পুনর্জন্ম পর্ব-০৩

0
267

#পুনর্জন্ম🤍
#পর্ব_০৩
#আফিয়া_আফরিন

আজ সম্ভবত কৃ’ষ্ণ’প’ক্ষে’র রাত।
জমিদার বাড়ির পেছন দিকের জীর্ণ কুটিরেই তাওহীদের সমস্ত কু’কর্মের মূল জায়গা। আজও পাঁচ বন্ধু মিলে বসেছে। ম’দ, গাঁ’জা, আর জু’য়া খেলা নিত্যদিনের রুটিন আজকেও তার ব্যতিক্রম ঘটলো না।

ডানে বামে ঘুটঘুটে অন্ধকার। আকাশে মিটিমিটি তারা জ্বলছে। নদী থেকে ফুরফুরে হাওয়া গায়ে আ’ছ’ড়ে পড়ছে। দূরের ঝোপে কিছু জোনাকির মিটমিটি আলো দেখা যাচ্ছে। মাথার উপর বা’দু’ড় পাখা ঝাপটালো। একটা পেঁ’চা’র ডেকে উঠলো কাছে কোথাও। কেমন যেন গা শি’উ’রে শি’উ’রে উঠছে।

রাজিব বলে উঠলো, ‘আজকে এই জায়গাটা কেমন জানি অ’দ্ভু’তু’ড়ে টাইপের লাগতেছে।’

রাজীবের কথা পা’ত্তা দিল না কেউ। যে যার গত বসে নিজেদের কাজ করতে লাগলো।

ঠিক এমন সময় রাজীবের চোখ আটকালো সামনের দিকে। সে স্ত’ব্ধ হয়ে গেলো। বা’ক’শ’ক্তি হারিয়ে ফেললো। পাশেই বন্ধুরা কিন্তু কাউকে ডাকতে পারছে না। সাদা শাড়ি পরা কেউ একজন দাঁড়িয়ে আছে। দশ হাত সামনে বাকিদের নজর পড়েনি তার দিকে তখনও। রাজীবের কুন কুন আওয়াজ এ সবাই সামনে তাকালো। ম’দে’র নে’শা’য় ব্যাপারটা ঠিক বোধগম্য হলো না।

কিন্তু সামনে থাকা অ’শ’রী’রী তখন চিকন স্বরে বলে উঠলো, ‘শেষ হবে তোরা সব।’

মুখ দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু কন্ঠটা কেমন চেনা চেনা লাগছে।
এমন অ’দ্ভু’তু’ড়ে কন্ঠের স্বরে চমকে উঠল সবাই।
ময়ূরী? কণ্ঠস্বরটা হুবহু ময়ূরীর কন্ঠের স্বরের সাথে মিলে যাচ্ছে।

তাওহীদ কেমন ঘা’ব’ড়ে গিয়ে বললো, ‘তু-তুমি মা’রা যাওনি?’

অ’শ’রী’রী কাঁপিয়ে হাসি দিলো। বললো, ‘আমি মরিনি। আমি আ’ত্ম’হ’ত্যা করেছি। আমাকে বাধ্য করেছিস তোরা। সব শেষ হবি সব। কারো বাঁচার কোনো সম্ভাবনা নাই। এক এক করে মরবি তোরা। হাহাহা।’

তাওহীদ বুঝতে পারছে না ব্যাপারটা কি সত্যি নাকি ভ্রম? সে কি নেশার ঘোরে উল্টাপাল্টা দেখছে? বন্ধুদের দিকে তাকালো। তাদের চেহারার অবস্থা দেখে বোঝা গেলো, ব্যাপারটা সত্যি। কিন্তু কিভাবে? মৃত মানুষ কিভাবে ফিরে আসতে পারে? বিষ্ময়ে কেউ একটু শব্দও করতে পারছিলো না।

অ’শ’রী’রী আবার হাসতে হাসতে বললো, ‘জীবন যে কত যন্ত্রণাময় তা আমি জেনেছি। মৃত্যু যে কত আনন্দময় তা আমি জেনেছি।’

ওদের মধ্যেই একজন অবাক হয়ে বললো, ‘মৃত্যু আনন্দময়?’

