বিষাদময় প্রহর পর্ব-০২

0
813

#বিষাদময়_প্রহর
#লাবিবা_ওয়াহিদ
|| পর্ব ০২ ||

চোখ মেলে তাকিয়ে নিজেকে নিজের রুমেই আবিষ্কার করলাম।
চোখদুটো আগুনের ন্যায় আমার গরম হয়ে আছে।
হয়তো জ্বরের কারণে এমন লাগছে।
রাতের কথা মনে হতেই শিউরে উঠলাম!
জীবনে প্রথম মনে হয় এমন বিভৎস খুন দেখেছি।
কিন্তু? কিন্তু কিন্তু আমি তো রাস্তার ফুটপাতে পরে ছিলাম আমি আমার বাসায় আসলাম কি করে?
শোয়া অবস্থাতেই নিজের ডান হাত কপালে রাখলাম।
জ্বর আছে তবে বেশিও না আবার কমও না।
চিন্তায় চিন্তায় যেন আমার মাথা ফেটে যাচ্ছে।
কে নিয়ে আসলো আমায় বাসাতে?
এমন সময়ই মা রুমে ঢুকলো হাতে একটা মাঝারি সাইজের মেলামাইনের বল নিয়ে।
আমি চোখদুটো ছোট ছোট করে মায়ের দিকে তাকিয়ে আছি।
আমার জ্ঞান ফিরেছে দেখে কোনো কিছুই বললেন না।
মা সবসময়ই কেমন গম্ভীর টাইপ।
মা আগে এমন ছিলেন না, বাবার চলে যাওয়াতে সে একজন কঠিন নারী হয়ে উঠেছেন। মা কঠিন না হলে হয়তো-বা আমরা দুইবোন সহ এই পরিবার পুরোই বৃথা হতো, আমরাও ধরা-ছোয়ার বাইরে চলে যেতাম।
আমাদের কঠিন সময়ে মায়ের গাইড করা আমি কখনোই ভুলতে পারবো না।
মায়ের এই কঠোরতাকে আমি ভিষণ শ্রদ্ধা করি।
মা আগে একটা গার্মেন্টস এ চাকরি করতো।
কিন্তু হুট করে সে এই গার্মেন্টেসের কাজ বন্ধ করে দেয় কিন্তু কেন সে বলেনি।
শুধু এইটুকুই বলতো তার কষ্ট করে আর সংসার চালানো লাগবে না, সংসার তার আপন গতিতেই চলবে।
মায়ের কথা আমি সেদিনও বুঝতে পারিনি।
বলা যায় বোঝার মতো অবস্থাও ছিলো না।
কিন্তু এখন বুঝি কেন মা এসব বলেছে।
সেই অচেনা লোকটা যে মাকে মাসে মাসে টাকা দেয় এইজন্য সে নিশ্চিন্ত হয়েছে।
সে যাক গে এসব বুঝতে পারার পর মাকে সেইসব টাকা ছুঁয়েও দেখতে দেইনি।

মা আমার মাথার কাছে বসে আমার কপালে হাত রেখে জ্বর চেক করলো।
আমি আগের মতোই নিশ্চুপ হয়ে আছি।
মা অতি যত্নে জলপট্টি দিতে ব্যস্ত। আস্তে করে জিজ্ঞেস করলাম,

—“আম্মু আমি বাসায় আসলাম কি করে আমিতো…”

—“নিহান নিয়ে এসেছে। তুই নাকি বৃষ্টির মাঝে রাস্তার ফুটপাতে পরেছিলি।” গম্ভীর হয়েই কথাগুলো বললো মা।
আমি সেই ঘটনা বলতে গিয়েও বলতে পারলাম না। ভেতরে ভেতরে প্রস্তুতি নিয়ে চলেছি মায়ের বোম ফাটানো হজম করার জন্য।
কারেক্ট টাইমে মা আবার বলা শুরু করলো,

—“এতো পাকামো করতে কে বলেছিলো তোকে? রাত করে একা একটা মেয়ে হয়ে কিনা বেরিয়ে গেলি! সামান্য মাথা ঘামিয়ে ভাবলি না রাস্তাঘাটের বিপদ-আপদের কথা? সেই ঠিকই অঘটন ঘটালি! আর জীবনে একা বেরিয়ে দেখিস! তোর পা ভেঙ্গে ঘরে বসায় রাখবো।”

মায়ের ভাষণে হঠাৎ ক্লাস এবং টিউশনির কথা মাথায় আসতেই মাকে অস্ফুট সুরে জিজ্ঞেস করলাম,

—“আম্মু এখন কয়টা বাজে?”

