প্রেমনদীর মাঝি পর্ব-০৫

0
377

#প্রেমনদীর_মাঝি
#পর্ব_৫
#মুসফিরাত_জান্নাত

রাত আটটার দিকে খালুজানের হোটেলে উপস্থিত হলাম আমরা।পৌঁছে দেখি খালুজান নিজস্ব ব্যাগ পত্র গোছাচ্ছেন।এখান থেকে চলে যাওয়ার উদ্যোগ হয়তো।ঠিক এই মুহুর্তে আমাদের সেখানে উপস্থিত হতে দেখে কিছুটা অবাক হলেন তিনি।এটা তার ধারনার বাহিরে ছিলো।কিছু সময় বিষ্ময় প্রকাশে প্রশস্ত চোখে তাকিয়ে থেকে নিজেকে ধাতস্থ করে নিলেন তিনি।তারপর আমাদের ভিতরে ডেকে বসতে দিলেন।বেশ স্বাভাবিক কণ্ঠে বললেন,

“কি খাবে তোমরা?চা নাকি কফি?”

প্রশ্নটা খালামনির দিকে দৃষ্টি দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন।খালামনি মলিন স্বরে বললো,

“আমরা কিছু খেতে আসিনি রাশেদ।বরং তোমাকে নিতে এসেছি।”

এই কথাটা শুনে চমকানোর কথা থাকলেও চমকায় না খালুজান।আমাদের উপস্থিতি দেখেই হয়তো ব্যপারটা আঁচ করেছেন তিনি।তাই তো বেশ স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া দেখালেন।কক্ষে রাখা টেলিফোন ডায়াল করে কানে তুলে নিয়ে পাঁচ কাপ কফির অর্ডার দিলেন।তারপর লাইন কেটে আমার দিকে তাকিয়ে একটু অপ্রস্তুত হলেন।ইতস্তত করে বললেন,

“দেখো ভুলো মন।তোমাকে জিজ্ঞেস না করে কফি অর্ডার করলাম।তুমি কফি খাও তো?”

খালুজানের আকষ্মিক প্রশ্নে অপ্রস্তুত হলাম আমি।তিনি যে হটাৎ এতো অমায়িক আচরণ করবেন আমার সাথে কল্পতাতীত ছিলো এটা।উপস্থিত অন্যরাও একটু চমকে গেলেন এতে।অথচ যার কথায় এতো চমক তার মাঝে কোনো ভাবাবেগ দেখা গেলো না।আমার দিকে তখনো জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন।অথচ সেদিন খালুজানের দৃষ্টিতে একরাশ অসন্তোষের ছাপ ছিলো।উত্তরটা চান বুঝতে পেরে নিজেকে সামলে নিলাম আমি।মাথা নেড়ে বললাম,

“জ্বী খাই।”

জবাবটা পেয়ে মুখে প্রশস্ত হাসি ফুটে উঠলো ওনার।ঘরে রাখা তিন সিটের ডিভানে গিয়ে বসলেন।ওনার হাবভাবে স্পষ্ট হলো আমরা নিতে আসলেও যাবেন না তিনি।এমনকি এই ব্যাপারটিকে বিশেষ পাত্তাও দিচ্ছেন না।বরং নিজ খেয়ালে এলোমেলো কথা তুললেন।এই যেমন এখন বললেন,

“কফি আসলে আমরা খাই না পান করি।এখন থেকে পান করি বলবে, কেমন?যদিও তোমার উত্তরে বিশেষ ভুল নেই। আমার ভুল প্রশ্নের জবাব তো ভুল উত্তরই হবে।”

এবার খানিকটা লজ্জিত হলাম আমি।খালামনির দিকে তাকিয়ে দেখি আসার পূর্বে যত ব্যকুলতা ছিলো এখানে এসে অত ব্যকুলতা নেই তার মাঝে।বরং আড়ষ্টতার দরুন মুখের খেই হারিয়ে বসে আছেন।নিভৃত ভাই বরাবরই কথা কম বলা মানুষ, তিনিও খুব একটা কথা বলছেন না।খালুজানের সাথে তাল মিলিয়ে হু হ্যা করে যাচ্ছেন।এবার খালুজান নিশির দিকে তাকিয়ে বললেন,

“এখানে এসে বোস মা।নদী আসলো না তোদের সাথে?”

