বাঁধনহীন সেই বাঁধন অকারণ পর্ব-০৬

0
351

#বাঁধনহীন_সেই_বাঁধন_অকারণ|৬|
#শার্লিন_হাসান

সময় আপন গতিতে চলছে। সন্ধ্যায় তারা ব্যাগপত্র গুছিয়ে কক্সবাজারের বাসে উঠলো। মেহরাব অনলাইনে টিকেট বুক করে রেখেছে। রুদ্র,আলিশা আসেনি এখনো। আরোহী মেঘ এক সীটে বসেছে। তাঁদের সামনের সীটে মেহরাব রাখি পেছনেরটায় অর্ণব বসেছে। মেঘ অধীর আগ্রহে বসে আছে। কখন আলিশা আসবে আর তাকে দেখবে সে। ভেতরে জেনো উত্তেজনা একটু বেশী মেঘের। তার ভাবনা বেশীক্ষণ যায়নি। এরই মাঝে রুদ্র বাসে প্রবেশ করলো। তার পেছন দিয়ে একটা মেয়ে। মেঘ আরোহিকে হাল্কা ধাক্কা দিয়ে বললো,
-এনি তাহলে আলিশা আপু?

আরোহী আলিশার দিকে একনজর তাকিয়ে বললো,
-“আলিশা আপু যে! কেমন আছো?”

আরোহীর কথায় আলিশা মুচকি হাসলো। অত:পর বললো,
– আলহামদুলিল্লাহ ভালো। তুমি কেমন আছো? আচ্ছা তুমি আরোহী না?

-“হ্যাঁ ঠিকই ধরেছো আমি আরোহী।

আলিশা হাসলো। রাখি,মেহরাবের সাথে কুশল বিনিময় করে রুদ্রর পাশের সীটে বসে পড়লো আলিশা। পাশের সারুর মেঘের সোজা সীটে তারা বসেছে। মেঘ আলিশাকে পর্যবেক্ষণ করছে।
-মেয়েটা দেখতে মাশাল্লাহ। রুদ্র স্যারের পছন্দ আছে বলতে হবে। হোয়াইট,ব্লাক সংমিশ্রণ করা স্কার্ট। শর্ট হেয়ারকাট। চুলগুলো বাচ্চাদের মতো একপাশে ক্লীপ দিয়ে ঠেকানো। মুখে তেমন সাজ নেই। এতে মেঘের চোখ ফিরছে না আলিশার থেকে। তার বিশ মিনিট পর বাস ছেড়ে দিলো। মেঘ কখনো বাইরে তাকিয়ে ছিলো কখনো বা রুদ্র, আলিশার খুনসুটি দেখছিলো। মনের মাঝে বিষাদের ছোঁয়া জেনো আরো প্রগাঢ় হতে লাগলো।

-এই অনুভূতি,এই মায়া কবে কেটে যাবে? কবে আমি সাধারণ হবো! আগের মেঘে ফিরে যাবো? রুদ্র কেউ না আমার। তার ভালোবাসার মানুষ আছে। সে তো আমায় নিয়ে ভাবে না তাহলে আমি কেনো তাকে নিয়ে এতো ভাবি? কেন কষ্ট পাই?”

রুদ্র,আলিশার দিলে তাকিয়ে কথাগুলো ভাবলো মেঘ। তার পাশে বসা আরোহী ব্লুটুথ দিয়ে গান শুনছে। এতো,এতো ভাবনা মেঘের চোখ বেয়ে দু’ফোটা অশ্রু গড়িয়ে পড়লো। কেউ দেখার আগে তা মুছে নিলো মেঘ।
-বেহায়া অনুভূতি! ভুল মানুষের প্রতি না এসে সঠিক মানুষটার প্রতি আসলে খুব কী ক্ষতি হতো? হৃদয়ে ঝড় বইছে। খুব মন চাইছে রুদ্রর সাথে একটু কথা বলতে। কিন্তু কীভাবে?
রুদ্র দূর থেকে সুন্দর! আর আমি কল্পনাতে তাকে নিয়ে সুখী।”

