ভালোবাসার রঙে রাঙাবো পর্ব-৩২ এবং শেষ পর্ব

0
1009

#ভালোবাসার_রঙে_রাঙাবো💜
#সাদিয়া_জাহান_উম্মি💜
#পার্টঃ৩২(সমাপ্ত)
সময়ের সাথে সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হয় আমাদের।সময় কখন কোনদিক দিয়ে চলে যায় বলতেই পারে না কেউ।এর মাজে চলে গেছে একসপ্তাহ।সবাই বেশ এঞ্জয় করে করেছে কুয়াকাটা ভ্রমন।এরই মাঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ওদের পাঁচ বান্ধবীর একসাথেই বিয়ে হবে।এটা ওদেরই ডিসিশান।ওদের অনার্স প্রথম বর্ষের পরিক্ষা শেষ হলেই ওদের পাঁচজনের বিয়ে একসাথে হবে।সবাই সবার ভালোবাসার মানুষদের নিয়ে অনেক হ্যাপি আছে।

মেরাজ আর মিমের মাজে এখন আর কোন দ্বিধাবোধ নেই।কারন মেরাজও নিজের মনের কথা বলে দিয়েছে মিমকে।সে-কি খুশি মিমের তার সাথে মিমের মাও তাদের সম্পর্কটা মেনে নিয়েছে।মিম মেরাজের সাথে ফোনালাপ এ ব্যস্ত।মিম বলছে,

” আপনি যে এতো ছুপা রোস্তম আমি জানতামই না।”

মেরাজ ভ্রুকুটি করে বলে,

” তুমি কি হ্যা?নিজের ডিসেশনগুলো অন্যকে জানাতে পারো না।আর আমি হেল্প না করলে আজ আর আমাকে পাওয়া তোমার হতো না।তোমার মা যেই রাগী মানুষ। বাবাহ গো বাবা!”

মিম হালকা রাগী স্বরে বললো,

” তো! সে যাই হোক আমিই তো আপনাকে আগে বিয়ের প্রোপাজাল দিয়েছি তাই না?যেখানে আপনার আমাকে প্রোপোজাল দেওয়া দরকার ছিলো।”

মেরাজ ঠাট্টা করে বললো,

” ওটাকে প্রোপোজাল বলে?তুমি রিতীমতো আমাকে থ্রেড দিয়েছো।”

মিম গেলো রেগে,একে তো সে মেয়ে হয়ে বিয়ের কথা বলেছে সরাসরি তারউপর এই লোকটা আবার তার মজা নিচ্ছে।রেগে গিয়ে বলে,

” বেশ করেছি থ্রেড দিয়েছি। একশোবার দেবো।”

” আই লাভ ইউ।”

বেশ মেরাজের এই ছোট্ট একটা কথা কিন্তু এই কথাগুলোতে আছে যাদু মেশানো।একেবারে শরীর কাঁপিয়ে দেয় একেবারে।মিম আর রাগ করতে পারে।ওর রাগ গলে পানি।মেরাজ আবার বলে,

” রাগ আছে এখনো?”

মিম লজ্জামাখা হাসি দিলো। এই লোকটা কি বুজে না যে সে লজ্জা পাচ্ছে?
.

আলিফাদের বাগানে আরিফ এসেছে আর একেরপর এক ফোন দিয়ে যাচ্ছে।কিন্তু আলিফা নাছোরবান্দা আসবেই না।আসলে আরিফের এক মেয়ে ফ্রেন্ডদের সাথে সেদিন হঠাৎ করে দেখা হয়ে যায় আরিফের।মেয়েটা আরিফকে হাগ করেছিলো।আরিফ ও ভদ্রতার খাতিরে বিনিময় করে।কিন্তু সাথে ছিলো আলিফা। এটাই সবচেয়ে বড় মুসিবত।আলিফা রেগে ঢোল হয়ে আছে।আরিফ ফোন দিয়েই যাচ্ছে দিয়েই যাচ্ছে।শেষমেষ আলিফা না সইতে পেরে ফোন রিসিভ করে চেঁচিয়ে উঠে,

” কি সমস্যা কেন ফোন দিচ্ছেন?”

আরিফ অসহায় কন্ঠে বললো,

” প্লিজ আলু আমার জান একবার গার্ডেন এরিয়ায় আসো।”

আলিফা শব্দ করে বলে উঠে,

” আসবো না কখনোই আসবো না।”

” আসবে না সত্যি?”

” হ্যা! ”

” সিয়র! ”

” হ্যা হ্যা হ্যা!”

