প্রেমপ্রদীপ পর্ব-০৪

0
4264

#প্রেমপ্রদীপ
Part–4
Arishan_Nur ( ছদ্মনাম)

সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠেই আয়না নিজে থেকে বাথরুমে চলে গেল। সে এখন বড় হয়ে গেছে। প্লে থেকে নার্সারিতে উঠে গেছে। তাই এতো বড় হওয়ার পর ও যদি মা তাকে ব্রাশ করিয়ে দেয় তাহলে তার স্কুল ফ্রেন্ডরা শুনলে তাকে নিয়ে হাসাহাসি করবে।

আয়নাকে তার মা ঘুম থেকে জাগিয়ে তুলেছে। আয়না বাথরুমে গিয়ে নিজে নিজে ব্রাশ করল। কিন্তু ব্রাশ করে মুখ ধোয়ার সময় জামাটা পানি দিয়ে ভিজিয়ে ফেলে। এতে মন খারাপ হলো তার। আয়না ভেজা কাপড়েই বাথরুমের আয়নার দিকে নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে থাকল কিছুক্ষন। তারপর বের হয়ে আসল।

এখন ইউনিফর্ম পড়ার পালা। আয়না ছোট ছোট হাতে ইউনিফর্ম পড়ে নিল। স্কুল ইউনিফর্ম টা সম্পূর্ণ সাদা। স্কার্ফ জড়িয়ে নিল সে। স্কুলের মিস বলেছে দুই ঝুটি করে আসতে। সে তো চুল বাধতে পারে না। মায়ের সাহায্য দিতে হবে৷

আয়না গলা ফাটিয়ে আম্মু বলে ডাক দিল।

★★★

রোদেলার ঘুম ভেঙে গেল একটা বাচ্চার মিস্টি সুরে কান্নার আওয়াজে। কান্নার আওয়াজ শুনে তার সমুদ্রের কথা মনে পড়ল। সমুদ্র কাদছে নাকি? সে তড়িঘড়ি করে রুমের বাইরে গিয়ে দেখে আয়না কান্না করছে। আয়না কে তার মা মানে অথৈ চুপ করানোর চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু আয়নার চুপ হওয়ার নামই নেই!

রোদেলা স্মিত হাসল। সে অথৈয়ের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করে, আমার মা টা কাদে কেন?

অথৈ বিরক্ত হয়ে বলে, আর বলিও না। ও চুলে দুই বেণি করতে চাচ্ছে। কিন্তু ওর চুলে দুই বেণি হয় না তাই কান্না করছে।

রোদেলা মুচকি হেসে আয়নাকে নিয়ে বিছানায় বসে সুন্দর করে দুই ঝুটি করে দিল৷

আয়না কান্না থামিয়ে দিয়েছে। সে মুখ ফুলিয়েই বলে, কিন্তু ফুপু আমি দুই বেণি করতে চাই তো!

রোদেলা আয়নার গালে চুমু খেয়ে বলে, তোমার তো চুল গুলো এখন ছোট আছে তাই বেণি হবে না। তুমিও ছোট তোমার চুল ও ছোট! তুমি যখন অনেক বড় হবে তখন তোমার চুল গুলোও অনেক লম্বা হয়ে যাবে। তখন দুই বেণি করবে৷

আয়না খুশি হয়ে বলে, তুমি করে দিবে? আমি পারিনা বেণি করতে।

রোদেলা হেসে বলে, বড় হলে তুমি নিজেই সব শিখে যাবে৷

কথার ফাকে অথৈ দুইটা টিফিন বক্স এনে আয়নার ব্যাগে ঢুকিয়ে দিতে দিতে বলে, ভ্যান চলে এসেছে। তাড়াতাড়ি বের হও মা। আর শোন, তোমার আর সমুদ্রের টিফিন দিয়ে দিলাম। একসাথে খেয়ে নিও৷

আয়না আচ্ছা বলে স্কুলের জন্য বেরিয়ে যায়। স্কুল ভ্যানে করে যায় সে স্কুলে।

আয়না যেতেই রোদেলার মুখ টা কালো হয়ে এলো। অথৈ রোদেলার পাশে বসে বলে, আরেকটু ঘুমিয়ে নেও। রাতে ঘুম হয় নি তাই না?