সারি সারি ঝাউবন, পাহাড়, ঝর্ণা, বালুর নরম বিছানা এবং বিশাল সমুদ্র সৈকত। বঙ্গোপসাগরের নীল জলরাশি আর শোঁ শোঁ গর্জনের মনোমুগ্ধকর সমুদ্র সৈকতের আরেক নাম কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত।

সকাল আটটায় তারা সবাই এসে পৌঁছালো কক্সবাজার। নিজেদের বুক করে রাখা রিসোর্টে উঠলো। সবাই যে যার মতো ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে শুয়ে পড়লো। আরোহী,আলিশা মেঘ এক রুমে। মেঘ ফ্রেশ হয়ে একটা কুর্তি পরিধান করলো। আরোহী ঘুমাচ্ছে। তাঁদের পাশের রুমে অর্ণব,রুদ্র। রাখি মেহরাব এক রুমে।
আলিশা ফ্রেশ হয়ে বেলকনির দিকে গেলো। তার পেছন দিয়ে মেঘ ও সেখানে উপস্থিত হলো। আলিশা কারোর সাথে চ্যাটিং করছে। মেঘ পেছন থেকে আসতে আলিশা কিছুটা অপ্রস্তুত হয়ে পড়লো। মনে,মনে কয়েকটা গা’লি দিলো মেঘকে সাথে মেজাজের বারোটা বেজে গেছে আলিশার। ছোট্ট করে বায় লিখে মেসেন্জার থেকে বেড়িয়ে এসেছে সে। তাকে দেখে মেঘ বললো,

-পাশাপাশি রুমই তো আপু। গিয়ে দেখা করে আসো! শুধু,শুধু মেসেজ করে কতটুকু শান্তি পাইবা? তার চেয়ে দেখে এসে শান্তিতে ঘুম দাও একটা।

-না আসলে রুদ্রকে না। আমার একজন ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলছিলাম।

-ওহ আচ্ছা। আমি ভুল বুঝলাম।

মাথা নাড়ালো আলিশা। তার সামনের সোফায় বসলো মেঘ। আলিশা মেঘকে দেখে বুঝলো গল্প করতেই বসেছে। আলিশার ও মন সায় দিলো মেঘের সাথে গল্প করার।

-তুমি মেহরাবের বোন না?

-হুম।

-রুদ্র বলেছে।

-কখন?

-বাসে।

-ওহ আচ্ছা।

আলিশার সাথে টুকটাক কথা বলছে মেঘ। তাঁদের লাভ স্টোরি শোনার জন্য বসেছে মেঘ। মেঘের এমন আগ্রহ দেখে আলিশাও বলতে শুরু করলো,

-রুদ্রর সাথে আমার দেখা হয় একটা বিয়ে বাড়ীতে। সেখান থেকে তার নাম জানি তারপর অনেক খোজাখুজি করে আইডি সংগ্রহ করি। এভাবে আমাদের কথা বলার শুরু! একসময় তা ভালোবাসায় রুপ নেয়। সম্পর্কের অনেকদিন হলো। তবে কিছু ধোঁয়াশা জিনিস আজোও পরিষ্কার হলো না। মাঝেমাঝে কনফিউজড হয়ে যাই আমি।

-কী ধোয়াশা জিনিস আপু?

-এই রুদ্রকে নিয়ে।

মেঘ ভাবছে হয়ত রুদ্রর ফ্যামিলি। আলিশা ভাবছে, রুদ্রর প্রতি ফিলিংস দিনকেদিন অবনতি হচ্ছে। হয়ত বা তৃতীয় জনের আগমনে। দু’জনে ভাবনা বিরতি ঘটলো যখন আলিশা বললো,

