পবিত্র বন্ধনে আবদ্ধ পর্ব-১+২

0
5703

#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব- ১
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)

১.
ফারহাজ বাড়িতে প্রবেশ এর সাথে সাথেই সার্ভেন্টদের ভয়ে হাত-পা কাঁপাকাঁপা শুরু হয়ে গেলো।কেননা ফারহাজ ভয়ং কর রেগে আছে। রাগ হওয়াটাই স্বাভাবিক ১৪ বছরের পুচকি মেয়ে ফারহাজ মির্জাকে সকলের সামনে অপমান করেছে।
যাকে দেখলে বড় বড় মাফিয়ারাও ভয়ে কেপে উঠে।
ফারহাজ এর ইচ্ছে করছে সবকিছু ভেজ্ঞে চুড়ে শেষ করে দিতে অই পুচকি একটা মেয়ে কিনা এই ফারহাজ মির্জাকে সকালের সামনে অপমান করলো। ভাবতেই অবাক লাগছে ফারহাজ এর। সে এক লাথি দিয়ে ফুলের বাজ টা ভেজ্ঞে ফেললো। সব সার্ভেন্টসরা কেঁপে উঠলো।
ফারহাজ গটগট করে উপরে চলে গেলো।

একজন সার্ভেন্ট বলে উঠলো–
তাড়াতাড়ি বড় সাহেবা কে ফোন কর আর তাড়াতাড়ি আসতে বল সবাইকে।
ছোট সাহেব আজকে অনেক রেগে আছে।

আরেকজন বলে উঠে- ঠিক বলেছিস।

এদিকে,,,,
ফারহাজ নিজের ঘরে গিয়ে সবকিছু ভেজ্ঞে ফেলছে।
এইটাই ফারহাজ এর স্বভাব। সে প্রচন্ড রেগে থাকলে তার রাগের ক্ষোভ তার ঘরের উপর দিয়েই যায়।

আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

মির্জা বাড়ির সকলে এসে দেখে উপর থেকে জোড়ে পড়ার কিছু আওয়াজ আসছে।

মিসেস ইরা সার্ভেন্ট এর দিকে তাঁকিয়ে বলে—
ফারহাজ দাদু্ভাই এসেছে??

সবাই হ্যা সুচক জবাব দেয়।

ফারহাজ এর ছোট কাকি বলে উঠে–
তার মানে এইটা ফারহাজ এর কান্ড।
উপরে ফারহাজ ই সব ভাংচুর করছে।

ফারহাজ এর মা মিসেস প্রিয়া বলে উঠে—
এমনি এমনি তো আমার ছেলে রেগে থাকেনা ছোট নিশ্চই কোনো কারন আছে তাইনা???

ফারহাজ এর কাকি ভেংচি কাটে।

মিসেস প্রিয়াঃ মা চলুন। দেখি আমার ছেলেটার আবার কি হয়েছে।

ইরাঃ হ্যা চলো। বউমা
দেখি ফারহাজ দাদুভাই এর আবার কি হয়েছে।

এদিকে ফারহাজ রুমের চারদিকে পাইচারি করে যাচ্ছে।

অই পুচকি মেয়েটাকে এই মুহুর্তে পেলে ফারহাজ যে কি করতো তা সে নিজেও জানেনা।

ফারহাজ এর দাদি কাকি আর মা

ফারহাজ এর রুমে এসে দেখে সবকিছু ভাংগে ফেলেছে। রুমটাও বেশ অগোছালো।

মিসেস প্রিয়া ফারহাজ এর কাছে গিয়ে বলে উঠে–
কি হয়েছে আমার ছেলেটার???
আমাকে বল।

ফারহাজ রাগে ফুশতে ফুশতে বলে উঠে—
মম ইউ কেন নট বিলেভ
একটা পুচকি মেয়ে এই ইন্সপেক্টর ফারহাজ মির্জা আজ রাস্তার সকলের সামনে অপমান করেছে।

ফ্ল্যাশব্যাক,,,

কাঁধে স্কুল ব্যাগ নিয়ে হেটে যাচ্ছে ফিহা তার বন্ধুদের সাথে। হাতে হাওয়াই মিঠাই।
হাওয়াই মিঠাই সে সবসময় খুব পছন্দ করে।

প্রতিদিন স্কুলে যাওয়ার পথে হাওয়াই মিঠাই তার লাগেই লাগে।

তখনি ফিহা খেয়াল করলো তার এক বন্ধু টিউপ গাছের নীচে বসে বসে কাঁদছে।

ফিহাঃ এই সিমি।

সিমিঃ কি হয়েছে তুই থেমে গেলি কেন??

