প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো পর্ব-০৮

0
9316

#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো💖
#পর্ব_০৮
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

রাত গভীর হচ্ছে পৃথুলার অবস্থা খারাপ হচ্ছে।
প্রেয়নের বুকের মাঝেই পৃথুর জ্বর ক্রমশ বেড়ে চলেছে।
প্রেয়নের হাতে কিছু নেই।
জ্বরের তাপ সহ্য কারার মতোন না।
প্রেয়ন উঠে পৃথুলার কপালে লবন পটি দিতে শুরু করলো।
–পৃথু এই পৃথু।
পৃথুলার সেন্স নাই।
–হে আল্লাহ এই রাতটা ওকে একটু সুস্থ করো আমি সকালেই ওকে নিয়ে হসপিটালে যাবো।
পৃথুলার অবস্থা সহনশীল নয়।
প্রেয়নের ভয় বেড়ে চলেছে।
এভাবে রাত কাটলো৷
কেউ ঘুমালো না রাতে।
সকালে সূর্য উদয় হতেই প্রেয়ন পৃথুকে নিয়ে বের হয়।
–প্রেয়ন ওর অবস্থা কি? (প্রেয়নের বাবা)
–কাছে এসো না বাবা পৃথুর বোধহয় করোনা আছে কাছে এসো না।
–বাবা তোর মায়ের কথায় কষ্ট,
–বাবা ওর অবস্থা ভালো না আমি হসপিটালে যাচ্ছি পারলে দুয়া করো।
প্রেয়ন পৃথুলাকে পাজকোলে নিয়ে গাড়িতে করে হসপিটালে আসে,
–ডক্টর. আসিফ
–মি.খান আপনি এখানে। আমাকে ফোন করতেন আমি আসতাম।
–আসার প্রয়োজন নেই আমার স্ত্রী এর জ্বর প্রচুর।
–ওনাকে এদিলে আনুন।
পৃথুলাকে শোয়ানো হয়।
ডক্টর চেকাপ করে,
–মি.খান কতো দিন থেকে জ্বর।
–কাল থেকে।
–কি বলেন কোন ব্যাবস্থা নেন নি।
–ওর কি করোনার লক্ষন।
–এক দমি না৷ জ্বরের জন্য করোনা কেন হবে। ও বুঝলাম করোনার ভয়ে কি ওনাকে সারা রাত ভুগিয়েছেন।
মোটেও ঠিক করেন নি ওনার অবস্থা এতে অনেক খারাপ হয়েছে।
আমি ওনাকে কেবিনে সিফট করছি।
প্রেয়নের মাথায় রাগ উঠে যাচ্ছে।
কেন ডক্টর কাল এমন করলো।
এদিকে পৃথুলাকে কেবিনে সিফট করা হয়।
ডক্টর ঔষধ দেয়৷
জ্বর নিয়ন্ত্রণ এ আসবে কিন্তু দেরি হবে।
–মি.খান ওনার পাশে আপনাকে প্রয়োজন। ওনার কাছে জান।
–অবশ্যই।
–আর একটা কথা৷
–জি।
–দেখুন জ্বরের মানে করোনা নয়। ওনার জ্বর অতিরিক্ত বেড়ে গেছে এই জন্য কাল কোন প্রকার ব্যাবস্থা নেন নি তাই।
দয়া করে আর এমন করবেন না।
–জি আচ্ছা।
প্রেয়নের মনে মনে আগুন বইছে।



–স্যার আমি তো কাজ করে এসেছিলাম কিন্তু মি.খান মিসেস.খানকে খুব ভালোবাসেন।
–ভালোবাসা হ্যাঁ ওদের ভালোবাসার জন্য এখন আমার প্লান ভেস্তে গেল।
রাখুন আপনি অকম্মা।
–বস খান বাড়ি থেকে সকলে মি.খানকে তার স্ত্রী এর সাথে বের হতে দেখা গেছে।
–হুম তোরা যা।
নীলের প্লান বেস্তে দিয়ে কোন দেশের সুখ অর্জন হবে না মি.প্রেয়ন।
আমি তোর থেকে আমার সব নিয়েই তবে ছাড়বো।



