি দিয়ে বলে উঠে—
এত্তো বড় সাহস আমার ঠাম্মাম এর গাছের আম এই পুচকি মেয়ে চুরি করে দাঁড়াও দেখাচ্ছি মজা,!

ঠাম্মামঃ হুম হুম দে দে একেবারে উচিৎ শিক্ষা দে।

ফারহাজ ঠাম্মার কে জড়িয়ে বলে উঠে–
তুমি কোনো চিন্তা করোনা। তুমি এখন সবকিছু আমার উপর ছেড়ে নিশ্চিন্তে বাড়ি যাও। রুপ তোমাকে ছেড়ে দিয়ে আসবে।

রুপঃ আমি?

ফারহাজঃ হুম যাও সাবধানে পৌছে দিয়ে আসবে ঠাম্মাম কে!।

খুড়ো বুড়ি ফারহাজ এর মাথায় হাত বুলিয়ে রুপ এর সাথে চলে যায়।

খুড়ো বুড়ি চলে যাওয়ার সাথে সাথেই ফারহাজ ফিহার দিকে তাঁকায় ফিহা শুকনো ঢুক গিলল।

তার ছোট্ট হার্টে জোড়ে জোড়ে ব্রিট করছি।

এই লাটসাহেব এর কাছ থেকে আজকে আর বেঁচে বাড়ি ফিরতে পারবেনা ফিহা তা সে বুঝে গিয়েছে।

ফারহাজ নিজের কেবিনের টেবিলে একটা স্রিং বল ঘুড়াতে ঘুড়াতে ফিহার দিকে প্রশ্ন ছুড়ে মারে—
তা পুচকি ঝগড়ুটে কবে থেকে আম চুরনি হলো?
তা যাই হোক চুরি যখন করেছো ই এখন কি শাস্তি দেওয়া যায় বলো তো?

ফিহা ঃ চুরনি তাও আমি এতো বড় অপবাদ!
সামান্য একটু আম খেতে ইচ্ছে করছিলো তাই বন্ধুরা সবাই মিলে!



।, 💞💞💞
ফিহাকে বলতে না দিয়ে ফারহাজ বলে উঠে–আমি জানতে চাইনি তোমার সাথে আর কে কে ছিলো।
যখন তুমি একাই ধরা পড়েছে ইটস মিন ইউ আর আ ক্রিমিনাল।

ফারহাজ কিছুটা ভাবার ভজ্ঞিমায় বলে উঠে—

হুম এখন তোমার মতো ক্রিমিনাল কে আর বাইরে ঘুড়তে দাওয়া যাবেনা কি জানি আবার কার গাছের
টমেটো শসা, আলু, মরিচ, পেয়াজ চুরি করো নাহ নাহ বাবা এতো রিস্ক নেওয়া মোটেও ঠিক হবেনা।

ফিহা কাঁদুকাঁদু ফেস করে বলে উঠে—

শেষমেষ আমাকে ক্রিমিনাল বানিয়ে ছাড়লেন।
আমি কারো গাছের দিকে চোখ তুলেও তাঁকাবো নাহ। আমাকে ছেড়ে দিন। আর ইরিপু যদি শুনে না তার ফিহা রানিকে আপনি জেলে পুড়ে দিয়েছেন দেখবেন আপনাকে আর বিয়েই করবেনাহ।

ফারহাজ— ওহ আচ্ছা তাইনা? ঠিক আছে অইটা আমার আর ইরির ব্যাপার সেইটা নিয়ে নাহ তোমাকে মাথা ঘামাতে হবেনা পুচকি!

ফিহা বলে উঠে*—
আমার মামানি আর ভালো বাবা( রিক ও রিহা)
আছে ওরা যদি শুনে নাহ আপনাকে দেখে নিবে।

ফারহাজ ফিহার দিকে ঝুকে ফিহার চোখের দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠে—
ওহ আচ্ছা এইটুকু মেয়ে এই ফারহাজ মির্জাকে ভয় দেখাও হ্যা?

