বাতাসে তার সৌরভ পর্ব-০৭

0
195

#বাতাসে_তার_সৌরভ–৭

“সব নিসি তো ,তোমার দেরি হইলে যাওয়ার প্ল্যান ক্যানসেল। না ও যাবে না ওর এডমিশন টেস্ট ভুলে যাও কেন? ”

সকাল সকাল রুমে নিশিকে হুড়োহুড়ি করে উঠতে দেখে নদী বেশ অবাক হলো।এক হাতে ফোন সামলাচ্ছে, এক ব্যাগে কাপড় গোছাচ্ছে। নদীর সাথে চোখাচোখি হলেও তেমন বিকার নেই।

– কোথাও যাস?

– হ্যাঁ রে হুট করে প্ল্যান হলো। দুইদিনের জন্য বান্দরবান। রাফিনের হুটহাট ব্ব্র হবার জারি ওঠে। জানিস না, তোকেও নিতে বলতেসিলো সেইদিন তোর ফর্মগুলো নিজে কিনলো আজ ভুলে বসে আছে।”
নদী কিছু বলল না। তার চিন্তায় মাথা ধরে যাচ্ছে। তার সাথে রাফিনের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে নিশি। এই চরিত্রটার মধ্যে আকর্ষণীয় কী আছে নদী ধরতে পারেনি।বাঁশের মতো লম্বা, শুকনো, ফ্যাকাসে ফর্সা। দর্শনীয় শুধু মেয়েদের মতো ভাসা ভাসা চোখ গুলো। কিন্তু দৃষ্টি কোন এক জায়গায় স্থির থাকতে পারে না।কথার মাঝে কিছুক্ষণ পর পর সর্দি-জ্বর রোগীর মতো নাক টানে। নদী কেমন অস্বাভাবিক লেগেছে। তবে এটা নিশিকে বললে বিপদ। তবু্ও অস্বস্তি নিয়ে বলল

– তা তুই একাই যাবি?

– একা কীভাবে?রাফিন আর চার বন্ধু যাচ্ছে বললাম না?

– মানে একাই তো?

– ধুর, তোর তো সুই একজায়গায় আটকে আছে। শোন তোর টেনশন নাই, পাশের ঘরের নীলিরবোনও আসছে, দুই তিনটা ক্যাম্পাস তোর সাথেই পরীক্ষা পড়ে যায়। একসাথে চলে যাবি আসবি।

– একা যাবো?

– আবার একা? বললাম না নীলির বোনের সাথে যাবি আসবি।

নদী কী বলবে বুঝতে পারছে না।অন্তত এডমিশন পরীক্ষার সময় নিশি সঙ্গ দেবে এটা হয়ত বেশিই আশা করে বসেছিলো। আসলে নিজের পৃথিবীতে মত্ত থাকা নিশি যে এই কয়দিন দায়িত্ব দেখিয়েছে সেটাই অনেক। তবে যাবার আগেও বড়বোন সুলভ পরামর্শ বন্ধ হলো না

” পরীক্ষা দিবি চলে আসবি, হাবিজাবি কোন ফ্রেন্ডশিপ একেবারে নো।এইখানের সবগুলো লুইচ্চা, এইগুলা আর কিচ্ছু না মিনিমাম মাইয়াদের ফাকে নিতা ***এর ধান্ধায় থাকে, নেকেড ট্রুথ। কিপ ইট অন ইউর মাইন্ড, আমি কিন্তু চিন্তা নিয়ে গেলাম ”

” আমিও চিন্তায় আছি কিন্তু তোকে নিয়ে।” নদী বলে কিছু সময় নিলো। কাল নিশির সাবলেটের ঘর গোছাতে গিয়ে কোনায় পড়ে থাকা কনট্রিসেপটিক পিলের খালি পাতাগুলো দেখে মনে পড়েছিল এগুলো সাতক্ষীরায় ডাক্তার আপার ক্লিনিকে দেখেছে। নিশির হুটহাট বেরিয়ে যাওয়া, মাঝরাতে গেট খোলা, গলায় ঘাড়ে জমাট রক্তের হেতু এখন নদীর অজানা না।

ন্যায় অন্যায়ের বিষয়টি স্পষ্ট নয়, তবে তার কেমন গা শিরশির করে। এখনো করছে। নিশি বোনকে তেমন পাত্তা না দিয়ে নিজের মতো একটা লো নেক ক্রফটপ আর ডেনিম জিন্স পরে রেডি হয়ে গেল।

“এই রাফিনের কথা শানু খালামনি জানে ? ”

নিশি আয়নায় দিকে চুল ব্রাশ করতে করতে বলল,” মম ইনস্টা, এফবিতে এড আছে, না জানার কিছু নাই, তার বলারও কিছু নাই। লাইফটা আমার। আমি জানলেই হলো, আর আমি জানি রাফিনের থেকে আমাকে কেউ ভালোবাসে না, একটু গাধা মার্কা বাট হি হেজ দ্যা পিউরেস্ট সোল। ও ছাড়া এই দুনিয়ায় কেউ আমার না”