“নদী আপুর পরীক্ষা চলছে।”

উঠে গিয়ে বাবার পাশে বসতে বসতে চট করে জবাব দিলো নিশি।প্রতিউত্তরে তিনি ছোট করে বললেন,

“ওহ।”

তারপর কিছু সময় নিরবতায় কাটলো।খালুজান আবারও বললেন,

“তুই জানিস, নদী দেখতে একদম আমার মায়ের মতো।কথাও বলে ওভাবেই।ওকে দেখতে পারলে একটু শান্তি লাগতো।”

এই কথাটা খালুজান নাকি নদী আপুকে আগেও অনেক বার বলেছে।নিশি এটা নিয়ে লেগপুল করতো নদী আপুর সাথে।খালুজানের মা সেকেলে মহিলা ছিলেন।আচার আচরণও সেকেলে বঁধুদের মতো।একটা আধুনিক মেয়ে হয়েও নদী আপুকে সেকেলের সাথে তুলনা করায় নিশি তাকে ব্যাকডেটেড বলতো।অথচ আজ সেও বুঝে গেলো নদী আপুর প্রতি খালুজানের অগাধ ভালোবাসার জন্য এমনটা বলেন তিনি।নিশি এক দৃষ্টিতে বাবার দিকে তাকিয়ে থাকলো।তারপর বললো,

“তোমার সেই মায়ের রুপী কন্যাকেও দেখতে পাবে আব্বু।তোমাকে যে আমরা নিয়ে যেতে এসেছি।”

এবারও সুকৌশলে বাড়ি ফেরার কথাটি এড়িয়ে গেলেন খালুজান।ওনার আচরণে বেশ আহত হলাম আমরা।উনি যেনো নিরব থেকেই বুঝিয়ে দিচ্ছেন আমাদের এই প্রস্তাব অগ্রহণযোগ্য।অথচ এমনটা হলে আমাদের এতোদূর আসাই বৃথা যাবে।একটু পর ঘরে ওয়ান টাইম কাপে করে কফি এলো।কিন্তু কফি পানে আগ্রহ দেখা গেলো না কারো।বরং খালামনি ঐকান্তিক হয়ে কথাটা পূনরায় তুললেন,

“আমরা একটা উদ্দেশ্যে এখানে এসেছি রাশেদ।এমন এলোমেলো কথা বাড়িতে গিয়েও করা যাবে।এখন তুমি চলো আমাদের সাথে।”

আমরাও সাথে সম্মতি দিলাম যে বাড়িতে গিয়ে আলাপ হোক।খালুজান কিছুসময় চুপ থেকে বললেন,

“তো তোমরা আমাকে নিতে এসেছো?”

“জ্বী আব্বু, তোমাকে ফিরিয়ে নিতে সব করতে রাজি আমরা।”

চরম আগ্রহ ভরে মত প্রকাশ করলো নিশি।খালুজান উৎসুক হয়ে বললেন,

“তা সেই সব বলতে কি বুঝাচ্ছো মা?”

“যেমন ধরো ভাইয়াকে ডিভোর্সও করাতে পারি।তবুও তুমি চলো।”

কথাটা শুনে গম্ভীর হয়ে গেলেন তিনি।চেহারায় হেয়ালী ভাঁজ বিদায় হলো নিমিষেই। আমার কেবলই মনে হলো এটাই হয়তো সঠিক টনিক।উনি এখন বাড়ি ফিরবেন।তাই আমিও সম্মতি জানিয়ে বললাম,

“জ্বী খালুজান।উনি ডিভোর্স দিবেন আমাকে।তবুও আপনি বাড়ি ফিরুন।”

আমার কথা যেনো শুনেও না শোনার ভাণ ধরলেন তিনি।বরং সিরিয়াস হয়ে নিভৃত ভাইয়ের পাণে তাকিয়ে বললেন,

“তুমিও কি একই অভিমত পোষণ করছো?”