‘হ্যাঁ আনন্দময়! ভীষণ আনন্দময়! মৃ’ত্যু’র কারণেই তো তোদেরকে শেষ করতে পারবো। আর তোদের শেষ করলে আমার আ’ত্মা’ও শান্তি পাবে।’

ভয়ের চোটে একেকজনের কাঁপাকাঁপি অবস্থা। অ’শ’রী’রী ছায়া কিছু হটঁলো। বাতাসে মাথার ঘোমটাটা সরে গেলো একি! এটা কি তবে সত্যিই ময়ূরী? একই রকম চেহারা কিন্তু গলায় শুধু একটা কাটা দাগ দেখা যাচ্ছে। কপালের এক সাইডে র’ক্ত। বাতাসে এলোমেলো চুলগুলো উড়ছে। সে হেঁটে হেঁটে সামনের দিকে চলে যাচ্ছে। একবার শুধু পিছন দিকে তাকালো।
অ’তি’প্রা’কৃ’ত হাসি দিয়ে বললো, ‘আবার ফিরব আমি।’

অনেকক্ষণ পর্যন্ত কেউ কোন কথা বলতে পারল না। সত্যিই কি এটা ময়ূরীর আ’ত্মা? মৃ’ত আ’ত্মা কি কখনো ফিরে আসতে পারে?
.
.
.
মোরগের আওয়াজ জানান দিল ভোর হয়েছে। মৃন্ময়ী হাই তুলতে তুলতে উঠোনে এসে দাঁড়ালো। চোখের সামনে ভেসে উঠল আগেরকার দিনগুলো।
ময়ূরী থাকলে এই সময়ের মধ্যেই দুই বোন উঠোন ঝাড়ু দিতে নিয়ে ঝগড়া লেগে যেতো। ময়ূরী যেহেতু একটু বড় ছিলো, প্রতিদিন সকালে উঠোন ঝাড়ু দেওয়া ওর দায়িত্ব ছিলো। আর মৃন্ময়ী ইচ্ছে করে বোনকে রাগানোর জন্য পুকুর ঘাট থেকে শুকনো লতা পাতা নিয়ে উঠোনে এনে ফেলতো।
ময়ূরী রেগে যেত ঠিকই, কিন্তু কখনোই বোনকে কিছু বলতো না।

এইসবই এখন স্মৃতি। মৃন্ময়ী একটা দী’র্ঘ’শ্বা’স পেলে পথে পা বাড়ালো।
ঘরের মধ্যে থাকতে থাকতে দ’ম আটকে আসছে। প্রকৃতির হাওয়া গায়ে লাগানো দরকার।
.
.
মৃন্ময়ী আর ময়ূরী জমজ দুই বোন হলেও চেহারা ব্যতীত আর কোন কিছুতেই তাদের মিল ছিল না। ও হ্যাঁ, আরেকটা দিকে অবশ্য খানিকটা মিল ছিলো; সেটা হচ্ছে মনের মিল।
ময়ূরী ছিল শান্ত শিষ্ট স্বভাবের। অল্পতেই কেমন যেন ভেঙে পড়তো। কেউ কিছু বললে মুখের উপর না করতে পারতো না। সব সময় সব জায়গায় নিজেকে স্যা’ক্রি’ফা’ই’স করে গেছে। মূলত এই গুণগুলোর কারণেই মানুষজন তাকে এত ভালবাসে। যেকোনো বিপদ-আপদে ছুটে যেত এবং তাদেরকে সাধ্যমতো নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করতো।

অন্যদিকে মৃন্ময়ী দুরন্ত স্বভাবের ছিলো। রাগ জেদ বরাবরই বেশি। কথায় কথায় ত’র্ক কি করবে। মুখ বুঝে কোন কিছু সহ্য করার মানুষ সে ছিল না কোনকালেই। মুখের উপর চ’টাং চ’টাং জবাব দিতো।
তবে দুই বোনের মধ্যে বেশ ভাব ছিলো। ভালোবাসতো দুজন দুজনকে খুব।
.
.
মাঠের ধারে আসতেই অনুপমের সাথে দেখা হয়ে গেল মৃন্ময়ীর। অনুপম ওকে দেখা মাত্রই বললো, ‘কি ব্যাপার এভাবে টই টই করে গ্রামগঞ্জ ঘুরে বেড়াচ্ছ যে?’