-ঘুম আসছে প্রচুর। চলো ঘুমাবে।

মেঘ সায় দিয়ে ভেতরে গেলো। আলিশা সোফায় শুয়ে পড়েছে। মেঘ আরোহীর পাশে।

বিকেলের দিকে তারা সবাই সমুদ্র পাড়ে গিয়েছে। সেখানে ঘুরাঘুরি পিক তোলা এসবের মাঝে কেটেছে। সন্ধ্যার দিকে তারা বুফিতে নাস্তা করে বাইরে বের হয়েছে। সন্ধ্যায় সমুদ্রের পাড়ে তারা সবাই হাঁটছে। সেখানে ছোট্ট করে লাভ শেপে বেলুন দিয়ে সাজানো। তার মাঝ বরাবর আলিশা দাঁড়িয়ে আছে। সবার সামনে আলিশাকে হাঁটু গেড়ে প্রপোজ করে রুদ্র। সবাই খুশিতে হাত তালি দেয়। রাখি ভীষণ এক্সাইটেড তার মুখ দেখেই বুঝা যাচ্ছে। মেঘ তাদের প্রপোজ করা দেখছিল। সবার সাথে দাঁড়িয়ে সে ও হাসছিলো। সেখানে ঘুরাঘুরি করে তারা রিসোর্টের দিকে এগোলো। রিসোর্টের গার্ডেনে রাখা বেতের চেয়ারে সবাই গোল হয়ে বসলো। আলিশা,মেঘ পাশাপাশি বসা। তাঁদের সামনে রুদ্র এবং অর্ণব বসা। তারা কথা বলছে গুরুত্বপূর্ণ কিছু নিয়ে। তার মধ্যে রুদ্র একটা বক্স বের করলো। মেঘ এক্সাইটেড হয়ে তাকিয়ে আছে। রুদ্র ডায়মন্ডের রিংটা হাতে নিয়ে মেঘের দিকে তাকালো। দু’জনের চোখাচোখি হতে মুচকি হাসে রুদ্র। মেঘের মনে হচ্ছে রিংটা তাকে পড়াবে। রুদ্র হাত এগিয়ে দিতে মেঘ নিজের হাত বাড়াতে যাবে তখন আলিশা রুদ্রর হাতে হাত রাখলো। রুদ্র হাসি মুখে আলিশাকে রিংটা পড়িয়ে দিলো।

তখন অর্ণব বললো,
-একটা গার্লফ্রেন্ড থাকলে আমি ও রুদ্র ভাইয়ের রুলস ফলো করতাম।

তার কথার জবাবে আলিশা বলে,
-মেঘ আছে ভাইয়া। প্রব্লেম কোথায়? মেঘকে বানিয়ে নিন না?

আলিশার কথায় রুদ্র মেঘের দিকে তাকায়। মেয়েটার মুখটা ও কালো মেঘে ছেয়ে গেছে। তখন রুদ্র আমতাআমতা করে বললো,
-তার দরকার নেই।

রুদ্রর কথায় আলিশা বললো,
-আহা! তুমি প্রেম করবা আর দুজন সিঙ্গেল ব্যক্তিকে মিঙ্গেল বানাতে অসুবিধা বা প্রব্লেম কোথায়?

-আলিশা সেটা না। আসলে মেঘের উচিত এখন পড়াশোনায় ফোকাস করা। আর আমি বর্তমানে তার টিচার! সে জায়গায় কী করে নিজের স্টুডেন্টকে অধ:পতনের মুখে ঠেলে দিই? ভার্সিটিতে যাক,এমনিতে বেটার কাউকে পেয়ে যাবে।

রুদ্রের কথায় আলিশা হাসে। মেঘ তব্দ হয়ে বসে আছে। রুদ্র তাকে নিয়ে ভাবছে,মাথা ঘামাচ্ছে এতে জেনো তার একটু শান্তি লাগছে। এক তরফা ভালোবাসা তো! সেজন্য প্রিয় মানুষটার মুখে নিজের নামটা শুনতে এক সাগর সুখ অনুভব হচ্ছে।

আড্ডা শেষে তারা ডিনার করতে বুফেতে যায়। মেঘ নিজের খাবার খাচ্ছে চেয়ারে বসে। তার টেবিলে আর কেউ নেই। তখন কোথা থেকে রুদ্র নিজের প্লেট নিয়ে মেঘের সামনের চেয়ারটায় বসে। রুদ্রকে দেখে মেঘ আশেপাশে চোখ বুলায়। আলিশা রাখিদের সাথে বসে খাচ্ছে। রুদ্র এখানে বিষয়টা তার হজম হচ্ছে না। নিজেকে ধমিয়ে রাখতে না পেরে বললো,
-স্যার কোন প্রব্লেম?

