পূর্ণতা পর্ব-২০

0
449

#পূর্ণতা❤️
#Writer_তানজিলা_তাবাচ্ছুম❤️

২০.

আলোক ভিতরে ঢুকেই একটু অবাক হয়ে গেলো। চাঁদ পিছন ফিরে হাত দ্বারা মাথা চেপে ধরে আছে। কিন্তু আলোকের দৃষ্টিপাত আটকে যায় চাঁদের উপর। কারণ সে আজ নীল কালারের সব কিছু পড়েছে। আলোক পিছন থেকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে আবেগী কন্ঠে বলল,

‘ আজ চাঁদ পাখি থেকে নীল পরী হয়ে গেছো ‘

চাঁদ কোনো সাড়া দিলো না। আলোক একটু নেড়েচেড়ে উঠে ভ্রু কুঁচকে বললো,

‘ আর ইউ ওকে?’

পরক্ষণে চাঁদ সামনে ফিরলো।‌ ঝাপসা দেখছে। চোখ দুটি কেমন ছাপা ছাপা হয়ে আছে। আলোক অস্থিরতা নিয়ে বললো,

‘ কি হয়েছে তোমার? গোসল করেছো?‌জ্বর নিয়ে গোসল করার দরকার কি ছিল‌?‌’

চাঁদ কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করলো তারপর ইশারায় আলোককে বলল সে ঠিক আছে।আলোক স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মুখে খানিটা হাসি টেনে বলল,

‘ তোমাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে।মা-শা-আল্লাহ্ [টেনে টেনে]। একটা কথা জানো?’

চাঁদ ভ্রু উচুঁ করে কপাল কুঁচকে জানতে চাইলো। আলোক মিষ্টি হেসে বিছানায় হাত পা ছেড়ে শুয়ে পড়লো। তারপর বললো,

‘নীল!আমার এক সময়ের ফেভারিট কালার। ‘

চাঁদ এবার বুঝতে পারল আলোকের বেশি ভাগ জিনিস কেনো নীল কালারের।আলোক চাঁদ কে ইশারায় ডাকলো তারপর উঠে বসে চাঁদের হাত ধরে বললো,

‘ মনে হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর মেয়েটা আমার পাশে। যেদিন তোমার প্রেমে পড়েছি সেদিন থেকে তুমি আমার কাছে দুনিয়ার সব চেয়ে সুন্দর মেয়ে। যাকে আমি পেয়েছি। ‘

বলে আলোক আবারো শুয়ে পড়লো।একজন পুরুষের কাছে ততক্ষণ তার বউ সবচেয়ে সুন্দরী হবে, যতক্ষণ সে নিজের দৃষ্টির হেফাজত করবে।কারণ যে পুরুষ ইচ্ছাকৃত ভাবে পরনারীর দিকে তাকায় সে তখনই তার বউ আর অন্য মেয়ের মধ্যে তুলনামূলক পার্থক্য করতে শুরু করে দেয়। আর এর মধ্যেই শুরু হয় ফিৎনা, পরকীয়া, ব্যাভিচার। আল কুরআনে বর্ণিত আছে ,”মুমিন পুরুষ দের বলো,তারা যেনো নিজেদের চোখের দৃষ্টির হেফাজত এবং লজ্জাস্থানের হেফাজত করে” [সূরা আন নূর:৩১]। তাই প্রত্যেক টি পুরুষের উচিত পরনারীর দিকে না তাকিয়ে নিজের দৃষ্টির হেফাজত করা।মেয়েদের যেমন চৌদ্দ পুরুষের ছাড়া বাকি সবার সামনে নিজেকে ডেকে অর্থাৎ পর্দার আড়ালে থাকতে বলা হয়েছে , তেমনি ছেলদের ক্ষেত্রেও পর্দা না থাকলেও তাদের দৃষ্টির হেফাজত করতে বলা হয়েছে। তারা যেনো চৌদ্দ নারী ব্যতীত বাকি নারীদের সামনে নিজের দৃষ্টি নত করে অর্থাৎ দৃষ্টির হেফাজত করা।
চাঁদ আলোকের দিকে তাকিয়ে কিছু ইশারা করতে লাগলো।আলোক উঠে বসে বোঝার চেষ্টা করলো। কিন্তু আলোক বুঝে উঠতে পারল না। আলোক একটা হাফ ছেড়ে শুধু বললো,

‘ কিন্তু এখন আমার ফেভারিট কালার পার্পেল। নীল আর ফেভারিট না। ‘

______________________

সন্ধ্যার দিকে তাসলিমা আর আশা একসাথে বসে গল্প করছে। কতদিন পর দুই জা একসাথে। আজ কতো বছর পর আবারো এভাবে বসে সময় কাটাচ্ছে তারা। আশা সবসময় তাসলিমা কে ছোট বোনের মতো দেখত আর ভালোবাসতো। এখনো বাসে। তাসলিমা জোরে জোড়ে হেসে বলছে,

