ভালোবাসার গুন্ঞ্জন পর্ব-০৮ এবং শেষ পর্ব

0
3913

#ভালোবাসার_গুন্ঞ্জন 💜💜
#আইদা_ইসলাম_কনিকা
#পর্বঃ০৮

আরফান মাটিতে পরে যাচ্ছে আর আাশেপাশে রক্তে রিক্তিম রং ধারান করেছে….এখনো সে মাহিরেরে সামনে এসে দাঁড়িয়ে নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে বলে
–কুইন এর কিং মাটিতে পরে থাকলে চলবে….? মাহিরও হাতটা ধরে ওঠে জড়িয়ে ধরে তাকে..আর বলে
–আমি ইচ্ছে করে করিনি এইসব আমারা বাধ্য ছিলাম… বিশ্বাস করো মাকে ঐ জানোয়ারটা বন্দী করে রেখেছিল ঐ চিপটার জন্য…ঐটা এখন খুঁজতে হবে। আদারা বলে (হ্যা এইটা আদারাই)
— ঐটার মধ্যে মটু-পাতলু আছে ঐটা দিয়ে আপনি কি করবেন? মাহির অবাক হয়ে বলে
–মানে আদারা বলে মাফিয়া ওয়াল্ডের কুইন বললেন, তো এটা করা কি কোনো ব্যাপার? আমি জানতাম আপনি আমাদের কিছু করবেন না কিন্তু যখন নিঝুম আপিকে গুলি মারেন আমার প্রচু রাগ চরে বসে..তাই আমি রাদ ভাইয়কে….রাদ বলে
–ব্যাপার না, তুমি জানলে কি করে এইসব?আমরা এখানে আর তোমার শরীরের অবস্থাও তো ভালো না। আদারা বলে
–এই বডিটা সরিয়ে ফেলো আর হ্যা…. কোনো কাকপক্ষী ও যেনো টের না পায় আরফান খান কোথায় হারিয়ে গেলো।। আর এনাকে কি করবো?? গানে এখনো ৩টা গুলি আছে? মাহির বলে
–শুনেছি তোমার হাতের টিপ নাকি অনেক সুক্ষ, সত্যি কি তাই? আদারা বাকাঁ হাসি দিয়ে ঠিক এনার কাপাল বারাবড়ি পরপর তিটা সুট করলো দেখে মনে হচ্ছে কেউ টিপ পরিয়ে দিয়েছে…, আদারা বলে
–এখনো কোনো সন্দেহ আছে নাকি মি.খান। মাহির আদারাকে কাছে টেনে নিয়ে নাকে নাক ঘষতে ঘষতে বলে
–না মিসেস.খান। রাদ ওদের খাহিনি দেখে হালকা কাশি দেয়….
–এহেম এহেম….এখানে আমি সহ অনেক গার্ডরা আছি..। মাহির বলে
–গাইস সবাই একসাথে চোখ বন্ধ করো… সবাই একসাথে চোখ বন্ধ করলে মাহির টুপ করে একটা চুমু দিয়ে দেয় আদারার গালে…. আদারা মুচকি হাসি দিয়ে বলে
–আপনার ঢ়েই অবস্থা নয়তো… এখন দুই-চারটা ঘা দিতাম আমি। মাহির বলে
–নিরামিষ একটা… রাদ ওদের কথা শুনে বলে।
–কিরে হলো তোদের? মাহির বলে
–হুমম। তারপর বেশ কিছু দিন কেটে যায়…. আলফাজ আজ এসেছে তার ভালোবাসার মানুষটার কবর জিয়ারত করতে… আসলে আলফাজের সাথে একজনে আকাদা করা ছিল নিলা নামের একটা মেয়ের সাথে পারিবারিক ভাবে সব কিছু হলেও ভালোবাসাটা ছিল গভীর আর সেই এই প্রমাণ গুলো জুগার করেছিল, আর আরফান সেটা জানতে পেরে যায় আর নিলাও বুঝতে পারে তার মৃত্যুর ঠিক কয়েক ঘন্টা আগে সে এই প্রমাণ গুলো সপে দেয় আদারার কাছে। আদারাও তখন এইসব এতো একটা বুঝতো না… আলফাজের মাফিয়া জগৎের আসার মূল কারণ ছিলো নিলা নিলার জন্য সে এসেছিলো কিন্তু এখন আর সে এই অন্ধকার জগতে ফিরে যাবে না, কারণ তার হয়ে বদলাটা নিয়ে নিয়েছে তার বোন আদারা। আলফাজ আর দেরী করলো না আজ তার দুই বোনের এনগেজমেন্ট… আদারা আর নিঝুমের সাথে… বাসায় এসে কাজে লেগে গেলো আলফাজ..