প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো পর্ব-০৭

0
9690

#প্রেয়ন_পৃথুর_প্রেমসুতো
#পর্ব_০৭
#লামিয়া_রহমান_মেঘলা

প্রেয়ন বাসায় এসে ঘরে গিয়ে পৃথুলা কে ঘুমিয়ে থাকতে দেখে চুপচাপ ওয়াসরুমে চলে যায়।
বেরিয়ে এসে দেখে পৃথুলা কিছুটা কাঁপছে।
প্রেয়ন তার কাছে গিয়ে মাথায় হাত দিতে বুঝতে পারে তার জ্বর আসছে।
কিন্তু হটাৎ এভাবে জ্বরের কারন কি।
প্রেয়ন পৃথুলাকে ডাকতে লাগলো,
–পৃথু এই পৃথু।
পৃথুলা আস্তে আস্তে চোখ মেলে তাকালো,
–হু। (আদো শুরে)
–খারাপ লাগছে পৃথু।
–হু। (আদো শুরে)
–আম্মু আম্মু আম্মু জলদি এসো।
প্রেয়নের চিৎকার শুনে নায়লা বেগম দৌড়ে প্রেয়নের রুমে এলেন,
–কি হইছে।
–মা পৃথুর জ্বর আসছে,
–কি বলিস একটু আগেও তো ঠিক ছিলো।
নায়লা বেহম পৃথুলার মাথায় হাত দিতে চমকে উঠে।
গা পুরে যাচ্ছে।
–কি রে প্রয়ন এমন কি করে হলো।
–জানি না মা আমি তো বাসায় ছিলাম না।
–দেখি তুই ডক্টর কে ফোন দে।
প্রেয়ন ডক্টর কে ফোন দিলো।
কিছু সময় পর ডক্টর চলে আসে,
–ওনার জ্বর ১০৩°;
না কমলে হসপিটালে ভর্তি করতে হবে।
সমস্যা হলো কি করে ওনার জ্বর সাভাবিক না।
আপনাদের ওনার থেকে দুরে থাকা ভালো।
–আপনি কি পাগল ডক্টর আমার স্ত্রী অসুস্থ আর আপনি দুরে থাকতে বলছেন।
–মি.চৌধুরী আমি ওনার নমুনা নিয়ে গেছি পরিক্ষা করতে পাঠিয়ে দিবো আজ রিপোর্ট না আসা পর্যন্ত দুরত্ব বজায় রাখা ভালো।
–প্রেয়ন ডক্টর যা বলছে তাই করো (নায়লা বেগম)
–মা তুমিও ওনার মতো পাগল হইছো নাকি।
করোনা হতে হলে জ্বর না শুধু কাশি,শ্বাস কষ্ট ও লাগে।
–ডক্টর আমি না আপনি মি.খান
–মানছি আপনি ডক্টর কিন্তু ওর এখন সেবার প্রয়োজন নাকি আমাদের দুরত্বের।
–মিসেস.খান আপনি দেখুন আপনার পরিবার কে আপনি কি করে বাঁচাবেন।
আমর বক্তব্য আমি দিয়ে দিছি।
আমাকে অনুমতি দিন।
আর ওনাকে কিছু দিন হোমকরেন্টাইন এ রাখুন। ওনার কাছ থেকে দুরে থাকুন।
–ওকে ঔষধ তো দিবেন ডক্টর
–দেখুন করোনার ঔষধ এখনো বার হয় নি।
–প্রেয়ন ওনাকে এগিয়ে দেও,
–না না আমি যাচ্ছি আপনারা বরং কি করবেন সেটার জন্য পরামর্শ করুন৷
ডক্টর বেরিয়ে এলেন।

বাইরে,
–মি.নীল আপনি যা বলেছেন তাই করেছি।
–ধন্যবাদ ডক্টর আপনার পেমেন্ট কি আপনি পেয়েছেন।
–জি। তবে অর্ধেক।
–চৌধুরী কখনো বাকি কাজ করে না বাকি পেমেন্ট তুমি বাইরে বেরোতেই পেয়ে যাবে।
— অনেক ধন্যবাদ। কখনো প্রয়োজন হলে বলবেন। কিন্তু মি.নীল আমি বুঝলাম না পৃথুলা আপুর সাথে আপনার কি শত্রুতা।
–শত্রু মিত্র আমার কিছুই নেই ডক্টর আপনাকে দরকারের জন্য যা বলেছি তা করেছেন তার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। বাকি আমার দায়িত্ব।
ফোন কেটে দিলো,
–আমি আসছি প্রেয়ম খান ।
আমার আগমন তেমার জীবনকে তচনচ করতে বাদ্ধ।
আর একটা কথা যা আমার নয় তা কারোর নয়।
কথাটা বলে বিকট হাসিতে মেতে ওঠে নীল।

