ভালোবাসি পর্ব-০৪

0
5916

#ভালোবাসি
#পর্বঃ৪
#Tanisha Sultana (writer)

কোচিং এ বসে আছে প্রভা আর তুলি। আজ একটু আগে এসেছে। কয়েকজন এসেছে তারা বাইরে দিয়ে ঘুরছে। রিক আসে।

“হাই

তুলি আর প্রভা রিককে দেখে ভালো ভাবে বসে।

” হেলো স্যার (প্রভা)

রিক ওদের সামনের ছিটে বসে।

“কেমন আছো তোমরা

” ভালো। আপনি (তুলি)

“ভালো। তা তুলি তোমাকে খুব মিষ্টি লাগছে

” ধন্যবাদ স্যার।

“ওয়েলকাম। তা তোমার পরিরারে কে কে আছে?

“সবাই আছে

” ওহহ।

কোচিং শেষে তুলি দাঁড়িয়ে আছে। একটা ফোন কিনবে কিন্তু একা যেতে কেমন জানি লাগছে। প্রভাকে বলেছিলো। প্রভার বাড়িতে যাওয়ার তারা আছে তাই চলে গেছে

“হেই তুলি এখনো যাও নি

পেছন থেকে রিক বলে

” হুম যাবো

“এনি পবলেম

” তেমন পবলেম নেই। তবে আমি ফোন কিনবো তো একা যেতে কেমন লাগছে

“ওহহ এই বেপার। তুমি চাইলে আমি তোমায় হেল্প করতে পারি

” আপনি

“হুমম। তাছাড়া আমারও মার্কেটে যেতে হবে বোনের বার্থডে তো আমি ওকে একটা ফোন গিফট করবো।

তুলির আমত থাকা স্বত্বেও রিকের সাথে যায়। রিক চয়েস করে তুলিকে একটা ফোন আর সিমকার্ড কিনে দেয়। তুলির সাথে রিকের ফ্রেন্ডশিপ হয়।

সায়ান ওর ফ্রেন্ডের সাথে মার্কেটে এসেছিলো। তুলিকে রিকের সাথে দেখে তুলির দিকে এগিয়ে যায়।

” এটা কি তোর কোচিং?

সায়ানের কথা শুনে তুলি ভয় পেয়ে যায়। কারণ সায়ান অসম্ভব রেগে আছে। চোখ দুটো লাল হয়ে আছে

“হু আর ইউ
রিক সায়ানকে প্রশ্ন করে
” আমি কে সেটা আপনাকে বলতে আমি বাধ্য নই
“আমি বাধ্য কজ আপনি আমার আর ওর মধ্যে ঢুকেছেন

” সায়ান ভাভাইয়ায়া আআআসলে আমি

তুতলিয়ে বলে তুলি। সায়ান কিছু বলতে যাবে তার আগেই রিক বলে

“এটা তোমার ভাই তুলি। আগে বলবেন তো। হেই ব্রো আমি রিক

রিক সায়ানের দিকে হাত বারিয়ে দেয়। সায়ান তুলির হাত ধরে টেনে নিয়ে যায়।
সারা রাস্তা সায়ান তুলির সাথে একটাও কথা বলে নি। বাড়ির সামনে গাড়ি থামিয়ে হনহন করে সায়ান চলে যায়। তুলি পেছন পেছন যায়। তুলি রুমে ঢুকতেই সায়ান তুলিকে দেয়ালের সাথে শক্ত করে চেপে ধরে। রাগে সায়ানের শরীর কাঁপছে। দাঁতে দাঁত চেপে বলে

” আমি তোর ভাই হই

তুলি ভয়ে জমে গেছে। গলা দিয়ে কথা বের হচ্ছে না।

“কি হলো বল

চিৎকার করে বলে সায়ান। তুলি কেঁপে ওঠে

” হহহ্যাঁ। ভভভাই ই তো লললাগগগেনন

তুতলিয়ে বলে তুলি। তুলির কথা শেষ হওয়ার সাথে সাথে সায়ান তুলি ঠোঁট জোড়া দখল করে নেয়। তুলি শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।

“এখন বুঝেছিস আমি তোর কি লাগি

তুলি কিছু না বলে ওয়াশরুমে চলে যায়। সায়ান বেরিয়ে যায়।

কিছুখন পরেি কলিং বেল বেঁজে ওঠে। তুলি দরজা খুলে দেখে একটা মেয়ে আর একটা ছেলে দাঁড়িয়ে আছে

” সায়ান বাসায় আছে (মেয়েটা)

“নাহহ

ছেলে আর মেয়েটা তুলিকে ঠেলে বাসায় ঢুকে সোফায় বসে। তুলি দরজা খোলা রেখেই ওদের পেছনে আসে। ওরা কি নিয়ে যেনো কথা বলছে তুলি শুনতে পাচ্ছে না। একটু পরেই সায়ান বাসায় ঢোকে। মেয়েটা দৌড়ে গিয়ে সায়ানকে জড়িয়ে ধরে কান্না করা শুরু করে দেয়। এখানে কি হচ্ছে তুলি কিছুই বুঝতে পারছে না।

” সরি সায়ান। আমি ইচ্ছে করে করিনি বাধ্য হয়ে ছিলাম। প্লিজ হ্মমা করে দাও প্লিজ

মেয়েটা সায়ানকে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলে। সায়ান একবার তুলির দিকে তাকিয়ে মেয়েটাকে বলে

