প্রতীক্ষা পর্ব-০২

0
101

#প্রতীক্ষা”
২য় পর্ব
শেখ জারা তাহমিদ

৭.
আশফিকের শংকা, অস্থিরতা কাটলো পরদিন বিকালে। একটা বিচারের কাজে ওর আব্বা গিয়েছিলো দারোগা বাড়িতে। বড়ছেলেকে সঙ্গে ডাকলেন তিনি। না চাইতেও যেতে হয়েছিলো ওকে।

আর ক্যামেলিয়া এসেছিলো দারোগার নাতনি সুলতানার কাছে। সুলতানা ওর বান্ধবী। গ্রামের স্কুলে একসাথে পড়েছে ওরা। ক্যামেলিয়া সাতনরী চলে গেলেও, চিঠিতে যোগাযোগ হয় ওদের।

আশফিক যখন এলো, ক্যামেলিয়া তখন দারোগা বাড়ির ছাদে বসে বড়ই খাচ্ছে। আর কলেজ পালিয়ে ‘বেদের মেয়ে জোসনা’ দেখতে যাওয়ার ঘটনা বলছে সুলতানাকে। হেসে গড়াগড়ি খেতে খেতে সুলতানা যখন এই সেই প্রশ্ন করছিলো, তখনই আশফিককে দেখেলো ক্যামেলিয়া। দারোগা বাড়ির গেইটের সাথে লাগোয়া মেহেদী গাছটার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলো কালো মতন দেখতে ছেলেটা। আকর্ষিত হবার কিছুু নেই তবুও যেনো বারবার চোখ যাচ্ছিলো ওদিকেই। স্বাভাবিক স্বরে সুলতানার কাছে জানতে চেয়েছিলো ছেলেটাকে চেনে কি না। তোতাপাখির মতো মুখস্থ বুলি আওড়ে সুলতানা জানিয়েছিল আশফিকের পরিচয়। বড় ভাইয়ের বন্ধুকে সে ভালো করেই চেনে।

গল্প, আড্ডা শেষে ক্যামেলিয়া যখন বাড়ি ফিরবে বলে ছাদ থেকে নামলো, আশফিক তখনই দেখলো ওকে। গাঢ় খয়েরী কামিজ পরা অতি আকাঙ্খিত মেয়েটাকে দেখে থমকে গেলো। মাঝখানে সিঁথি কেটে চুলে বিনুনি করা মেয়েটাকে অসাধারণ ঠেকলো ওর কাছে। লাভ অ্যাট সেকেন্ড সাইট বুঝি একেই বলে! এতগুলো মানুষ বসা উঠোনে। কতজনে কত কথা বলছে। ওসব কিছুতেই ও আর মন দিতে পারলো না। একনাগারে তাকিয়ে রইল অচেনা মেয়েটার দিকে। ওর চোখের দৃষ্টি অনুসরণ করে পাশেই দাঁড়ানো সাব্বিরও তাকালো ওদিকে। প্রিয়বন্ধু এমন মুগ্ধ চোখে কাকে দেখছে? ওর বোন সুলতানাকে? নাকি বোনের বান্ধবী ক্যামেলিয়াকে?

৮.
ক্যামেলিয়া বেরিয়ে যাবার সময় একবার চোখাচোখি হলো ওদের। ব্যস। আশফিক যেনো জমে গেলো। তবে দেরি করলো না আর। দ্রুত নিজেকে সামলে, সাব্বিরকে জিজ্ঞেস করেছে মেয়েটাকে ও চেনে কি না। সাব্বির সায় দিলে, শুরুতেই জানতে চেয়েছে বিয়েটা এই মেয়েরই কি না! মুচকি হেসে সাব্বির তখন বলেছে, “নাম না জিগায়া বিয়ার খবর নিতেসিস! তুই তো শ্যাষ দোস্ত! ডাক্তার বাড়িত কী এরজন্যই ডাব চুরি করতে গেসিলি? প্রেমে পইরা তুই চোর হয়া গেলি!” সাব্বিরের ঠাট্টায় আশফিক চোখ পাকিয়ে তাকায়। ওর চোখের আকুতি যেনো বুঝতে পারে সাব্বির। বন্ধুর অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে জানায় ক্যামেলিয়ার কথা।

ক্যামেলিয়া! ক্যামেলিয়া ফুলে মুগ্ধ হয়ে রবীন্দ্রনাথ আস্ত এক কবিতা লিখেছিলো। আশফিক কোনো কবি নয়। কিন্তু ও অতি সাধারণ দেখতে ক্যামেলিয়াতে মুগ্ধ হয়ে ভালোবেসে ফেলেছিলো!

