পরাণ দিয়ে ছুঁই পর্ব-৪+৫

0
193

#পরাণ_দিয়ে_ছুঁই
#পর্বঃ৪
#Jhorna_Islam

“কিরে চাঁদের গায়ে কলঙ্ক লাগিয়েছে কে?”
রোহাননের কথায় সকলেই ভালো করে সৌন্দর্যের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

এবার সকলেই বলে উঠে তাইতো।

এই সৌন্দর্য তুই লুকিয়ে চুরিয়ে কি করেছিস আমাদের বল বলছি। লক্ষন তো ভালো মনে হচ্ছে না মামা। শেষ মেষ তুই কি করলি? আমাদের বলছিস না কেন? রোহান কৌতুক করে বলে।

এই তোরা চুপ যা সবাই। আমাদের চাঁদের গায়ে কলঙ্ক লাগতে যাবে কোন দুঃখে বলতো?

“চাঁদের গায়ে নূরের ছোয়া লেগেছে। ”
বুঝলি সবাই? তালহা বলে।

কি রে সৌন্দর্য ঘুরতে গিয়ে তুইও জুটিয়ে ফেললি।হায় হায় আমার এখন কি হবে রে? আমি তোকে কতো ভালোবাসি এতোদিন যাবত।তুই কিনা আমাকে ঠকিয়ে দিলি? বলেই কান্নার অভিনয় শুরু করে রোহান।

সৌন্দর্য এদের মজা আর নিতে পারলো না।
ওয়ে ড্রামাবাজ তোর ড্রামা অফ কর। দিশানী কি জানে তুই শা* একটা গে। না জানলে সমস্যা নেই আমি নিজ দায়িত্বে তাকে এই কথাটা জানিয়ে দিবো।
দিশানীর নাম্বার টা জানি কতো? উমমম মনে পরেছে লাস্টে 223।

সৌন্দর্যের কথায় রোহানের মুখ টা ছোট হয়ে যায়। এই ছেলেটার সাথে একটু মজা ও নিতে পারে না। কি করে যেনো সিক্রেট গুলো খুঁজে খুঁজে বের করে ফেলে।

ভাই আমিতো ওর কথা তোদের কাউকে বলিনি।তুই কি করে ওর কথা জানলি?

টপ সিক্রেট বলেই সৌন্দর্য চোখ মারে।

এবার জানা কথা সকলে রোহানের উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে। সৌন্দর্য টুক করে কল কেটে দিয়ে স্বস্তির নিশ্বাস নেয়। তারপর তালহার দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলে,, তুই কি করে টিচার হলি?

এ-এটা আবার কি রকম প্রশ্ন?

কি রকম প্রশ্ন তাই না? তুই টিচার হয়ে এসব কি করে বলিস? নিজের ছাত্রী কে নিয়ে এসব কথা বলতে তোর মুখে বাঁধে না? কথাটা বলেই সৌন্দর্য তালহার উপর চড়াও হয়।

আহ্ ভাই ছাড় প্লিজ। তোর এই বডিবিল্ডার শরীর দিয়ে কি করে তুই আ’ঘাত করতে পারিস আমাকে?

অনেক কষ্টে নিজেকে সৌন্দর্য্যের হাত থেকে ছাড়ায় তালহা। তারপর নিজেের চুল ঠিক করতে করতে বলে,কোথায় তুই হাতি আর আমি মশা। নিজের দিকে তাকিয়ে তারপর আমার দিকে তাকাবি দেন মারতে আসবি। তারপর নিজের কাঁধে হাত বুলিয়ে আহ বলে রুম থেকে বের হয়ে যায়।

———————————-
সকাল সকাল ইয়ানূূর উঠে একটু বাইরে বের হয়। নাস্তা করেই তারা রওনা দিবে। তাই ভাবলো আশেপাশের জায়গা টা একটু চোখ বুলিয়ে দেখবে। তারউপর কাল আসার সময় রিসোর্টের গেইটের বাইরে একটা বকুল ফুল গাছ দেখেছিলো। বকুল ফুল আবার নূরের খুব পছন্দ। তাই পা টিপে টিপে বের হয়। আশেপাশে তেমন কেউই নাই। সকলে ঘুমে বিভোর। এই সময় টা নূরের খুব ভালো লাগে। কেমন জন মানবহীন থাকে। কোনো কোলাহল নেই শুধু পাখির কিচিরমিচিরের শব্দটা। ফুরফুরে মন নিয়ে রিসোর্ট থেকে বের হয়ে আসে নূর।চারদিকে একবার দৃষ্টি বুলিয়ে গাছের নিচে চলে যায়।