–প্রেয়ন চল বাবা।
–না মা তুমি এটা বলতে পারো না ওকে এভাবে রেখে আমি পারবো না যেতে।
–প্রেয়ন চল তুই। আমার কছম তোকে পৃথুলার কাছে থাকবি না।
মায়ের কথায় প্রেয়ন পাথর হয়ে গেল। নয়লা বেগম ছেলেকে টেনে নিয়ে গেলেন প্রেয়ন কে।
এদিকে পৃথুলার অবস্থা প্রচুর খারাপ হতে শুরু করেছে।
প্রেয়ন বাইরে থেকে দেখতে পাচ্ছে পৃথুলা ঠক ঠক করে কাপছে৷
জ্বরের বেগ কোন পদক্ষেপ না নেবর জন্য বাড়তে আছে।
এদিকে পৃথুলাকে আঁটকে চাবি রেখে দিয়েছে নায়লা বেগম।
সাভাবিক এমনি হবার কথা ছিলো। জীবন যেখানে যাকে যে শাস্তি দেয়।
কেয়ামতের আলামত পৃথিবীতে বিস্তার করেছে।
জানালার কাচে ভেতরে দেখা যাচ্ছে তাকে।

দিন গড়িয়ে রাত হলো।
পৃথুলার অবস্থা এখন পুরোই খারাপ।
পানির পিপাসা পেয়েছে তার। সমানে পানি পানি বলে চলেছে।
বাইরে থেকে সেটা প্রেয়ন শুনতে পাচ্ছে কিন্তু মায়ের জন্য কিছুই করতে পারছে না।
কি করবে? এক দিকে মা অন্য দিকে পৃথুলা।
পৃথুলা পানির জন্য অকুতি সমানে বেড়েই চলেছে।
চোখ খোলার মতো শক্তি তার নেই।
না আছে বিছনা ছেড়ে ওঠার।
বাইরে দাঁড়িয়ে বুঝতে পারতেছে প্রেয়ন সব।
পৃথুলার এক একটু আকুতি প্রেয়ন এর হৃদয়ে এক একটা ক্ষতের সৃষ্টি করছে।
–মা অনেক হইছে মরি ওকে নিয়ে মরবো না হলে এক সাথে বাঁচবো তুমি ওর কাছে যেও না।
কথাটা বলেই প্রেয়ন দরজা ভেঙে দেয়।
–প্রেয়ন বাবা,
–না মা কাছে এসো না আমার স্ত্রী এর করোনা আছে তোমাদের সমস্যা হবে।
প্রেয়ন কথাটা বলেই পৃথুলার কাছে গিয়ে পানি ধরলো।
জ্বরের জন্য কোন ঔষধ দেওয়া হয় নি তাকে।
নিচে গিয়ে খাবার এনে নিজের মতো ঔষধ দিয়ে দেয়।
জ্বর তখনো পরো নি।
ঔষধ দিয়ে মাথায় লবণ পটি দিচ্ছে।
–পৃথু আমাকে ক্ষমা করে দে আমার জন্য তোকে এতো সময় এতো কষ্ট সহ্য করতে হইছে।
তুই চিন্তা করিস না কাল অন্য ডক্টর আসবে আমি জনি তোর কিছু হয় নি পৃথু।
কিছু হয় নি তোর।

বাইরে থেকে এমন দৃশ্য দেখে নায়লা বেগম চোখের পানি মুছতেছেন।
–সত্যি পৃথুলা তোকে আমার ছেলেটা অনেক ভালোবাসে। হে আল্লাহ এমন কিছু শুনিও না যাতে আমার পরিবারের কোন ক্ষতি হয়৷
–কি গো পৃথুলার নকি জ্বর (আরিফ খান প্রেয়নের বাবা)
–হ্যাঁ গো।
–তো এখানে কি করছো ওর কাছে চলো।
–না।
–কেন.?
–ডক্টর বলেছে ওর করোনা হইছে।
–ওর কি শুধু জ্বর।
–হুম।
–তাহলে কি করে করোনা হলো। আজব কে বলেছে।
–ডক্টর বলেছে আমি প্রেয়ন কে দুরে রেখেছিলাম কিন্তু পৃথুলার অনেক পানি পিপাসা পেয়েছে ওকে আর ধরে রাখতে পারি নি।
–তুমি কি পাগল নায়লা মানলাম ওর করোনা হইছে তার মানে তুমি মেয়েটাকে একটা ঘরে বন্দি রেখে দিবা।
–তা কি করবো।
–অমানুষ তুমি।
–কি বলছো,
–কি বলবে আর এর থেকে বেশি।



–পৃথু
–হু,
–খারাপ লাগছে।
–পানি খাবো।
–কষ্ট হচ্ছে।
–অনেক মাথা ব্যাথা করছে।
–একটু পর ঠিক হয়ে যাবে পৃথু তুই চিন্তা করিস না পৃথু।
–হু।
প্রেয়ন পৃথুলার কপালে ভালোবাসা একে দেয়।
শক্ত করে জড়িয়ে ধরে তার প্রিয়সি কে যেন ছেড়ে দিলেই হাওয়া হয়ে মিনিল হয়ে যাবে।

চলবে,
(আসল রহস্য আস্তে আস্তে বের হবে।
গল্প সম্পর্কে সবার মতামত আসা করছি)