বিকালে মাহিরের মা, মাহির, রাদ আর কিছু মেহমান চলে এসেছে সবাই আজকে কালো কালারের ড্রেস পরেছে…সবটাই আদারার পছন্দের কিন্তু আদারার চাঁচি এর সব ভালো লাগছে শুধু এটা ভালো লাগছেনা আদারা মাহিরের মতো এতো ভালো ছেলে পেয়েছে।সে একটা মাহিরের বাসার মহিলাকে বলছে
–আদারা ভালো মেয়ে না, রাত করে বাসায় ফিরে কথ ছেলের সাথে ফস্টিন্সটি করে বেড়ায়, জানেন আমার মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল একটা ছেলের সাথে আর কিছু বলতে যাবে তার আগেই আয়শা এসে একটা চড় বসিয়ে দেয় আদারার চাচির গালে বাসার সবাই অবাক বেশেষ করে আদারা, সে বলতে লাগে
–একটা বাজে বকবে না ভাবি,আদারার কখনোই কোনো দোষ ছিলো না,আদরের হায়াত ছিলো না তাই ও মারা যায়,আর বাকি রইলো নিঝুমের আগের বিয়ের কথা সেটা ভাগ্য ভালো নিঝুমের যে ছেলেটার চরিত্র সম্পর্কে আমাদের ধারণা হয়ে যায়।ছেলেটা নিজ মুখে বলেছে সে নিঝুমকে না আদারাকে বিয়ে করবে আর সে বারণ করে দেয়।তারপরেও, মানলাম ও অন্য রকম কিন্তু এটার জন্য তোমার দাই।সবাই মেয়েটাকে দোষ দিয়েছো…কিছুদন আগে মেয়েটা হসপিটালে ছিলো গেছো একটি বার দেখতে,আর আমি মা হয়েও ওর মুখে মা ডাক শুনতে পারলাম না কি হতোবাগা।আর আমার মেয়ে অলক্ষ্মী না তোমার চিন্তাভাব না অলক্ষ্মীনি বুঝেছো? আদারার চাচি কিছু বলতে যাবে তার আগে মাহির বলে
–নিঝুম আমাকে আর রাদ কে সব আগেই বলে দিয়েছে,আর আপনার সমস্যা কই বেশি কথা বলবেন খান মেনসনেই ঢুকতে দিবো না, ফাজিল মহিলা। আলফাজ বলে
–তোমরা পরিবার নামে কলংক বুঝতে পারছো। আদারা মাথা নিচু করে আছে নিঝুম বলে
–তোমাকে মা বলতেও আমার ঘৃণা লাগে, কি শুরু করেছো, কি চাও তুমি হ্যা? মরে যাই আমি। বাসার সবাই চুপ.. মাহিরের মা বলে
–আলফাজ বাবা আমি সঠিক জানিনা কিছু কিন্তু আমি আমার দুই মেয়েকে এখনই আমার বাড়িতে নিয়ে যাবো…আলফাজ মাথা দোলায় মানে হ্যা…. বড়িতে যেই আনন্দটা ছিল তা নিমেষেই ভুলে গেছে সবাই…মাহির যেয়ে আদারার জামা কাপড় নিয়ে আসে সথে নিঝুমও যায়…। আদারার খুব বলতে ইচ্ছে করছে মাগো তুমিও চলো আমার সাথে… আদারা নিজের মার কাছে গিয়ে বলে
–মাম্মা, ভালো থেকে আর আমার জন্য দোওয়া কর। কেমন? আয়শা আদারা কে জড়িয়ে ধরে হাজারো চুমু দিয়ে ভরিয়ে দেয় শাহাদত কিছু বলতে আসলে আয়শা বলে
–একটা কথা আপনি বলবেন আপনাকে ছেড়ে আমিও চলে যাবো।শাহামত আর দিদুনও চুপ….আদারা মাহিরের হাত ধরে বেরিয়ে যায় ঐদিন বাসায় থেকে।

