ভাবির জমজ বোন Part-7+8

0
483

গল্প – ভাবির জমজ বোন
part – 7/8
RJ MOSTAKIM

ভার্সিটিতে পৌঁছানোর পর কালকের সেই নাম্বার এ ফোন দিলাম।
আমি ফোন দিয়ে বললাম আমি এসে গেছি..
সে বললো আমি ২ মিনিটে আসতেছি। পরে ফোন কেটে দিলাম

হঠাং করে দেখি নীলা আমার দিকে আসতেছে। নীলাকে দেখে নীলার শেষ কথাটা মনে পড়ে গেল আমি যেন আর কখনো তার সামনে মুখ না দেখাই এজন্য সেখান থেকে সরে গেলাম। একটা গাছের নিছে গিয়ে বসলাম অন্যমনস্ক হয়ে কিছু একটা ভাবতেছিলাম
নীলা – কেমন আছেন
নীলার কন্ঠ পেয়ে চমকে উঠে দাঁডায়।
সামনে তাকিয়ে দেখি নীলা এজন্য তাড়াতাড়ি অন্যদিকে ঘুরে চলে আসতে লাগলাম..
নীলা হাত টা ধরে ফেললো
নীলা – আপনি এখনো আমার উপর রাগ করে আছেন

আমি – হাত টা ছাড়েন সবাই দেখতেছে..
নীলা – কেন এখানে কি কারো হাত ধরা নিষেধ নাকি..
আমি – আমি এতো কিছু জানি না আমার হাত টা ছাড়েন আমি যাবো আমার দেরি হয়ে যাচ্ছে..

নীলা – ছাড়বো আগে বলেন এখনো রাগ করে আছেন নাকি..
আমি – রাগ করেছি কি না জানি না তোবে একজন এর কথা রাখতেছি
নীলা – কি কথা.??
আমি – আপনি একজন মেয়ে আমি একজন ছেলে এজন্য আপনি আমার হাত এভাবে ধরে রাখতে পারেন so হাত ছাড়েন আর আমার gf দেখলে সমস্যা হবে…

আমার gf আছে কথাটা শুনে মনে হয় আকাশ থেকে তার মাথায় বাজ পড়লো। হাতটা ছেড়ে দিলো মনে হচ্ছে এখনি তার চোখ থেকে বৃষ্টি নামবে।

হাত ছেড়ে দেওয়াই আমি সেখান থেকে চলে আসলাম। নীলা সেখানেই বসে রইলো আমি একটু দূর থেকে সবটা দেখতে লাগলাম। বসে বসে কাঁদতেছে দেখে নীলার একটা ফ্রেন্ড আছে নাম জুই মেয়ে টা নীলার কাছে আসলো এসে বলতে লাগলো
– কি হয়েছে নীলা তুই এখানে বসে বসে কাঁদতেছিস কেন.???
নীলা -.???
– ওই চুপ করে আছিস কেন বল…??
নীলা – দোস্ত তুই না বলেছিলে তামজিদ এর কোন gf নাই.??
– হ্যা নাই তো…??
নীলা – আজকে ও নিজে মুখে শিকার করেছে ওর gf আছে..
– মানে…??

তারপর নীলা সব কিছু খুলে বললো।

জুই কথা গুলা শুনে হাসতে লাগলো..
নীলা – তুই হাসতেছিস আমি এখানে হাসার মতো কি বলছি.?
– তুই আসলে একটা মাথা মোটা তুই ওর অভিমান টাই বুঝতে পারলি না..

নীলা – মানে

– মানে হচ্ছে তামজিদ তোর প্রতি অভিমান করে আছে যার জন্য তোর সাথে কথা বলতে চাই না আর তোকে মিথ্যা কথা বলেছে যে ওর gf আছে যাতে তুই তামজিদ এর সাথে কথা না বলস
নীলা – কিন্ত ও কেন এমন করবে..?

– আল্লাহ এখন দেখছি সত্যি তোর মাথায় গোবর ছাড়া একটু ও বুদ্ধি নাই.. তুই তামজিদ কে বলেছিলি না যে তোর সামনে যেন ও আর কোন দিন মুখ না দেখাই এজন্য তোর প্রতি অভিমান করে আছে…

নীলা – হ্যা এখন বুঝতে পারছি কিন্তু এখন কি করবো দোস্ত প্লিজ বল আমার মাথায় কিছুই ডুকতেছে না

– হুম তোকে তামজিদ এর এই অভিমান টা ভাঙতে হবে..
নীলা – কিভাবে.??
– তুই তামজিদ সাথে বেশি কথা বলবি বেশি করে সময় দেওয়ার চেষ্টা করবি আর যদি তামজিদ কথা বলতে না চাই জোর করেই কথা বলবি…

নীলা – ওকে দোস্ত তোকে অনেক গুলা ধন্যবাদ

– যা আর ধন্যবাদ দিতে হবে না..
নীলা – দোস্ত তুই থাক আমি একটু যায়..
– ওকে..