—“১১ঃ১৯।”

মায়ের কথায় লাফ দিয়ে উঠে বসলাম।
বসে থাকায় জ্বরে মাথা প্রচন্ডরকম ব্যথা করছে।
মা এবার ধমক দিয়ে বলে,

—“কি হলো লাফ দিয়ে উঠলি কেন? আরও জ্বর বাঁধাতে চাস? চুপ করে শুয়ে থাক। আমি ব্যাচের পোলাপানদের ফোন করে তোর অসুস্থতার কথা জানিয়ে দিয়েছি আর ভার্সিটিতেও!”

—“এ তুমি কি করলে মা আমিতো…”

—“চুপ! একদম চুপ করে বসে থাক। তোরে কে বলেছে আমার সংসারের জন্য দিন-রাত খেটে মরতে? আমাদের সংসারের এতো অভাব পরেনি। তোর বাবা যথেষ্ট আয় করে রেখে গেছে আমাদের জন্য।”

—“তাহলে মাসে মাসে এতো টাকা কই থেকে আসে?”
মা খানিক সময়ের জন্য চুপ করে রইলো। তারপর কিছু না বলেই রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
আমি কিছু না ভেবে আস্তে আস্তে বিছানা থেকে নেমে ওয়াশরুমের দিকে এগিয়ে যেতে লাগলাম।
মাথা প্রচন্ড ভার হয়ে আছে যেন কেউ মাথার ভেতর পাথর ঢুকিয়ে দিয়েছে।
ওয়াশরুমের আয়নায় গলার দিলে তাকিয়ে দখি আঙুলের ছাপ বসে গেছে।
আমি চোখ বড় বড় করে দাগদুটো ঢেকে ফেললাম চুল দিয়ে।
মা জানলে কেলেঙ্কারি বেঁধে যাবে।
আর লোকটাকেও কি ভয়ংকর ভাবে মারলো বাপ্রে, ভাবতেই কেমন গা গুলিয়ে আসে।
কোনোরকমে ফ্রেশ হয়ে রুমে এসে দেখি নিহান ভাই আমার বিছানার উপর বসে আমার দিকেই তাকিয়ে।
তার চোখ দেখে বুঝলাম সিংহ আবার গর্জে উঠবে তাই আগেভাগেই মানে মানে কেটে পরা ভালো।

ভেবেই এক দৌড় দিতে গিয়ে পিছলা খেয়ে পরে যেতে নিলাম ওমনি কেউ ধরে ফেলে।
উপরে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে দেখি নিহান ভাই ধরে আছে।
তার চোখ দিয়ে যেন আগুনের ফুলকি বের হচ্ছে।

—“এই মেয়ে তুই কি অলিম্পিকে নেমেছিস? আমাকে দেখলে তোর এতো দৌড়াদৌড়ি কেন হ্যাঁ? এই জ্বর বাঁধিয়ে পরে গেলে তো কোমড়টাকেও ভোগে পাঠাতি।” ধমকের সুরেই কথাগুলো বললো নিহান।
আমি ভয়ে কাচুমাচু হয়ে সোজা হয়ে দাঁড়ালাম, কিছু বললাম না।
আমাকে চুপ থাকতে দেখে নিহান ভাই চেঁচিয়ে বলে,

—“কথা কি কান দিয়ে ঢুকে না? চুপ করে আছিস কেন কিছু বল!”