–হুম।

–শুয়ে পড়৷

রোদেলা চোখ মুছে বলে, নাহ অফিস যাব আমি৷

অথৈ একটু চমকে বলে, আজকে অফিসে যাবে?

রোদেলা অথৈয়ের দিকে সরাসরি তাকিয়ে বলে, আমি ঠিক করে ফেলেছি আবেগের সাথে আর সংসার করব না যতক্ষণ পর্যন্ত ও আমার কাছে ক্ষমা না চাচ্ছে। একজনকে ভালোবাসলেই তার সাথে সংসার করতে হবে,তার সকল অন্যায় মেনে নিয়ে চলতে হবে এটা কোথাও লেখা নাই। আবেগের সাথে সংসার করা আমার কপালে নাই বোধহয়। আমি ব্যাংকক চলে যাব সমুদ্র কে নিয়ে।

অথৈ কিছু বলতে পারল না। রোদেলা এতো বড় সিদ্ধান্ত নিল কিভাবে?

তারপর ও অথৈ মিনমিন করে বলে, মেয়েদের একটু এডজাস্ট তো করতেই হয় রোদেলা। সব মেয়েকেই করতে হয়৷

রোদেলা কাদো কাদো হয়ে বলে, এটা এডজাস্টমেন্ট না। লাইফ পাটনার কে সন্দেহ করা, বাজারি মেয়ে বলা, পতিতালয়ে যায় কাজ করতে এসব বলার পর অপর পক্ষের চুপ থাকাটা এডজাস্টমেন্ট না অথৈ। এটা অন্যায়। অপর পক্ষের সাথে অন্যায় করা হয় এর মাধ্যামে। আমি একটু পর বের হব৷ মা কি ঘুমাচ্ছে?

–ফযরে উঠেছিল। এখন ঘুমাচ্ছে।

রোদেলা উঠে যেতে ধরে অথৈয়ের দিকে তাকিয়ে বলে, আজকে আবেগের জায়গায় আমার নিজের ভাই থাকলেও আমি তোমাকে সব ছেড়ে চলে যেতে বলতাম। সবার আগে আত্মসম্মান এবং নিজের ভালো থাকাটাকে গুরুত্ব দিতে হয়। এক প্রকার মানুষ আছে যাদেরকে নিজের কলিজা কেটে রান্না করে দিলেও বলবে লবণ কম হয়েছে।

রোদেলা আর কিছু না বলে চলে গেল। অথৈ শুয়ে পড়ল এমনি সে মাতৃ গর্ভকালীন ছুটি তে আছে। সাত মাস রানিং চলছে তার। একটুতেই দুর্বল হয়ে পড়ে। তার উপর তার হিমোগ্লোবিন তে সমস্যা। প্রেসার হাই থাকে। ডাক্তার এইসময় রেস্টে থাকতে বলেছে।

অথৈ বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই মেঘের (অথৈয়ের স্বামী) কল আসল। অথৈ কল রিসিভ করতেই মেঘ বলে, আয়না স্কুল গেছে?

–হ্যা৷

–তুমি ঠিক আছো?

–হ্যা৷

–আমি সন্ধ্যায় আসার ট্রাই করব৷ দুপুরে নিজ দায়িত্বে মেডিসিন নিয়ে নিও৷

–আচ্ছা৷

মেঘকে এখনো জানানো হয় নি তার বোন চলে এসেছে বাপের বাড়ি । রোদেলাই জানাতে মানা করেছে৷ বাইরে আছে। অস্থির হয়ে পড়বে জন্য জানানো হয় নি৷

রোদেলা ব্যাগ গুছাচ্ছে। অফিস যাওয়ার জন্য রেডি হয়ে গেছে সে। সমুদ্রের ভিসা পাসপোর্ট কিছুই নেই। সব বানাতে হবে। আজকেই বানাতে দিতে হবে৷ যত দেরি করবে সে ততো নাজুক হয়ে পড়বে। শক্ত থাকতেই চলে যাওয়া উত্তম।