“আমাকে ছাড়ো মায়া

শান্ত গলায় বললো সায়ান। সায়ানের শান্ত কন্ঠে মেয়েটার কান্নার গতি বেরে গেলো

” সায়ান খুব #ভালোবাসি তোমায়।

সায়ান এবার ধাক্কা দিয়ে মেয়েটাকে ফেলে দিলো

“এই তোমার ভালোবাসা? বিয়ের দিন কতো ইনসাল্ট হতে হয়েছে আমাদের জানো? চলে যাও তুমি

তুলি এবার বুঝতে পারলো এটাই তাহলে সায়ানের পালিয়ে যাওয়া বউ। মেয়েটা সায়ানের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বললো

” সরি বলছি তো। আরে ফাঁশির আসামিও যদি নিজের ভুল স্বীকার করে তাকেও তো একটু ছাড় দেওয়া হয়। সায়ান তুমিও তো আমাকে ভালোবাসো বলো

“মায়া আমি বিবা

” আপুটা তো সরি বলছে। হ্মমা করে দিন

সায়ানকে থামিয়ে তুলি বলে। মায়া তুলির দিকে তাকায়

“সায়ান ও কে

” আমি ওনার কা

“বউ। ও আমার বউ

মায়া গলা ফাটিয়ে হাসে।

” এভাবে হাসছো কোনো

সায়ান জিজ্ঞেস করে। মায়া হাসিটা কোনোরকম আটকিয়ে বলে

“সিরিয়েসলি সায়ান তুমিও খুব ভালো মজা করো

” এখানে মজার কি দেখলে

“এই পিচ্চিটা তোমার বউ। এটা আমায় বিশ্বাস করতে হবে। আমাকে জেলাস করার করার জন্য মিথ্যে বলছো

” মায়া

“সায়ান আমি জানি আমার সায়ান শুধু আমার। সে আমাকে রেখে অন্য কাউকে বিয়ে করবে এটা আমি বিশ্বাস করি না। এনিওয়ে আজ আসছি কাল অফিসে দেখা হবে। বাই &লাভ ইউ

মায়া আর ছেলেটা চলে যায়। তুলি সায়ানকে ভেংচি কেটে চলে যায়। রাতে তুলি ফোন দেখছে আর খাচ্ছে। সায়ান তুলির পাশে বসে খাচ্ছে

” তোর তো ফোন ছিলো না

“কিনেছি

” কে কিনে দিলো

“আপনাকে বলবো কেনো? আমি ফোন কিনি না যাই কিনি আপনার কি

” কি বললি তুই? আমার কি?

মুহুর্তেই সায়ানের চোখ লাল হয়ে যায়। তুলি ভয়ে ঢোক গিলে। যদি তখনকার মতো করে।
সায়ান নিজের চেয়ার ছেড়ে তুলির কাছে আসে। তুলি কাঁপা কাঁপা গলায় বলে

“আপনি দুরে থাকেন প্লিজ। বোনের সাথে এরকম বিহেব করা ঠিক না

সায়ান টেবিলের ওপর থেকে একটা গ্লাস আছার মেরে রুমে চলে যায়।
তুলি বুকে হাত রেখে জোরে একটা শ্বাস নিয়ে বলে

” যাহ বাবা এতো রেগে গেলো কেনো? আমিও না কি সব ভাবছি উনি তো সব সময় রেগেই থাকে। গোমড়া মুখো কোথাকার। মেবি ব্রাশ করে না। তাই ময়লা দাঁত লুকাতে মুখ গোমড়া করে থাকে।

তুলি নিজের রুমে বসে পরছে। তখন তুলির ফোন বেজে ওঠে

“হেলো

” কি করো?

“চিনতে পারলাম না

” এতো তারাতাড়ি ভুলে গেলে। দিছ ইজ নট ফেয়ার তুলি

“মনে রাখার মতো কেউ কি আপনি?

” অবিএসলি

“সরি আমি আপনাকে সত্যি চিনতে পারছি না। বাই

” হেই হেই আমি রিক ইউআর টিচার

“ওহহ আপনি

” ইয়া আমি। বললে না তো কি করছো?

“বই পরছি। আপনি?

” আমার হার্টবিটের সাথে কথা বলছি

“মানে

” ডিনার করছো?

“হুম। আপনি

” আমিও। তুলি কাউকে ভালোবাসো

রিকের কথায় তুলি হকচকিয়ে যায়।

“কি হলো বলো

” ভালোবাসি না তবে একজনকে ভালো লাগে

“কে সে

” পরে এক সময় বলবো। এখন বাই ঘুমাবো

তুলি রিককে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ফোন কেটে দেয়

“কেমন টিচার রে বাবা আঠার মতো লেগে থাকে। আরে ভাই আমি বিবাহিত। কে বোঝাবে একে।

সকালে তুলি স্কুলে যাওয়ার জন্য রেডি হচ্ছে তখন সায়ান আছে। হাতে একটা শপিং ব্যাগ নিয়ে

” আজ তোর স্কুলে যেতে হবে না

“আপনার কথায়

” হ্যাঁ আমার কথায়।

“আমি স্কুলে যাবো

” রিক স্যারকে একদিন না দেখে থাকতে পারবি না বুঝি

“যে যেমন তার চিন্তা ভাবনা গুলোও তেমন

” বেশি কথা না বলে এই শাড়িটা পরে নে

“আমি শাড়ি পরতে পারি না

” খেতে পারোস

“হোয়াট ডু ইউ মিম

” কিছু না। আমি হেল্প করছি

“একদম না। আপনার চরিত্র খারাপ

” কিহহহহহহহহ

“আরে আস্তে কান তো ফেটে যাবে

” আমার চরিত্র খারাপ

“সন্দেহ আছে

” হুম

“মনে নেই সেই দিন

সায়ান তুলির দিকে এগিয়ে আসতে আসতে বলে

” সেই দিন কি বল

চলবে