ফিহাঃ অইটা টিউপ নাহ।

পটকাঃ আরে হ্যা এইটা তো আমাদের টিউপ।

ফিহাঃ বলদ টাই এইভাবে কাঁদছে কেন???

সিমিঃ আজকে স্কুলে না গিয়ে এইখানে করছে টা কী??

ফিহাঃ চলতো যাই।

ফিহা, পটকা আর সিমি টিউপ এর কাছে যায়।

ফিহাঃ কিরে টিউপ তুই এখানে কি করছিস?

টিউপ ফিহাদের দেখে আরো জোড়ে কেঁদে দেয়।

সিমিঃ এই বলদ থাম। খালি অ্যা অ্যা করেই যাচ্ছিস।
আর তুই এখানে? আমরা তোকে আজকে পেলাম ই নাহ।

সিমি, ফিহা, পটকা আর টিউপ ভালো ফ্রেন্ড
বলতে হলে তাদের একটা গ্যাং। সবাই সহপাঠি।
ক্লাস সেভেন এ পড়ে।

টিউপ একটু বোকা টাইপের তাই তাকে সবাই বলদ বলেই ডাকে।

টিউপঃ ফিহা তোরা এখানে??

ফিহাঃ কিন্তু তুই এইখানে কাঁদছিস কেন???

টিউপ কান্নার সুরে বলে উঠে—

জানিস আজকে টিভিতে দেখলাম
অনেক বড় বড় গায়কেরা অনেক মানুষের সামনে গাই। আমিও গাইতে চায়। তোরা তো জানিস আমি বড় হয়ে গায়ক হতে চাই।

কিন্তু মা বলেছে আমাদের তো টাকা নেই তাই নাকি
আমি গাইতে পারবো নাহ।

এই বলে টিউপ আরো জোড়ে কেঁদে দেয়।

ফিহা, পটকা আর সিমির একটুও ভালো লাগছেনা বন্ধুকে এইভাবে দেখে।

পটকাঃ এইভাবে কাঁদিস না দোস্ত। আচ্ছা আমি আমার ললিপপের থেকে তোকেও একটু দিবো নেহ।

এই বলে পটকা একটা ললিপপ নিজের মুখে ঢুকিয়ে নেয়।

টিউপঃ লাগবে না যাহ তোহ।

(কেঁদে কেঁদে)

সিমিঃ ফিহা তুই এখন কিছু একটা কর।

ফিহা কিছুক্ষন ভেবে বলে উঠে-
আইডিয়া।
টিউপ গান গাইবে। তাও সকলের সামনে।

সবাই একসাথে তাঁকিয়ে বলে উঠে–

কীভাবে???

আজকে অনেকটাই মনটা ফুরফুরে লাগছে ফারহাজ এর। আজকে তেমন কাজের প্রেশার নেই।
অনেকদিন ধরে দুইটা কেস নিয়ে অনেক ঝামালায় ছিলো সে।
আজকে সে একটু তাড়াতাড়ি ই বাসায় যাবে।

কিন্তু জ্যাম পড়েছে তা ছাড়ার নাম ই নেই।

প্রচন্ড বিরক্ত লাগছে ফারহাজ এর।

তখনি ড্রাইভার বলে উঠে —-

আরে আরে এই বাচ্ছাগুলো এইখানে গান গাইছে
রাস্তার মধ্যে তাই কোনো গাড়ি এগোতে পারছেনা।

ফারহাজঃ ওয়াট???
রাস্তায় দাঁড়িয়ে গান গাইছে কি হচ্ছে কি এইসব।

ফিহা আর তার বন্ধুরা মিলে রাস্তার মাঝখানে গাই গাইছে
তাই কোনো গাড়ি এগোতে পারছেনা।

ফিহা গেঁয়ে উঠে—

আমরা করবো জয়
আমরা করবো জয়
আমরা করবো জয় একদিন

পটকা, টিউপ আর সিমিও গেঁয়ে উঠে–
আহা বুকের ভিতরে
আছে প্রত্যয়
আমরা করবো জয় একদিন

সবাই একসাথে গেঁয়ে উঠে–
আমরা করবো জয়
আমরা করবো জয়
আমরা করবো জয় একদিন

কেউ কেউ বিরক্ত হলেও অনেকেরই ভালোই লাগছে।

নাহ ফারহাজ আর পারছেনা।

সে দ্রুত সানগ্লাস টা পড়ে গাড়ি থেকে বের হয়ে দেখে
কিছু বাচ্ছারা গান গেয়েই যাচ্ছ।

ফারহাজ চিৎকার করে বলে উঠে–

হেই স্টপড!