ভয়ে কেঁপে উঠে কাঁপা গলায় বলি,
—“ককককি বলবো? কিছু বললেই তো আমি গন্ডারের মতো চিল্লান! আপনি তো আবার আমাকে দুই চোখে সহ্যই করতে পারেন না।”

—“হ্যাঁ পারি না সহ্য করতে! কারণ তুই কোনোকালেই আমার কথামতো চলিস না। যদি চলতি তাহলে বিছানায় আবার লেপ্টে থাকতি না।”

—“হইসে রাখেন আপনার ভাষণ! আপনার ভাষণে আমার কান মনে হচ্ছে ভ্যাড়ার মতো ভ্যাঁ ভ্যাঁ করছে। এখন সামনে থেকে যান আমাকে রেস্ট নিতে দিন হিটলার একটা!”

মনে মনেই কথাগুলো বললাম কিন্তু আফসোস আজ অব্দি সামনাসামনি বলতে পারলাম না।
একে এতো ভয় লাগে কেন?
আমি একজন মাফিয়ার মেয়ে কোথায় আমার সাহসের ভান্ডার থাকবে সেখানে কিনা এই সিংহটাকে দেখে আমি মুচি বিড়ালের মতন হয়ে যাই?
অদ্ভুত বিষয়।
নাহিদা রুমে আসতেই নিহান রুম থেকে বেরিয়ে গেলো।
আমি যেন হাফ ছেড়ে বাঁচলাম।
হিদ(নাহিদা) আমাকে ধরে ধরে বিছানায় নিয়ে বসিয়ে দিলো।
কিছুক্ষণ পর মা এসে খাবার দিয়ে চলে গেলো।
যাওয়ার আগে হিদ মাকে জিজ্ঞেস করেছিলো নিহান ভাইয়া আছে নাকি চলে গেছে।

—“তোর ভাই কি কোনোদিন আমার বাসায় বসেছে? নিহান আসাতে চটপট এক কাপ চাও বানিয়ে ফেলেছিলাম। ডাইনিংরুমে এসে দেখি মেইন দরজা দিয়ে হনহন করে বেরিয়ে যাচ্ছে।”

মায়ের কথায় নাহিদা আর উত্তরে কিছু বলেনি।
মা-ও নাহিদার উত্তরের অপেক্ষা না করে আগেই রুম থেকে বেরিয়ে গেছে।
আমি স্যুপ খেতে খেতে হিদকে বললাম,
—“হুট করে আমার বাসায় ভাইবোন একসাথে উদয় হলি কি মনে করে?”

—“ভাইয়ার মুখে তোর কথা শুনে খারাপ লাগছিলো তাই চলে আসলাম। একাই আসতাম কিন্তু ভাইয়ার নাকি এদিকে কি কাজ ছিলো তাই ভাইয়াই ড্রপ করে দিয়ে গেছে।”

—“ও আচ্ছা। ক্লাসে যাসনি?”

—“আমি আবার ক্লাস! কাল পার্টি থাকায় অনেকক্ষণ জাগতে হয়েছে তাই পরে পরে ঘুমিয়েছি। যাইহোক এখন তুই বল তোর কি অবস্থা জ্বর কমেছে?”

—“হ্যাঁ সামান্য।”

—“প্রব্লেম না আমি তোর সাথে থাকলে তোর জ্বর দৌড়ে পালাবে।”

হিদের কথায় আমি হেসে দিলাম।
তারপর আবার খাবারে মনোযোগ দিলাম।
আমাকে খেতে দেখে হিদ বললো,

—“আচ্ছা নাফি আমি যাই দেখি জিনিয়া এসেছে কিনা! আজ নাকি ওর পরীক্ষা ছিলো, পরীক্ষা থাকলে তো তাড়াতাড়ি-ই ফেরার কথা।”

—“১ টায় পরীক্ষার হল থেকে বের হবে এখন তো মনে হয় ১২ টাও বাজেনি।”

আমার কথায় হিদ তার হাত ঘড়ির দিকে তাকালো এবং বুঝলো আমার কথাই ঠিক।
আধঘন্টা ধরে বকবক করলাম।
একসময় হিদ আমার ফোন ওর হাতে নিলো।
ফোন ওপেন বাটন চাপতেই এক ফকফকা কিউট বিড়ালের ছবি দেখতে পেলো সে।
হিদ হিহি করে হেসে দিয়ে বলে,

—“সত্যি বইন এতোদিন তোর মনে মনে বিড়াল ছিলো এখন ফোনের ওয়ালপেপারে! তুই এতো বিড়ালপাগলি কেমনে হলি বল তো?”