তেমন একটা ফুল পরেনি। তাও নূর খুশি মনে বসে কুড়াতে থাকে। নিচু স্বরে গুনগুন করে গান ধরে,,,

“বকুলের মালা শুকাবে রেখে দিবো তার সুরভি।
দিনে গিয়ে রাতে লুকাবে,মুছোনাকো আমারি,,,,,

বাকিটুকু শেষ ও করতে পারে নি নূর।উপর থেকে যেনো ফুলের বৃষ্টি এসে ওর উপর পরছে। নূর ফুল কুড়ানো বাদ দিয়ে উপরের দিকে তাকিয়ে চোখ বন্ধ করে নেয়। ওর মুখের উপর ও পরছে কি সুন্দর ঘ্রাণ বের হয়েছে। হুট করে এতো ফুল পড়ার কারণ টা বুঝতে পারলো না নূর। এখন তেমন বাতাস ও নেই।

নিজের ভাবনার ব্যাঘাত ঘটে কারো গম্ভীর কন্ঠ স্বর শুনে।

” এই পিচ্চি মেয়ে এখানে একা একা কি করতে এসেছো? যদি ছেলেধরা এসে নিয়ে যায়? তারউপর আবার তুমি সাধারণ না।স্পেশাল কেয়ার ছাড়া কেন বের হয়েছো? দ্রুত নিজের রুমে যাও,ফাস্ট। ”

কথাগুলো এক নিশ্বাসেই শেষ করে সৌন্দর্য। নূর আহাম্মকের মতো তাকিয়ে আছে। কিছু বলতেও পারলো না। কি করেই বা বলবে, সে তো নূরের সামনে দিয়ে জগিং সুট পরে চলে যাওয়া লোকটা তো কোনো সুযোগ ই দিলো না। তবে অপমাণ করতেও ছারলো না।

সকাল সকাল লোকটার কি এসব কথা না বললে চলছিলো না নাকি। নিচে পরে থাকা ফুলের দিকে তাকিয়ে নূরও রিসোর্টের দিকে হাঁটা দেয়। কেন যে লোকটার সাথে দেখা হয়েছে।

————————————————–

বাসে যে যার সিটে বসে আছে। আজ ইসরাত জানালার পাশের সিটে বসেছে। সেই কখন থেকে সে বকবক করে চলেছে থামার নাম নেই। নূর চুপচাপ বইয়ের দিকে একবার তো ইসরাতের দিকে একবার তাকাচ্ছে।
মেয়েটার বকবকানি তে কিছুতেই মন বসাতে পারছে না সে।

কথা বলতে বলতে এক পর্যায়ে বিষম লেগে যায় ইসরাতের পানির বোতল বাসের উপরে ব্যাগে নিয়েছিল।
নূর উঠে তারাতাড়ি ব্যাগটা নিচে নামায়। চেইন খুলে পানির বোতল নিয়ে ব্যাগের ভিতর কিছু একটা দেখে ব্রু কোঁচকায়। পানির বোতল নিজের হাতে নিতেই ইসরাত তরিঘরি করে পানি খায়।

নূর ব্যাগ থেকে জিনিস টা হাতে নিয়ে ইসরাতের সামনে বাড়িয়ে ধরে। ইসরাত পানির বোতল রেখে তারাতাড়ি জিনিস টা নিজের কাছে নিয়ে নেয়।

নূর একই ভাবে ইসরাতের দিকে তাকিয়ে আছে। ইসরাত নূরের দিকে তাকিয়ে হাসার চেষ্টা করে বলে,,, কি- কি হয়েছে দোস্ত? ত-তুই এমন করে তাকিয়ে আছিস কেন?

এটা কি?

কেন চিনিস না তুই? আজব এটা একটা মেচ।

সেটা আমিও জানি। কিন্তু এটা এখানে কি করছে সেটাই জিজ্ঞেস করছি। বাই এনি চান্স তুই?

