ভালোবাসা তেতো পর্ব-১৩

0
442

#ভালোবাসা_তেতো
#part_13
#sarika_Islam



সেখানেই দুইদিন কাটালাম,,বেশ মজাই করালাম,,আর সাজেক ঘুরাও পুর্ন হলো,,

আজ আমরা কক্সবাজার যাবো,,উফফফ আমার তো বেশ মজা লাগছে,,শুধু ঘুরছি আর ঘুরছি,,,বাসে উঠলাম,,,বেশ কতক্ষনে আমরা পৌছে গেলাম,,বাস থেকে নেমে হোটেলে গেলাম,,সেখানে ফ্রেশ হয়ে রেস্ট নিলাম,,এই কয়দিন অনেক ঘুরেছি একটু রেস্ট নিয়ে নেই বাবাহ,,বিকেলের দিক দিয়ে আমাদের ঘুম ভাংলো,,

_ফারাহ উঠো,,ঘুমিয়েই দিন কাভার করে দিবা নাকি?
_উমমমম,,

ইয়াদ আমাকে ঘুম থেকে বসিয়ে দিল,,আমি ঘুম ঘুম চোখে ইয়াদের দিকে তাকিয়ে তার বুকে ঢলে পরলাম,,

_এইযে,,এভাবে মরার মতো ঘুমিয়ে থাকলে কিন্তু আমরা চলে যাবো,,
_এই নাহ নাহ,,

বলেই লাফ দিয়ে উঠলাম,,ইয়াদ আমার এরুপ দেখে হেসে দিল,,

_আপনি অনেক খারাপ,,,

মুখটা কালো করে নিয়ে উঠে গেলাম,,ইয়াদও উঠে গেল,,আমরা ফ্রেশ হয়ে বেরুলাম,,আজ আকাশ টা অনেক সুন্দর,,, মেঘলা আকাশ,,কিন্তু বৃষ্টি পরলো না,,,আমরা সমুদ্রের পার দিয়ে হাতে হাত রেখে হাটছি,,খুব মজাই লাগছে,,আমি জুতা খুলে হাটছি আর তা ইয়াদের হাতে হিহি,,আমি হাটিতে হাটতে বললাম,,

_আসেন আমরা এখানেই সেটেল হয়ে যাই,,
_কেন?
_কেন কি দেখেন না কত সুন্দর জায়গা,,
_হুম শুধু ঘুরাবার জন্যই পার্ফেক্ট থাকার জন্য না,,
_কেন?
_এখানে ঘুরতে আসবা মজা করে আবার চলে যাবা,,থাকতে থাকতে ভালোলাগবে না,,
_হুম তাও বটে,,

আমরা হাটছি,,,মাঝে মাঝে সমুদ্রের পানির স্রোত এসে পা ভিজিয়ে আবার চলে যায়,,জিনিসটা আমি বেশ উপভোগ করছি,,আমি ইয়াদকে একটা স্টোল দেখিয়ে বললাম,,

_চলেন ওইখানে যাবো,,

বলেই হাত ধরে টান দিয়ে দৌড় দিতে লাগলাম,,

_আরে আস্তে আস্তে,,

আমরা সেখানে আসলাম,,ইয়াদ হাপিয়ে গেল,,হাপাতে হাপাতে বলল,,

_এভাবে কেউ টান দেয়?আস্তে আস্তে আসলেই তো পারতা,,
_টান না দিলে দৌড়াতেন না আর না দৌড়ালে হাপাতেন না আর না হাপালে মজাই পেতেন না,,

আমিও হাপাতে হাপাতে বললাম,,আমার কথা শুনে ইয়াদ হেসে আমার মাথায় হাল্কা ধাক্কা দিল,,আমিও হেসে ফেললাম,,,

_এখন বলো কি খাবা?
_কাকড়া,,
_এটা খাবারের জিনিস হলো?
_তাহলে কি ফালানের জিনিস?
_আচ্ছা বাবা চলো,,