আমি হিদের হাসি দেখে মুখ বাঁকা করলাম।
মুখ বাঁকা করেই বললাম,
—“আমার বিড়ালের সখ তাই আমার মন, ওয়ালপেপার, কিডনি, লিভার সব জায়গাতেই বিড়াল থাকবে তোর কি?”

—“তাহলে ভালো দেখে একটা বিড়াল কিনতেই পারিস!”

—“প্রাণী কিনতে কি সৃষ্টিকর্তা এসব বানিয়েছে? আমার বিড়ালের সখ আছে বটে তবে কখনো কিনে টাকা খরচ করবো না। ওই বিড়াল কেনার টাকা দিয়ে আমি ৩ মাস আরামসে সংসারের খরচ চালাতে পারবো।”

—“সরি বইন মাফ কর রে মাফ কর! আমি ভুলেই গেছিলাম তুই কেমন কঠিন হিসাবি। যাইহোক পেটে ইঁদুর দৌড়ায় আমি যাই আন্টির কাছে।”

আমি হিদের হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিতে নিতে বলি,
—“পান্তাভাত অথবা চা ছাড়া কিছুই পাবি না। এর চেয়ে ভালো নিজের বাসায় গিয়ে রাজকীয় খাবার খা গিয়ে! বড়লোকের তো আবার গরিবের খাবার পেটে সয় না।”

—“আমি একটা কথা বুঝিনা আমি বাসায় আসলে তুই এভাবে ভাগিয়ে দেস কেন? সারাক্ষণ বড়লোক বড়লোক বলে খোটা দেস! বড়লোক বলে কি পান্তাভাত আর মরিচ খেয়ে বেঁচে থাকতে পারবো না? আর একবার যদি খোটা দেস তোর এই খোঁচানি ছুটাইতে আমার ভাইকে ডাকবো।”

—“তোর ভাইরে বুঝি আমি ভয় পাই? যা মন চায় বল গিয়ে হুহ।”

আমার কথাটাকে হিদ সিরিয়াসলিই নিয়ে নিলো।
নিজের ব্যাগ থেকে ফোন করে ডায়াল করতে মনোযোগী হলো।
আমি একটা শুকনো ঢোক গিলে হিদের হাত থেকে ফোনটা কেড়ে নিলাম।

—“কি, এতক্ষণ তো খুব বললি তুই ভাইকে ভয় পাস না, এখন তোর সাহস কই গেলো?”

—“আমি তো ওই এমনেই বলেছিলাম। আচ্ছা যা সরি আর বলতাম না তাও প্লিজ তোর ওই হিটলার ভাইকে কিছু বলিস না।”
হিদ হাসতে হাসতে “ওকে” বললো।
খাবারের জন্যে মা ডাকতেই হিদ চলে গেলো।
হিদ চলে যেতেই আমি আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ফাউন্ডেশন দিয়ে গলায় থাকা আঙুলের ছাপদুটো আড়াল করার চেষ্টা করতে লাগলাম।
অনেক ঘষাঘষির পর অবশেষে সফল হলাম।
এরপর আর কিছু না ভেবে আস্তেধীরে হেঁটে বাইরে চলে গেলাম।
এখন জ্বর অনেকটাই কমেছে।

—“স্যার ম্যামকে যে খুন করতে গিয়েছিলো তার নাম লতিফ। আর এই লতিফ ম্যামকে নয় অন্যকাউকে খুন করতে চেয়েছিলো কিন্তু ভুলবশত সে ম্যামকে টার্গেট করে ফেলে।”

—“লোকটাকে কে পাঠিয়েছিলো জানতে পেরেছো?”

