প্রতিশোধ পর্ব-০৩

0
151

#প্রতিশোধ
#শিখা
#পর্ব_৩

শুভ ঘুম থেকে ওঠার আগেই, আমি ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে বাইরে চলে যাই।
গিয়ে সবার জন্য সকালের নাস্তা তৈরি করি..

নাস্তারর টেবিলের বসে আমার শাশুড়ি আমাকে প্রশ্ন করে আমার শরীরের এখন কি অবস্থা…

আমিঃ জি মা ভালো

শাশুড়ি এরপর বলে যে আজকে তারা বাইরে যাবে তাই আমি আর শুভ একা থাকবো যেন সাবধানে থাকি…

আমি মাথা নড়াই

নাস্তা শেষ হতেই আমার শশুর শাশুড়ি বাইরে চলে যায়

আমি বাড়ি ঘুরে দেখছিলাম, বিয়ের পর থেকে বাড়ি ঘুরে দেখা হয়নি

আমি বাসার ছাদে চলে যাই, একা দাঁড়িয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম এমনটা আমার সাথে না হলেও পারতো। ছোট থেকে বাবা কে দেখে আসছি মার উপর অত্যাচার করতে। আর এখন আমি নিজে ওইটা ফেস করতেছি…(একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলি)

আমার শরীরের ব্যথা এখনো কমেনি, হঠাৎ পেছন থেকে শুভর আওয়াজ শুনি, ওর আওয়াজ শুনে আমি আর মাথায় ঘোমটা দিয়ে দাড়াই..

ও আমার কাছে এসে দাঁড়ায়

শুভহ সাহস তো অনেক বেড়ে গেছে দেখা যায়, এখানে কি ছেলেদের রূপ দেখাইতে আসছিলি(রাগে দাতে দাত ঘেসে)

কথাটা শুনে আমি কিছু বলি না চুপ হয়ে থাকি

শুভ: কালকে তো খুব সাধু সাজছিলি আমার বন্ধু তোকে ধরেছিল দেখে, আজ দেখি ছাদে এভাবে দাঁড়িয়ে আছিস…

আমি খেয়াল করলাম পাশের ছাদে কিছু ছেলে ক্রিকেট খেলছিল, আমি এতটাই নিজের চিন্তায় ছিলাম যে আমার পাশের ছাদ খেয়াল করিনি

শুভ আমার এক হাত চেপে ধরল আমি ব্যাথায় কুকড়ে উঠলাম

শুভঃ আমার সামনে ভালো সাজবি না ঠিকই, একটু আগে ঠিকি ছেলেদের সামনে এভাবে কোমড় বের করে দাঁড়িয়ে ছিলি..

আমি খেয়াল করিনি (কাপা গলায় কথাগুলো বললাম)

শুভ আমার হাত ছেড়ে দিয়ে বলল যে আমার জন্য কফি বানিয়ে নিয়ে আয় তাড়াতাড়ি

শুভ নেমে গেল আমিও পিছন পিছন গেলাম, ‌ রান্না ঘরে গিয়ে কফি বানাতে শুরু করলাম ময়না বলল আফামণি থাক, আমি বানাই দিতাছি

আমি ওকে না বলে নিজের বানিয়ে নিয়ে আসলাম শুভর জন্য

শুভ আমার দিকে তাকালো এরপর বলল শোন আজ আমার কিছু বন্ধুরা আসবে। তাই তুই ওদের সামনে ভালো ব্যবহার করবি,ওদের সব কথা শুনবি..

আমি মাথা নাড়ালাম

তোর জন্য কিছু কাপড় আছে ওখানে(একটি ব্যাগ এগিয়ে দিয়ে) রেডি হয়ে থাকবি সন্ধ্যার সময়, মনে থাকে যেন.

শুভ বের হতেই আমি কাপড় গুলো দেখলাম…
একটি ওয়েস্টার্ন ড্রেস রাখা আছে, আমি দেখে পুরাই অবাক আমার বাবার অনেক টাকা থাকতেও আমি কখনো এত শর্ট ড্রেস পরিনি..

আমি চুপচাপ বিছানায় বসে রইলাম আর ভাবতে থাকলাম এত দুঃখ কেন ছিল আমার কপালে

সন্ধ্যা হয়ে গেছে। এমন সময় শুভ আসে এসে দেখে আমি বসে আছি, এখনো রেডি হয়নি এটা দেখে শুভ রাগে দরজায় একটা লাথি মারে আমি দাঁড়িয়ে পড়ি ভয়ে..

এসে আমার হাত চেপে ধরে দেয়ালে আমি ভয়ে কিছু বলতে পারছিলাম না

শুভঃ তোর এত বড় সাহস, তোকে আমি রেডি হওয়ার কথার বলার পরও তুই এখনও রেডি হস নাই

আমি কাপা কাপা কন্ঠে বললাম আমি এত ছোট ড্রেস এর আগে কখনো পরিনি

শুভঃ পরিস নি, এখন পড়তে হবে চুপচাপ পরে নিচে আয়।
এটা বলে শুভ নিচে চলে যায়, আমি কোন উপায় না পেয়ে সেই শর্ট ড্রেস পরে নেই..