পরক্ষনেই কিসের যেন একটা তীব্র শব্দ পেয়ে কেঁপে উঠে আলিফা।আৎকে উঠে বলে,

” এই আরিফ কি করেছেন আপনি?আরিফ! হ্যালো শুনছেন?”

আরিফের কোন শব্দ না পেয়ে আলিফা কেঁদে দেয়।দ্রুত গায়ে উড়না জড়িয়ে নিয়ে একদৌড়ে বাগানে চলে যায় এদিক সেদিক তাকিয়ে দৌড়ে দোলনার কাছে গিয়ে দেখে আরিফ দোলনায় বসে আছে।আর আলিফার দিকে তাকিয়ে মিটমিটিয়ে হাসছে।আলিফা একমুহূর্ত দেরি না করে আরিফের কলার ধরে টেনে দার করিয়ে আরিফের বুকে ইচ্ছামতো কিলঘুসি দিতে লাগলো।আর বলছে,

” অসভ্য আপনি! খুব খুব খুব খারাপ।”

আরিফ দ্রুত আলিফার দুহাত ধরে নিলো নিজের হাতের মুঠোয় বলে,

” আরে কি করছো? আমি তো মরে যাবো।”

আলিফা কান্নাচোখেই হিচঁকি দিয়ে বলতে লাগে,

” আবার বলছেন এইসব কথা আমি মরে গেলেই……উম্মম্ম!উম্মম্ম!”

আলিফা আর কিছুই বলতে পারলো না তার আগেই আরিফের উষ্ম ঠোঁটজোড়া চেপে ধরে আলিফার সেই নরম ঠোঁটে। ভালোবাসায় মাখামাখি হয়ে যাক দুটো মানুষ।একে অপরের সাথে সারাজীবনের জন্যে বেধেঁ যাক ভালোবাসার মায়ায়।
.
আজ সাদুদের বাসায় এসেছে মনির আর নূর।আলিশা তো এইখানেই থাকে।নিবিড় আলিশার রুমে এসেছে একটু প্রেম করবে বলে।কিন্তু এই মেয়ে ওকে পাত্তাই দিচ্ছে না।সেই যে ওয়াসরুমে ঢুকেছে আর খবর নেই।নিবিড়ের অপেক্ষা শেষে আলিশা বেড়িয়ে আসে।আলিশার দিকে তাকাতেই নিবিড় হা করে তাকিয়ে রইলো আলিশার দিকে।ব্লাক ধুতি স্যুটে এতো সুন্দর লাগছে মেয়েটাকে যে নিবিড় চোখ সরাতে পারছে না।এইদিকে নিবিড় কে নিজের রুমে দেখে আলিশা তেড়ে গেলো নিবিড়ের দিকে।দু কোমড়ে হাত রেখে বলে,

” আপনি আমার রুমে কি করছেন?”

নিবিড় ঘোরলাগা গলায় বলে,

” আমার সামনে দাঁড়ানো এক মারাত্মক সুন্দরীকে দেখছি।”

ওমনি আলিশা ফুসস! এমনিতেই সচরাচর নিবিড়ের মুখে রোমান্টিক কথা শুনেনা আলিশা।শুনেনা বলতে আলিশাই বলতে দেয় না।কিন্তু যখন একটু আলিশার প্রসংশা করে আলিশা লজ্জায় টমেটো হয়ে যায়।আজও তার বেতিক্রম হলো না।আলিশা নিজের লজ্জা ঢাকতে ড্রেসিংটেবিলের সামনে চলে যায়।আয়নার সামনে বসে নিজের চুল আঁচড়াচ্ছে।কিন্তু আঁড়চোখে নিবিড়ের দিকে ঠিকই তাকাচ্ছে।লোকটা কিভাবে তাকিয়ে আছে। আলিশা চোখ সরালো।লোশন নিয়ে নিজের হাতে মাখতে লাগলো।নিবিড় মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থেকে আসতে আস্তে এগিয়ে গেলো আলিশার কাছে।আলতো হাতে আলিশার পিঠের চুলগুলো সরিয়ে দিলো।হাতের স্পর্শে আলিশার শরীর কেঁপে উঠে।কাঁপা কাঁপা দৃষ্টিতে তাকায় আয়নার মাজে নিবিড়ের দিকে।নিবিড় আলিশাকে ধরে দাড় করালো ঠিক সেইভাবেই আলিশার কাঁধে নিজের থুতনী রেখে হালকা আওয়াজে বলে,

” তোমাকে আমার কাছে নেশা মনে হয় একধরনের নেশা।যে নেশা আমার কাছে সকল নেশার কাছে ফিকে মনে হয়। এ কি হলো আমার বলো তো?”