৯.
পরদিন সকালে, আশফিকের চিঠি নিয়ে এলো সুলতানা। চিঠি পেয়ে ক্যামেলিয়া যতটা না অবাক হলো তার চেয়ে বেশি ঘাবড়ে গেলো!

বাড়ি থেকে দূরে থাকে বলে ওকে কতকিছু সামলে চলতে হয় সে খবর কেউ জানে না। সাতনরীতে ওর বান্ধবী যারা আছে তাদের ধারণা, সম্পর্কে জড়ানোটা ক্যামেলিয়ার জন্য সহজ। আম্মা-আব্বার শাসন, চোখ রাঙানোর ভয় নেই। কিন্তু সত্যিটা হলো ওর জন্য সম্পর্কে জড়ানো খুব কঠিন। ভালো থাকা-পড়ার জন্য ওকে নানা বাড়ি পাঠিয়েছে আব্বা। যতটা বিশ্বাস করলে একা ছেড়ে দেওয়া যায় ততটা ভরসা করেছে। সেই ও যদি কোনো সম্পর্কে জড়ায়, আব্বার ভরসা হারাবে না? আর নানা-নানী কত আদরে রাখেন ওকে। কেউ যদি এসে বলে ওনাদের আদরের নাতনীকে কোনো ছেলের সঙ্গে দেখেছে! তখন? তখন ওনাদের অসম্মান হবে না? ছেলেবন্ধু ওর নেই অমন না। ক্লাসের ছেলেরা সবাই কমবেশি বন্ধু৷ কিন্তু এদের কারো সাথে কখনও একা কথা বলেনি ক্যামেলিয়া। আড্ডা দেয়নি। চিঠিপত্র দু-তিনবার যে পায়নি তাও না। কিন্তু সেসব চিঠি কখনো খুলে দেখেনি।

সুলতানাও এসব কথা জানে৷ চিঠি নিয়ে আসতে চায়নি ও। কিন্ত আশফিক ভাই এতো জোর করলো। বেচারা! যদি শুধু জানতো ক্যামেলিয়া তার চিঠি খুলেও দেখবে না! আহারে!

ক্যামেলিয়া সত্যিই চিঠি খুলে দেখলো না। সুলতানাকে বললো সাফ জানিয়ে দিতে, ও এসবে নেই। ওর পিছু যেনো না ঘুরে। তখন সুলতানা ওকে প্রশ্ন ছুড়ে দিলো, “তাইলে কালকে ওমনে তাকায়তিসিলি কেন? বারবার তাকাইসোস, আমি দেকসি।” ক্যামেলিয়া মুখ ঝামটে জবাব দিলো, “আমি তাকাইসি বুঝলি কেমনে? তুই ও তারমানে তাকায়া ছিলি। আমি তো জিজ্ঞাস করি নাই তুই কেন তাকায়সোস!”

সুলতানা ভারী মজা পেলো। মিটিমিটি হাসলো। ক্যামেলিয়ার অবস্থা ও বুঝতে পারছে। পছন্দ হলেও মেয়েটা স্বীকার করবে না। চিঠি তো নেবেই না। প্রেমও করবে না। আহারে আশফিক ভাই!

ক্যামেলিয়া সাতনরী ফিরে গিয়েছিলো সেদিন দুপুরেই। আউট অফ সাইট, আউট অফ মাইন্ড কথাটা কী সত্যি হয়েছিলো ওর বেলায়?

