প্রেমময় বিষ পর্ব-০৮

0
256

#প্রেমময়_বিষ
#মাহিমা_রেহমান
#পর্ব_৮

ভাইয়া একেরপর এক এটা-সেটা ধরিয়ে দিচ্ছে হাতে!আমার ভুল ছিল টায়রা’কে রাগা’নো। এখন এর শাস্তি আমিই ভোগ করছি!

“ভাইয়া তখন শাড়ির দোকান থেকে আমাদের সবাই’কে দুটো করে শাড়ি কিনে দেন।কিন্তু সব গুলো ব্যাগ আমার হাতে ধরি’য়ে দেন।।কাউকে দিতেও পারছি না।ভাইকা বলেছে, ব্যাগগুলো যেন কেবল আমার হাতে থাকে।কারও হাতে গেলে খবর আছে! তাই ভয়ে করো হাতে দিচ্ছিনা।নিজেই বহন করে চলছি।আদিব ভাইয়া অনেকবার নিতে চাইছিল, আমিও খুশি মনে যেই দিতে যাবো অম’নি ভাইয়ার চো’খ রাঙানো দেখে আবার আদিব ভাইয়াকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে নিজের কাছে রেখে দিয়েছি”

বর্তমানে আমার অবস্থা কাহিল।আমার পক্ষে এসব উঠানো আর সম্ভব হচ্ছে না।কিন্তু রায়ায ভাইয়াকে দেখ? সেই তখন থেকে এটা সেটা কিনে দিচ্ছে।পারলে মেলা*টা তুলে আমার কোলে দিয়ে দিয়ে, বলতে লাগেবে,

— যা এটা নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে বাসায় যা! আর জীবনে বলবি আমাকে কি’প্টে।

ভয়ে আমার জা’ন যাওয়ার উপক্রম! আমি আর না পেরে বলেই উঠলাম,

— ভাইয়া অনেক হয়েছে! আমাদের আর কিছু লাগবে না, তাই না আপু। কিরে টায়রা বল? ( টায়রাকে দিলাম এক চোখ রাঙানি)

— ভাইয়া আর কিছু লাগবে না, অনেক হয়েছে।

কিয়ারা আপু পূনরায় বলতে লাগল,

— কিছু ব্যাগ এবার আমাকে দে।অনেক’তো একা একা বহন করলি!

রায়ায রাশভারী কণ্ঠে বলে উঠে,

— আমি এক কথা বারবার বলতে পছন্দ করি না,, ব্যাগ বেলা’ই বহন করবে।

অতঃপর আপু আর কিছু বলল না।কিন্তু আমি আর সইতে পারছি না! কোথাও একটা বসা দরকার।কিন্তু ভাইয়াকে বললে ভাইয়া পুরো মেলা আরো দশ চক্কর কাটবে, যা ঘাড় ত্যাড়া! তাই কৌশলে খাটিয়ে বললাম,

— ভাইয়া তখন থেকে ঘুরেই চলছি। তাই আমাদের সবার এখন খুব ক্ষুধা লেগেছে। কিরে টায়রা, আপু তাইনা?

তারা দুজন আমার সাথে তাল মিলিয়ে বলে উঠল,

— হ্যা।

অতঃপর ভাইয়া আমাদের ফুচকা স্টলে নিয়ে গেল।

___

একেরপর এক ফুচকার প্লেট আমার হাতে দেওয়া হচ্ছে! আর আমি খেয়েই চলছি।কিন্তু আর পারছি না।তাই এবার ভাইয়াকে অনুরোধ সুরে বললাম,

— ভাইয়া মাফ চাই।আমার শিক্ষা হয়েছে, আমি আর কোনদিন আপনার সাথে লাগতে আসব না।

ভাইয়া আমার কানে কানে ফিসফিসিয়ে নিজের বাক্য তুলে ধরলেন,

— আর কোনদিন বলবি আমাকে কিপ্টে?