‘এমনিতেই। ওই দিকে যাচ্ছিলাম। সারাদিন তো বাসায় ই বসে থাকি। আর ভালো লাগেনা।’

‘সেটাও ঠিক। চারিপাশে মানুষ জন নানান ধরনের কথা বলতেছে, এভাবে ঘুরঘুর না করাই ভালো। তোমার ভালোর জন্যই বললাম।’

‘কাদের ভয়ে? আমি ওদেরকে ভয় পাই না। আমাকে আর ময়ূরী কে গুলিয়ে ফেলো না অনুপম ভাই। সাহস আছে কারো আমার গায়ে হাত দেওয়ার? হাত কে’টে রেখে দিব।’

অনুপম সামান্য হেসে বললো, ‘মুখে বলা যতটা সহজ, কাজের করা কি ততটা সহজ? পুলিশকে দেখলে তো, তারাই তো কিছু করতে পারলো না। আর আমরা তো?’

‘তা বলে হাল ছেড়ে দেবো? কখনোই না। আমার একমাত্র বোনকে শেষ করেছে, এত তাড়াতাড়ি সব ভুলে যাওয়ার পাত্রী আমি না। আজ হোক, কাল হোক বা ১০ বছর পরেই হোক, ওরা তো পাপের ফল পাবেই।’

‘এইতো পাগলামি করছো। সব সময় গায়ের জোর খাটে না।’

‘আরে ধুর অনুপম ভাই, গায়ের জোর কে খাটাতে যাবে? আল্লাহ কি মাথায় বুদ্ধি কম দিয়েছে নাকি?’

বলেই মৃন্ময়ী উল্টো দিকে চলে গেল দৌড়াতে দৌড়াতে। শিশিরের সাথে দেখা করা দরকার।
পুকুর পাড়ের ঐদিকে আছে ভেবে মৃন্ময়ী ঐ দিকেই গেলো। কিন্তু এখানে এসে কাউকে দেখতে পেল না। হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছিলো। তখনই আচমকা হাতে টান পড়ে। হ্যাঁ, শিশিরই ছিল। এক টানে ওকে সাইডে নিয়ে এলো। দুজনেই দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাঁড়ালো।

শিশির বললো, ‘কি করতে আসছিলে এখানে?’

‘তোমাকে খুঁজতে আসছি। দুই দিন হলো দেখাই হয় না। আর যাও না কেন?’

‘চোখে হারাচ্ছিলে বুঝি আমায়?’

‘চোখে না হারালে বুঝি তোমার খোঁজ নেওয়া যাবে না?’

‘সবার বেলায় যাবে না। তবে আমার বেলায় ঠিকই যাবে।’

মৃন্ময়ী হাসলো। শিশির প্রসঙ্গ পাল্টে বললো, ‘তারপর আর কোন খবর হলো?’

‘না সেদিন যতটুকু ছিল ততটুকুই। পুলিশেরাতো বলেই দিয়েছে তারা কোন কেস নিবে না। কারণ কেউ দৃষ্টান্তমূলক কোনো প্রমাণ দেখাতে পারে নাই। আর প্রমাণ ছাড়া কেউ মুখের কথা বিশ্বাস করবে না। আর সবচেয়ে বড় কথা, তাওহীদের ব্যাপারে কেউ মুখ খুলবে বলে তোমার মনে হয়? জা’নো’য়া’র ছেলে একটা।’

শিশির বিরস মুখে বললো, ‘ওহ।’

‘আচ্ছা থাকো এখন তুমি। মাকে বলে আসি নাই চিন্তা করবে আবার। যাই, আল্লাহ হাফেজ।’

শিশির হাত ধরে আটকালো মৃন্ময়ী কে। বললো, ‘যাই না, বলো আসি।’

মৃন্ময়ী হেসে বললো, ‘আসছি।’

