ভালোবাসাময় প্রহর পর্ব-০৯

0
248

#গল্পের_নাম_ভালোবাসাময়_প্রহর
#লেখনীতে_Alisha_Rahman_Fiza
পর্ব:৯

সাদা শার্টে র/ক্তে/র ছো/প ছো/প দাগ তা/জা র/ক্ত শুখিয়ে গেছে সেই দুই ঘন্টা আগে অধরাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে “আইসিইউতে”।রক্তিম স্তব্ধ হয়ে বসে আছে হাসপাতালের চেয়ারে সে একধ্যানে সেই “আইসিইউ”এর দরজার দিকে তাকিয়ে আছে।রাত এসে রক্তিমের কাঁধে হাত রাখলো রক্তিমের কোনো হেলদোল নেই দুপরিবারই এখানে উপস্থিত।অধরার মা আচঁল দিয়ে চোখ মুছতে ব্যস্ত তন্নি আর রক্তিমের মা তাকে সামলাতে।অধরার বাবার পাশে রক্তিমের বাবা দাড়িয়ে আছে পুরো পরিবারেরই বে/হা/ল দশা রাত রক্তিমের পাশে বসে বললো,

~ভাইয়া,পুলিশ এসেছে তারা তোমার থেকে সব জানতে চায়।

মূর্হুতেই রক্তিমের চোখ গুলো লাল হয়ে গেলো যে চোখে এতক্ষন আপন মানুষ হা/রা/নো/র ভ/য় ছিল এখন দেখা যাচ্ছে ক্ষো/ভ।
রক্তিম চেয়ার থেকে উঠে শার্টের হাতা কনুই পর্যন্ত গুটিয়ে বললো,

~নিচে চল আমার সাথে।

বলেই সে হাঁটা ধরলো রাত তার পিছু নিলো রক্তিম সিড়ি বেয়ে নেমে সোজা পুলিশদের সামনে গিয়ে দাড়ালো।তাদের মধ্যে একজন রক্তিমকে দেখে বললো,

~ঘটনাটা বিস্তারিত বলেন।

রক্তিম ঘটনা সব খুলে বললো সব শুনে সেই পুলিশ বললো,

~আপনার কী কারো ওপর স/ন্দে/হ আছে?

রক্তিম বললো,

~স/ন্দে/হ না আমার বিশ্বাস এই ঘটনার জন্য মিস দিবা আর তার বাবা জড়িত।

রক্তিমের কথা শেষ হতেই কেউ একজন বলে উঠলো,

~এসব কী বলছো তুমি রক্তিম?

রক্তিম সেই কন্ঠ অনুসরণ করে সামনে তাকাতেই দেখলো দিবার মা অর্থাৎ তার ফুপি দাড়িয়ে আছে।রক্তিম তার দিকে তাকিয়ে বললো,

~আমি ঠিকই বলেছি ফুপি এসব ওরাই করেছে।আমার অধরার এ অবস্থা তারাই করেছে এতোটা নি/র্দ/য় কেন হলো ফুপি তারা।আমি তো তাদের শরীরের এক বিন্দু র/ক্ত ঝড়ায়নি তাহলে কেন এমন করলো?যা শা/স্তি দেওয়ার আমাকে দিতে অধরাকে কেন দিলো ফুপি?

বলেই রক্তিম হাঁটু গে/ড়ে সেখানে বসে পরলো রাত তাকে সামলাতে ব্যস্ত হলো।দিবার মা মনে মনে হেসে বললো,

~তোমার এই অবস্থা দেখার জন্যই তো এসব করা।

দিবার মা রক্তিমের কাছে গিয়ে বললো,

~রক্তিম, আজ বিকেলেই দিবা দুবাই চলে গেছে আমি নিজে তাকে এয়ারর্পোট ছেড়ে এসেছি। সে এখন দুবাই তে আর তোমার ফুপা তো কাল রাতেই সুইজারল্যান্ড চলে গেছে।পুলিশের ভ/য় ছিলো আমিই তাকে পাঠিয়েছি যতোই হোক আমার স্বামী তো বিপদে সাহায্য করেছি।