ফারহাজ ফিহার চোখে যেনো হারিয়ে গেলো। এই চোখ বড্ড চেনা লাগছে আগেও সে এই চোখ দেখেছে। এই সেই মনি খুব পরিচিত!

ফারহাজ এর চোখের দিকে তাঁকিয়ে ফিহা বুক টা ধুক করে উঠে–

ব্রাউন মনিওয়ালাযুক্ত ফারহাজ চোখ টা রাগে কেমন যেনো জল জল করছে। মনে হয় এখুনি টুপ করে জল গড়িয়ে পড়বে।

ফিহা আরেকটু এগিয়ে যায় ফারহাজ এর দিকে একেবারে নির্ভয়ে।

সে ফারহাজ চোখের জলটুকু মুছে দেয়।

🥀🥀🥀🥀🥀🥀

ফিহা ঃ কি হয়েছে আপনার?

ফারহাজঃ৷ কে তুমি?

ফিহাঃ মানে?

ফারহাজ বলে উঠে–
কিছু নাহ চলো তোমাকে বাড়ি পৌছে দেই!

।।।।।।। 💞💞💞

ইরিনার ফোনটা বেজে উঠে
সে ফোনটার দিকে তাঁকিয়ে ফোনটা একেবারে আচার মেড়ে ফেলে দেয়।

সে জানে ফোন ভেজ্ঞে কিচ্ছু হবেনা। সে ঠিকই চলে আসবে।
ইরিনার জীবন কে নরকে পরিনত করতে।

ইরিনা ফারহাজ কে ফোন করে কিন্তু ফারহাজ তার ফোন ধরছেনা পর্যন্ত। আজকাল ফারহাজ এর কি হয়েছে কিছুই বুঝেনা ইরিনা।

সাম্নের সপ্তাহে এন্গেজমেন্ট৷ সে কি করবে কিচ্ছু ভাবতে পারছেনা।

ইরিনা দরজা টা বন্ধ করে একটা ঘুমের পিল টা খেয়ে নেয়। এখন একটু হলেও ঘুম দরকার।

ইশিকা রুমের চারদিকে হেটে যাচ্ছে। আর হাত মুচড়াচ্ছে।
নিলয় ইশিকার কাছে এসে বলে উঠে—কিরে আপাই তুই কখন এলি?

ইশিকা ঃ কেন এখন আমি কখন আসবো কখন থাকবো সেইটাও কি তোকে বলে যেতে হবে?

নিলয়ঃ নাহ রে আপাই আসলে আজ-কাল তো
তোকে বাড়িতে দেখাই যায়না.। আচ্ছা আপাই আজকে যখন তুই আছিস ই চলনা আমরা দুই ভাই বোন মিলে কিছুক্ষন গল্প করি।

ইশিকাঃ দেখ এম্নিতেই আমার মাথা গরম আছে। আমার কিচ্ছু ভালো লাগছেনা যাহ প্লিয।

নিলয় কিছুটা ইতস্তত হয়ে বলে—
সত্যি আপাই তুই কিকরম জানি চেঞ্জ হয়ে গিয়েছিস।
আগে আমার সাথে কত গল্প করতি হাঁসি মজা সবকিছু করতি কিন্তু এখন!

নিলয় আর কিছু না বলে চলে গেলো।

ইশিকা যেনো কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারলো নাহ।

এদিকে,,

গাড়িতে ফারহাজ ও ফিহা দুজনেই চুপ করে আছে।

কারো মুখেই কোনো কথা নেই। কেন যেনো হঠাৎ করেই দুজনেই চুপ হয়ে গেলো।

ফারহাজ এর দৃষ্টিতে গাড়ির দিকে তাঁকিয়ে আছে।

ফিহা বাইরে জানালার দিকে তাঁকিয়ে আছে।

সে হঠাৎ ই চিৎকার করে উঠে—

গাড়ি থামান লাটসাহেব!

ফিহার কথা ফারহাজ জোড়ে ব্রেক কোষে।

ফারহাজ ঃ কি হয়েছে?