শিশির ওর কপালের উপরে লেপ্টানো চুলগুলো কানের পাশে সযত্নে গুঁজে দিলো।
.
.
মৃন্ময়ী বাড়ি ফিরে আসতেই মায়ের কাছে একগাদা বকা খেলো।
সর্বশেষে বিনীতা বললেন, ‘ময়ূরী রে হারাইছি। এখন তুই শেষ সম্বল। তুই কোথাও যাস না, মা। চোখের আড়াল হোস না। যদি তোর কোনো ক্ষতি হয়ে যায়?’
বলেই মৃন্ময়ী কে বুকে টেনে নিলেন।
.
.
জমিদার আকবর আলীর মেজাজ আজকে খুব চড়া আছে। হিসাবের খাতায় কেমন গরমিল দেখা যাচ্ছে। শহর থেকে অনেক ত্রা’ণ পাঠানো হয়েছে। সেসবের কিছুই মিলছে না। কিছুদিন আগে বন্যায় অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তাই সরকার থেকে বস্তায় বস্তায় ত্রা’ণ গ্রামে পাঠানো হচ্ছে।
এসবের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো বড় ছেলে, তন্ময় কে। তিনি তন্ময়কে ডাক পাঠালেন।

তন্ময় বাবার সামনে এসে মাথা নত করে দাঁড়ালো। আকবর আলী হুংকার দিয়ে বললেন, ‘যত টাকার ত্রা’ণ শহর থেকে পাঠানো হয়েছে, ততগুলো নেই কেন? এত কম কেন তন্ময়?’

‘আমি জানিনা আব্বা। একটা কার্টনও খোলা হয়নি। কিন্তু হিসেবে যদি গরমিল হয়েই থাকে, তাহলে তো তেমন কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না। যেরকম আছে সেরকম ভাবেই মানুষের মধ্যে অল্প করে বিতরণ করে দিন।’

‘বিতরণ? হা হা। বিতরণ কেন করবো? এগুলো যাবে পাশের গঞ্জে। চড়া দামে বিক্রয় হবে।’

তন্ময় অবাক হয়ে বললো, ‘আব্বা এসব আমাদের গ্রামের মানুষের জন্য দেওয়া হয়েছে। তাদেরকে না দিয়ে আপনি পাশের গ্রামে কেন পাঠাবেন? আমাদের এখানকার মানুষ যে না খেয়ে মরবে।’

‘বেশি জ্ঞান আমায় দিতে এসো না। অতিরিক্ত জ্ঞান দেওয়া আমি একদম পছন্দ করি না। যাও নিজের কাজে যাও।’

তন্ময় চলে গেলে জমিদার জহিরকে ডেকে পাঠালেন। বললেন, ‘এখান থেকে একটা কার্টন পুলিশের এসপি অফিসার কে দিয়ে আসো। আর বলবে তাওহিদের ব্যাপারটা যেন একেবারে ধামাচাপা দিয়ে দেয়। চেয়ারম্যান সাহেব যদি এই নিয়ে কিছু বলে, তাহলে বলতে বলবে; কোন প্রমাণ কেউ দিতে পারে নাই।’

তন্ময় দরজার আড়াল থেকে বাবার কথা শুনে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো। এবং শ্লে’ষে’র হাসি দিয়ে ভিতরে ঢুকে গেলো।
.
.
.
তাওহীদ ময়ূরীর কোনো কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছে না। আজকেও ক’ব’র টা দেখে এলো। সব তো ঠিকঠাক ই আছে। তাহলে? কাল রাতের মেয়েটা কে ছিলো? এর মধ্যে কি কোনো জটিল রহস্য আছে? এত ভাবনা মাথার মধ্যে গুলিয়ে যাচ্ছে। তাওহীদ সেই অ’শ’রী’রীকে ভয় পাচ্ছে না কিন্তু বিষয়টা নিয়ে খুব ভাবছে।

আপাতত এসব ভাবনা বাদ দিয়ে ফোন করলো রাজীবকে। রাজিব ফোন ধরতেই তাওহিদ বললো, ‘ওখানকার কাজ কি সব কমপ্লিট?’

