ফাগুন আমায় ভালবাসেনা পর্ব-১০+১১+১২+১৩+১৪

0
254

#ফাগুন_আমায়_ভালবাসেনা (১০,১১,১২,১৩,১৪)

১০.

ফোনের শব্দে ঘুম ভাঙ্গে মাহমুদের। এত রাতে কে? ফোনের পর্দায় মুনের নাম।
-কি ব্যাপার মুন এতো রাতে?
-তুমি তো ফোন করোই না? কি হয়েছে বলোতো?
-কই কিছু না তো। অয়ন এসেছিল আবার হঠাৎ চলেও গেল আর এই তো পরিবারের সবাইকে নিয়ে ব্যাস্ততা।
-তাই বলে একবারও ফোন করবে না?
-টেক্সট তো করি। জানোই তো মা কেন কড়া। উল্টা পাল্টা কিছু বুঝলেই মাকে ম্যানেজ করা অনেক কষ্টের হবে।
-কবে আসবে তুমি? এই দশ দিন তো আমার দশ যুগ মনে হচ্ছে। কবে দেখা হবে?
-আর তো বেশি দিন বাকি নেই। এসেই দেখা করবো। এখন রাখি।

কি করে এই মেয়েকে বোঝাবে যে সবার বাড়ির অবস্থা তার বাড়ির মত নয়। মা যদি বুঝে ফেলে তার সম্পর্ক আছে বাড়ি মাথায় তুলবে। কিন্তু মা কে তো বলতেই হবে। কিভাবে বলবে? এইসব চিন্তা করতে করতে সে ঘুমিয়ে পড়ে।

সকালে নাস্তার টেবিলে বসতেই মা বললেন, তোর সাথে জরুরী কথা আছে।
-বল মা কি কথা?
-আমি তোর বিয়ে ঠিক করেছি।
এই কথা শুনেই মাহমুদের গলায় খাবার আটকে যায়। রেহানা বেগম পানি এগিয়ে দেন। পানি খেয়ে চুপ করে থাকে সে কিছুক্ষন। তারপর সাহস করে বলেই ফেলে,
-মা আমি একটা মেয়েকে পছন্দ করি। ওকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করা আমার পক্ষে সম্ভব না।
রেহানা বেগম ধপ করে চেয়ারে বসে পড়েন।
-কি বললি তুই? আমার ছেলে হয়ে তুই এই কথা বলতে পারলি। এই মুহুর্তে আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যা। যেদিন আমার পছন্দের মেয়েকে বিয়ে করতে পারবি সেদিন বাসায় ঢুকবি। বসে আছিস কেন? কানে কথা যায় না? সাহস দেখে আমি অবাক হই? ইভানা এই ইভানা…
ইভানা নিজের ঘর থেকে ছুটে আসে।
-কি হয়েছে মা? চিৎকার করছ কেন? এমনিতেই তো তোমার হাই ব্লাড প্রেসার।
-তুই এই বেয়াদব ছেলেকে এখুনি বাড়ি থেকে বাহির হতে বল।
-ভাইয়া তুমি ওঠ তো, নিজের ঘরে যাও।
-নিজের ঘরে না ওকে বিদায় কর তা না হলে আমি ঝাটা পেটা করবো।

ইভানা অনেক করে বোঝানো স্বত্তেও রেহেনা বেগম শান্ত হলেন না। তিনি নিজের ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে শুয়ে থাকলেন। ভাবলেন ছেলে হয়তো এসে মাফ চাইবে কিন্তু মাহমুদ এলো না। ইভানা কয়েকবার ডাকার পরেও তিনি নিশ্চুপ থাকলেন। মাগরিবের নামাযের পর ঘর থেকে বের হলেন। ইভানার কাছে শুনলেন মাহমুদ চলে গেছে। রাগে তার শরীর কাঁপতে লাগলো। এই ছিল কার কপালে। এমন অবাধ্য সন্তান তার পেটে জন্মালো। এর চেয়ে তো তার মরে যাওয়া ভাল ছিল।

