পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ পর্ব-১০

0
5519

#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব -১০
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
নিলয় ফারহাজ এর মাথাটা একেবারে ঝালাপালা করে দিয়েছে। সারা রাস্তায় শুধু ফিহা ফিহা আর ফিহা করেই যাচ্ছে। নিলয় কিছুটা খুশি হয়ে বলে উঠে– লিটেল প্রিন্সেস তাহলে ইরিপুর বাড়ি থাকে। আর ইরিপুর বোনের মতো তার মানে তো এক হিসেবে আমার বিয়ান হয় লিটেল প্রিন্সেস।
ফারহাজ এইবার জোড়ে ব্রেক কষে।
নিলয় বলে উঠলো– কি হয়েছে ভাই?
ফারহাজ কিছুটা গম্ভির সুরে বলে উঠে– তুই নাম
নিলয় বলে– কিন্তু কেন? ফারহাজ সিট বেল্ট টা খুলে নিলয়ের দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠে– আর কিছু পথ হাটলেই আমাদের বাড়ি তুই এখন বরং হেটেই যা। আমাকে এখুনি থানায় যেতে হবে এমনিতেই আমি অনেক লেট! নিলয় আর কি করবে বেচারা সে নেমে পড়লো।
ফারহাজ তার থানার দিকে গাড়িটা ঘুড়িয়ে নিলো।
ইশিকা বাড়িতে ঢুকার সাথে সাথেই দেখতে পায়
বাড়িতে শপিং ব্যাগের ছড়াছড়ি।
ইশিকা তার মা তানহার কাছে এসে বলে উঠে–
মা এইসব কি হচ্ছে এইখানে??

তানহাঃ বিয়ে বাড়ি লেগেছে।

ইশিকাঃ বিয়ে কার বিয়ে?

মিসেস প্রিয়া( ফারহাজ এর মা)ঃ বাহ এই বাড়ির ছেলের সামনে এন্গেজমেন্ট বিয়ে আর বাড়ির এক মেয়ে তা জানেই নাহ। ইরিনা ফিরেছে বিদেশ থেকে

ইশিকাঃ ইরিনা আপু আসলে ভাইয়ার সাথে ইরিনা আপুর বিয়ে কথা ছিলো।
এখন ইরিনা আপু কি দেশে নাকি বিদেশে তা আমি কীভাবে জানবো?

দাদি ইশিকাকে দেখে বলে উঠেন—আরে এ আমি কাকে দেখছি আমার ইশিকা দিদিভাই দেখি।

ইশিকা মিসেস ইরার কাছে গিয়ে বলে উঠেন–
দেখো দাদি সবসময় কিন্তু আমার এইসব একদম ভালো লাগেনা।

মিসেস প্রিয়া( ফারহাজ এর মা) বলে উঠেন–
তা তুই এইসময় বাড়িতে কি করছিস?

মিসেস তানহা বলে উঠে-কেন আমার মেয়ে বাড়িতে থাকলে তোমার কি সমস্যা?

মিসেস প্রিয়াঃ সমস্যা কেন হবে? তোর মেয়েকে তো দেখাই যায়না সারাদিন নাইট-ক্লাব নিয়েই থাকে।
আজকে হঠাৎ বাড়িতে তাই একটু সংদেহ লাগছে আর কি।

ইশিকা তার মায়ের কাছে গিয়ে বলে উঠে– মা আমার সাথে উপরে চলো! একটু কথা আছে এদের সাথে কথা বলাই বেকার।

তানহাঃ ঠিক আছে চল!

ইশিকা ও তানহা উপরের ঘরের দিকে চলে গেলো।

মিসেস প্রিয়া মুখটা বেকা করে বলো উঠে–

কেমন অসভ্য মেয়ে একটা!

মিসেস ইরা বলে উঠে–
বউমা তুমি অইদিকে না তাঁকিয়ে তাড়াতাড়ি দেখো কি কি শপিং করা হয়েছে। আমাদের তো আবারোও
যেতে হবে শপিং এ বেশি সময় নেই হাতে সাম্নের সপ্তাহে এন্গেজমেন্ট!

মিসেস প্রিয়াঃ হুম অনেক কাজ বাঁকি!

তখনি নিলয় এসে বলে উঠে—
আমি ও কিন্তু শপিং এ যাবো বলে দিলাম!

মিসেস প্রিয়াঃ তুই গিয়ে কি করবি?