‘ আইজ কতো দিন পরে মন খুইলা কথা কচ্ছি ভাবি। আগের দিনের কথা খালি মনে পড়ত। ‘

আশা মাথা নাড়িয়ে সম্মতি দিল।তাসলিমা আবার বললো,

‘সেই নাহিদ যখন ক্লাস নাইন এ পড়ত তখন চইলা গেছিলাম। তারপর থাইকা আর ভালো মতন দেখা হইল কই!’

আশা তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,

‘আহ তাসলিমা। নাহিদের বিয়ে দিচ্ছ কবে? সে তো মাস্টার্স কমপ্লিট করলো তিন বছরের মতন হলো। ‘

তাসলিমা হেসে বললো,

‘দিবো ভাবি ভাবি। একখান চাঁন্দের টুকরা পাই। তারপর দিবো। ‘

আশা আর কিছু বললো না। তাসলিমা বলে উঠলো,

‘ আচ্ছা ভাবি আলোকের বিয়ের তো মেলা দিন ই হইলো। বাচ্চা নাই কেন? ‘

আশা কথা শুনে একটু হিমশিম খেলো। তারপর বললো,

‘হবে তাসলিমা হবে! এত তাড়াহুড়া কি আছে? ‘

‘ না ভাবি দেখেন না মাইসে কিসব কয় ? আর আপনার ও তো বয়স হইয়া যাইতেছে নাতিনাতনির মুখ দেখার ইচ্ছে আছে।তাই কইলাম আরকি। ‘

তাসলিমার কথার উত্তর দেওয়ার মত আশা কিছু খুঁজে পেলো না।

‘আর ভাবি বিয়ের এক বছর হইয়া যাইতেছে। বেশি দেরি করান টা ভালা না। তাই ছোয়াল ডারে বুঝান।’

আশা জোরপূর্বক হাসার চেষ্টা করলো।আর এই টপিক টা স্কিপ করতে সে বললো,

‘ নাহিদের জন্য মেয়ে দেখেছো নাকি? ‘

‘ হ ভাবি দেখছি। ‘

‘কেমন? ‘

বাহির থেকে ফিরছিল আলোক।ভিতরে প্রবেশ করতে দেখলো তাসলিমা উঠে ফোন টা নিতে নিতে বললো,

‘ দাঁড়ান দেখাইতেছি।মাইয়া ডা একবারে জান্নাতের হুর ভাবি। ‘

আলোক সামনে এসে দাড়িয়ে বললো,

‘ মানুষ কে জান্নাতের কোনো কিছুর সাথে কম্পায়ার করা ঠিক না চাচী। ‘

তাসলিমা আশার হাত থেকে ফোন টা নিয়ে বললো,

‘আরে মাইয়া ডারে একবার দেখ। এক বারে জান্নাতের হুর। ‘

বলে আলোকের দিকে ফোন টা এগিয়ে দিলে আলোক বলে উঠে,

‘ আমি কোনো অন্য মেয়েকে দেখার থেকে নিজের দৃষ্টি হেফাজত করা উচিত মনে করি তাই আমাকে এইসব দেখবেন না। আর দুনিয়ার মানুষ যতই সুন্দর হোক তাকে কখনোই জান্নাতের হুর বলা ঠিক না। ‘

তাসলিমা ভ্রু কুচকে কেমন ভঙ্গিতে বলল,

‘হ তোর বউ তো সব চেয়ে সুন্দরী আর বাকি সব অসুন্দরী ।’

আলোক মুখে খানিকটা হাসি টেনে বললো,

‘ মুমিন বান্দার জন্য জান্নাতের নেয়ামতের কথা হজরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহুর বর্ণনায় প্রিয়নবি বলেছেন, আল্লাহ বলেন, ‘আমি আমার পূণ্যবান বান্দাদের জন্য এমন সব নেয়ামত সামগ্রী তৈরি করে রেখেছি, যা কোনো চোখ কখনো দেখেনি; কোনো কানও তার বর্ণনা কখনো শুনেনি। তাছাড়া কোনো মানুষ কখনো তা প্রত্যক্ষ করেনি; কেউ কোনো দিন তা ধারণা করতে পারেনি।’ এ কথাগুলোর সমর্থনে তোমরা কুরআনের পাকের এ আয়াতটি তেলাওয়াত করতে পার-‘সৎ কাজের প্রতিদান স্বরূপ তাদের জন্য চোখ শীতলকারী যে সব সম্পদ-সামগ্রী গোপন রাখা হয়েছে, কোনো প্রাণীই তার খবর রাখে না।’ (সুরা হামীম আস-সিজদা : আয়াত ১৭) (বুখারি ও মুসলিম)

হূর কি আল্লাহর নিয়ামত না নেক বান্দার জন্য না? যে নিয়ামত কখনো কল্পনা করা সম্ভব না, তা আপনি একজন মানুষ দ্বারা রিপ্রেজেন্ট করছেন? বাহ্!