৯ বছর পর… আদারা আধার কে ডাকছে…(মাহির আর আদারার মেয়ে ২ বছরের মেয়ে)
–আধার মামুনি তুমি কোথায়… আর আধার সোফায় আদ্রিয়ানের বুকে ঘুমাচ্ছে (আদ্রিয়ান হলো রাদ আর নিঝুমের ছেলে ৭ বছরের ছেলে) ৯ বছরে বদলে গেছে অনেক কিছু মাহির বেড়িয়ে এসেছে মাফিয়া জগৎ থেকে, মাহিরের মা মারা গিয়েছে ওদের বিয়ের কিছুদিন পর।ঐদিনের পর নিঝুম আর আদারা ঐ বাড়িতে যায় নি আদরার মা আর আলফাজের সাথে কথা বলে,নিঝুমের মা অনেক কথা বলতে চাইলেও নিঝুম বলেনি। আলফাজ বিয়ে করেছে নীলা নামের একটা মেয়েকে সে নীলার মতো না হলেও অনেক ভালোবাসে আলফাজকে আর আগের আদরার আর এখন কার আদরার মধ্যে কোনো মিল নেই,আগের রাগী আদারা এখন অনেক শান্তি মন খুলে হাসতে পারে শুধুই মাহিরের জন্য… নিঝুম রান্না ঘরে থেকে বলে..
–আদারা…আধার আদ্রিয়ানের কাছে সোফার রুমে…।আদার যেয়ে দেখে আদ্রিয়ান কার্টুন দেখছে আর ঘুমন্ত আধারের মাথায় হাত বুলচ্ছে আর টুপ টুপ করে চুমু দিচ্ছে…. তখনই মাহির পিছন থেকে আদারকে জড়িয়ে ধরে আদরাও কিছু বলে না এই ছোঁয়া যে তার চিরো চেনা মাহির বলে
—আমাদের #ভালোসার_গুন্ঞ্জন এর টাইম শেষ এখন আধার আর আদ্রিয়ানের #ভালেবাসা_গুন্ঞ্জন শুরু। আদারা হেসে দেয় আর বলে
—কখন আসলেন

আদ্রিয়ান ওদের কথা শুনে আদারাকে বলে
–ছোট মাম্মা তোমার মেয়েকে নাও জালিয়ে দিলো আমাকে শান্তিতে একটু টিভিও দেখতে পারিনা আমি।আদরা মাহিরের দিকে তাকি বললো….#ভালোবাসর_গুন্ঞ্জন না #নিশ্চুপ_ভালোবাসার কাহিনী শুরু…. হলো বয়কি…।আদ্রিয়ান বলে..
–নাও ওকে…. আদারাও কুলে তুলে নিলো আধারকে।রাদ মাত্রই ফিরলো অফিস থেকে মাহির আজকে জলদি ফিরে এসেছে…কারণ ওর কোনো কাজ ছিলোনা আর রাদ কিছু ক্লাইন্ট ছিল যার জন্য আসতে লেট হলো…রাদ এসেই নিঝুম নিঝুম বলে ডাকতে লাগলো, আর নিঝুমও গ্লাস ভরতি পানি হাতে হাজির…

—–সমাপ্ত—-
বেঁচে থাকুক এইরকম নিঃস্বার্থ ভালোবাসা গুলো…খুব জলদি ফিরবো নতুন কোনো গল্প নিয়ে… ধন্যবাদ সবাইকে 💜💜