ভালোবাসি বুঝে নাও পর্ব-০৪

0
5408

#ভালোবাসি_বুঝে_নাও🍁🍁
#পর্ব_৪
#সুমাইয়া_সুলতানা _সুমী(writer)
.
কাজ শেষ করে বাইরে বেরিয়ে ফুপির কাছে মাহির কথা জিগাস করতেই বললো ও নাকি ইশিতার সাথে বাগানে এসেছে,,, তাই আমিও বাগানে আসলাম দেখতে ও কি করছে,, এসে দেখলাম কি সুমাচার।

আমি না ধরলে কি হতো এখন হুম(ধমক দিয়ে বলল মেহরাব)

ভাইয়া ওকে বকো না, আমিই ওকে গাছে উঠাচ্ছিলাম(গাছের উপর থেকে ইশিতা বলল)

তুই চুপ কর,, ওর হয়ে সাপাই গাওয়া বন্ধ কর,, আর আমি ছোট মামাকে বলছি তোর কথা, যে দুই এই ভর দুপুরে গাছে উঠেছিস (মেহরাব)

না ভাইয়া প্লিজ আব্বু কে বলো না আমি এখনি নামছি আর উঠবো না (এই বলে ইশিতা আর রকি রাকিব গাছ থেকে নেমে পড়ল)

আর আপনি (মাহিকে উদ্দেশ্য করে) গোসল করা লাগবে না??

হুম৷ করবো তো,, আপু তোমাদের গোসল খানা কোথায় বলো আমি গোসল করবো।

ওই যে বাথরুমের সামনে কলপাড় আছে তুই ওখানে গোসল কর।

আর তোমরা??

আমরা তো পুকুরে গোসল করবো।(ইশিতা)

কিহ সত্যি?? আমিও তাহলে তোমাদের সাথে পুকুরে গোসল করবো(মাহি)

নাহ কোনো দরকার নাই,, তুই সাঁতার জানিস না,, তুই আর মেঘলা কলে গোসল কর,,, (মেহরাব)

প্লিজ ভাইয়া,, আমি নিচে নামবো না শুধু পাড়ে বসে তোমাদের গোসল করা দেখবো প্লিজ প্লিজ(মাহি)

আমরা তো আছি ভাইয়া কিছু হবে না,, আমি ওকে দেখে রাখবো (ইশিতা)

আচ্ছা ঠিক আছে চল,, বেশি গভীরে যাবি না ওকে (মেহরাব)

ওকে ভাইয়া,,চলো চলো,,,

ছোট মামার একটা বড় পুকুর আছে,, বাধানো ঘাট,,, নামার জন্য কয়েকটা সিঁড়ি ও দেওয়া আছে সিঁড়ি গুলো পানির অনেকটা গভীর পযন্ত দেওয়া,,,, আমি সিঁড়ি উপর বসে পা গুলো পানির ভিতর দিয়ে বসে আছি,, আর আমার পাশে মেঘলা আপু বসে গায়ে সাবান মাখছে,,,,,
ইশিতা আপু রকি রাকিব আর মেহরাব ভাইয়া সাঁতার কেটে পুকুরের মাঝখানে যাচ্ছে আবার পাড়ে আসছে,,, আর আমি পাড়ে বসে ওদের সাঁতার কাটা দেখে খুশিতে হাতপা ছুঁড়ে ওদের দিকে পানি দিচ্ছি,,,

বলেছিলাম না তুই সত্যি একটা অকর্মার ঢেঁকি,, দ্যাখ তোর থেকে ছোট হয়েও রকি রাকিব সাঁতার কাটছে আর তুই ভেবলার মতো পারে বসে আছিস(সাঁতার কাটতে কাটতে বললো মেহরাব ভাইয়া)

ভাইয়া আমি যাবো,, (হাত বারিয়ে বললাম)

হুম তোকে নিয়ে এসে মাঝখানে ছেড়ে দেবো তখন বুঝবি।

ভাইয়ার কথা শুনে মুখ গোমড়া করে বসে থাকলাম,,, তখনি মনে হলো পানির নিচে থেকে কেউ যেনো আমার পা টানছে,, আমি ভয় পেয়ে চেচিয়ে উঠলাম।

আআআআআআআআ।

এই চুপ আমি,, এমন ভাবে চিৎকার করছিস যেনো মনে হচ্ছে কুমির ধরেছে (পানির নিচে থেকে মাথা বার করে বললো মেহরাব)

ও আপনি আমি তো ভেবেছিলাম সত্যি কুমির,

হুম তোর নানা এখানে কুমির পোষে জানিস না তুই,, পাগল ছাগল,, এখন আয়।

কোথায়??

কেবলি তো বললি মাঝখানে যাবি,, তো আয় আমি নিয়ে যাচ্ছি,,,, শোন তুই আমার পিছন থেকে গলা জরিয়ে ধরে পা দুটো পানির উপরে ভাসিয়ে রাখবি আর আমি সাঁতার কাটবো ওকে??

