ভালোবাসার কাব্য গাঁথবো পর্ব-৯+১০

0
792

#ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো

(৯)
তানভীর এরিয়া ছেড়ে বাইরে এসে দাঁড়ায়। পাশেই তার গাড়িটা পার্কিং করা। আজ সকালে গাড়িটা ধোঁয়া হয়েছে। তার আগ পর্যন্ত ছিলো মার্কারের লেখাটা। এটা যে লাবিবার লেখা তা দেখেই বোঝা যায়। গুটানো গুটানো লেখা।এর আগে কখনো লাবিবার লেখা দেখার সৌভাগ্য হয়নি। আন্দাজে ঢিলটাও ছুঁড়তে হয়নি। যে কেউ বলে দিতে পারবে এটা লাবিবার লেখা। সে নিজেও যেমন তার লেখাও ঠিক তেমন। কিন্তু চিন্তাভাবনা গুলো বিশেষ করে আজ তানভীর তার প্রমাণ পেলো। পকেটে হাত ঢুকিয়ে সল্প পরিসরেই পায়চারি করলো। হাঁসফাঁস লাগছে। কেমন যেনো দমবন্ধকর পরিবেশ। দুপুরের রোদে চারিদিকে শুনশান। একটা মানুষ অব্দি নেই। অদূরে সোনালু গাছে কাক কাকা কাকা করছে। তানভীর কে ডাকতেই ফাহাদ বাইরে এসেছে।
‘ স্যার। আপনাকে ভেতরে ডাকছে। ‘
‘ হুম। ‘
‘ এনি প্রবলেম স্যার? রোদে দাঁড়িয়ে আছেন কেনো?ভেতরে চলুন।’
‘ সিগারেট হবে? ‘
‘ হ্যা?’
‘ সিগারেট।’
‘ স্যার..র!আমিতো খাই না।’
‘ তোতলাচ্ছ কেনো? তুমি আমার ছাত্র?আমার প্রতিষ্ঠানে ছিলে? দ্বিধা কিসের এতো?’
ফাহাদ দু মনা করতে করতে কি যেনো ভেবে সিগারেট বের করে দেয়। লাইটারে আগুন ধরিয়ে তানভীর গাড়ির পেছনে গিয়ে সুখটান দেয়। ধোঁয়া ছাড়তে থাকে।
‘ মেয়ে দেখতে এসেও সাথে সিগারেট! কয়টা চলে দিনে?’
‘ স্যার ইদানিং অভ্যাসটা ঝেকে বসেছে। কিছুতেই ছাড়াতে পারছিনা। ‘
তানভীর আর কথা বলেনা। সিগারেট শেষ করে ফাহাদের সাথে ভেতরে প্রবেশ করে। লাবিবা এখনো সেখানে উপস্থিত। প্রস্থান করার অনুমতি টুকু দেওয়া হয়নি। চ্যাংড়া ছেলেটা এখনো হা করে আছে। তানভীর গিয়ে লাবিবার পাশে দাঁড়ায়। সবাইকে দেখে নিয়ে লাবিবাকে বলে,
‘ তুমি এখন যেতে পারো। এখানে আর থাকার প্রয়োজন নেই।’
তানভীর মুখ খুলতেই সিগারেটের গন্ধ সরাসরি লাবিবার পেটে ঢুকে যায়। ওক্ করে উঠে একহাতে টুটি চেপে আরেক হাতে মুখ চেপে ধরে। উর্মিলা তাকে টেনে সরায়। তানভীর ভেতরে ভেতরে প্রমোদ গুনে। ফাহাদ চুপি চুপি চুইংগাম এগিয়ে দেয়। আস্তে বলে,
‘ সরি স্যার। চুইংগামের কথা মনে ছিলো না। আপনিও তো বললেন না। ‘
‘ আমি সিগারেট খাই না।’
‘ মানে?’
‘ সিগারেট ছাড়ো। লাবিবা সিগারেটের গন্ধ সহ্য করতে পারে না।’
‘ সময় লাগবে স্যার। তাছাড়া আমি সবসময় মাউথওয়াশ ব্যবহার করবো।’
তানভীর মুচকি হাসে। ফাহাদের কাঁধ থাপড়িয়ে বলে,
‘ মুখটাকে পবিত্র রাখো। ম্যারিড লাইফে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এটাই ফাস্ট প্রায়োরিটি হবে। ‘
তানভীর মুরুব্বিদের সাথে আলোচনায় যোগ দিলো। দুই পরিবারের বন্ধন অটুট করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলো। সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো আগামী শুক্রবার কাবিন করা হবে। ছেলেকে চাকরীস্থলে যেতে হবে। তারপর বিয়ের উদ্দ্যেশে দীর্ঘ ছুটি কেটে অনুষ্টান করে মেয়েকে ঘরে তোলা হবে।

