প্রিয় আসক্তি পর্ব-০৬

0
184

#প্রিয়_আসক্তি🔥
তিতলী
পর্ব,,,৬

,❤️❤️❤️❤️❤️❤️

আজ দু বছর পর বাড়িতে ফিরেছেন সাজিদ খান। ইউএস এ যে প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছিলেন সেটা বিপুল সাফল্য অর্জন করেছে আর তাই তিনি বাসায় এসেই একটা সাকসেস গ্র্যান্ড পার্টি অর্গানাইজ করেছেন। আলোয় ঝলমল করছে খান বাড়ি।

অনেকক্ষণ ধরে পিয়ুসকে কল করছে বিভা। কিন্তু কর পিক করছে না পিয়ুস। বিরক্তিতে বিড়বিড় করছে বিভা।

:-কোথায় আছে কে জানে। এখনো আসছে না কেনো কে জানে। উফফ এই লোকটা হয়তো পাগলই বানিয়ে ফেলবে। তাড়াহুড়ো করে রুমে ঢুকতে নিতেই ধাক্কা খায় প্রিয়তার সাথে। প্রিয়তা কপাল ডলতে ডলতে বলে:-

:- উফফ,,,কানা হয়ে গেছিস নাকি বিভা!! আহ কপালটা গেলো আমার।

:-ওহ সরি সরি আপু আমি দেখতে পাইনি। বলেই বিভা প্রিয়তার দিকে ভালো করে তাকিয়ে চোখ বড় বড় করে মুখে হাত রেখে বলে,,,

:-উফ প্রিয়তাপু কি সুন্দর লাগছে তোমায়!!

প্রিয়তা একটা বেবি পিংক কালারের ওপর সাদা স্টোনের জর্জেটের শাড়ি পড়েছে। সাথে একসাথে মেচিং চুড়ি, গলায় সাদা স্টোনের একটা সিম্পল পেটেন্ড,, কানে সাদা ঝুমকা,,সোনালী চিকন চেইনের ঘড়ি,, লম্বা চুলগুলো পিটময় ছড়িয়ে দিয়েছে। তাতেই পরীর মত সুন্দর লাগছে প্রিয়তাকে।

বিভার কথায় হালকা হাসে প্রিয়তা। বলে:-

:-তোকেও অনেক সুন্দর লাগছে। বলে বিভার গাল টেনে দেই।

বিভা হেসে রুমে চলে যায়। প্রিয়তা আনমনে নিচে নামতে যাবে তখনই কেউ হ্যাঁচকা টানে একটা রুমে এনে দরজা লাগিয়ে দেয়। মুহুর্তেই ঘটে যাওয়া ঘটনায় হতভম্ব প্রিয়তা। ভালো করে তাকিয়ে দেখে এটা বিভোরের রুম।
প্রিয়তা পেছনে তাকিয়ে দেখে বিভোর বুকে হাত বেঁধে দরজার সাথে পিক লাগিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।দৃষ্টি প্রিয়তার দিকে নিবদ্ধ।

:-এ কি বিভোর ভাই আপনি আমাকে এখানে কিনে আনলেন কেন??

বিভোরের মুখে কোন কথা নেই। সে এক মনে প্রিয়তাকে দেখতেই ব্যস্ত। প্রিয়তাকে একদম পদ্ম ফুলের মত লাগছে। কি অসম্ভব মায়ায় জড়ানো চেহারা। দেখলে চোখ ফেরানো দায় হয় বিভোরের।প্রিয়তার কথায় এগিয়ে যাই তার দিকে। পকেট থেকে একটা কিছু বের করে আনে। তারপর প্রিয়তার হাত ধরে সামনে আনে। হাত থেকে ঘড়িটা খুলে একটা সুন্দর সাদা স্টোনের ব্রেসলেট পরিয়ে দেয়। বলে,,

:-এটা যেন কখনো তোর হাত থেকে খুলতে না দেখি!!