ফিহা বাইরের দিকে ইশারা করে বলে উঠে—

আমি হাওয়াই মিঠাই খাবো!

ফারহাজ বিরক্তিমাখা কন্ঠে বলে উঠে–
কি তুমি এখন হাওয়াই মিঠাই খাবে। নো ওয়ে।

ফিহা ঃ প্লিয লাটসাহেব চলুন নাহ প্লিয আমার অনেক ফেভারিট !

(ঠোট ফুলিয়ে)

ফারহাজ আর কি করবে সে অগত্যা রাজি হয়ে গেলো।

সে ফিহাকে নিয়ে হাওয়াই মিঠাই ওয়ালার কাছে গেলো।
এবং ফিহাকে হাওয়াই মিঠাই কিনে দিলো।

ফিহা এতোগুলো হাওয়াই মিঠাই পেয়ে খুশিতে হাতেতালি দিতে লাগলো।

সে খুব খুশি তা তার চোখ-মুখেই বুঝা যাচ্ছে।

ফারহাজ ফিহার কান্ড দেখে মুচকি মুচকি হাঁসছে।

ফারহাজ ঃ কি পুচকি তুমি খুশি??

ফিহা ঃ এত্তো গুলো

( হাত বাড়িয়ে দেখায়)

ফিহা খেয়াল করে ফারহাজ হাঁসলে তার ডান গালের সাইডে হাল্কা হাল্কা টোল পড়ে।

যা তার হাঁসিকে আরো আকর্ষনিয় করে তুলে।

ফিহা ঠোট ফুলিয়ে বলে উঠে—এইযে লাটসাহেব আপনার দেখি গালে টোল পড়ে।

ফারহাজ ঃ তো?
( ভ্রু কুচকে)

ফিহা হাত মুচড়া মুচড়াতে বলে উঠে—
আমি শুনেছি যাদের গালে টোল পড়ে তারা নাকি কিউট তার মানে আপনি কিউট।
আমার গালে টোল পড়েনা আমি কিউট নাহ।

ফারহাজ ফিহার কাছে হাটু গেড়ে বলে উঠে—
কে বলেছে তুমি কিউট নাহ তুমিও অনেক কিউট বুজেছো পুচকি?

( এই বলে ফিহার গাল টেনে দেয়)

ফিহা ও ফারহাজ একসাথেই হেঁসে দেয়।

এক অদ্ভুদ টানে তারা বাঁধা পড়ছে তা তারা নিজেও জানেনা। কি হবে এর ভবিষ্যৎ?


।চলবে কি?

#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব – ১২
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফারহাজ ফিহার বাড়ির সামনে গাড়িটা রাখে। ফিহা এখনো হাওয়াই মিঠাই খেয়ে যাচ্ছে। ফারহাজ বলে উঠে– চলে এসেছি! ফিহা ফারহাজ এর দিকে তাঁকিয়ে বলে- আপনাকে এত্তো গুলো ধন্যবাদ! ফারহাজ হেঁসে বলে উঠে– ইউ আর মোস্ট ওয়েলকাম। ফিহা হাওয়াই মিঠাই খেতে খেতে বাড়ির দিকে চলে যায়। ফারহাজ ফিহার চলে যাওয়ার পানে কিছুক্ষন তাঁকিয়ে থাকে। ফিহা যেতে গিয়েও আবার থেমে যায় সে ফারহাজ এর দিকে দৌড়ে চলে গিয়ে বলে উঠে– একটা কথা বলি! আপনি একটু ভালো লাটসাহেব কিন্তু বেশি নাহ হ্যা একটু এই বলো ফিহা দৌড়ে চলে যায়।
মেয়েটা সত্যি একটা বাচ্ছা! এই হাওয়াই মিঠাইতেই কত্ত খুশি সে। আচ্ছা ইরিনার সাথে কি একবার দেখা করে আসবে সে। ইরিনা একবার ফোন করেছিলো বাট সে ফিহার সাথে ছিলো বিধায় ধরতে পারেনি। ফারহাজ মনে মনে কিছুক্ষন কথা গুলো ভাবলো। নাহ একবার ইরিনার সাথে কথা বলার দরকার। তখনি তার ফোন বেজে উঠে। দাদি ফোন করেছে। ফারহাজ ফোনটা রিসিভ করে বলে উঠে– হুম দাদি বলো!
দাদিঃ কোথায় তুমি? দাদুভাই?