রক্তিম অবাক হয়ে দিবার মায়ের দিকে তাকালো আর বললো,

~এসব আপনি কী বলছেন?আমি বিশ্বাস করি না ফুপি।

দিবার মা বললেন,

~তাহলে তুমি এয়ারর্পোটে গিয়ে সকল ডিটইলস চেক করে আসো আমার কোনো আ/প/ত্তি নেই।

রক্তিম উঠে দাড়ালো দুচোখ মুছে পুলিশদের কাছে গিয়ে বললো,

~আপনারা নিজেদের মতো তদন্ত শুরু করেন আমি আছি কোনো ছা/ড় দেওয়া হবে না আ/সা/মি/কে।

তখনই তন্নি সেখানে হা/পা/তে হা/পা/তে এসে বললো,

~আপুর র/ক্ত লাগবে ডাক্তার বলেছে তাড়াতাড়ি ব্যবস্থা করতে না হলে

আর বলতে পারলো না তন্নি ঝরঝর করে কেঁদে ফেললো রাত তাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরলো।রক্তিম চোখ বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ছে/ড়ে বললো,

~যেদিন ওই ব্যক্তিটা কে হাতের কাছে পাবো সত্যি বলছি নিজ হাতে খু/ন করবো।

দিবার মা মনে মনে হাসলো রক্তিম আর রাত র/ক্তে/র খোজে চলে গেলো।দিবার মা আর তন্নি উপরে চলে গেলো দিবার মা গিয়ে ভাইয়ের পাশে দাড়ালো।কিছুক্ষণ পর রক্তিম আর রাত
র/ক্ত নিয়ে আসলো আর নার্সের হাতে দিয়ে দিলো ডাক্তাররা নিজের কাজে লেগে পরলো।রক্তিম পাশের মসজিদে চলে গেলো সেখানে বসেই নিজ প্রিয়তমার জন্য দোয়া করতে লাগলো।আকাশে আজ মেঘ জমেছে হয়তো রক্তিমের মনের ব্যাথা আজ তারাও উপলব্ধি করছে গ/র্জ/ন করছে আজ আকাশ রক্তিমের কষ্টে।একটু পর ঝড় শুরু হলো চারদিকে বাতাস বয়তে শুরু করলো রক্তিম হাসপাতাল চলে আসলো সে চেয়ারে বসে পরলো আর মনে মনে বললো,

~প্লিজ অধরা কা’ম ব্যা’ক আই লাভ ইউ।

ডাক্তার বের হয়ে আসলো “ওটি” থেকে তাকে দেখে রক্তিম এগিয়ে গিয়ে বললো,

~আমার অধরা কেমন আছে?বলুন ডাক্তার।

ডাক্তার দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,

~মাথায় খুব জোরে আ/ঘা/ত পেয়েছে আর বাম হাত ডান পায়ে ফ্রাকচার হয়ে গেছে পেটে খুব জোরে
ধা/ক্কা লাগার কারণে ই/ন/জু/রি হয়েছে সেটা রির্পোট আসার পর বিস্তারিত জানা যাবে।আমি তার রিকোভারীর ফিফটি পার্সেন্ট ভরসা দিবো বাকিটা আল্লাহর ওপর ভরসা।

অধরার মা ডাক্তারের কথা শুনে হু হু করে কেঁদে উঠলেন রক্তিম ধপ করে মাটিতে বসে পরলো চোখ দিয়ে টপটপ করে পানি পরছে তার যে কী পরিমাণ কষ্ট হচ্ছে তা সে কাউকে তা বলে বুঝাতে পারবেনা।ডাক্তার বললেন,