শুভ ড্রেসের সাথে চেহারা লুকানোর জন্য মাস্ক ও দিয়েছিল, আমি ড্রেস পরে নিচে নেমে আসি, নিচে নামতেই সবাই আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, আমি ভয়ে ভয়ে নিচে নামছিলাম

শুভ আমার হাত ধরে টেনে ওর বন্ধুদের মাঝে নিয়ে যায়

শুভর একটা বন্ধু এসে আমাকে টেনে ওর কাছে নেই আমি ছারানোর চেষ্টা করি

রায়হানঃ ওয়াও দোস্ত তোর বউ তো সেই, পুরাই একটা সেক্সী মাল এ টু জেড টেস্ট করে দেখতে হবে কি বলিস(শুভকে চোখ টিপ মেরে)

শুভ: টেস্ট করতে ইচ্ছে হলে নিয়ে যা আমার বউ আর তোর বউ তো একই কথা..

কথাটা শুনে যেন আমি আকাশ থেকে পরী একটা মানুষ কিভাবে এতটা নিচু হতে পারে, নিজের বউকে কিভাবে অন্যের বউ বলতে পারে

আমি নিজেকে ছাড়িয়ে সেখান থেকে চলে যাই, শুভ তার বন্ধুকে চোখের ইশারা দিয়ে বলে আমার কাছে যেতে..

এই ছেলেটা আবার আমার কাছে আসে আমি ভয়ে কাঁদছিলাম, কারন এখানে একটি মানুষও আমাকে সাহায্য করতে আসছিল না এমনকি আমার স্বামীও দাড়িয়ে মজা নিচ্ছিল

ছেলেটা এসে এক ঝাঁটকায় আমাকে তার কাঁধে তুলে নেয় আমি চিৎকার দিয়ে উঠি,কিন্তু কে কোন কিছু করে না, সবাই দূরে দাঁড়িয়ে হাসছিল আর হাততালি দিচ্ছিল..

এই ছেলেটা আমাকে তুলে ধরে একটি রুমের ভিতরে নিয়ে দরজা লাগিয়ে দে, আমি ভয়ে কান্না করছিলাম আর বারবার হাত জুর কর বলছিলাম প্লিজ আমার কোন ক্ষতি করবেন না, আমাকে ছেড়ে দেন

রায়হানহ তোমার মত মালকে কিভাবে ছাড়তে পারি বলো, এমন সেক্সি বডি আসো বেবী দু,জনই মজা করি..

ছেলেটা পশুর মত আমার উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে, আমি নিজেকে বাঁচানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছিলাম কিন্তু ছেলেটার সাথে পেরে উঠছিলাম না

ঠিক তখনই দরজা ভেঙে ভিতর ঢুকে ফয়সাল , ফয়সাল এসে রায়হানকে তুলে ওর মুখে ঘুসি দেয়..

আমি এখন বসে কান্না করছিলাম ফয়সাল আমার দিকে একবার তাকিয়ে আবার রায়হানকে পিটানি শুরু করে

ফয়সাল একবার আমার দিকে তাকায় তারপর বিছানার চাদর আমার দিকে দেয় আমিও নিজেকে ভালো করে ডেকে নি

এতক্ষণে বাকি সবাই ও চলে আসে সবাই ফয়সালকে থামায়,রায়হান রাগে বেরিয়ে যায়..

ফয়সাল রাগে শুভকে বলে তুই এত নিচে কিভাবে নামতে পারলি, একটি মেয়েকে তুই এভাবে কেমনে দিতে পারিস বল আমাকে.

শুভঃ তোর দেখি আমার বউয়ের প্রতি খুব দয়া। তোর যদি ওর প্রতি মন এসে থাকে তাহলে তুই নিয়ে যা, তুই খা আমি তো তোকে না করছি না, তুই আগে বলবি না যে তোর ওর উপর মন এসে গেছে

ফয়সাল এটা শুনে শুভর মুখে একটা ঘুসি মারে শুভ পাল্টা ফয়সালকে মারে এভাবে তুমুল ঝগড়া লেগে যায়, বাকিরা তাদের ছাড়িয়ে দেয়, এরপর একে একে যার যার বাসায় চলে যায়

সবাই চলে যেতেই শুভ আমাকে টেনে রান্না করে নিয়ে যায়, রান্না ঘরে গিয়ে অটো গ্যাস অন করে আর পাশে থাকা একটি চামচ উঠে ওটা গরম করে আমি ভয়ে কাপছিলাম কিন্তু শুভর কাছ থেকে নিজের হাত ছাড়াতে পারছিলাম না…

শুভ আমাকে ঘুরিয়ে আমার পিঠের উপর চামচ দিয়ে চাপ দিতে শুরু করে, এত গরম চামচ আমার পিঠে লাগায় আমি বারবার চিৎকার দিয়ে উঠছিলাম, আরও কয়েকবার এমন করার পর শুভ শান্ত হয়..

আমি ততক্ষণে বেহুশ হয়ে মাটিতে পড়ে গেছি

হুশ ফিরতেই নিজেকে বিছানায় পাই, কাত হয়ে শুয়ে আছি আমি, সামনেই দাঁড়িয়ে কান্না করছে ময়না পিঠের ব্যথা আমি অনুভব করছিলাম

ময়নাঃ আফা মনি আপনি ঠিক আছেন..

আমি ওর দিকে তাকিয়ে কিছু বলতে পারছিলাম না শুধু একটা মুচকি হাসি দেই

চলবে

(ভুল হলে হ্মমার দৃষ্টিতে দেখবেন)