প্রিয়তার তাকিয়ে দেখে অসম্ভব সুন্দর একটা ব্রেসলেট। খুব পছন্দ হয় প্রিয়তার। মিষ্টি হেসে বলে,,

:-ওয়াও খুব সুন্দর দেখতে তো!! এটা আমার??

বিভোর মুচকি হেসে বলে,,
:- তোর বলেই তো তোকে দিলাম !পছন্দ হয়েছে??

:- খুব সুন্দর এটা!!

;- হাত থেকে কখনো খুলবি না. খুললে তোর খবর আছে!!

তারপর প্রিয়তার কপালে চুমু দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
প্রিয়তা ওখানে দাঁড়িয়ে লাল নীল হচ্ছে। মনে মনে ভাবে (আচ্ছা বিভোর ভাইয়া কেন হুটহাট করে আমার কাছে আসে? এভাবে চুমু দেয় কেন? আমাকে সত্যিই পছন্দ করে? আমার মনে যেরকম অনুভূতি আছে সেই একই অনুভূতি কি বিভোর ভাইয়াই মনেও আছে? যদি থেকেই থাকে আমাকে বলে না কেন? এরকম নানা প্রশ্ন ঘুরপাক খায় প্রিয়তার মনে। কিন্তু উত্তর একটিরও নেই।

এদিকে খান বাড়িতে গেস্টরা চারিদিকে গিজগিজ করছে। সবাই যে যার মত ড্রিঙ্কস স্ন্যাক্স এনজয় করছে।
সাজিদ খান নিজে দাঁড়িয়ে থেকে সবকিছু তদারকি করছেন। জমে উঠে পার্টি।
বিভার সবকিছু থেকে বাইরে এসে গার্ডেনের দিকে আসে। এদিকে লোকজন কম। একটু ফাঁকা জায়গা দেখে দাঁড়ায়। আবারো কল করে পিয়ুস কে।কিছুক্ষনের পরেই কেউ একজন পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে বিভাকে। মুহূর্তের মুখে হাসি ফোটে বিভার।কারণ সে জানে পেছনের মানুষটাকে!! কিন্তু মুখটাকে সিরিয়াস করে হাতের কনুই দিয়ে পিয়ুসের পেটে গুঁতো দেয়,,

:-উপপ,,,এটা কি করলে বিভাবতি ❤️

বিভা রেগে মেগে পিয়ুসের দিকে তাকালো।

পিয়ুস একটা ক্যাবলা মার্কা হাসি দিয়ে কানে হাত দিয়ে বলল,,

:-সরি !!

তারপর বিভাকে আলতো করে জড়িয়ে ধরে বলে,,

:-রাগ করে না জান। একটা কাজে আটকে গেছিলাম। তাই কল পিক করতে পারিনি। আর একটু লেট হয়ে গেছে।

বিভা তাও কোন কথা বলে না। পিয়ুস বিভার মুখটা উঁচু করে ধরে বলে,,

:-তুই জানিস বিভাবতি রাগলে তোকে শ্যাউড়া গাছের পেতনীর মতো লাগে,,,😂

বিভা এমনিতেই পিয়ুসের ওপর রাগ দেখাচ্ছিলো কিন্তু এবার বিভা সত্যিই রেগে যায়,,, রেগেমেগে চলে আসতে নিলেই পিয়ুস হাত ধরে আটকে দেয়। তারপর পকেট থেকে একটা সুন্দর লকেট দেয়া চেইন বের করে বিভার গলায় পরিয়ে দেয়। বলে,,,

:-মজা করে বলেছি জান। এই পৃথিবীতে সব থেকে বেশি সুন্দর আমার বিভাবতি ❤️

বিভা আর রাগ করে থাকতে পারে না। হেসে জড়িয়ে ধরে পিয়ুসকে।

___________

এদিকে পার্টিতে একজন বিভোরের প্রত্যেকটা এক্টিভিটির উপর নজর রাখছে। লোকটা এতক্ষণে বিভোরের রুমের বাইরে দাঁড়িয়ে ছিলো। এটা তো বুঝতে পেরেছে সে, বিভোর রুমে যে মেয়েটাকে নিয়ে গেলো সেই মেয়েটা বিভোরের স্পেশাল কেউ।
এই মেয়েটাকে টার্গেট করা যায়। বিভোরকে কাবু করতে হলে এই মেয়েটাকে তাদের দরকার। লোকটা পকেট থেকে ফোন বের করে কাউকে একটা কল দেয়।