মাহমুদও রাগের মাথায় ঢাকায় রওনা হয়েছিল। কিছুটা রাস্তা পার হবার পর সে ভুল বুঝতে পারলো। রাগের মাথায় চলে না এলেও পারতো। মাকে তো বোঝানোর চেষ্টা করা যেত। আর মা তো অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। সব চেয়ে বড় কথা এখনতো বাড়ি ফেরার সব পথ বন্ধ হয়ে গেল।
অফিসার্স মেসে ফিরে শুয়ে রইলো কিছুক্ষন। বাসায় কি ফোন করবে? যদি মা ধরে। কয়েকটা দিন যাক। মার রাগ ঠান্ডা হলে ফোন করা যাবে। মা নিশ্চই তার উপর রাগ পুষে রাখবেন না। এক দিক থেকে ভালই হল। মুনের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু মা হঠাৎ করে কার সাথে বিয়ে ঠিক করল?

১১.

অয়নের পোস্টিং মাঝিরা ক্যান্টনমেন্ট, বগুড়ায়। ছুটি শেষে কর্মস্থলে ফিরে তাই সে হাফ ছেড়ে বেচেঁছে। তা না হলে বিয়ে বিয়ে করে বাড়িতে সব অস্থির করে ফেলছিলো। ফেব্রুয়ারিতে মিশনে সিয়েরা লিয়ন যাবার কথা, তাই বাবা বিয়েটা এখুনি দিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সে পরবর্তী পদোন্নতি না হলে বিয়ে করবে না বলে বিয়ের ব্যাপারটা এগোয়নি। তাই বলে বাবাকে সে নাও বলতে পারেনি। কোন রকমে সব থামিয়ে রাখা। আসলে সে নিজেকে বুঝতে চেষ্টা করছে। সে কি চায়? এই প্রশ্নটা মনকে বারবার করা। তিতিরকে চিঠি আর বই গুলো পাঠিয়ে কোনো ভুল করে ফেলেনি তো? আর ও তো কোন জবাবও দিল না।
বেশ কিছু কাজের দায়িত্ব এসে পড়ায় সে অনেক ব্যস্ত হয়ে গেল। সারাদিন সময় কিভাবে কেটে যায় সে বুঝতেই পারে না।, দুপুরের খাবার খেয়ে নিজের ডেস্কে এসে বসতেই অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোনটা এল। প্রথমবার ফোনটা সে ধরল না। কিন্তু আবার বাজতেই ফোন ধরে।
-হ্যালো ক্যাপ্টেন অয়ন স্পিকিং
-হ্যালো আমি তিতির বলছিলাম, চিনতে পারছেন কি?
-ওহ্ তিতির তুমি। কি খবর বলো? কোথা থেকে ফোন করলে?
-বাড়ির পাশের একটা ফোনের দোকান থেকে ভাইয়া। কলেজ থেকে বাসায় ফিরছিলাম। তাই ভাবলাম ফোন করি। আপনি কি ব্যাস্ত তাহলে অন্য কোনো একদিন ফোন করবো।
-হ্যা তিতির একটু ব্যাস্ত। পরে কোনো একদিন কথা হবে। ভালো থেকো। আল্লাহ হাফেজ।
বলে ফোনটা রেখে দেয় সে।

পড়ার টেবিলে বসে তিতির চিন্তা করতে থাকে। সে কি অবাস্তব কিছু চিন্তা করছে? হয়তো এমন কোনো কিছু কখনই সম্ভব না। পরীক্ষাটাও সামনে চলে এলো। কলেজ বন্ধ হয়ে যাবে এই মাসেই। খালার বাসা আর নিজের বাসা করেই তার দিন কেটে যাচ্ছে। ওইদিক মাহমুদ ভাইয়া রাগ করে চলে গেছে। কি কারণ তা অবশ্য সে জানে না। বড় খালাও কেমন চুপ হয়ে গেছেন । আগের মত আর হম্বিতম্বি করেন না।

-আচ্ছা অয়ন ভাইয়া কি তাকে আজ এড়িয়ে গেল? কেমন যেন নিস্পৃহ গলা। তা অবশ্য হতেই পারে। তিতির এর কি বা যোগ্যতা। সে বইয়ের ভাজ থেকে তার লিখা চিঠিটা বের করে। লিখেছিল কিন্তু পাঠানো হয়নি।

