ভালোবাসার গুন্ঞ্জন পর্ব-০৭

0
2351

#ভালোবাসার_গুন্ঞ্জন💜💜
#আইদা_ইসলাম_কনিকা
#পর্বঃ০৭

আদারা ধীরে ধীরে চোখ মেলে থাকায় নিজেকে একটা হসপিটালের বেডে আবিষ্কার করে সে,পাশে তাকিয়ে দেখে মাহির তার হাত ধরে ঘুমিয়ে আছে। মাথার পাশে বসে আছে আলফাজ,আর সোফায় বসে বসে ঘুমিয়ে আছে নিঝুম আর রাদ হাতে তাদের ব্যান্ডেজ।আদারার অনেক পানি তেষ্টা পেয়েছে কিন্তু শরীরটা বেশ দূর্বল তার, ১সপ্তাহ পর সেন্স এসেছে আদারার,আর আদারার এই অবস্থার কথা শুনে শুধু তার মা এসেছে প্রতিদিন আর নিঝুম আলফাজ আর মাহির তো আদারাকে ছায়াঁর মতো আকড়ে ধরেছিল,দিহান ওরাও এসে দেখেগেছে আদারাকে। আদারা পাশে দেখতে পায় পানির গ্লাস সে সেটা দেখে আস্তে আস্তে ওঠে বসে আর গ্লাসটা নেওয়ার চেষ্টা করছে। তখনই মাহির জেগে যায়…দেখে আদারা ঠোঁট চেপে গ্লাসটা নেয়ার চেষ্টা করছে… মাহির গ্লাসটা আদারার দিকে এগিয়ে দিলে… আদারা আরেক দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। মাহির জানে এটাই স্বাভাবিক কিন্তু সে তো রাগের মাথায় আর বাধ্য হয়ে করেছে এইসব। মাহির পানির গ্লাসটা আদারার মুখের সামনে ধরে বলে
–পানিটা খেয়ে নাও…। আদারা গ্লাসটা হাতে নিয়ে সটা ফ্লোরে ছুড়ে মারলো আর সাথে সাথে সবার ঘুম ভেঙে যায়। হআদারা বেশি জোরে কথা বলতে পারছেনা তাও বলতে লাগে…
–একদম সিম্পাতি দেখাতে আসবেন না,কি মনে করেন আপনি নিজেকে….বেরিয়ে জান বলছি আমি। আলফাজ বলে
–সান্তহো প্লিজ কথাটা শুন আগে, আদারা চোখ বড় বড় করে আলফাজের দিকে তাকায় পারেতো আলফাজকে সেই চোখ দিয়ে বষ্ম করে দিবে..আদারা বলে
–তোমার বিন্দুমাত্র লজ্জা করে না? এই মানুষ নামক হিংস্র মানুষটার পক্ষে কথা বলতে? তোমার সামনে আমাকে গুলি করলো নিঝুম আপিকে গুলি করলো তাতেও তুমি এই আদিবের পক্ষে কথা বলছো!! নিঝুম বলে
–মাহির ইচ্ছে করে করেনি এইসব, আর একটা শুখবর আছে আরফান বাংলাদেশে ফিরে এসেছে…। আদারা এইবার মাহিরের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে বলে..
–আমি যদি চিপটা আপনাকে দিয়ে দেই,তাহলে সত্যি আপনি আমাদের পিছু ছেড়ে দিবেন। মাহির কিছু বলেনা শুধু বলে
–চিপটা কোথায়? আদারা আলফাজকে বলে…
–ভাইয়া আমার হাতের ব্রেসলেট টা কোথায়.. আলফাজ নিজের পকেট থেকে সেটা বের করে দেয়, অপারেশন করার সময় আদারার ফোন,ব্রেসলেট সব ডক্টররা আলফাজের কাছে বুঝিয়ে দিয়েছে…. আদারা ব্রেসলেটের মধ্যে কোথাও একটা চাপ দেয় আর তার মধ্যে থেকেই বেরিয়ে আসে চিপটা… আদারা চিপটা মাহিরের হাতে দিয়ে বলে…
–আপনি যা চেয়েছিলেন পেয়ে গেছেন, এখন আমাদের মুক্তি দিন…। মাহির কিছু বললো না চুপচাপ বেড়িয়ে যায় চিপটা নিয়ে আর আদারা একপানে চেয়ে আছে মাহিরের যাওয়ার দিকে…।
মাহির আর রাদ গাড়ি নিয়ে যাচ্ছে একটা পুরোনো গোডাউন এর দিকে…. শহর তো অনেক দূরে জয়াগাটা… বেশ নিরিবিলি প্রাকৃতির, বর্ষাকাল হওয়াতে মাঝে মাঝে দুইএকটা ব্যাঙ ডাকছে, আর জানান দিচ্ছে তারা বর্ষাকাল চলে এসেছে। আর মাহির ভাবছে আদারার কথা সেদিন…যখন আদারারকে ঐ অবস্থা দেখে মাহির পুরো পাগাল হয়েগেছিলো, এই এক সপ্তাহে আর চোখের পাতা এক করেনি মাহির। যখন ডক্টর বলেছিলো আদারার অবস্থা বেশি ভালোনা, তখন মাহির খুব শান্ত হয়ে ডক্টরকে বলেছিলো
–আদারার যদি কিছু হয়,তোর হসপিটালে আগুন লাগিয়ে দিবো!!! সাথে তোকেও মারবো। মাহিরের এমন ব্যবহারে রাদসহ সবাই ভয়পেয়ে গেছিল… আর ডক্টর ও কোনো কথা বলার সুযোগ পাইনি বা বলেনি।