ফারহাজ এর চিৎকার শুনে সবাই চুপ হয়ে যায়।

ফারহাজঃ এইটা কি চলচলের রাস্তা নাকি গানের কোনো স্টেডিয়াম????

ফারহাজ কে দেখে সবাই কেমন যেনো ভয় পেয়ে গেলো।

শুধুমাত্র ফিহা ছাড়া।

ফারহাজঃ কোথা থেকে যে এইসব উদয় যত্তসব!

এইবার আর ফিহা চুপ থাকতে পারেনা

সে এগিয়ে এসে বলে উঠে—
আমরা যেখান থেকেই উদয় হইনা কেন? আপনার বাসার থেকে অন্তত হইনি তা আপনি কোথা থেকে উদয় হলেন লাটসাহেব!

ফারহাজঃ এই পুচকি তুমি জানো আমি কে? (রেগে)

ফিহাঃ হ্যা জানি তো বদমেজাজি লাটসাহেব। যে সকলের পিছনে ছুড়ি ঘুড়ায়।
এইটা কি আপনার রাস্তা যে এখানে গান গাওয়া যাবেনা।

(কোমড়ে হাত দিয়ে)

ফারহাজ ঃ এই মেয়ে এই তুমি কি এখন আমার সাথে কোমড় বেঁধে ঝগড়া করতে চাও???
এইটা রাস্তা চলাচলের গান গাওয়ার জায়গা নাহ।

ফিহাঃ দেখুন আমি আপনাকে কিছুই বলিনি এই আপনি নিজের চর্কায় তেল দেননা আমাদের টা দেখতে আসছেন কেন??

ফারহাজঃ চর্কা টা কি???

ফারহাজ এর কথা শুনে সবাই হু হা করে হেঁসে দেয়।

ফিহাঃ এই দেখ এই লাটসাহেব চর্কা মানেই জানেনা।

ফারহাজ প্রচন্ড পরিমানে রেগে যায়।

ফারহাজ এর চোখ একেবারে লাল হয়ে যায়।

এইবার ফিহার একটু একটু ভয় করছে।

তখনি সিমি এসে বলে উঠে—
ফিহা এখানে থাকা ঠিক হবেনা রে চল পালাই।

ফারহাজ রাগে কিছু বলতে যাবে তখনি দেখে ফিহারা সবাই উধাও

ফারহাজঃ এরা আবার কোথায় গেলো।

ফ্যাল্সব্যাক ইন্ড,,,

প্রিয়াঃ অই মেয়েটার কত বছর হবে???

ফারহাজঃ কত আবার ১৩ বা ১৪ হবে।

কাকিঃ কিহ একটা ১৪ বছরের মেয়ে তোকে অপদস্ত করলো।

ফারহাজ এর কাকি হেঁসে দেয়।

ফারহাজ যেনো আরো রেগে যায়।

এমনিতে সে একটু বদমেজাজি রাগ সবসময় তার নাকের ঢগায় থাকে।

ফারহাজ রাগে ফুশতে ফুশতে

বেড়িয়ে পড়ে।

মিসেস ইরা আর মিসেস প্রিয়া

ফারহাজ এর কাকির দিকে অগ্নিদৃষ্টিতে তাঁকায়।

ইরাঃ ছোট বউমা এখন কি এইসব না বললে কি হতো নাহ।

প্রিয়াঃ এম্নিতেই আমার ছেলেটা রেগে ছিলো তাকে আরো রাগিয়ে দিলো।

কাকি ঃ যাহ বাবা হাঁসি পেলে হাঁসবো নাহ?