আমি আমার মতো চলিতেছিলাম কিছুই ভালো লাগছিলো না তাই চিন্তা করলাম বাসায় চলে যায়..

এমন সময় নীলা এসে হাজির

আমি অন্য দিকে মুখ করে চলে যেতে লাগলাম..
নীলা – এই যে মিস্টার দাঁড়ান…
আমি শুনেও না শুনার ভান করে চলে আসতে লাগলাম..

নীলা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো
নীলা – আচ্ছা আপনি নিজেকে কি মনে করেন..
আমি – আমি নিজেকে অনেক কিছুই মনে করে। এখন আমার সামনে থেকে সরে দাঁড়ান আমি বাসায় যাবো ..??

নীলা – হ্যা যাবেন তোর আগে আপনার gf কে আমাকে দেখান…
আমি – আমার gf আপনাকে দেখাবো প্রশ্নেই আসে না…
নীলা – এখানে পরীক্ষা দিতে আসি নাই তাই প্রশ্নে আসতে হবে যা বলছি তাই করেন না হলে আপনার কপালে খারাপ কিছুই আছে…
আমি – দেখাবো না কি করবেন.??
নীলা – কখনো গন পিটান খাইছেন বা দেখছেন..
আমি – কেন.??
নীলা – যদি না দেখান তাহলে আপনার কপালে গন পিটানি আছে
আমি – গন পিটানি দেওয়া তো এতোই সহজ মুখে বললেই হল..
নীলা – আমার কিন্তু প্রচন্ড রাগ উঠতেছে আর আমার রাগ এর ধারানা কিন্তু আপনার ভালো করেই আছে…
আমি – তো আমি কি করবো আমি কি আপনার রাগের কামাই খাই নাকি ভয় পাই…..
নীলা – তারমানে আপনি আপনার gf কে দেখাবেন না তাই তো…
আমি – হ্যা দেখাবো না..
নীলা – ঠিক আছে তাহলে নিজেক প্রস্তুত করেন গন পিটানি খাওয়ার জন্য..
আমি – দেখেন আপনার ফালতু বকবক শুনার টাইম আমার নাই আমি বাসায় যাচ্ছি

তারপর আমি বাসায় চলে আসলাম। এই মেয়ে আমার সাথে এমন করতেছে কেন কি চাই আমার কাছে..
এইসব ভাবতে ভাবতে চলে আসলাম বাসায়..

এসে ফ্রেশ হয়ে খাবার খেতে গেলাম সবাই এক সাথে খাবার খেতে লাগলাম। এমন সময় ভাইয়া বললো তামজিদ তোর কি আজকে বিকেলবেলা কোন কাজ আছে নাকি..??
আমি – না ভাইয়া তেমন কোন কাজ নাই..
ভাইয়া – তাহলে তুই তোর ভাবির বাসায় গিয়ে নীলাকে আমাদের বাসায় নিয়ে আয়…..
আমি – সরি ভাইয়া যেতে পারবো না আসলে আমার একটা কাজ আছে আমি যেতে পারবো না..
ভাইয়া – একটু আগেই তো বললি কান নাই এখন আবার কাজ আসলো কথা থেকে। কাজ পরে করবি আগে নীলাকে নিয়ে আসবি
আমি – কিন্ত ভাইয়া..
ভাইয়া – কোন কিন্তু না গিয়ে নিয়ে আসতে আর কত সময় লাগবে

দূর মেজাজ টাই খারাপ হয়ে গেল অর্ধেক খাবার খেয়ে উঠে পড়লাম।

তারপর আমি যাবো না এটা অনেক বার বলার পরও কোন কাজ হলো না। জোর করেই পাঠালো..

