#প্রতিশোধ
#শিখা
#পর্ব_৭
ইদানিং শুভ আমার সব কথাই শুনে, আমার কেয়ার করে, কোথাও ঘুরতে গেলে সাথে নিয়ে যায়…
এখন নিজেকে খুব ভাগ্যবতী মনে হয়, দেখতে দেখতে আরো একমাস চলে যায় এখন আমার আর শুভর মাঝে কোন সমস্যা নেই…
একদিন শাশুড়ি মার সাথে রান্না করছিলাম, ঠিক তখনই শুভ রান্না ঘরে আসে
আর তার মাকে বলে ডেড তোমাকে ডাকছে..
শাশুড়ি মা চলে যায়, শুভ এসে আমাকে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে..
এরপর আমার কাঁধে মাথা রাখে
আমিঃ কাজ করছি তো, এখন আপনি যান..
শুভ: সেটাই তো হচ্ছে, আমি কিছুদিনের জন্য বাহিরে যাবো,অফিসের কাজে..
আমি কাজ করা বন্ধ করে দেই ইদানিং শুভ আমার অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে!
এখন যদি শুভ কোথাও যায় তাহলে আমার খুব খারাপ লাগবে..
শুভ আমাকে শক্ত করে ধরে..
শুভ: আমি অফিসের কাজে যাচ্ছি, ডেড অসুস্থ তাই আমাকেই যেতে হবে… আমারও ইচ্ছে করছে না আমার লহ্মী বউকে রেখে যেতে..
আমি শুভর দিকে ঘুরি আর ওর গালে হাত রাখি..
আমিঃকাজ তো করতেই হবে তাই না, আর যেহেতু ডেড অসুস্থ তাহলে আপনাকেই করতে হবে..
শুভ: ও আমার লক্ষী বউ টা (এটা বলে শুভ আমার কপালে চুমু খায়)
এমন সময় ময়না আসে ও এসে কাশি দেয়, আমি আর শুভ দু,জন দু,দিকে চলে যাই
শুভঃ ময়না তোকে আমি দেখে নিবো( এটা বলে বের হয়ে যায়)
ময়না আমার কাছে আসে, আর আমার দিকে তাকিয়ে থাকে
ময়না সব সময় আমার দিকে তাকিয়ে থাকে, মাঝে মাঝে মনে হয় কিছু বলতে চায়, কিন্তু কিছুই বলে না..
শুভ অফিসের কাজে চলে গেছে, আমি রুমে একা বসে ছিলাম রাত তখন দুইটার বেশি হবে, বসে শুভর কথাই ভাবছিলাম, এই কয়দিনে মানুষটা খুব আপন হয়ে গেছে
হঠাৎ করে গাড়ি আসার শব্দ শুনে আমি খুশি হয়ে যাই,ভাবি শুভ আসছে, আমি দৌড়ে বেলকনিতে যাই, কিন্তু গিয়ে অবাক হই সেটা শুভর গাড়ি ছিলো না
একটা আধবয়সী লোক ছিল, আমার শশুর তাকে নিয়ে বাসার ভিতরে ঢুকে
এত রাতে কোন বন্ধু আসলো আবার, এখন কি আমি যাব? যাওয়াটা কি ঠিক হবে? এসব ভাবতে ভাবতেই আমি রুমের বাহিরে আসি..
এরপর আমি সোজা গেস্ট রুমে চলে যাই, গিয়ে দেখি কেউ নেই, তারপর ডেড এর রুমের দিকে যাই। কিন্তু গিয়ে দেখি শাশুড়ি মা একা শুয়ে আছেন..
আমি অবাক হয়ে যাই মাত্রই তো দেখলাম? গেল কোথায়, তখনই আবার মনে হয় এত বড় বাসা হয়তো কোথাও না কোথাও হবে..
আমার রুমে চলে যাই, গিয়ে দেখি ফোন রিং হচ্ছে ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি শুভ কল করেছে তাও ভিডিও
মুখে একটি আনন্দের হাসি ফুটে ওঠে, আমি কলটা রিসিভ করি কিন্তু ক্যামেরা অফ করে রাখি..
শুভ: এটা কি হলো? তুমি সামনে আসছো না কেন? আমি তো তোমাকে দেখার জন্য কল করেছিলাম তাই না,? আমার একটুও ভালো লাগছে না আমার বউটাকে ছেড়ে থাকতে..