এদিকে বিভোরও রেডি হয়ে নিচে আসে বিভোর গেস্ট দের মধ্যে কিছু লোকের সাথে কথা বলে।আশেপাশে গেস্টরা নিজেদের মতো এনজয় করছে। প্রিয়তা তার ফুপা ফুপির সাথে দাঁড়িয়ে আছে।

এত এত লোকজন ভিড়ের মাঝে প্রিয়তার হাঁসফাঁস লাগে। এরকম পার্টিতে বা বিয়ের অনুষ্ঠানে থাকতে ভালো লাগে না প্রিয়তার। প্রিয়তা একটু ফ্রেস এয়ার নেওয়ার জন্য বাইরে আসে। বাড়ির বাইরের গার্ডেনে ঘোরাফেরা করে।

হুট করেই চোখে যাই পিয়ুস আর বিভার দিকে। বিভা আর পিয়ুস একে অপরকে জড়িয়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে। হা করে তাকিয়ে থাকে প্রিয়তা। এটা কি দেখছে সে😲😲 তার ভাই আর বিভা!!!হুয়াট এ সারপ্রাইজ ব্রো😍😍😍

প্রিয়তা কিছু বলতে নিবে তার আগেই পেছন থেকে কেউ একজন প্রিয় তার মুখে রুমাল চেপে ধরে। আচমকা এরকম হতেই প্রিয়তা কিছু বুঝে উঠতে পারে না। ছটফট করতে করতেই জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।

দুজন লোক প্রিয় তাকে টেনে গাড়িতে তোলে তারপর ফোন করে কাউকে ইনফর্ম করে।

:-কাজ হয়ে গেছে বস!! বিভোর খানের প্রাণ ভোমরা এখন আমাদের হাতে।

অপর পাশের লোক উল্লাসে চিৎকার করে ওঠে।

:-ওয়াও গ্রেট!! এই না হলে কাজের কাজ!! নিয়ে আয় মেয়েটাকে আমাদের পুরনো গোডাউনে। বিভোর খানের ডানা কাটার সময় এসে গেছে!!

:-জি বস!!

___________
এদিকে পার্টিতে বিভোর অনেকক্ষণ ধরেই প্রিয়তাকে দেখতে পাচ্ছে না। তার সাথে কথা বলছিলো তাকে এক্সকিউজ মি বলে উপরে আসে বিভোর।

প্রিয়তার রুমে গিয়ে দেখে প্রিয়তা সেখানেও নেই। প্রিয়তার ফোনটা বেডের উপর পড়ে আছে। ভ্রু কুচকে আসে বিভোরের। তারপর এক এক করে সবার রুমে দেখে। কোথাও নেই প্রিয়তা। উপর থেকে নিচের দিকে তাকিয়ে চারিদিকে চোখ বুলাই,, নাহ কোথাও নেই প্রিয়তা।
দ্রুত নিচে নেমে এসে বাড়ির বাইরে গার্ডেনে যায়। গার্ডেনে পৌঁছাতেই দেখে বিভা আর পিয়ুস বাড়ির দিকে এগিয়ে আসছে। পিউসকে দেখেই হন্তদন্ত বিভোর এগিয়ে যায়। বিভোরকে বিচলিত দেখে পিয়ুস জিজ্ঞাসা করে,,

:- কি ব্যাপার ভাই! তোকে এত বিচলিত দেখাচ্ছে কেন? কি হয়েছে?
বিভোর কোনো রকম ঢোক দিলে বলে,,,