প্রশ্নটা শুনে চোখ তুলে মেললেন উনি।আমিও ওনার দিকে তাকালাম।তখন তো ঠিকই বললেন বিচ্ছেদ চান না, কিন্তু এমন পরিস্থিতিতে কি করবেন সেটাই দেখতে চাইলাম।উনি নির্লিপ্ত কণ্ঠে পাল্টা প্রশ্ন করলেন,

“তুমি কি চাও?”

“আমি তোমার অভিমত জানতে চেয়েছি।”

থমথমে কণ্ঠে জবাব দিলেন খালুজান।পরিবেশটা যেনো মুহুর্তেই ভারী হয়ে উঠলো।নিজের কথা নাকি বাবার টান কোনটাকে বেশি গুরুত্ব দিবেন উনি?প্রশ্নটা ঘুরঘুর করছে আমার মনে। নিশি যেনো খুব করে চাইছে তার ভাই রাজি হয়ে যাক।খালামনির অভিব্যক্তি বোঝা দায়।এমন পরিস্থিতিকে উপেক্ষা করে উনি জবাব দিলেন,

“তুমি আমার আবেগ, আমার ভালোবাসা আব্বু।আর সে আমার দ্বায়িত্ব।আবেগ ভালোবাসার জন্য দ্বায়িত্ব বিসর্জন দিতে হয়,তুমি হয়তো আমাকে এই শিক্ষা দাও নি কখনো।বরং বলেছো যে দ্বায়িত্ব সেচ্ছায় একবার কাধে চেপে নেওয়া হয়, সে দ্বায়িত্ব আজীবন পালন করতে হয়। আমি সেচ্ছায় ওর হাত ধরেছি।প্রতিকুলতা এসে যদি এই হাতটা এখন ছুটিয়ে দেয়,তবে সে হাত ধরাটা ভুল।আর সব বাঁধায়ও যদি সঙ্গী থাকা যায় তবে সে সম্পর্ক আস্ত একটা ফুল।এটা তোমারই শিক্ষা।তো এখন সেই অনুযায়ী আমি ভুলের মাঝে যদি ফুলকে বেছে নিতে চাই তবে কি তা অন্যায় হবে?”

ওনার উত্তরে চোখমুখ চকচক করে উঠলো খালুজানের।স্মিত হাসলেন উনি।হয়তো এই উত্তরটাই আশা করছিলেন।তিনি বুক ভরে শ্বাস নিয়ে বললেন,

“এখনো যে আমার শিক্ষা আঁকড়ে রেখেছো এটা আমার সবচেয়ে বড় পাওনা।আমি সত্যি কখনো বাড়ি ফিরতাম না, যদি শুধুমাত্র আমার জন্য ওকে ডিভোর্স দিতে।একটা নির্দোষ মেয়ের জীবনে কলঙ্ক এঁকে দিতে চাইতে।কিন্তু তুমি তা চাও নি।আমি তোমার উপর সন্তুষ্ট।”

খালুজানের জবাব শুনে লজ্জিত হলো নিশি।কিন্তু সেই সাথে খুশিও হলো অনেক।আমরাও খুশি হলাম উনি ফিরবেন বলে।কিন্তু আমাদের আশায় পানি ঢেলে তিনি বললেন,

“তবে আমার কিছু স্পেস দরকার।তাই এখন ফিরবো না।এখন সমুদ্রে যাবো আমি।সমুদ্রের কল্লোল শুনলে আচমকাই মন ভালো হয়ে যায়।সাগরের হাওয়া যে কতো প্রশান্তি দেয় আমাকে, তা কেও বুঝবে না।এসব উপভোগ করবো আমি।তারপর বাড়ি ফিরবো।এখন ফিরে যাও।শীপে গিয়ে কল দিবো তোমাদের।”

একটু পর শাহজালাল বিমানবন্দরের একটি বিমানে করে সুইজারল্যান্ডের উদ্যেশ্যে পাড়ি জমালেন তিনি।আমরা হাজার অনুরোধ করার পরও ফেরেননি।তবে কথা দিয়েছেন ছয়মাসের কাজ শেষে ছয় মাস বাড়ি ফিরে ছুটি কাটাবেন।উনি চলে গেলেন আমাদের একটা না পাওয়ার হাহাকার ও প্রাপ্তির আনন্দের মাঝামাঝি ফেলে দিয়ে।তিনি চলে গেলেও সবটা স্বাভাবিক করেই গেলেন।যাত্রার সময় বললেন,

