ভালোবাসার_অভিনয় পর্ব-৪২ এবং অন্তিম পর্ব

0
3803

#ভালোবাসার_অভিনয়
#Anuridhi_Rahman
#পর্ব ৪২

রেদ-চিন্তা করো না কিছু হবে না আমি আছি তো আর থাকবো,,,,,

রেদ পরীকে নিয়ে সোজা পরীর বাড়ি গেলো সেখানে যেয়ে দেখে নিলয় বেল বাজাচ্ছে বাড়ির,,,,পরী ভয় এ শেষ নিলয় এর জন্য নয় রেদ এর কাজ দেখে,,,,,

দরজা খুললেন মামিমা আর,,,,,
.
.
.
.
.
.
.
.
.
পরী নিজের মায়ের কোলে শুয়ে রয়েছে আর তৃনা পরীর মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে,,,,তখনি আনিল রুমে ডুকে বলল-মা তুমি এখনো ঘুমাওনি কাল কতো কাজ আছে ভুলে গেছো,,,,

তৃনা-কিছু ভুলিনি তাইতো পরীর সাথে আছি কাল তো সময় পাবো না,,,,,

আনিল-আমি কী দোষ করলাম তাইলে,,,

পরী হেসে বলল-এই দিকে আয় ডান পাশ খালি আছে,,,

আনিল হেসে ডান পাশে শুয়ে পরে আর বলে-আপি কাল তুমি কাল বউ সাজবে তাইনা,,,,

পরী-আমার বিয়ে আমি বউ সাজবো না তোহ তোর জিএফ বউ সাজবে নাকি,,,

আনিল-আমার কোনো জিএফ নাই,,,

পরী-তাহলে হলুদ এর সময় কাকে হলুদ লাগাচ্ছিলে এতো আদর করে,,,,

পরীর কথা শুনে তৃমা বলল-আনিল পরী কী বলছে এসব,,,

আনিল-না মানে আসলে,,,,

পরী-থাক মা সময় হলে আমি জানিয়ে দেবো সব,,,,

এভাবে আর কিছুক্ষন তৃনা আর আনিল পরীর পাশে থাকে তারপর চলে যায়,,,তখনি পরীর ফোন বেজে উঠলো,,,,পরী ফোনটা নিয়ে বারান্দায় চলে যায়,,,,

পরী-হ্যালো,,,,

রেদ-পরী নিলয় কনফ্রেস কল এ আছে,,,

নিলয়-ডিস্টাব করলাম লাভবার্ড দের,,,,

পরী-একদম না ঠিক আছে,,,,

নিলয়-হুম ঠিক আছে কিডন্যাপার এর বউ,,,,

পরী-দেখো রেদ তুমার বউকে কী নামে ডাকছে,,,

রেদ-ভাই আর এই নামে ডাইকেন না নাইলে পরে আমার ছেলে মেয়ে ও আমার বউকে এই নামে ডাকবে,,,,

পরী-রেদ তুমি ও,,,,

নিলয় আর রেদ হেসে দিলো পরী তাদের হাসি শুনে নিজে ও হেসে দিলো,,,,

নিলয়-পরী সাবধান তুমার জামাই কিন্তু খুব ভালো কিডন্যাপার,,,সেদিন আমাকে যেমনে কিডন্যাপ করলো,,,,কেনো ভুলে গেলে সেদিন এর কথা

সেদিন পরী আর রেদ যখন এসে দেখে নিলয় বলে বাঝাচ্ছে তখন রেদ কিছু না বলে সোজা রুমাল দিয়ে নিলয় এর মুখে চেপে কিছুটা দূরে সরে গেলো,,,,

মামি মা দরজা খুলে দেখলো পরী দরজা থেকে কিছুটা দূরে ভুত দেখার মতো চমকে দাড়িয়ে রয়েছে,,,,

মামি মা-কিরে পরী এভাবে কে দাড়িয়ে রইলি ভেতরে আয়,,,

পরী বাড়িতে ডুকে যায় আর রেদ নিলয় কে নিয়ে নিজের গাড়িতে নিলয় যখন চোখ খুলে তখন রেদ নিলয় এর দিকে তাকিয়ে হাসছিলো,,,,

পরে রেদ নিলয়কে সব খুলে বলে তা শুনে নিলয় আর কিছু বলে না বাট পরীর পুরো অতিত যা নিলয় জানে তা রেদকে বলে,,,,,

নিলয় এর এই বেপারটা রেদ এর বেশ ভালো লাগে,,,,

পরী-হয়েছে হয়েছে আমি ঘুমাবো কাল আমার বিয়ে এখন না ঘুমালে চোখের নিচে ডার্কসার্কাল পরে যাবে,,,,