ফারহাজঃ এই তো দাদি ডিউটি শেষ করে বাড়ি ফিরছি।

দাদিঃ তাড়াতাড়ি আসো!
আজকে কিছু কিনাকাটা করতে হবে। আজকে কিন্তু তোমাকে আমাদের সাথে যেতে হবে। ইরি দিদিভাই ও আসছে।
তুমি আর ইরি দিদিভাই শুধু শপিং গিয়ে দুজনের আংটির মাপ দিয়ে আসবে।
আর আমরা বড়রা গিয়ে নিজেদের মতো কেনাকাটা করে আসবো

ফারহাজঃ ঠিক আছে দাদি আমি আসছি!

এই বলে ফারহাজ ফোনটা কেটে দেয়। আজকে তাকে শপিং এ যেতে হবে।

ইরিনার সাথে তো শপিং এই দেখা হবে তখন কথা বলে নিবে।

ফিহা হাওয়াই মিঠাই নিজেও খাচ্ছে তার পামকিনকেও খাওয়াচ্ছে।

তখনি ফিহার মা এসে বলে উঠে–
কিরে ফিহা তুই এইখানে?
চল তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নেহ।

ফিহাঃ কোথায় যাবো?

ফিহার মাঃ কোথায় আবার?
তোর ইরিপুর এন্গেজমেন্ট এর শপিং এ!

ফিহা খুশি হয়ে বলে উঠে– সত্যি আমরা শপিং যাবো?

ফিহার মাঃ হুম!

রিহা তার মেয়ের ঘরে এসে দেখে ইরিনা এখনো ঘুমাচ্ছে।

রিহাঃ দেখেছো মেয়ের কান্ড?
আমি বলেছিলাম আজকে শপিং এ যাবো আর উনি ঘুমাচ্ছেন।

এই ইরিনা উঠ উঠ!

ইরিনা কোনোরকম উঠে বলে উঠে–
কি হয়েছে মা? একটু ঘুমাতেও কি দিবেনা নাকি?

রিহা ঃ তুই উঠবি? হুম ফারহাজ রা কিন্তু আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।

ফারহাজ এর নাম শুনে ইরিনা ধড়ফড়িয়ে উঠে পড়ে।

ইরিনাঃ ফারহাজ ও আসবে শপিং এ!

রিহাঃ আসবেনা? তোদের দুজনের আংটির মাপ নিতে হবে তো! তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে নে।

এই বলে মিসেস রিহা চলে যায়।

এদিকে ইরিনা ভাবতে থাকে,,

এইটাই সুযোগ ফারহাজ কে সব বলে দিতে হবে।
ফারহাজ ই তাকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারে।

এদিকে,,

ফারহাজ নিজের ঘরে এসে ফ্রেশ হয়ে নেয়।

তার চুলগুলো জেল দিয়ে সেট করে নেয়!

ফারহাজ এর চোখে আবারও ফিহার সে মায়াবী চোখ ভেসে উঠে। ফারহাজ এর মনে হচ্ছে আগেও সেই এই চোখজোড়া দেখেছে। হ্যা হ্যা খুবই পরিচিত। নীলমনি বিশিষ্ঠ ফিহার মায়াবী চোখ জোড়া। ফারহাজ আর কিছু না ভেবে
হাতে পড়ে নেয় ব্রেন্ডেড ওয়াচ তখনি নিলয় ঘরে ঢুকতে ঢুকতে বলে উঠে–

আজকে কতজনকে মেরে ফেলার প্ল্যান করেছো ভাইয়া?

ফারহাজ নিলয়ের দিকে ভ্রু কুচকে বলে উঠে–
মানে?