” ভালোবাসা ঠিক আছে কিন্তু এমনে … ”

“এমনেই নরমাল আর ন্যাচারাল। ওই ফেরিটেলিংসের যুগ অনেক আগেই শেষ তুই এখনো বুঝবি না, ওই রানুখালার খুপড়ি পাকেরঘরে থেকে থেকে তোর আসলে মেন্টালগ্রোথ হয় নাই ।আগে ঢাকায় সেটল হ, আমিই সাইজ করব তোকে। যে ভাবে লাইফ লিড করে সেটা তার চয়েস, সেটা প্রত্যেকের রেসপেক্ট করা উচিত। তোর এমন কিছু হলে আমিও নাক গলাবো না। এন্ড দি সেইম আই এক্সপেক্ট ফ্রম ইউ। গট ইট বেইব? এনিওয়ে বেস্ট ওফ লাক। ভালো করে পরীক্ষা দে। গুড বাই কিউটি।”

নিশি নেমে গেল। নদীর কেমন একা লাগছে।নিশির সাথে পরামর্শ ছিল যা করা হলো না। জানানো হলো না যে তার ডান দিকে বেডরুমে থাকা দোলা আপু নদীকে একটা চাকরির অফার দিয়েছে। মেকাপের কাজ জানে বলে এসিস্ট্যান্ট মেকাপ আর্টিস্ট হিসেবে কাজ। তার উপর বেতনটাও অসাধারণ।

সাবলেট বাসায় ছয়টা মেয়ে চারটা বেডরুম নিয়ে থাকে।সবাই স্টুডেন্ট পাশাপাশি সাইডজব করে, কেউই কারো সাথে ঠিক যেন মানসিকভাবে যুক্ত নয়। তাদের কথা পোশাক পরিচ্ছদ তুলনায় নদীর নিজেকে ম্লান লাগে। নিশির কাপড় জামার মধ্যে অল্পই সে গায়ে দিতে পারে কারণটা শুধু সাইজ নয়, সেগুলো পরার জন্যও সাহস লাগে। কিন্তু এখন নদীর এগোতে সাহস লাগবে।।নিশি চলে গেলে নদী দোলার ঘরে জানালো তার কাজে আপত্তি নেই।
*****

” এই বাড়ি সেটা না, আসতে যেতে আমরা ভূতের বাড়ি বলতাম যেটা?.”

” হ্যাঁ! গেটের মুখে কাঠাল গাছ ছিল যে বিল্ডিংটায় এইটা ওই বিল্ডিং! আনবিলিভেবল! ”

” সত্যি অসাধারণ ইন্টেরিয়র!”

সামনের টেবিলে বসা পরিবারের কথোপকথনে রক্তিম হয়ে যাচ্ছে তাদের কাছাকাছি টেবিলে বসা এক তরুণী। প্রত্যেক শিল্পীর তার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ সময় তার কাজের স্বীকৃতি যখন দর্শনধারীর চোখে দেখে। ধানমন্ডির গ্যাব্রিয়েল ক্যাফে থেকে গ্যাব্রিয়েলস কিচেনের বাড়তি বিশেষত্ব এর অসাধারণ ইন্টেরিয়র। বিল্ডিং রি-ডিজাইন আর রেস্টরেশনের পার্থক্য আছে। তবে তরুণ ডিজাইনার এই দুইয়ের মাঝামাঝি পন্থা বেছে নিয়েছেন, কাজের সাথে বাড়ির পুরোনো ঐতিহ্যকেও সম্মান করেছেন। হোটেলে বসার স্পেস বাড়াতে উঠানের বেশ কিছু জায়গায় সিলিং ফিট করতে হয়েছে। তবে বাড়ির সামনে বেড়ে উঠা। পুরাতন কাঠাল গাছটা কাটেননি। বরং সেই গাছটাকে কায়দা করে সিলিংয়ের অন্তর্ভুক্ত করেই বর্ধিত অংশ ডিজাইন করা হয়েছে। গাছটা এখন ইন্টেরিয়রের একটা অংশ।যেটাও খুব অনবদ্য ডিজাইনে পরিণত হয়েছে ।

সিমেন্টের সিড়ি ভেঙে তোলা হয়েছে ভারী কাঠের ক্যান্টিলেটর স্টিয়ারকেস, পাল্লাদার জানালাগুলোর ডিজাইন পরিবর্তন না করে কাঠ বদলে ওয়াটার প্রুফ লিকার ভার্নিশ করা হয়েছে। পুরনো বাড়ির বিশালতাকে নষ্ট না করে অভিজাত্যের সাথে মেট্রোলুকের ছোঁয়া দেয়া হয়েছে। অনেকের মতে আর্কিটেক্ট একজন নারী বলেই বাড়ির পুরনো মমতাকে এড়াতে পারেননি। রেস্তোরাঁয় এলে সবার মাঝে আপন আপন অনুভব হয়।