-কিরে পড়া বাদ দিয়ে কি চিন্তা করছিস? রেজাল্ট কিন্তু ভাল হওয়া চাই। তোকে নিয়ে আমাদের কত স্বপ্ন।
সে চিঠিটা আবার লুকিয়ে ফেলে। কালকেই পোস্ট করে দেবে।
-তেমন কিছু না মা। ভাইয়া কেন রাগ করে চলে গেছে তুমি কিছু জান? খালা কেমন মনমরা হয়ে গেছে।
-নাহ রে তোর খালা তো কিছু বলেন না। তুই পড়াশুনা কর তো। এগুলো না ভাবলেও তোর চলবে। খাবার সময় আমি ডাকবো।
তিতির বই নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে, কিছুই ভাল লাগছে না। পরীক্ষাটা শেষ হলে সে বাঁচে। একমাস একটু ঘুরে বেড়াবে।

১২.

কফি শপে মাহমুদ মুনের জন্য অপেক্ষা করছিল। তারপক্ষে সব দিক থেকে এত প্রেসার নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। পরিবারকে বাদ দিয়ে সারাটা জীবন কাটানো তো সম্ভব না। মুনকেই বা কি বলবে? এই সব চিন্তার মাঝে সে খেয়ালি করেনি যে মুন তার সামনে এসে বসেছে।
-এই যে মিস্টার কি চিন্তা করছেন এতো?
মুনের কথায় চমকে ওঠে সে।
-ওহ্ তুমি এসেছো। তোমার সাথে অনেক জরুরী কথা আছে আমার।
-বল কি কথা? তোমার কথা শুনবো বলেই তো ছুটে এলাম। আজ কিন্তু সারাদিন আমরা এক সাথে ঘুরবো।
-সে পরে হবে। আগে দয়া করে আমার কথাগুলো মন দিয়ে শোন।
-বলো শুনছি।
-মুন আমি বাড়ি থেকে মার সাথে রাগারাগি করে চলে এসেছিলাম। বাসার কেউ তাই আমার সাথে কথা বলে না।
-কি জন্য রাগারাগি?
-মা অন্য কোথাও আমার বিয়ে ঠিক করে রেখেছেন। তোমার কথা বলাতে এমন রেগে গেলেন। ওই মুহুর্তে কি করব বুঝতে পারছিলাম না। তোমাকে তো বলেছি আমার মা কেমন কঠিন।
-এখন কি করবে? আমি কি কিছু করতে পারি?
-আমি জানিনা মুন কতদিনে মা আবার স্বাভাবিক হবেন। তার অনুমতি ছাড়া আমি তো তোমাকে বিয়ে করতে পারবো না।
-তাহলে আর কি মায়ের কথা মত মায়ের পছন্দের মেয়েকে বিয়ে কর। ভীতুর ডিম একটা। আমারি ভুল আমি দিনের পর দিন তোমার জন্য অপেক্ষা করেছি।
-রাগ করছ কেন? আমি তো বলিনি যে আমি মায়ের পছন্দে বিয়ে করবো। কিন্তু..
-কিন্তু কি? শোনো এই সব করে তুমি পার পাবে না। তোমাকে আমি ছেড়ে দেব ভেবেছ? কখনই না। কি করবে না করবে সেটা তোমার ব্যাপার। বিয়ে তুমি আমাকেই করবে তোমার মা রাজি থাকুক আর না থাকুক। কথাটা মনে থাকে যেন। আমি আসি..
বলেই মুন বেরিয়ে যায়।

১৩.