“রাগ একটি ঠুনকো বস্তু।যার ভিত্তি খুব দূর্বল।এটা শক্ত করে তৈরি করে ব্যক্তি নিজেই।তবুও হুট করেই তা পড়ে যায়।আমি আর রেগে নেই।পুষ্পকে পুত্রবধু রুপে মেনে নিয়েছি আমি।ওর কোনো অসম্মান করোনা।মনে রেখো, বাড়ির বউয়ের অসম্মান আমার জন্য লজ্জার।”

কথাগুলো শেষ করে চলে গেলেন তিনি।আর এক রাশ মুগ্ধতা দিয়ে গেলেন আমাকে।এতো চমৎকার ব্যক্তিত্বের মানুষ আমি খুব কমই দেখেছি।শত্রুর মেয়েকে এতো সহজে মেনে নেওয়ার মতো, এতো অমায়িক আচরণ দেওয়ার মতো ব্যক্তিত্ব আর ক জনেরই বা হয়?আচ্ছা এতো চমৎকার একজন মানুষ কি করে আম্মুর শত্রু হলো?এমন মানুষ কি কারো শত্রু হয়?তবে কি এমন হয়েছিলো তাদের মাঝে, যে কারনে দুজনের মাঝে এতো বিদ্বেষ!

অতীতটা খুব জানতে ইচ্ছে করছে এখন।এতোদিন এই ইচ্ছে মনে না জাগলেও আজ ওনার ব্যক্তিত্ব বাধ্য করছে আগ্রহ জাগাতে।সেই অনুযায়ী খালামনিকে প্রশ্ন করলাম আমি।উনি কিছু জানেন না বলে এড়িয়ে গেলেন।আম্মুকেও জিজ্ঞেস করলাম, তিনি কোনো জবাব দিলেন না।এমনকি কেওই এই বিষয়ে মুখ খুললো না।

রাতের বাসেই ফিরতি পথ ধরেছিলাম আমরা।খালুজানও রাতের ফ্লাইটে রওনা হয়েছিলেন।একই সাথে দু’টি ভিন্ন গন্তব্যে পাড়ি জমাতে হলো একত্রিত হওয়া কিছু মানবের।অথচ কথা ছিলো একই সাথে ফিরতি পথ ধরবে তারা।তিনি ফিরলেন না, তাই বলে কি মনে চাপ পড়ে রইলো?একদমই না।যাওয়ার আগে সব হালকা হয়ে গেলো।

_____
কেটে গেলো কয়েকদিন।বাড়ি,বাহির, আত্মীয় স্বজন সবার মাঝে সম্পর্ক স্বাভাবিক হলো।আম্মুও এ বাড়ি দ্বিতীয় বারের মতো এসে ঘুরে গেলো।যদিও খালুজানের উপস্থিতিতে আম্মু এখানে আসবে না তা স্পষ্ট।তবুও সবার মনের চাপ হালকা হওয়ায় পরিবেশও হালকা হয়ে উঠলো।কিন্তু আজ রাতের বেলা হুট করেই মনে চাপ পড়েছে আমার।মাঝের এতোদিন পড়াশোনার চাপ না থাকলেও আজ হুট করে উদয় হয়ে নিভৃত ভাই জিজ্ঞেস করছেন আমি পড়াশোনা নিয়ে কিছু ভেবেছি কিনা।ওনার বক্তব্য মতে এডমিশন কোচিং এ ভর্তি হতে হবে আমাকে।এটা শুনে থম মে’রে দাঁড়িয়ে রইলাম আমি।তারপর প্রতিবাদ করে বললাম,

“হায় আমার আল্লাহ! এ কেমন অলুক্ষনে কথা! আমি কি পড়াশোনা করার জন্য বিয়ে করেছি নাকি?পড়লে আমার মাথা চাপ দিয়ে ধরে।”

আমার কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে তাকালেন উনি।

“তো কি করার জন্য বিয়ে করেছো?”