নিলয়ঃ মানে টা তো খুবই সোজা!
এমনিতেও তোমাকে দেখে মেয়েদের হার্ট ব্রিট বেড়ে যায়। এতো স্টাইল করো নাহ। মেয়েরা টাস্কি খেয়ে পড়ে যাবে।

ফারহাজ নিলয়ের পিঠে একটা কিল বসিয়ে বলে উঠে–
তাইনা?? বড় ভাইয়ের সাথে মজা করা হচ্ছে?

নিলয়ঃ নাহ ভাই আমি সত্যি সিরিয়াস।

ফারহাজঃ চল এখন যথেষ্ট ফাজলামি হয়েছে আমাদের শপিং এ যেতে হবে।

।।।।

রাহাত ( ফারহাজ এর কাকা) অফিসের ফাই গুলো নিয়ে মিঃ রাইজাদা ( ফারহাজ এর দাদুন) এর সাথে ডিসকাস করছেন।

মিঃ রাইজাদাঃ কম্পানি দিনের পর দিন লসের দিকেই যাচ্ছে।
অথচ আমরা কিছুই জানিনা!

রাহাতঃ বাবা! ভাইয়াকে ( ফারহাজ এর বাবা)আমি
এই বিষয়ে বলেছিলাম। কিন্তু ভাইয়ার কোনো হেলদোল নেই। মনে হয় সব চিন্তা শুধু আমার আর তোমার। তার বিসনেজ নিয়ে কোনো চিন্তাই নেই।

মিঃ রাইজাদা গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠে–
একটা মিটিং ফিক্সড করো। আর হ্যা রাইহানকেও(ফারহাজ এর বাবা) ফোন করে বলে দাও! কম্পানির এতো লস আর সবাই গাঁয়ে হাওয়া দিয়ে বেড়াচ্ছে।
আমাদের কিছু একটা উপায় বের করতেই হবে।
এমনিতেও সাম্নের সপ্তাহে আমাদের বাড়িতে এন্গেজমেন্ট এর অনুষ্ঠান।

রাহাত বলে উঠে–
ঠিক আছে বাবা! আমি এখুনি ভাইয়াকে ফোন করছি।

তানহা( ফারহাজ এর কাকি) তিনি ইশিকার কাছে গিয়ে দেখে ইশিকা কারো সাথে ফোনে কথা বলছে।
নিজের মাকে দেখে তাড়াতাড়ি ফোনটা কেটে দেয়।

ইশিকাঃ কি হয়েছে বলো?

তানহাঃ এন্গেজমেন্ট এর শপিং আমরা সবাই যাচ্ছি তুই যাবিনা??

ইশিকাঃ আমার ভালো লাগেনা!

তানহাঃ এইসব কি বলছিস তুই?
আগে তোর শপিং করতে কত্ত ভালো লাগতো। আর তোর ভাইয়ার বিয়ে লেগেছে আর তুই বলছিস যাবিনা। চল নাহ মা একটু ভালো লাগবে তোর!

ইশিকাঃ মা প্লিয আমাকে ডিস্টার্ব করো নাহ তো!

তানহা তার মেয়ের মতিগতি কিছুই বুঝতে পারেনা।

কেমন যেনো মনমরা হয়ে গিয়েছে।

ফারহাজ রা শপিং মলে পৌছে গেছে।

ফারহাজ গাড়িটা পার্কিং জোনে রাখে।

ফারহাজ এর মা, দাদি আর কাকি ও নিলয় শপিং মলের দিকে যায়।
সেখানে রিহা, ইরিনা ফিহার মা ও ফিহা দাঁড়িয়ে আছে।

ফিহা ও ফিহার মা কে দেখে ফারহাজ এর দাদি কিছুটা মুখ ছিটকায়।

এদের এইখানে একদম ই সে আশা করেনি! তার ভাষ্যমতে আশ্রতরা আশ্রিতদের মতোই থাকবে। বাড়ির লোক কেন হতে যাবে।

ফিহাকে দেখে নিলয় কিছুটা খুশি হয়।

মিসেস প্রিয়াঃ আচ্ছা রিহা ভাবি! আমরা তো সবাই ফ্যামিলি মিলে শপিং এ এসেছি। তা বাইরের লোকেদের কেন এনেছেন?