ওকে ওকে বুঝেছি,,,

তারপর আমি ভাইয়ার পিছন থেকে ভাইয়ার গলা জরিয়ে ধরে পা দিয়ে পানির উপরে সাতার কাটছিলাম আর ভাইয়া আমাকে নিয়ে পানির উপরে সাঁতার দিচ্ছিলো। প্রায় কিছু সময় পর আমরা পাড়ে আসলাম আমি তো সেই খুশি,, ভাইয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি ভাইয়া হাফাঁচ্ছে তাই আমি জিগাস করলাম।

কি হয়েছে ভাইয়া ওমন হাফাচ্ছেন কেনো??

হাপাবো না তো কি করবো,, আর একটু হলে তো মেরেই ফেলতি,, এতো জোরে কেউ গলা চেপে ধরে??

আমি কি করবো, আমার ভয় লাগছিলো যদি ডুবে যাই,, সেই জন্যই তো আরো শক্ত করে ধরলাম।

হুম নিজে বেঁচে আমায় ডুবিয়ে দিচ্ছিলি,,, এখন উঠ অনেক গোসল হয়েছে,, ঠান্ডা লেগে যাবে,,, তারপর আমরা সবাই উঠে গেলাম,,,, মেঘলা মেহরাব এর দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতেছে।

কিরে ওমন করে হাসছিস কেনো??(মেহরাব)

নাহ কিছু না,,,, কুছ কুছ হোতা হে (এই গানটা বলতে বলতে চলে গেলো)

সব কটা পাগল,,,,।

,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

,,,,,বিকালে,,,,
আপু ঘুরতে যাবে না (মাহি)

হুম যাবো তো,, তার আগে আয় তোকে একদম গ্রামের মেয়ে সাজায়ে দিই (ইশিতা)

মানে??

আগে আয় তো,,, তার পর আপু আমায় একটা তাঁতের শাড়ি এরাকরে পরিয়ে আঁচল টা কমরে গুজে দিলো আর চুলগুলো ফিতে দিয়ে দুপাশে বেধে কান বেনি করে দিলো,, তারপর মেঘলা আপু আর ইশিতা আপুও একি রকম করে কাপড় পরে নিলো তারপর আমরা বাইরে বেরিয়ে আসলাম।

বাবা আমার মাহি নানু কে তো একদম গ্রামের রানি লাগছে (নানু)

সত্যি??

হুম সত্যি,,

বারে শুধু ওকেই সুন্দর লাগছে আর আমাদের বুঝি খারাপ লাগছে (মুখ গোমরা করে বলল মেঘলা আর ইশিতা)

না না আমার ৩ টা নাতনীই একেবারে রাজকুমারি,,, তারপর নানুর কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমরা মাঠের দিকে গেলাম,,, ছোট মামা বললো ভাইয়া নাকি বাগানে আছে ওখান থেকে ডেকে নিতে বলেছে।

বাগানে দাড়িয়ে ছিলাম তখনি দূরে মাহিকে এদিকে আসতে দেখলাম,,, তাতের শাড়ি পড়ে আঁচল টা কমরে গুজে,,, দেখে যেনো মনে হচ্ছে একদম গ্রামের পল্লী বধু।আমি হা করে ওর দিকে তাকিয়ে আছি,,,আমার,ডান হাতটা বুকের বা পাশে রেখে বললাম,, হায়!,, আর কত রুপ দেখবো তোমার,, আর কতভাবে মারবে আমায়।(মনে মনে)

ভাইয়া চলেন ঘুরতে যাবো,, মা বলেছে আপনাকে নিয়ে যেতে।

মাহির কথা যেনো আমার কানেই ঢুকছে না,, আমি এন ধ্যানে মাহির দিকে তাকিয়ে আছি।

ভাইয়া এমন করে আমার দিকে তাকিয়ে আছে কেনো,, আমার বুঝি লজ্জা করে নাহ,,কেমন নিলজ্জের মতো তাকিয়ে আছে (মনে মনে বলল মাহি)

ভাইয়া চলুন (একটু জোরে)

ওহ হ্যাঁ কিছু বললি??

বলছি যে চলেন সবাই অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।

হ্যাঁ চল।

মাহি আগে আর মেহরাব ওর পিছন পিছন যেতে লাগলো।তোমাকে এরুপে দেখে আমার,, হুমায়ুন আহমেদ এর লিখা সেই গানটার কতা মনে পড়ে যাচ্ছে।

,,,,এক যে ছিলো সোনার কন্যা মেঘ বরণ কেশ,,

,,,ভাঁটি অঞ্চলে ছিলো সেই কন্যার দেশ,,
,,,দুচোখে তার আহারে কি মায়া,,
৷৷৷, নদীর জলে পরল কন্যার ছায়া,, তাহার কথা বলি,,
তাহার কথা বলতে বলতে নাও দৌড়াইয়া চলি,,

চলবে,,,,,,?