১০.
ক্যামেলিয়া চিঠি ফিরিয়ে দেওয়াতে আশফিক খুব একটা আশাহত হয়নি। এরকম কিছু হতেই পারে, সেটা ও ভেবেছিলো। তবে কেনো ফিরিয়ে দিয়েছে সেটা জেনে বোকা বনে গেলো। ১৭/১৮ বছরের একটা মেয়ে এমন কারণ দেখাতে পারে সেটা ওর ভাবনাতেই আসেনি। মেয়েটা খুব অন্যরকম! এই অন্যরকম মেয়েটার সাথে ওর জীবনটা নিশ্চয়ই খুব দারুণ কাটবে!

পিছিয়ে না গিয়ে আশফিক আদাজল খেয়ে ক্যামেলিয়ার পিছনে পরলো। ওর বন্ধুদের নিয়ে চলে গেলো সাতনরী। বিকেল বেলায় গ্রামের ছেলেরা দলবেঁধে মাঠে আড্ডা দেয়, ফুটবল/ক্রিকেট খেলে। ও বন্ধুদের নিয়ে সেরকম এক খোলা মাঠে যেতে শুরু করলো। প্রথম কদিন নিজেরাই আড্ডা দিলো। টংয়ে বসে চা খেলো। ঝালমুড়ি খেলো। জীবনেও সিগারেট ছুঁয়ে না দেখা ছেলেটা দামি সিগারেট কিনলো। বন্ধুদের মাঝে যারা সিগারেট খায়, তারা আয়েশ করে সেই সিগারেট টানলো! ফলাফল যা হবার তাই হলো। মোটামুটি সবার নজর ওদের দিকে চলে এলো। ফ্রিতে সিগারেট খাওয়ায় এমন বন্ধু কে না চায়! ব্যস। আশফিকেরও বন্ধু জুটে গেলো। জহির। জহিরই ওদের নিয়ে গেলো ওর সার্কেলে। পরিচয় করালো অন্য গ্রামের বন্ধু বলে! আশফিকের চলনে-বলনে যে স্মার্টনেস ছিলো সেটাই আকৃষ্ট করলো সবাইকে। আরও সপ্তাহখানেক পার হলে, ওরা ফুটবল খেলতে আমন্ত্রণ করলো ওকে। মেরিন একাডেমিতে রেগ্যুুলার ফুটবল খেলা এক্সপার্ট আশফিক সে আমন্ত্রণ লুফে নিলো। তিনটে গোল দিয়ে রীতিমতো হিরো বনে গেলো!

এতকিছুর পরও ক্যামেলিয়ার সার্কেল পর্যন্ত পৌঁছোনো বাকী ছিলো আশফিকের। ভেবেচিন্তে প্ল্যান সাজালো ও। সেইমতো একদিন বিকালে জহিরকে নিয়ে গেলো ক্যামেলিয়ার কলেজের ঠিক পাশের এক হোটেলে। গরম গরম সিংগাড়ার সাথে আড্ডা আরও জমবে কি না! গুনে গুনে জহির যখন সিংগাড়া কিনতে ব্যস্ত, আশফিক তখন ক্যামেলিয়া কলেজ থেকে বেরোচ্ছে কি না সেটা খেয়াল রাখছিলো। ঘড়ির কাঁটায় সাড়ে চারটে বাজতেই ক্যামেলিয়া বেরোলো। বান্ধবীর সঙ্গে গল্প করতে করতে একমনে হেঁটে যাচ্ছিলো। যেনো এই প্রথমবার দেখছে, অমন করে তাকিয়ে রইল আশফিক। রয়ে সয়ে জহিরকে দেখালো আকাশী-সাদা কামিজ পরনে ক্যামেলিয়াকে। জিজ্ঞেস করলো মেয়েটা কে! জহির চেনে কি না! বন্ধু নিবেদিতপ্রাণ জহির বললো, “অত ভালো কইরা চিনি না। কিন্তু সকালের মইদ্দে খোঁজ বাইর কইরালামু!” জহিরের কথায় আশফিক কি একটু মুচকি হাসলো?