প্রিয়াঃ তোকে তো পরে দেখে নিবো আগে
অই থার্ড ক্লাস পুচকি মেয়েটাকে খুজে বের করতে হবে।
ওর জন্য আমার ছেলেটা এতো রেগে আছে।

ইরাঃ অইসব বাদ দাও আগে দাদুভাই এর রাগ ভাজ্ঞাতে হবে।

প্রিয়াঃ এম্নিতেই ওর বাবা, দাদু কাকাই বিসনেজ এর কাজে চট্টগ্রাম গেছে।
আমরা কি করে সামলাবো আমার ছেলেটাকে।

মিসেস ইরা মুচকি হেঁসে বলে–

আমাদের সাম্লাতে হবেনা। সে তো আজকে আসছে বিদেশ থেকে।

প্রিয়াঃ হ্যা তাই তো। আমাদের কোনো চিন্তা নেই।

অনেক বড় সারপ্রাইজ আছে ফারহাজ এর জন্য।

।।।।

।।।।।
এদিকে,,,
কোনেরকম পালিয়ে এসেছে

ফিহা, পটকা, টিউপ আর সিমি!

সিমিঃ এইটা কি করলি তুই?

ফিহাঃ কি করলাম।

সিমিঃ তুই জানিস যার সাথে তুই ঝগড়া করলি সে
এই থামার অনেক বড় অফিসার।

অফিসার ফারহাজ মির্জা।




।চলবে কি?

#পবিত্র_বন্ধনে_আবদ্ধ
#পর্ব- ২
#Jannatul_ferdosi_rimi (লেখিকা)
ফারহাজ অফিসে গম্ভীরভাবে বসে আছে। সে কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনে একটা পুচকি মেয়ে তাকে অপমান করেছে। সব কন্সেটবেলরা ভয়ে কুকড়ে আছে। কেননা ফারহাজ যখন রেগে থাকে তখন সব ঝড় তাদের উপর দিয়ে যায়। ফারহাজ রেগে বলে উঠে– এইখানে কি সারকাস চলছে??সবাই নিজেদের কাজে যান। ফারহাজ এর চিৎকারে সবাই যার যার কাজে চলে যায়। ফারহাজ এখনো রাগে ফুশছে। তখনি ফারহাজ এর এসিস্টেন্ট অফিসার অরুপ আসে। অরুপ এসে বলে উঠে–
স্যার এনি প্রব্লেম???
আপনার মুড অফ?
ফারহাজ অরুপ কে দেখে বলে উঠে—

আর বলো নাহ।

অই একটা পুচকি মেয়ে এই ফারহাজ মির্জা কে সকলের সামনে অপমান করেছে যাকে দেখলে ভয়ে সবাই কেঁপে উঠে। বুঝেছো???
এই ২৬ বছরের জীবনে কেউ আমার সাথে উচু গলায় কথা বলতে সাহস পাইনি আর অই মেয়ে কিনা।

অরুপ বলে উঠে—
হয়তো ছোট মানুষ তাই ভুল করে??

ফারহাজঃ ওয়াট ডু ইউ মিন বাই ভুল করে???
শুনে রাখো অরুপ অই মেয়েটাকে যতক্ষন পর্যন্ত আমি উচিৎ শিক্ষা দিতে না পারছি।

আমার শান্তি হবেনা।

বুঝেছো?( ধমক দিয়ে)

অরুপ মাথা নাড়ায়।

ফারহাজ আবারোও বলে উঠে–
শুনো অরুপ অই পুচকি মেয়েটার বিষয়ে আমার সব ইনফোর্মেশন চাই।

অরুপঃ কিন্তু স্যার নাম কি???

ফারহাজ ঃ আমি অইসব জানিনা।

অরুপঃ তাহলে তো খুজতে অসুবিধা হবে।

ফারহাজঃ সেইটা দেখা আমার বিষয় নাহ ওক্কে??

অরুপ কিছু না বলে মাথা নাড়ালো।

অরুপ পড়েছে মহা জ্বালায়
এখন নাম ছাড়া এতো বড় ঢাকা শহরে অই পুচকি মেয়েকে খুঁজবে কীভাবে???


।।
।।

(এইবার আমি এক্টু বলি,,,
ফারহাজ মির্জা একজন সৎ পুলিশ ইন্সপেকটর কিন্ত ভীষন বদমেজাজী রাগ যেনো তার নাকের ঢগায় থাকে।
ছোট বেলা থেকেই তার স্বপ্ন ছিলো সে একজন সৎ পুলিশ অফিসার হবে। তাই তাদের এতো বড় বিসনেজ রেখে পুলিশে জয়েন করে
অনার্স কম্পলিট করার পরেই সে নিজের যোগ্যতায় পুলিশের জয়েন করে এবং ইন্সপেক্টর হয়)

এদিকে,,,

ফিহা বলে উঠে—
দেখ এই ফিহা নাহ
অই লাটসাহেব কে ভয় পাইনা বুঝেছিস তুই??