রোদেলা নাস্তা না করেই বেরিয়ে যায়। ফাতেমা বেগম অবশ্য বারবার বলছিল নাস্তা খাওয়ার কথা। কিন্তু রোদেলার নাকি রুচি নেই।

রোদেলা বাসার সামন থেকে সিএনজি নিয়ে নিল। বাসায় কাউকেই তার প্রেগ্ন্যাসির কথা জানায় নি। বাসায় বললেই আবেগের কানে খবরট যাবে৷ তখন আবেগ সব ঠিক করতে চাইবে। সত্য বলতে রোদেলাও চায় সব ঠিক হয়ে যাক কিন্তু বাচ্চার উসিলায় না।রোদেলার প্রতি আবেগের ভালোবাসার জোড়ে যেন সব ঠিক হয় এটা চায় সে।

আবেগের জীবনে রোদেলা কেবল তার বাচ্চার মা হয়ে থাকতে চায় না। বরঙ আবেগের সহধর্মিণী হতে চায় সে!

★★★

— কি রে তোর মুখ দিয়ে গন্ধ আসছে কেন? ব্রাশ করিস নি?

সমুদ্র আয়নার কথায় ঠোঁট উল্টিয়ে বলে, আমি তোর চেয়ে এক বছরের বড়। আমাকে তুই বলে ডাকবি না আয়ু।

আয়না গম্ভীর মুখে বলে, কিন্তু আমরা সেইম ক্লাসে পড়ি।

–কিন্তু আমি তোর বড়।

— তো কি হয়েছে? (খানিকটা তেজী গলায়)

সমুদ্র দমে গিয়ে বলে, আচ্ছা যা বলে ডাকতে চাস ডাক৷

সমুদ্র কথাটা বলতেই আয়না তার নাকে হাত দিয়ে বলে, এই দূরে সর তো তুই! তোর মুখ দিয়ে পচা গন্ধ আসছে।

সমুদ্র মুখ কালো করে বলে, আজকে ব্রাশ না করেই এসেছি স্কুলে।

আয়না ভ্রু কুচকে বলে, কেন? কেন ব্রাশ করিস?

সমুদ্র মুখ ভার রেখেই বলে, বাবা সকালে ঘুম থেকে জাগিয়ে দিয়ে বললো, নিজে নিজে রেডি হতে। আম্মু প্রতিদিন রেডি করিয়ে দেয়। আমি রেডি হতে পারিনা। ব্রাশ ও করতে পারিনা। এজন্য শুধু কুলি করে চলে এসেছি৷

আয়না চোখ-মুখ কুচকে বলে, ইয়াককক,,,,

সমুদ্র চোখ লাল করে বলে, তো কি হয়েছে? একদিন ব্রাশ না করলে কিছুই হবে না।

আয়না সমুদ্রের কথা শুনে হেসে কুটিকুটি। সমুদ্রর বেশ লজ্জা লাগছে৷ ইশ! এই মেয়েটা এমন কেন? একটু চুপচাপ থাকা যায় না। টিচার দেখে ফেললে দুইজন কেই পানিসমেন্ট দিবে। এই মেয়ে শাস্তিকেও ভয় পায়না। সমুদ্র যতোবারই কান ধরেছে তার পেছনে দায়ী আয়না।

আয়না হাসি থামিয়ে বলে, আয় টিফিন খাই। আম্মু দুইটা বক্স দিয়েছে।

সমুদ্র বলল, এখন তো টিফিন টাইম না। এখন কেন খাব? ক্লাস চলছে তো।

–লুকায় লুকায় খাব৷ কিছুই হবে না।

–না না আমি খাব না। ভয় লাগে স্যার দেখলে বকা দিবে৷

আয়না বিরক্ত হয়ে বলে, উফ! তুই এতো ভীতু কেন?

সমুদ্র মুখ বাকালো। আয়না তার পাশের মেয়েটার সাথে টিফিন শেয়ার করে খেতে লাগলো। সমুদ্রের দিকে তাকাচ্ছেও না একবারো৷ সমুদ্রের কষ্ট লাগতে লাগলো। আয়না যখন তাকে রেখে অন্যকারো সাথে খেলে তখন তার মন খারাপ হয়!