-আপনার কেন মনে হলো কোন প্রব্লেম?

-না আপনি সবার সাথে না বসে এই টেবিলে কেন?

-ওয়েট! টেবিলটা কী আপনার নামে রেজিস্ট্রি করা নাকী যে আমি এসে বসতে পারবো না।

-আমি সেভাবে বলিনি।

মেঘের মলিন,নরম কন্ঠে রুদ্র তাকালো। মেয়েটা কোন কিছু নিয়ে চিন্তিত। নাকী কোন বিষয়ে হার্ট হয়েছে? আর ভাবেনি রুদ্র চুপচাপ খেয়ে উঠে পড়ে।

পরের দিন সকালে তারা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে নেয়। তারা সবাই সেন্টমার্টিন যাবে। সিনএনজি ধরে কলাতলী যায়। সেখান থেকে সেন্টমার্টিন এর জাহাজ ধরে।

আলিশা রুদ্র পাশাপাশি বসে আছে। এই তো আলিশা ভিডিও করছে, পিক তুলছে রুদ্রর সাথে। মেঘ তাঁদের খুনসুটি দেখছে। আরোহী তার মতো করে ব্যস্ত।

সেন্টমার্টিন গিয়ে সমুদ্রের নীল পানিতে পা ভেজালো মেঘ। ঠান্ডা হিমশীতল বাতাস উপভোগ করলো। এই ঠান্ডা বাতাসটা মত,দেহ দুটোকেই সতেজ করে দিলো। ইশ! কী একটা আলাদা শান্তি আছে বটে। আল্লাহর সৃষ্টি কতই না সুন্দর।

সেন্টমার্টিন অনেকটা সময় কাটিয়ে তারা রওনা দেয় ইনানী বিচের দিকে। যেটা পাথুরে সৌন্দর্যে মনোমুগ্ধকর। কক্সবাজার থেকে ৩৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত ইনানী বিচ। স্বচ্ছ জলরাশিতে চোখধাঁধানো দৃশ্য। মেহরাব,অর্ণব,রুদ্র সেই স্বচ্ছজলরাশিতে নেমে পড়ে। সাথে রংবেরঙের পাথর।
মেঘ নিজের ক্যামরা বন্দী করছে সব কিছু।

ইনানী সমুদ্রের স্বচ্ছ পানিতে কয়েকঘন্টা গা ভিজিয়ে বসে থাকে তারা তিনজন। মেঘ পাথরের উপর বসে পা ভিজিয়ে রাখছে।

বাকীরাও বসে আছে। মেঘ উঠে দাঁড়ায়। কিছুটা দূরে আসতে আচমকা ধাক্কা লেগে নিচে পড়ে যায়। কারোর সাথে ধাক্কা লাগায় তাতেই বেশ চটে যায় মেঘ। পাশে তাকাতে মেজাজ হারালো। চেচিয়ে বলে,

-ধামড়া একটা লোক চোখে কী কম দেখেন? এরকম বাচ্চাদের সাথে ছোটাছুটি করছেন কেন?

মেঘের কথায় নিচ থেকে উঠে দাঁড়ায় নিবরাস। চশমাটা ঠিক করে পাশে দাঁড়ানো বাচ্চাটাকে কান মলানি দেয়। তাতে বাচ্চাটা ‘আহ্’ শব্দ করে উঠে।

মেঘ তখন চেঁচিয়ে বলে,

– নিজের ছেলেকে পরে মারতে পারবেন আমার কোমড়টা তো শহিদ করে দিলেন এবার উঠতে তো হেল্প করুন অকৃতজ্ঞ লোক।

মেঘের কথায় নিবরাস সহ বাচ্চাটা মেঘের দিকে তাকায়। নিবরাস হাত এগিয়ে দিতে মেঘ উঠে দাঁড়িয়ে নিজের জামাকাপড় ঝাড়তে লাগে।
তখন নিবরাস বললো,

-সরি মিস দেখতে পাইনি আপনাকে।

-হ্যাঁ, হ্যাঁ দেখবেন কীভাবে চোখ তো বাড়ীতে রেখে এসেছেন। নিজের বাচ্চাকে নিয়ে এতো ছোটাছুটি করার শখ হলে বাড়ীতে গিয়ে গার্ডেনে ছোটাছুটি করুন না।

-আমার বাচ্চা?