“ফুড ইজ নাইস বাট আই লাভ দি এম্বিয়েন্স অলসো”

রেস্টুরেন্টে আগত বিদেশি অতিথিদের কথায় রম্য হাসি ছুঁড়ে দিলো তার মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটির ইয়ারমেট তামান্নার দিকে। তামান্নাও লাজুক হাসলো।

” সো দি কুইন ইজ ব্যাক উইথ দ্যা ব্যাং! আমার সৌভাগ্য যে আমি ঢাকায় সেটেল হবার পরপরই তোকে পেয়ে গেলাম ”

” তোর সৌভাগ্য তো বটেই তবে অসাধারণ একটা লোকেশনের জন্য৷ রবিন্দ্র সরোবরের কাছে এই মানের রেস্টুরেন্ট চট করে পাওয়া যায় না। আর এই কাজটা করে আমার ভালোও লেগেছে। ”

” দোয়া কর ট্যামি, এই কাজটা যেন আমার ভালো লাগে। ”

” অফকোর্স, তুই তোর প্যাশন পার্সিউ করছিস,কনস্ট্রাকশন ইঞ্জিনিয়ার হওয়া সত্বেও তোর মতো মারাত্মক শেফ আছে কোথাও? এই কাজে ভালো লাগবে না কেন?” তামান্না বলতে বলতে উত্তরটা পেয়ে গেল। ছোট্ট একটা নি:শ্বাস ফেলে বলল, ” ওহ মিশেলের শুনলাম… ”

” ফাইনালি প্যারিসে সেটেল হয়েছে বয়ফ্রেন্ডের সাথে ” রম্য হাসার চেষ্টা করলো।

“রমি তোর মনে হয় না এখন তোরও মুভ-অন করা দরকার?আই মিন ব্রেকাপের প্রায় দুইবছর হয়ে গেছে, তুই দেশে আছিস এখানে অনেক চমৎকার মেয়েও আছে”

” যাকে দেখলে আমি আমার বারো বছরের রিলেশন ভুলে যেতে পারবো? এতই আইকনিক মেয়েদের ভাণ্ডার এই দেশে ” রম্য হেসে ফেলল,” যাদের প্রেম সাকসেসফুল হয় তারা অবশ্য অন্যকে সহজেই সাজেশন দিয়ে দেয় ”

সামনে বসা সুন্দরী স্থপতি একটু রক্তিম হতে হতে দ্রুত সামলে নিলো, ” ব্যাপারটা এমন না রমি, এগুলো ভাগ্যের ব্যাপার। সাথে নিজের একটা এফোর্টও লাগে। সেটা সবার আগায় না, কিন্তু যা হয়ে গেছে তা নিয়ে পড়ে থাকা কোন কাজের কথা না ; তুই ট্রাই তো কর। ”

” আব্বুর শেখানো বুলি শেষ হলে আমরা অন্যকথা বলার ট্রাই করি?”

দুই পুরনো বন্ধুর টুকটাক কথায় সময় ফুরিয়ে এলো। তামান্না অফিস সেরে তার প্রজেক্ট দেখতে এসেছিল, এখন জিকাতলার বাড়িতে ফিরতে হবে। শাশুড়ী রাজশাহী থেকে ঢাকায় এসেছে কিছুদিন হলো; এখন দেরি করলে ঝামেলা।

রম্য হেসে বলল, ” তুই দেখি পুরোপুরি অর্থডক্স বাঙালি মেয়ে হয়ে গেছিস ”

” আমি একটা বাঙালি মেয়েই রম্য। কিন্তু আঙ্কেলের সান্নিধ্যেও তুই বাঙালি হতে পারলি না ‘

” বাঙালি হওয়া অনেক গ্যাঞ্জাম বাবা, ডরকার নাই ” কথোপকথনে এই প্রথম রম্য টেনে টেনে বাংলায় কিছু বলল।

তামান্না প্রস্থানের সময় আরেকবার তৃপ্তি নিয়ে গ্যাব্রিয়েল কিচেনের দিকে তাকালো। একটা পোড়োবাড়ি থেকে আজকের কী অপূর্ব পরিণতি। নিজ হাতে গড়া শিল্প দেখার তৃপ্তিই অন্যরকম।