সন্ধ্যার আগেই খাওয়া দাওয়া শেষ করে ছেলেপক্ষরা চলে যায়। আগামী শুক্রবার কাবিন করা হবে খবরটা লাবিবার কাছেও যায়। লাবিবা কারো সামনে তেমন রিয়েক্ট না করলেও ভেতরে ভেতরে ভেঙে পড়ে। সে জানতো এটাই হবে তারপরেও মনকে বোঝ দিতে পারছেনা। রুমে এসে বিছানায় শরীর ছেড়ে দেয়। সারাদিনের টেনশনে দূর্বল হয়ে গেছে। চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে কয়েকবার শ্বাস টানে। এভাবে কিছুক্ষণ সময় অতিবাহিত করার পর চট করে উঠে বসে। ফেসবুক লগ ইন করে ফাহাদ কে সাথে সাথে ব্লক করে দেয়। হুয়াটস এপ থেকেও ব্লক করে। ইমু, টেলিগ্ৰাম ও বাদ যায়না।তারপর কলেজের গ্ৰুপে ঢুকে তানভীরের আইডি খুঁজে বের করে। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠিয়েই মেজেস অপশনে গিয়ে তাড়াহুড়ো করে টাইপ করে,
‘ স্যার হয়ে কিভাবে পারেন ছাত্রীর সাথে অসভ্যতা করতে? মুখের উপর সিগারেটের গন্ধ বের করে কি শান্তি পেলেন? ছিহ! ‘
সেন্ড করেই লাবিবা রাগে গজগজ করতে লাগলো। মাথার চুল টেনে ধরে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করলো। পারলো না। পর পর আরো লিখে সেন্ড করলো
‘ স্যার স্যারের মতো থাকবেন। ‘
‘ ছাত্রীর ব্যাপারে এতো নাক গলানো কেনো?’
‘ নিজে একবার বিয়ে করে শখ মেটেনি? না মিটলে আবার বিয়ে করেন তাও ছাত্রীদের কপালে কুঠার লাগানো বন্ধ করুন। ‘
সেন্ড করেই লাবিবা স্কিনের দিকে তাকিয়ে রইলো। মেসেজ ডেলিভারি হয়েছে কিন্তু সীন করা হয়নি। অনলাইনে থেকেও কেনো সীন করছে না? লাবিবার আবার রাগ লাগে। বিছানা ছেড়ে ধপ ধপ পা ফেলে বেরিয়ে আসে। কিচেনে এসে দাঁড়ায়। দুজন কাজের লোক সহ লাবিবা মা কাকী সব রান্না খাবার বাসন গোছগাছ করে রাখছে। লাবিবা হাড়ির দিকে এগিয়ে যায়। রান্না করা মাংস থেকে বেছে বেছে সব থেকে শক্ত হাড্ডিগুলো বেছে নেয়। সাবিনা চেঁচিয়ে উঠে,
‘ আরে করছিস কি? এগুলো পায়ার হাড্ডি খেতে পারবিনা কুকুর কে দিবো। নরম গুলো নে। ‘
লাবিবা রক্ত চোখে মায়ের দিকে তাকায়। সাবিনা বুঝতে পারে মেয়ে খুব রেগে আছে। বিয়েটা একদমি করতে চায়না। তাই বলে কি আর বিয়ে ছাড়া থাকা যায়? আজ নয় কাল বিয়েতো করতেই হবে। মেয়ের কথায় সায় দিলে তো আর চলে না। এগিয়ে এসে চামচ ধরতেই লাবিবা ঝাকি দিয়ে ছাড়িয়ে নেয়। গলায় শান দিয়ে মায়ের উপর চেঁচিয়ে উঠে,
‘ আমি তো কুকুর ই। পোষা কুকুর। প্রয়োজন শেষ অন্যত্র ছুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে। দিবেই যখন এতো মায়া দেখানোর কি আছে?’
‘ লাবি মা শোন।’
‘দূরে থাকো। একদম দরদ দেখাতে আসবে না।’
যেভাবে এসেছিলো সেভাবে ধপ ধপ করে পা ফেলে চলে গেলো। সাবিনা করুন মুখে জায়ের দিকে তাকালো।
‘ এতো বোঝালাম মেয়েটা বুঝে না কেনো?’ বলেই টুলে বসে পড়লো।