-আমাকে প্রশ্ন করছেন?একদম ঢং করবেন না। আপনাকে দেখেই বুঝা যায় চার পাঁচ বাচ্চার বাপ।

-বিয়েই করলাম না পাঁচ বাচ্চার বাপ বানিয়ে দিলেন?

তখন আবার একজন মহিলা আসে। মেঘের দিকে এক নজর তাকায়। ছোট বাচ্চাটার উদ্দেশ্য বলে,
-এতো ছোটাছুটি করার জন্য কী গেছে মেসবাহ তোমার আম্মু তোমায় মারবে দেখো। তখন আমিও কিছু বলবো না আর না তোমায় মামা কিছু বলবে।

মেঘ তাকায়। এতোক্ষণে বুঝলো বাচ্চাটা মামা এই ভদ্রলোক। তাতে মুখ বাকায়। আসলেই লোকটাকে এই বাচ্চার বাপ মনে করেছিলো মেঘ।

-নিবরাস তুমিও পারো বটে। তুমি মেসবাহকে প্রশ্রয় দাও।

-আম্মু ও তো ছোট এমন করছো কেন?

-আপনারা মজা করেন আরেকজনকে ফেলে দিয়ে। চোখ গুলো বাড়ী থেকে এনে নিজের কাছে রেখে দিন তাহলে আর এমন হবে না।

কথাটা বলে মেঘ চলে আসে। নিবরাস, মিসবাহ সাথে তার মা মেঘের যাওয়ার পাণে তাকিয়ে আছে।

-মেয়েটা কে নিবরাস?

তখন মিসবাহ বলে,

-বউ মনি।

-বউমনি হবে কীভাবে? ওকে ধাক্কা দিয়েছো তুমি মিসবাহ?

-না আমি দিইনি মামা দিয়েছে।

-আম্মু আমি দৌড় দিয়েছিলাম খেয়াল করিনি।
নিবরাস বললো। তার কথায় তার আম্মু আর কিছু বলেনি।

*****
দুপুরের শেষ সময়ে বিকেলের দিকে তারা কক্সবাজারের দিকে রওনা দেয়।
রিসোর্টে গিয়ে চেন্জ করে লান্স করে নেয়। প্রচুর ক্ষদা লেগেছে সবার।

আগামী কালকে তারা হিমছড়ির দিকে যাবে।

রুমে এসে ফোন হাতে বেলকনিতে যায় আলিশা। তার ফোনে অজস্র কল। ব্যস্ততার কারণে ধরতে পারেনি। তারউপর রুদ্র সাথে কোন রকম রিস্ক নিতে চায় না আলিশা।

বেলকনিতে এসে কল রিসিভ করে ধমকের স্বরে আলিশা বলে,

-সেন্স নেই তোমার মাঝে? বলেছি না আমি রুদ্রর সাথ ট্যুরে এসেছি। নিজের মরতে চায় সাথে,সাথে আমকেও মারতে চাও?

অপরপাশ থেকে রাগী কন্ঠে জবাব এলো,

-রুদ্রর সাথে গেলে তো সবই ভুলে যাও। আমি কে? খবর রাখো?

-মাথা গরম করবি না।

-জাস্ট শাট আপ। আমার ঠেকা না তোমার ঠেকা আমার কাছে সব কল রেকর্ডিং,পিকচার,ভিডিও আছে আমার কাছে। আমি ভাই ছেলে মানুষ এমন হাজারটা আলিশা আসবে যাবে বাট এই আলিশার কাছে কিন্তু হাজারটা রুদ্র আসবে যাবে না। রুদ্র ভাই এক পিস।

-শত্রুর এতো গুণগান গাইছিস যে।

-গুণগান না জাস্ট সত্যিটা বললাম। আমিও কিন্তু একপিস আলিশা বেইবি। সো ভেবে চিন্তে কথা।

-আচ্ছা বাদ দাও। আগামী কালকে রওনা হবো। দেখা হবে শীঘ্রই।

#চলবে