:-প্রিয়,,,প্রিয়কে দেখেছিস?? ওকে গার্ডেনে??
বিভা এগিয়ে এসে বলে,,

:- কই না তো ভাইয়া!! প্রিয়তাপু তো আসেনি এখানে।শুধু আমরাই ছিলাম। প্রিয়তাপু আসলে তো আমরা দেখতে পেতাম।
বিভোরের গলা শুকিয়ে আসে।এরই মধ্যে বিভোরের হাত-পা কাঁপতে শুরু করেছে। কয়েকবার শুকনো ঢোক গিলে বলে ,,

:-বাড়িতে কোথাও প্রিয় কে খুঁজে পাইনি!! অনেকক্ষণ দেখতে না পেয়ে খুঁজছিলাম! ভাবলাম হয়তো বাইরে আছে ।কিন্তু প্রিয় কোথাও নেই।

এবার পিয়ুস বিচলিত হয়!!

:-কি বলছিস ব্রো!! প্রিয়ু নেই মানে?? কোথায় তাইলে? ওর কোন বিপদ হলো না তো!!

নিঃশ্বাস আটকে আসে বিভোরের।কিছু একটা ভেবে তাড়াহুড়ো করে ফোন বের করে। তারপর প্রিয়তার লোকেশন ট্র্যাক করার চেষ্টা করে ।প্রিয়তার লোকেশন দেখে হাত পা কাঁপতে থাকে বিভোরের।
পিয়ুস এগিয়ে এসে বলে,,

:- কি হয়েছে??
বিভোর ফোনটা পিয়ুষের দিকে এগিয়ে দেয়।
পিয়ুস তাকিয়ে দেখে প্রিয়তার লোকেশন বাড়ি থেকে প্রায় ৬-৭ কিলোমিটার দূরে দেখাচ্ছে। সাথে সাথে শুকনো ঢোক দিলে পিয়ুস ।অবাক হয়ে বিভরের দিকে তাকিয়ে বলে,,

:- এটা কি করে সম্ভব?? এই সময় প্রিয়ু বাড়ি ছেড়ে এতো দূরে কি করে পৌঁছালো??নিশ্চয়ই প্রিয়ু কোন বিপদে আছে।

বিভোর তাড়াতাড়ি গেটের দিকে দৌড়াতে শুরু করে। পিয়ুস কে বলে তাড়াতাড়ি গাড়ি বের করতে ।এদিকে বিভা প্রায় কেঁদেই দিয়েছে।সেও ওদের সাথে দৌড়ে গাড়িতে উঠে পড়ে।

________

বাড়িতে চার চারটা ছেলে মেয়েকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। চিন্তাই মাথায় হাত দিয়ে সোফায় বসে আছে সাজিদ খান। তার পাশেই রোশনি আহমেদ কান্নায় ভেঙে পড়েছে। প্রিয়তার মা কাঁদছে আবার রোশনি আহমেদকে সামলাচ্ছে। এদিকে প্রিয়তার বাবাও পার্টিতে এসে ছেলেমেয়েদের নিখোঁজ হওয়ার খবর শুনে নিস্তব্ধ হয়ে গেছে ।একসাথে কোথায় গেল তারা?? বেড়াতে গেলে তো বলে যেতো। হুট করে পার্টি ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার মতো ইরেস্পন্সিবল নয় বিভোর। তাহলে কি কোন বিপদে পড়লো!! এই শঙ্কায় এখন তাদের ভীত করে রেখেছে। পার্টি অনেক আগেই শেষ হয়েছে। বাসা প্রায় খালি। শুধু কাছের কিছু বন্ধুবান্ধব আত্মীয়-স্বজন রয়েছে তারাই তাদেরকে সামলাচ্ছে।