এইই না না বোন ভুলেও ওসব কিছু ভাবিস না।আমি সিগারেট খাওয়ার জন্য নেই নি। আসলে হয়েছে কি আমার না খুব ভূ’ত, প্রে’তে’র ভয় লাগে দোস্ত।। তাই নিয়ে রেখেছি বিশ্বাস কর আমায় ঠোঁট উল্টে বলে ইসরাত।

ইসরাতের এসব কথা শুনে ইয়ানূর কি বলবে ভেবে পায় না। ভূ’ত প্রে’তে’র ভয়ের জন্য কিনা মেচ কিনে নিয়েছে। এটাও তাকে শুনতে হলো।

নূর নিজের সিটে বসে ইসরাতের কপালে হাত রেখে বলে,ইশু বোন আমার তোর মাথা এতোদিন অর্ধেক নষ্ট ছিলো।এখন মনে হচ্ছে পুরোই হয়ে গেছে। লোকে এসব শুনলে হাসবে।এতোদিন দেখতাম প্রেগন্যান্ট মহিলারা মেচ নিয়ে ঘুরে। কিন্তু এই প্রথম তোকে এসব করতে দেখলাম।

ইসরাত মিনমিনিয়ে বলে চুপ যা দোস্ত। কাউকে এসব বলিস না।

এর মধ্যে হুট করে বাস অফ করে।ওরা এতে মাথা ঘামায়নি। নূরের ও পানি পিপাসা পেয়েছে তাই বোতল টা হাতে নেয়।

সৌন্দর্য নিজের গাড়ি আনিয়েছিলো যাওয়ার জন্য। কিন্তু হুট করে গাড়িটা খারাপ হয়ে যায়। এতে ওর বেশ মে’জা’জ চটে আছে। তালহা কে বলে বাস থামিয়ে আবার উঠে বসে। কিন্তু সামনের সিট গুলো বুকিং। তালহা চেয়েছিলো সামনে জায়গা করে দিতে কিন্তু সৌন্দর্য জানায় তার দরকার নেই। সে পিছনেই বসবে।

বাসে উঠে পিছনে যেতে গিয়ে টে’র পায় জোতার ফিতা খুলে গেছে। বসে সেটাই লাগায়।কিন্তু হুট করে উঠতে গিয়ে থমকে যায় সে।

নূর মুখে পানি নিয়ে পাশে তাকিয়ে দেখে লোকটা নিচে বসে আছে। বাসে দেখেনি আগে। তাই হুট করে দেখে নিজে কি করে ফেলল বুঝতে ও পারে নি। নূরের মুখের সব পানি ছিটকে পাশে থাকা সৌন্দর্যের উপর গিয়ে পরে।

#চলবে,,,,

#পরাণ_দিয়ে_ছুঁই
#পর্বঃ৫
#Jhorna_Islam

ইয়ানূর স্তব্ধ হয়ে গেছে। ইচ্ছে করছে অজ্ঞান হয়ে যেতে। মনে মনে খুব করে চাইছে যেনো সে এখনই জ্ঞান হারায়।আর এই বা’জে পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পায়। কিন্তু যখন যেটা খুব করে চাওয়া হয় সেটা পাওয়া যায় না। ইয়ানূরের খুব করে চাওয়া ইচ্ছে টা ও পূরণ হলো না।

সৌন্দর্য সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে নূরের দিকে একবার তাকায়।তারপর নিজের হাত দিয়ে ব্লেজার ঝাড়তে থাকে। হাত ঝাড়তে ঝাড়তে সৌন্দর্যের হাত টা ইয়ানূরের সামনে আসে।যার দরুন ইয়ানূরের হুঁশ আসে।তরিঘরি করে বোতল টা ইসরাতের হাতে ধরিয়ে দেয়। তারপর নিজে এগিয়ে এসে ঝেড়ে দিতে নিয়ে ও কি মনে করে হাত গুটিয়ে নেয়। তারপর সরি সরি বলতে থাকে।

চোখের পানি গুলো টলমল করছে। একটু ছোঁয়া লাগার অপেক্ষায় তারপর গাল গুলো ভাসিয়ে দিবে। করুন স্বরে শুধু একের পর এক স’রি বলে চলেছে।

সৌন্দর্য নূরের মুখের দিকে তাকায়। তারপর চোখে চোখ রাখে।নূর চোখ সরিয়ে নেয়। অস্বস্তি হচ্ছে খুব।কি বা’জে বা’জে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় এই লোকটার কাছে যখনই আসে। সবসময় ছোট হতে হয়। লোকটা তো তাকে খারাপ মেয়ে ভাবে হয়েতো। গায়ে পরা মেয়ে ভাবে। কথাগুলো ভাবতেই টুপ করে এক ফোটা পানি চোখ থেকে গড়িয়ে পরে।

সৌন্দর্য এবার খুব কৌশলে ওর চোখ জোড়া ঘুরিয়ে নেয়। তারপর নূরকে উদ্দেশ্য করে,, তুমি,,,,, বলতে গিয়ে ও থেমে যায়। ফোস করে একটা নিশ্বাস ছাড়ে।পিছনে যেতে যেতে বলে,,, ইট’স ওকে!