আলিশা মাথা নিচু করলো।ঠোঁটগুলো দাঁত দিয়ে চেপে ধরে আছে।নিবিড় এইবার আলিশার কানের কাছে মুখ নিয়ে ফিসফিস করে বলে,

” আই লাভ ইউ আলিশা! আই লাভ ইউ আ লট।”

আলিশা চট করে পিছনে ঘুরে ঝাপ্টে ধরলো নিবিড়কে।এই একটা উপায়ই শুধু নিজের লজ্জা সংবরন করার।নিবিড় ও হালকা হেসে আলিশাকে নিজের সাথে আরো নিবিড়ভাবে জড়িয়ে নেয়।এই মেয়েটা যতোই তেজ দেখাক না কেন?নিবিড়ের ভালোবাসায় ও নেতিয়ে পরে একদম।এইটাই তো ভালোবাসা।আর নিবিড় ভালোবাসে তার প্রেয়সীকে।

.

নূর রুমের মাজে পাইচারি করছে।কি করবে কি-না করবে ভেবে পাচ্ছে না সে।আফরান তাকে একেরপর এক মেসেজ দিয়ে যাচ্ছে ছাদের যাবার জন্যে।কিন্তু সে কিভাবে যাবে?তার যে আফরানের সামনে যেতে লজ্জা লাগে।কি হলো নূরের?যে মেয়েটা পায়ে পা লাগিয়ে ঝগড়া করে আজ সে ভয়ের চোটে সামনেই যেতে চাইছে না।আচ্ছা! এটা আসলেই কি ভয়?না-কি লজ্জা? সেদিন আচমকা ‘ আপনি আমার ভালোবাসা।’ কথাটা আফরানকে বলার পর থেকে নূর না পারতে আফরানের সামনে আর যাইনি।আর ঢাকা ব্যাক করার পর তো একেবারেই যায়নি।এইজন্যেই আফরান তাকে মেসেজ করছে নূর সেটা ভালো করেই জানে।ওর ভাবনার মাজে আবার একটা মেসেজ আছে।নূর কাচুমাচু হয়ে মেসেজ টা ওপেন করেই দেখে,

” জাস্ট পাঁচ মিনিট দেবো এর মাঝে না আসলে আমি তোমার রুমে চলে আসবো।আর আমি তোমার হবু স্বামি তাই আমি আসতেই পারি এতে কেউ কিছু বলবে না।সো কাম ফাস্ট।”

নূর মেসেজটা পরে শুকনো ঢোক গিললো।এই লোকটাকে ও দিনদিন যে কেন এতো ভয় পায় ভেবে কুল পায় না ও।কি আর করার।রুম থেকে বের হয়ে ছাদের দিকে হাটা ধরলো নূর।ছাদে গিয়ে চারপাশ তাকালো নূর।কিন্তু কোথাও আফরানকে দেখতে পাওয়া গেলো না। আশ্চর্য লোকটা ওকে মেসেজ দিয়ে এখন নিজে হাওয়া হয়ে গিয়েছে?যাজ্ঞে নূরের জন্যেই ভালো হয়েছে।এখন আর আফরানের সামনে যাওয়া লাগবে না।নূর মনের সুখে যেই পিছনে ঘুরলো দেখে আফরান বুকে হাত বেধে দেয়ালে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।নূরকে এইভাবে তাকাতে দেখে মুচঁকি হেসে বলে,

” তো ম্যাডামের এখন আসার সময় হলো?”

নূর এদিকসেদিক তাকাচ্ছে।নূরকে এইরকম করতে দেখে আফরান আবার বললো,

” লাভ নেই! তুমি পালাতে পারবে না।এতোদিন যা যা করেছো তার শাস্তি তোমাকে পেতে হবেই।”

নূর ঢোক গিলে নিলো একের এক।আচমকা কোন কিছু চিন্তা না করেই চোখ মুখ খিচে দৌড় দিতে চায় কিন্তু পারে না।তার আগেই আফরান ওর হাত ধরে হেঁচকা টানে দেয়ালের সাথে মিশিয়ে নেয়।নূর ভয়ে আতংকে চোখই খুলছে না।আফরানের শীতল কন্ঠে,

” চোখ খুলো!”

নূর খুললো না।আফরান এইবার ধমকে উঠে,

” চোখ খুলো!”