–পৃথু।
–জি।
–এখন কেমন লাগছে।
–মাথা ভার।
–কি খাবি বল তো।
–কিছু খাবো না।
–কিছু খেতে হবে।
–পেয়ারা খাবো।
–পেয়ারা ভাতে কি খাবি তাই বল।
–জানি না।
–আচ্ছা আমি নিয়ে আসছি দেখ।
প্রেয়ন বাইরে গিয়ে খাবার নিয়ে আসে সাথে পেয়ারা।
–উঠ খাইয়ে দি।
প্রেয়ন পৃথুলাকে খাইয়ে ঔষধ খাইয়ে দিলো।
এরি মধ্যে প্রেয়নে ফোনে ফোন আসে।
–আসসালামু আলাইকুম মা।
–পৃথুলা কেমন আছে।
–এখন আছে ভালোই ভয় নেই মা আমার স্ত্রী এর করোনা হয় নি।
–আল্লাহ মালিক।
আমি আসছি।
–না মা দরকার নাই।
–কেন?
–আমার স্ত্রী এর না হয় অন্য কারোর থাকতে পারে তুমি এসো না আমি আসবো কাল বাসায়।
–বাবা তুই রেগে আছিস।
–না মা রাগবো কেন?
–পৃথুলার খেয়াল রাখ।
–হুম।

–মাকে আসতে কেন বারন দিলেন?
–তোমায় বলতে হবে(রেগে)
–না সরি (মুখ ভার করে)
–পেয়ারা খেয়ে নেও পৃথু৷
–দিন (খুশি হয়ে)
পৃথুলার ছোট ছোট ব্যাপারে খুশি হয়।
তা দেখে প্রেয়ন যেন পৃথুলার থেকে বেশি খুশি হয়।
ভালোবাসা এমনি হয়।
ভালোবাসার মনুষের মুখের হাসি হয় অন্য জনের ভালোলাগার কারন৷

–পৃথু৷
–জি৷
–আরো কিছু খাবি।
–আর কতো।
–একটু তো খাইলি।
–কই খাইছি তুমি বসো রাইমাকে ফোন দিবেন কথা বলি।
–হুম নেও।
–তার দরকার নেই রাইমা এই যে।
–কিরে পিচ্চি তুই এখানে।
–হ্যাঁ তুমি অসুস্থ আমি আসবে না আপুনি।
–তোমরা বসো আমি একটু কাজ শেরে আসছি (প্রেয়ন)
–আচ্ছা।
রাইমা, পৃথুলার খেয়াল রাখলো ততক্ষণে প্রেয়ন তার কাজ শেষ করে এলো,।


–আচ্ছা ভাইয়া আপু এখন আসতে হবে।
–আচ্ছা সাবধানে যাস।
–আচ্ছা।
রাইমা চলে আসে।।
–আজ রাস্তা ফাঁকা নাকি।
রাইমা কথা বলতে বলতে আসছে নিচের দিকে তাকিয়ে জামা ঠিক করতে করতে।
হটাৎ একটা লোকের সাথে ধাক্কা লেগে পড়ে যেতে নিলে লোকটা তাকে ধরে বসে।
–আউ।
–আপনি ব্যাথা পেলেন কি করে।
–এ মা আমি পরি নি।
–কি!
–সরি সির আমি খেয়াল করি নি৷
(নিজেকে ছাড়িয়ে নিয়ে)
–চোখ গুলো কি আকাশে থাকে।
–আজব সরি বললাম না৷
–সরি আমার ডিক্সোনারি তে নাই।
–যাহ বাবা ভালো হইছে আরো ধাক্কা দিবো পরলে ঠেকান।
রাইমা কথাটা বলে মুখ ঘুরলি দিয়ে চলে এলো।
–বেয়াদব মেয়ে।
–বস আমাদের কাজ।
–তোর কাজ তুই কর এখন আমি বাসায় যাবো।। আর শোন,
–জি।
–ওই মেয়ে কে দেখ তো।
–জি বস।
–নীলকে ধাক্কা দিয়ে বলে কিনা আবার ধাক্কা দিবো দেখাচ্ছি মজা।


চলবে,