/গল্প ভালোবাসি তোমাকে /
/লেখক মিঃ আবির মিঃ ভুত /
/Part-4 /
-আজ একটা কথা খুব মনে পড়ছে….
´চাঁদ খুজতে গিয়েছিলাম আধার রাত খুজে পাই -😔সবার আকাশে ওই জোছনা আছে আমার আকাশেই নাই ☺️যাইহোক গল্পে যাওয়া যাক ´….
ওপাশ থেকে খুব চেনা, খুব পরিচিত একটা কন্ঠ ভেসে আসলো।
_ হ্যালো আবির আমি রাইসা ,
_ হুম বলো,
_ দেখো আবির কালকে আমার বিয়ে তাই যা বলছি তা ভালো করে শোনো।
_ আচ্ছা বলো
_ কাল আমার বিয়ে! আর আমি যদি তোমাকে না পাই, তাহলে কেউ আমাকে পাবেনা।
শুধু এই কথাটা মনে রেখো,
_ টুত, টুত, টুত, ফোনটা কেটে গেলো।
_ কথাটা শোনেই যেন আমার মাথার উপর আকাশ ভেঙ্গে পড়লো, সাথে সাথেই আবার সেই নাম্বরে ফোন দিলাম,
_ হ্যালো,
_ আপনি যেই নাম্বারে কল করেছেন,
তা এই মুহূরতে বন্ধ আছে, কিছুক্ষণ পর আবার কল করুন, ধন্যবাদ।
এভাবে প্রায় ১৬ থেকে ১৭ বার কল দিলাম, তবুও ফোন বন্ধ বলছে,
কি করব এখন আমি কিছুই ভেবে পাচ্ছিনা,
রাতের আধারে একা একাই বসে আছি,
ট্যানশনে আজ সারারাত ঘুম আসবেনা তা বুঝতে পারছি,
আবার কল করলাম, কিন্তু এবারো ফোন বন্ধ বলছে।
_ না মাথাটা আর কিছুই কাজ করছেনা, তাই নিজে নিজেই ভাবছি, বিয়েটা কি আটকাবো আবার ভাবছি নাহ আটকাবোনা,
রাইসার যেখানে বিয়ে হচ্ছে
সেখানেই হোক, আর সেখানেই রাইসা অনেক সুখে থাকবে।
কথাটা ভাবতেই চোখের কনে পানি জমে এলো।
_ কারন গরীবদের বিয়ে আটকানোর কোনো ক্ষমতা নেই, ক্ষমতা আছে শুধু লুকিয়ে লুকিয়ে দেখার।
আবার ফোন দিলাম এবারো ফোন বন্ধ বলছে,
আর ভালো লাগছেনা আমার, ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি রাত ২।৪৯ বাজে,
_ এপাশ ওপাশ হাটাহাটি করছি আর ফোন দিচ্ছি, কিন্তু প্রতিবারই ফোন বন্ধ বলছে!
এভাবে ফোন দিতে দিতে একসময় বিরক্ত হয়ে আবার চেয়ারে এসে বসলামা।
আর চেয়ারে মাথাটা হেলান দিতেই কখন যে চোখ দুটো লেগে এসেছে বুজতেই পারিনি।
হটাৎ শুনতে পেলাম কেউ একজন আমার নাম ধরে ডাকছে।
_আবির এই আবির , এতো ঘুমায় নাকি, ওঠো তারাতারি, আরে ওঠো তারাতরি!
_ (চোখ ঘসতে ঘসতে) তুমি এখানে?
_ কেনো অবাক হলে নাকি,
_ হুম।
_ এসো আমার সাথে আরো অবাক করা জিনষ তোমায় দেখাবো।
এইবলে বলে রাইসা আমার হাতটা শক্ত করে ধরে আমাকে টানতে টানতে কোথায় যেনো নিয়ে যাচ্ছ, আর আমিও যাচ্ছি তার সাথে।
কিছুক্ষণ হাটার পর সামনে একটা ঘর দেখতে পেলাম,
_ দাড়াও আবির এখানে দাড়াও,
_ আমিও দাড়ালাম।
সে আমাকে ঘরের ভিতর ঢুকতে বলল,
আমরা দুজনে ঘরের ভিতর ঢুকলাম।
_ দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতেই আমি চমকে উঠলাম,
কারন কেউ একজন সিলিং ফ্যানে জলছে,
মানে গলায় দড়ি দিয়ে আত্নহত্যা করেছে।
_রাইসা আমাকে এখানে কেনো নিয়ে এসেছো, আর কেইবা এটা? পিছন থেকে কোনো সারাশব্দ নেই,
তাই আমি পিছন ফিরে তাকালাম আর পিছন ফিরে তাকাতেই আমি আরো অবাক হলাম!