সিমি বসে পড়ে।

ফিহাঃ দেখ টিউপ, পটকা, সিমি তোরা এখন থাক।

আমাকে এখন বাসায় যেতে হবে নাহলে মা বকবে ভীষন বুঝেছিস।

ফিহা নিজের বেনুনিটা নাড়াতে নাড়াতে চলে যায়।

সিমিঃ সত্যি এই মেয়েটাকে নিয়ে পারিনা।

পটকাঃ আমার ফিহা হেব্বি সাহসী!

সিমিঃ এমন সাহসী। এখন ওর বিপদ না ডেকে আনে।

ফিহা স্কুল কাঁধে হাতে নিয়ে দুলতে দুলতে

বাসায় আসে।

এক্টি বড় এলাহি বাসার সামনে দাঁড়িয়ে আছে ফিহা।

সে দ্রুত ছুটে যায় বাগানের দিকে।

বাগানের দিকে একটা ছোট্ট ফ্লাট এর মতো বাসা আছে।

ফিহা বাসা টায় ঢুকে।

ঢুকে দেখে তার মা জননী রান্না চড়িয়েছে।

ফিহা আস্তে আস্তে গিয়ে তার মাকে জড়িয়ে ধরে।

মেয়েকে কাছে পেয়ে

ফিহার মা ফিহার গালে চুমু খেয়ে নেন।

ফিহার মাঃ আমার মা টা এসে গেছে???

ফিহাঃ হুম মা!

ফিহার মাঃ তা আমার মা টার স্কুল কেমন কাটলো।

ফিহা কাচুমাচু হয়ে দাঁড়িয়ে যায়।

সে এখন কি বলবে? সে তো আর বলতে পারবে
নাহ স্কুলে না গিয়ে রাস্তায় গান গেয়েছে তারপর আবার সেই লাটসাহেব এর সাথেও ঝগড়াও বাঁধিয়ে এসেছিলো।

ফিহার মা বলে উঠে—

কিরে কি ভাবছিস???

ফিহা কিছু বলবে তার আগেই বড় মাল্কিন এসে বলে উঠে-

কিরে ফিহা চলে এসেছিস তুই??

ফিহাঃ হ্যা মামুনি!

ফিহার মাঃ আরে বড় আপা আপনি আসুন ভিতরে আসুন।

মিসেস রিহাঃ আমি এখন বসতে পারবো নাহ জানো তো আজকে আমার মেয়েটা বিদেশ থেকে আসছে

কত কাজ আছে বাসায়।

(লেখিকাঃ জান্নাতুল ফেরদৌসি রিমি)

ফিহাঃ হ্যা আজকে ইরিনা আপু আসবে ( খুশি হয়ে)

মিসেস রিহাঃ হ্যা রে আজকে ওর সব পছন্দের খাবার রান্না করবো।

ফিহা হাত তালি দিয়ে বলে উঠে—

তারমানে বিরিয়ানিও হবে ইয়াপিইইইই।
মামুনি আমাকে দিবেনা

( হাত তালি দিয়ে)

মামুনিঃ তোকে দিবো নাহ তো কাকে দিবো তুই তো আমার সোনা মা হ।

(ফিহার গালে হাত রেখে)

ফিহার মাঃ আমার মেয়েটাও হয়েছে বিরিয়ানি পাগলি।

মিসেস রিহাঃ শুনো ফাতেমা তাড়াতাড়ি চলো।

কত কাজ বাকি তুমি পায়েশ টা রেঁধে দিবে।

ফিহার মাঃ হ্যা বড় আপা আসছি।

মিসেস রিহা চলে যায়।

ফিহার মা চুলাটা নিভিয়ে ফিহার দিকে তাঁকিয়ে বলে উঠে—

শুন ফিহা আমি একটু যাচ্ছি
ছোট ম্যামসাহেব আজকে আসছে।

পায়েশ রান্না করতে যাই তুই

ফিহা মাথা নাড়ায়।

(ফিহা যখন ছোট ছিলো তখন তার বাবা মারা যায়।

ফিহার মা কোনো জায়গা ছিলো নাহ তখন
ফিহার মা ফিহা কে নিয়ে শহরে চলে আসে তখন মিসেস রিহা ও মিঃ রিক ফিহার মা কে আশ্রয় দেয়।
ফিহার মা বাড়ির কাজে সামান্য সাহায্য করে।
ইরিনা মিঃ রিহ ও মিঃ রিক এর একমাত্র সন্তান।