১১.
জহির ঠিক খোঁজ বের করে ফেললো। নাম থেকে শুরু করে সবটা উগরে দিলো আশফিকের কাছে। ক্যামেলিয়ার সব ইনফো জানা ছেলেটা তন্ময় হয়ে শুনলো সবকিছু। ভাবখানা এমন যেনো সে প্রথমবার শুনছে! ক্যামেলিয়া মিঠাভাঙার মেয়ে এটা শুনে ও এতো অবাক হয়ে জহিরের দিকে তাকলো যেনো ক্যামেলিয়াকে ও মিঠাভাঙায় আগে দেখেই নি! আশফিকের সঙ্গে থাকা সাব্বির ওর এই অভিনয় প্রতিভা দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো! তাতে কী! বাকীসব বন্ধুরা জানলো সাতনরীতে এসে একটা মেয়েকে আশফিকের পছন্দ হয়েছে! সেই মেয়ে আবার ওদেরই মিঠাভাঙার! কী চমৎকার কাকতালীয় ব্যাপার! যাকগে! আশফিকের পছন্দ মানে এই মেয়েই ওদের ভাবী হবে!

এরপর সবকিছু সহজ হয়ে গেলো। জহিরসহ অন্য বন্ধুরাই যা করার করলো। ক্যামেলিয়ার সার্কেলের ছেলেদের ডেকে পাঠালো। গ্রামের বড়ভাইরা ডাকলো বলে আসতেই হলো ওদের। চা-সিংগাড়া-সিগারেট খেয়ে যখন ফিরে গেলো এরা সবাই আশফিক ভাইয়ের ফ্যান! ক্যামেলিয়া বিরক্ত হয় ওরকম কিছুই আশফিক করলো না। শুধু ক্যামেলিয়ার আশেপাশের মানুষগুলো ওর বন্ধু হয়ে গেলো! সেই বন্ধুরাই ইনিয়েবিনিয়ে আশফিকের কথা ক্যামেলিয়াকে বলে। তাদের হাতেই চিঠি আসে, আবার ফিরে যায়।

ক্যামেলিয়া ভেবে পায়না এসব সম্ভব কী করে হচ্ছে! মাস তিনেকের মাঝে কী অমন করলো ছেলেটা! সবাই মন্ত্রমুগ্ধের মতো ওর নাম জপতে থাকে কী করে! এই যে ক্যামেলিয়া বলার চেষ্টা করে ছেলেটা ওর পিছু নিয়ে মিঠাভাঙা থেকে সাতনরী এসেছে, কেউ সেটা শুনলে তো! তাদের আশফিক ভাই কারো পেছনে ঘুরঘুর করার মতো ছেলেই নাকি না! রাগে-দুঃখে ক্যামেলিয়া কী করবে দিশে পায় না। আর আশফিক ছেলেটা সরাসরি ওর সামনেও আসে না। ও যে সব চিঠি ফিরিয়ে দিচ্ছে তাও হাল ছাড়ছে না। পরেরদিন ঠিক নতুন চিঠি পাঠিয়ে দিচ্ছে। সামনেই টেস্ট পরীক্ষা। অথচ পড়ালেখায় মন দিতে পারছে না৷ আশফিকের সঙ্গে ও কী একবার কথা বলবে? চিঠি পাঠিয়ে নাকি সরাসরি?

আশফিকের রেজাল্ট ততোদিনে বেরিয়ে গেছে। চট্টগ্রাম যাওয়া দরকার। চাকরিতে জয়েন করার চেষ্টা করা দরকার। তবুও ওর যেনো হুঁশ নেই। তেমনই একদিনে ক্যামেলিয়া ডেকে পাঠালো ওকে। কলেজের পেছনে জোড়াপুকুরের কাছে। এতোদিন আশফিক ওকে দেখেছে দূর থেকে। তাকিয়েছে আড়চোখে। কিন্তু এবার সামনাসামনি দেখা হবে। কথাও হবে। ক্যামেলিয়া কী বলতে পারে সেই আশংকায় আশফিক অস্থির হয়ে রইলো পুরোটা সময়।

ক্যামেলিয়া এলো। আশফিককে দেখে ওর কথা রা জড়িয়ে এলো। গুছিয়ে কিছু বলতে পারলো না। এলোমেলো ভঙ্গিতে বললো, “শুনসি আপনি ইন্জিনিয়ার। আপনার কোনো কাজ নাই? প্রতিদিন এই গ্রামে আসেন কেন? আপনারে তো বলসি আমার পিছে না ঘুরতে। তাও যন্ত্রণা কেন করতেসেন? সামনে আমার ইন্টারের টেস্ট পরীক্ষা। আপনার চিঠির যন্ত্রণায় পড়তে পারতেসি না।” আশফিক ওর কথা শুনে চুপ করে কিছু ভাবলো। ভাবনা শেষে মুচকি হেসে প্রশ্ন করলো, “তুমি আমার চিঠি নাও না। খুলে দেখো না। পড়ো না। তাও তোমার পড়ালেখায় যন্ত্রণা হয়? কেনো, বলো তো ক্যামেলিয়া!”