রেদ-পরী পরী শুনো,,,,ভালোবাসি,,,,

পরী-রেদ নিলয় শুনছে,,,,,

নিলয়-আমি কিছু শুনিনি,,,,

পরী-ভালেবাসি–রেদ,,,,

বলে পরী ফোন কেটে দিলো আর আকাশ এর দিকে তাকিয়ে বলল-এখন আমি শুধু রেদ এর কাল আমরা ৩জন এক হয়ে যাবো বেবি কাল আমরা এক ফ্যামেলি হয়ে যাবো,,,,

নিলয় ও ফোন রেখে দেয় পিছন ফিরে দেখে রুবি আর তার ছেলে ঘুমিয়ে আছে,,,,আজ যদি সে রুবিকে বিয়ে না করতো পরী তার পাশে থাকতো,,,,,

এটা ভেবে নিলয় আকাশ এর দিকে তাকিয়ে রইলো,,,রেদ ফোন রেখে আকাশ এর দিকে তাকিয়ে বলল-কাল আমরা আবার এক হয়ে যাবো,,,তুমি আমি আর আমাদের বেবি,,,,

তিন জন এক আকাশের দিকে তাকিয়ে রইছে,,,২জন ভালোবাসা পাওয়ার খুশিতে আর একজন ভুল সুধরানোর আশায়,,,,

সকাল থেকে বাড়িতে মেহামান এর আনাগোনা সবাই কাজ এ ব্যস্ত,,, মীম এখনো আসেনি,,,, বেচারি হানিমুনে গিয়ে খবর পেয়েছে পরীর বিয়ে,,,,

মীম আর আয়ান সকাল এ কল করে বলেছে তারা ফ্লাইট এ উঠবে ৭ টায় এখন ১১ টা বাজে এতোক্ষন এ হয়তো দেশে এ চলে এসেছে,,,,যে কোনো সময় চলে আসবে এখানে,,,,,

পরীর হলুদ এর গোসল শেষ পার্লার থেকে ২জন মেয়ে এসেছে তাদের নাকি রেদ এর দিদা পাঠিয়েছে,,,,সাথে বিয়ের লেহেঙ্গা গহনা আর যা যা লাগবে তা পাঠিয়ে দিয়েছে,,,,,

পরী মীম এর অপেক্ষা করছে মীম আসলে সে তার বিয়ের লেহেঙ্গা আর গহনা ছুবে না,,,,

১১:৪৮ এ মীম বাড়িতে পৌছায় সোজা পরীর রুমে দৌড় দেয়,,,মীম সোজা গিয়ে পরীকে জরিয়ে ধরে পরী ও খুশিতে গদগদ হয়ে যায়,,,,,

ঠিক ১২ টা বাজে পরীকে সাজাতে বসানো হয়,,,,২টা বাজে পরীকে নিয়ে সবাই সেন্টার এ পৌছালো পরীকে একটা রুমে রেস্ট নিয়ে গেলো,,,

পরীর পাশে মীম বসে রয়েছে পরীর অস্থির লাগছে এতো ভারি লেহেঙ্গা গহনা পরার অবভাস নেই,,,,

মীম-করে তর কী খারাপ লাগছে,,,

পরী-এক গ্লাস লবুর সরবত এনে দে না বেশি করে লবু দিয়ে,,,,,

মীম-ওকে তুই বস আমি আসছি,,,,

তখন পরীর কাছে পরীর মা এলো আর তাকে একটা রুমাল দিয়ে বলল-পরী রুমাল টা তোমার কাছে রাখো,,,খারাপ লাগলে এটার খুসবু নিয়ে দেখবে ভালো লাগবে,,,,,

পরী-ঠিক আছে মা,,,,

তৃনা চলে গেলো মীম সরবত এনে দিলো,,,,পরী সরবত খেয়ে কিছুটা ভালো লাগছিলো,,,,একটু পরে বাইরে হট্ট গোল শুনা গেলো বর এসেছে,,,,

মীম এর ইচ্ছে ছিলো যাওয়ার বাট পরী যেতে দেয়নি,,,,,কিছুক্ষন পরে পরীকে নিয়ে যাওয়া হয়,,, পরী কে দেখে রেদ ক্রাশ খেলো,,,,তার বউ একদম পরী,,,,

পরী একটা সবুজ আর সাদা রং এর লেহেঙ্গা পরেছে,,,সবুজ লেহেঙ্গায় সাদা স্টোন এর এর কাজ করা,,,,,ওপরের পার্ট সাদা রং এর আর ওরনা সবুজ রং এর,,,

পরীর ইচ্ছে ছিলে পাকিস্তানি দের মতে বিয়ের কনে সাজবে আর তার বর ও তার মত মেচিং করে সাজবে,,,,