আমিঃতাহলে চলে গেলেন কেন? আমাকে সাথে নিলেই পারতেন(অভিমান করে)
শুভ: তোমাকে আমি আমার কাজের আশেপাশেও দেখতে চাই না..
আমি অবাক হয়ে যাই এটা কেমন কথা আমি কি এতই অকর্মা নাকি..
শুভর সাথে ফোনে কথা বলতে বলতে ঘুমিয়ে পড়ি, ঘুম থেকে উঠে দেখি কল তখনো চলছে, ওপর পাশে শুভ ঘুমিয়ে আছে..
আমি শুভকে দেখছিলাম আর মুচকি মুচকি হাসছিলাম, কেউ বলবে এই মানুষটা কিছুদিন আগে আমার খুব অপ্রিয় ছিল, আর এখন কত কাছের হয়ে গেছে
শুভঃ এভাবে লুকিয়ে লুকিয়ে দেখার কি আছে? তোমার বর হই আমি, মন ভরে দেখতে পারো আমি মানা করবো না
শুনে আমি অবাক হয়ে যাই, শুধু শুধু চোখ বন্ধ করে ঘুমের অভিনয় করেছিলো
আমি: আপনি তাহলে জেগে ছিলেন?
শুভ :আমি তো সারারাত ঘুমাইনি, তুমি আমার চোখের সামনে আছো, তোমাকে দেখতে দেখতে রাত কেটে গেছে..
হঠাৎ কারো আওয়াজ আসে, শুভ আমাকে বলে আমি তোমাকে পরে কল করবো এখন রাখছি এটা বলে শুভ কল কেটে দেয় আমি ঠিক মত বায় ও বলতে পারিনা
আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে যাই, গিয়ে দেখি শাশুড়ি মা বসে নাস্তা করছে, শ্বশুর আমার সেখানে ছিলো না,আমি গিয়ে পাশে বসি..
শাশুড়ি: তোমার ঘুম ভালো হয়েছে?
আমিঃ হ্যা মা..
আমি মনে মনে ভাবছিলাম মাকে কি জিজ্ঞেস করবো, কাল রাত কে এসেছিল? জিজ্ঞেস করবো ভেবেও চুপ হয়ে গেলাম, বলবে এত রাত পর্যন্ত আমি কেন জেগে ছিলাম..
আমি নাস্তা করছিলাম এর মাঝেই শাশুড়ি মা উঠে চলে যায়.
আমিঃ ময়না তুমিও আমার সাথে বসে খাবার খাও
ময়নাঃ না ছোট ম্যাডাম আপনি খান আমি পরে খামুনি
ময়না আমার বয়সী হবে ওর চেহারাটা আমার খুব মায়াবী লাগে, একদম নিষ্পাপ মনে হয় খুব ভদ্রভাবে কথাও বলে
আমার তাকিয়ে থাকা দেখে, কিছুটা হয়তো বিরক্ত হয় ময়নার আর ও চলেও যায়
হঠাৎ উপরে কিছু পড়ার আওয়াজ হয়, আমি দৌড়ে উপরের দিকে যাই, গিয়ে দেখি শাশুড়ি মা রুমে বসা কিন্তু সেখানে মা একা বসে ছিল আর আশেপাশে কিছু ভাঙ্গাও ছিল না..
আমি: মা কিসের আওয়াজ ছিল? আপনি ঠিক আছেন? কিছু ভেঙ্গেছে কি?
শ্বাশুড়ী: না তো কিসের আওয়াজ শুনলে তুমি? আমি তো বসে বসে টিভি দেখছিলাম,হয়তো টিভির শব্দ
আমিঃ আরে হ্যাঁ, আমি ভাঙ্গার শব্দ শুনলাম তো? আপনি ময়না কে জিজ্ঞেস করেন..?
শাশুড়ি মা ময়নাকে ডাকে
ময়নাও বলে ও কি কোন কিছুর আওয়াজ পায়নি, কিন্তু আমি ঠিকই আওয়াজ পেয়েছিলাম..
আমি রুমে গিয়ে এসব ভাবছিলাম তখন শুভ কল করে..
..চলবে..
(কোন ভুল হলে হ্মমার দৃষ্টিতে দেখবেন)