তিতিরের সাথে সেদিন ভাল করে কথা হলো না। ফোনও তো নেই যে কথা বলবে। আগের চিঠির উত্তরও তো পায়নি সে। আবার কি চিঠি দেবে? ওর বাবা মা কি মনে করবে?
মাহমুদ কে ফোন করে সে, সে কোন খবর জানাতেও পারে অথবা তিতিরকে জানাতে পারে যে করেই হোক তিতির যেন তাকে একবার ফোন করে।
-কিরে, তুই তো দেখি গায়েব হয়ে গেলি?
-আর বলিস না, বহুত ঝামেলায় আছি। জীবন অতিষ্ঠ।
-কেন রে কি হলো তোর?
-মার সাথে রাগারাগি করে বাড়ি থেকে চলে এসেছি। কার সাথে নাকি আমার বিয়ের কথা পাকা করে ফেলেছে। তুই তো আমার আর মুনের ব্যাপারটা ভালোই জানিস। মুন আবার এই সব শুনে আমার উপর ভীষন খাপ্পা।
-আরে আমারও তো একই কাহিনী, বাবা দেখি তার বন্ধুর মেয়ের সাথে বিয়ে ঠিক করেছে। বহু কষ্টে মিশনের কথা বলে সব থামিয়েছি। হ্যা রে তিতিরের কি খবর?
-ও এই বার বুঝেছি তুই কেন ফোন করেছিস। তা ঘটকালি কি আমি করবো নাকি?
-চুপ কর তো। কি শুরু করলি আবার।
-আমার সাথে তো আর কথা হয়নি দোস্ত । তবে সামনের মাস থেকে তো ওর এক্সাম শুরু। লেখাপড়া নিয়ে ব্যস্ত মনে হয়। দেখি আমি ফোন করবো খালার বাসায়। ওকে বলবো তোকে যেন ফোন করে। পরে কথা হবে দোস্ত।
-ওকে বাই।
-বাই।
এখন শুধু অপেক্ষার পালা। যদি সে কল করে। তবে কবে কখন করবে তা তো জানা নেই। যদি একবার দেখা করা যেত। কিন্তু কিভাবে? কোন পরিচয়ে যাবে সে।

তিতিরদের বাসায় ফোন করলো মাহমুদ। খালার ফোনটা ধরলো।
-কেমন আছিস বাবা?
-এইতো খালা আছি। তোমরা কেমন আছো?
-ভাল আর থাকতে দিলি কই। কি নিয়ে যে মায়ের সাথে ঝগড়া করলি বাবা। ঝামেলাটা মিটিয়ে ফেল।
-তিতির আছে বাসায় খালা? ওকে একটু দাও।
হাসানা বেগম তিতিরকে ডাকতে গেলেন।
-এই তিতির মাহমুদ ফোন করছে। তোর সাথে কথা বলবে।
-হ্যালো ভাইয়া কি খবর?
-এই তো পিচ্চি আছি ভালই। তোর খবর বল? আরেক জন তো তোর সাথে কথা বলার জন্য অধীর হয়ে বসে আছে।
-কে বলতো?
-আহা ঢং দেখে মরিই মরি। যেন কিছু জানেই না। পারলে অয়নকে একবার ফোন করিস। ও সামনের মাসের এক তারিখে মিশনে চলে যাবে।
– জানোই তো ভাইয়া সামনের মাসের দুই তারিখ থেকে আমার পরীক্ষা। বাসা থেকে বাহির হই না তেমন একটা। আচ্ছা দেখি কি করা যায়।
-মা কেমন আছে রে তিতির?
-কেমন আর থাকবে তুমি যেমন রেখেছো। তোমাদের কিছু বুঝি না বাপু।
-আজ রাখিরে তিতির।

মায়ের কাছে গিয়ে মাফ চাইবে? তাহলে তো মায়ের পছন্দেই বিয়ে করা লাগবে। আর মুন তাকে ছেড়ে সে কি করে জীবনটাকে সামনে এগিয়ে নেবে। এগুলো ভাবলেই তার এলোমেলো লাগে।

১৪.

তিতির অয়নের সাথে কোনো ভাবেই যোগাযোগ করতে পারলো না। মা কিছুতেই একা বাহিরে যেতে দিলেন না। কোথাও গেলেই মা না হয় বাবা সাথে যায়। তিতির কি করে ফোন করবে। শেষে ফুলির মাকে পান খাবার টাকা দিয়ে, না পাঠানো চিঠিটা পোস্ট কর দিল। কিন্তু সে জানতেও পারলো না অয়ন চিঠিটা পেল কি না?