সমুদ্র একটু চুপচাপ স্বভাবের। এজন্য ক্লাসে তার তেমন কোন ভালো বন্ধু নেই।শুধু আয়নাই তার ফ্রেন্ড। আয়নার সাথে প্রতিদিন বসে সে৷ কিন্তু আয়না আবার একেবারেই বিপরীত। সে বেশ মিশুক স্বভাবের। সবার সাথে খেলবে,কথা বলবে। আবার ক্লাস ক্যাপ্টেন ও আয়না।

সমুদ্র আয়নার দিকে তাকিয়ে আছে । হুট করে স্যার ডেকে উঠে, রোল নাম্বার ফিফটি ফাইভ স্ট্যান্ড আপ। সমুদ্র কেপে উঠে। তার রোল পঞ্চান্ন। স্যার কেন তাকে ডাকছে? সে ভয়ে ভয়ে দাড়ালো।

স্যার বলল, তুমি চারের ঘরের নামতা বল দেখি। কালকে শিখিয়েছিলাম। পড়া ছিল বাসায় এটা।

সমুদ্র ভয়ে কেপে উঠে। সে তো কালকের পড়া পড়েনি। এখন কিভাবে চারের ঘরের নামতা বলবে? আম্মু তো দুইয়ের ঘরের নামতা শিখিয়েছে। এরপর তো আর পারেনা। ভয়ে সমুদ্র কেদে দিল। সঙ্গে সঙ্গে পুরো ক্লাস হেসে উঠল।

আয়না সমুদ্রের কান্ড দেখে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। ছেলেটা এতো হাদারাম কেন? বললেই তো পারে যে পড়া পারে না! এতে কাদার কি আছে? আজব তো!

টিফিন ব্রেকে সমুদ্র মন খারাপ করে বসে আছে। আয়না তার পাশে বসে আছে। সে সমুদ্র কে উদ্দেশ্য করে বলে, আচ্ছা থাক। আর মন খারাপ করে থাকতে হবে না৷

সমুদ্র বলল, আমি প্রতিদিন ই পড়া করে আসি। কালকে করিনি আর আজকেই ধরতে হলো স্যারকে?

–আহা বাদ দে না। আমি তো প্রায়ই পড়া পারিনা। কই আমি তো মন খারাপ করে থাকি না। আয় নাস্তা করি। আম্মু তোর পছন্দের নুডুলস দিয়েছে৷

নুডুলসের কথা শুনে সমুদ্রের মনটা ভালো হলো। মামীর বানানো নুডুলস তার খুব পছন্দ। মায়ের নুডুলস রান্নাটাও ভালো লাগে তার। তবে মা নুডুলসের চেয়ে পাস্তা বেশি টেস্টি বানায়।

আয়না সমুদ্রের সামনে খাবারের বক্সটা রাখল।

★★★

আবেগ সমুদ্রকে নিয়ে বর্তমানে তার শ্বশুড় বাসায় বসে আছে। আজকে হাসপাতালে যায় নি সে। বলতে গেলে যাওয়ার মানসিকতায় নেই। কালকে রাতে ঘুম হয় নি। তার উপর স্কুল থেকে ফিরেই সমুদ্র মায়ের কাছে আসার বায়না ধরেছে। কিছুতেই কান্না থামেনা তার। আবেগ ও হাল ছেড়ে দিয়ে নিয়ে এসেছে। ঘন্টা খানেক আগেই এসেছে তারা। আবেগ ভেবেছিল রোদেলা বাসাতেই থাকবে। তারা দুজন মিলে কথা বলে কোন একটা সমাধানে আসবে। কিন্তু রোদেলা বাসায় নেই। অফিস গিয়েছে।

আবেগ মাথা নিচু করে আছে। বড্ড ক্লান্ত লাগছে তার। তার সামনে নাস্তা দেওয়া। চাও দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সে কিছুই মুখে দেয়নি। আবেগ ভেবেই কুল পাচ্ছে না সংসারে এতো অশান্তি হওয়ার পর ও রোদেলা কিভাবে আজকে সকালে উঠে অফিসে যায়?