রেদ সবুজ শেরওয়ানি পরেছে সাদা চুরি পাজামা আর সাদার মতো সবুজ স্টোন এর কাজ করা পাগরি পরেছে,,,,

দুজনের মাঝে একটা সবুজ ওরনা টানানো বিয়ে পরানো শুরু হলো,,,, বিয়ে শেষ হতেই চারদিক দিয়ে সবাই গোলাপ ফুল ছিটাতে লাগলো,,,,,,

সন্ধ্যা ৭টায় পরীর বিদায় হলো রেদ এর বাড়ি পৌছাতে ৭:৩০ টা বেজে গেলো,,,বাড়িতে সবাই খুব সুন্দর করে তাদের দুজনকে সাগতম করে,,,,,

সব নিয়ম শেষ করে পরীকে ১০ টা বাজে রেদ এর রুমে দিয়ে আসে,,,,পরী তারাতরি নিজের বেগ থেকে একটা শাড়ি নিয়ে বেড এ বসে পরে,,,,

পরী-ধুর এখন কী করি শাড়িতো পরতেই পারি না,,,,আর ৩পিস ও তো নেই এখানে,,,,

রেদ দরজায় দাড়িয়ে পরীকে দেখছে আর হাসছে,,,,পরী সব গহনা খুলে টেবিলে রেখে দিয়েছে,,,,

পরী ওয়াস রুমে শাড়ি নিয়ে চলে গেলো রেদ রুমে ডুকে শেরওয়ানি খুলে একটা সাদা পাঞ্জাবি পরে বেড এ বসে পরীর অপেক্ষা করতে লাগলো,,,

পরী লেহেঙ্গা খুলে ব্লাউজ পেটিকোট পরে শাড়ি কোনো রকম পেচিয়ে রুমে ডুকে রেদ পিছন খুরে পরীকে দেখে হেসে দিলো,,,,

রেদ-তুমি এখনে শাড়ি পরতে শিখলে না,,,,

পরী-একটু হেল্প করবে তা না খোটা দিচ্ছে,,,,

রেদ পরীর কাছে গিয়ে পরীর শাড়ি খুলে তাকে সুন্দর করে পরিয়ে দিয়ে বলে এটা সেই শাড়ি না যেটা আমি দিয়েছিলাম,,,,

পরী-হ্যা,,,,,এক মিনিট কী বললে তুমি,,,,

রেদ পরীকে নিজের কাছে টেনে নিয়ে এসে পরীর কাধে মুখ ডুবিয়ে বলে-কারন বউকে বেশিক্ষন ভুলে থাকা যায় না,,,

পরী-তার মানে,,,,

রেদ-হুম সব মনে পরে গেছে আমার আমি আমার পরীর সাথে কাটানো সবব স্মিতি ফিরে পেয়েছি,,,,

পরী রেদকে জরিয়ে ধরে কেঁদে দিলো রেদ ও পরীকে জরিয়ে ধরে বলল-ভালোবাসি পরী,,,,

পরী-খুব ভালেবাসি রেদ খুব,,,,

৪বছর পর,,,,,

পরী-রেদ আকাশি কোথায় তোমরা,,,, আজ তোমাদের খবর আছে,,,,কী করেছো আমার বেড রুমের,,,,

রেদ আর আকাশি বেড এর নিচে লুকিয়ে রয়েছে আর মিট মিট করে হাসছে,,,পরী দেখলে খাটের নিচে রেদ এর পা দেখা যাচ্ছে,,,,

পরী-রেদ তুমি বাইরে আসবে নাকি আমি আলমারি থেকে আকাশির সব খেলনা অন্য কাওলে দিয়ে দিবো,,,,

আকাশি খাট এর নিচ থেকে বের হয়ে বলল-মামুমি না প্লিজ দিওনা,,,,

আকাশি বের হতেই রেদ ও বের হয়ে আসলো পরী আকাশির কান ধরে বলল-কী করেছো এগুলো হ্যা,,,

রেদ-আসলে পরী আমরা না একটা বিড়াল খুজছিলাম,,,

পরী-তা বিড়াল টা কোথায় শুনি,,,,

আকাশি-মামুনি ফুর হয়ে গেছে,,,,

পরী বেড এ বসে পরলো আর বলল-তোমরা আমাকে এতে না জালালে ভালো লাগে না,,,

আকাশি আর রেদ পরীকে জরিয়ে ধরে বলে-সরি মামুনি,,,

পরী-রেদ তুমিও,,,,

আকাশি আর রেদ আবার বলল-we love you mamuni,,,

পরী-love you to both,,,,

তিনজন একসাথে হেসে দিলে রেদ আর আকাশি পরীকে জরিয়ে ধরলো,,,,,,

সমাপ্তি

বিদ্র-সব সময় পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ,,,,