যখন ডক্টর বলেছিলো আদারার
–Out of Danger… তখনই মাহির অনেক অনাত বাচ্চাদের খায়িছে নিজ হাতে….।। এইসব ভাবছে আর গাড়ি চালাচ্ছে…হাঠাৎ রাদ বললো
–তুই কি সত্যি আদারাকে ভালোবাসিস না? ওকে ছেড়ে দিবে MAAK? মাহির বললো
–এতো সজা নাকি?বললেই হলো?আসছে মুক্তি দিন, আগে আফরান খান থেকে মাকে ছাড়িয়ে নেই তারপর আদারাকে দেখাচ্ছি। রাদ বলে
–তুই যে কাজ করেছিস মনে হয়না মানবে..। মাহির বলে
–ও তোকে গুলি করলো কেনো? রাদ বলে
–তুইও বন্যাকে গুলি করেছিস…মাহির বলে
–হুমম রাগের মাথায় করে ফেলেছি…।আচ্ছা আজকে যদি আমার কিছু হয়ে যায়…!! রাদ বলে
–ওল্টা পাল্টা কিছু বলবিনা।। আরফান খান তো শুধু বাবা বলে পরিচিত দিয়ে ছিলাম আম্মুর জন্য আর শেষে সে আম্মুকে আটকে রেখেছে।তার কুকিরতির সব প্রমাণ নষ্ট করতে… হঠাৎই পর পর ৫টা গাড়ি ক্রস করে গেলো মাহিরদের গাড়ি তা দেখে মাহির বাকা হাসছে… রাদও সেম…। গাড়িটা থামে সেই গোডাউনের সামনে। রাদ আর মাহির প্রবেশ করে গোডাউনে… চেয়ারে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় সেন্সলেস অবস্হায় আটকে রেখেছে মাহিরের মাকে। আর তখনই কেউ পিছন থেকে এসে বলে…
–Welcome my son’s!!!! মাহির রেগে গিয়ে বলে…
—shet’up..!! ভালোয় ভালোয় বলছি আম্মু কে ছেড়ে দে… আরফান বলে
—ছি ছি বাবার সাথে কেউ এইভাবে কথা বলে…যাই হোক চিপটা কোথায়? মাহির তার হাত থেকে সেটা বের করে দিলো.. কিন্তু আবার সাথে সাথে আবার নিজের কাছে নিয়ে বললো
–তুই বাবা নামে কল্ক, আম্মু কে একহাতে আমাকে তুলে দিবি আরেক হাতে আমি তোলে দিবো এইটা, আর আমিকি এতোটাই বোকা যে তুই একা আসবি আর আমি সেটা মেনে নিবো..। তখনই এনা এসে রাদের গলায় ছুড়ি ধরে… আরফান বলে
–সত্যি মাহির তোর তারিফ না করে পারলাম না,নিজের মার জন্য নিজের ভালোবাসাকে গুলি মারে। তো তুই এতোটা বোকা আমি জানতাম না নিজেকে কি মনে করিস কে জানে? আচ্ছা চিপটা দে তারপর আবার তোদের মেরে কবর দিয়ে সব প্রমাণ মিটিয়ে মিডিয়ার সামনে মিথ্যা কাহিনি বলে আবার ন্যাকা কান্না করতে হবে।
মাহির এবার বেশ রেগে গিয়ে বন্ধুকটা বের করে আরফানের দিকে তাক করে সাথে সাথে অনেক গুলো গার্ড বেরিয়ে আসে গোডাউনের আনাচে কানাচে থেকে…. আর আরফান এগিয়ে এসে মাহিরের দিকে আর হুহুহু করে হেসে ওঠে
—আর মাহিরের কাছ গিয়ে মাহিরকে একটা থাপ্পড় দিয়ে বলে তুই যে স্কুলে পরেছিস ঐ স্কুলের টিচার আমি। আর চিপটা জোর করে নিয়ে যায় আর গার্ড দের বলে মাহিরকে মারতে আর ঐদিকে এনা ছুরিটা আরো চেপে ধরেছে।হালকা হালকা রক্ত বের হচ্ছে সেখান থেকে। মাহিরকে মারতে মারতে প্রায় আধা মরা করে ফেলেছে গার্ডরা তখনই রাদ এনার হাতটা মুচড়ে ধরে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নিজে চেপে ধরে এনাকে যেভাবে এনা ধরে ছিল আর জোরে একটা সিটি মারে….আর সাথে সাথে রাদ আর মাহিরের গার্ডরা চলে আসে….. আর তাদের সাইট করে সিটি বাজতে বাজাতে টক টক করে আসছে হাতে তার গান…. পিছন পিছন আরো কয়েকজন আসছে….মাহির তাকে দেখে বাঁকা হাসি দিয়ে বলে
–Game start!!… আরফান বেস অবাক কারণ মাহির বলেছিলো সে একা আসবে কিন্তু সেতো পুরো সর্স নিয়ে এসেছে। আরফান বন্ধুকটা নিয়ে মাহিরের মার মাথায় তাক করে বলে
–মাহির কাজটা তুই ঠিক করিসনাই এদের সবাইকে,ছাড় নয়তো তোর মাকে মেরে ফেলবো…. সাথে সাথে একটা গুলি এসে লাগে আরফানের হাতে আর হাত থেকে বন্ধুকটা পরে যায় আর তখনই আরেকটা গুলি এসে লাগে তার বুকে….

চলবে