সমস্ত রাগ গিয়ে পড়লো নিরীহ হাড্ডির উপর। দাত দিয়ে শত চেষ্টা তে ও ভাঙতে না পেরেও লাবিবা থামলো না। যুদ্ধ চালিয়ে গেলো। কট করে একটা দাঁত নড়ে উঠলো। আরেকটা দাত কোনা কোনি ভেঙেও গেলো। হাতে উঠে আসতে দেখে লাবিবা ক্ষান্ত হলো। রাগটাও কমে এলো। অভিমানে চোখের জল গড়ালো। মেসেজ গুলোর কথা মনে পড়তেই টনক নড়লো। ‘ সর্বনাশ ‘ বলে চিৎকার দিয়ে লাবিবা ছাঁদ ছাড়লো। রুমে এসে তাড়াহুড়ো করে বিছানা এলোমেলো করে ওয়ার্ডড্রোবের উপর ফোনটা পেলো। পেয়েও লাভ হলোনা। এতোক্ষণে যা সর্বনাশ হবার হয়ে গেছে। মেসেজ সীন করে ফেলেছে। নিচে ডট ডট উঠছে। রিপ্লাই টাইপ করছে। তারমানে মেসেজ মাত্র ই সীন করেছে এবং তানভীর খান ইনবক্সেই আছে। তাড়াহুড়ো করে সব মেসেজ আনসেন্ড করে দেয় লাবিবা। ছোট্ট করে লিখে দেয়,
‘ স্যার সরি।’
পর পর মেসেজ আসে।
‘ বেয়াদব। ‘
লাবিবার কাছে মেসেজটা বড্ড কঠিন লাগে। বেয়াদব ! এতো বড় বেয়াদবি করে ফেললো! তাও আবার তানভীর খানের সাথে। নিজের মাথার চুল এবার নিজের ছিঁড়তে ইচ্ছে করছে। লাবিবা সাথে সাথে অফলাইনে চলে গেলো। তবুও নিস্তার পেলোনা। তৎক্ষণাৎ কল এলো। লাস্ট ডিজিট দেখেই লাবিবার মাথায় বাজ পড়লো। প্রিন্সিপালের নাম্বার চেনেনা এমন কেউ মনে হয়না কলেজে আছে। লাবিবা ভয় পেয়ে গেলো। কল রিসিভ করলো না। তৎক্ষণাৎ মেসেজ আসলো, ‘ বেয়াদব! কি লিখেছো এসব!চাপকে সোজা করে দিবো মেয়ে।’
তাইতো! কি লিখেছে লাবিবা? একটু আগের লেখা গুলোও মনে করতে পারলো না। সব ভুলে বসে রইলো। ফোন বন্ধ করে দিলো।

রাগে চোখ মুখ লাল হয়ে আছে তানভীরের। কতবড় বেয়াদপ হলে স্যারকে এসব মেসেজ দেয়! কলিজায় কি ডর ভয় নেই? সাওয়ার নিয়ে আসতেই দেখে ফোনে ছোট্ট আলো জ্বলছে। হাতে নিতেই দেখে এসব উল্টা পাল্টা মেসেজ। তাও আবার একটা মেয়ের। আইডি নাম ‘ সুবোধ বালিকা।’ সুবোধ গিরি ছুটিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে। আইডিতে নাম্বারটা পেয়ে ফোন লাগায়। এর সুবোধগিরী বের করেই ছাড়বে। কলেজের স্টুডেন্ট!একবার পাক। উচিত শিক্ষা দিয়ে ছাড়বে।

হাফ বিল্ডিং একটা বাড়ির সামনে এসে দাঁড়িয়েছে লাবিবা আর নাকিব। গেটের উপর বড় বড় করে লেখা
‘ আহমদ ভিলা ‘ ।
লাবিবা জিজ্ঞেস করে,
‘ এই বাড়িটাই?সিউর?’
‘হ্যা চল।রোজি মেয়েটা পরশুই এসেছে। কাল ই চলে যাবে। আজ না এলে পেতাম ই না। ‘