‘পাগল তুই? এখন তাই? তোর বাপ কারো কাছ থেকে জানলে তুই শেষ। এসব কাজ রাতের বেলায়, রাতের অন্ধকারেই ভালো হবে।’

‘আচ্ছা ঠিক আছে। তুই আমারে জোয়ারদারের ফোন নাম্বারটা দে।’

‘কাল সকালে তো তোর সাথে দেখা হবেই। তখন পঞ্চাশ হাজার টাকাও দিবো আর ফোন নাম্বার লাগলে সেটাও দিবো।’

‘আচ্ছা।’
.
.
.
.
রাত তখন একটা বেজে পার হয়েছে। শুনশান রাস্তা ধরে রাজিব একাই হাঁটছিলো। হাতের কাজ কমপ্লিট। টাকাটা জমা রেখেছে।
ফুরফুরে মেজাজ নিয়েই বাড়ি ফিরছিলো। কোথা থেকে একটা শ’কু’ন মানব শিশুর মত করে ডুকঁড়ে ডুকঁড়ে কাঁদতে লাগলো।
রাজিবের হঠাৎই গতকাল ময়ূরীর আ’ত্মা’র কথা মনে পড়ে গেলো। কেমন যেন ভয় লাগতে শুরু করলো। পেছন ফিরে তাকাচ্ছে বারবার। মনে হচ্ছে কেউ পিছে পিছে আসছে। রাজীবের ভাবনা বিফলে গেল না। সত্যি কেউ তাকে ফলো করছে। একটা কালো ছা’য়া মূ’র্তি। সারা শরীর কালো পোশাকে আ’বৃ’ত। মুখটা পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে না। হাতে একটা ধারালো চা-পাতি। চাঁদের আলোয় চিকচিক করছে।
রাজিব ভয় পেয়েছে। ঠান্ডা ফুরফুরে বাতাসের মধ্যেও সে দরদর করে ঘামছে। অন্ধকারে খসখস আওয়াজ হচ্ছে। মনে হচ্ছে কিছু একটা গা ঝাড়া দিয়ে উঠেছে। রাজীব তাকালো সেই দিকে। তারার আবছা আলোয় দেখলো কুকুর। একটা নয়, অনেকগুলো।
রাজিব আর সামনে পা বাড়াতে পারল না। কিন্তু আগত কালো পোশাকে আ’বৃ’ত ব্যক্তিটি সামনে এগোতে এগোতে রাজিবের কাছে গিয়ে থামলো। হাতের চা-পাতি উপরে উঠালো।

রাজীব কাঁপা কাঁপা গলায় বললো, ‘কে আপনি? আমার সাথে এমন করছেন কেন? আমার অপরাধ কি?’

‘ তুই একটা ধ’র্ষ’ক! এর চেয়ে আর কত বড় অপরাধ চাস?’

হঠাৎই রাজিব লোকটার পায়ে পড়ে গেলো। কেঁদে কেঁদে বললো, ‘ক্ষমা করে দেন ভাই। আমি আর জীবনে এসব পাপ কাজের ধারে কাছেও যাবো না। ক্ষমা দেন ভাই, আমার জীবন ভিক্ষা চাই।’

‘তোকে মাফ করে দিলে কি ময়ূরী ফিরে আসবে? তোদের মত ন’র’প’শু’কে মাফ করা যায় না। তোরা জীবনেও শোধরাবি না।’

তারপর রাজিবের সামনে সে বসে পড়লো। মুখ থেকে কালো মু’খো’শটা সরালো।
রাজিব দেখলো তাকে। দেখেই ভূত দেখার মত চমকে উঠলো। কিছু বলতে যাবে সেই মুহূর্তেই গলায় কোঁপ পরলো। কাতরাতে কাতরাতে মাটিতে শুয়ে পরলো সে। শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলো।

আগুন্তক রাজীবকে টেনে জমিদার বাড়ির পেছনে নিয়ে গেলো। যেখানে ময়ূরী আত্মহত্যা করেছিলো, ঠিক সেইখানে। তারপর লাশটাকে ওখানেই ফেলে পাশে নদীতে নেমে সারা শরীরে ধুয়ে নিলো। রক্ত দিয়ে মেখে গেছিলো যে।

তারপর সে পা টেনে টেনে হাঁটতে লাগলো তার নীজ গন্তব্যে।
.
.
.
.
চলবে…….

[ কার্টেসি ছাড়া কপি করা নিষেধ ]