ফারহাজ এর দাদিঃ তাইতো

বাইরের লোকেদের বলতে মিসেস প্রিয়া ফিহাও ফিহার মা কে বুঝিয়েছেন তা বুঝতে বাকি রইলো নাহ সবার!

ফিহা কমোড়ে হাত দিয়ে কিছু বলবে তার আগেই ফিহার মা ফিহাকে ইশারা করে চুপ করে থাকতে বলে।

ফিহা মুখ ফুলিয়ে ফেলে।

তখনি ফারহাজ গাড়ির চাবিটা হাতে নিয়ে এসে বলে উঠে–
কাদের তুমি বাইরের লোক বলছো?
আমি যতটুকু জানি। ফিহা ও ফাতেমা আন্টি ইরিনাদের আপনজন!

ইরিনাঃ হ্যা ফারহাজ ঠিকই বলছে। ফিহা কিংবা আন্টি বাইরের লোক নাহ।
আমাদের আপনজন।

ফারহাজ ফিহার দিকে তাঁকায়।
ফিহার মুখে ফুটে উঠে হাঁসি। মিসেস প্রিয়া সবার অগচড়ে বলে উঠে-যত্তসব ঢং।

ফারহাজ এর দাদি ইরিনার কাছে গিয়ে বলে উঠে–
তা আমার ইরি দিদিভাই কেমন আছো?

ইরিনাঃ এইতো দাদি ভালো আছে তুমি কেমন আছো?

দাদিঃ ভালো।

নিলয় ইরিনার কাছে গিয়ে বলে উঠে–
ইরিপু তুমি তোমার একমাত্র হ্যান্ডসাম দেবরকে একেবারেই ভুলে গিয়েছো!

ইরিঃ নাহ আমি একটুও ভুলেনি আমার দেবর কে!

রিহাঃ আচ্ছা এখন কি এইখানেই সবাই কথা বলবে নাকি ভিতরেও যাবে কতকিছু কেনাকাটা করতে হবে।

সবাই ভিতরে গিয়ে শপিং করছে।

ফারহাজ, ফিহা, ইরিনা ও নিলয় অন্যদিকে আছে।

ফারহাজ ও ইরিনা নিজেদের মধ্যে কিছু কথা বলছে।
নিলয় শুধু বকবক করে মাথা খাচ্ছে ফিহার। ফিহার নিলয়কে প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে। ফিহার ইচ্ছে করছে নিলয়ের মুখে কশটিপ লাগিয়ে দিতে।

ফারহাজ খেয়াল করছে ফিহা প্রচন্ড বিরক্ত ফিল করছে।

ইরিনা ভাবছে এই সুযোগ ফারহাজ কে সবকিছু বলে দেওয়ার!

ইরিনা ফারহাজ কে কিছু বলতে যাবে তখনি দেখে ফারহাজ নেই।

ফারহাজ ফিহাদের কাছে গিয়ে বলে উঠে–

আচ্ছা নিলয় তুই একটু আমার সাথে আয়!

নিলয়ঃ আমি একটু পরে আসি লিটেল প্রিন্সসয়ের সাথে একটু কথা বলে নেই।

ফারহাজঃ নাহ তুই আয় আমার সাথে।

নিলয় একবার ফিহার দিকে তাঁকিয়ে বলে–
কি গো বেয়ান সাহেবা! দেখেছো তোমার দুলাভাই টা কিরকম করে!

ফিহাঃ ডাকছে যখন যান তো! এমনিতও আপনি প্রচন্ড বকবক করেন।

ফিহার কথা শুনে ফারহাজ হেঁসে দেয়।

নিলয়ঃ অ্যা?

ফিহাঃ অ্যা নয় হ্যা!


।।
চলবে!