২. “তিন বস্তু দ্বারা হুর সৃষ্টি- (১) নিম্মাংশ মিশ্ক -এর তৈরী (২) মধ্যভাগ আম্বরের তৈরী (৩) উপরিভাগ কাপুর জাতীয় পদার্থ দিয়ে তৈরী। তাঁদের চুল ও ভ্রু হবে কালো এবং নূরের রেখা সমৃদ্ধ” (তিরমিযি শরীফ)

আপনাদের আগে হূর আর মানুষের মধ্যে আগে তফাৎ বুঝতে হবে। দুইজনের সৃষ্টিকৌশল সম্পূর্ণ ভিন্ন।

হূরের যে বর্ণনা কুরআন ও হাদিসে আছে তার সাথে কখনো কোনো মানুষের তুলনা সম্ভব না। তাদের রূপের বর্ণনা, কণ্ঠ, আচরণ, সৃষ্টিকৌশল সব মানুষ হতে অনেক ভিন্ন।

হূরদের কণ্ঠ এমন যে, কয়েক দশক বছর শুনে যাবে জান্নাতিরা কিন্তু আয়েশ মিটবে না। মানুষের পক্ষে এটা সম্ভব?

উপমা, রূপকে আপনি অবশ্যই তুলনা করতে পারেন কিন্তু নিশ্চয়ই এমন কিছুর যা মানুষের কল্পনাতীত এবং যার মধ্যে বিন্দুমাত্র হলেও কোনো না কোনো ক্ষেত্রে মিল থাকবে।তাই মানুষ কে এইসব বলে নিজের পাপের বোঝা আর বাড়াবেন না।©unknown

আর হ্যা চাচী অন্য কারো কাছে আমার বউ সুন্দর না হলেও আমার কাছে বিশ্বের সব চেয়ে সুন্দর মেয়ে আমার বউ।ইভেন প্রতিটি স্বামীর কাছে তার বউ সব চেয়ে সুন্দরী লাগার ই কথা, যদি তাদের মধ্যে ‘ভালোবাসা ‘ নামক এই শব্দ টা থাকে তবে।আর যদি না লাগে তবে বুঝবেন তাদের মধ্যে ভালোবাসার নেই আছে ‘ভালো লাগা’ আর ‘মোহ’ যেটা সময়ের পরিপেক্ষিতে বদলে যায়।’

তাসলিমা আর কিছু বলল না। রাগে ফুঁসতে ফুঁসতে সিড়ি বেয়ে নিজের ঘরে চলে গেল।আলোক পিছন ঘুরে তার যাওয়ার দিকে তাকালো। আশা গলা ঝেড়ে আলোক কে ডাকলো,

‘ আলোক! ‘

আলোক সামনে ফিরলো। আশা তার সমানে এসে হিমশিম খেতে লাগলো। আলোক উৎকণ্ঠ নিয়ে বললো,

‘ মা কিছু বলবা? ‘

আশা আমতা আমতা করে বলতে লাগলো,

‘ আসলে বাবা বলছিলাম কি আমার তোর বাবার তো বয়স হয়ে গেছে। আর তোদের বিয়েরও তো এক বছরের মতন হতে চললো। আমাদের তো অনেক আশা , প্রত্যাশা আছে তাইনা বল? ‘

আলোকের আর বুঝতে বাকি রইলো না তার মা কি সম্পর্কে কথা বলতে চাচ্ছে।আলোক একটা বিরক্তি কর শ্বাস ফেলে বললো,

‘ যখন সময় হবে তখন এমনি বেবি আসবে মা। আল্লাহ্ যখন চাবেন তখন এমনিতেই আসবে। আমি বুঝি না তোমরা এই গুলা নিয়ে এত হাইপার হচ্ছো কেনো? ‘

‘ না মানে বাবা আশেপাশের মানুষেরা কতোজন বানিয়ে বলছে। ‘

‘মা তুমি ওদের কথায় কবে থেকে কান দিতে শুরু করলে? কিছু কিছু মানুষ তো থাকবেই এইরকম ।যারা নিজেদের সময় নষ্ট করে অন্যের পিছে লাগবে। ‘