ক্যান্টনমেন্টের গৃহীজীবন থেকে নিজ শহরে ফিরে, লম্বা সময় পর কোন প্রজেক্টে কাজ করলো তামান্না। মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের স্ট্রালচারাল ফ্যাকাল্টির ভালো অর্ধ বাঙালি বন্ধু রম্য তাকে কাজে স্বাধীনতাও দিয়েছে। প্রজেক্টের গোটা সময়টা সত্যিই খুব ভালো কেটেছে। এখন নতুন নতুন সব ডিজাইন মাথায় এসে ভিড় করছে। তবে শুরু শুরুতে আগাতে গিয়ে কিছু ছোটখাটো সমস্যা হয়েছিল।

“রেনোভেশনের সময় সাদেক বলে যে সাইড-ইঞ্জিনিয়ার গায়েব হয়েছিল তার খোঁজ পাওয়া গেছে? ”

তামান্নার প্রশ্নে রম্য মাথা নাড়লো,” খোঁজ চলছে কিন্তু কোন হদিস নেই।ছেলেটা যেন হাওয়ায় মিলিয়েছে। এলিট ফোর্স বি এস ইটি এফকে কল দিতে হবে মনে হচ্ছে।”

” ওরা এত ছোট ছোট কেসের ইনভেস্টিগেশন করে না” তামান্না হাসলো।

” ওহো ভি আই পি অফিসারের স্পাউস,” রম্য বলতে বলতে হাসলো,” কেস এতো ছোটও না।যথেষ্ট গুরুতর, ভূতের তান্ডবে দারোয়ান পালিয়েছে, একজন ওয়েট্রেস ফেইন্ট হয়েছে ”

” ওহ হ্যাঁ কাজ চলাকালীন সময়ে একজন নাকি ভূতের থাপ্পড়ও খেয়েছিল…” তামান্না হেসে ফেলল।

” কতটা উইয়ার্ড চিন্তা ভেবে দেখ।কবে কে এই বাড়িতে মারা গেছে তার আত্মা নাকি বাড়িময় ঘুরঘুর করে। এই বাড়ি নাকি অভিশাপ্ত। এইখানে কিছু করলে মালিক অপঘাতে মরবে, হোটেল সংশ্লিষ্ট সবাই বিপদে পড়বে আরও কত কী .. ”

তামান্না মেহবুব খান মাথা নাড়িয়ে বলল” তাহলে তো অচিরেই আমারও বিপদ আসছে। কিন্তু কই আমি তো এমন কিছুই ফিল করলাম না।এসব পাশের রেস্তোরাঁগুলোর ছড়ানো আর কিছুই না। মাশাল্লাহ তোর রেস্টুরেন্ট জমে গেছে, এখন সাহস রাখ। এটায় পুরাটা সময় দে, কাজের মাঝে ডুবে দেখবি সব ভুলেও গেছিস, হয়তো মিশেলকেও ”

তামান্না গাড়িতে উঠে পড়লো। রম্য দরজা লাগিয়ে হাল্কা গলায় বলল, ” একটা কথা বল, মেজর সাহেবের সাথে হুট করে যদি বিয়ে না হতো,তাহলে তুই শত ডিজাইনের কাজে ডুবেও তাকে ভুলতে পারতি?”

তামন্না বন্ধুর দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো তারপর শান্ত গলায় বলল, ” না পারতাম না, ওর মতো একজনই আছে”

” হোপ ইউ গট মাই এন্সার ট্যামি, ট্রু লাভ ইজ অলওয়েজ ওয়ান ওফ আ কাইন্ড”

” ট্রু লাভ চিনতে আমাদের ভুলও হয়,
হয়তোবা তোর তেমন কারো সাথে দেখাই হয়নি, ইউ নেভার নো ”

তামান্না স্বভাবসুলভ তর্কে জিতেই রওনা হলো। রম্য এখনো স্থির দাঁড়িয়ে আছে। চোখের সামনে অতীতের এক স্বর্ণকেশীর ছায়া। যার প্রেমে সে পড়েছিল মাত্র চৌদ্দবছর বয়সে। যার ঘনপ্রেমের সাথে তুলনা হয় তার রান্নার প্যাশন। কিন্তু কিছু মূর্তিমান স্বপ্ন সব সময় স্বপ্নই রয়ে যায়।রম্যর কাছে মিশেলও এখন একটা স্বপ্ন।
তাকে ভুলতে যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যস্ত জীবন,নিশ্চিত চাকরি সব সুবিধা ছেড়ে পালিয়ে চলে এসেছে তার পৈতৃক দেশে।

নতুন ভাষা, সংস্কৃতি, মানুষ, সাথে বৈরী পরিবেশে মোটামুটি অসম্ভব একটা লক্ষ নিয়ে তাকে এগিয়ে যেতে হয়েছে।।গ্যাব্রিয়েল কিচেন কি পারবে তার স্মৃতিগুলোর সাথে লড়াই করতে? সেটা যে বেশ জটিল, সবে মাত্র প্রথম ধাপে পা রেখেছে সে।

” গ্যাব্রিয়েল স্যার ”

ফ্লোর ম্যানেজার জেরিন পেছনে এসে দাঁড়িয়ে ” বিকালে একটা গুরুত্বপূর্ণ কল এসেছিল ধানমন্ডি থানা থেকে। ইটস এবাউট সাদেক ”

” ওই সাইট ইঞ্জিনিয়ার রিয়েলি! কোথায় পাওয়া গেছে তাকে?”