নূর ঘাড় ঘুরিয়ে সৌন্দর্যের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে ধপ করে নিজের সিটে বসে পরে। বসেই চোখ জোরা বন্ধ করে ফেলে। জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে সে।মনে হচ্ছে কয়েকশো মিটার দৌড়ে এসে হাঁপিয়ে গেছে।

ইসরাত এতো সময় সিটে বসে দুইজনের কান্ড দেখেছে সরু চোখে।

মনে মনে ভাবছে যতো প্রকার সমস্যা আছে সব এদের সাথেই ঘটছে সিনেমাটিক ভাবে। কি আশ্চর্য ব্যাপার। অন্য সময় হলে নূর কে খ্যা’পা’তো সে কিন্তু এখন কেন যেনো ইচ্ছে করলো না। হয়তো বিব্রত বোধ করবে।

সৌন্দর্য বসে বসে ফোনে ব্যস্ত হয়ে আছে। তালহা কিছু সময় পরপর এসে সৌন্দর্য কে বিরক্ত করে যাচ্ছে। ছাত্রীদের কি লাগবে,কেউ বমি-টমি করবে কিনা জিজ্ঞেস করছে।

নূরদের সিটে এসে জিজ্ঞেস করে,, নূর তুমি ঠিক আছো?

নূর এতোসময় সিটে মাথা হেলিয়ে চোখ বন্ধ করে ছিলো।

তালহা স্যারের প্রশ্নে চোখ খুলে তাকায়। ঠিক হয়ে বসে জানায় সে একদম ঠিক আছে।

তাহলে চোখ মুখ এমন দেখাচ্ছে কেন? অসুস্থ বোধ করলে বা খারাপ লাগলে কিন্তু বলবে আমাকে। আর বমি আসলেও বলবে।

নূর তালহা স্যারের কথায় মাথা নেড়ে সম্মতি জানায়।

তালহা চলে যেতে নিয়ে ও ইসরাতের কথায় থেমে ব্রু কোচকে ইসরাতের দিকে তাকায়।

আশে পাশে মানুষের চোখ যায় না। আমাকে জিজ্ঞেস করার প্রয়োজন ও মনে করলো না। আমি কি মানুষের পকেটে বমি করবো যদি আমার বমি পায়?

ইসরাতের কথায় নূর চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে হাতে চি’মটি কাটে চুপ হওয়ার জন্য। কিন্তু মেয়েটা শোনে কই।

এই মেয়ে কি বললে তুমি? তোমার সাহস দেখছি দিন দিন বেড়েই চলেছে। তুমি জানো তুমি কার সাথে কথা বলছো?

তালহা স্যারের সাথে।

আমার নামের শেষে কি উচ্চারণ করলে আবার করো। জোরে করবে।

স-স্যার।

বেয়াদপ মেয়ে স্যারদের সাথে এভাবে কেউ কথা বলে? আজকে তোমার বেয়াদবি ছোটাবো। মনে ভয় ডর নেই তোমার।

স-সরি স্যার।

চুপ করো তুমি। উঠে দাঁড়াও।

স্যার প্লিজ আমাকে বাস থেকে নামিয়ে দিবেন না। আমিতো এই দিকের কিছুই চিনি না। যদি হারিয়ে যাই?

তোমাকে আমি কি বলেছি? কথা শুনছো না কেন তুমি?
উঠে দাঁড়াও বলেই এক ধমক মারে তালহা ইসরাত কে।

ইসরাত তারাতাড়ি করে উঠে দাঁড়ায়। করুন চোখে নূরের দিকে তাকিয়ে চোখের ইশারায় বোঝায় আজকের মতো এই ব্যাটার হাত থেকে বাঁচিয়ে দে বোন। আজ এতো খে’পে কেন গেলো বুঝলাম না।

নূর চুপচাপ বসে আছে।

তালহা ইসরাত কে বলে,,কানে ধরে দাঁড়িয়ে থাকতে বাসের মধ্যে।

–স্যার আর হবে না।

— কি বলেছি আমি তুমি শুনোনি?

— স্যার,,

— বেশি কথা বললে এক পায়ে দাঁড় করিয়ে রাখবো।তখন ভালো লাগবে?

যদি বাস ব্রেক করে হুট করে। আর আমি পরে গিয়ে নাক মুখ ফেটে যায় তখন?