____

হাত-পা বাঁধা অবস্থায় একটা চেয়ারে বসে আছে প্রিয়তা মুখে কাপড় বাধা।
জ্ঞান ফিরতেই নিজেকে এভাবেই একটা রুমে আবিষ্কার করে প্রিয়তা।
ভয়ে মেরুদন্ড দিয়ে ঠান্ডা স্রোত বয়ে যায়। কোথায় এটা!! কারাই বা তাকে এভাবে তুলে এনেছে। তারা প্রিয়তার কাছেই বা কি চায়!! নানা রকম আশঙ্কায় ভীত হয়ে আছে প্রিয়তা।
ঠিক তখনই দরজা খুলে রুমে প্রবেশ করে একজন। প্রিয়তার জ্ঞান ফিরতে দেখে বিশ্রী রকম হাসি দিয়ে বলে,,,,

:-বাহ জ্ঞান ফিরে এসেছে দেখছি!!

:-,উম,,উমমমম,,, মুখ বাধা থাকায় কথা বলতে পারে না প্রিয়তা এদিকে সোটার জন্য ছটফট করতে থাকে।

প্রিয় তাকে ছটফট করতে দেখে অট্টহাসি দেয় লোকটা।
তার লোকজনকে ডেকে বলে,,,

:-আরে কে কোথায় আছিস ।মুখটা খুলে দে দেখি কি বলতে চাই!!

একজন এগিয়ে গিয়ে প্রিয় তার মুখ থেকে কাপড় টা খুলে দেয়।

সাথে সাথে প্রিয়তা চিৎকার করে বলে,,,,

:-কারা আপনারা ???আর আমাকে এভাবে তুলে কেন এনেছেন?? আমার সাথে আপনাদের কি শত্রুতা??

:-আরে দাঁড়াও দাঁড়াও!! এত হাইপার হচ্ছ কেন?? একসাথে এতগুলো প্রশ্ন করলে কোনটার জবাব দেবো বলো তো? বলে আবার শয়তানি হাসি হাসতে থাকে!

:-প্লিজ আমাকে ছেড়ে দিন!! আমি আপনাদের কি ক্ষতি করেছি??

:-কি ক্ষতি করেছো মানে! তুমি আমাদের কোনো ক্ষতি করোনি।ক্ষতি তো করেছে ওই বিভোর খান। আর সেই ক্ষতিপূরণ দেবে তুমি।
আমাকে এই নাহিদ চৌধুরীকে ক্ষেপিয়েছে বি.কে। বিভোর খানের জন্য কত লস হয়েছে আমাদের। বিভোর খানকে তো আমি শেষ করবোই,, কিন্তু তার আগে যে ভয়ানক যন্ত্রণা তাকে দেবো তার জন্যই তো তোমাকে প্রয়োজন,, কারণ তুমি হলে বিভোরের প্রাণ ভোমরা!!

অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি প্রিয়তা। তার মানে এরা বিভোরের বিজনেস রাইভাল এই জন্যই বিভোরকে বিপদে ফেলতে জব্দ করতেই প্রিয়তাকে তুলে এনেছে!! কিন্তু এরা এটা কেনো বলছে যে সে বিভোরের প্রান ভোমরা!!!
মাথায় তালগোল পাকিয়ে যায় প্রিয়তার।

:-দেখুন আপনারা কিন্তু ভুল করছেন। এখনো সময় আছে ছেড়ে দিন আমাকে। বিভোর ভাইয়া যদি জানতে পারে তাহলে কিন্তু আপনাদের একজনকে ও ছেড়ে দেবে না। ছেড়ে দিন আমাকে।

:-হাহাহা তোমার আশিক ঠিকই জানতে পারবে। তবে সে তোমাকে বাঁচাতে আসবে না। আসবে আমাদের হাতে মরতে।