আশা এবার ভারী কন্ঠে বলল,

‘ আলোক কথাটা মানুষ ছাড়াও আমার নিজের। আমারও তো ইচ্ছে আছে নিজের নাতি নাতনীর মুখ দেখে মরবো। আর তোর ও ইচ্ছে আছে তাইনা? মনে আছে তোকে ছোট বেলায় ‘ বড় হয়ে কি হবি ‘ এই প্রশ্ন টা জিজ্ঞেস করলে তুই কি উত্তর দিতি? ‘

তারপর হেসে বললো,

‘ বলতি তুই বড়ো হয়ে বাবা হতে চাস।’

বলে একটু জোড়ে হেসে ফেলল আশা। এদিকে আলোক লজ্জা তে মাথা নত করছে। ছোট বেলায় না বুঝে কিসব বলত ভেবে তার লজ্জা বোধ হচ্ছে।তারপর আশা হাসি থামিয়ে গম্ভীর কণ্ঠে বলল,

‘ এখনো কি সময় হয়নি আলোক? ‘

আলোক বলার মতন কিছু খুঁজে পেল না। সে জানতে চাইলো তার মা কি চায়।

‘ তোরা কাল সময় করে ডাক্তারের কাছে যাস। ‘

আলোক ছোট করে ‘ আচ্ছা ‘ বললো। আশা আলোকের হাতের দিকে লক্ষ্য করে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো,

‘ কিসের কাগজ আলোক ?’

আলোক কাগজ গুলো সামনে এনে বললো,

‘ এগুলো চাঁদের। ‘

আশা আর কিছু বললো না। তারপর আলোক নিজের ঘরে চলে এলো। এসে দেখলো চাঁদ ব্যালকনিতে দাড়িয়ে। আলোক চাঁদকে ডাকলো তারপর পেপার এ সাইন করতে বলল। কিন্তু চাঁদ সাইন করার সময় তার হাত কাঁপতে শুরু করে।আলোক চাঁদকে বলল অন্য কোথাও আগে লিখতে তারপর এই পেপার এ লিখতে। একটা খাতা আর কলম এগিয়ে দিল চাঁদের দিকে। চাঁদ কিছু লিখল। আলোক চাঁদের থেকে খাতাটা নিয়ে দেখতেই বিষ্ফোরিত দৃষ্টিতে চাঁদের দিকে তাকালো। তারপর বলল ,

‘ চাঁদ? তুমি নাহিদের নাম কেন লিখছো? ‘

চাঁদ কেমন অস্থির হয়ে আলোকের দিকে তাকালো। চোখ দুটো কেমন ছলছলে।দেখে মনে হচ্ছে খুব চিন্তিত। চাঁদ আহাম্মকের মত চেয়ে রইলো। আলোক বলল,

‘ তুমি “নাহিদ্রিয়ান” মানে নাহিদের নাম লিখেছো! ‘

চাঁদ তার মাথায় দু’হাত দেয় তারপর কয়েক কদম পিছিয়ে যায়। চোখ থেকে অনাবৃত অশ্রু ঝরছে। আলোক হতবাকের মত তাকিয়ে আছে। চাঁদের অবস্থা লক্ষ্য করে আলোক তার কাছে গিয়ে বলল,

‘ রিল্যাক্স। এটা কোনো ফ্যাক্ট না। মাথায় যেটা এসেছো সেটাই লিখেছো। তুমি কালকে সাইন করো। ‘

_____________

গভীর রাত হয়েছে। নাহিদ তার ঘরে খালি পায়চারি দিচ্ছে। মেয়েটাকে অর্থাৎ চাঁদকে দেখা না পর্যন্ত তার কিছুতেই শান্তি পাচ্ছে না। তার মায়ের থেকে জানতে পেরেছে মেয়েটা আলোকের বউ।আর তার নাম “চাঁদ”।নামটা শুনে নাহিদের মন আরো ব্যাকুল হয়ে উঠেছে। সে ভাবছে সেই মেয়েটা হয়তো চাঁদের মতন ই সুন্দর হবে। মনে মনে কথা ভাবছে তার সম্পর্কে। চাঁদ আলোকের ঘর নাহিদের পাশেই। একপাশে রুমে তার মা বাবা থাকছে আর অপর পাশে চাঁদ আলোক। নাহিদ চোখ বন্ধ করে খালি তখনের দেখা সেগুলোকে মনে করছে আর বিশ্রী ভাবে বাঁকা হাসছে। কিছুক্ষণ পর নিজের শুষ্ক ঠোঁট টাকে জিহ্বা দ্বারা ভিজিয়ে কামড়ে ধরে বলল,

‘ তোমাকে না দেখা পর্যন্ত শান্তি নেই। তোমাকে আমি কাল দেখবোই সুইটহার্ট।

#চলবে…