।মাথা তুলে তাকালো সে। তার শ্বাশুড়ি এসেছে। সোফায় বসল তিনি। ভদ্রমহিলা তাকে খুব পছন্দ করে।

আবেগ স্মিত হাসল। ফাতেমা বেগম আবেগকে উদ্দেশ্য করে বলে, বাবা চা টা খাও। ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে তো।

আবেগ চা হাতে নিল। সমুদ্র এসেই এই বাসায় একটা ছোট মেয়ে আছে নাম আয়না তার সাথে খেলা শুরু করে দিয়েছে। আবেগ ইতস্তত বোধ করছে। কালকে নিশ্চয়ই সব কথা রোদেলা তার মাকে খুলে বলেছে।

ফাতেমা বেগম বলে উঠে, আমার মেয়েটা একটু জেদী। এক রোখা স্বভাবের। যা বলবে তাই করবে। তুমি জানো আগে ও বলত যে বিয়েই করবে না। কিন্তু তোমার সাথে দেখা হওয়ার পর মেয়ের মত চেঞ্জ হলো। বিয়ে হয়ে গেল তোমাদের।

রোদেলা যে বিয়ে করতে চাইত না এটা জানে আবেগ। এই গল্প প্রায়ই রোদেলাকে তাকে শুনায়। সে হালকা হাসল ফাতেমা বেগমের কথায়।

ফাতেমা বেগম মুখ শক্ত করে বলে, মেয়েটা আমার থাইল্যান্ড যেতে চায়। আমরা সবাই ওর জন্য খুশি। এটা ওর জন্য অনেক বড় একটা সুযোগ। বাবার খুব আদুরে মেয়ে কোন চাওয়াই ওর অপূর্ণ রাখিনি। বাবা বুঝতে পারছ আমি কি বলতে চাচ্ছি?

–জি। পারছি। আমার পক্ষে রোদেলার সাথে থাইল্যান্ড যাওয়া সম্ভব না। সর‍্যি।

–তাহলে রোদেলা আর সমুদ্র কে যেতে দাও।

— সমুদ্র কে ছাড়া আমি থাকতে পারব না।

ফাতেমা বেগম বলে, থাইল্যান্ড তো কাছেই। বাংলাদেশ থেকে মাত্র কয়েকঘন্টার রাস্তা। তুমি মাঝে মাঝে গিয়ে দেখা করে আসবে। প্লেনে উঠলেই থাইল্যান্ড পৌছে যাবে। দরকার হলে রোদেলা টিকিট করে পাঠিয়ে দিবে তোমাকে।

আবেগ কঠিন গলায় উত্তর দিল,

রোদেলাকে বলেন ও যেন একা যায়। সমুদ্র আমার কাছে থাকবে। থাইল্যান্ড থেকে বাংলাদেশ তো বেশি দূর না। রোদেলা এসে মাঝে মধ্যে সমুদ্রের সাথে দেখা করে যাবে৷ নাকি কাজের চাপে এটাও সম্ভব হবে না? দরকার হলে আমি টিকিট কেটে দিব। তাও না পারলে ফোনে কথা বলবে। আমি আমার ছেলেকে যেতে দিব না। রোদেলা যাক। আমার আর সমস্যা নাই৷ একটা সময় রোদেলার যাওয়া নিয়ে সমস্যা ছিল। বাধা দিচ্ছিলাম। কিন্তু কালকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আর সমস্যা করব না। রোদেলা যাক। চাকরি করুন। ক্যারিয়ার গড়ুক।

–কিছু ই তো খাচ্ছোনা বাবা।

–অন্য একদিন খাব। আজকে উঠি। সমুদ্র থাক এখন৷ খেলুক। আমি রাতে এসে নিয়ে যাব।

কথাটা বলেই হনহন করে আবেগ বেরিয়ে যায়। শুধু শুধু আসা হলো। কোন কাজই হলোনা।

আবেগ আর সমুদ্র এসেছে শুনেই রোদেলা অফিস থেকে বের হলো। কিন্তু মহাখালীর জ্যামের কারনে খানিকটা দেরি হয়ে যায়। বাসায় এসে আর আবেগের দেখা মিললোনা৷

সমুদ্র মাকে দেখামাত্র তার কাছে দৌড়ে গেল। রোদেলা ছেলেকে দেখে,,,,,,,,,,

চলবে।