~সকাল পর্যন্ত জ্ঞান ফিরে আসলে পেশেন্টের জন্য ভালো।

রক্তিম চোখ মুছে উঠে দাড়ালো আর ডাক্তারকে বললো,

~একবার অধরাকে দেখতে চাই।

ডাক্তার বললেন,

~ওকে ১ঘন্টা পর আপনি দেখা করতে পারবেন।

১ঘন্টা পর রক্তিম অধরার কাছে গেলো রুমে প্রবেশ করতেই সে অধরার দিকে তাকালো মুখে অক্সিজেন মাক্স লাগিয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে আছে।অধরার কাছে গিয়ে সে বসলো অধরার হাত ধরে
বললো,

~আমাকে আর কষ্ট দিওনা অধরা আর কষ্ট দিও না।আমার যে কলিজা ছি/ড়ে যাচ্ছে অধরা প্লিজ আমার দিকে তাকাও চোখ খুলে তোমার এই পাগল প্রেমিক তোমার জন্য অস্থির হয়ে আছে।

বলেই সে অধরার হাত ধরে কেঁদে উঠলো তার যে মনটা আনচান করছে। তন্নি রাতের সাথে বসে আছে রাত হাতে খাবারের প্লেট নিয়ে বসে আছে।তন্নি রাতের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে বললো,

~আপু ঠিক হয়ে যাবে তো আমাবস্যার রাত?

রাত তন্নির মাথা নিজ বুকে চেপে ধরে বললো,

~সব ঠিক হয়ে যাবে।

তন্নি রাতকে ধরে কেঁদে উঠলো রাতেরও যে অনেক খা/রা/প লাগছে তার প্রাণপ্রিয় বন্ধুর আজ ম/র/ণ দশা।রাত তন্নিকে নিজ হাতে খা/ই/য়ে দিলো তারপর তন্নিকে দিয়ে সবার হাতে খাবার পৌছে দিলো।রাত চলে আসলো রক্তিমের কাছে রক্তিম তার মায়ের সাথে বসে আছে রাত গিয়ে বললো,

~ভাইয়া চলো বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে তারপর আমরা আসবো।

রক্তিম রাতের দিকে তাকিয়ে বললো,

~আমি কোথাও যাবো না।

রাত বললো,

~প্লিজ ভাইয়া।

রক্তিম এবার রে/গে গিয়ে দাড়াতেই তার মাথাটা ঘুরে উঠে চোখের সামনে সব কিছু আবছা দেখতে পায় এরপর মাটিতে পরে যায়।রক্তিমের মা “রক্তিম” বলে চিৎকার করে উঠে সবাই রক্তিমের কাছে চলে আসে।
দিবার মা বসে আছে ডাক্তারের সামনে আর বললেন,

~আপনি কী সব বুঝতে পেরেছেন?অধরার পেটে যে ব্যাথা পেয়েছে তার একটি ফেক রির্পোট তৈরি করবেন তারপর কী বলতে হবে তা তো আপনিই জানেন।

ডাক্তার বললেন,

~টাকা চলে আসলে সব হয়ে যাবে।

দিবার মা বললেন,

~Good very good.

দিবার মা হেসে ডাক্তারের রুম থেকে বের হয়ে দিবাকে ফোন করলেন আর বললেন,

~সব ঠিকঠাক বেবী।

বলেই ফোন রেখে দিয়ে চলে গেলেন নিজ ভাইয়ের কাছে এখন তো নাটক করতেই হবে না হলে সব প্ল্যান শে/ষ হয়ে যাবে।

সকালে রক্তিমের জ্ঞান ফেরে আর রাতকে দেখতে পেয়ে বললো,

~আমার অধরা কেমন আছে?তুই কিছু বলছিস না কেন রাত?আমার কেমন যেন লাগছে?

রাত রক্তিমকে শুইয়ে দিয়ে বললো,

~অধরার জ্ঞান ফিরেছে ভাইয়া কিন্তু

চলবে