কারন রাইসা পেছনে নেই।
আমি এতো কিছু না ভেবেই লাশটাকে নামাতে শুরু করলাম, আর লাশটাকে নামিয়ে মাটির উপর শুইয়ে দিলাম।
লাশের মুখের দিকে তাকাতেই অনেকটা ভয় পেয়ে গেলাম, চোখ দিয়ে পানি পরতে শুরু করলো, আরে এটাতো রাইসা তার মানে রাইসা আত্নহত্যা করেছে।
ভাবতেই বুকটা চিনচিন করে উঠলো, রাইসার মাথাটা বুকের সাথে জড়িয়ে ধরেই চিৎকার দিয়ে উঠলাম।
আর সাথে সাথেই ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো।
_ যাক বাচলাম তার মানে এতোক্ষন স্বপ্ন দেখছিলাম।
অমনি শুনতে পেলাম কিসের যেনো একটা আওয়াজ আসছে,
ভালোভাবে কান পেতে শুনলাম আযান দিচ্ছে,
তাই ওযু করে নামায পড়তে গেলাম। নামায পড়া শেষ।
চারদিকে তাকিয়ে দেখি সূর্যের আলো ফুটছে।
তখন রাইসা কে দেখার খুব ইচ্ছে হচ্ছিলো, তাই রওনা দিলাম রাইসাদের বাসার উদ্দেশ্যে।
দাড়িয়ে আছি রাইসা দের বাসার সামনে।
কি সুন্দর করে সাজানো পুরো বাড়িটা।
চারদিকে শুধু ফুল আর ফুল। গেটের উপরে চোখটা আটকে গেলো, কারন সেখানে বড় করে
লেখা ছিলো “শুভ বীবাহআবারো বুকের বাম পাশে চিন চিন করে উঠলো।
আস্তে করে গেট খুলে বাড়ির ভেতরে ঢুকলামা।
ভিতরে অনেক মানুষ, কেউ ফুল সাজাচ্ছে,
কেউ রান্না করছে আর কেউ দেখিয়ে দিচ্ছে।
একটি ছোট মেয়েকে ডেকে জিঙ্গেস করলাম,
_ এই যে, ছোট মামনী, তুমি কি জানো তোমার রাইসা আপু কোথায়?
_ ভাইয়া, রাইসা আপুতো তার রুমে, আপুকে বউ সাজানো হচ্ছে।
কথাটা শুনেই বুকটা ধক করে উঠলো,
_ ভাইয়া আর কিছু কি বলবেন!
_ না ছোট মামুনি তুমি এখন যাও।
৩ বছর রাইসা কে প্রাইভেট পড়িয়েছি তাই কষ্ট হলোনা তার রুমটা খুছে পেতে,
রাইসা র রুমের সামনে গিয়ে দাড়ালাম।
দরজাটা একটু ফাকা ছিলো তাই তাকে দেখতে কষ্ট হলনা।রাইসা র আশে পাশে কয়েকটা মেয়ে বসে আছে।
রাইসা শাড়ি পড়েছে, চোখের উপরে টানা টানা কাজল, দুই হাত ভর্তি চুড়ি,
কপালে লাল একটা টিপ, পায়ে রক্ত আলতা তার সাথে নূপুর।
রাইসা গম্ভীর ভাবে বসে আছে! কারো সাথে কোনো কথা বলছেনা।
তার মুখটা ফ্যাকাশে হয়ে আছে।
তবুও তাকে এক তীল পরিমান অসুন্দর লাগছেনা, একদম অস্পরীদের মতো লাগছে।
_ হটাৎ কেউ একজন ঘাড়ে হাত রাখায় চমকে উঠলাম।
ফেছন ফিরে দেখি আংকেল রাইসার বাবা ) দাড়িয়ে আছে।
চলবে…….