কি করার বাধ্য ছেলের মতো রেডি হয়ে বের হয়ে গেলাম।

ভাইয়া – এই নে বাইক এর চাবি..
আমি – আমি বাইক এর চাবি দিয়ে কি করবো…
ভাইয়া – কেন বাইক নিয়ে যাবি
আমি – না আমি গাড়িতে যাবো বাইক নেবো না…
ভাইয়া – রাস্তায় অনেক জ্যাম গাড়িতে গেলে অনেক দেরি হয়ে যাবে তখন আবার রাত হয়ে যাবে…

তারপর আর কি বাইক নিয়েই গেলাম।

আল্লাহ বাসায় গিয়ে দেখি মেম সাহেব আগে থেকেই রেডি হয়ে বসে আছে বাসায় ডুকার সাথে সাথেই বলে চল…
মনে হয় এই বাসা থেকে গেলে কি জেন পেয়ে যাবে। আর দেরী করেই বা লাভ কি।

তাই তাড়াতাড়ি চলে আসলাম

নীলা – বাইক নিয়ে আসছো তাহলে তো খুব মজা হবে..
আমি – তাড়াতাড়ি করেন আমার কাজ আছে ওকে
নীলা – হুম যাবো যাওয়ার আগে কিছু কথা বলে নেই তারপর।
আমি – দেখেন আমি এখানে আপনার বক বক শুনতে আসি
নীলা – কিহহ আমি বকবক করে..
আমি – দেখেন আমি মাফ চাই আমি আপনার সাথে কোন ঝগড়া করতে চাই না প্লিজ ঝগড়া করতে আসবেন না ওকে..
নীলা – এই এই তুমি এই কথা দারা কি বুঝালে আমি ঝগড়াটে তুমার সাথে ঝগড়া করি.. ??
আমি – আপনি আপনার কাছে হাত জোর করে ক্ষমা চাই প্লিজ আমি আর কোন কথা বলতে চাই না ওকে…
নীলা – ওকে ভালো তোবে বাইক চালানোর সময় জোরে চালানো যাবে না আর আচমকা ব্রেক মারা একদম নিষেধ ওকে…
আমি – আমি জোরে চালাবো আর ব্রেক ও মারবো এতে যদি আপনার কোন সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি গাড়ি করে আসেন আমি যায় ওকে..

নীলা – এতো দিন তো জানতাম আপনি একটা পাজী ঝগড়াটে এখন দেখছি সুবিধা বাধি মানুষ

আমি – আপনি যাবেন নাকি আমি চলে যাবো
নীলা – ওকে যাবো..
তারপর বাইক এ উঠলো। পেছন থেকে আমাকে জরিয়ে ধরলো…

আমি – এই কি করছেন ছাড়েন আমার কমড়…
নীলা – কেন…
আমি – আমি চাইনা আমার বউ ছাড়া আর কোন মেয়ে আমার শরীর এ টাস করুন…
নীলা – নেকামো টা তো ভালোই পারেন যখন কলেজ এর মেয়েদের নিয়ে ঘুরেন তখন মনে হয় তাড়া টাস করে না…
আমি – আমার জীবনে প্রথম কোন মেয়েকে নিয়ে বাইক চালাইতেছি..
নীলা – বাহহ ডায়লগ টা ভালোই লাগলো…
আমি আর কিছু বললাম না কারন আমি জানি এর মেয়ের সাথে আমি কথায় কখনো পারবো না। তাই আগে থেকেই নিজেকে চুপ করে ফেললাম।

একটু পর কি হলো চুপ হয়ে গেলে কেন…

আমি – তো কি করবো..
নীলা – তুমার gfকেমন আছে..
আমি – আমার কোন gf নাই। ( এই যা পেট থেকে সত্যি টা বের করে দিলাম)
নীলা – কিহহহ এতো বড় মিথ্যা কিথা কালকে বললে gf আছে আজকে বলছো gf নাই..
আমি – হ্যা আছে তো…
নীলা – নাম কি…
আমি – আপনার জানা লাগবো না ওকে…
নীলা – কেন আমি না আপনার একটি মাএ বিয়ান তাহলে বলবেন না কেন..
আমি – সবার কাছে সব কথা বলা যায় না…
নীলা – কচুডা বলা যায় না আপনার gf থাকলে তো বলবেন। আর আপনার সাথে প্রেম করবে এমন পাগল মেয়ে আছে নাকি। নিজের চেহারা টা একবার ভালো করে আয়নায় দেখবেন ওকে…
আমি -; ওহহহ তাই মানলাম আমার চেহারা খারাপ তাই আমার সাথে প্রেম করবে না। আপনার চেহারা তো পচা না খুব সুন্দর একদম পরীর মতো তাহলে আপনার সাথে কেউ প্রেম করে না কেন..??