“সংসার করার জন্য,সন্তান উৎপাদন ও লালন-পালনের জন্য আর স্বামীর সেবা যত্ন করার জন্য।ব্যস!”

আমার কথা শুনে বিষম খেলেন উনি।তারপর অদ্ভুত নয়নে তাকিয়ে রইলেন।ওনার দৃষ্টি দেখে নিজের কথা বিশ্লেষণ করলাম আমি।ইয়া মাবুদ! একি বলে ফেলছি।ছিহ! লজ্জায় এখন মাথা কা’টা যাচ্ছে আমার।এই মুখ এখন কই লুকাবো?

চারিদিকে তাকিয়ে বিছানায় কাঁথা দেখে মুখ লুকানোর উপযুক্ত স্থান পেলাম মনে হলো।দৌড়ে গিয়ে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুতেই উনি নিজেকে ধাতস্থ করে নিলেন।তারপর গম্ভীর কণ্ঠে বললেন,

“আহ! মাথাটা যা,ধরেছে।যাও এক কাপ চা নিয়ে এসো।”

কথাটা শুনে আকাশ থেকে পড়ার যোগার হলো আমার।বলে কি! এই রাত বিরাতে নাকি চা বানাতে হবে!আমি সাথে সাথে নাকচ করলাম,

“পারবো না।”

“কেনো পারবে না?তুমিই তো সংসারী হবে বলে বিয়ে করেছো বললে।স্বামীর সেবাও করবে বললে,এখন আপত্তি কেনো?”

কথাটা শুনে চুপচাপ নেমে গেলাম আমি।এক কাপ চা নিয়ে আসার পর টেবিলে রাখতেই উনি বললেন,

“আসলে আমার মাথা ব্যাথা করছে।এতো রাতে আর চা খাবো না।ঘুমের ব্যাঘাত হবে।তুমি বরং মাথাটা টিপে দাও।”

এটা বলে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লেন উনি।আমি অসহায় হয়ে বাধ্য মেয়ের মতো মাথা টিপতে লাগলাম।এরপর উনি পা টিপতে বললেন।তারপর এই রাতের বেলা গায়ের টি শার্ট বদলে ধুয়ে দিতে বললেন।আমি অবাক হয়ে চেয়ে বললাম,

“পা’গল পেয়েছেন আমাকে?সংসার করবো বলে গাধার খাটুনি খাটাবেন!আমি ওসব ধুঁতে পারবো না, ঘুম পেয়েছে আমার।”

এবার উনি আমার সুরেই বললেন,

“তো তুমিও কি আমাকে পা’গল পেয়েছো নাকি?মাগনা মাগনি তোমার খরচ বহন করবো?এই যে এতো টাকা ওয়েষ্ট হবে তোমার ভরন পোষনে, ওসব উসুল করতে হবে না?এটা ধুয়ে দাও এখন,যাও।”

এবার টি শার্ট নিয়ে অসহায় হয়ে বসে রইলাম আমি।উনি এই অল্প সময়েই যথেষ্ট প্যারা দিয়েছেন আমাকে।মাথা ও পা টিপে হাত ব্যাথা ধরেছে।ওটা শরীর নাকি লোহা খোদা মালুম।কেমন শক্ত।টিপে দিতে প্রচুর কষ্ট হয়েছে।এখন এই হাত নিয়ে কিভাবে কাপড় ধুবো?

আমি বুঝে গেলাম এভাবে হবে না।আমি যতদিন না কোচিং এ ভর্তি হই উনি নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরাবেন আমাকে।তাই হাল ছেড়ে দিলাম।মুখ গোমড়া করে বললাম,

“আমি সারেন্ডার করলাম। কোচিং এ ভর্তি হবো।”

এবার উনি পাশে সরে গিয়ে শোবার জায়গা দিয়ে বললেন,

“আগে এই সিদ্ধান্ত মেনে নিলে এতো কষ্ট করতে হতো না।”

তারপর পাশ ফিরে শুয়ে পড়লেন উনি।আর আমি নিজের জায়গায় শুয়ে ঘুমের চেষ্টা চালালাম।

চলবে