মিসেস ইরা মুচকি হেঁসে বলে উঠে-
হ্যা আমাদের নিলয় দাদুভাই ও যাবে তার হবু ভাবির জন্য শপিং করতে ”

নিলয় তার দাদির কাছে বসে কিছুটা ফিসফিস করে বলে উঠে–
নিলয়,ঃ আজ্ঞে নাহ!
অন্য আরেকজন এর জন্য!

ইরাঃ কে তোমার বউ এর জন্য?
( দাদুভাই)

নিলয়ঃ যাও তো দাদি আমি এখন বাচ্ছা মানুষ আমার বউ কোথা থেকে আসবে?

ইরা নিলয়ের দিকে সংদেহের দৃষ্টিতে তাঁকায়।

নিলয় কোনোরকম মুচকি হাঁসি দিয়ে কেটে পড়ে।

মিসেস প্রিয়া ইরার দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠে—
মা ও কি বললো? আপনাকে?

ইরা ঃ তেমন কিছুনা তুমি বরং তাড়াতাড়ি লিষ্ট টা তৈরি করো।

ফারহাজ গম্ভির মুখে অফিসে ঢুকে তাকে দেখে সবাই উঠে সালাম দেয়।

ফারহাজ নিজের চেঞ্জিং রুমে গিয়ে নিজের পুলিশের ইউনিফর্ম টা পড়ে নেয়।

ফারহাজ নিজের কেবিং এ বসার সাথে সাথেই

রুপ তড়ঘড়ি করে ফারহাজ এর কাছে এসে বলে উঠে—

স্যার অই মার্ডারের ব্যাপারে যা সকল ইনফরমেশন আপনি চেয়েছিলেন তা রেডি!
কিন্তু ক্রিমিনাল টা কীভাবে কি করছে সেইটাই বুঝতে পারছিনা।
আসলে কোন পথ দিয়ে কোন উপায় অবলম্বন করে
মার্ডার করছে সেইটাই বুঝতে পারছিনা।

ফারহাজ কলম টা ঘুড়াতে ঘুড়াতে বলে উঠে—

আচ্ছা রুপ একটা প্রশ্নের উত্তর দাও তো
ফিজিক্স এর মতো কঠিন বিষয়ের মধ্যে সব থেকে বেশি কোনটা বের করা কঠিন হয়ে উঠে?

রুপ কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে বলে উঠে–
কোনো বস্তুর
গতিপথ নির্নয়!

ফারহাজ কলম টা রেখে বলে উঠে–

হুম! আর এই গতিপথ নির্নয়ের জন্য আমরা কোন পথ অবলম্বন করি?

রুপঃ এখন কি আমি ফিজিক্স এর টেস্ট দিবো?
ফিজিক্স এ কাঁচা ছিলাম বলেই তো এখন আমি পুলিশ
(মনে মনে)

ফারহাজ ঃ উম!
সুত্রের সাহায্যে!

রুপঃ হুম স্যার সুত্রের সাহায্যে!

ফারহাজ বলে উঠে–

আমাদেরও মার্ডারকারীর সব খুন করার পদ্বতি গতিপথ
বের করার জন্য আমাদের নিজেদের কিছু সুত্র প্রয়োগ করতে হবে বুঝেছো?

(লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)

রুপ মাথা নাড়ায়।

ফারহাজ ফাইল গুলো হাতে নিয়ে
মনোযোগ সহকারে তা পর্যবেক্ষন করা শুরু করে।

🥀🥀🥀🥀🥀

ফিহা, সিমি, টিউপ আর পটকা স্কুল ব্যাগ কাঁধে ঝুলিয়ে রেখেছে

টিউপ বলে উঠে—
আমার আজকে অনেক বোরিং লাগছে!

সিমিঃ এই চল তোরা আমরা গিয়ে কানামাছি খেলি!

ফিহা ঃ হ্যা চল চল খেলি গুড আই

পটকা ঃ দুরর আমরা কি পিচ্ছি পোলাপান নাকি?
আমরা বড় বাচ্ছা!

ফিহা ঃ কানামাছি ভালো খেলা!

পটকাঃ এইযে তোর এইসব স্বভাব এর জন্য তোর লাটসাহেব তোকে পুচকি বলে ডাকে।

ফিহা মুখ ফুলিয়ে বলে উঠে—

ঠিক আছে তুই ই একটা ভালো আইডিয়া দে!