দুজনে ভেতরে যায়। নাকিব ডাকে,
‘ রোজি আপু? আমি গতকাল যে এসেছিলাম। নাকিব।’
‘ ভেতরে এসো।’
ডাক পড়ে ভেতর থেকে। নাকিবের পিছু পিছু লাবিবাও যায়। সোফায় বসে গুটিসুটি হয়ে। মিনিট দুয়েকের ভেতরেই ফুটফুটে একটা মেয়ে আসে। গায়ে বাদামী রঙের শাড়ি। বয়স কত হবে? লাবিবার ছোট ই হবে। মিষ্টি হেসে লাবিবার কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে। ছেড়ে দিয়ে বলে,
‘ মাশাআল্লাহ আপু। তুমি তো খুব সুইট। ফাহাদ ভাইয়ের পছন্দ আছে।’
‘ তোমার হাজবেন্ডের ও পছন্দ আছে বলতে হয়। এটা তোমার বাবার বাসা? কবে এসেছো?’
‘ হ্যা আপু। পরশুই এসেছি। ডাক্তার দেখাবো আজকে রাতে। কাল চলে যাবো।’
‘ বাবার বাড়ি চিকিৎসা! কেনো শ্বশুড়বাড়ি কি চিকিৎসা করায় না?’
‘ করায়। ফার্মিশির ডাক্তার কি আর বড় ডাক্তারের ঔষধ দিতে পারে?’
তাচ্ছিল্য হাসে রোজি। লাবিবা নড়েচড়ে এগিয়ে বসে রোজির দিকে। হাত দুটো মুঠোয় নিয়ে বলে,
‘ আমাকে নাকিব কিছু কথা বলেছে। সেগুলো কি সত্যি? তুমি ভালো নেই রোজি। তোমার মতো আমি হতে চাই না। ছোট্ট একটা জীবনে আমি অনেক ভালো থাকতে চাই। ‘
মলিন হাসে রোজী।। কপালে আঙুল ঠেকিয়ে বলে,
‘ সব এই কপালের লেখন। তোমার কপালে থাকলে তোমাকেও ভূগতে হবে। ছা পোষা হয়ে আমার মতো জীবন কাটাবে। শ্বশুড় শ্বাশুড়ির সেবা করে জীবন চলে যাবে। কয় মাস পর পর জামাই আসবে দুটো মিষ্টি কথা বলবে শরীরের খিদে মেটাবে আবার ফেলে চলে যাবে।’
‘ একজন অফিসার হয়ে কিকরে এসব সাপোর্ট করে? ফাহাদ ও কি এসব সায় দিবে?তার সাথে তো আব্বুর ডিল হয়েছে। আব্বু যা যা শর্ত দিয়েছে তারা সব মেনেছে।’
‘ সেটাতো আমার ক্ষেত্রেও হয়েছে আপু। পড়াশোনা করাবে কথা দিয়েছে। রাণীর মতো রাখবে। কোন অভাব হবেনা। মন চাইলেই ঘুরতে বেরোবে। বাবা মাকে দেখতে চাইলেই এসে দেখে যাবে। আরো কত কি! কত আশা সপ্ন দেখিয়ে আমার জীবনটাই শেষ করেছে। বাবা মার ব্রেইন ওয়াশ করে আমাকে নিয়ে গেছে। আজ বিয়ে না হলে আমি কি স্বাধীন থাকতে পারতাম না? আমার বাবা মা কি আমাকে পড়াতো না? এখন আমি বছরেও বাবা মা মুখ দেখতে পারিনা। রাণী হয়ে গিয়ে হয়ে গেছি চাকরানী। স্বামীর কোন ব্যপারেই থাকতে পারিনা। ফোনে দু চারটে কথা ছাড়া কিছুই হয়না। পুরুষ মানুষ বাইরে থাকে কি না কি করে বেড়ায় কিছুই জানতে পারিনা। চোখ বন্ধ করে দিয়েছে আমার। পুলিশ অফিসার! তাদের বিরুদ্ধে কোন স্টেপ ও নিতে পারিনা। বড় সংসার। কাজ করতে করতে কোমড়ে ব্যথা ধরে গেছে ফার্মেশি থেকে দুটো বড়ি ছাড়া কিছুই জোটে না। চিকিৎসার উছিলায় তাওতো বছর পর আসতে পারলাম। নাহলে তাও পারতাম না। ‘
রোজী নিঃশব্দে চোখের জল ফেলতে লাগলো। লাবিবার হাত দুটো মুঠোয় পুরে বললো,
‘ এ বিয়ে করোনা। তোমার সম্পত্তির উপর তাদের লোভ পড়েছে। মেয়ে তুমিও কম যাও না। এতো রুপ কে লালন করতে বলেছে তোমাকে? রুপ না থাকলে তোমাকে চোখেই ফেলতো না। উনারা যত ই আধুনিক হোক। বাইরেই সব। আজ পর্যন্ত বলতে পারবেনা কোন পার্টিতে কোন বউ গিয়েছে। এলাকা ছাড়া তাদের কেউ চিনে না। সারাদেশে একেকজন চাকরী করে বেড়ায়। ভয় অনিশ্চয়তা নিয়ে দিন পার করতে হয়। ‘
নাকিব জানতে চায়,
‘ ফাহাদ ভাই কেমন আপু?’
‘ উত্তম সন্তান। বংশের গর্ব। বাবা মার কথা ছাড়া এক পা নড়ে না। সবার আদরের ‌। বেশ হাসিখুশি। রসিক ও বটে! ‘
‘ গার্লফ্রেন্ড আছে নিশ্চয়।’
‘ আমরা তা জানি না। থাকলেও বাবা মার কথা ছাড়া কিছুই করবেনা। ‘
‘ দোস্ত উঠ। এই বিয়ে তোকে করতে হবেনা। ভয় পাসনা। আমাদের সতেরো বছরের বন্ধুত্বের কসম তোকে আমরা হারাতে পারবোনা। ‘