:- ছিঃ লজ্জা করে না একটা মেয়েকে ইউজ করে কারো ক্ষতি করতে। কাপুরুষ কোথাকার,,,থুঃ

এবার ভয়ংকর রেগে যায় নাহিদ চৌধুরী। প্রিয়তার গালে ঠাস করে চড় বসিয়ে দেয়। আচমকা চড়ে চেয়ার উল্টে পড়ে প্রিয়তার কপালে আঘাত লাগে। মুহুর্তেই রক্ত চুঁইয়ে পড়ে কপল বেয়ে। চড়ের আঘাতে ঠোঁটের কোণেও ফেটে রক্ত বের হয়
নাহিদ চৌধুরী আবার এগিয়ে গিয়ে প্রিয়তার চুলের মুঠি ধরে টেনে তোলে।
আবারো চড় দিতে যাবে তখনই কেউ দরজায় লাথি মেরে ভেঙে ফেলে। নাহিদ চৌধুরী ঘুরে দাঁড়িয়ে দেখতে পায় বিভোরকে।
বিভোরের চোখ যায় প্রিয়তার দিকে। রক্ত মাখা মুখের দিকে তাকিয়ে বুকের ভেতরে হৃদপিণ্ডটা যেনো মুচড়ে ওঠে।
প্রচন্ড গতিতে এগিয়ে এসে নাহিদের বুকে জোরে একটা লাথি দেয়। উল্টে পড়ে নাহিদ চৌধুরী।

বিভোর দ্রুত এগিয়ে এসে প্রিয়তার হাত পায়ের বাঁধন খুলে দেয়।টেনে তুলে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে। প্রিয়তা থরথর করে কাঁপছে। মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।
তখনই নাহিদ চৌধুরী ঘুরে এসে পেছন থেকে বিভোরের মাথায় আঘাত করতে যাবে এমন সময় হুড়মুড় করে ঢোকে পিয়ুস। সে এতোক্ষণে বাইরের লোকদের কাম তামাম করে দিয়েছে। এবং ঘরে ঢুকতেই বিভোরকে আঘাত করতে যাচ্ছে দেখে নাহিদ চৌধুরীর পিঠের মাঝ বরাবর ঘুসি বসিয়ে দেয়। আবারো মুখ থুবড়ে পড়ে নাহিদ চৌধুরী।
পাশের রুম থেকে আরো দুজন বেরিয়ে আসে। একজন পিয়ুস কে আঘাত করতে যায় আরেকজন নাহিদ চৌধুরীকে টেনে তোলে তার হাতে গান।
বিভা এগিয়ে এসে প্রিয়তাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দেয়। বিভোর এখনো প্রিয়তার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। বুকের ভেতর টা যন্ত্রনআয় ছিঁড়ে যাচ্ছে। সে বেঁচে থাকতে তার প্রিয়র শরীর থেকে রক্ত ঝরলো। গলায় কাটার মতো বিঁধে বিভোরের।

ঠিক তখনই প্রিয়তা খেয়াল করে নাহিদ চৌধুরী বিভোর কে শ্যুট করতে যাচ্ছে।
প্রিয়তা মুহূর্তেই বিভাকে ঠেলে ফেলে বিভোরকে আড়াল করে দাঁড়ায় আর একটা বুলেট এসে প্রিয়তার বাহু ভেদ করে বেরিয়ে যায়।
মুহুর্তেই থমকে যায় চারপাশ!! বেপারটা বোধগম্য হতেই চিৎকার করে ওঠে বিভা। পিয়ুস দৌড়ে এসে বোনকে পড়ে যাওয়া থেকে আগলে ধরে। বিভোর যেনো পাথর হয়ে গেছে। মুহুর্তেই ঘটে যাওয়া ঘটনায় সে বিমুঢ় হয়ে গেছে।
এই সুযোগে নাহিদ চৌধুরী সরে পড়ে।
ঠিক সেই সময় পুলিশ এসে নাহিদ চৌধুরীর লোকেদের আটক করে। কিন্তু মূল হোতা নাহিদ চৌধুরীকে হাত ছাড়া করে ফেলে।

এতক্ষণে বিভোর চিৎকার করে ওঠে। বুক ভাঙ্গা আর্তনাদ করে ওঠে বিভোর। প্রিয়তার কাছে ছুটে এসে কোলে তুলে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে দেয়।
নিঃশ্বাস যেনো বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয় তার,,,,,

To be continue,,,,,,,,,