ঐসব কথা তোমার আগে মাথায় রাখা উচিত ছিলো।এখন শাস্তি ভোগ করো। বলেই তালহা সামনের দিকে চলে যায়। মুখে তার মিটমিটে হাসি।

ইসরাত অসহায়ের মতো কানে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। পৃথিবীতে সেই একমাত্র ব্যক্তি যে কিনা পিকনিকে এসে ও শাস্তি পায়। তাও আবার বাসের মধ্যে হাহ্। দেখে নিবে সে এই স্যার কে কথাটা মনে মনে আওড়িয়ে মুখ বাঁকায়।

———————

বাস ঠিক সময়ে এসে থামে।সকলের গার্জিয়ানরা এসে আগে থেকেই দাঁড়িয়ে আছে নেওয়ার জন্য। ইসরাত আর নূর নেমে আসে বাস থেকে। এদিক ওদিক তাকিয়ে নূর তার বাবা কে খোঁজার চেষ্টা করে। কিছু দূরেই দেখতে পায়।

কাঁধের ব্যাগ ইসরাতের হাতে ধরিয়ে দিয়ে এক দৌড়ে চলে যায় নিজের বাবার কাছে।

আব্বু বলেই জড়িয়ে ধরে। মনে হচ্ছে কতো জনম পর দেখা হলো তাদের। ইসরাত ও এগিয়ে আসে।

নূরের বাবা এতক্ষন নিজের মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছিলো। ইসরাত পাশে এসে দাঁড়াতেই ইসরাতের মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়। জানতে চায় কেমন আছো আম্মারা?

ভালো আংকেল। ইসরাত উত্তর দেয়।

নূর চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে।

এরমধ্যে সকল ছাত্রী কে তালহা আর অন্যান্য শিক্ষকরা বুঝিয়ে দিচ্ছে।

নূরের বাবা দাঁড়িয়ে আছে তালহার সাথে কথা বলার জন্য। তালহা এগিয়ে আসতে আসতে বলে,,,

স’রি আংকেল আপনাকে অপেক্ষা করানোর জন্য।

ব্যাপার না বেটা। সব কিছুর আগে নিজের দায়িত্ব। আমি তোমার উপর খুব খুশি।

আরো কিছু কথা বলে নূর আর ইসরাত কে নিয়ে চলে আসে নূরের বাবা।ইসরাত নূরদের সাথেই যাবে।নূরদের বাড়ির কিছু পরেই ইসরাতের বাড়ি।তাই আর ইসরাতের বাবা আসেনি নেওয়ার জন্য।

সৌন্দর্য এতক্ষন বাসেই ছিলো নামেনি। তালহার সাথে যাবে।তালহা গাড়ি নিয়ে আসেনি। তাই সৌন্দর্যের সাথে যাবে। সৌন্দর্য আগেই ড্রাইভার কে গাড়ি নিয়ে আসতে ফোন দিয়েছে। তাই আর বের হয়নি।বাসেই বসে ছিলো।

এতক্ষন জানালার পাশে বসে সবই লক্ষ করেছে। এবার উঠে দাঁড়িয়ে নেমে আসে। তালহার ও সব কাজ শেষ।

ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে আসতেই সৌন্দর্য চাবি নিয়ে নেয়। তারপর নিজে গিয়ে ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসে। ড্রাইভার পিছনে গিয়ে বসে। তালহা হেলতে দুলতে দুলতে এসে সৌন্দর্যের পাশের সিটে বসে পরে। সিটে বসেই নিজেকে হেলিয়ে দেয়। একটা দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলে,,,,,,

কেমনে পারিস ভাই? এতো এনার্জি কি করে পাস? অবশ্য তুই তো কোনো পরিশ্রম করিস নি।

সৌন্দর্য কথার উত্তর না দিয়ে গাড়ি চালাতে থাকে। তালহার বাড়ির সামনে এসে তালহা কে নামিয়ে দেয়। অবশ্য তালহা বলেছে ওদের বাড়িতে যাওয়ার জন্য সৌন্দর্য না করে দেয়।

নিজের বাড়িতে এসে গাড়ি থেকে নেমে পরে। হাতে আঙুলে চাবিটা নাচাতে নাচাতে শিস বাজাতে বাজাতে মেইন দরজা দিয়ে বাড়ির কলিং বেল বাজায়। কিছুক্ষন পর এসে একজন দরজা খুলে দেয়।

সৌন্দর্য ভিতরে ঢুকে পরে। পিছন থেকে একজন হ্যান্ড’স আপ।

সৌন্দর্য থমকে যায়। তারপর নিজের হাত উপরে তুলে পিছনে তাকায়।

#চলবে,,,,,,,

কার্টেসী ছাড়া কপি নিষেধ।