চলবে,

#ভালোবাসার_কাব্য_গাঁথবো

(১০)
বিকাল হতে না হতেই ফাহাদ এসে বসে আছে। লাবিবাকে নিয়ে ঘুরতে যাবে। সাবিনা গলা হাঁকিয়ে লাবিবাকে একটু পর পর ডাকছে। ফাহাদ সোফায় বসে পা দোলায়। সাবিনাকে থামতে বলে,
‘ থাকনা আন্টি ও রেডি হোক। আমি অপেক্ষা করছি সমস্যা নেই। ‘
‘ কিছু মনে করোনা বাবা। মেয়েদের তৈরী হতে একটু টাইম ই লাগে। ‘
কিন্তু মনে রেগে বোম হয়ে যায়। লাবিবার মোটেই এতো টাইম লাগেনা। পাঁচ দশ মিনিটের বেশি তো কখনো লাগেইনি । মেয়েটা মান সম্মান ঢুবিয়ে ছাড়বে আজ। যা ভেবেছিলো ঠিক তাই।লাবিবা রেডি হয়নি। জামা কাপড় একটু আগে যেটা বের করে রেগে গিয়েছিলো সেভাবেই আছে।
‘ তুই কি যাবিনা?’
কোমড়ে হাত রেখে প্রশ্ন করে সাবিনা। লাবিবা কম্বলের নিচ থেকে মুখ বের করে। মুখ ঝাড়া দিয়ে বলে,
‘ আমি কি বলেছি আমি যাবো? দূর হও এখান থেকে। আমার আগলা দরদ লাগেনা। ‘
‘ তাড়াতাড়ি উঠে রেডি হ। ছেলেটা কখন থেকে বসে আছে। ‘
‘ দরদ ঐখানে গিয়ে দেখাও তাহলে। আমার কাছে কি?’
‘ দুদিন থেকে দেখছি এরকম ব্যবহার করছিস। একদম মেরে মুখ ফাটিয়ে দিবো। উঠ বেয়াদব মেয়ে। ‘
সাবিনা টেনে কম্বলের নিচ থেকে লাবিবাকে বের করে। জামা টেনে ধরে।
‘ হাত উপরে তুল। ‘
লাবিবা দু হাত উপরে তুলে। সাবিনা জামা খুলে নিয়ে আলমারি থেকে নামিয়ে রাখা জামাটা পরাতে যায়। লাবিবা ছিটকে উঠে।
‘ উহু। এই জামা আমি পড়বোনা। ‘
‘ কেনো কি হয়েছে এই জামাতে?’
‘ এই জামাটাই কয়েকদিন আগে একটা মেয়ে পড়েছিলো। আমি এটা পড়বোনা। কাউকে দিয়ে দিও।’
‘ কোথায় লেখা আছে যে একজামা দুজন পড়তে পারবেনা? ফ্যাক্টরি মালিক কি তোর জন্য এক্সটা করে ড্রেস বানায়? অন্য কারো গায়ে যে জামা দেখবে সেই জামা আর পড়বেনা। বড়লোক গিরি দেখানো!’
‘ একদম না। এক জামা পড়তেই পারে। কিন্তু আমার শহরে পড়বেনা। আমি বরাবরই ইউনিক। আর সবার আগে ইউনিক ডিজাইন গুলো আমিই পড়বো এখানে। ‘
‘ আচ্ছা। অন্য জামা পড়। ‘
‘ কোনটা পড়বো? সব জামা পড়া শেষ। আব্বুকে বলো কবে ঢাকা নিয়ে যাবে? আমি ও জামা কিনতে যাবো।’
‘ ত্যাড়ামি করবিনা। আচ্ছা অন্য জামা পড়। ‘
‘ সব জামাই নষ্ট হয়ে গেছে। আমি কোন জামা পড়বোনা। ‘
‘ তো কি পড়বি? শাড়ি পড়বি?’
‘না। বোরখা। যাতে ঐ হাদারামটা আমার দিকে কুনজর না দিতে পারে। ‘
‘ এসব কি কথা লাব্বু? দুদিন পর তোমার হাজব্যান্ড হবে সে। ‘
‘ হ্যা। তারপর চারদিন পর তোমার মেয়ের লাশ ও পাঠাবে। ‘
বলতে না বলতেই গালে সজোরে একটা চড় পড়ে। লাবিবা গালে হাত দিয়ে কেঁদে উঠে। সাবিনা শাষিয়ে বলে,
‘ আর একটা কথা বলবিতো আরেকটা চড় খাবি। কিছু বলিনা বলে বড় বার বেরেছো তুমি। একরম কয়টা ছেলে আমাকে এনে দিতে পারবি? চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাক।নড়বিনা। আমি রেডি করিয়ে দিচ্ছি। ‘

লাবিবাকে বোরখাতে দেখে ফাহাদ আশ্চর্য হয়ে যায়। ফ্যালফ্যালিয়ে তাকিয়ে থাকে। লাবিবা ‘ আসুন ‘ বলে হ্যান্ডব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে যায়। ফাহাদ ও পিছু পিছু ছুটে।
‘ এই আমরা কি লুকিয়ে প্রেম করতে যাচ্ছি নাকি? মুখ টুক ঢেকে কি অবস্থা করেছো!’
‘ বক বক করবেন না। আপনার সাথে কথা বলতে চাইছিনা। ‘
‘ কেনো আমি কি কোন ভূল করেছি? এই লাবিবা তুমি কেদেছো নাকি?’
‘ আপনার জন্য। ‘
‘ হায় আল্লাহ আমার কি সৌভাগ্য। এতো ভালোবাসো! ‘
লাবিবা থামে। রাগী চোখে তাকায়। আবার হাটতে শুরু করে। ফাহাদ বেচারা মুখ কাচুমাচু করে। বিরবিরিয়ে বলে, ‘ ওতো বড় বড় চোখে এভাবে তাকাও কেনো? খেয়ে ফেলবে নাকি!’
লাবিবার ইচ্ছে করছে একটা শট মারতে। বেটা এতো বেশি বুঝিস কেনো? আমি কি তোকে বলেছি তোকে আমি ভালোবাসি?

