গল্প ভালোবাসি তোমাকে /
/ লেখক মিঃ আবির মিঃ ভুত /
/ Part-3 /
_ আমি গ্রামের বাড়ি চলে যেতে পারলাম না, পারলাম চলে যেতে রাইসা কে ছেড়ে।
মেস (ভাড়া বাড়ি) এর উদ্দেশ্যে রাওনা দিলাম।
_ রাস্তা দিয়ে হাটছি, আর ভাবছি কি সুন্দর একটা মেয়ে, মায়াবী তার মুখ, হরিণীর মতো তার চোখ, যে কেউ দেখলেই তার প্রেমে পড়ে যাবে।
যেমন আমিও পড়েছিলাম প্রথম দিনি তার প্রেমে।
_ বাড়ির সামনে দাড়িয়ে কলিং বেল বাজাচ্ছি, বেশ কয়েকবার বাজালাম তবুও কেউ দরজা খুলছেনা,
আরেকবার বাজানোর জন্য হাত বাড়াতেই ভেতর থেকে দরজা খুলে গেলো।
আর ভেতরে একজন ভদ্র মহিলাকে দেখা যাচ্ছে, আর আমি মহিলাটির উদ্দেশ্যে বললাম।
_ আন্টি আপনি কি মেজর কামাল আংকেল এর স্ত্রী।
_ হ্যা, কিন্তু তুমি কে বাবা। তোমাকে তো ঠিক চিনলাম না,
_ আন্টি আমি আবির , আংকেল আমাকে পাঠিয়েছে আপনাদের মেয়ে রাইসা কে পড়ানোর জন্য,
_ ওহ, তুমিই তাহলে আবির , তোমার সম্পর্কে সব বলেছে আমাকে তোমার আংকেল, দাড়িয়ে আছো কেনো ভিতরে এসো বাবা।
_ আন্টিকে অনুষরণ করে ভিতরে গেলাম,
কি সুন্দর করে সাজানো বাড়িটা যেনো দেখেই পরান জুড়িয়ে যায়।
_ এখানে বসো বাবা (আন্টি)
_ জ্বী! আন্টি, (আমি)
_ আচ্ছা আবির তোমার বাবা কি করে? (আন্টি)
_ আমার বাবা নেই, আমার বাবা মারা গেছেন।
_ ওহ, সরি আবির , আমি আসলে বুঝতে পারিনি।
_ ঠিক আছে আন্টি সমস্যা নেই।
এরই মাঝে কাজের মেয়েটা নাস্তা নিয়ে চলে এলো
প্রথমত খেতে চাইনি তবুও পরে আন্টির অনুরোধে আর পেটের ক্ষিদায় খেয়ে নিলাম।
কাজের মেয়েটির উদ্দেশ্যে আন্টি বলল।
_ মা রুবিনা (আন্টি)
_ জ্বী, আপা (কাজের মেয়ে)
_ যাতো রাইসা কে ডেকে নিয়ে আয়,
_ ঠিক আছে আপা যাচ্ছি।
কাজের মেয়েটি চলে গেলো রাইসা কে ডাকতে,
কিছুক্ষণ পর রাইসা এলো,
_ আম্মু আম্মু তুমি আমাকে ডাকলে?
_ এই যে সামানে যে ছেলেটা বসে আছে সে কাল থেকে তোমাকে পড়াবে, পড়বে তুমি তার কাছে?
_ রাইসা আমার দিকে তাকালো, আর আমি আগে থেকেই তাকিয়ে আছি তার
দিকে, কি সুন্দর চোখ, চোখের উপর হলকা করে কাজল লাগানো আরো সুন্দর লাগছে তাকে,
রাইসা ঠোট বাকিয়ে ছোট্ট একটা হাসি দিলো, আর মাথা নাড়িয়ে জানিয়ে দিলো সে পড়বে আমার কাছে।
আর সেই বাকাঁ ঠোঁটের হাসিতেই প্রথম প্রেমে পড়েছিলাম আমি।
হটাৎ পায়ের সাথে কিছু স্পর্শ হওয়ায় সকল ভাবনার ছেদ ঘটলো,
নিচের দিকে তাকিয়ে দেখি একটি আঁট বছরের ছেলে আমার পাটা জড়িয়ে ধরে আছে, ছেলেটি আমাকে বলল,
_ ভাইয়া ২ টাকা দিবেন কাল থেকে কিছু খাইনি। খুব খিতে পেয়েছে
_ ছেলেটার কথা বুকে গিয়ে বাধলো,
খুব কষ্ট পেলাম তার কথায়, পা টা ছাড়িয়ে তাকে দাড় করালাম আর পকেট থেকে তাকে ১০ টাকার ১ টা নোট বেড় করে এগিয়ে দিলাম,
ছেলেটা টাকাটা পেয়ে দৌড়ে একটা দোকানের দিকে চলে গেলো,
তার যাওয়া দেখে আমি একটু হাসলাম, আর ভাবলাম পৃথিবীর মানুষ কতই না অসহায়।
প্রায় দুই ঘন্টা হাটার পর আমি মেসে ফিরে এলাম,
মেসের গেটের সামনেই বন্ধু রাকিবের সাথে দেখা হয়ে গেলো, আর রাকিব বললো।
_ কি রে আবির তুই কোথায় গেছিলি, আমরা কতো ট্যানশন করতে ছিলাম তুই কি জানিস, আর তোর চোখগুলা এতো ফুলা ফুলা করছে কেনো? (রাকিব)
_ (আমি)
_ কিরে চুপ করে আছিস কেনো
_ কোনো কথা না বলেই রাকিবকে জড়িয়ে ধরেই কেদেঁ দিলাম।
_ কিরে কি হয়েছে তোর আমাকে বল, তুই কাদছিস কেনো?
_ কোনো কিছু না বলেই রুমে ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দিলাম।
প্রায় ৩ ঘন্টা পর দরজা খুলে বাইরে এলাম।
সবাই আমার জন্য বসে বসে অপেক্ষা করছে,
_ কিরে কি হয়েছে তোর তুইতো আগে এমন ছিলিনা। (সবাই এক সাথে)
আমি সব কথা সবাইকে খুলে বললাম,
সবাই আমাকে শান্তনা দিয়ে বললো চিন্তা করিস না সব ঠিক হয়ে যাবে,
আর তুই যত তারাতারি পারিস রাইসা কে ভুলে যা।
এতোক্ষনে রাত দশটা বেজে গেছে, সবাই যে যার মতো ঘুমাতে চলে গেলো,
আমি একাই বসে আছি, ঘুম আসছেনা আমার, আর ভাবছি কিভাবে ভুলবো তাকে,
নাহ আমি ভুলতে পারবোনা রাইসা কে, আমি যে তাকে ভালোবাসি।
_ হটাৎ ফোনটা বেজে ওঠায় চমকে উঠলাম, চেয়ে দেখি একটা অচেনা নাম্বার
ভাসছে,
ফোনটা রিসিভ করতেই একটা মেয়ের কন্ঠ ভেসে আসলো,
আর সেই কন্ঠটা আমার খুব পরিচিত, খুব চেনা একটা কন্ঠ।
চলবে……