বিদেশে পড়াশুনা করতে গিয়েছে ৫ বছর আগে।
মিঃ রিক একজন সফল বড় ডক্টর। রিক আর রিহা ফিহাকে অনেক ভালোবাসে। ফিহার সব আবধার তারাই পুরন করার চেস্টা করে)

এদিকে,,,

এয়ারপোর্ট এ নেমেছে ইরিয়া। হাতে লাগেজ।

আজ কতবছর পরে সে তার দেশে ফিরেছে।

তার পরিবার কে দেখতে পাবে

সব থেকে বড় কথা সে তার প্রিয় মানুষটাকে দেখতে পারবে।

ইরিনা গাড়িতে বসে পড়ে আগে সে
তার প্রিয় মানুষটির সাথেই দেখা করতে যাবে।

সোফায় বসে আছে মিসেস ইরা( ফারহাজ এর দাদি)

তখনি মিসেস প্রিয়া এসে বলে উঠে—

মা ইরির সাথে কথা হয়েছে???

মিসেস ইরা বলে উঠে—

সে আগে আসছে।

প্রিয়াঃ যাক বাবাহ শান্তি পেলাম।

ইরাঃ দাদুভাই বিরাট বড় সারপ্রাইজ পাবে।

প্রিয়াঃ এইবার আমার ছেলেটার মাথা ঠান্ডা হবে।

ফারহাজ এর কাকি যাচ্ছিলো

তখনি সে বলে উঠে—

তোমার ছেলে যা বদমেজাজী হয়েছে

দেখো বাপু ইরিনা আবার এই রুপ দেখে টাস্কি না খেয়ে যায়।

প্রিয়া রেগে বলে উঠে—

তোকে আমার ছেলেকে নিয়ে না ভাবলেও চলবে হুহ।

।।।।।।।।

ফিহা আজকে অনেক খুশি তার ইরিনা আপু আসছে বলে কথা।

কিন্তু কিছুটা ভয় ও হচ্ছে শুনেছে
অই লাটসাহেব অনেক বড় অফিসার।

সে তো দিব্যি ঝগড়া করে আসলো এখন যদি অই পুলিশ লাটসাহেব টা তাকে জেলে পুরে দেয়

তখন কী হবে ভাবতেই কেমন করে যেনো ভয় হচ্ছে ফিহার।

নাহ নাহ সে ভয় পাবে কেন??

তার বড় আব্বু আর মামনী( রিক ও রিহা)

আছে। অই লাটসাহেব কিচ্ছু করতে পারবেনা।

ফিহা কিছু একটা ভেবে দৌড়ে বাগানের দিকে যায়।

এদিকে,,,

ফারহাজ কপালে হাত রেখে বসে আছে

তার মাথায় শুধুই সেই পুচকি মেয়েটার চিন্তা আসছে।

এইরকম মেয়ে সে কখনোই দেখিনি বাপরে বাপ।

কিন্তু ফারহাজ ও ছেড়ে দিবেনা এর শেষ সেও দেখে ছাড়বে।

তখনি কেউ ফারহাজ চোখ নিজের হাত দিয়ে বন্ধ করে দেয়।

ফারহাজ হচকিয়ে যায় এসময় এমন কাজ কার।

ফারহাজঃ কে কে???

তখনি কেউ হেঁসে বলে উঠে—

বলো তো আমি কে??

ফারহাজঃ কে আপনি?

সে বলে উঠে–
।আগে তো সবার আগে তুমিই আমার স্পর্শ অনুভব করেই আমাকে চিনে নিতে এখন কি হয়েছে হ্যা???

এখন কি আমি এতোটাই তোমার থেকে দূরে সরে গিয়েছি ফারহাজ???

ফারহাজ এর মুখে অজান্তেই হাঁসি ফুটে উঠে সে যেনো বিশ্বাস ই করতে পারছেনা।

তার ভালোবাসার মানুষটি এখন তার সামনে।

ফারহাজঃ ইরিনা!




।।।(গল্পের মেইন চরিত্র ফিহা)



চলবে কি?