আমরা ভিতরে ঢুকলাম,,ছোট খাটো একটা রেস্টুরেন্ট এইটা,,আমরা কাকড়া আরো আজগুবি খাবার অর্ডার করলাম,,সেগুলা আসলে খেতে মজা না লাগলেও মুখকে মজার মতো করেই বলছি সেই মজা,,কিন্তু ইয়াদ কেমন কেমন করে খাচ্ছে,,পরে কাকড়া টা খাওয়ার সময় বললাম,,,

_এইটার টেস্টই বেস্ট,,
_হুম আসলেই,,

আমরা দুইজন কাকড়া টা বেশ মজা করে খেয়ে নিলাম,,আবার সমুদ্রের পারে গিয়ে হাটছি,,এখন বিকেল শেষ সন্ধ্যা গরিয়ে আসছে,,সু্র্য মামা এখন বিদায় নিবে,,আমি আর ইয়াদ দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে সুর্য মামাকে বিয়াদ দিচ্ছি,,কি সুন্দর একটা দৃশ্য,এত্ত কাছ থেকে সুয্যি মামাকে ডুবতে দেখছি,,ইয়াদের এক হাত জরিয়ে ধরে কাধে মাথা রেখে এই মনরম দৃশ্য উপভোগ করছি বেশ লাগছে,,সামনে হাটতে হাটতে একটা দোকানে ঢুকলাম,,সেখানে শামুকের অনেক কিছু বেচে,,আমাকে ইয়াদ একটা সেখান থেকে লকেট কিনে দিল,, আমাকে ঘুরিয়ে সেটা পরিয়ে দিল,,,লকেট টা বেশ সুন্দর আমার খুব ভালো লেগেছে,,

_সুন্দর?
_হুম,,

আর কিছুক্ষন ঘুরে আমরা আবার হোটেলে বেক করলাম,,সেখানে গিয়ে এখন ভালোলাগছে না,আমি একবার বারান্দায় যাই একবার রুমে আসি,,আমার এখন রাতের কক্সবাজারটা দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে,,,ইয়াদ আপনমনে ফোন গুতাচ্ছে,,শালা বউ এইখানে ভালোলাগছে না আর সে আরামসে ফোন গুচাচ্ছে,,মন চাইছে ফোনটা আছাড় দিয়ে ভেংগে ফেলি,,,

আমি কোমরে হাত দিয়ে ইয়াদের সামনে গিয়ে দারালাম,,ইয়াদ তাও মুখ তুলে আমার দিকে তাকাচ্ছে না,,উফফ অসহ্য,,আমি তার হাত থেকে ফোনটা নিতে নিব সে ধরে ফেলে,,

_আমি জানতাম তুমি এমন কিছুই এট্যাক করবে তাই আগের থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছি,,হিহি,,

বলেই দাত কেলানো হাসি দিল,,আমার এখন তার এই দাত কেলানো বড্ড বিরক্ত লাগছে,, আমি বিরক্ত মাখা মুখ নিয়ে তার দিকে তাকিয়ে বললাম,,

_বাহ বাহ বেশ ভালো,,ব্রাবো,,

বকেই তার কাধে জোরে জোরে থাপ্পর মারলাম,,ইয়াদ কাধ সরিয়ে সেখানে ডলতে ডলতে বলল,,

_উফফ ফারাহ এত্ত জোরে কেউ ব্রাবো দেয়?
_হুম আমি দেই,,(দাতে দাত চেপে)

ইয়াদ উঠে আমার মুখের বরাবর দাঁড়িয়ে আমার হাত ধরে চুমু দিয়ে বলল,,,

_আমার মিষ্টি বউটা রাগ করে আছে কেন?
_আমি বাহিরে যাবো,,রাতের দৃশ্য দেখবো,,(ঠোট উল্টিয়ে বললাম)
_ ওলে শুধু এতটুকু,,(বলেই আমার গাল টেনে দিল)
_হুম,,
_তাহলে চলো যাওয়া যাক,,,
_ওয়াও,