ফাহাদ লাবিবাকে নিয়ে বাইপাসের পাশে রেস্টুরেন্ট টিতে গিয়ে বসে। সেখানে ফাহাদের পরিচিত অনেকে ফাহাদকে দেখে এগিয়ে এসে করমর্দন করে। লাবিবা ফাহাদকে রেখে কোনায় একটা টেবিলে গিয়ে বসে। এদিকে বাইরে থেকে হাওয়া আসছে। সবুজ বনের হাওয়া। পার্পেল বোরখা টা হাওয়ায় উড়ে গায়ের সাথে মিশে যাচ্ছে। লাবিবা সরে বসে। খোলা রেস্টুরেন্টের বাইরে পার্কিং রাখা। সাদা নোহা কারটা চোখে পড়ে। বুক ধরফড় করে উঠে লাবিবার। অবাধ্য চোখ দুটো ভেতরে কাঙ্খিত পুরুষটিকে খুঁজে বেড়ায়। পেয়েও যায়। আপজিটের দূর এক টেবিলে বসে কফিতে চুমুক দিতে ব্যস্ত সে। তাকে চেনা যাচ্ছেনা। চিরাচরিত ফরমাল গ্যাটাপে দেখা তানভীর খানের সাথে এই তানভীর খানের মিল নেই। হাফ হাতা মাস্টার্ড কালার টি শার্টে ইয়েলো সানগ্লাসে একদম অন্যরকম। বুকের উপর দুটো বোতাম দুটোই খুলা। হালকা উকি ঝুকি দিচ্ছে লোম কালো জায়গাটা। উহুম তা নয়। লাবিবার দূর্বলতা। দ্রুত চোখ সরিয়ে নেয়। চোখ বন্ধ করে পড়ে
‘ আসতাগফিরুল্লাহ। আল্লাহ আমার চোখ দুটোকে হেদায়েত করো। এতো কেনো বেহায়া পনা করছে আজকাল! রক্ষা করো আল্লাহ। ‘
‘ কি বিরবির করছো?’
চোখ খুলে দেখে ফাহাদ মুখের উপরে ঝুঁকে লাবিবাকে আবিষ্কার করতে ব্যস্ত। ঠিক হয়ে বসে লাবিবা। আস্তে করে বলে,
‘ কিছুনা।’
‘ আচ্ছা। অর্ডার দাও কিছু। কি খাবে বলো। ‘
লাবিবা একপলক তানভীরের দিকে তাকায়। চোখাচোখি হয় দুজনের। তানভীর এদিকেই তাকিয়ে আছে। পাশের চেয়ারে কনুই রেখে এক পা আরেক পায়ের উপর তুলে রাজকীয় ভঙ্গিতে লাবিবার চোখে চোখ রেখে একটু পর পর কফিতে চুমুক দিচ্ছে। লাবিবা সেদিকে তাকিয়ে থেকেই বলে,
‘ কফি। ‘
‘ আর?’
‘ কিছুনা। ‘
লাবিবা কি তানভীর কেউ চোখের পলক ফেলে না। লাবিবার চোখ দুটো জ্বলজ্বল করে উঠে। তবুও চোখ সরিয়ে নেয়না। লাবিবা ভাবে তানভীর হয়তো তাকে চিনবে না। ফাহাদ কে দেখলে চিনতে পারে। ফাহাদ সেদিকে পিঠ দিয়ে বসেছে। তাহলে এভাবে কি দেখছে? কিন্তু লাবিবার ধারনা নেই সে যতই নিজেকে আবৃত করুক তার পরিচিতি তার ঐ দুটি চোখ। এমন চোখ আর কারো সাথে মিল পাওয়া যায়না। সৃষ্টিকর্তা নিজ হাতে যেনো বানিয়েছে সেই চোখ জোড়া। অসংখ্য মায়া ঢেলে দিয়েছে। দিয়েছে বিশেষত্ব। যে একবার ঐ চোখ অবলোকন করে সেই এক দেখাতেই বলে দিতে পারবে এই চোখের মালিকিন কে। সেখানে তানভীর তো বেশ কয়েকবার সেই চোখ অবলোকন করেছে। দেখেছে তার একেকটি রুপ। কখনো ভিতু হয়ে পড়ে ঐ চোখ, কখনো উচ্ছোসিত হয়ে হেসে উঠে কখনো অসহায়ত্ব কুঞ্চসীত হয় আবার কখনো অভিমানে বিন্দু বিন্দু ফোয়ারা ছুঁড়ে।