” পাওয়া গেছে তবে জীবন্ত না। হাতির ঝিলে, সম্ভবত ছিনতাইয়ের কবলে পড়েছিল। পুলিশ ডি এম সির মর্গে রেখেছিল বলেই খোঁজ পাওয়া গেল”

রম্য কোন উত্তর দিলো না।মনটা বিষণ্ণ সাথে ছোট একটা সন্দেহ। বাড়িটায় কি আসলেই অশুভ কিছু আছে? ভাঙা হৃদয় নিয়ে এই অদৃশ্য শক্তির সাথে লড়াই কি সম্ভব?

*****
এই বছর মধ্য জানুয়ারিতেই শীতটা কেটে গেল। ঝিল আছে বলেই সন্ধ্যা নামার সময় ঠান্ডা ঠান্ডা লাগে। আজ শুক্রবার ছুটির দিনেও ছিলো পরীক্ষা ছিল আজিমপুরে ।

এম সি কিউয়ের প্রশ্নপত্র নিয়ে বেশি ভাবতে ইচ্ছে করে না, হল থেকে বেরিয়ে অদ্ভুত এক অবসাদে পেয়ে যায়।আজ শেষ এডমিশন টেস্টটা দিয়ে নদী সোজা লেকের দিকে রিক্সা নিয়ে যেতে বলল। ইচ্ছা ছিল এই পর্যন্ত হেঁটেই আসে।কিন্তু চিনে আসার দিশা পেল না।এদিকে ঢাকায় রিক্সাভাড়াও এত যে কলিজা কেটে যায়। তবে আসাটা জরুরি ছিল। মূলত নিশির এখনো বান্দরবান থেকে ফেরার নাম নেই। ফোন তুললেও ধরে না।এদিকে পাশেররুমে থাকা দোলার বন্ধু আসাদের সাথে কথা হয়েছে। সে ছয়টার দিকে মুক্তমঞ্চে থাকবে বলেছে৷ দোনামনা করতে করতে নদী চলে এসেছে।
ছুটির দিনে অনেকেই বেড়াতে এসেছে। নদীর মতো অল্পবয়সী মেয়েরাও আছে। তবে সঙ্গী ছাড়া নয়। হয় কারো অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে অথবা কেউ সঙ্গীত অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে।

নদীর লেকেরধারে একা হাঁটতে খারাপ লাগছে না। পাশ কাটানো নানানরঙের মানুষের কলকাকলি শুনতে ভালো লাগছে। জায়গায় জায়গায় মুখরিত জটলা। কেউ পরিবার নিয়ে, কেউ বন্ধু বান্ধবের ঝাঁক।রং-বেরঙের বেলুনের গাড়ি, ভুট্টা, বাদাম ওয়ালা চটপটির ঠ্যালার সামনে যেন অঘোষিত উৎসব। আটবছর আগেও লোক সমাগম হতো? হয়তো। পরিবর্তনের ধারা নদীর সামনেই বহমান ছিলো, তার উপলব্ধি করার বয়স ছিলো না।

সেদিন অস্থির হয়ে চন্দ্রমল্লিকা বাড়িটা খুঁজছিল।আজ কেন যেন কাছাকাছি থেকেও সেই জায়গা ভুলতে ইচ্ছে করছে। নতুন পোশাকে চন্দ্রমল্লিকা আর তার নয় এটা জেনেই হয়তো.. । ওটার নাম পালটে গেছে সাথে মালিকও। চোখে ছায়া পড়ছে একটা মুখের, গ্যাব্রিয়েল সামদানী !লোকটার কালো চোখজোড়া যেন অন্তর্ভেদী, চেহারাটা ভাবলেও অজানা কারণে গা শিউরে উঠে নদীর। এটা হারানো রাজত্বের নতুন দখলদারের প্রতি আকর্ষণ না বিদ্বেষ তা জানে না নদী।

পুরনো মোহ কাটাতেই নদীর চোখ খুঁজে ফিরছে এই ঝিলের পাড়ে একটা লাল ইটের জাহাজবাড়িকে ।যার আবছা আবছা স্মৃতি আজও মনে পড়ে। অনেকবার বাবার হাত ধরে চলে আসতো সেখানে। শেষবার এসেছিল ২০১০ এ। কোন একজন আধ্যাত্মিক সাধকের বাড়ি ছিল নাকি। শুধু নদীরাই নয়, দূর দূর থেকে মানুষ বাড়িটা দেখতে আসতো।