নীলা – আমার পেছনে কত ছেলে ঘুড়ে যানো..
আমি – জানবো না কেন এটা তো সবাই জানে পচা জিনিষ এ অনেক মাছি পড়ে.আপনি হচ্ছেন ওই রকম তাই এতো পোলাপান ঘুড়ে

নীলা – কিহহহ আমি পচা এর পরিণাম টা ভালো হবে না দেখে নিয়ো..
আমি – অহহ নিজের বেলায় ১৬ আনা আমার বেলায় ৪ আনা তাই না। যখন আমাকে বলেন তখন খুব ভালো লাগে আর আমি কিছু উত্তর দিলে গায়ে লাগে
নীলা – আমি সত্যি কথাই বলছি তুমার সাথে কেউ প্রেম করবে না..
আমি – ওকে ভালো কেউ আমার সাথে প্রেম না করুন এটাই আমি চাই… ওকে

বাসায় এসে গেছি নামেন এবার .

বাসায় ডুকেই শয়তান হারামি টা আমার নামে উল্টাপাল্টা কথা বলতে লাগলো ভাইয়ার কাছে…

নীলা – জানেন ভাইয়া আপনার ভাই সিগারেট খাই…
আমি – কিহহহ আমি সিগারেট খাই..?
নীলা – হ্যা কেন আসার পথেও না খেলে..
ভাইয়া – কিহহ তুই সিগারেট খাস ছি ছি…
আমি – বিশ্বাস করো ভাইয়া আমি সত্যি বলছি আর তুমার এই শালি আমার নামে সব বানিয়ে বানিয়ে মিথ্যা কথা বলতেছি..
নীলা – কিহহ আমি মিথ্যা বাদী। জানো ভাইয়া আমি তো বলেছি যে আমি তুমার ভাইয়ার কাছে বলে দিবো তখন কি বলে যানো বলে বললে তকে মাইর দেব
ভাইয়া – ছি ছি তোকে নিয়ে এতো আশা ভরসা ছিলো সব কিছু শেষ করে দিট দিতেছোস…
আমি – প্লিজ ভাইয়া আমার কথা বিশ্বাস করো আমি কোন দিন ও সিগারেট খাই না..
ভাইয়া – আমি আর কোন কথা শুনতে চাই না তুই যা এখান থেকে..
আমি – ভাইয়া
ভাইয়া – আমি এখান থেকে যেতে বলছি কথা কানে শুনা যায় না..

জানি এখন আর আমার কথা বিশ্বাস করবে না তাই কিছু বলেও লাভ নাই তাই চুপচাপ রুমে চলে আসলাম..

রুমে এসে কতক্ষণ বসে থেকে ফ্রেশ হয়ে ছাদে গেলাম.
কিচ্ছুক্ষণ পর নীলা ছাদে আসলো আমাকে দেখে দাঁত বের করে খিলখিল করে হাসতে লাগলো হাসিটা আমার অসহ্য লাগলো আমি অন্য দিকে মন দিলাম..

নীলা – কি আমাকে পচা বলার শাস্তি টা কেমন দিলাম এই কথা মনে থাকলে আর কখনো আমার সাথে লাগতে আসবে না ওকে…
আমি – আচ্ছা আসলে কি চান বলেন তো আমাই কি করেছি আপনার যার জন্য আমার পিছনে এমন আঠার মতো লেগে আছেন..??
নীলা – যা চাই দিবে.??
আমি – হ্যা আপনি বলেন কি দিলে আপনি আমার পিছন ছাড়বেন…
নীলা – আমি ভালোবাসা চাই…
আমি – মানে.??
নীলা – আমি তুমাকে ভালোবাসি আমি তুমাকে চাই…
আমি – সরি আপনি যেটা চাইছেন সেটা আমি আপনাকে কখনো দিবো না…
নীলা – তাহলে মনে করেন আপনার কপাল থেকে শান্তি জিনিষ টা আজকে থেকে হারিয়ে যাবে ( রেগে ??))
আমি – কেন আপনি কি পাগল নাকি.??
নীলা – কেন আমি পাগল হতে যাবো কেন.??
আমি – কেন আপনি আসার পথে কি বলেছিলেন আমাকে যে ভালোবাসবে সে একটা পাগল..
নীলা – হ্যা আমি তো পাগল হয়ে গেছি তুমাকে ভালোবেসে…

To be continu,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,