আশফিকের মুখে ওর নাম শুনে ক্যামেলিয়া কেঁপে উঠলো। ছেলেটার কথা এতো সুন্দর হবে কেনো! ও খানিক বিরতি নিয়ে রুক্ষ স্বরে বললো, “এতসব জানি না। আপনি আর না আসলে খুশি হবো।”

ক্যামেলিয়া এটুকু বলে আর দাঁড়ালো না৷ চলে গেলো। আশফিক তখনও ঠায় দাঁড়িয়ে। মিনিট দশেকের এই কথোপকথনে ও যেনো মাতোয়ারা হয়ে রইলো। মনে মনে কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে সেদিন মিঠাভাঙা ফিরে এলো।

১২.
পরদিন রাতের বাসে আশফিক চট্টগ্রাম ফিরে গেলো। ফেরার খবর ক্যামেলিয়াকে জানিয়েছে চিঠি পাঠিয়ে। নিজে যায়নি। ওর মনে হচ্ছিলো ক্যামেলিয়াকে দেখলে আটকে যাবে। ফিরতে পারবে না। কিন্তু ফেরা দরকার। চাকরি দরকার। ক্যামেলিয়াকে পেতে হলে ফিরত হবে, চাকরি করতে হবে। ক্যামেলিয়ারও ওকে পছন্দ সেটা গতকালের কথায় বুঝেছে আশফিক। এটাও এ’কমাসে বুঝেছে ক্যামেলিয়া কোনোভাবেই কোনো সম্পর্কে জড়াবে না। ক্যামেলিয়ার আব্বা যেখানে যার কাছে বিয়ে দিবে, ক্যামেলিয়া হাসিমুখে তাকেই বিয়ে করবে। তাই আশফিকের টার্গেট এখন ক্যামেলিয়ার আব্বা! চাকরি ছাড়া এই টার্গেট জয় করা কঠিন। সব ভেবেচিন্তে তাই চট্টগ্রাম ফিরেছে আশফিক।

চট্টগ্রাম এসে আশফিক খুব ব্যস্ত হয়ে পরলো। একাডেমিতে গেলো। স্যারদের প্রিয় ছাত্র রেজাল্টের পর দেখা করেনি, এতে তারা কিছুটা মনঃক্ষুণ্ন ছিলেন। ও যাওয়াতে সেটা কেটে গেলো। গোলাম রাব্বী স্যার ওকে কার্গো জাহাজে জয়েন করতে সাজেশন দিলেন। কোন কোন কোম্পানিতে সিভি পাঠাতে হবে সেই গাইডলাইনও দিলেন। আশফিক ঠিক সে মত কাজ করলো। সপ্তাহ দেড়েকের মাথায় টপ শিপিং কোম্পানি থেকে ইন্টারভিউর ডাক পরলো ওর। ঢাকায় এসে চমৎকার একটা ইন্টারভিউ দিয়ে চাকরিটা ও পেয়ে গেলো। জয়েন করতে হলো শর্ট নোটিশে। বাড়ি যাওয়ার আর সুযোগ হলো না। সোজা মংলা সমুদ্রবন্দরে গিয়ে জাহাজে উঠে পরলো। তার আগে চিঠি পাঠালো ওর আব্বা আর জহিরকে। ক্যামেলিয়াকে সরাসরি চিঠি পাঠানো যাবে না। তাই জহির চিঠি পেয়ে সেটা পৌঁছে দেবে ক্যামেলিয়ার কাছে। আশা করা যায় ম্যাডাম এবারে চিঠি ফেলে দিবে না!