ঝিলের উপর লাল ইটের বাড়িটার প্রতিফলন হতো। অদ্ভুত সুন্দর লাগতো, মনে হতো কোন তীরে ভেড়া জাহাজের ওপর দূর্গ বসিয়ে দিয়েছে। আজ সব গায়েব। তবুও তার স্মৃতিগুলো কতটা জীবন্ত,অদৃশ্য বাড়ির সাথে জাগ্রত হচ্ছে অদৃশ্য মানুষের কলতান। ভুট্টাপোড়া, রিক্সার রিংরিং শব্দের মাঝে ভেসে আসে অতীতের সৌরভ…

” শহরটা চোখের পলকে পালটে যাচ্ছে তাই না মিনু”

” তুমিই পাল্টাচ্ছ না। একটা মান্ধাতার আমলের ভাঙা বাসা নিয়ে পড়ে আছ। বাচ্চাদের ভবিষ্যতের কথা কিছু ভাবো এতগুলো টাকা লোন করে বসে আছ।কোথাও কিছুই হলো না, কিভাবে শোধাবে? ”

“বাড়িটা ভাঙতে মায়া লাগে মিনু। আব্বার অনেক কষ্টের টাকায় কেনা বাড়ি। আমার গোটা শৈশব পার হয়েছে, তোমার সাথে সংসার হলো নদীর জন্ম হলো, বাবলু.. ”

” এই স্মৃতি আঁকড়ে তুমি বর্তমান ধ্বংস করছ। বাড়ি পুজা করছ, আমরা না খেয়ে মারলেও তোমার কিচ্ছু যায় আসে না। ”

” আপু আপনার ফোন বাজে” হাওয়াই মিঠাইওয়ালার ডাকে নদী ফিরলো বর্তমানে। বিরক্তই লাগলো। অনেক দিন পর বাবা-মায়ের কন্ঠ এত স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছিলো।

” হ্যালো নদী বলছেন?. আমি আসাদ।

” জি আমি চলে এসেছি”

” এখনই আমার আসতে লেট হবে, তবে চিন্তা নেই আমি আপনাকে সাথেই নিয়ে যাবো। আপনি তো পার্লারের সব কাজই জানেন তাই না”

” টুকটাক জানি আর কি ”

” সমস্যা নেই বাকিটা আমি ট্রেনিং করে নেব আমার আধাঘন্টা লাগবে, এসে কল দিচ্ছি ”

আসাদ ফোন ছাড়ার পরে নদী কিছুটা বিভ্রান্ত ঘুরতে লাগলো। লোকটা এমন করে বলছে যেন আজই চাকরি দিয়ে দেবে। এই আসাদ কে সেটাও ভালোমতো জানে না। তিনবার শুধু কথা হয়েছে ফোনে।হুট করে এসে ভুল হলো না তো? নিশিটার সাথে কথা বলে নিলে হতো কিন্তু ওকে পাওয়াই তো মুশকিল। এগোনোর ভুলের মধ্যে সঠিকটা বাছতে নদীকে ঝুঁকি নিতেই হবে।

যদিক মাঝে মাঝে নদীর সবাইকেই ভুল মানুষ মনে হয়। সেইদিন সোহরাব সামদানী সাহেব কতটা আদর আপ্যায়ন করেছিলেন তার রেস্টুরেন্টে। নদীর বিস্ময়ের লহর কমে একসময় এই মানুষটাকেও সন্দেহ হয়েছে। কেন মনে হচ্ছিলো লোকটা খাবারে কিছু মিশিয়ে দিলো কী৷ একই জায়গায় আরও একজনকে আবিষ্কার হলো রাবেয়া ফুপি। অনেক দিন পর তাকে দেখে নদীর স্বস্তি হলো। রাবেয়াও তাকে দেখে অবাক হয়েছিলেন ।” কত বড় হয়েছ তুমি মেয়ে
রীতিমতো লেডি! নাম্বার দাও তোমার ঢাকায় কোথায় আছ বল। কল দেব তোমাকে অনেক কথা আছে।”রাবেয়া ফুপির সাথে কথা বললেও হতো কিন্তু কেন যেন দ্বিধা লাগে। আর কিছু দুর্বোধ্য অভিমান। কেন সেটাও জানে না।

ভাবনা ঝেড়ে ফুটপাতে সামনে এগোতে গিয়ে বাধা আসছে, শ্যাম বর্ণ মাঝারি উচ্চতার এক যুবক সরাসরি তাকিয়ে আছে। নদীর বিরক্ত লাগছে।একা একটা মেয়েকে বিভ্রান্তর মতো হাঁটতে দেখে কি ভেবে বসে আছে আল্লাহই জানে, জোরে পাশ কাটিয়ে এগিয়ে যাবে,

” নদী ভালো আছেন? আমাকে চিনেছেন?