আমি মাথা নেড়ে বোঝালাম জীবনে আর না।অতঃপর আমার জন্মের মেলা ঘুরা হয়ে গেল।তাই এবার বাড়ির দিকে প্রস্থান করতে চাই।তাই বলে উঠলাম,

— আমার পক্ষে আর এখানে থাকা সম্ভব না! বাড়িতে যেতে চাই আপাদত।

আমার কথায় বাকি সবাই সায় জানালো।পেট নিয়ে হাঁটতে কষ্ট হচ্ছে খুব, যা খাওয়া খাইয়েছে। বাপরে!তাই সত্বর বাড়ি ফেরা আবশ্যকতা

বাড়ি ফিরেছি সেই কখন,, অগুনতি ব্যথা পেটে অনুভব হওয়ায় চুপটি করে শুয়ে রয়েছি।রাত এখন প্রায় এগারোটা বেজে দশ মিনিট। তখনই টায়রা এল রুমে, এসে বলতে লাগল,

— বেলা চল ছাদে যাই।

— এখন ভালো লাগছে না, তুই যা।

— চল’তো ।বলেই আমাকে টেনে নিয়ে যেতে লাগল।

ছাদের সিড়িতে এসে টায়রা বলল,

— তুই যা আমি আসছি,,উপরে কিয়ারা আপু আছে ভাইয়ারা ও আছে টিনা-মিনা ও আছে।আমি বরং যুথিকে দিয়ে কিছু বানিয়ে ওকে সাথে নিয়ে আসি।

আমি ঘাড় কাৎ করে সায় জানিয়ে পা বাড়াই সামনের দিকে।ছাদে এসে কাউকে না পেয়ে যেই চলে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম,অমনি কেউ পিছন থেকে আমার দুচো’খ একটা কাপড় দিয়ে বেঁধে দিল।ভয়ে আমি যেই চিৎকার দিব সহসা আমায় নিজের কোলে তুলে নিলেন কেউ।ভয়ে আমি আগন্তুক ব্যক্তির বক্ষের দিকের কাপড় টেনে ধরলাম আর বার বার বলতে লাগলাম,

— কে আপনি কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন আমাকে? নামা’ন বলছি!কিন্তু সে আমাকে কোথাও একটা নিয়ে যেতে লাগল।

__

আগন্তুক আমাকে আলগোছে কোল থেকে নামিয়ে দিলেন। আমি তখন থেকে চিৎকার করে জানতে চাইছি,

— কে আপনি! কথা কেন বলছেন না?

অগন্তুক আমার কথার জবাব না দিয়ে সহসা আমার সামনে হাঁটু গেঁড়ে বসে পড়ল।অতঃপর আমার অধমাঙ্গ নিজের পায়ের ঊর্ধ্বভাগে রাখলেন। তার এমন কাজে আমি ইষৎ কেঁপে উঠলাম,

— কি করছেন কি? আমার পা ধরেছেন কেনো আপনি? ছাড়ুন বলছি।

কিন্তু সেই অগন্তুক আমার কথার জবাব না দিয়ে আমার বাঁ অধমাঙ্গে একখা’না নূপুর জড়িয়ে দিয়ে! আমার অধমাঙ্গে নিজের ওষ্ঠের উষ্ণ ছোঁয়া এঁকে দিলেন।মৃগী রোগীর মত আমার দেহ কম্পন দিতে লাগল।।যখন তার অনুপস্থিতি লক্ষ্য করলাম সহসা নিজের চোখের উপর থেকে কাপড়টা টেনে খুলে নিলাম।

একি আমি বাগানে কি করছি! ঈষৎ কেপে উঠে আমি ভিতরের দিকে দৌড় লাগালাম।দরজা খোলা! আমি দৌড়ে ড্রইংরুমে গিয়ে হাঁপাতে লাগলাম,,, ডান পাশের সোফায় দিকে আঁখি ঘোরাতেই চম’কে উঠলাম। একি! আদিব ভাইয়া এখানে কি করছে! আমি ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে কাঁপা কাঁপা পেয়ে ভাইয়ার দিকে এগিয়ে গেলাম।ভাইয়া আমাকে দেখে একগাল হাসি উপহার দিয়ে বলতে লাগলেন,

— একি বেলা তুমি এখানে কি করছো?

উনার দিকে তাকিয়ে আমি কেঁপে কেঁপে বলে উঠলাম,

— আপনি এখানে কি করছেন ভাইয়া? আর কখন থেকে এখানে বসে আছেন?

— আমি তো সবে মাত্র এখানে এলাম। কেনো বলতো?

এতে যেন আমি আরো চমকে উঠে ভাইয়ার দিকে ভয়ার্ত দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম।

উনি আমার এমন দৃষ্টি দেখে আমার দিকে এগিয়ে এসে বলতে লাগলেন,

— কি হয়েছে বে’লা? এমন ভয় পাচ্ছো কেনো? সবাইতো ছাদে তুমি এখানে কেনো?

ভাইয়ার এমেন কথা শুনে আমার ভয় যেন আরো তরতর’ করে বেড়ে গেল।

চলবে ইনশাল্লাহ,,,