‘ এই যে মেডাম। এখনো কি আপনার চাদমুখ খানা দেখার সৌভাগ্য হবে না? কফি কি ঠান্ডা করার ইচ্ছা আছে?’
ফাহাদের কথায় ধ্যান ভাঙে।
‘ হু?’
‘ কখন থেকে ডাকছি। ঐদিকে কি? ‘
ফাহাদ পেছনে তাকায়। পরিচিত কাউকেই পায়না। লাবিবাও তাকায়। ততোক্ষনে তানভীরের জায়গাটা খালি হয়ে গেছে। অন্যজন সেখানে বসে গেছে। না চাইতেও লাবিবার মনটা খারাপ হয়ে গেলো। বিরবির করলো, ‘ চোখের ভ্রম! নাকি সত্যিই চলে গেলো?’
‘ লাবিবা।এখানে কেউ কি তোমার পরিচিত? ‘
‘ না।’
‘ এবার মুখটা খুলো। কফি নাও ‘ ।
‘ হু। ‘
নেকাপ সরাতেই প্রদর্শিত হয় গালের উপর টকটকে পাঁচ আঙুলের ছাপ। ব্যস্ত হয়ে পড়ে ফাহাদ।
‘ লাবিবা কি হয়েছে গালে? আঙুল বসে গেছে। দেখি?’
চেয়ার ছেড়ে এগিয়ে আসে ফাহাদ। লাবিবার গাল ছুবে সাথে সাথেই লাবিবা সরে দাঁড়ায়। কাপা গলায় বলে,
‘ আমাকে ছুঁবেন না। আমি পবিত্র। ‘
‘ লাবিবা? কি হয়েছে তোমার? আমি তোমার হবু হাজবেন্ড। ‘
‘ আমি বাড়ি যাবো। ‘
‘ শোন আমার কথা।’
‘ আমি বাড়ি যাবো। ‘
‘ যাবোতো আমরা বাড়িতে। তুমি কাঁদছো কেনো? কে মেরেছে তোমাকে? ‘
‘ আমি বাড়ি যাবো। ‘
পর পর দুজন ওয়েটার এসে দাঁড়ায়। ফাহাদ কে বলে,
‘ স্যার ম্যাম কে বরং আপনি বাড়িতেই নিয়ে যান। কেমন হাপাচ্ছে। ‘
আরেকজন বলে,
‘ স্যার ম্যামের বোধহয় শরীর খারাপ লাগছে। বাসায় নিয়ে যান। ‘
ফাহাদের ও তাই মনে হয়। লাবিবাকে বলে,
‘ তোমার শরীর খারাপ লাগছে বলবে না? তাহলেই তো আমি আর তোমাকে নিয়ে বেরোতাম না। থাকো আমি বিলটা দিয়ে আসি। ‘
ওয়েটার জানায়, ‘ বিল দিতে হবে না স্যার। আপনারা তো কফিটা টাচ করেননি দেখা যাচ্ছে। আমরা নিয়ে নিচ্ছি। ‘
‘ ওকে। থ্যাংকস। ‘
‘ ওয়েল কাম স্যার। আবার আসবেন। ‘

লাবিবা ফাহাদ বেরিয়ে যেতেই তানভীর এসে সেই টেবিলে বসে যেখানে লাবিবা বসে ছিলো। ফেলে যাওয়া কফি মগে চুমুক দেয়। ওয়েটার এসে বিলের কার্ড এগিয়ে দেয়। তানভীর পরিশোধ করে দিয়ে কফিতে আবার চুমুক দেয়। ফ্রেন্ডসদের সাথে হ্যাং আউট করতে এসেছিলো। আর এখন চোখে মুখে চিন্তার ছাপ। চোখে ভেসে উঠছে লাবিবার গাল। টকটকে স্কিনে কিভাবে দাগ হয়ে আছে। দেখলেই বুকটা কেঁপে উঠে। ভুল হয়ে যাচ্ছে নাতো বড় সড়?
‘ কিরে আবার কফি! উঠ। ‘
আশিক টেবিলে থাপ্পড় বসিয়ে ডাকে। তানভীর এক পলক তাকিয়ে বলে ‘ বস।’
‘ বাকিরা গাড়িতে ওয়েট করছে। ‘
‘ হুম। ‘
‘ কোন বিষয়ে টেন্সট ?’
‘ একটা মেয়ে। বিয়ে করতে চাই না। তবে তার বিয়েটা জরুরি। বাবা মা বাধ্য করছে বিয়েটা করতে। গায়ে হাত ও তুলছে। যার সাথে বিয়ে হচ্ছে সে মেয়েকে দেখে পুরো দিওয়ানা। দুই পরিবার ই রাজী। ডেট ফিক্সড আর আমি হচ্ছি সেই বিয়ের মাধ্যম। এক্ষেত্রে তুই কি বলবি?’
‘ মেয়েটা কেনো বিয়ে করতে চায় না?’
‘ মেয়েটার মনে হচ্ছে এটা তার বিয়ের জন্য উপযুক্ত সময় নয়। মেয়েটার যুক্তি কেউ মানতে রাজী নয় । মনের বিরুদ্ধে হচ্ছে সব। আমার কাছেও সাহায্য চেয়েছে। আমি কি করতে পারি?’
‘ মেয়েটার ফ্যামিলিকে বোঝা। তোর কথা মানতেও পারে। ‘
‘ সব কিছু হাতের বাইরে বেরিয়ে গেছে। ‘
‘ তো এখন কি করতে চাস? ‘
‘ মেয়েটা যা চায়। ‘
‘ কি চায়?’
‘ মেয়েটিই জানে। ‘
‘ হেয়ালি করছিস কেনো?’
‘ একটা সিদ্ধান্ত নিতে চাই। আশা করি উত্তম হবে। ‘
‘ চল। ‘
‘ হুম।’