বলেই লাফিয়ে উঠলাম,,ইয়াদ হেসে আমার এক হাত শক্ত করে ধরে সেখানে চুমু খেল,,তারপর আমরা বেরুলাম রাতের দৃশ্য দেখতে,,আমরা হোটেল থেকে বাহিরে আসলাম,,রাতে চাদের আলোতে সমুদ্রের পানি গুলো দিনের থেকে বেশি সুন্দর লাগছে,,আমি আর ইয়াদ পানির স্রোতের সাথে খেলছি,,ঢেউ একবার সামনে আসলে আমরা পিছাই,,আর ঢেউ পিছালে আমরা সামনে যাই,,এভাবে খেলতে বেশ ভালোই লাগছে,,অনেকক্ষন এমন করে বেশ অস্থির হয়ে পরলাম,,সেখানের বালুতেই বসে পরলাম,,

সেখানে শুয়ে পরলাম,,ইয়াদের হাতে মাথা রেখে,,উপরে আকাশ নিচে আমি আর ইয়াদ সমুদ্রের ধারে শুয়ে আছি,,কি যে শান্তি,,,মনে হচ্ছে আকাশ টা আমার খুব নিকটে চাইলেই ছুয়ে দিয়ে পারবো,,আকাশে কয়েকটা তারা দেখা দিচ্ছে,,চাদটা বারে বারে মেঘের ভিতর লুকিয়ে পরছে,,আমাদের এভাবে একসাথে দেখে হয়ত লজ্জা পাচ্ছে,,ইয়াদ আকাশের দিকে হাত তুলে বলল,,,

_দেখ তারা গুলো কি সুন্দর জলমল করছে,,
_ওই দেখেন দুটো তারা একসাথে,,একটা আমি আরেকটা আপনি,,

বলেই হেসে উঠলাম,,,

_দেখবা আমিও একদিন সেখানে তার হয়ে জলে উঠবো,,যেটা বেশি জলবে ভাব্বে আমি সেটা,,আর মন খুলে কথা বলবে,,
_এইসব বলবেন না,,তারা হতে যাবেন কেন?আমার কাছেই থাকবেন সারাজীবন আমার পাশে,,,

বলেই কাত হয়ে তাকে জরিয়ে ধরলাম,,ইয়াদও আমাকে শক্ত করে জরিয়ে ধরলো,,

_এভাবেই সারাজীবন বুকে আগলে রাখবো তোমাকে,,
_প্রমিস?
_প্রমিস,,

বলেই আমার মাথায় চুমু খেল,,

_চলো উঠি এখন,,
_হুম,,

বলেই আমরা উঠলাম,,আমরা রুমে গেলাম অনেক টায়ার্ড লাগছে শুয়ে পরলাম,,

কক্সবাজারেও দুইদিন কাটালাম বেশ মজাই লাগলো,,আজ রাংগামাটি যাবো,,সেখানে তো আরও মজা হবে পাহাড়ি পাহাড়,,বাসে উঠলাম,,,রাংগামাটির হোটেলে থাকলাম,,আজ এসেই আমি বললাম,,

_এই এই চলেন পাহাড় উঠি,,
_হুম চলো,,,

বলেই আমরা পাহাড়ে উঠতে লাগলাম,,একদম পাহাড়ের উপরে উঠে ইয়াদ উল্টো হয়ে যেতে যেতে বলছে,,

_ফারাহ আসো আরো কাছে আসো,,এদিকটায় আসো,,
_এই নাহ আপনি এদিকে আসেন,, কিনারায় চলে যাচ্ছেন তো পরে যাবেন,,
_নাহ পরবো না আসো তুমি,,

আমি ভয়ে ভয়ে এগুচ্ছি,, ইয়াদ একদম কিনারায় পৌছে গেছে,,

_ইয়াদ দেখেন সামনে আসেন পরে যাবেন,,,
_নাহ,,

বলেই একটা কিছুর সাথে পা পিছলে পরে গেল,,আমি দৌড়ে গেলাম কাছে,জোরে চিৎকার দিলাম,,,

_ইয়াদদদদদদদদদ,,

চলবে,,
(ভুল ত্রুটিগুলো হ্মমার দৃষ্টিতে দেখবেন🖤)