নূর ভয়ে দ্রুত চোখ খুলে নিলো।আফরানের দিকে তাকালো।আফরানের চোখে আকুলতা।সেই আকুলতায় আরষ্ট হয়েই আফরান করূন কন্ঠে বলে,

” নূর তুমি কি হ্যাপি না?যে আমার সাথে তোমার বিয়ে ঠিক হয়েছে?আচ্ছা! প্রোবলেম নেই তুমি যদি আমাকে বিয়ে করতে না চাও সমস্যা নেই।আমি তাহলে মানা করে দিবো।কারন জোড় করে কোন সম্পর্ক আমি করতে চাই না।আমি তোমাকে ভালোবাসি।কিন্তু এটা নয় যে আমি তোমাকে জোড় করে আমার করে নিবো।সব মানুষেরই নিজস্ব মতামত আছে।তাই আমিও চাইনা তোমার মনের বিরুদ্ধে গিয়ে কিছু হোক।আচ্ছা ভালো থেকো আমি আর জোড় করবো না তোমাকে।আর ডিস্টার্ব ও করবো না।ভালো থেকো আসি।”

আফরান নূরকে ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে নিতেই আফরানের হাত নূর টেনে ধরে।আফরান চমকে উঠলো, বিষ্মিত দৃষ্টিতে নূরের দিকে তাকালো।আফরানকে আরো অবাক করে দিয়ে নূর আফরানকে জড়িয়ে ধরে ওর বুকে মুখ খুজে দেয়।আফরান টু শব্দ পর্যন্ত করলো না।শুধু বিষ্ময় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।নূর বললো,

” সব কিছু কি মুখে বলতে হয়?আপনি বুজেন না আমার মনের কথা?আমার চোখের ভাষা?আমি যে আপনাকে ভালোবাসি আপনি বুজেন না?মুখে বলেই কেন ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ কর‍তে হবে?নিজের অন্তর দিয়ে।”

আফরানের ঠোঁটে চওড়া হাসি ফুটে উঠলো। এইটাই তো চেয়েছিলো সে।আজ সে সফল হয়েছে নিজের প্রিয়তমার মুখে ভালোবাসি কথা শুনে।
আফরান পরম আবেশে চোখ বুজে নিয়ে নূরকে জড়িয়ে নিয়ে বলে,

” ভালোবাসি আনন্দিতা অনেক বেশি ভালোবাসি।”

.

সাদুর রুমের ব্যালকনিতে বসে আছে মনির আর তার কোলে বসে চন্দ্রবিলাশ করছে সাদু।সাদু মুগ্ধ দৃষ্টিতে চাঁদ দেখছে আর মনির সে তো নিজের নিজস্ব চাঁদকে দেখতে ব্যস্ত।সাদু উচ্চাস্বিত কন্ঠে বলে,

” দেখুন চাঁদটা কি সুন্দর তাই না?”

মনির সাদু’র দিকে তাকিয়ে থেকেই বলে,

” হ্যা! ভীষন সুন্দর।”

সাদু তাকালো মনিরের দিকে।লোকটা তাকে দেখছে তাহলে চাঁদ সুন্দর এটা কেন বললো?সাদু ভ্রু-কুচকে বলে,

” আপনি আমাকে দেখছেন তাহলে না দেখেই কিভাবে বললেন?”

মনিরের চোখজোড়া সাদুর সারা মুখের বিচড়ন করছে।জবাবে সে বলে,

” দেখছেই তো এইযে আমার কোলে অবস্থানরত চাঁদটাকে দেখছি।এই চাঁদ যে ভীষন সুন্দর।”

সাদু লজ্জা পেয়ে মুখ ঘুরিয়ে নিলো।লোকটা খালি তাকে লজ্জা দেয়।মনির সাদুর গালে স্পর্শ করে।সাদু কেপে উঠে।এই লোকটার প্রতিটা স্পর্শ কাঁপন ধরানো।মনির সাদুর ঘাড়ের কাছের চুলগুলো সরিয়ে দিয়ে বলে খুব গভীর এক চুমু খেলো।সাদুর যেন নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে যাবার উপক্রম।লোকটা কি ওকে মেরে ফেলতে চাইছে না-কি?মনির ফিসফিসিয়ে বলে,

” আমার এই সামান্য স্পর্শে তোমার এই অবস্থা না জানি বাসর রাতে কি হয় তোমার?সো স্যাড উম্মি! তুমি তো শেষ।”

সাদু মুখ চেপে ধরলো মনিরের।দৃষ্টি নত রেখেই বলে,

” আপনার এই অসভ্য কথাবার্তা বন্ধ করবেন?”