বিয়ের আছে মাত্র তিন দিন। লাবিবার সকল চেষ্টা ব্যর্থ। বাবা মার সাথে চলছে বিরাট দ্বন্দ। বার বার বোঝাতে গিয়েও ঠেকে গেছে। তার উপর এই ফাহাদ। লাবিবার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে। এর সাথে মতই ত্যাড়ামি করা হোক সেই ত্যাড়ামির ই প্রেমে পড়ে। ইসমাইল ও অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক। মেয়ে কি করতে পারে আর না সবটাই জানে। আত্মহত্যা পর্যন্ত গিয়ে ফিরে আসতে হয়েছে। ইসমাইল শক্ত ভাবে বলে দিয়েছে ‘ তুমি যদি ভেবে থাকো এ বিয়েটা করলে তোমার লাইফ শেষ হয়ে যাবে তাহলে ইহকালের অর্ধেকটাই শেষ হবে। আবার যদি ভাবো আত্মহত্যা করবে তাহলে ইহকাল পরকাল সবটাই শেষ হবে। ডিসিশনস য়্যুরস। ‘
কলেজেও এলাও করছে না। খুব ইমপর্টেন্ট ক্লাস আছে বলে বেরিয়েছে। নাকিব উর্মিলাতো জানে পানি ফিরে পেয়েছে। লাবিবাকে জড়িয়ে ধরে বলে,
‘ দোস্ত। ফাইনালি তোর বাপ তোরে ছাড়ছে। ‘ লাবিবা উর্মিলাকে সরিয়ে দিয়ে নাকিবকে বলে,
‘ আমার জন্য কি করতে পারবি?’
‘ তুই খালি ক কি করা লাগবো। ‘
‘আয় পালিয়ে যাই। ‘
‘ দোস্ত! আমাক বিয়া করবি?’
‘ তোক কেনো বিয়া করবো? ভাই লাগোস না?তুই ছাড়া আর কে আছে যার সাথে পালাতে পারমু’
‘ শালার গাদী। একটা প্রেম ও তো করতে পারলি না জীবনে। তুই বাইচা থাকি কি করবি? মইরা যা চল্লিশা খাই। ‘
‘ ফালতু কথা বলবিনা। তোরে নিয়া পালাইলে জীবনে কোন মেয়ে আমারে বিয়া করবো? কেলেঙ্কারি হয়ে যাবো না? গার্লফ্রেন্ডের সামনে কোন মুখ নিয়ে দাড়ামু?’
‘ তাহলে আমি কিভাবে বিয়ে টা আটকাবো?’
‘ তোর ঘটক রে বল।’
‘ স্যারকে বলেছিলাম। স্যার আরো পথ সাফ করে দিয়েছে। এই স্যারের জন্য ই এতো কিছু। উনি যদি এর মধ্যে না থাকতেন না তাহলে আডুলি বাডুলি সব ঘটককে তুরি মেরে আমি তাড়াতাম। ‘
‘ তাহলে চল তুড়িমারার ব্যবস্থা করি।’
‘ কিভাবে?’
‘ স্যারের বউকে ম্যানেজ করি। বাইরে মতই বাঘ হোক না কেনো সব পুরুষ ই বউয়ের পোষা ঘোড়া। ‘
‘ ম্যাম কে কিভাবে ম্যানেজ করবি? উনি কি উনার হাজবেন্ড ছাড়া আমাদের কথা বিশ্বাস করবে?’
‘ না করলে প্রমান দেখাবো। তবুও বিশ্বাস করতে হবে। কোন মেয়েই এতো বড় একটা ঘটনা শোনার পর কোন মেয়ের ক্ষতি করতে চাইবে না। ‘
‘ আমাদের আরো আগে উনার কাছে যাওয়া উচিত ছিলো। উনার কাছে কাজ না হলে পাগলের ডাক্তারকেও ম্যানেজ করবো। উনি বোধহয় তানভীর স্যারের ফ্রেন্ড হবে। সেদিন উনার চ্যাম্বারে কথা বার্তা শুনে তো তাই মনে হলো। ‘
‘ এখন চল। নয়তো দেড়ি হয়ে যাবে। লাব্বুকে আবার বাসায় ফিরতে হবে। ‘

চলবে ___

®লাবিবা তানহা এলিজা