—“হ্যাঁ। সে *******। তবে সে ম্যামকে মারতে চায়নি চেয়েছিলো আরেক মেয়েকে। সেই মেয়ে নাকি তাকে বিভিন্ন ভাবে ব্লেকমেইল করছিলো, শেষে সহ্য করতে না পেরে লোক লাগিয়ে মারতে পাঠায়। আর সেই মেয়েটা ম্যামের সেখানে দাঁড়ানোর প্রায় ৫-৬ মিনিট আগেই চলে গিয়েছিলো।”

—“ও আচ্ছা।”

—“আপনি শুধু শুধুই তাকে মেরে ফেললেন।”

ম্যানেজারের কথায় অন্ধকারে বসা লোকটি বিকট শব্দের সাথে টেবিলে থাবা দেয় রাগে।
তার রাগ দেখে ম্যানেজার থরথর করে কাঁপছে সাথে নিজেকেও মনের মাঝে বকে চলেছে।
অন্ধকারে বসা লোকটি নরম সুরেই বললো,

—“আপনি এখন আসতে পারেন।”

ম্যানেজার যেন কোনোরকমে পালালো সেখান থেকে। লোকটি দুইগালে হাত হাসতে হাসতে বলে,

—“হোক সে আমার জানপাখিকে মারতে চায়নি অন্যকাউকে মারতে চেয়েছিলো। তো? অপরাধী তো অপরাধীই হয়, হোক ভুল বুঝে অথবা ভুল না বুঝে। আমার নাফিকে সে মারতে চেয়েছে, এতোবড় সাহস? সেই লোক কি জানতো না যে আমি আমার নাফি জানের “বিষাদময় প্রহর”? আমি জানলে তার কি হাল করতে পারি? উমম… যাক ব্যাপার না, আমি আমার জানপাখিকে সবসময় সেভ রাখবো ইন শা আল্লাহ। যে-ই তার দিকে চোখ তুলে তাকাবে তাকেও সেই লোকটার মতো…”
বলেই নিজ গলায় হাত দিয়ে কেটে দেয়ার ইশারা করে অট্টহাসিতে ফেটে পরলো।

খেয়েদেয়ে হিদ বাসায় চলে যায়। তাকে বিদায় দিয়ে রুমে সবে এসে শুলাম এমন সময়ই জিনিয়া রুমে ঢুকলো।
তার হাতে একটা খামের মতো কিছু একটা দেখলাম আমি।
খামটা চিনতে অসুবিধা হলো না আমার।
নাড়াচড়া দিয়ে সাথে সাথে উঠে বসলাম।
জিনিয়া আমার দিকে এগিয়ে আসতে নিবে ওমনি ওকে থামিয়ে বলি,

—“মা দেখেনি তো এটা?” কিছুটা ভয়ার্ত কন্ঠে জিজ্ঞেস করলাম।

—“না দেখেনি তুই এটা তোর কাছে রাখ। আমি ফ্রেশ হয়ে আসছি।”

বলেই জিনিয়া আমার হাতে চিঠিটা দিয়ে বেরিয়ে গেলো।
আমি কাঁপা কাঁপা হাতে চিঠিটার খাম পর্যবেক্ষণ করলাম, নাহ এবারও কিচ্ছু পেলাম না এই খামে।
এই চিঠিগুলা যে কোথা থেকে আসে কিছুই বুঝে উঠতে পারিনা।
প্রতিদিন ভোর ৬টায় এই চিঠি আসবেই আসবে।
কিন্তু কে পাঠায় কে জানে।
আমি আবার নামাজ শেষে বাহিরে হাঁটতে বের হই।
দরজা খুললে প্রতিদিনই এই চিঠি নিচে পরে থাকতে দেখবো।
আশ্চর্য!
এ আবার কোন আশিক?
কোন বিষাদময় প্রহর?
ও হ্যাঁ এই চিঠির শেষে সবসময়ই লেখা থাকে, “তোমার বিষাদময় প্রহর”। কে এই প্রহর?
কেন আমাকে এমন চিঠি দেয়, কেন আমার সামনে আসে না?
প্রায় বিরক্তি নিয়েই চিঠিটা খুললাম এবং পড়তে শুরু করলাম,,,

চলবে!!!