মনির চুমু খেলো সাদুর হাতে। সাদু হাত সরিয়ে নিলো।সাদু সরু চোখে তাকিয়ে আছে।মনির দুষ্টু হাসলো।আঙুলগুলো নিজের ঠোঁটে স্পর্শ করে বুজালো ওর ঠোঁটে কিস করতে।সাদু চোখ বড়বড় করে তাকালো।মনির বাচ্চাদের মতো ঠোঁট উলটে বলে,

” তুমি অনেক কিপ্টে উম্মি।আমাকে একটুও আদর দিতে চাওনা।”

সাদু হেসে ফেললো মনিরের কথায়।খিলখিল করে হাসছে সাদু আর মনির তার চোখ দিয়ে প্রাণ জুড়িয়ে সেই দৃশ্য দেখলো।মনির বলে,

” বেশি কিছু না তোমার এই হাসির ঝংকারগুলো আমার হৃদয় কাঁপাতে যথেষ্ট।”

সাদু চটজলদি ঝাপিয়ে পড়ে মনিরের বুকে।দুহাতে জড়িয়ে ধরলো নিজের স্বামিকে।এই লোকটা তার স্বামি। হ্যা! স্বামিই তো! তাও আবারও বিয়ে করবে তারা।আবার ওর পাঁচ বেস্টুর একসাথ বিয়ে হবে।ইসস! কি সুন্দর হবে!
সাদু মনিরের বুকে মাথা রেখেই বলে,

” আমাদের আবার বিয়ে হবে। তাও একসাথে পাঁচ পাঁচটা বিয়ে একসাথে। ওয়াও! দারুণ মজা হবে।”

মনির দুষ্টু কন্ঠে বলে,

” হ্যা! আমি শুধু আমাদের ফার্স্ট নাইট নিয়ে অনেক এক্সাইটেড।”

সাদু মনিরের বুকে চিমটি কেটে দিলো।মনির ব্যাথাতুর আওয়াজে বলে,

” আওউ! আস্তে দে না রে ব্যাথা লাগে তো!”

” তাহলে এইসব অসভ্য কথা বার্তা কেন বলেন?”

” তোকে দেখলে আমার মুখটা এমনেই অসভ্য হয়ে উঠে।অবশ্য বউয়ের কাছে একটু আধটু অসভ্য হলে সমস্যা নেই।বউটা তো আমারই তাই না?”

মনিরের প্রতিটা বার যতোবার ‘ বউ ‘ ডাকে অদ্ভূত প্রশান্তিতে হৃদয়টা ভরে উঠে ওর।এই জীবন কেন পরকালেও সে মনিরকে চায় তার স্বামি রূপে।এই লোকটা একেবারে তার নিশ্বাসে প্রস্বাশে মিশে গেছে।সাদু বিরবির করে বলে,

” আপনার ভালোবাসায় আমি সব সময় নিজেকে রাঙিয়ে চাই।আপমার উষ্ম সোহাগে নিজেকে হারাতে চাই।আপনি আমার ভালোবাসা। আমার ভালোবাসা, আমার ভালোবাসা।”

মনির সাদুর প্রতিটা কথাই শুনেছে।মনির পরম যত্নে ভালোবেসে সাদুর কপালে ঠোঁটের স্পর্শ দিলো।বলতে লাগলো,

“ধূসর বিকেল হলেই তুমি থাকবে চায়ের কাপে
ক্লান্তিগুলো রাখবে ঢেকে জটিল সকল চাপে!
দুঃখগুলো রাখব দূরে উড়িয়ে সুখের ঘুড়ি,
শক্ত হাতে ধরব লাটাই খেলব লুকোচুরি!
রাত্রি ছুঁয়ে জোছনা মেখে ঘুমহারানো চোখে
এক পলকে থাকব চেয়ে কেবা মোরে রোখে।
একটু পরেই রাত্রিটাকে ছিনিয়ে নেবে কেউ
মনের উঠোন ভরে আছে এক সমুদ্র ঢেউ।
ফুলের বনে মৈামাছি হয়ে ঘুরবে কুসুম গলি
জেনে রেখ তুমি আমার প্রথম ফোঁটা কলি।
হূদয়পুরে নামছে শ্রাবণ বইছে অঝোরধারা,
কেমন করে বাঁচব বল এই তোমাকে ছাড়া!
আমার #ভালোবাসার_রঙে_রাঙাবো ওগো প্রিয়তমা।”

এইভাবেই একে অপরের ভালোবাসার রঙে রঙিন হয়ে উঠুক সবার মন।আজীবন যেন সেই রঙেতে মাখামাখি হয়ে থাকুক তারা।সারাজীবন বেঁচে থাকুক সেসব ভালোবাসা।

_________সমাপ্ত___________

ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।