“আপনাকে কি চেনার কথা? ”

” আপনি গ্যাব্রিয়েল কিচেনে এসেছিলেন গত সপ্তাহে, আমি এটেন্ড করেছিলাম আপনাকে ”

নদীর মনে পড়ল তার অর্ডার নেওয়া যুবকটা।

” ম্যাম আমি তখন ঠিক জানতাম না যে আপনি সোহরাব স্যারের গেস্ট , আমি রেস্টুরেন্টে ডিউটি কম দেই।স্যারের পি এ হিসেবেই নিয়োজিত থাকি। আমার নাম তুষার “ছেলেটা সাথে সাথে আসছে৷
” আমি আপনাকে মনে মনে সরি বলতে যাচ্ছিলাম , আজ দেখা হয়ে গেল। ”

নদীকে এত গুরুত্ব দিয়ে কেউ কথা বলছে সেটা শুনে ভালোই লাগছিল। তবে তার সময় হয়ে আসছে মুক্ত মঞ্চের দিকে যাওয়া দরকার। ” আশাকরি আপনি আমার অ্যাপোলজি এক্সেপ্ট করবেন , আর স্যারও আপনাকে দেখে খুশি হবেন ”
” স্যার মানে?”

নদী তুষারের কাছে জানলো সোহরাব একটা কাজের থেকে ফেরার পথে রবীন্দ্র সরোবরে গাড়ি থামিয়ে ছিলেন ভুট্টা কেনার জন্য। নদীকে দেখে যতটা বিস্মিত হলেন তার থেকে বেশি খুশি হলেন। নিজেই ভুট্টা এগিয়ে দিলেন।

” এখানে ভুট্টা খেতে গেলে খুব নষ্টালজিয়ায় ভুগি। আমার দুই ছেলে অনি আর রমির মা রেবেকার সাথে এখানেই দেখা হয়েছিল।তখন ও একটা মিশনারী এন জিওতে চাকরি নিয়ে এদেশে এসেছিল ”

ভুট্টা মুখে দেওয়ার পর নদীর এসব কথা কানে যাচ্ছিল না। তার দুপুরে কিছু খাওয়া হয়নি। হাতে যে টাকা নিয়ে বেরিয়ে ছিল রিকশাভাড়ায় অনেকটুকু চলে গেছে।বড় নোটের দুটা আছে পার্সব্যাগের ভিতরের কাপড় কেটে সেলাই করে লুকিয়ে রাখা।

” সেদিন খুব ভালো দিনে এসেছিলে তুমি। তোমাদের বাড়িটা নতুন রূপে কেমন লাগলো?”

” আমি তো আসলে জানতামই না ওখানে আপনাকে পাবো”

” কিন্তু আমি তো তোমাকে কার্ড দিয়েছিলাম। সেখানে বাড়ির ঠিকানা ছিলো আমি ভেবেছি তুমি জেনেশুনেই এসেছো ”

” ওহ ” নদী কি বলবে বুঝতে পারছিল না। কার্ডটা সে খেয়াল করে পড়েইনি আর এখন তো হারিয়ে গেছে। একটু ভেবে বলল,”কিন্তু বাড়িটা তো ব্যাংকে মডগেজ দেওয়া ছিলো না?আমার বড়মামা তাই বলেছিল। শুনেছিলাম ব্যাংকও বিক্রি করে দিয়েছে, আপনিই কি কিনেছেন? ”

“আরে নাহ! ” সোহরাব সাহেব কিছুটা অপ্রতিভ হয়ে গেলেন ” আমরা লিজ নিয়েছি ”

” লিজ নেওয়া?”

” পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখেছিলাম এর নতুন মালিক বাড়িটা লিজ দেবে , বাড়িটার সাথে আমারও মেমোরি ছিলো। এক অর্থে মায়ায় পড়েই রিস্কটা নিয়েছিলাম। একবারে দশবছরের জন্য কন্ট্রাক্ট করে নিলাম। রমিরও লোকেশনটা ভালো লাগলো ”

রমিটা কে নদী বুঝলো না, এর মাঝেই আসাদ কল দিলো। সোহরব সাহেব নদীর চাকরির চেষ্টার কথা শুনে বললেন এইখানেই ডেকে নিয়ে আসতে। আসাদ জায়গা মতো এসে নদীকে দেখে যতটা উচ্ছাসিত হলো আরও দুজন পুরুষের সাথে দেখে ততটাই হোঁচট খেলো।সোহরাব মনোযোগ দিয়ে দেখলেন তাকে, বেশ জিম করা সুঠাম দেহি ট্রিম করা দাড়ির ফর্সা আধুনিক বেশের পুরুষ।কিন্তু দৃষ্টিতে ঘোলাটে ভাব আছে।
নদীকে বললেন, তুমি কি কিছু মনে করবে আমি যদি তোমাদের কনভার্সেশনের মধ্যে থাকি? একচুল জানতে চাই যে একটা আঠেরো বছরের বাচ্চার উপযুক্ত ভদ্র চাকরি কী হিতে পারে।