পরীক্ষার একটা মাস যেন চোখের নিমিষে শেষ হয়ে গেল। প্রাকটিক্যাল পরীক্ষা বাকি। এর মাঝে একদিন বড় খালা খুব অসুস্থ হয়ে পড়লেন। হাসপাতালে ভর্তি করতে হলো। ডাক্তার বললো চিন্তা আর অনিয়ম করে শরীরের অবস্থা শেষ করে ফেলেছেন। হাসনা বেগম আর ইভানাকে হাসপাতালে রেখে তিতির আর তার বাবা বাড়ি ফিরে এলো। বাড়ির পাশে ফোনের দোকান দেখে তিতিরের মনে হল কেউ তো ভাইয়াকে খবর দেয়নি। সে বাবাকে বলে ফোন করতে গেল।
-হ্যালো মাহমুদ বলছি
-ভাইয়া আমি তিতির।
-হ্যা বল তিতির কি খবর? পরীক্ষা কেমন হলো তোর?
-আরে রাখো তোমার পরীক্ষা। বড় খালা খুবি অসুস্থ। হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো।

তিতির বাড়ি ফিরে ফুলির মাকে সবার জন্য রান্না করতে বললো। বাবা রাতে খাবার দিয়ে আসবেন। নিজের ঘরে এসে চেয়ার টেনে বসে। কত রকম সমস্যা তৈরী হয় মানুষের জীবনে। কি হয়েছিল খালা আর ভাইয়ার? কেন ভাইয়া বাড়ি ছেড়ে চলে গেল? নাহ্ এইসব চিন্তার কোনো শেষ নেই। ওয়্যারড্রোব থেকে কাপড় বের করে বাথরুমে ঢুকে পড়লো । হা্সপাতালের গন্ধ গায়ে লেগে আছে।

রেহানা বেগমের ব্লাড প্রেসার অনেক কম। আর নিশ্বাস নিতেও অনেক কষ্ট হচ্ছে। তাকে তাই অক্সিজেন আর আইভি দেয়া হয়েছে। হাসনা বেগম পাশে বসে ছিলেন। কি সুন্দর চটপটে মানুষটার এই কদিনে কি হাল হয়েছে। তিতিরের পরীক্ষার ব্যাস্ততায় তিনি ঠিকমত খোঁজ নিতে পারেননি। কি হত যদি দেখা করে আসত মাঝে মাঝে?

ইভানা আর ওর বাবা বাইরে অপেক্ষা করছে। হাসনা বাইরে বেরিয়ে ইভানাকে পাঠালেন ভেতরে। আর দুলাভাইকে বলে বাসায় রওনা হলেন। ফুলির মায়ের উপর রান্নার দায়িত্ব দিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না।
বাসায় ঢুকেই নিজের ঘরে গিয়ে কাপড় বদলালেন। ওযু করে নামায পড়ে রান্না ঘরের দিকে গেলেন। ফুলির মা ভাত আর সবজি রান্না করে ফেলেছে. তিনি মুরগির মাংস হাড়িতে বসিয়ে তিতিরের ঘরে ঢ়ুকলেন।
-কিরে এই অবেলায় গোসল করেছিস কেন? ঠান্ডা লেগে আবার অসুস্থ হলে কি হবে ভেবে দেখেছিস? এখনও তো প্র্যাকটিকাল পরীক্ষা বাকি।
-কিছু হবে না মা। তুমি বসতো আমার পাশে। কথা আছে তোমার সাথে।
-কেন কি হয়েছে?
-কিছুনা মা। ভাইয়া কে ফোন করেছিলাম।
-কবে আসবে বললো কিছু?
-না মা তা তো জানি না। তবে আসবে নিশ্চই।
-ভালোই করেছিস। ছেলেটা এলে হয়তো আপা একটু মনে বল পাবে। তুই খেয়ে বিশ্রাম কর। আমি তোর বাবাকে নিয়ে আবার একটু হাসপাতালে যাব। ঘর ছেড়ে কোথাও যাবি না। আর কে এসেছে না জেনে ফুলির মা যেন দরজা না খোলে।
-ঠিক আছে মা। তোমরা যাও। আমি একটু পরে খাব।

চলবে….

এমি