পটকাঃ আমরা অইযে খুড়ো বুড়ি আছে না তার গাছের আম চুরি করে খাবো?
উনার গাছে একেবারে কাঁচা কাঁচা আম ধরেছে
মরিচ গুড়া দিয়ে একেবারে খেতে সেই হবে।

পটকার কথা শুনে টিউপ এর জিবে পানি চলে আসছে।

সিমিঃ এই নাহ নাহ আমাদের এইসব চুরি করা ঠিক হবেনা।

সিমিকে থামিয়ে ফিহা পটকার কাধে একটা চাপড় দিয়ে বলে উঠে–

মটু অনেকদিন পরে একটা ভালো আইডিয়া বের করেছে হুম তাই হবে আমরা অই খুড়ো বুড়ির গাছের আম আজকে খাবো।

পটকা ও টিউপ ও সাই দেয় তার সাথে।

সিমি, ফিহা, পটকা ও টিউপ
লুকিয়ে খুড়ো বুড়ির বাগানে ঢুকে।

তার পাশে একটি বড় বাড়ি আছে সেখানে একজন বয়স্ক মহিলা থাকে। তাকে সবাই খুড়ো বুড়ি নামেই চিনে। তার স্বামী নেই। সন্তান রাও আজকাল তার খোজ- খবর রাখে নাহ।

ফিহারা বাগানে ঢুকে দেখে
খুড়ো বুড়ি এক পাশে বসে ঝিমচ্ছে।

পটকাঃ চল চল এই সুযোগ হাতছাড়া করা ঠিক হবেনা!

পটকার কথা অনুযায়ী সবাই গাছের কাছে যায়।

টিউপঃ গাছে কি উঠবে??

পটকাঃ কে আবার আমাদের ফিহা!

ফিহা ঃ কিহ? আমি একা পারবো নাহ পরে যদি ধরা পড়ে যাই তখন? ( আস্তে আস্তে বলে)

সিমিঃ কিন্তু আমাদের মধ্যে তুই ছাড়া তো আর কেউ গাছে উঠতে পারেনা!

পটকাঃ তুই চিন্তা করিস নাহ ফিহা আমরা আছি তো!

ফিহাঃ নাহ বাবাহ আমি পারবো নাহ পরে আমি ধরা পড়ে যাবো।

পটকাঃ তার মানে তোর পুলিশ লাটসাহেব ঠিকই বলেছে তুই পুচকি!

ফিহাঃ আমি বড় হয়ে গিয়েছি বুঝেছিস( রেগে)
দাড়া তোদের প্রমান দেই!

ফিহা গাছের উপরে উঠে একের পর এক আম পেড়ে যাচ্ছে আর সিমি পটকা টিউপ তা কুড়িয়ে যাচ্ছে।

তখনি খুড়ো বুড়ির ঘুম ভেজ্ঞে যায় আর এই দৃশ্য তার চোখে পড়ে।

খুড়ো বুড়িঃ কে রে এত্তো বড় সাহস আমার গাছের আম চুড়ি করা

সে লাঠি দিয়ে দৌড় দেয়।

পটকারা লাঠির বাড়ির ভয়ে দেয় এক দৌড়।

বেচারি ফিহা গাছে আটকে গেছে।

খুড়ো বুড়িঃ কত্ত বড় সাহস আমার গাছের আম চুড়ি করা। পালিয়ে যাবে কোথায়?

তখনি তার নজর ফিহার দিকে যায়।

খুড়ো বুড়িঃ এইতো একটা পুচকি মেয়ে এখন একেই আমি পুলিশে দিবো। আমার ফারহাজ বাবা পুলিশের অফিসার ওকে একেবারে জেলে ঢুকিয়ে দিবে।

ফারহাজ এর নাম শুনে ভয়ে হাত-পা কাঁপাকাঁপি শুরু হয়ে যায়।

ফিহাঃ এইরেএএএ এখন আবার সেই লাটসাহেব এর কবলে পড়তে হবে।

পটকাদের বাচ্ছারা তোদের জন্য আবার আমি ফেঁসে গেলাম তোদের সবকয়টাকে দেখে নিবো।

ফারহাজ ইম্পোর্টেন্ট কিছু কাজ করছিলো নিজের কেবিনে তখনি





।চলবে কি?
(কেমন হয়েছে জানাবেন কিন্তু)