কথোপকথনের শেষে সোহরাব সামদানী নদীকে গাড়িতে করে জিকাতলা তার সাবলেট বাসায় নামিয়ে দিলেন। তার উপস্থিতির কারণে আসাদ নদীকে তার কাজের জায়গা দেখিয়ে আনতে পারেনি।
আসাদের দেয়া ভিজিটিং কার্ড ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে তুষারকে দিয়েছেন আরও খোঁজ খবর করতে। নদী ভর্তি হতে এসে চাকরি খুঁজছে এই কথাটায় মুখ গম্ভীর করে রেখেছেন গোটা রাস্তা।

” এই চিন্তা বাদ দাও মেয়ে, নিজেকে যোগ্য করার সময়ে এখন টাকার পেছনে দৌড়ালে সারাজীবন পস্তাবে”

” আমাকেই নিজের খেয়াল রাখতে হবে স্যার ”

” তোমাকে খেয়াল রাখার মানুষ অনেক আছে। দরকার শুধু তাদের বিশ্বাস করার। আপাতত পড়ায় ফোকাস কর। এডমিশন টেস্টগুলো দাও।অন্য কোথাও তাকাবে না। মনে রেখ খালারবাড়ি থেকে এসেছ, একটা যুদ্ধ ঘোষণা করে। হঠকারীতায় যুদ্ধে নামার আগেই হেরে যেওনা ”

সামদানী সাহেবের কথায় নদী চুপ করে রইলো। কথাগুলো সত্যি কিন্তু নদীর লড়াইটাও মিথ্যা নয়। আসতে পথে সোহরাব সাহেব আরও বললেন,

” আমি মানুষের কৃতজ্ঞতা ভুলি না। তবে কখনো কখনো এটা শাস্তির মতো।কারণ যাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ থাকি তাদের সময়মতো আমরা সাহায্য করতে পারি না। আমার একটা সময় ভয়ঙ্কর অভাবে কেটেছে। সেই দুঃসময়ে তোমার বাবা আমার জন্য যতটা করেছেন সেটা ভোলা অসম্ভব । আজ তার একমাত্র কন্যার জন্য আমি যদি কিছু করতে পারি তাহলে বুক থেকে বোঝা নেমে যেত। ”

“আমাকে নিজের রাস্তায় চলতে হবএ আঙ্কেল। ” নদী ম্লান গলায় বলল, “ভালো জায়গায় যে এডমিশন হবে এই গ্যারান্টি আমি দিতে পারছি না, আমি তেমন কোচিং করি নাই, এত কম্পিটিশনে পাবলিকে চান্স পাওয়া অনেক মুশকিল ”

” পাবলিকে না হলে প্রাইভেটে দিবা “সামদানীর কথায় নদী অবাক হয়ে তাকালো। “তুমি চাইলে আমি দেখব ব্যাপারটা।ব্যাস সাহস রাখো, আর আমাদের কথা মতো চলার চেষ্টা কর। বিশ্বাস রাখ।রাবেয়া আমি তোমার সাথেই আছি।সেদিন পার্টি থেকে ফিরে রাবেয়া তো কেঁদেই ফেলেছিল তোমার জন্য”

সোহরাব সাহেবের কথাগুলো সত্যি ছিল না মিথ্যা জানে না,তবে বিচিত্র কারণে নদীর বুক থেকে সব ওজন নামিয়ে দিয়েছে। সত্যিই কি পৃথিবীতে এখনো কিছু অদ্ভুত মানুষ আছে? যাদের কারণে মানুষ স্বপ্ন দেখতে পারে, নতুন করে এগিয়ে যেতে পারে? তবে বাড়ির প্রবেশমুখে স্বপ্নের পলকা বুদবুদ দ্রুতই ফেটে চৌচির হলো।

” কীরে নদী কী অবস্থা? ”

নদী তাকিয়ে আছে, এই ব্যক্তিত্বের সামনে তার সবসময় কণ্ঠরুদ্ধ হয়ে আসে। বড় মামা মোজাফফর হোসেন তার সাবলেট বাড়ির সিঁড়িঘরের মুখে সোজা দাঁড়িয়ে।

” তোর ভার্সিটির রেজাল্ট কবে যেন, কাল তো তাই না? ”

” তোর রেজাল্ট দেখে কাল নাগাদ আমরা রওনা দেব ইনশাআল্লাহ। তোর রানুখালা খুব অস্থির হয়ে আছে তোর জন্য । একটা খুব ভালো বিয়ের ঘর আসছে তোর।আল্লাহর রহমত হলে এইবারে আমি আছি।এইখানে কথা অবশ্যই আগাবে।
(চলবে)